🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/04/ramananda2.html

 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
         ꧁ শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    🏠Home Page🏠⬇️⬇️🙏⬇️⬇️📚PDF গ্রন্থ📚
꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂
         ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
     এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
            ꧁ শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 প্রথম ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১১. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১)🙏🙏শ্রীরামানন্দ রায়🙏🙏*
   *🙌🙌🙌তত্ত্ব--কথা🙌🙌🙌*
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🍀শ্রীমন্মহাপ্রভু শ্রীরাম রায়কে মহাভক্ত বলে জেনেও লোকাচার অনুরোধে তাঁর আলয়ে গমন করলেন না,কেননা তিনি বিষয়ী।পূর্বে বলা হয়েছে মহাপ্রভু, একজন ভক্ত ব্রাহ্মণের নিমন্ত্রণে তাঁর গৃহে পদার্পণ করে ভিক্ষাদি নির্বাহ করলেন।গৌরহরি ও প্রিয়ভক্ত উৎকণ্ঠায় দিনমান অতিবাহিত করেন।রায় রামানন্দ সায়াহ্নে(সন্ধ‍্যাবেলা) ব্রাহ্মণ ভবনে উপস্থিত হয়ে শ্রীগৌরাঙ্গের শ্রীপদপ্রান্তে লুটিয়ে পড়লেন।তিনি পরম ভক্ত রামরায়কে আলিঙ্গন করে সাদরে সম্ভাষণ করলেন।স্থান অতি নির্জন। এই নির্জন জায়গায় সাক্ষাৎ জগৎপতির শ্রীচরণ-প্রান্তে তাঁর পরম ভক্ত শ্রীরামরায় দীনভাবে বসিলেন।তখন ধর্ম-কথা আরম্ভ হ'ল।ধর্মের ক্রমবিকাশ সম্বন্ধে এ পর্যন্ত যত প্রকার আন্দোলন আলোচনা হয়েছে, মহাপ্রভুর প্রশ্নে শ্রীরামরায়ের প্রত‍্যুত্তরে সেই তত্ত্ব যেরকম পরিস্ফুট হয়েছে, জগতে আর কোনও ধর্মশাস্ত্রে উহার শতাংশের একাংশ দেখা যায় না।এতৎ (এই) সম্বন্ধে  যতই আলোচনা হয়,জগতের পক্ষে ততই মঙ্গল।এই আলোচনা অসীম ও অনন্ত।এস্থলে অথি সংক্ষিপ্ত ভাবে শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃত হতে দুই একটি কথার উল্লেখ করা হচ্ছে। মহাপ্রভু বললেন "রাম রায়" তোমার মুখে তত্ত্ব-কথা শুনব এই আশায় এসেছি, সাধ‍্য-নির্ণয় সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ শ্রবণ করতে ইচ্ছে করি।*
*🙏🙏🙏বর্ণাশ্রম🙏🙏🙏*
*🌻পরমপন্ডিত শ্রীরামানন্দ রায় ভক্তিভাবে প্রণত হয়ে তদুত্তরে বললেন-- প্রভো! স্বধর্মাচরণেই বিষ্ণুভক্তির উদয় হয়। এ বিষয়ে প্রমাণ এই যে=*
*"বর্ণাশ্রমচাররতা পুরুষেণ পরঃ পুমান্।*
*বিষ্ণুরারাধ‍্যতে পন্থা নান‍্যস্তৎ তোষকারণম্ "।।*
                         *(বিষ্ণুপরাণ ৩|৮|৯)*
*🌻অর্থ‍্যাৎ বর্ণশ্রমচারশীল পুরুষ দ্বারাই পরমপুরুষ বিষ্ণু আরাধিত হন।ইহাই তাঁর পরিতুষ্টির কারণ।এতদ্ব‍্যতীত (এই ছাড়া)তাঁর তুষ্টির আর দ্বিতীয় পথ নেই।*
*🌹বর্ণাশ্রম ধর্মের অনুষ্ঠানই স্বধর্মাচরণ।সাধনে যা লভ‍্য হয়,তাই-ই সাধ‍্য।বিষ্ণুভক্তিই সাধ‍্য।স্বধর্মাচরণ ইহার বহিরঙ্গ সাধন। সাধকের পক্ষে সর্বপ্রথম বর্ণাশ্রমধর্ম অবশ‍্য পালনীয়, ইহাই এই শাস্ত্রীয় বাক‍্যের মর্ম। বর্ণাশ্রম ভক্তিরই সাধন।শ্রীপাদ জীব গোস্বামী ভক্তি-সন্দর্ভে লিখেছেন=*
*"যতো যশ্চ শাস্ত্রে বর্ণাশ্রমাচারো বিধীয়তে তস‍্যাপ‍্যনুপম চরিতং ফলং ভক্তিরেব।*
*দানব্রততপোহোমজপস্বাধ‍্যায়সংযমৈঃ,*
*শ্রেয়োভি র্বিবিধৈশ্চান‍্যৈঃ কৃষ্ণে ভক্তিহি সাধ‍্যতে "।।*
*🌺বর্ণাশ্রমধর্মের প্রতিপালন ভিন্ন দেহশুদ্ধি ও চিত্তশুদ্ধি ঘটে না। অধিকার ভেদেই শাস্ত্রীয় বিধির প্রবর্তন।পদ্ম পুরাণেও লিখিত আছে =*
*"বর্ণাশ্রমানুরূপঞ্চ কর্তব‍্যং বৈষ্ণবৈঃ শুভৈঃ।*
*শ্রুতিস্মৃত‍্যুদিতং সম‍্যঙ্ নিত‍্যমাচারমাচরেৎ।।*
*শ্রুতি-স্মৃত‍্যুক্তমাচারং যো ন সেবেত বৈষ্ণবঃ।*
*পঞ্চপাষন্ড-মাপন্নো রৌরবে নরকে বসেৎ।।*
*তস্মাৎ স্মৃত‍্যুক্তমাচারং কুর্য‍্যাদ্বৈ মানবঃ সদা।*
*স্বাধিকারং নিরীক্ষ‍্যৈব কর্মকুর্য‍্যাদতন্দ্রিতঃ "।।*
          *(শ্রীপদ্মপুরাণ--উত্তরখন্ড ৯৫ অধ‍্যায়)*
*🍀বর্ণাশ্রম প্রতিপালন ভিন্ন বিষ্ণুর পরিতোষের অন‍্য পন্থা নাই।ইহা  প্রাথমিক সাধক সম্বন্ধেই বুঝতে হবে।আমরা বিষয়ী। চিন্ময়রাজ‍্যের কোন তত্ত্বই আমাদের কাছে স্ফুট(স্পষ্ট) নয়। আমাদের জড়বৎ চিত্তে চিজ্জগতের সত‍্যরেখার উন্মেষের (উদ্ভবের) জন্য সর্বপ্রথমে শাস্ত্রনির্দিষ্ট বর্ণাশ্রম ধর্ম অবশ‍্যই প্রতিপালনীয়। শাস্ত্রাকারগণের বিশ্বাস,অজাতশ্রদ্ধ ব‍্যক্তির পক্ষে বর্ণাশ্রমাচার-পালনে সত্ত্বগুণের বৃদ্ধি হয়,তার ফলