🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত 🙏 শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত 🌻 শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন* ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 🔀 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/raghunath-das-gaswami.html


✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
২. তিনি কে❓ তাঁহার বিবাহ ❓📖 শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত 🙏 শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত 🌻 শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত  *বাংলা ১৩০০সন* ✍️ *লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 🔀 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/raghunath-das-gaswami.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০২)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত🌻*
*🌻শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻বাংলা ১৩০০ সন🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻🌻🌻পূর্বার্ধ🌻🌻🌻*
*🌻তিনি কে? তাঁহার বিবাহ🌻*
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
*হুগলী জেলার অন্তর্গত সপ্তগ্রামে হরিপুর নামে একটি জায়গা আছে।৪০০ শত বৎসর পূর্বে, বতর্মান ৫২৯ বৎসর পূর্বে এই হরিপুর একটি সৌষ্ঠবশালী বড় গ্রাম ছিল।তৎকালে হরিপুরে হিরণ‍্য দাস ও গোবর্ধন দাস নামে দুইজন মহা সম্ভ্রান্ত লোক বাস করতেন।ইঁহারা সহোদর ভ্রাতা তন্মধ‍্যে হিরণ‍্য দাস জ‍্যেষ্ঠ,এবং গোবর্ধন কনিষ্ঠ।ইঁহারা জাতিতে কায়স্থ ; ইঁহাদের মজুমদার খ‍্যাতি ছিল।ইঁহারা তত্রত‍্য ভূম‍্যধিকারী ছিলেন।প্রজার কাছ হতে বিংশতি (২০) লক্ষ টাকা রাজস্ব-স্বরূপ বার্ষিক আদায় হত।হিরণ‍্য ও গোবর্ধন দাস এতাদৃশ(এইরকম) সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন।হিরণ‍্য ও গোবর্ধন দাস অতিশয় বদান‍্য ছিলেন।নবদ্বীপের অনেক ব্রাহ্মণ-সন্তানকেই এঁদের উপর নির্ভর করে থাকতে হত। নবদ্বীপের নীলাম্বর চক্রবর্তী অতি প্রসিদ্ধ লোক, সুতরাং তাঁর সঙ্গে এঁদের বিশেষ পরিচয় ছিল।অপিচ (এবং)ইঁনারা (মহাপ্রভুর পিতা) মিশ্র পুরন্দরের অতি অনুগত ছিলেন।*
*🌻এই দুই ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ গোবর্ধন দাসের ১৪২০ শকে একটি পুত্র সন্তান হয়,ঐ পুত্রের নাম রঘুনাথ দাস।এই রঘুনাথ অতি আশ্চর্য‍্য বস্তু।অতি বাল‍্যকাল হতেই তিনি সংসারে উদাসীন প্রায় ছিলেন।যখন শ্রীশ্রীহরিদাস ঠাকুর (যিনি সেই সময় সাধারণত যবন হরিদাস নামেই প্রসিদ্ধ ) কয়েক দিনের জন্য হরিপুরের নিকটবর্তী চাঁদপুর গ্রামে যান,তখন রঘুনাথ তাঁর পরিচর্য‍্যাদি করে তদীয় কৃপাভাজন হন।ঐ সময় রঘুনাথ তাঁদের পুরোহিত বলরাম আচার্য‍্যের গৃহে অধ‍্যয়ন করতেন। সাধু ভক্তের কৃপায় ভগবচ্চরণলাভের উপায় স্বরূপ।কে বলতে পারে যে, রঘুনাথের প্রতি হরিদাসের এই কৃপায় ভবিষ্যতে তাঁর গৌর-চরণ প্রাপ্তির কারণ  হয়েছিল? রঘুনাথ যখন বালক,তখন সমস্ত বঙ্গভূমি এক অভিনব তরঙ্গে তরঙ্গায়িত, এক নূতন  বন‍্যায় প্লাবিত।তখন আমাদের মহাপ্রভু প্রকাশিত হয়েছেন ; তখন অনেকেই জানতে পেরেছেন যে,নদীয়ার সেই চঞ্চল "ব্রাহ্মণ কুমারটি" অন‍্য কেউ নয়,সাক্ষাৎ ব্রজেন্দ্র-নন্দন।*
*🌻দেশ দীর্ঘকাল মোহাচ্ছন্ন ছিল  ; শ্রীগৌরাঙ্গের হরি হরি ধ্বনিতে দেশের মোহ বিদূরিত হয়েছে, নিদ্রা ভেঙ্গেছে, কিন্তু দেশ তখনও বুঝতে পারছে না যে, এ কে? তাই সে সুপ্তোত্থিত দেশ বা ঘুমিয়ে থাকা দেশ তখন বিমূঢ়বৎ(কর্তব‍্যজ্ঞানহীন) হয়ে আছে।তখন আমাদের মহাপ্রভুর নাম জানতে বাংলায় আর কারও বাকি ছিল না।রঘুনাথ দাস শ্রীগৌরাঙ্গের নাম শুনলেন,আর তাঁর শ্রীচরণে আত্ম-সমর্পণ করলেন। রঘুনাথের এই আত্ম সমর্পণ নূতন নয়।তিনি জন্মে জন্মে ঐ শচীনন্দনের শ্রীচরণেই জীবন যৌবন সমর্পণ করে থাকেন। নতুবা নাম শুনেই আত্ম সমর্পণ করেছেন তা শোনা গেছে? রঘুনাথ শ্রীকৃষ্ণ-লীলায় রসমঞ্জরী ছিলেন, কেউ কেউ তাঁকে রতিমঞ্জরীও বলে থাকেন।যথা গৌরগণোদ্দেশ দীপিকায় পায়=*
*দাসশ্রীরঘুনাথস‍্য পূর্বাখ‍্যা রসমঞ্জরী।*
*অমুং কেচিৎ প্রভাষন্তে শ্রীমতীং রতিমঞ্জরীং।।*
*🌻শ্রীগৌরাঙ্গের নাম শুনেই রঘুনাথ তাঁর শ্রীচরণে আত্ম-সমর্পণ করলেন,আর তখন হতেই তদীয় হৃদয়-নিহিত অনুরাগ-বহ্নি তীব্র তেজে জ্বলে উঠিল।তখন তাঁর মনে ধৈর্য‍্য মাত্র থাকল না,আহার,নিদ্রা,বেশভূষা, সাংসারিক সুখাভিলাষ সমস্ত তিনি ত‍্যাগ করলেন।তাঁর অতি প্রিয় যে শাস্ত্রাভ‍্যাস, তাতেও আর মন ধায় না। এই অবস্থায় বালক রঘুনাথ,পিতা মাতা,বন্ধু-বান্ধব ও অতুল ঐশ্বর্য‍্য পরিত‍্যাগ করে শ্রীগৌরাঙ্গের সঙ্গে সম্মিলনের আশায় রাত্রিযোগে একাকী পালাতে কয়েকবার চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেন নাই।রঘুনাথের পিতা,পুত্রের ঈদৃশ(এপ্রকার)আচরণে ভীত হয়ে,যাতে তিনি আর পালাতে না পারেন,এই অভিপ্রায়ে তাঁর রক্ষার জন্য পাঁজন প্রহরী এবং বুঝিয়ে রাখবার জন্য একজন ব্রাহ্মণ নিযুক্ত করলেন।*
*🌻রঘুনাথ পিতামাতার একমাত্র সন্তান,অতি আদরের ধন।তাঁর বিষয়ে গোবর্ধন দাসের মনে বীতি সঞ্চারিত হয়েছিল যে,প্রহরী নিযুক্ত করেও তিনি স্থির থাকতে পারলেন না,তাঁকে সংসারে দৃঢ় রূপে আবদ্ধ করবার জন্য সেই অল্প বয়সেই (তাঁর সতের বছর বয়সেই ) একটি উপযুক্ত-বয়স্কা পরম লাবণ‍্যময়ী বালিকার সঙ্গে বিয়ে দিলেন।নববধূর অঙ্গসৌষ্ঠব,সৌন্দর্য‍্যরাশি ও সদগুণাবলী দর্শনে রঘুনাথের জননী অনেক পরিমাণে আশ্বস্ত হলেন।তিনি ভাবতে লাগলেন যে,তাঁর লক্ষ্মীরমত বধূটিকে রঘুনাথ ত‍্যাগ করতে পারবে না।*
*🙏তাঁর আবির্ভাব তত্ত্বটি নব‍্যভারতে প্রকাশিত হয়।*
*🌻বিশেষ বিশেষ পাত্রে,বিশেষ বিশেষ ভাব ও শক্তি অবতীর্ণ হয়ে ভগবল্লীলার সহায়তা করে,এ সত‍্য কে না স্বীকার করবে?যেমন সনকাদীতে শান্ত ভাব,ধ্রুব প্রহ্লাদে দাস‍্য ভাব,রুক্মিণী সত‍্যভামার প্রেম ভাব অবতীর্ণ, তেমনি আবার সনকাদির শান্ত ভাব শাক‍্যসিংহ প্রভৃতিতে,প্রহ্লাদের দাস‍্যভাব যখন হরিদাসে,ও রুক্মীণী সত‍্যভামার প্রেম ভাব (গৌর লীলায়) গদাধর পন্ডিত ও জগদানন্দ পন্ডিতে অবতীর্ণ ইত‍্যাদি।*
     *(নব‍্যভারত ১১শ খন্ড ১৪১পৃষ্ঠা)*
*🙏ভুল ভ্রান্তি,বানান, মার্জনা করবেন🙏*



  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
১. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত 🙏 শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত 🌻 শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত  *বাংলা ১৩০০সন* ✍️ *লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 🔀 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/raghunath-das-gaswami.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    🏠Home Page🏠⬇️⬇️🙏⬇️⬇️📚PDF গ্রন্থ📚
꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
  ꧁ JoydebDaw.blogspot.com 🙏 সূচীপত্র ꧂
         ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
     এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০১)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻*
*🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত🌻* *বাংলা ১৩০০সন*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🙏সর্বাদৌ সর্ব-সন্তাপহারী শ্রীহরির শ্রীচরণে মঙ্গলাচরণ স্বরূপ পদ দুইটি দিলাম।🙏*
*দয়ালু দয়ালু মোর শ্রীগৌর সুন্দর*।
*দুঃখী তাপী জনে তাঁর কৃপা নিরন্তর।।*
*শান্তির আশায়,     জগতে ভ্রমিনু,*
        *কাহাকেও নাহি পাইনু।*
*দৈবে অবশেষে,     শ্রীনাম শুনিয়া,*
      *গৌরাঙ্গ শরণ লৈনু।।*
*অধম জানিয়া,     দুঃখীর ঠাকুর,*
      *চাহিয়া দেখিল মোরে।*
*তাপ অবসাদ,        সব পলাইল,*
        *দূরে দূরে দূরান্তরে*
*হেন দয়াময়,         *গৌরাঙ্গ আমার,*
      *এবে কর্ম বশে হায়।*
*তাঁহারে ভুলিয়া,   বৈষ্ণব দাসের,*
       *বৃথায় জীবন যায়।।*
                *(০২)*
*হে গৌর-সুন্দর,  পরাণ রতন,*
        *সুবর্ণ মাণিক মণি*
*তুমি সে আমার,    জীবন সম্বল,*
       *তুমি সে প্রেমের খনি।।*
*এস এস নাথ,     হৃদয় মাঝারে,*
        *তোমারে ভরিয়া রাখি।*
*তা'হলে কখন,     *পলাতে নারিবে,*
       *অধীনেরে দিয়া ফাঁকি।।*
*তব বাস যোগ‍্য,   নহে এ হৃদয়,*
       *শুধিতে যতন পাই।*
*দুর্দেব প্রবল,      *নাশে মনোবল,*
        *মরমে মরিয়া যাই।।*
*এ দুঃখ কাহিনী,   কাহাকে বলিব,*
      *কে বুঝবে মোর ব‍্যথা।*
*অতএব নাথ,         সরল অন্তরে,*
       *নিবেদিনু মন কথা।।*
*বামনের চন্দ্র,           ধরার মতন,*
      *সত‍্য সে জল্পনা মোর।*
*তবু আশা প্রভো,  জানি দীনজনে,*
        *অহেতু করুণা তোর।।*
*তবে এস,এস,      এস প্রাণপতে,*
        *সকাতরে ডাকি পুনঃ।*
*তব শুভ দৃষ্টে,        সুনির্মল হবে,*
        *নিশ্চয় এ পাপ মন।।*
*শ্রীবৈষ্ণব দাস,    পাতকী অভাগা,*
       *পূরাবে কি আশা তার।*
*এ হৃদি-সরোজে,   তব শ্রীচরণ,*
      *হেরিবে কি দুরাচার।।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
২. তিনি কে❓ তাঁহার বিবাহ ❓📖 শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত 🙏 শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত 🌻 শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত  *বাংলা ১৩০০সন* ✍️ *লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 🔀 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/raghunath-das-gaswami.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০২)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত🌻*
*🌻শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻বাংলা ১৩০০ সন🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻🌻🌻পূর্বার্ধ🌻🌻🌻*
*🌻তিনি কে? তাঁহার বিবাহ🌻*
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
*হুগলী জেলার অন্তর্গত সপ্তগ্রামে হরিপুর নামে একটি জায়গা আছে।৪০০ শত বৎসর পূর্বে, বতর্মান ৫২৯ বৎসর পূর্বে এই হরিপুর একটি সৌষ্ঠবশালী বড় গ্রাম ছিল।তৎকালে হরিপুরে হিরণ‍্য দাস ও গোবর্ধন দাস নামে দুইজন মহা সম্ভ্রান্ত লোক বাস করতেন।ইঁহারা সহোদর ভ্রাতা তন্মধ‍্যে হিরণ‍্য দাস জ‍্যেষ্ঠ,এবং গোবর্ধন কনিষ্ঠ।ইঁহারা জাতিতে কায়স্থ ; ইঁহাদের মজুমদার খ‍্যাতি ছিল।ইঁহারা তত্রত‍্য ভূম‍্যধিকারী ছিলেন।প্রজার কাছ হতে বিংশতি (২০) লক্ষ টাকা রাজস্ব-স্বরূপ বার্ষিক আদায় হত।হিরণ‍্য ও গোবর্ধন দাস এতাদৃশ(এইরকম) সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন।হিরণ‍্য ও গোবর্ধন দাস অতিশয় বদান‍্য ছিলেন।নবদ্বীপের অনেক ব্রাহ্মণ-সন্তানকেই এঁদের উপর নির্ভর করে থাকতে হত। নবদ্বীপের নীলাম্বর চক্রবর্তী অতি প্রসিদ্ধ লোক, সুতরাং তাঁর সঙ্গে এঁদের বিশেষ পরিচয় ছিল।অপিচ (এবং)ইঁনারা (মহাপ্রভুর পিতা) মিশ্র পুরন্দরের অতি অনুগত ছিলেন।*
*🌻এই দুই ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ গোবর্ধন দাসের ১৪২০ শকে একটি পুত্র সন্তান হয়,ঐ পুত্রের নাম রঘুনাথ দাস।এই রঘুনাথ অতি আশ্চর্য‍্য বস্তু।অতি বাল‍্যকাল হতেই তিনি সংসারে উদাসীন প্রায় ছিলেন।যখন শ্রীশ্রীহরিদাস ঠাকুর (যিনি সেই সময় সাধারণত যবন হরিদাস নামেই প্রসিদ্ধ ) কয়েক দিনের জন্য হরিপুরের নিকটবর্তী চাঁদপুর গ্রামে যান,তখন রঘুনাথ তাঁর পরিচর্য‍্যাদি করে তদীয় কৃপাভাজন হন।ঐ সময় রঘুনাথ তাঁদের পুরোহিত বলরাম আচার্য‍্যের গৃহে অধ‍্যয়ন করতেন। সাধু ভক্তের কৃপায় ভগবচ্চরণলাভের উপায় স্বরূপ।কে বলতে পারে যে, রঘুনাথের প্রতি হরিদাসের এই কৃপায় ভবিষ্যতে তাঁর গৌর-চরণ প্রাপ্তির কারণ  হয়েছিল? রঘুনাথ যখন বালক,তখন সমস্ত বঙ্গভূমি এক অভিনব তরঙ্গে তরঙ্গায়িত, এক নূতন  বন‍্যায় প্লাবিত।তখন আমাদের মহাপ্রভু প্রকাশিত হয়েছেন ; তখন অনেকেই জানতে পেরেছেন যে,নদীয়ার সেই চঞ্চল "ব্রাহ্মণ কুমারটি" অন‍্য কেউ নয়,সাক্ষাৎ ব্রজেন্দ্র-নন্দন।*
*🌻দেশ দীর্ঘকাল মোহাচ্ছন্ন ছিল  ; শ্রীগৌরাঙ্গের হরি হরি ধ্বনিতে দেশের মোহ বিদূরিত হয়েছে, নিদ্রা ভেঙ্গেছে, কিন্তু দেশ তখনও বুঝতে পারছে না যে, এ কে? তাই সে সুপ্তোত্থিত দেশ বা ঘুমিয়ে থাকা দেশ তখন বিমূঢ়বৎ(কর্তব‍্যজ্ঞানহীন) হয়ে আছে।তখন আমাদের মহাপ্রভুর নাম জানতে বাংলায় আর কারও বাকি ছিল না।রঘুনাথ দাস শ্রীগৌরাঙ্গের নাম শুনলেন,আর তাঁর শ্রীচরণে আত্ম-সমর্পণ করলেন। রঘুনাথের এই আত্ম সমর্পণ নূতন নয়।তিনি জন্মে জন্মে ঐ শচীনন্দনের শ্রীচরণেই জীবন যৌবন সমর্পণ করে থাকেন। নতুবা নাম শুনেই আত্ম সমর্পণ করেছেন তা শোনা গেছে? রঘুনাথ শ্রীকৃষ্ণ-লীলায় রসমঞ্জরী ছিলেন, কেউ কেউ তাঁকে রতিমঞ্জরীও বলে থাকেন।যথা গৌরগণোদ্দেশ দীপিকায় পায়=*
*দাসশ্রীরঘুনাথস‍্য পূর্বাখ‍্যা রসমঞ্জরী।*
*অমুং কেচিৎ প্রভাষন্তে শ্রীমতীং রতিমঞ্জরীং।।*
*🌻শ্রীগৌরাঙ্গের নাম শুনেই রঘুনাথ তাঁর শ্রীচরণে আত্ম-সমর্পণ করলেন,আর তখন হতেই তদীয় হৃদয়-নিহিত অনুরাগ-বহ্নি তীব্র তেজে জ্বলে উঠিল।তখন তাঁর মনে ধৈর্য‍্য মাত্র থাকল না,আহার,নিদ্রা,বেশভূষা, সাংসারিক সুখাভিলাষ সমস্ত তিনি ত‍্যাগ করলেন।তাঁর অতি প্রিয় যে শাস্ত্রাভ‍্যাস, তাতেও আর মন ধায় না। এই অবস্থায় বালক রঘুনাথ,পিতা মাতা,বন্ধু-বান্ধব ও অতুল ঐশ্বর্য‍্য পরিত‍্যাগ করে শ্রীগৌরাঙ্গের সঙ্গে সম্মিলনের আশায় রাত্রিযোগে একাকী পালাতে কয়েকবার চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেন নাই।রঘুনাথের পিতা,পুত্রের ঈদৃশ(এপ্রকার)আচরণে ভীত হয়ে,যাতে তিনি আর পালাতে না পারেন,এই অভিপ্রায়ে তাঁর রক্ষার জন্য পাঁজন প্রহরী এবং বুঝিয়ে রাখবার জন্য একজন ব্রাহ্মণ নিযুক্ত করলেন।*
*🌻রঘুনাথ পিতামাতার একমাত্র সন্তান,অতি আদরের ধন।তাঁর বিষয়ে গোবর্ধন দাসের মনে বীতি সঞ্চারিত হয়েছিল যে,প্রহরী নিযুক্ত করেও তিনি স্থির থাকতে পারলেন না,তাঁকে সংসারে দৃঢ় রূপে আবদ্ধ করবার জন্য সেই অল্প বয়সেই (তাঁর সতের বছর বয়সেই ) একটি উপযুক্ত-বয়স্কা পরম লাবণ‍্যময়ী বালিকার সঙ্গে বিয়ে দিলেন।নববধূর অঙ্গসৌষ্ঠব,সৌন্দর্য‍্যরাশি ও সদগুণাবলী দর্শনে রঘুনাথের জননী অনেক পরিমাণে আশ্বস্ত হলেন।তিনি ভাবতে লাগলেন যে,তাঁর লক্ষ্মীরমত বধূটিকে রঘুনাথ ত‍্যাগ করতে পারবে না।*
*🙏তাঁর আবির্ভাব তত্ত্বটি নব‍্যভারতে প্রকাশিত হয়।*
*🌻বিশেষ বিশেষ পাত্রে,বিশেষ বিশেষ ভাব ও শক্তি অবতীর্ণ হয়ে ভগবল্লীলার সহায়তা করে,এ সত‍্য কে না স্বীকার করবে?যেমন সনকাদীতে শান্ত ভাব,ধ্রুব প্রহ্লাদে দাস‍্য ভাব,রুক্মিণী সত‍্যভামার প্রেম ভাব অবতীর্ণ, তেমনি আবার সনকাদির শান্ত ভাব শাক‍্যসিংহ প্রভৃতিতে,প্রহ্লাদের দাস‍্যভাব যখন হরিদাসে,ও রুক্মীণী সত‍্যভামার প্রেম ভাব (গৌর লীলায়) গদাধর পন্ডিত ও জগদানন্দ পন্ডিতে অবতীর্ণ ইত‍্যাদি।*
     *(নব‍্যভারত ১১শ খন্ড ১৪১পৃষ্ঠা)*
*🙏ভুল ভ্রান্তি,বানান, মার্জনা করবেন🙏*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০৩)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত🌻*
*🌻শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻*
*🌻প্রথম মিলন ও পলায়নে অক্ষমতা🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻এই যে ঘটনা ঘটনা উল্লেখ করা গেল,তার কয়েক বৎসর পূর্বে শ্রীগৌরাঙ্গ সন্ন‍্যাস গ্রহণ করেছিলেন।চব্বিশ বৎসরের শেষে অর্থ‍্যাৎ ১৪৩১ শকের মাঘ মাসে শুক্লপক্ষে মহাপ্রভু সন্ন‍্যাস গ্রহণ করে নীলাচল গমন করেন, এবং পরে সেখান হতে শান্তিপুরে অদ্বৈত আচার্য‍্যের গৃহে আসেন।সন্ন‍্যাসের পর তাঁর দ্বিতীয় বারের আগমন।*
*🌻রঘুনাথের পূর্ব হতেই মহাপ্রভুর সাথে মিলিত হবার ইচ্ছে ছিল (ইহা পূর্বে বলা হয়েছে ) কিন্তু এক দিনও যেতে পারেননি।এখন মহাপ্রভু শান্তিপুরের কাছে এসেছেন জেনে অতি বিনম্র হয়ে পিতাকে বললেন, পিতা!একবার মাত্র আমাকে যেতে দিন ; যদি না দেন,তবে আমার প্রাণ থাকবে না।আহা,কি অদ্ভুত উদ্বেগ!কেমন আশ্চর্য‍্য আকর্ষণ!যাইহোক,পুত্রের এতাদৃশ(এইরকম) আর্তি দেখে গোবর্ধন দাস নিষেধ করতে পারলেন না,লোকজন সঙ্গে দিয়ে শান্তিপুরে পাঠিয়ে দিলেন।*
*🌻রঘুনাথ দাস শান্তিপুরে মহাপ্রভুকে দর্শন পূর্বক প্রেমাবিষ্ট হয়ে তাঁর শ্রীচরণে নিপতিত হলেন।তাতে সেখানে তাঁর প্রতি পতিতপাবন গৌরহরির করুণা হল। রঘুনাথ সাতদিন শান্তিপুরে রইলেন, এবং মনের আনন্দে নিজের কথা মহাপ্রভুর শ্রীচরণে নিবেদন করলেন।যদিও রঘুনাথ অতি আনন্দিত হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর মন সম্পূর্ণ স্থির ছিল না। সেখানে মহাপ্রভুর চরণ-সন্নিধানে বসে তিনি মনে মনে প্রার্থনা করতে লাগলেন, "প্রভো!আমি এই বন্ধন কি ছেদন করতে পারব?তুমি কি আমার আশা পূরাবে?তোমার শ্রীচরণে কি স্থান দিবে?🙏অন্তর্য‍্যামী শ্রীগৌরাঙ্গ, রঘুনাথের মনের কথা অবগত হয়ে,তাঁকে মৃদু মধুর বাক‍্যে, এই বলে আশ্বাস দিলেন। যথা শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃতে=*
*স্থির হইয়া ঘরে যাও,না হইও বাতুল।*
*ক্রমে ক্রমে পাই লোক,ভব-সিন্ধু-কূল।।*
*মর্কট বৈরাগ‍্য না করিও,লোক দেখাইয়া।*
*যথাযোগ‍্য বিষয় ভুঞ্জ,অনাসক্ত হইয়া।।*
*অন্তরে নিষ্ঠা কর,বাহ‍্যে লোক-ব‍্যবহার।*
*অচিরাতে কৃষ্ণ তোমা,করিবেন উদ্ধার।।*
*🌻গৃহস্থ বৈষ্ণবের কিরকম আচরণ করা কর্তব‍্য,এই অপূর্ব ইঙ্গিত বাক‍্যে রঘুনাথের প্রতি উপদেশচ্ছলে,মহাপ্রভু  এইরূপে তা বলেছেন।তারপরে বলছেন=*
*বৃন্দাবন দেখি যবে,আসিব নীলাচলে।*
*তবে তুমি আমাপাশ,আসিও কোন ছলে।।*
*সে কালে সে ছল,স্ফুরাবে তোমারে।*
*কৃষ্ণ কৃপা যাঁরে,তাঁরে কে রাখিতে পারে।।*
*🌻অতি ধীর ভাবে রঘুনাথ এই আশ্বাস-বাক‍্য শুনে নিজ গৃহে ফিরলেন।মহাপ্রভুর শ্রীমুখের আশ্বাসে তাঁর মনের উদ্বেগ অনেক পরিমাণে বিদূরিত হ'ল।তিনি মহাপ্রভুর আজ্ঞা প্রতিপালন করতে লাগলেন। রঘুনাথ মনের ভাবোচ্ছাস গোপন রাখাতে পিতা মাতা বুঝলেন, পুত্রের আর তেমন উন্মাদ-ভাব নাই দেখে বড়ই আনন্দিত হলেন।এইভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হলে একদিন তিনি শুনতে পেলেন যে,মহাপ্রভু বৃন্দাবন হতে ফিরে আসছেন। যেমন সংবাদ শুনলেন, আর অমনি বাহির হবার জন্য একেবারে উতলা হয়ে উঠিলেন। কিন্তু একটি সাংসারিক দুর্ঘটনা আরও এক বৎসরের জন্য তাঁকে আবদ্ধ করে রাখিল।সে দুর্ঘটনার সার মর্ম এই=*
*🌻পূর্বে এক ম্লেচ্ছ সপ্তগ্রামের অধিকারী ছিল ; পরে শ্রীহিরণ‍্য দাস তাকে অধিকার-চ‍্যুত করায়,সে মনে মনে তাঁর প্রতি বড় ক্রুদ্ধ হয়।অনন্তর কোন সূত্রে রাজ-সাহায‍্যে যবন ইঁনাদের প্রতি মিথ‍্যা কথা বলে রাজার কাছে ছোট করতে চাইল।(নিচু জাত, নিচু মন হলে যা হয় ),কিন্তু সংবাদ পেয়ে ইঁনারা সপরিবারে কিছু দিনের জন্য যবন রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য গা ঢাকা দেন। কিন্তু রঘুনাথের মন প্রাণ শ্রীগৌরাঙ্গ-চরণে উৎস্থর্গীকৃত,তিনি সংসারের বড় একটা ধার ধারেন না, সুতরাং যবনের হাতে বন্দী হলেন।বন্দী অবস্থায় যবনেরা তাঁকে নানাপ্রকার ভয় দেখাত,কখনও বা প্রহারে উদ‍্যত হত, কিন্তু রঘুনাথের কমনীয় কলেবরে প্রহার করতে পারত না।একদিন সেই বিপক্ষ যবন,রঘুনাথের অপূর্ব কথা শুনে এবং মনোহর রূপমাধুরীতে বিমোহিত হয়ে,রঘুনাথকে মুক্ত করিয়ে দিল ; এবং রঘুনাথও পিতা ও জ‍্যেষ্ঠতাতের সঙ্গে ঐ যবনের সম্মিলন করালেন।এইভাবে দীর্ঘকালের বিবাদের অবসান হয়।*
*🌻রঘুনাথ মুক্ত হয়েই আবার পালাতে চেষ্টা করলেন এবং একদিন রাত্রে বাড়ি ছেড়ে পলায়ন করলে,তাঁর পিতা অল্পদূর হতেই তাঁকে ধরে আনালেন। রঘুনাথ গৃহে মুহূর্তের জন‍্যও শান্তি পান না,তাই তিনি আবার পালিয়ে গেলেন ও অচিরেই ধরা পরলেন।এইরকমে বার বার পালিয়ে যাওয়াতে তাঁর মা বিরক্ত হয়ে বললেন=*
*পুত্র বাতুল হইল,রাখহ বান্ধিয়া।*
*🌻পিতা পুত্রের প্রেমোন্মাদ বুঝতে পেরে উত্তর করলেন=*
*ইন্দ্র সম ঐশ্বর্য‍্য ভোগ,স্ত্রী অপ্সরা সম।*
*ইহাতে বান্ধিতে যার,নারিলেক মন।।*
*দড়ির বন্ধনে তারে,রাখিবে কিমতে।*
*জন্ম-দাতা পিতা নারে,প্রারব্ধ খন্ডাইতে।।*
*চৈতন‍্য চন্দ্রের কৃপা,হইয়াছে উহারে।*
*চৈতন‍্য প্রভুর বাতুল,কে রাখিতে পারে।।*
           *(শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃত)*
*🌻এই কথাগুলি শোনার পর রঘুনাথ জননী নিরুত্তর রইলেন।*
*🙏বানান ভুল ক্ষমা করবেন🙏*
               ক্রমাগত*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০৪)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত ও শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত,বাংলা ১৩০০ সন🌻*
*🌻পাণিহাটি গমন,দন্ড মহোৎসব🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻এই সময় নিত‍্যানন্দ প্রভু সন্নিকটবর্তী পাণিহাটি গ্রামে ছিলেন।এই পাণিহাটিতে এক অদ্ভুত লীলা হয়।লীলা সম্বন্ধে শ্রীচৈতন‍্য ভাগবতে পায়=*
*হেন মতে নিত‍্যানন্দ,পাণিহাটি গ্রামে।*
*রহিলেন সকল পার্ষদগণ সনে।।*
*নৃত‍্য করিবার ইচ্ছা,হইল অন্তরে।*
*গায়ন সকলে আসি,মিলিলা সত্বরে।।*
*নিত‍্যানন্দ স্বরূপের,প্রেম দৃষ্টি পাতে।*
*সবার হইল,আত্ম বিস্মৃতি দেহেতে।।*
*যে ভক্তি গোপীকাগণে,কহে ভাগবতে।*
*নিত‍্যানন্দ হইতে তাহা,পাইল জগতে।।*
*নিত‍্যানন্দ বসিয়া আছেন,সিংহাসনে।*
*সম্মুখে করয়ে নৃত্য,পারিষদ গণে।।*
*কেহ গিয়া বৃক্ষের,উপর ডালে চড়ে।*
*পাতে পাতে বেড়ায়,তথাপি নাহি পড়ে।।*
*কেহ বা গুবাক বনে,যায় নড় দিয়া।*
*গাছ সাত পাঁচ গু_,একত্র করিয়া*।।                                      *হেন সে দেহেতে,জন্মিয়াছে প্রেমবল।*
*তৃণপ্রায় উপাড়িয়া,ফেলায় সকল।।*
*যে দিকে দেখেন,নিত‍্যানন্দ মহাশয়।*
*সেই দিকে মহাপ্রেম,ভক্তি বৃষ্টি হয়।।*
*যাহারে চাহেন,সেই প্রেমে মূর্ছা পায়।*
*বস্ত্র না সম্বরে,ভূমে পড়ি গড়ি যায়।।*
*এইরূপে পাণিহাটি গ্রামে,তিনমাস*।
*নিত‍্যানন্দ প্রভু করে,ভক্তির বিলাস।।*  *ইত‍্যাদি*
*🌻এই প্রকারে যখন নিত‍্যানন্দের প্রেম-সমুদ্র উচ্ছসিত হয়ে সমস্ত জগত ভাসিয়ে দিচ্ছে,স্ত্রী-বালক,যবন-বৌদ্ধ, চোর-দস‍্যু,তার্কিক-নাস্তিক পর্যন্ত সে সমুদ্রে ডুবছে,তখন রঘুনাথ পিতার আজ্ঞা গ্রহণ পূর্বক পাণিহাটিতে উপস্থিত হলেন।যখন পৌঁছিলেন, তখন নিতাইচাঁদ গঙ্গাতীরে একটি বৃক্ষমূলে চতুর্দিকে ভক্ত-পরিবেষ্টিত হয়ে বসে আছেন। রঘুনাথ দেখলেন কি যে,নিতাইচাঁদের অঙ্গ হতে সূর্য‍্যের মতো তেজ নির্গত হচ্ছে। কিন্তু সে শোভা স্নিগ্ধ-মধুর। রঘুনাথ এই দৃশ্য দেখে বিমোহিত হলেন এবং দূর হতে দন্ডবৎ প্রণাম করলেন।কাছে একজন ভক্ত ছিলেন,তিনি রঘুনাথকে দেখিয়ে বললেন, "ঐ রঘুনাথ এসেছে"।*
*শুনি--প্রভু কহে,চোরা দিলি দরশন।*
*আয় আয় আজি তোরে,করিব দন্ডন।।*
*🌻রঘুনাথ ধনীর সন্তান,তাঁর অনুরাগের কথা তখন দেশে রাষ্ট্র হয়েছে অর্থ‍্যাৎ ছড়িয়ে পড়েছে।আমার নিতাইচাঁদ অন্তর্য‍্যামী, তিনি রঘুনাথের মনের কথা জানেন ; তাতে রঘুনাথের প্রতি তাঁর কৃপা হয়েছে।এই জন‍্যই অতি প্রীতিতে তিনি রঘুনাথকে "চোরা" এই সম্বোধনটি করলেন। নিতাইচাঁদের এই প্রীতি-সম্বোধনে রঘুনাথ চরম আনন্দ পেলেন এবং তিনি কাছে গেলেন না, ভাবলেন,আমি প্রভুর স্পর্শের অযোগ্য ; আমি বিষয়ী,আমি তাঁর কাছে যাব না।আমার নিতাইচাঁদ বড় কৌতুকী, তিনি রঘুনাথকে টেনে কাছে আনলেন।এবং তাঁর মস্তকে পদ পদার্পণ পূর্বক বললেন=*
*নিকটে না আইস মোর,ভাগ দূরে দূরে।*
*আজি লাগ পাইয়াছো,দন্ডিমু তোমারে।।*
*দধি চিড়া ভালমতে,খাওয়াও মোরগণে।*
*শুনিয়া আনন্দ হৈল, রঘুনাথের মনে।।*
                           *(শ্রীচৈঃচরিতামৃত)*
*🌻তাঁর প্রতি এই অভাবিত অপরিমিত করুণা দর্শনে রঘুনাথের মনে অশেষ আনন্দ উৎপন্ন হ'ল। তিনি তাড়াতাড়ি করে দধি,চিড়া,নানাবিধ সন্দেশ,দুগ্ধ ও চিনি ইত‍্যাদি সমস্ত সামগ্রী দ্রব‍্য বহু পরিমাণে আনাইলেন, তারসঙ্গে মৃৎপাত্র আনালেন।মহা মহোৎসব আরম্ভ হ'ল।এবং দধি-চিড়া  মহোৎসব উপলক্ষ্যে অসংখ্য অসংখ্য ভিন্ন লোক,ব্রাহ্মণ, ভক্তগণ উপস্থিত হয়ে প্রসাদ পেলেন।কত যে ভক্তগণ ছিলেন তার কথা মুখে বলে বা গণনে অসম্ভব।গঙ্গারতীরে মহোৎসব হয়েছিল, বহু বহু ভক্তগণ গঙ্গার জলে নেমে প্রসাদ সেবা করেছেন।*
*🙏পরের অংশ পরবর্তী পর্বে🙏*
*🙏বানান ভুল ক্ষমা করবেন🙏*
               *ক্রমাগত*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০৫)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻পাণিহাটি মহোৎসব 🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃতে লিখিত আছে যে, যারা শুধু কৌতুক দেখতে গ্রামান্তর হতে এসেছিল,তারাও দধি চিড়া ও কদলী প্রভৃতি ভক্ষণ করে গিয়াছিল।আরও লিখিত আছে =*
*মহোৎসব শুনি পশারী,নানাগ্রাম হইতে।*
*চিড়া দধি কলা সন্দেশ,আনিল বেচিতে।।*
*যত দ্রব‍্য লইয়া আইসে, সব মূল‍্যে লয়।*
*তারি দ্রব‍্য মূল‍্য দিয়া,তাহারে খাওয়ায়।।*
*🌻এইরূপে সেই মহোৎসবে এত এত লোক সংঘটন হয়েছিল যে,গঙ্গাতীরে,সেই বিস্তৃত ক্ষেত্রে বসার অভাব হওয়ায় অনেকে দাঁড়িয়েছিল।তখন কাজে কাজেই=*
*তীরে স্থান না পাইয়া,আর কত জন।*
*জলে নামি করে,দধি চিপিটক ভক্ষণ।।*
*🌻এইরকম ভাবে দয়াল নিতাই রঘুনাথকে অযাচিত ভাবে করুণা করেন।আমার নিতাইচাঁদের স্বভাবই ঐরকম, যেচে দান করেন।এই উৎসবে নিতাইচাঁদের ধ‍্যানে,আকৃষ্ট হয়ে স্বয়ং মহাপ্রভু আবির্ভূত হয়েছিলেন।এইরূপে উৎসব সমাপ্তির সঙ্গে দিবা অবসান হল।তখন রাঘব পন্ডিত নামে কোন ভক্ত সগণ নিতাইচাঁদকে আপনার বাড়ী নিয়ে গেলেন।আমাদের রঘুনাথকেও কাজেই সেখানে যেতে হল।*
*🌻পাণিসাটিতে রাঘবপন্ডিতের বাড়ীতেই নিত‍্যানন্দের কীর্তনানন্দ হত।সে কীর্তনের উপমা নাই।সংকীর্তনান্তে সকলে প্রসাদ পেতে বসলেন।রঘুনাথকেও বসতে বলা হল, কিন্তু তিনি বসলেন না।তাঁর ইচ্ছা যে,ভক্তগণের ভোজনাবশেষ প্রাপ্ত হন।এই পরম বস্তুর মাহাত্ম‍্য অসীম। চৈতন‍্য চরিতামৃতে পায়=*
*ভক্ত-পদ-ধূলি আর ভক্ত-পদ জল।*
*ভক্ত-ভুক্ত-অবশেষ, এই তিন মহাবল।।*
*এই তিন সেবা হৈতে,কৃষ্ণ প্রেমা হয়।*
*পুনঃ পুনঃ সর্ব শাস্ত্রে ফুকারিয়া কয়।।*
*🌻🌻তথাহি শাস্ত্রং🌻🌻*
*দুষ্টাবিষ্টবিপাশঃ স‍্যাদ্ভক্তপাদরজাশ্রয়াৎ।*
*সর্বপাপবিনির্মুক্তো ভক্তানাং চরণামৃতাৎ।।*
                       *ইতি আগমে*
*🌻🌻🌻ভবিষ‍্যতে চ🌻🌻🌻*
*সর্বপাপং ক্ষয়ং যান্তি বৈষ্ণবোচ্ছিষ্ট ভোজনাৎ।*
*🌻🌻পুনস্তত্রৈব🌻🌻*
*সৎপাদরজোভিষিক্তং শ্রদ্ধান্বিত ভবেদ্ যদি।*
*ভক্ষণে প্রেমভক্তিশ্চ লভতে নাত্র সংশয়ঃ।।*
*🌻অতএব রঘুনাথ আহারে বসলেন না, এবং অবশেষে কেবল ভক্তের নয়, স্বয়ং প্রভুর শেষ নাত্র প্রাপ্ত হয়ে কৃতকৃতার্থ হলেন।*
*🌹রাত্রি প্রভাতে প্রভু নিজগণ সহ পুনর্বার সেই বৃক্ষমূলে গিয়া বসলেন ও রঘুনাথকে কাছে ডেকে এনে বললেন,"রঘু" তোমার অভীষ্ট সিদ্ধ হবে, তোমার এই মহোৎসবে মহাপ্রভুর আবির্ভাব হয়েছিল,তিনি তোমাকে কৃপা করে গ্রহণ করবেন।অতএব তুমি নিশ্চিন্ত হয়ে বাড়ী যাও, শীঘ্রই তুমি মহাপ্রভুর শ্রীচরণে আশ্রয় পাবে।রহস‍্যেতে রঘুনাথের দন্ড, এই জন্য ঐ মহোৎসবকে "দন্ড মহোৎসব" বলা হয়ে থাকে।*
*🙏বানান ভুল ক্ষমা করবেন🙏*
             *ক্রমাগত*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁৬. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০৬)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻🌻শ্রীক্ষেত্র যাত্রা🌻🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻পাণিহাটি হতে রঘুনাথ গৃহে ফিরলেন।নিতাইচাঁদের কৃপায় রঘুনাথ প্রেমে ঢল ঢল করতে লাগলেন।তখন তাঁর নয়নের উপর গৌর-নিতাইর লীলাবলী ঝলকে ঝলকে প্রতিফলিত হতে লাগিল।সেইদিন হতে রঘুনাথ আর বাড়ীর ভিতরে গেলেন না, বাহিরে দূর্গামন্ডপে রইলেন। এবং প্রাণের উদ্বেগে,বিরহের যন্ত্রণায়, "হা গৌরাঙ্গ,হা গৌরাঙ্গ " করতে লাগলেন।*
*কোথা   মোর    দয়াল      গৌরাঙ্গ*
*তুমি বিনে হায় হায়,এ হৃদি ফাটিয়া যায়,*
        *কবে নাথ পাব তব সঙ্গ।।*
*নিজ গুণে যদি মোরে,বান্ধিয়া কৃপার ডোরে,*
       *লয়ে যাও চরণ সদনে।*
*তবে আশা পূর্ণ হয়,হৃদে শান্তি উপজয়,*
       *তবে দাস বাঁচিবে হে প্রাণে।।*
*হা      হা       প্রভো   দয়ার   সাগর।*
*প্রাণ যায়,প্রাণ যায়,করিব হে কি উপায়,*
     *যন্ত্রণায় ফাটিছে অন্তর।।*
*একালে দয়াল হরি,তুমি কৃপা মাত্র করি,*
      *অধীনের বাসনাটী পূর।*
*এ দীন বৈষ্ণব দাস,বলে বাক‍্য আশ্বাস,*
     *অচিরে পাইবে চিত্ত মোর।।*
*🌻পালিয়ে যাবার যো নাই; চতুর্দিকে প্রহরীগণ সর্বদা সাবধানে থাকে।একদিন সে সুবিধা আপনি এসে জুটিল।যিনি ভক্তের ক্রন্দনে স্বর্গ-সিংহাসনেও স্থির থাকতে পারেন না, যিনি ভক্তের জন্য কত অসাধ‍্য সাধন করে থাকেন,যিনি ভক্তাহ্বানে একদা স্ফটিক-স্তম্ভে আবির্ভূত হয়ে ছিলেন,যিনি কেবল ভক্ত মাত্রেরই প্রেমাধীন, সেই দয়ালু প্রভু রঘুনাথের কাতর প্রার্থনায় অস্থির হয়ে উপায় করে দিলেন।*
*🌻রঘুনাথের গুরুদেব শ্রীযদুনন্দনাচার্য‍্য,(শ্রীযদুনন্দনাচার্য‍্য অদ্বৈতের শাখা।তাঁর শাখা উপশাখার,নাহি হয় লেখা।।বাসুদেব দত্তের তিহো,কৃপার ভাজন।সর্বভাবে আশ্রিয়াছে,চৈতন‍্য চরণ।।) কোন কারণে আচার্য‍্যের পূজারী চলে গিয়েছিলেন।একদিন রাত্রি শেষে আচার্য‍্য ঠাকুর এসে বললেন, রঘুনাথ!আমার পূজারী চলে গিয়েছে,আর পূজার জন্য আপাততঃ কোন ব্রাহ্মণ পাচ্ছি না,এখন যদি তুমি একে বুঝিয়ে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও,তবেই হয়। রঘুনাথ গুরুদেবের সঙ্গে চলিলেন ; কতক দূর গিয়ে গুরুদেবকে বললেন, প্রভো!আপনি ঘরে যান,আমি পূজারী ঠাকুর কে পাঠিয়ে দিব। রঘুনাথ এই ছলে গুরুর নিকট হতে গমনের আজ্ঞা নিয়ে প্রথমে সেই পূজারীকে পাঠিয়ে দিলেন, এবং তারপরে আর বাড়ীর দিকে না এসে শ্রীগৌরাঙ্গ টানে বেড়িয়ে পড়লেন।এইরূপে রঘুনাথ =*
*দারা গৃস সম্পদ,নিজ রাজ‍্য অধিপদ,*
      *মন প্রায় সকল ত‍্যজিল।*
*🌻রাত্রে প্রসরীরা নিদ্রিত হয়েছিল,তারা এ সংবাদ জানতে পারল না।*
*🌻রঘুনাথ সব কিছু ফেলে চলে গেলেন।রঘুনাথ দিক পরিবর্তন না করে পিঞ্জর-মুক্ত বিহঙ্গের মতো উর্ধশ্বাসে পূর্বমুখেই চললেন ও পশ্চাৎ ফিরে ক্ষণে ক্ষণে দেখতে লাগলেন যে,কেউ তাঁর খোঁজে আসছে কি না।নিজের সুখ-দুঃখের প্রতি বিন্দুমাত্র কোন খেয়াল নেই,পথে চলতে চলতে পায়ে কত উছট লাগছে,কত বার পদস্খলন হচ্ছে, কতবার আছাড় খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন, সে দিকে ভ্রূক্ষেপ নেই, মুখে কেবল হে নিতাই,হে চৈতন‍্য এই মাত্র বলছেন আর দৌড়াচ্ছেন।তাঁর মন ভয় এবং উদ্বেগে যুগপৎ আন্দোলিত, তিনি এ সময়ে সেই অনন্ত-শরণ শ্রীগৌরাঙ্গকে এক-চিত্তে ডাকতে লাগলেন।*
    *হে গৌরাঙ্গ নিত‍্যানন্দ চাঁদ।*
*উদ্ধার করহ মোরে,কৃপা বিতরণ করে,*
      *এইবার এড়ি যেন ফাঁদ।।*
    *হে গৌরাঙ্গ পতিতের নাথ।*
*হে দয়াল নিত‍্যানন্দ,হে প্রভুর ভক্তবৃন্দ,*
      *কর সবে কৃপা দৃষ্টিপাত।।*
*হে গৌরাঙ্গ দয়াময়,না হইও নিরদয়,*
      *পাই যেন চরণ-দর্শন।*
*এ দীন বৈষ্ণব দাস,বলে বাক‍্য আশ্বাস,*
      *দেখা পাবে--ভাব কি কারণ।।*
*🙏বানান ভুল ক্ষমা করবেন🙏*
            *ধারাবাহিক*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁৭. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *(০৭)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
  *🌻🌻শ্রীক্ষেত্র--যাত্রা🌻🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻এইভাবে রঘুনাথ পথ ছেড়ে বন-পথে চলতে চলতে সন্ধ‍্যাকালে এক গোয়ালার বাথানে উপস্থিত হলেন।সেই জায়গাটি তাঁর বাড়ী থেকে প্রায় পনের ক্রোশ দূরে অবস্থিত।গোয়ালা তাঁকে পরিশ্রান্ত দেখে দুধ এনে দিলে তিনি সে দিন সেই দুগ্ধ মাত্রই পান করে রইলেন।*
*🍀ঐদিকে রঘুনাথকে দেখতে না পেয়ে আত্মীয় স্বজন বড় ব‍্যাকুল হয়ে উঠলেন।রঘুনাথের পূর্ব আচরণে তাঁরা অক্লেশেই বুঝতে পারলেন যে, রঘুনাথ পলায়ন করেছেন।এইরূ মনে হওয়ায় তাঁদের শোকের আর সীমা থাকল না। রঘুনাথের জননী রঘুনাথকে দেখতে না পেয়ে চরম দুঃখে ভূমিতে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন।আর সেই অপরূপা লাবণ‍্যময়ী বালিকাটি যিনি কেবল স্বামী দর্শন ভিন্ন অন‍্য কোন সুখ বুঝেন না,যিনি তাতেই মাত্র পরিতুষ্টা থাকতেন,তাঁর সেই একমাত্র সুখেও বিধাতা বাদ সাধলেন।সে অবলা বালার বিলাপে পাষাণও গলে গেল।*
*🍁এখানে একটা কথা বলে রাখি। ভগবানের গুণাবলীর মধ্যে একটি গুণ যে,তিনি কাউকেও চিরদুঃখে নিমজ্জিত করে রাখেন না।শ্রীগৌরহরির কারণে রঘুনাথের পরিবার বতর্মান অনাথ,সদা বিষাদাচ্ছন্ন,এমন কথাও পরে কেউ বলতে পারে নাই।এই যে রঘুনাথের জননী, যিনি একসময় ত্রিজগৎ শূন‍্য বোধ করেছিলেন,কেন?কোন পুত্র সন্তান না থাকাই।পরে তাঁর পুত্রবধূই পুত্রস্নেহের অধিকারিণী হয়েছিলেন। পুত্রবধূকে বক্ষে ধরেই রঘুনাথের বিরহ-জ্বালা ভুলে থাকতেন।আর রঘুনাথ যে কমলাননা উন্মুখ যৌবনা সুশীলা ভার্য‍্যাটি এবং অতুল সম্পদ ত‍্যাগ করে চলে গেলেন,এর পর এই ঘটনাটি যখন সেই দুঃখিনী রমণী (রঘুনাথের পত্নী) ভাবতেন, তখন তিনি এক অনুপম ভাবে বিভাবিত হয়ে পড়তেন।যখন ভাবতেন ভগবানের জন্য,শ্রীগৌরাঙ্গের জন্য, যে তাঁর স্বামী তাঁদের ছেড়ে গিয়েছেন, তখন তাঁর প্রতি অঙ্গ দিয়ে প্রেমরাশি ফুটে পড়ত,ভগবৎ প্রেমে তিনি সমস্ত ভুলে গিয়ে বিবশা ও স্তম্ভিতা হয়ে রইতেন।অবশেষে এই চিন্তাই তাঁর একমাত্র সুখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।আবার পুত্রবধূর এই প্রেমানন্দ সন্দর্শনে শ্বাশুড়ী প্রহর্ষিতা(আনন্দময়ী)হতেন।*
*☘রঘুনাথের নিদারুণ পলায়ন কাহিনী যখন গুরুদেব যদুনন্দনাচার্য‍্য শুনলেন,তখন তিনি রাত্রের ঘটনা ভেবে লজ্জিত ও বিষাদিত হলেন। কিন্তু, "রঘুনাথ" ভালই করেছে,ইহা পরক্ষণেই তাঁর মনে হ'ল।তখন তিনি ঘটনা বলবার ও শোকাতুরগণকে সান্ত্বনা করবার জন্য শীঘ্রই রঘুনাথের বাড়ী আসিলেন। তিনি উপস্থিত হ'লে হিরণ‍্য দাস প্রভৃতি জিজ্ঞাসাক্রমে তাঁর নিকট হতে সমস্ত ঘটনা অবগত হয়ে বুঝতে পারলেন যে,তাঁদের অনুমানই যথার্থ হয়েছে।তখন রঘুনাথের অনুসন্ধানে দশজন লোক প্রেরিত হ'ল।*
*🌼ঐ সময়ে গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ নীলাচল (মহাপ্রভু-দর্শনে) যাচ্ছিলেন।গোবর্ধন দাসের প্রেরিত লোক "ঝাকরা" নামক স্থানে এসে ভক্তগণের সঙ্গ পেলেন।তারা গোবর্ধন দাসের প্রদত্ত পত্র প্রদানান্তর রঘুনাথের কথা জিজ্ঞাসা করলে,শিবানন্দ সেন ( যিনি অধ‍্যক্ষতা করে সমস্ত ভক্তদেরকে নীলাচল নিয়ে যেতেন,তিনি উত্তর করলেন, "রঘুনাথ" এখানে আসেন নাই",এই কথা শুনে গোবর্ধন দাসের প্রেরিত লোকজন ফিরে আসলেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
         *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁৮. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(০৮)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌সম্মিলন🙌🙌🙌🙌🙌*
       """""""""""""""""''''''''''''''
*🌻এদিকে রঘুনাথ অতি প্রত‍্যুষে উঠিয়া পূর্বদিক ত‍্যাগ করতঃ দক্ষিণ মুখে চলিলেন।সেই পূর্ববৎ ঊর্ধশ্বাসে "শ্রীগৌরাঙ্গ,শ্রীগৌরাঙ্গ" বলতে বলতে চললেন।যথা ""ভক্তমাল গ্রন্থে পায়"",*
*অতি উৎকণ্ঠিত মন,উন্মত্তের প্রায়।*
*দিগ্বিদিক ফিরি বুলে,গ্রাম না তাকায়।।*
*জল--জঙ্গল--তৃণ, কন্টক শর্করা।*
*নাহি মানে,ধায় মাত্র বাতুলের পারা।।*
*🙌🙌এইভাবে যেতে যেতে=*
*"বার দিনে উত্তরিল,শ্রীপুরুষোত্তম*।
*তার মধ্যে তিন সন্ধ‍্যা, আহার সে নাম।।*
*🌻এইভাবে ১৯ বৎসর বয়সের বালক রঘুনাথ ১৪৩৯ শকে নীলাচলে পৌঁছলেন।যখন তিনি মহাপ্রভুর নিকট উপস্থিত হলেন,তখন শ্রীগৌরাঙ্গ স্বরূপ-আদি গণসহ বসেছিলেন।মহাপ্রভুকে দর্শন করেই, দূর হতেই প্রণিপাত করলেন।বাসুদেব দত্তের কনিষ্ঠ মুকুন্দ দত্ত মহাপ্রভুর নিকটে ছিলেন।তিনি রঘুনাথকে দেখেই বললেন, ঐ রঘুনাথ এসেছে, রঘুনাথ কৃতাঞ্জলি সহকারে বলতে লাগলেন=*
*হে নাথ!হে প্রভো!ওহে করুণানিধান।*
*কৃপা কর, শ্রীচরণে লইনু শরণ।।*
*অনাথ অধম আমি, অতি হীন দীন।*
*কৃপাবলোকন কর, জানিয়া অধীন।।* *(ভক্তমাল)*
*🌻এই প্রকার বিবিধ দৈন‍্য প্রকাশ করে রঘুনাথ ভূমে গড়াগড়ি দিতে লাগলে মহাপ্রভু ঈষৎ হাস‍্য সহকারে তাঁকে ভূমি হতে উঠিয়ে আলিঙ্গন করলেন।তৎপর রঘুনাথ,স্বরূপাদি সকলকে প্রণাম করলে তাঁরা স্নেহ সহকারে আলিঙ্গন করলেন।অতঃপর মহাপ্রভু দুই-একটি কথা বোলে রঘুনাথকে স্বরূপ গোস্বামীর হাতে সমর্পণ করলেন।সে কি কথা,তা শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃতের ভাষায় যা লেখা আছে=*
*প্রভু কহে,কৃষ্ণ কৃপা,বলিষ্ঠ সবা হৈতে।*
*তোমাকে কাড়িল,বিষয়-বিষ্ঠা-গর্ত হৈতে।।*
*রঘুনাথ কহে,মনে কৃষ্ণ নাহি জানি।*
*তোমার কৃপায় কাড়িল আমা,এই আমি মানি।।*
*প্রভু কহে,তোমার পিতা জেঠা দুই জনে।*
*চক্রবর্তী• সম্বন্ধে আমি,আজা করি মানে।।*
*চক্রবর্তীর হয় দোঁহে,ভ্রাতৃ রূপ দাস।*
*অতএব আমি তাঁরে,করি পরিহাস।।*
*ইহার বাপ জেঠা,বিষয়-বিষ্ঠা-গর্তের কীড়া।*
*সুখ করি মানে,বিষম বিষয়ের মহাপীড়া।।*
*যদ‍্যপি ব্রহ্মণ‍্য করে,ব্রাহ্মণের সহায়।*
*শুদ্ধ বৈষ্ণব নহে,হয় বৈষ্ণবের প্রায়।।*
*তথাপি বিষয়ের স্বভাব,করে মহা অন্ধ।*
*সেই কর্ম করায়,যাতে হয় ভববন্ধ।।*
*হেন বিষয় হৈতে,কৃষ্ণ উদ্ধারিল তোমা।*
*কহনে না যায়,কৃষ্ণ-কৃপার মহিমা।।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
*🙌🙌🙌🙌চক্রবর্তী🙌🙌🙌🙌*
*🌻চক্রবর্তী=নীলাম্বর চক্রবর্তী। শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মাতামহ।*
*আচার্য‍্য গোসাঞীর শিষ‍্য শ্রীযদুনন্দন।*
*রঘুনাথ তাঁর শিষ্য,আত্ম সমর্পণ*।।
*বিষয় ছাড়িলা,নিত‍্যানন্দ কৃপা বলে।*
*প্রভু তাঁরে সমর্পিলা,স্বরূপের স্থানে।।*
*শিক্ষা করাইল তাঁরে,কায় বাক‍্য মনে।*
*কারণ বুঝিল মাত্র,গৌরাঙ্গ আপনে।।*
*কেন হেন কার্য‍্য করে?বুঝে কোন জনে।।*
🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌
*🌻এইরকম কথাবার্তার পর মহাপ্রভু রঘুনাথকে স্বরূপ দামোদর গোস্বামীর হস্তে সমর্পণ করে বললেন,রঘুকে তোমার হাতে সমর্পণ করলাম, রঘুর সম্বন্ধে যা কিছু করতে হয়,তুমি করবে। এবং গুরুদত্ত ভৃত‍্য গোবিন্দকে বললেন, "পথে রঘুনাথের অনেক উপবাস হয়েছে ", তুমি রঘুকে কয়েকদিন ভাল করে সেবা কর।এর পর তিনি মধ‍্যাহ্ন-ভোজনে গমন করলে, রঘুনাথ সমুদ্র-স্নান করে জগন্নাথ দর্শন করে তবে প্রসাদ পেলেন। রঘুনাথের প্রতি মহাপ্রভুর ঈদৃশ(এপ্রকার)কৃপাবলোকনে ভক্তগণ রঘুনাথের ভাগ‍্য প্রশংসা করতে লাগলেন। মহাপ্রভুর গণে রঘুনাথ নামে ইতিপূর্বে আর দুইজন ভক্ত ছিলেন  ; এই নবাগত রঘুনাথকে নিয়ে এক্ষণে তিনজন হওয়া  প্রযুক্ত "স্বরূপের রঘু" বলে অভিহিত হলেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
         *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁৯. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
(০৯)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীস্বরূপের আশ্রয়ে রঘু🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻এইরূপে রঘুনাথ মহাপ্রভুর নিকট আসিয়া অনেক দিনের পরে শান্তি পেলেন, অনেক দিন পর তিনি পরিপূর্ণ ভাবে আনন্দ লাভ করতে অনুভব করলেন।সে সম্পদ ও আত্মীয় বন্ধন হতে যে তিনি বেড়োতে পেরেছেন, তাতে তিনি অতি সুখী হলেন, আর এইভাবে অনেক দিনের পরে তিনি একটি শ্লোক প্রকাশ করেন। যথা চৈতন‍্যস্তবকল্পবৃক্ষে=*
*"মহাসম্পদ্দারাদপি পতিতমুদ্ধৃত‍্য কৃপয়া,*
*স্বরূপে যঃ স্বীয়ে কুজনমপি মাংন‍্যস‍্যমুদিতঃ।*
*উরোগুঞ্জাহারং প্রিয়মপি চ গোবর্ধনশিলাং,*
*দদৌ মে গৌরাঙ্গো হৃদয় উদয়ন্মাং মদয়তি"।।*
*🌻এর অনুবাদ (শ্রীপ্রভু নবদ্বীপ চন্দ্র গোস্বামী কৃত)🌻*
*আমি অভাজন জন,বেষ্টিত সম্পদ ধন,*
      *ত্রিতাপ সে বনে দাবানল।*
*স্বরূপে আশ্রয় দিয়ে,করুণাতে উদ্ধারিয়ে,*
      *প্রকাশিল আনন্দ প্রবল।।*
*বক্ষে ধৃত গুঞ্জাহার,গোবর্ধন শিলা আর,*
      *সঁপিলেন দয়া করি মোরে।*
*এ হেন দয়ার নিধি,হৃদয়ে উদয় যদি,*
       *সে আনন্দ ধৈর্য‍্য কেবা ধরে।।*
    *আরে মোর সোনার গৌর প্রভু।*
*হৃদয়ে উদয় হৈয়া,মাতায় আমার হিয়া,*
     *ভুলিতে নারিব আর কভু।।*
*🌻এই যে শিলা গুঞ্জাহার,এর কথা একটু পরে নিবেদন করব।*
*🙏রঘুনাথ স্বরূপ গোস্বামীর আশ্রয়ে মনের আনন্দে নীলাচলে বাস করতে লাগলেন। স্বরূপের ন‍্যায় মহাপ্রভুর অন্তরঙ্গ ভক্ত কেউই ছিলেন না  ; মহাপ্রভুর মনের ভাব একমাত্র স্বরূপ গোস্বামীই বুঝতেন। মহাপ্রভুর প্রতি তাঁর প্রীতির একশেষ ছিল।যখন মহাপ্রভু সন্ন‍্যাস গ্রহণ করেন,তখন স্বরূপ, (এর পূর্ব নাম পুরুষোত্তম) সেই নিদারুণ বার্তা শুনে পাগলের মত দেশে দেশে ফিরতে লাগলেন, অবশেষে বিষম বিরহে আপনিও সন্ন‍্যাস গ্রহণ করলেন। কিন্তু মহাপ্রভুর নিকটে গেলেন না, অভিমানে কাশী বাস করতে লাগলেন। পরে মহাপ্রভু যখন দক্ষিণ দেশ ভ্রমণ করে নীলাচলে আসিলেন, তখন তিনি আর থাকতে না পেরে,সে সংবাদ শুনিবা মাত্রই দ্রুতপদে নীলাচলে উপস্থিত ও মহাপ্রভুর সঙ্গে পুন মিলিত হন।*
*এই শ্লোকটি স্বরূপ গোস্বামীর*
*রাধাকৃষ্ণ প্রণয় বিকৃতি হ্লাদিনী শক্তিরস্মা,*
*দেকাত্মানাবপি ভুবি পুরা দেহভেদং গতৌ তৌ।*
*চৈতন‍্যখ‍্যং প্রকট মধুনা তদ্বয়ঞ্চৈক‍্যমাপ্তং,*
*রাধাভাবদ‍্যুতিসুবলিতং নৌমি কৃষ্ণস্বরূপং"।।*
*🌻ভাবার্থ=কৃষ্ণ-প্রেমের বিকৃতিরূপ হ্লাদিনী শক্তির নাম রাধা।এই হেতু স্বরূপতঃ তাঁরা একাত্মা হয়েও বিলাস-বাসনায় পুরাকাল হতে দেহ-ভেদ স্বীকার করেন।সম্প্রতি সেই দুইজন একত্ব প্রাপ্ত হয়ে শ্রীচৈতন‍্য নামে প্রকট হয়েছেন।অতএব রাধাভাবদ‍্যুতি-সুবলিত কৃষ্ণ-স্বরূপ সেই চৈতন‍্য দেবকে প্রণাম করি।*
*🌻ফলতঃ স্বরূপের ন‍্যায় মহাপ্রভুর অন্তরঙ্গ ভক্ত আর কেউই ছিলেন না। এ হেন স্বরূপের আশ্রয় পেয়ে ও তাঁর কাছে হতে বিবিধ নিগূঢ় তত্ত্ব অবগত হয়ে রঘুনাথ মনের আনন্দে নীলাচলে বাস করতে লাগলেন। অতএব স্বরূপ  রঘুনাথের শিক্ষাগুরু।*
*🌻প্রেমবিলাসে পাওয়া যায় 🌻*
*শৃঙ্গার ললিত রসে,অধিক নিপুণ।*
*দিবানিশি সহায় করে,ললিতার গুণ।।*
*পূর্ব বাক‍্য সিদ্ধ আছে,বুঝে কোন জনা।*
*স্বরূপের প্রিয় বলি,করেন করুণা।।*
*🌼রঘুনাথের গৃহবাস কালে সুখ ছিল না,পরে বৃন্দাবন বাসকালেও তাঁর মনে পরিপূর্ণ সুখ ছিল না  ;  সুতরাং তিনি নীলাচলে যে কয়েক বৎসর ছিলেন,মনের সুখেই ছিলেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
        *বানান ভুল মার্জনীয়*
*উপরে অনের হবে না অনেক হবে।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১০. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
        *🌻রঘুনাথের বৈরাগ‍্য ও মানসিক সেবা🌻*
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১০)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻রঘুনাথের বৈরাগ‍্য ও মানসিক সেবা🌻*
▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪
*শ্রীরঘুনাথ জগন্নাথ দর্শনের পরে মহাপ্রভুর অবশিষ্ট ভোজন ও নাম গ্রহণ করেন।এইরকম পাঁচদিন গত হ'লে রঘুনাথ আর সেবা নিতে গেলেন না,এখন রাত্রি দশ দন্ডের পর (ষাট দন্ডে দিন-রাত হয় ) জগন্নাথের অঞ্জলি দর্শনের পর সিংহদ্বারে দাঁড়িয়ে থাকেন,তখন কেউ কিছু দিলে তবে সেবা করেন,নতুবা উপবাস থাকেন।গোবিন্দ এইকথা মহাপ্রভুকে জানালেন।এইকথা শুনে মহাপ্রভু বড় সন্তুষ্ট হলেন এবং এই উপলক্ষ্যে কৃপা করে বৈষ্ণবগণকে কিছু উপদেশ প্রদান করলেন।যথা শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃতে পায়=*
*"ভাল কৈলা,বৈরাগির ধর্ম আচরিলা।।*
*বৈরাগী করিবে সদা,নাম সংকীর্তন।*
*মাগিঞা খাইঞা করে,জীবন রক্ষণ।।*
*বৈরাগী হইয়া যেই,করে পরাপেক্ষা।*
*কার্য‍্য সিদ্ধ নহে,কৃষ্ণ করেন উপেক্ষা।।*
*বৈরাগী হইয়া করে,জিহ্বার লালস।*
*পরমার্থ যায়,তার রসে হয় বশ।।*
*বৈরাগীর কৃত‍্য সদা নাম সংকীর্তন*।
*শাক পত্র ফলে মূলে উদর ভরণ।।*
*জিহ্বার লালসে যেই,ইতিউতি ধায়।*
*শিশ্নোদর পরায়ণ,কৃষ্ণ নাহি পায়"।।*
*🌻অনন্তর একদিন রঘুনাথ স্বরূপের দ্বারা মহাপ্রভুকে বলে পাঠাইলেন যে,তাঁর কর্তব্য কি সেই সম্বন্ধে মহাপ্রভু যেন শ্রীমুখে কিছু বলে দেন।এইকথা শুনে মহাপ্রভু হেসে হেসে বললেন,"স্বরূপ তোমায় সব বলবে, স্বরূপের মত আমি অত জানি না",তথাপি আমার বাক‍্য শ্রদ্ধাধিক‍্য হেতু বলছি=*
*"গ্রাম‍্য ফার্তা না কহিবে,গ্রাম‍্য বার্তা না শুনিবে।*
*ভাল না খাইবে, আর ভাল না পরিবে।।*
*অমানী মানদ,কৃষ্ণ নাম সদা লবে*।
*ব্রজে রাধা কৃষ্ণ সেবা মানসে করিবে"।।*
*🌼তথাহি শ্রীমহাপ্রভু বাক‍্যং🌼*
*"তৃণাদপি সুনীচেন তরোরপি সহিষ্ণুনা।*
*অমানিনা মানদেন কীর্তনীয়ঃ সদা হরিঃ"।।*
                    *(শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃত)*
*🌻হায়!বর্তমানে এই সুদুর্লভ উপদেশাবলী সম‍্যক রক্ষিত হয় না,হ'লে বৈষ্ণব সমাজের এত দুর্গতি হ'ত না।এই অমূল‍্য উপদেশগুলি যে শুধু ভেকাশ্রিত বৈষ্ণবগণের পক্ষে,তা নয় ; এইটি বৈষ্ণব ধর্মের মূল সূত্র।*
*🍀এইরূপে রঘুনাথ স্বরূপের সঙ্গে থেকে মহাপ্রভুর অন্তরঙ্গ সেবা করতে লাগলেন।এর কিছুদিন পরেই গৌড়ের ভক্তগণ এসে পৌঁছিলে, রঘুনাথ অদ্বৈতাদি সকলকে প্রণাম করলেন ; এবং রঘুনাথের পিতা তাঁকে নিয়ে যাবার জন্য যে প্রকার লোক ও পত্র পাঠিয়ে ছিলেন,শিবানন্দ সেন তা তাঁকে বললেন।গৌড়ের ভক্তগণ বর্ষার চারমাস নীলাচলে থেকে দেশে ফিরে গেলেন।তখন রঘুনাথের পিতা লোক দ্বারা শিবানন্দের নিকট হতে পুত্রের সমস্ত সংবাদ শুনলেন।*
*🌹গোবর্ধন প্রেরিত লোক ও শিবানন্দ সেনের কথাবার্তা 🌹*
*🙏প্রেমদাসের অনুবাদিত চৈতন‍্যচন্দ্রোদয় নাটকে🙏*
*"সমাগত লোক বলে,শুন মহাশয়।*
*রঘুনাথ দাস সনে,অ'ছে পরিচয়*?
*সেন বলে,"পরিচয় কি জিজ্ঞাস আর?*
*প্রাণাধিক প্রিয়,রঘুনাথ মো সবার"।।*
*তাহার বৈরাগ‍্য রীতি,সৌশীল‍্য ভজন।*
*দেখি তারে প্রীতি করে,সর্ব ভক্তগণ।।*
*শ্রীঅদ্বৈত গোসাঞির,বাসুদেব ছাত্র।*
*যদুনন্দন আচার্য‍্য,তাহার কৃপা পাত্র।।*
*তার শিষ্য রঘুনাথ,প্রাণাধিক মোর।*
*শ্রীচৈতন‍্য-কৃপামৃতে,সিক্ত স্নিগ্ধতর।।*
*বৈরাগ‍্যের নিধি দেখি,গৌর ভগবান।*
*অনুগত করি দিল,স্বরূপের স্থান*।।
*সাধন লিখন আদি,অক্ষে নাহি যাহা।*
*তুল‍্য রঘুর প্রেম,কি কহিব তাহা।।*
                                  *ইত‍্যাদি*
*🌻রঘুনাথের কঠোর বৈরাগ‍্যের কথা শুনে বলা বাহুল‍্য যে,তাঁর পাতা-মাতার মনে দুঃখ উপস্থিত হয়েছিল।রঘুনাথের পিতা পর বর্ষে এক ব্রাহ্মণ দ্বারা চারশত টাকা পাঠিয়ে দেন। রঘুনাথদাস গোস্বামী কিন্তু টাকা গ্রহণ করলেন না।তিনি টাকা দিয়ে কি করবেন?আর টাকার প্রতি আসক্তি থাকলে কি বিংশতি(২০) লক্ষের স্বামীত্ব (মালিকানা) ত‍্যাগ করতে পরতেন? রঘুনাথ টাকা নিলেন না, সে ব্রাহ্মণও কিন্তু টাকা না দিয়ে যান না ; সুতরাং কি করবেন?অগত‍্যা ঐ টাকা মহাপ্রভুর সেবায় ব‍্যয় করতে মনস্থ করে মাসে দুইবার মহাপ্রভুকে নিমন্ত্রণ করতে লাগলেন।মাসে দুইদিন সেবাতে আট পণ কড়ি লাগত, ব্রাহ্মণের নিকট হতে তাহাই মাত্র গ্রহণ করতেন।বাকী টাকা ব্রাহ্মণের কাছে থাকত।কিছুদিন পর রঘুনাথ নিমন্ত্রণ বন্ধ করে দিলেন।তাতে মহাপ্রভু স্বরূপকে জিজ্ঞাসা করে জানলেন যে, রঘুনাথ বিষয়ীর অর্থে ক্রীত দ্রব‍্যে তাঁর সেবা করা অন‍্যায় ভেবে নিমন্ত্রণ বন্ধ করেছেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবোল🙏*
         *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১১. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
        *🌻রঘুনাথের বৈরাগ‍্য ও মানসিক সেবা🌻*
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻রঘুনাথের বৈরাগ‍্য ও মানসিক সেবা🌻*
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
*শুনি--মহাপ্রভু হাসি কহিতে লাগিলা।।*
*বিষয়ীর অন্ন খাইলে,মলিন হয় মন।*
*মলিন মন হৈলে,নহে কৃষ্ণের স্মরণ।।*
*ইহার সঙ্কোচে আমি,এত দিন নিল।*
*ভাল হৈল,আপনে ছাড়ি দিল।।*
                     *(শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃত)*
*🌻অনন্তর, সেবার জন্য সিংহ-দ্বারে দাঁড়িয়ে থাকা রঘুনাথের ভাল লাগল না।তিনি এসব পরিত‍্যাগ করে "ছত্রে" গিয়ে মধ‍্যাহ্নে মাত্র ভিক্ষা করে যেটুকু পান সেইটুকই সেবা করেন।মহাপ্রভু এও শুনলেন,শুনে বড় সন্তুষ্ট হয়ে বললেন,"রঘু ভালই করেছে"। সিংহ-দ্বারে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ‍্যার রীতি ; এতে 'ঐ এক জন আসছে, এ দিবে,ঐ অপর ব‍্যক্তি আসছেন,উনি দিবেন,মনে ইত‍্যাকার(এপ্রকার)বিবিধ সঙ্কল্প জন্মে।এইকথা গুলি বলে মহাপ্রভু প্রীতি সহকারে তাঁকে শ্রীগোবর্ধন গিরির এক খন্ড শিলা ও এক ছড়া গুঞ্জমালা (যা তিন বৎসর পূর্বে তাঁকে "শঙ্করানন্দ সরস্বতী দিয়ে ছিলেন,তা দিয়ে বললেন,এই শিলাকে শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ জেনে তুলসী মঞ্জরী দ্বারা সাত্ত্বিক ভাবে পূজা কর"।) রঘুনাথ শিলা ও মালা পেয়ে বড়ই আনন্দিত হলেন।তিনি ভাবলেন, এ শিলা দিয়ে মহাপ্রভু আমাকে গোবর্ধনে এবং মালা দিয়ে রাধাকুন্ডে বাসের অনুমতি দিলেন।এই নির্দেশ অনুসারে ভবিষ্যতে তিনি গোবর্ধনে ও রাধাকুন্ডে বাস করেছিলেন।*
*🌼কিছুদিন পরে রঘুনাথ ছত্রে ভিক্ষা ত‍্যাগ করাও ত‍্যাগ করলেন।ভাবলেন,আমি যে ভিক্ষা আনি,তাতে অন‍্য একজনের সেবা হতে পারে।অতএব তিনি ইহা ত‍্যাগ করে অন‍্য এক নিয়ম করিলেন।*
*"অনন্ত রঘুনাথের গুণ,কে করিবে লেখা।*
*রঘুনাথের নিয়ম যেন পাথরের রেখা।।*
*সাড়ে সাত প্রহর যায়,যাঁহার স্মরণে।*
*আহার নিদ্রা চারি দন্ড,সেহ নহে কোন দিনে।।*
*বৈরাগ‍্যের কথা তাঁর অদ্ভুত কথন*।
*আজন্ম না দিল,জিহ্বায় রসের স্পর্শন।।*
*ছিঁড়া কানি কান্থা বিনা না পরে বসন।*
*সাবধানে কৈল,প্রভুর আজ্ঞার পালন।।*
                          *(শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃত)*
*🌻রঘুনাথ নিয়ম করলেন যে,প্রসাদ বিক্রেতাদের যে সব প্রসাদ বিক্রি না হয়,বাসি হয়ে গেলে তিন-চারদিন পরে তা সিংহদ্বারের নিকট এক জায়গায় গাভীগণকে খাইতে দেওয়া হয়,তার মধ্যে পঁচা গন্ধে গাভীরাও যা না খেয়ে চলে যায়,রঘুনাথ সেই সব বস্তু নিয়ে আসতেন ও ভাল করে ধৌত করে,অল্প লবণ মিশিয়ে তবে কিছু খেতেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
          *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১২. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
          *🌻রঘুনাথের বৈরাগ্য ও মানসিক সেবা🌻*
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১২)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻রঘুনাথের বৈরাগ্য ও মানসিক সেবা🌻*
*🌺শ্রীস্বরূপ গোস্বামী, রঘুনাথের এই অদ্ভুত অচরণ দেখে বিস্মিত ও বিমোহিত হলেন, এবং একদিন কিছু চেহে খেলেন ও প্রেমানন্দে বলে উঠলেন, "রঘু" তুমি রোজ রোজ ঐরকম অমৃত সেবা কর?আর আমাদেরকে দাও না!এ তোমার কেমন প্রকৃতি? রঘুনাথের সেবা কথা স্বরূপ গোঁসাই গোবিন্দকে বললেন, গোবিন্দ এই সমস্ত কথা মহাপ্রভুকে বললেন।শুনে ভক্ত-বৎসলের প্রেম-বারিধি উচ্ছসিত হয়ে উঠিল, তিনি আর স্থির থাকতে না পেরে,কি করলেন, এই পদটি আস্বাদন করুন।*
*দয়াল গৌরাঙ্গ আমার ভকত-বৎসল।*
*ভাবগ্রাহী জনার্দন, এবে সে শচীনন্দন,*
     *ভক্তের ভাবেতে হন কাতর বিকল।।*
* স্বরূপের রঘুনাথ,ধুইয়া সে শড়ি ভাত,*
    *প্রতিদিন খায়েন আনন্দে।*
*এই সব বিবরণ,এক দিন নিবেদন,*
    *প্রভু কাছে করিলা গোবিন্দ।।*
*শুনিয়া দয়াল মোর,হৈয়ে বিগলিত রে,*
    *রঘুনাথ কাছেতে আইলা।*
*খাঁসা বস্তু খাও রঘু,আমায় না দিলে রে,*
    *এত বলি এক গ্রাস লইলা।।*
*কত না যতনে লক্ষ্মী,রন্ধন করিয়া রে,*
     *যে প্রভুরে খাওয়ায় সতত।*
*অমৃতের অমৃত জিনি,খাদ‍্য খাওয়াইতে রে,*
    *লক্ষ্মী দেবী হন সঙ্কুচিত।।*
*সেই প্রভু দয়াময়,ভাবেতে গলিয়া রে,*
     *শড়ি অন্ন সুখেতে লইলা।*
*(শড়ি অন্ন= পঁচা দুর্গন্ধ অন্ন)*
*আর গ্রাস লইতে প্রভু,হায় হায় করি রে,*
    *স্বরূপ সে হাতেতে ধরিলা।।*
*ঐছন গলিত অন্ন,তব যোগ্য নহে রে,*
     *বলিয়া স্বরূপ কাড়িয়া নিল।*
*প্রভু কহে,নিতি আমি নানা অন্ন খাই রে,*
     *কভু ঐছে স্বাদ না পাইল।।*
*আমার দয়াল প্রভু,ঐছে কত লীলা রে,*
     *করে আহা স্বানুভাবানন্দে।*
*এ দীন বৈষ্ণব দাস,সে সব স্মরিয়া রে,*
      *নিরন্তর ঝুরে ঝুরে কান্দে।।*
*🌻রঘুনাথের নীলাচলাখ‍্যান এইরকম।এইরকম তিনি ষোল বৎসর সেখানে অতিবাহিত করেন।এখন রঘুনাথের এই নীলাচল,কাহিনী শেষ হয়ে আসিল।এখানে আর একটি কথা বলি নাই,তার পরেই আমাদেরকে দুঃখ সহকারে নীলাচল হতে বিদায় নিতে হবে।*
*🌻একসময় রঘুনাথের জ্বর হ'ল।জ্বর অন্তে সকলেই নানারকম দ্রব‍্য খাইতে ইচ্ছে হয়।একদিন রাত্রে রঘুনাথেরও তাইই হল,আর অমনি তিনি মানসে সেই সব সুস্বাদ দ্রব‍্য প্রস্তুত (পাক বা রন্ধন)করতে লাগলেন।সব পাক হয়ে গেলে মানসে তা মহাপ্রভুকে সেবা করালেন। রঘুনাথের মনোমত তৃপ্তিকর নানান খাদ‍্য দ্রব‍্য মহাপ্রভুও বড় তৃপ্তির সহিত সেবা করলেন, এবং রঘুনাথ আনন্দে অবশেষ পেলেন।এইরকমভাবে জ্বরের পথ‍্য হয়ে গেল।*
*🙏এ গেল মানসিক ব‍্যাপার ; ধ‍্যাতা এবং ধ‍্যেয় অন্তর্জগতে যে লীলাই করুন না কেন,বাহ‍্য-জগৎ তাঁর খোঁজ রাখে না,জানতেও পারে না। কিন্তু ভগবান,যে কোন ছলেই হোক,ভক্ত মহিমা প্রচারে সদা ব‍্যস্ত।অতএব চৈতন‍্য চরিতামৃতে এক জায়গায় বলেছেন=*
*🍀ভক্ত-মহিমা বাড়াইতে,ভক্তে সুখ দিতে।*
*🍀মহাপ্রভু সম আর,নাহি ত্রিজগতে।।*
*🌻অতএব ভক্তের হৃদয়-ধন শচীনন্দন পর দিন আর সেবা নিতে গেলেন না।পরদিন নিয়মিত সময়ে গোবিন্দ মহাপ্রভুকে সেবার জন্য বললেন।মহাপ্রভু বলেন,"কালিকার ভোজনে আমার পেট ফুলে গিয়েছে, এখন আর সেবা করতে পারব না"। এই কথা কি মর্ম? হয়ত অনেকেই তা বুঝতে পারলেন না।তখন মহাপ্রভু বললেন,কল‍্য রাত্রে স্বরূপের রঘু আমাকে নানারকম উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট দ্রব‍্য দিয়ে সেবা করিয়েছে।তাতে আজ আমার আর সেবাই রুচি হচ্ছে না।(🙏রঘুনাথ জ্বরের পর যে মানসিক সেবা দিয়েছিলেন তাহাই মহাপ্রভু বললেন🙏)।কিন্তু ভক্তগণ এ কথার মর্ম বুঝলেন না, বিস্মিত হয়ে তাঁরা রঘুনাথের কাছে গিয়ে তথ‍্য জিজ্ঞাসা করলে,তিনি লজ্জিত হয়ে সমস্ত কথা বললেন।*
*🌺আমার দয়াল প্রভুর লীলা এইরকমই বিচিত্র।ভক্ত-মহিমা প্রচারের জন্য এইরকম লীলায় তাঁর বড়ই আমোদ ; কিছু পূর্বে ঐ মহাপ্রভুই নবদ্বীপে মুরারি গুপ্তের এইরকম মানসিক সেবা গ্রহণ করিয়েছিলেন। তখন এইরকমই তাঁর (মহাপ্রভুর) পেট ফুলে গিয়েছিল। এবং তাতে প্রভাতে গুপ্তের কাছে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন।*
*🙏🙏ইতি পূর্বার্ধ লীলা🙏🙏*
*তবে আর একটু কিছু কথা বলি।*
*🍀ক্ষুধার্ত হইলে বাড়ে দ্রব‍্যের মাধুরী।*
*🍀অনুরাগ বিনা প্রেম আস্বাদিতে নারি।।* *(চৈঃচঃ)*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
      *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৩. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৩)🙏শ্রীমৎ-রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
            *🙏উত্তরার্ধ🙏*
*🌺শ্রীরঘুনাথ শ্রীধাম বৃন্দাবনে🌺*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻আবাহন করলে আবার বিসর্জন করতে হয়।রামাবতারে পৃথিবীর প্রার্থনায় ব্রহ্মাই ভগবানকে অবনীতে অবতীর্ণ করিয়েছিলেন,অবশেষে তিনিই দূতরূপে "কালকে" পাঠিয়ে লীলা সম্বরণের সময় স্মরণ করিয়ে দেন।শ্রীকৃষ্ণাবতারেও ঐরকমই কার্য‍্য হয়।আর ব্রহ্মা এবং শিব ভিন্ন অন‍্য অন‍্য কেহ বা সে কার্য‍্য করবে? মহাদেব এই অবতারে শ্রীঅদ্বৈতরূপে শ্রীহট্টের নবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।*
*"বঙ্গদেশে,শ্রীহট্ট নিকট নবগ্রাম।*
*সর্বারাধ‍্য অদ্বৈত‍্য চন্দ্রের প্রিয় ধাম।।*
*নবগ্রামে জন্মিলেন শ্রীঅদ্বৈত চন্দ্র।*
*জন্মকালে ভুবনে ব‍্যাপিল মহানন্দ"।।*
                              *(ভক্তিরত্নাকর)*
*🌻অদ্বৈত আচার্য‍্য জগতে ধর্মভাব অবলোকনে ব‍্যথিত হয়ে ধর্মের উদ্ধার ও পাপীর নিস্তারের জন্য কাতর প্রাণে শ্রীভগবানকে ডাকতে থাকেন।*
*🙏শাস্ত্র বলেন যে,যখন ধর্মের নিতান্ত গ্লানি উপস্থিত হয়,যখন ভক্তগণ প্রপীড়িত হতে থাকেন,যখন বিবিধ উৎপীড়নে দেশ ত্রাহি ত্রাহি করতে থাকে,তখনই ভক্তের ক্রন্দন ধ্বনিতে শ্রীভগবানের স্বর্গ-সিংহাসন কম্পিত হয়,তখনই তিনি আবির্ভূত হয়ে ভক্তের উদ্ধার সাধন এবং দুষ্কর্মাদের বা শয়তানদের যথাযথ শাস্তি দিয়ে থাকেন।অদ্বৈতাচার্য‍্য বিবিধ কারণে জগতের এই ভাবটি বিলক্ষণ রূপে অনুভব করেছিলেন। সুতরাং তিনি প্রতিনিয়ত চিন্তা করতে লাগলেন যে,এমন কি সাধন আছে,যার বলে তিনি ভগবানকে আকর্ষণ করতে পারবেন।এইরকম চিন্তা করতে করতে হঠাৎ গৌতমীয় তন্ত্রের শ্লোকটি তাঁর মনে পড়িল।*
*"তুলসীদলমাত্রেণ জলস‍্য চুলুকেন বা।*
*বিক্রীণীতে স্বমাত্মনং ভক্তেভ‍্যো ভক্তবৎসলঃ"।।*
*🌻অদ্বৈতাচার্য‍্য এই শ্লোকের অর্থ বিচার করতে লাগলেন,হর্ষে এবং প্রেমে ততই বিহ্বল হতে লাগলেন। "আহা!আমার প্রভুর কি দয়া!মরি!মরি!কি দয়া!যদি একটি মাত্র তুলসী পত্র বা গন্ডুষমাত্র জল দিয়ে ভক্তি সহকারে তাঁর আরাধনা করা যায়,তবে সেই ভক্ত-বৎসল ভক্তের কাছে আত্ম-বিক্রয় করেন।আহা! এমন দীন-বৎসল আর কে আছে?বলেই অদ্বৈতাচার্য‍্য ঊর্ধবাহু হয়ে নৃত্য করতে লাগলেন।আর এই হ'তেই তদ্রূপ সঙ্কল্প পূর্বক ভগবানের আরাধনা আরম্ভ করলেন ; এই আরাধনায় গৌর অবতারের একটি মুখ‍্যতম হেতু।অতএব অদ্বৈতাচার্য‍্যর অর্চন হুঙ্কার ধ্বনিতে শ্রীগৌরাঙ্গ অবতীর্ণ হন।অবশেষে যথাসময়ে ঐ অদ্বৈতাচার্য‍্যই, তাঁর লীলা সম্বরণের জন্য ইঙ্গিত করে একখানি সঙ্কেত লিপি নীলাচলে মহাপ্রভুর কাছে পাঠিয়ে দেন।অদ্বৈতাচার্য‍্যের প্রেরিত এই "তর্জা" (প্রহেলিকা,হেয়ালি) পাওয়ার কিছু দিন পর মহাপ্রভু একদিন অকস্মাৎ জগন্নাথ ও গোপীনাথের অঙ্গে যুগপৎ বিলীন হয়ে গেলেন।তখন ১৪৫৫ শক, আষাঢ় মাস, এবং সপ্তমী তিথি।মহাপ্রভুর অদর্শনে তদীয় ভক্তগণের দশা কিরকম হয়ে ছিল,তা কেউই বর্ণন করেন নাই,বর্ণনা করতে ইচ্ছাও ছিল না।কিন্তু তা বর্ণিত না থাকলেও সকলেই বুঝতে পারেন।এই গ্রন্থের দীন হীন লেখকও তা বিস্তার করতে পারবে না।মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পরই স্বরূপ দামোদর অন‍্যান‍্য ভক্তগণও অন্তর্হিত হলেন।অচিরেই নবদ্বীপ ও নীলাচল অন্ধকার হ'ল।মহাপ্রভুর ইচ্ছাক্রমে রঘুনাথ রইলেন।রঘুনাথ বললেন, কিন্তু সে শূন‍্যপুরী নীলাচলে আর শান্তি পেলেন না ; সুতরাং তিনি সেই ১৪৫৫ শকেই,*
*🙏প্রেমাবতার শ্রীনিবাসাচার্য‍্য নীলাচলে শ্রীগৌরাঙ্গের দর্শনের জন্য যাচ্ছিলেন।তিনি পুরীর কিছু দূর থাকতেই শুনতে পেলেন যে,অল্পদিন ধরে মহাপ্রভু অন্তর্হিত হয়েছেন।পরে শ্রীনিবাস যখন পুরীক্ষেত্রে পৌঁছলেন, স্বরূপ দামোদরকে পেলেন না,এবং রঘুনাথকেও পেলেন না,*
*স্বরূপের রঘুনাথে দর্শন না পাইয়া*।
*কান্দে শ্রীনিবাস অতি ব‍্যাকুল হইয়া।।*
*প্রভুর বিয়োগে স্বরূপের অদর্শন।*
*মহাদুঃখে রঘুনাথ গেলা বৃন্দাবন*।।
*🌻তাঁর ৩৫ বৎসর বয়সের সময় নীলাচল ত‍্যাগ করতঃ, বৃন্দাবনের দিকে চলিলেন।ইচ্ছে=শ্রীরূপ ও সনাতন গোস্বামীকে দর্শন করবার পর পর্বত হতে ঝম্প দিয়ে দেহপাত করবেন। যথা চৈতন‍্যচরিতামৃতে পায়=*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
          *বানান ভুল ক্ষমা করবেন*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৪. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৪)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীরঘুনাথ শ্রীধামবৃন্দাবনে🌻*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻যথা চৈতন‍্যচরিতামৃতে পায়=*
*মহাপ্রভুর প্রিয় ভৃত‍্য, রঘুনাথ দাস*।
*সর্বত‍্যাগী কৈল,প্রভুর পদতলে বাস।।*
*প্রভু সমর্পিল তারে স্বরূপের হাতে*।
*প্রভুর গুপ্ত সেবা কৈল,স্বরূপের সাথে।।*
*ষোড়শ বৎসর কৈল,অন্তরঙ্গ সেবন।*
*স্বরূপের অন্তর্ধানে আইলা বৃন্দাবন।।*
*বৃন্দাবনে দুই ভাইর,চরণ দেখিয়া।*
*গোবর্ধনে ত‍্যজিব দেহ,ভৃগুপাত করিয়া।।*
*এইত নিশ্চয় করি,আইলা বৃন্দাবনে।*
*আসি রূপ-সনাতনের বন্দিল চরণে।।*
*তবে দুই ভাই তারে,মরিতে না দিল।*
*নিজ তৃতীয় ভাই করি,নিকটে রাখিল।।*
*মহাপ্রভুর লীলা যত,বাহির অন্তর*।
*দুই ভাই তাঁর মুখে,শুনে নিরন্তর।।*
*🌻রঘুনাথের জীবনে স্পৃহা (অভিলাষ) নাই,তবে ল্রীরূপ ও সনাতন এবং শ্রীবৃন্দাবন দর্শনের অভিলাষ পূর্বক পূর্ব হতেই তাঁর অন্তরে ছিল।এই অভিলাষ পূর্ণ করতঃ (করে) শ্রীগোবর্ধন পর্বতের উপর হতে পড়ে প্রাণত‍্যাগ করবেন, এইরকম সঙ্কল্প করে বৃন্দাবনে আসিলেন।কিন্তু শ্রীরূপ ও ষনাতনের স্নেহ ও আগ্রহে দেহত‍্যাগ করতে পারলেন না,বৃন্দাবনেই বাস করতে লাগলেন।🙏এই যে রূপ ও সনাতনের নাম করলাম, ইঁহারা কে ছিলেন?রঘুনাথই বা তাঁদেরকে দেখতে এত উৎসুক কেন?*
*🌻অতি সংক্ষেপে দুই-চার কথায় বলি আস্বাদন করুন।শ্রীরূপ ও সনাতন গোস্বামী ভরদ্বাজ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ।তাঁদের পূর্ব পুরুষ কর্ণাট দেশ হতে বাংলায় আগমন করেন।সনাতন গৌড়ের বাদশাহ হুসেন শাহর মন্ত্রী ছিলেন।সনাতনের উপাধি "সাকর মল্লিক"।ইনার কনিষ্ঠ শ্রীরূপ, রাজার সর্বপ্রধান কর্মচারী ছিলেন,ইনার হস্তাক্ষর অতি উত্তম ছিলেন বলে "দবির খাস" এই উপাধি প্রাপ্ত হন।যদিও এই ভ্রাতৃযুগল ঐরকম সম্মানিত এবং উচ্চপদে আরূঢ় ও সুবিস্তৃত ভূ-ভাগের অধিকারী ছিলেন, কিন্তু যখন তাঁদের মনে বৈরাগ‍্য উদিত হ'ল,তখন অতি তুচ্ছ জ্ঞানে রাজসম্মান ও অতুল ঐশ্বর্য‍্য মুহূর্ত মাত্রে পরিত‍্যাগ করে শ্রীগৌরাঙ্গের সঙ্গে সম্মিলিত হলেন। কিন্তু মহাপ্রভু তাঁদেরকে সঙ্গে রাখলেন না।আপন অভিপ্রায়ানুরূপ ভক্তিগ্রন্থ ও বিলুপ্ত তীর্থ প্রকাশ করবার শক্তি প্রদান পূর্বক বৃন্দাবনে প্রেরণ করলেন।এখন যে আমরা শ্রীবৃন্দাবনের লীলাস্থলগুলি অবলোকন পূর্বক কৃতার্থ হই,তা এই দুই মহাত্মার প্রসাদাৎ।ইনারাই বৈষ্ণবধর্মের আচার্য‍্য মহাজন।বৃন্দাবনে রূপ-সনাতনই মহাপ্রভুর সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত ছিলেন।মহাপ্রভু একমাত্র শ্রীসনাতনকেই নিজ হস্তে পত্র লিখিতেন।অতএব রঘুনাথের তাঁদেরকে দেখবার ইচ্ছা স্বাভাবিক। রঘুনাথ,রূপ-সনাতনের কাছে রইলেন,যেন তিনভাই,একে অন‍্যের প্রাণ স্বরূপ।সেখানে রঘুনাথ আর একটি নিয়ম করলেন।আহারাদি বিষয়ে নীলাচলে তাঁর যে নিয়ম ছিল। তা প্রায় সকলেই জানেন।মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পর তিনি সে "শুধু অন্নও" ত‍্যাগ করলেন।এখন কেবল তাঁর ফল মূল ও কিছু তক্রমাত্র আহারীয় হল।যথা প্রাচীন পদে পায়*
*রাধা-কৃষ্ণ বিয়োগে,ছাড়িল সকল ভোগে,*
     *শুখ রুখ অন্ন মাত্র সার।*
*গৌরাঙ্গের বিয়োগে,অন্ন ছাড়ি দিল আগে,*
    *ফল গব‍্য করিল আহার।।*
*🌻তিনি বৃন্দাবনে কিরকম কালযাপন করতে লাগলেন, তার সংক্ষেপে বর্ণনা এই=*
*অন্নজল ত‍্যাগ কৈল,অন‍্য কথন।*
*পল দুই তিন মাঠা,করেন ভক্ষণ।।*
*সহস্র দন্ডবৎ করে,লয় লক্ষ নাম।*
*দুই সহস্র বৈষ্ণবেরে,নিত‍্য পরণাম।।*
*রাত্রি দিনে রাধাকৃষ্ণের,মানস সেবন।*
*প্রহরেক মহাপ্রভুর,চরিত্র চিন্তন।।*
*তিন সন্ধ‍্যা রাধাকুন্ডে,আপতিত স্নান।*
*ব্রজবাসী বৈষ্ণবেরে করে,আলিঙ্গন দান।।*
*সার্ধ সপ্ত প্রহর করে,ভক্তির সাধনে।*
*চারিদন্ড নিদ্রা,সেহ নহে কোন দিনে।।*
                 *(শ্রীচৈতন‍্য চরিতামৃত)*
*🌻রঘুনাথ প্রথমে কয়েকদিন গোস্বামীদের কাছে রইলেন,পরে কিছু দিন গোবর্ধনে এবং অবশেষে রাধাকুন্ডে বাস করতে লাগলেন।এই সময়েই তিনি ভুবন-দুর্লভ গ্রন্থ ও পদাদির রচনা করেন। রঘুনাথদাস নীলাচলে "স্বরূপের রঘু" নামে আখ‍্যাত হয়েছিলেন।বৃন্দাবনে তিনি "দাসগোস্বামী" নামে বিদিত হলেন।সেখানে তিনি মহাপ্রভুর প্রদত্ত শিলার সেবা ও ভজন করতে লাগলেন। ভক্তি রত্নাকরে পায়=*
*প্রভুদত্ত গোবর্ধন শিলা,গুঞ্জাহারে*।
*সেবে কি অদ্ভুত সুখে,আপনা পাশরে।।*
*দিবানিশি না জানয়ে,শ্রীনাম গ্রহণে।*
*নেত্রে নিদ্রা নাই, অশ্রুধারা দুনয়নে।।*
*দাসগোস্বামীর চেষ্টা কে বুঝিতে পারে।*
*সদা মগ্ন রাধাকৃষ্ণ,চৈতন‍্য বিহারে।।*
*🌼ঐ সম্বন্ধে ভক্তমাল গ্রন্থে পায়=*
*রাধাকৃষ্ণ প্রাপ্তি লাগি,সদা উৎকণ্ঠিত।*
*সদা হাহাকার, ক্ষণে স্থির নহে চিত।।*
*হে হে বৃন্দাবনেশ্বরী, হে ব্রজনাগর।*
*দেখাইয়া শ্রীচরণ, প্রাণ রাখ মোর।।*
*আহার নিদ্রা নাহি,সদা করয়ে ফুৎকার।*
*বাহ‍্য স্ফূর্তি নাহি সদা যেন মাতোয়ার।।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবোল🙏*
     *বানান ভুল ক্ষমা করবেন*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৫. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *(১৫)🙏শ্রীমৎ-রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীরাধাকুন্ড তীরে রঘুনাথ 🌻*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌼এইরূপে তিনি রাধাকুন্ড তীরে বাস করতে লাগলেন।রাধাকুন্ড তখন প্রায় কুন্ড ছিলেন না,কুন্ড কাল সহকারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন, এবং তাঁর স্থানে একটি ধান‍্যক্ষেত্র মাত্র ছিল।কুন্ডদ্বয় কোথায় আছেন,ইতিপূর্বে তা কেউ জানত না ; পরে শ্রীমন্মহাপ্রভু যখন বৃন্দাবনে শুভ বিজয় করেন,তখনই সে ক্ষেত্র কুন্ড বলিয়া জেনে ছিলেন।ভক্তি-রত্নাকরে যথা=*
*শ্রীকৃষ্ণ চৈতন‍্য,বন-ভ্রমণ করিয়া।*
*এই তমালের তলে,বসিলা আসিয়া।।*
*অরিষ্ট গ্রামীয় লোকগণে,জিজ্ঞাসিল।*
*কুন্ডদ্বয় বার্তা,কেহ কহিতে নারিল।।*
*সঙ্গেতে আইলা বিপ্র মথুরা হইতে*।
*তারে জিজ্ঞাসিল,সেহো না পারে কহিতে।।*
*প্রভু সে সর্বজ্ঞ,সর্বতীর্থ নিরীখয়।*
*দুই ধান‍্য-ক্ষেত্র,হইয়াছে কুন্ডদ্বয়*।।
*তথা অল্পজলে, স্নান করি হর্ষচিতে।*
*শ্রীকুন্ডকে স্তুতি করিলেন নানামতে।।*
*🌻এই ক্ষেত্ররূপ কুন্ডতীরে বাস করতে করতে একসময়ে দাস-গোস্বামীর মনে হ'ল যে,যদি এই কুন্ডদ্বয় প্রকৃত কুন্ডের ন‍্যায় নির্মল সলিলে পূর্ণ হয়, এবং যদি এতে ফুল্ল কমলিনী-দল বিরাজিত হয়,তবে বড় ভাল।কিন্তু-----*
*অর্থের আকাঙ্খা কিছু,ইহাতে বুঝায়।*
*এত বিচারিতে,হইলেন স্তব্ধপ্রায়।।*
*আপনাকে ধিক্কার,করয়ে বার বার।*
*কেনে এ বাসনা,মনে হইল আমার।।*
                         *(ভক্তি-রত্নাকর)*
*🌻ভগবান ভক্ত-বাঞ্জাকল্পতরু, কোন কালে তিনি ভক্তের বাসনা অপূর্ণ রাখেন নাই ; আজ নিরাশ রাখবেন কেন?বদরিকাশ্রমে কোন এক ধনী শ্রীনারায়ণ বিগ্রহ দর্শনান্তর অনেক টাকা সমর্পণ করিলে,শ্রীনারায়ণ রাত্রে স্বপ্নাবস্থায় তাঁকে আদেশ করলেন, "ঐ মুদ্রা নিয়ে অরিষ্ট গ্রামে যাও, সেখানে দাস-গোস্বামী আছেন,তাঁকে দিলেই আমি পাব।আর তাঁকে স্মরণ করাবে যে,তিনি কুন্ডদ্বয় সংস্কার করাতে মনস্থ করেছিলেন,এই মুদ্রা দ্বারা তা করুন।এইরকম স্বপ্ন দর্শন করে সেই ধনী আনন্দিত হয়ে দাস গোস্বামীর নিকটে গেলেন, এবং সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করতঃ(করে) স্বপ্ন বৃত্তান্ত নিবেদন পূর্বক মুদ্রা প্রদান করলেন।স্থপ্নের কথা শুনে অনেকক্ষণ ভেবে দাস গোস্বামী স্তব্ধ হয়ে রইলেন,পরে সেই ধনীকে প্রশংসা করে কুন্ডদ্বয়ের পঙ্কোদ্ধার করাতে বললেন।ধনী শীঘ্রই পঙ্কোদ্ধারের জন্য লোক নিযুক্ত করে দিলেন ; আর সেই হতেই রাধাকুন্ড ও শ‍্যামকুন্ড প্রকাশিত হ'ল।শ্রীকুন্ডদ্বয়কে অভীপ্সিত(বাঞ্জিত)রূপে সন্দর্শন পূর্বক দাসগোস্বামীর আনন্দের আর পরিসীমা রইল না।ইহাতেই ঠাকুর নরহরি বলেছেন ="রাধাকুন্ড বাস, রঘুনাথ কৃপা হৈতে"।*
*🌻সেইসময় বৃন্দাবন বনই ছিল।দাস গোস্বামী কোন ঘরে রইতেন না,এক বৃক্ষতলে ধ‍্যানাবেশে বসে থাকতেন।কত ঝড়,বৃষ্টি তাঁর উপর দিয়ে চলে যেত,বৃষ্টির সময় গোবর্ধন শিলা ও মালাকে বক্ষের ভিতরে সযত্নে রাখতেন, নিজে বৃষ্টিতে ভিজতেন।একদিন সনাতন গোস্বামী যমুনা স্নানে এসে দেখেন যে,একটি বৃহৎ বাঘ দাস গোস্বামীর পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, সনাতন গোস্বামীর অন্তর ভয়ে দুরুদুরু করছে, না জানি রঘুনাথের কী হয়,বাঘটি যমুনায় জল পান করে আবার সেই রঘুনাথের পাশ দিয়েই বনের ভিতরে চলে গেল, রঘুনাথ একবিন্দুও কিছু জানতে পারলেন না।কারণ তিনি ধ‍্যানাবেশে ছিলেন।কতক্ষণ পরে বাহ‍্য জ্ঞান হ'লে, সনাতন গোস্বামী নানা কথাবার্তার পর,তিনি বাঘের কথা কিছুই জানালেন না,কেবল বললেন,এখানে একটি পত্রকুটীর করে গৃহে থাকবার জন‍্য বললেন। দাস গোস্বামী তা অগ্রাহ‍্য করলেন না।*
*🌺আর একদিন দাসগোস্থামীর অজীর্ণ হয়ে শরীর ভার ভার হ'ল, এইকথা শুনে প্রসিদ্ধ বল্লভাচার্য‍্যের পুত্র বিটঠল নাথ দুইজন চিকিৎসক নিয়ে আসলেন।নাড়ী দেখে চিকিৎসক বললেন যে,দুগ্ধান্ন ভক্ষণেই এইরকম হয়েছে।সকলেই জানেন, রঘুনাথ দাস গোস্বামী অন্ন সেবা নেন না,অতএব এইকথায় বিটঠল নাথ বিস্মিত হয়ে বললেন, "এ কখনই হতে পারে না"।দাস গোস্বামী হেসে বললেন, "এই-ই সত‍্য, আমি মানসে দুগ্ধান্ন(পরমান্ন) প্রসাদ সেবা করেছি।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
     *বানান ভুল ক্ষমা করবেন*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৬. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *(১৬)🙏শ্রীমৎ-রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻শ্রীরাধাকুন্ড তীরে বাস🌻*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌹শ্রীরাধাকুন্ড তীরে বাসকালে দাস গোস্বামীর একজন হৃদ‍্য সঙ্গী ও শিষ‍্য*
*"কবিরাজ শিষ‍্য,রহিলেন যার কাছে"।*
                            *(প্রেমবিলাস গ্রন্থে)*
*🌻শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ কাঁর শিষ‍্য,এ সম্বন্ধে মত-ভেদ আছে।কবিরাজ ছয় গোস্বামীকেই আপন শিক্ষা গুরু বলেছেন।চৈতন‍্য চরিতামৃতে পাওয়া যায় =*
*শ্রীরূপ,সনাতন,ভট্ট রঘুনাথ।*
*শ্রীজীব,গোপাল ভট্ট,দাস রঘুনাথ।।*
*এই ছয় গুরু,শিক্ষা গুরু যে আমার।*
*এই গুরুগণে,আগে করি নমস্কার।।*
*🌻কিন্তু কেউ কেউ বলেন যে,শ্রীরূপ গোস্বামী তাঁর গুরু।আবার কোন কোন সম্প্রদায়ের মত এই যে,শ্রীরূপের শিষ্য রঘুনাথ ভট্ট গোস্বামী,ইঁহার শিষ্য শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ।*
*🌻পক্ষান্তরে কবিরাজ স্বয়ং চৈতন‍্য চরিতামৃতে বলেছেন=*
*নিত‍্যানন্দ রায়,প্রভুর স্বরূপ প্রকাশ।*
*তাঁর পাদপদ্ম বন্দো,মুই যাঁর দাস।।*
*🌻আবার বলেছেন=*
*যদ‍্যপি আমার প্রভু,চৈতন‍্যের দাস*।
*তথাপি জানিয়ে আমি,তাঁহার প্রকাশ।।*
*🙏এই দুইটি প্রমাণে কি বোধ হয়,পাঠক মহাশয় তাহা বিবেচনা করবেন।দ্বিতীয়তঃ গুরু এবং কৃষ্ণ অভেদতত্ত্ব, ইহা দেখাবার জন্য নিত‍্যানন্দ প্রভু একদা স্বপ্নে তাঁকে নন্দ-নন্দন রূপেই দর্শন দেন।(চৈতন‍্য চরিতামৃত,পঞ্চম পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব‍্য)। আবার অনেকেই দাস গোস্বামীকেই কবিরাজের দীক্ষা-গুরু নির্দেশ করেন।যাইহোক,যদি নিত‍্যানন্দ প্রভুই (কবিরাজের নিজ বাক‍্যে)তাঁর গুরু নির্দেশিত হলেন,🍀তবে প্রেম বিলাস গ্রন্থে রঘুনাথকে কেন কবিরাজের গুরু বলেন,এ কথার তাৎপর্য‍্য কি? প্রেম বিলাস গ্রন্থেই আছে,)*
*কৃষ্ণদাস কবিরাজ,যবে গৌড় দেশে।*
*কৃষ্ণের ভজন করেন,আনন্দ আবেশে।।*
*এক দিন ঝামটপুর,নামে এক গ্রাম।*
*দর্শন দিলেন,নিত‍্যানন্দ গুণধাম।।*
*নিজ সহচর সঙ্গে,বেশ মনোহর।*
*রূপ দেখি কৃষ্ণদাস,আনন্দ অন্তর।।*
*প্রণাম করিয়া বহু,করিল স্তবন।*
*আজ্ঞা হৈল,সর্ব সিদ্ধি যাও বৃন্দাবন।।*
*🍀নিজ গ্রন্থে লিখে,প্রভুর শিষ্য আপনাকে।*
*🍀না জানয়ে দীন হীন,কৃপা কৈল মোকে।।*
*🍀পুনর্বার বৃন্দাবন,করিল গমন।*
*🍀আশ্রয় করিল,রঘুনাথের চরণ।।*
*🍀কেন হেন লিখে?কেন করয়ে আশ্রয়?*
*🍀সেই বুঝে,যার মহা অনুভব হয়।।*
*🍀সিদ্ধ ব‍্যবহার এই,অত‍্যন্ত নির্মল।*
*ভাবাশ্রয় করিলে,স্ফূর্তি হয়ে যে সকল।।*
*🌻পূর্বের কথায় ফিরে আসি।রাধাকুন্ডে রঘুনাথের বাসকালে একজন অতি হৃদ‍্য সঙ্গী ও শিষ্য ছিলেন কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী। ঐ কৃষ্ণদাসই প্রসিদ্ধ চৈতন‍্য চরিতামৃত রচয়িতা। দাস গোস্বামী, মহাপ্রভুর অন্ত‍্যলীলার সঙ্গী,কবিরাজ তাঁর মুখে শুনে শুনে এবং স্বরূপ দামোদর ও মুরারি গুপ্তের কড়চা দেখে চরিতামৃত গ্রন্থন করেন। যথা চরিতামৃতে পায়=*
*রঘুনাথ দাসের সদা,প্রভু সঙ্গে স্থিতি।*
*তাঁর মুখে শুনি লিখি,করিয়া প্রতীতি।।*
*চৈতন‍্য লীলা রত্নসার,স্বরূপের ভান্ডার,*
      *তিহো থুইলা রঘুনাথের কন্ঠে।*
*তাহা কিছু যে শুনিল,তাহা এই বিবরিল,*
     *ভক্তগণে দিল এই ভেটে।।*
*🌻মহাপ্রভু কি ইচ্ছায় রঘুনাথকে এত দুঃখেও রেখেছিলেন,তাঁর একটি অর্থ বোধ হয় এই=মহাপ্রভুর চরিত্র লেখা তাঁর অসাধ‍্য,মুখে কহিতেই, মনে ভাবতেই অধৈর্য‍্য হয়ে পড়েন,লিখবেন কেমন করে?কবিরাজ তাঁর মুখে শুনেই অন্ত‍্য লীলাটি বিস্তার করে লিখেছিলেন।দাস গোস্বামীর নিকট মহাপ্রভুর অন্ত‍্যলীলার প্রতিকাহিনী না শুনলে চরিতামৃত বর্তমানের ন‍্যায় হত কি না,তা মহাপ্রভুই জানেন।*
*🌻দাস গোস্বামীর উপলক্ষ্যে আমরা আর একখানি অমূল‍্য রত্ন পেয়েছি।সে রত্ন "দান-কেলি-কৌমুদী"।এই গ্রন্থ কেমন করে সৃষ্টি হয়েছিল অতি সংক্ষেপে বলি।(লেখকের উক্তি)। শ্রীরূপ গোস্বামী "ললিত মাধব নাটক" প্রণয়ন করে দাস গোস্বামীকে পড়তে দিলেন।ঐ গ্রন্থে বিপ্রলম্ভ ভাবের একশেষ করা হয়েছে।দাসগোস্বামী ঐ গ্রন্থ পাঠে অধৈর্য‍্য হয়ে ক্ষণে ক্ষণে ক্রন্দন, কখন বা ভূমে গড়াগড়ি হন।কোন কোন সময় উন্মত্তের মতো গ্রন্থ দূরে নিক্ষেপ করে উদাস মনে বসে থাকেন।আবার পরক্ষণেই গ্রন্থ বক্ষে রেখে ভূমিতে শয়ন করেন।শ্রীরূপ গোস্বামী রঘুনাথের এইরকম অবস্থা দেখে শীঘ্র শীঘ্র "দান-কেলি-কৌমুদী নাটিকা" রচনা করে রঘুনাথকে তা দিয়ে বললেন,ভাই,সংশোধনের জন্য ললিত মাধব খানা দাও,আর সে কতক দিন এই নতুন গ্রন্থখানি আস্বাদন কর। রঘুনাথ ললিত-মাধব শ্রীরূপ গোস্বামীকে প্রদান করে "দানকেলিকৌমুদী"পাঠ করতে লাগলেন, আর আনন্দ সাগরে নিমগ্ন হলেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
     *বানান ভুল ক্ষমা করবেন*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৭. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৭)🙏শ্রীমৎরঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌻গোস্বামীর গ্রন্থগণ,স্তব-বলীর শ্লোক🌻*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻পূর্বে দাস গোস্বামীর গ্রন্থের উল্লেখ মাত্র করেছি।শ্রীধাম বৃন্দাবন বাসকালে তিনি "স্তবমালা", "দান চরিত" ও"মুক্তাচরিত", নামে তিনখানি অপূর্ব গ্রন্থ প্রণয়ন করেন*
*"রঘুনাথাভিধেয়স‍্য তয়োর্মিত্রত্ত্বমীযুষঃ।*
*স্তবমালাদানমুক্তারচিতং কৃতি ষূদিতং"।।*
*🌻এই গ্রন্থ তিনটি ভিন্ন তাঁর রচিত কয়েকটি পদও আছে। তাঁর প্রথম পদ শ্রীজয়দেবের বন্দনা সম্বন্ধে।দাস গোস্বামী শ্রীজয়দেবের কাব‍্য শ্রীগীতগোবিন্দ বড় ভালবাসতেন, আর কখন কখন ঐ গ্রন্থ পাঠ করে আনন্দে বিভোর হয়ে থাকতেন।এই পদটি তাঁরই=*
*জয় জয় শ্রীজয়-,দেব দয়াময়,*
        *পদ্মাবতী রতিকান্ত।*
*রাধা মাধব , প্রেম ভরতি রস,*
       *উজ্জ্বল মূরতি নিতান্ত।।*
*শ্রীগীত গোবিন্দ, গ্রন্থ সুধাময়,*
     *বিরচিত মনোহর ছন্দ।*
*রাধা গোবিন্দ , নিগূঢ় লীলা গুণ,*
     *পদ্মাবলী পদ বৃন্দ।।*
*কেন্দুবিল্ববর , ধাম মনোহর,*
      *অনুক্ষণ করয়ে বিলাস।*
*রসিক ভক্তগণ, যো সবরস ধন,*
      *অহর্নিশি রহু তছু পাশ।।*
*যুগল বিলাস গুণ,করু আস্বাদন,*
      *অবিরত ভাবে বিভোর।*
*দাস রঘুনাথ হই,তছু গুণ বর্ণন,*
     *কিয়ে করব নব ওর।।*
*(পদ সমুদ্র=৪০১০।পদকল্পতরু=২৪০৮।)*
*🌻দাস গোস্বামী শ্রীগৌরাঙ্গ অবতারের যে কয়েকটি অপূর্ব পদ প্রণয়ন করেন,তা এই=*
*ব্রহ্ম আত্মা ভগবান,যারে সর্বশাস্ত্রে গান,*
    *দেবা দেবী চরণ বন্দন।*
*যোগী যতি সদা ধ‍্যায়,তমূ তাঁরে নাহি পায়,*
     *বন্দো সেই শচীর নন্দন।।*
*নিজ ভক্তি আস্বাদন,সর্ব ধর্ম স্থাপন,*
     *সাধু ত্রাণ পাষন্ড দলন।*
*ইত‍্যাদি কার্য‍্যের তরে,শচী জগন্নাথ ঘরে,*
      *নবদ্বীপে লভিলা জনম।।*
*কনক পূর্ণ চাঁদে,কামিনী মোহন ফাঁদে,*
     *মদনে কদন গর্ব চূর্ণ।*
*মৃদু মৃদু আধ ভাষা,ঈষৎ উন্নত নাসা,*
       *দাড়িম্ব কুসুম জিনি কর্ণ।।*
*ঝরে নয়নাবিন্দে,বাস্প নামক রন্ধ্রে,*
      *তারক ভ্রমর হরষিত।*
*গভীর গর্জন কভু,কভু বলে হাহাপ্রভু,*
       *আপাদ মস্তক পুলকিত।।*
*প্রেমে না দেখিয়া বাট,ক্ষণে মারে মালশাট,*
     *ক্ষণে কৃষ্ণ ক্ষণে বলে রাধা।*
*নাচয়ে গৌরাঙ্গ রায়,সবে দেখিবারে পায়,*
     *কর্ম বন্ধে পড়ি গেল বাধা।।*
*পাইলেন প্রেমধন, নাচয়ে বৈষ্ণবগণ,*
     *আনন্দ সায়রে নাহি ওর।*
*দেখিয়া মেঘের মেলি,চাতক করিছে কেলি,*
       *চাঁদ দেখি যৈছন চকোর।।*
*প্রেমে মাতোয়ারা গোরা,জগত করিল ভোরা,*
      *পাইল সকল জীব আশ।*
*জড় অন্ধ মূক মাত্র,সবে ভেল প্রেম পাত্র,*
     *বঞ্চিত শ্রীরঘুনাথ দাস।।*
                *(পদ সমুদ্র=৬৪৮২)*
*🙏দাস গোস্বামী শ্রীরাধিকার রূপ বর্ণনা করে বাংলা ভাষায় পদ লিখেছেন=*
      *চন্দ্রবদনী ধনী,মৃগ-নয়নী।*
  *রূপে গুণে অনুপমা,রমণী-মণি*।।
*মধুরিম-হাসিনী,কমল-বিকাসিনী,*
    *মতিম-হারিণী,কম্বু-কন্ঠিনী।*
*থীর সৌদামিনী,গলিত কাঞ্চন জিনি,*
    *তনুরুচি ধারিণী,পিক-বচনী।।*
*উজর লম্বি বেণী,মেরু পর যেন ফণী,*
    *আভরণ বহুমণি,গজ-গামিনী।*
*বীণা-পরিবাদিনী,চরণে নূপুর-ধ্বনি,*
     *রতি রসে পুলকিতা জগমোহিনী।।*
*সিংহ জিনি মাঝা ক্ষীণি,তাহে মণি-কিঙ্কিণী,*
    *কাঁপি উছলি তনু,পদ অবনী।*
*বৃষভানু-নন্দিনী,জগজন-বন্দিনী,*
     *দাস রঘুনাথ পহুঁ,মনোহারিণী*
*(পদসমুদ্র=৪০০২,পদকল্পতরু=২৪০০)*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
        *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৮. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৮)🙏শ্রীমৎরঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*🌹গোস্বামীর গ্রন্থগণ,স্তবাবলীর শ্লোক)🌹*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻দাস গোস্বামীর আর একটি অনুপম পদ আছে, তা ভগবানের সায়ংকালোচিত আরত্রিকোপযোগী। পদকল্পতরু =২৮০২।*
*🌻গোস্বামীগণ যত কিছু গ্রন্থাদি রচনা করেছেন সব সংস্কৃতে।দাস গোস্বামীরও পূর্বোক্ত গ্রন্থগুলি বিশুদ্ধ সংস্কৃতে বিরচিত।তখন বাংলা ভাষার অতিশয় শৈশবাবস্থা ; বাংলায় কিছু লিখতে বা পড়তে তখন অল্প ব‍্যক্তিই যত্ন করতেন।সেই সময়ে সেই বঙ্গভাষার আদি সময়ে দাসগোস্বামী বাংলায় পদ লিখে মাতৃ ভাষার প্রতি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করেছেন।*
*🍀দাস গোস্বামীর একখানি গ্রন্থের নাম স্তবমালা। কিন্তু শ্রীমৎ রূপ গোস্বামীরও স্তবমালা নামে একখানি গ্রন্থ আছে ; এই জন্য দাস গোস্বামীর গ্রন্থ "স্তবাবলী"নামে আখ‍্যাত হল।এই স্তবাবলীর কয়েকটি স্তবের সমষ্টি ২৯ খানি ছোট গ্রন্থ উহার অন্তর্নিবিষ্ট।এতে গোস্বামীর মানসিক ভাবোচ্ছাসের আভাস পাওয়া যায়।এ স্থলে একটি শ্লোক উদ্ধৃত হচ্ছে।*
*"সদা রাধাকৃষ্ণোচ্ছলদতুল খেলাস্থান যুজং,*
*ব্রজং সংত‍্যজ‍্যৈতদযুগ বিরহিতোপি ত্রুটিমপি।*
*পুনর্দারাবত‍্যাং যদুপতিমপি প্রৌঢ়বিভবৈঃ,*
*স্ফুরন্তং তদ্বাচাপি হি নহি চলামীক্ষিতুমপি"।।*
*🌻অর্থ=যদি আমি সুদীর্ঘকাল শ্রীকৃষ্ণ বিরহে দগ্ধীভূত হতে থাকি, এবং তাতে শ্রীকৃষ্ণ যদি অনুমতিও করেন,তথাপি শ্রীরাধা গোবিন্দের অতুল‍্য লীলাস্থল সম্বলিত এই ব্রজধাম পরিত‍্যাগ পূর্বক সেই প্রৌঢ় যদুপতিকে দর্শনের জন্য ক্ষণমাত্রও আমি দ্বারকায় যেতে পারি না।*
*🌺রাধা-প্রিয় রঘুনাথের উপরোক্ত ভাব সম্বন্ধে অন‍্য একটি আখ‍্যান এস্থলে প্রদত্ত হল।*
*🍀দাস গোস্বামীর নিকট দাস নামে একজন ব্রজবাসী থাকতেন।উনি গোস্বামীর শিষ্য ও অতি স্নেহপাত্র ছিলেন ; এবং দাস গোস্বামীর প্রতি তাঁরও অচলা ভক্তি ছিল।গোস্বামী বৃক্ষ-পত্র ভক্ষণ করতেন, এবং দাস তা এনে দিতেন।একদিন দাস গোস্বামী একটি বৃহৎ পত্র দর্শনে দাসকে জিজ্ঞাসা করলেন,এই বৃহৎ পলাশ পত্র কোথায় পেলে? দাস বললেন,সখীস্থলীতে।সখীস্থলী শ্রীরাধার প্রতিপক্ষ চন্দ্রাবলীর বাসস্থান।রাধানুগত রঘুনাথ (রতি মঞ্জরী) সখীস্থলীর নাম শুনে বিরহ অভিমানে ব‍্যথিত হয়ে পত্র সহিত তক্র (ঘোল) ফেলে দিলেন।দাস এর কিছুই বুঝতে না পেরে বিস্মিত ও ভীত হয়ে থাকলে,দাস গোস্বামী বললেন,ওহো,সে চন্দ্রাবলীর স্থান, সেখানে আর তুমি কখনও যেও না।ব্রজবাসী তখন সাধকের ভাব বুঝে আর কিছুই বললেন না।*
*🙏দাস গোস্বামী প্রত‍্যেকদিন দুই-তিন পল(১৬তোলায় ১পল) মাঠা (ঘোল,নবনী) একটা দোনাতে (ঠোঙ্গা) করে পান করতেন।বড় পলাশ পাতা হলে অনেক বেশী ধরবে,এই জ্ঞানেই দাস সখীস্থলীতে বড় পাতা পেয়ে তা এনেছিলেন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর হরিবল🙏*
         *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁১৯. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৯)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*😭বিরহ-যন্ত্রণা,যথা নিয়ম বিধি,😭*
            *🙌সমাপ্তি🙌*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*শ্রীরাধারাণীর স্মরণাবেশে শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামী বৃন্দাবনে আছেন।রাধা-কৃষ্ণের এবং শ্রীগৌরাঙ্গের স্মরণাবেশে বাহ‍্যশূন‍্য হয়েই বহুসময় থাকতেন ; কখন কখন  বা শ্রীরূপ-সনাতনের নিকট গমন ও তাঁদেরকে দর্শন করতঃ(করে) দুঃখ জ্বালা নিবারণ করতেন।কিছুদিন পরে তাহাও আর রইল না ; মহাপ্রভুর বিরহ জনিত শোক সহ‍্য করতে না পেরে সনাতন গোস্বামী এবং তারপরে শ্রীরূপ গোস্বামী লীলা সম্বরণ করলেন, শ্রীদাস গোস্বামীর কাছে বৃন্দাবন অন্ধকার হ'ল।দাস গোস্বামীর তাপিত অন্তর কঠোর আঘাতে দিন দিন এক এক জন করে মহাপ্রভুর পার্ষদগণ অন্তর্ধান করছেন, গৌড় হ'তে এ সংবাদ পেতে লাগলেন।জগতে হাহাকার শব্দ উত্থিত হল,যেন মনে হল ত্রিভুবন শূন‍্য,মরু প্রায় হল।তখন চতুর্দিক হতে হঠাৎ কোলাহল, ক্রন্দন শব্দ শ্রুত হতে লাগল, এবং প্রতি জায়গায় যেন অমঙ্গল দেখছেন। তখন আর দাস গোস্বামীর দশা বলবার আর সাধ‍্য নেই।তিনি বলতে লাগলেন=*
*কোথা শ্রীস্বরূপ,রূপ,সনাতন বলি*।
*ভাসয়ে নেত্রের জলে,বিলুন্ঠয়ে ধূলি।।*
*অতি ক্ষীণ শরীর,দুর্বল ক্ষণে ক্ষণে।*
*করয়ে ভক্ষণ কিছু,দুই চারি দিনে।।*
                      *(ভক্তি-রত্নাকর)*
          *যথা পদে পায়*
   *হা হা, কোথা প্রাণের শ্রীরূপ।*
*তুমি বিনে এ সংসার,দেখিতেছি অন্ধকার,*
       *হৃদয় হইল বহ্নি-কূপ।।*
*কেন আগে ভৃগুপাতে,না করিলুঁ দেহ পাতে,*
       *এই কি হইল তার ফল?*
*(ভৃগু-পাত=পর্বত হতে পড়ে প্রাণ ত‍্যাগ করা)*
*এ হৃদয় বজ্রসার,এরূপ নৈলে কি আর,*
        *রহিত রে না হ'য়ে বিকল।।*
*হে হৃদয়,ফেটে যাও,হে প্রাণ বাহির হও,*
      *এবে আর রহিয়া কি কাজ।*
*শূন‍্য ত্রিভুবন ভেল,হৃদয়ে বাজিল শেল,*
      *কি সুখে রহিব ভব-মাঝ?*
*আর বেঁচে কাজ নাই,জীবন ধারণে ছাই,*
      *পরাণ ছাড়িলে এবে বাঁচি।*
*গোসাঞীর বিলাপ বাণী,এ বৈষ্ণব দাস শুনি,*
      *বলে জ্বালা সহিতেই আছি।।*
😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭
           *অন‍্য পদ*
     *কোথা রূপ মোর প্রাণ ধন।*
*তুমি বিনে, হাহা নাথ,কোথা যাব আমি হে,*
      *তুমি বিনে না রহে জীবন।।*
*স্বরূপ,শ্রীসনাতন,গেলেন স্বধামে রে,*
      *রৈলুঁ মাত্র তুয়া মুখ চাঞা।*
*তুমিও নির্দয় হয়ে,আমারে ছাড়িয়ে রে,*
     *গেলে হায় হঠাৎ চলিয়া।।*
*এখন শ্মশান দেখি,এ তিন জগত রে,*
     *তিল মাত্র সোয়াস্তি না পাই।*
*মনে হয়,মরি মরি,মরিতে না পারি রে,*
      *হায়,হায়, উপায় যে নাই।।*
*এত দীর্ঘ আয়ু কেন,বিধাতা করিল রে,*
       *কত জ্বালা সহিব এ প্রাণে।*
*কিম্বা বুঝি আমি বড় অপরাধী হই রে,*
      *তাই মোর না হয় মরণে।।*
*বৃন্দাবন চন্দ্র সূর্য‍্য,দু'ভাই বিহনে রে,*
      *চারি দিক ভেল অন্ধকার।*
*মরি!মরি!মরি!আর,পরাণে না মানে রে,*
     *থাকিতে এ জগত মাঝার।।*
*এত বলি কান্দে মোর শ্রীদাস গোসাঞীরে,*
     *আহা প্রাণে ধৈর্য‍্য নাহি ধরে।*
*অভাগা বৈষ্ণব দাস,আকুল হইল রে,*
       *দুঃখে তার হৃদয় বিদরে।।*
*🌻শ্রীরূপাদির অন্তর্ধানে দাস গোস্বামীর হৃদয় কিরকম ব‍্যথিত হয়েছিল,তার কিছু আভাস তিনি নিজ বাক‍্যেই দিয়াছেন।*
*🌻যথা প্রার্থনাশ্রয় চতুর্দশকে---*
*শূন‍্যায়তে মহাগোষ্ঠং গিরীন্দ্রোহ জগরায়তে।*
*ব‍্যাঘ্রতুন্ডায়তে কুন্ডং জীবাতু রহিতস‍্য মে।।১১।।*
*ন পততি যদি দেহ স্তেন কিং তস‍্য দোষঃ,*
*স কিল কুলিশ সারৈর্যদ্বিধাত্রা ব‍্যধায়ি।*
*অয়মপি পরহেতু র্গাঢ়তর্কেণ দৃষ্টঃ,*
*প্রকট কদন ভারং কোবহত্বন‍্যথা বা।।১২।।*
*🌻🌻ইহার অনুবাদ🌻🌻*
         *জীবন স্বরূপ রূপ,বিহনেতে হায়।*
*ত্রিভুবন শূন‍্য ভেল,কিছুই না ভায়*।।
*কুন্ড ব‍্যাঘ্র তুন্ড ন‍্যায়,গোবর্ধন অভিপ্রায়,*
       *মহা গোষ্ঠ শূন‍্য বোধ হয়।*
*শ্রীরূপ বিহনে প্রাণ,স্থির কভু নয়।।১১।।*
*যদি ভৃগুপাতে দেহ পতিত না হয়।*
*তথাপি দেহের তাতে,কোন দোষ নয়।।*
*যেহেতু কুলিশ সারে,বিধাতা যতন করে,*
      *এই দেহ করেছে নির্মাণ।*
*অথবা তর্কের দ্বারে, এ হেতু করেছি স্থিরে,*
      *আমা ভিন্ন অন‍্য কোন জন।*
*কখন নারিবে দুঃখ করিতে বহন।।১২।।*
*🙌জয় নিতাই গৌর হরিবল🙌*
        *বানান ভুল মার্জনীয়*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁২০. শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(২০)🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত🙏*
*😭বিরহ-যন্ত্রণা,যথা নিয়ম বিধি😭*
       *🙌🙌সমাপ্তি🙌🙌*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻এই শ্রীরূপ সনাতনাদির বিচ্ছেদ বিরহ-যন্ত্রণা অনেকদিন পরেও তাঁর হৃদয়ে সমভাবে বিরাজিত ছিল, ইহা আর হৃদয় হতে বিদূরিত হয় নাই।এর কিছুদিন পরে শ্রীচৈতন‍্য দাসাত্মজ প্রেমাবতার শ্রীনিবাস আচার্য‍্য বৃন্দাবনে গমন করেন, ও সেখানে রূপ-সনাতনের ভ্রাতৃষ্পুত্র শ্রীপাদ জীব গোস্বামীর নিকট সমুদয় বৈষ্ণব গ্রন্থ অধ‍্যয়ন করবার পর সেই গোস্বামীগ্রন্থ সমস্ত প্রচারের জন্য গৌড়ে আসিবার পূর্বে যখন দাস গোস্বামীর কাছে বিদায় নিতে যান,(১৫০৫শকে),তখন তাঁর অবস্থা বড়ই শোচনীয়।ভক্তি-রত্নাকর গ্রন্থে লিখেছেন,তখন তাঁর দেহ শুষ্ক, অস্থিচর্মসার, কিন্তু তিনি তথাপি নিয়মগুলি অতি কষ্টে পালন করেন।তাঁর একটি নিয়ম,বৈষ্ণবগণকে প্রত‍্যহ প্রণাম করা ; কিন্তু শরীর জীর্ণ শীর্ণ "বাতাসে হালয়" অর্থ‍্যাৎ একটু হাওয়া বইলে তাঁর দেহ দুলে এমন জীর্ণ হয়েছিলেন। এ অবস্থায় প্রণাম করতে বড় কষ্ট হয়। এ কষ্ট দেখে যদি কেউষপ্রণাম করতে নিষেধ করতেন,তবে তিনি কিছুই বলেন না,দীন-হীনের মতো (ভেকা হয়ে )ভেকা=হতবম্ব, হয়ে নিষেধ কর্তার মুখপানে চেয়ে থাকেন। এই অবস্থা দেখে কার না হৃদয় বিদীর্ণ হয়?*
*নিয়ম নির্বাহ যৈছে,যে চেষ্টা অন্তরে।*
*সে সব দেখিয়া কার,হিয়া না বিদরে।।*
*🌻নিয়ম কি? এ বৃদ্ধকালে অশক্তাবস্থায়,তাঁর নিয়মের কোন পরিবর্তন ঘটেনি।দাস গোস্বামীর নিয়ম যেন পাথরের রেখা।তা এদিক ওদিক হবার নহে।শেষ অবস্থায় দাস গোস্বামী কিভাবে দিনযাপন করেন, এবং তাঁর নিয়মের কোন ব‍্যতিক্রম হয়েছিল কি না,তা শ্রীরাধাবল্লভ ঠাকুরের প্রাচীন পদে বর্ণিত আছে।*
*ছেড়া কম্বল পরিধান,ব্রজ ফল গব‍্য খান,*
        *অন্ন আদি না করে আহার।*
*তিন সন্ধ‍্যা স্নান করি,স্মরণ কীর্তন করি,*
        *রাধা-পদ ভজন যাঁহার।।*
*ছাপ্পান্ন দন্ড রাত্রি দিনে,রাধা কৃষ্ণ গুণ গানে,*
       *স্মরণে সদায় গোয়ায়।*
*চারিদন্ড স্তুতি থাকে,স্বপনে রাধাকৃষ্ণ দেখে,*
        *এক তিল ব‍্যর্থ নাহি যায়।।*
*শ্রীচৈতন‍্য শচী-সুত,তাঁর গণ হয় যত,*
        *অবতার শ্রীবিগ্রহ নাম।*
*গুপ্ত ব‍্যক্ত লীলাস্থল,দৃষ্ট শ্রুত বৈষ্ণব সব,*
       *সবারে করয়ে প্রণাম।।*
              *(ইত‍্যাদি,পদকল্পতরু)*
*😭এইভাবে শ্রীদাস গোস্বামী সদায় রাধাকুন্ড-তীরে বসে ক্রন্দন করতেন।*
*হা হা রাধাকৃষ্ণ কোথা,কোথা বিশাখা ললিতা,*
       *কৃপা করিদেহ দরশন।*
*হা চৈতন‍্য মহাপ্রভু,হা স্বরূপ মোর প্রভু,*
       *হাহা প্রভু রূপ সনাতন।।*
*কান্দে গোসাই রাত্রিদিনে,ছাড়ি যায় তনু মনে,*
      *ক্ষেণে অঙ্গ ধূলায় ধূসর।*
*চক্ষু অন্ধ অনাহার,আপনাকে দেহ ভার,*
       *বিরহে হইল জর জর।।*
*রাধাকুন্ড তটে পড়ি,সঘনে নিশ্বাস ছাড়ি,*
       *মুখে বাক‍্য না হয় স্ফুরণ।*
*মন্দ মন্দ জিহ্বা নড়ে,নেত্রে প্রেম অশ্রু পড়ে,*
       *মনে কৃষ্ণ করয়ে স্মরণ।।*
                            *(পদকল্পতরু)*
*😭হায়!হায়!বলতে হৃদয় বিদীর্ণ হয়,যখন শ্রীগোস্বামীর অবস্থা এইরকম দীন হীন প্রায়,এইরকম শোক উদ্দীপক, তখন তিনি বিয়োগ যন্ত্রণা সহিতে না পেরে ভাবতেন যে, কিভাবে তাঁর মৃত‍্যু হবে।তখন তিলমাত্র জীবনধারণ তাঁর পক্ষে অসহ‍্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যথা  কর্ণানন্দে=*
*বড়ই বিয়োগে,গোসাঞির কাতর অন্তর।*
*কিরূপে দেহত‍্যাগ,ইহা ভাবে নিরন্তর।।*
*🌻এর পরেও শ্রীগোস্বামী এই ধরাধামে আরও কিছুকাল ছিলেন।শ্রীমন্নিত‍্যানন্দ-গৃহিণী শ্রীজাহ্নবা ঠাকুরাণী (তাঁর দ্বিতীয় যাত্রায়ও)বৃন্দাবনে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ছিলেন।সে কিছু পরের কথা।তখন দাস গোস্বামীর অতি শোচনীয় অবস্থা।তখন তিনি চলাচল শক্তি ছিল না,প্রায় দৃষ্টি-হীন-বিহীন বললেও হয়  ; কারও সঙ্গে আলাপ করেন না, এক জায়গায় সদা পড়ে থাকেন।তখন গৌরগণ একপ্রকার লুকায়িত হয়েছেন, তাতে অবশিষ্ট সকলেরই মন ভঙ্গ,প্রাণে কারও স্পৃহা মাত্র নাই ; তবে যে কি জন্য আছেন, সে এক রহস‍্য বিশেষ।এই অবস্থায় দাস গোস্বামী নির্জন রাধাকুন্ড তীরে একটি সামান্য গোফায়(ভজনের নির্জন কুটীর) পড়ে থাকতেন।কবিরাজ নিকটেই থাকতেন।দাস গোস্বামী কখনও কখনও কবিরাজের সঙ্গে দুই একটি কথা বলেন মাত্র।দাস নামক সেই সৌভাগ্যবান ব্রজবাসী তখনও সঙ্গে ছিলেন,তিনি প্রাণপণে তাঁদের সেবা করতেন।ঐ সময় ঈশ্বরীর সঙ্গে তাঁর মিলন হয়। সে সমস্ত গোপন রহস‍্য ভক্তি-রত্নাকর হতে উদ্ধৃত।*
*দাস গোস্বামী,সে নির্জন কুন্ড-তীরে।*
*করেন শ্রীনাম,গ্রহণাদি ধীরে ধীরে।।*
*কৃষ্ণদাস কবিরাজ,অগ্রেতে আসিয়া।*
*দাস গোস্বামীর আগে,ছিলা দাঁড়াইয়া।।*
*অবসর পাইয়া,করয়ে নিবেদন।*
*শ্রীজাহ্নবা ঈশ্বরীর,হৈল আগমন*।।
*শ্রীঈশ্বরী দেখে,দাস গোস্বামীর গমন।*
*অতিশয় ক্ষীণতনু,তেজ সূর্য‍্য সম*।।
*শ্রীঈশ্বরীর অন্তর,বুঝিতে কেবা পারে।*
*ঝরে দুই নেত্রে বারি,নিবারিতে নারে।।*
*শ্রীদাস গোস্বামী,প্রণমিতে ধৈর্য‍্য ধরি।*
*কৈলা যে উচিত,প্রেমময়ী ঈশ্বরী*।।
*শ্রীঈশ্বরী আগে,দাস গোস্বামী যে কয়।*
*তাহা শুনি কার বা,না বিদরে হৃদয়।।* *ইত‍্যাদি*
*🙏এইভাবে শ্রীঈশ্বরী জাহ্নবাদেবী দাস গোস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।তিনি কৃপা-পরবশা হয়ে রাধাকুন্ডে তিনদিন অবস্থিতি করে দাস গোস্বামী এবং অন‍্যান‍্য সাধু ভক্ত ও ব্রজবাসীগণকে প্রসাদ খাইয়েছিলেন।*
*🌻বৃন্দাবনে গৌরাঙ্গ পার্ষদ তখন অতি অল্পই ছিলেন।তখন শ্রীলোকনাথ (ইনিই সর্বপ্রথম শ্রীবৃন্দাবনে আসেন)আছেন ; তিনিও অতি বৃদ্ধ, কখন কি হয় বলা যায় না।দাস গোস্বামী মনে ভাবেন, "আমার প্রাণ অতি কঠিন,নতুবা এতগুলি নিদারুণ বিয়োগ যাতনা সহিবে কেন?তবে এইমাত্র অভিলাষ, যেন শ্রীলোকনাথ গোস্বামী, শ্রীজীব ও কৃষ্ণদাসের আগে দেহত‍্যাগ করতে পারি। যথা কর্ণানন্দে=*
*এই বৃন্দাবন মোর,সাধন ভজন।*
*এই স্থানে দেহত‍্যাগ,আমার নিয়ম।।*
*ব্রজোদ্ভব ক্ষীর যেবা, আমার ভক্ষণ।*
*ব্রজ বৃক্ষ পত্র এই,আমার বসন।।*
*ইহাতেই নির্বাহ,মোর দম্ভ দূর করি*।
*শ্রীকুন্ডে রহিয়ে কিবা,গোবর্ধন গিরি।।*
*রাধা প্রেম সরোবরের,নিকটে নিশ্চয়।*
*এই স্থানে মরি যেন,হেন বাঞ্জা হয়।।*
*শ্রীজীব রহেন যেন,আমার অগ্রেতে।*
*শ্রীকৃষ্ণ দাস আর,গোসাঞি লোকনাথে।।*
*দেহত‍্যাগ করিব আমি,ইহা সবার আগে।*
*এই দশা কবে হবে,মোর মহাভাগে।।*
*🌻এই সম্বন্ধে দাস গোস্বামী নিজে যা বলেছেন, যথা স্বনিয়ম দশকে=*
*ব্রজোৎপন্ন ক্ষীরাশন বসন পত্রাদিভিরহং,*
*পদার্থৈ নির্বাহ‍্য ব‍্যবহৃতিমদম্ভংস নিয়মঃ।*
*বসামীশাকুন্ডে গিরিকুলবরে চৈব সময়ে,*
*মরিষ‍্যেতু প্রেষ্ঠে সরসি খলু জীবাদি পুরতঃ।।*
*🙏বলা বাহুল‍্য যে,শ্রীদাস গোস্বামীর এই বাসনাটি অচিরেই পূর্ণ হয়েছিল, এইখানেই তাঁর পবিত্র চরিত্র পরিসমাপ্ত হল।*
*🌻শ্রীদাস গোস্বামী চতুর্নবতি(৯৪) বৎসর কাল এই ধরাধামে ছিলেন। তিনি ১৫১৪ শকে আশ্বিনের শুক্লা দ্বাদশী তিথিতে নিত‍্যধামে গমন করেন।দাস গোস্বামীর অপ্রকটের পর তদীয় শিলা আর মালা শ্রীলোকনাথ গোস্বামী নিজের জায়গায় নিয়ে যান।সেখানে "শিলা" ""গোকুলানন্দ"" নামে পূজিত হন।*
*🙏অতি সংক্ষিপ্ত ভাবে পরিবেশন করলাম, ভুল ভ্রান্তি ক্ষমা করবেন।🙏*
   *🙌জয় জয় রঘুনাথদাস গোস্বামীর জয়, জয় বৈষ্ণবগণের জয়🙌*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর সংক্ষিপ্ত জীবন-চরিত
শ্রীঅনিরুদ্ধচরণ চৌধুরী কর্তৃক প্রকাশিত🌻শ্রীঅচ‍্যুতচরণ চৌধুরী প্রণীত *বাংলা ১৩০০সন*
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর চরিত্রানুবাদ🙏*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
           *জয়ধ্বনি কর সবে।*
*রঘুনাথ রূপে, শ্রীরতি মঞ্জরী,*
          *জনম লভিলা ভবে।।*
*বাল‍্যকাল হৈতে, উদাস অন্তর,*
           *উন্মনার প্রায় রয়।*
      *(উন্মনা=ব‍্যাকুল মানস)*
*শ্রীগৌরাঙ্গ সনে,মিলিবার তরে,*
         *সদায় ব‍্যাকুল হয়।।*
*গৌরাঙ্গ গৌরাঙ্গ,বলিয়া একদা,*
         *ঘরের বাহির হৈল।*
*বার দিনে সেই, দীর্ঘ পথ চলি,*
         *প্রভুর নিকটে আইল।।*
*দ্বাদশ দিবসে, তিন বার হয়,*
        *আহার সে নাম মাত্র।*
*দৌড়িয়া গমনে, আপথে কুপথে,*
        *বিদীর্ণ হৈল গাত্র।।*
*পৌঁছিয়া তথায়, কিবা সে নিয়ম,*
        *শুনিতে বিদরে হৃদি।*
*কদর্য‍্য আহার, শড়ি অন্ন আদি,*
        *ছিন্ন বস্ত্র নিরবধি।।*
  *(শড়ি অন্ন=চার-পাঁচ দিনের পঁচা অন্ন)*
*স্বরূপের সাথে, অতি সাবহিতে,*
         *প্রভুর গুপত সেবা।*
*প্রভু অন্তর্ধ‍্যানে, অস্থির হইলা,*
        *স্থির বা থাকিবে কেবা।।*
*তবে প্রভু মোর, পরাণ ত‍্যজিতে,*
        *শ্রীবৃন্দাবনেতে আইলা।*
*রূপ সনাতন, যতন করিয়া,*
        *নিজ ভাই করি নিলা।।*
*পরে দুই ভাই, বিহনেতে তাঁর,*
             *বড়ই দুর্দশা হৈল।*
*সেই সব কথা, ভাবিতে আমার,*
           *এ প্রাণ ফাটিয়া গেল।।*     
*তার পরে হায়, কি বলিব কথা,*
         *অন্তর্ধ‍্যান কৈল প্রভু।*
*সে দুঃখ কাহিনী, আমার অন্তরে,*
         *নাহি পায় যেন কভু।।*
*তাঁর শ্রীবিগ্রহ, প্রভু দত্ত শিলা,*
         *আর শ্রীগুঞ্জার মালা।*
*লোকনাথ কাছে,গোকুল আনন্দ,*
         *রূপেতে প্রকাশ হৈলা।।*
*এই রঘুনাথ, পদে মন প্রাণ,*
          *করিয়াছি সমর্পণ।*
*হবে কি করুণা, এই হীন প্রতি,*
         *মুই ছার অকিঞ্চন।।*
*অভাগা পামর, শ্রীবৈষ্ণব দাসে,*
         *দয়া কর হে গোসাঞি।*
*তুমি বিনে আর, এ তিন ভুবনে,*
        *আমার আশ্রয় নাই।।*
*🙏শ্রীমৎ রঘুনাথদাস গোস্বামীর জয়🙏*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧




শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html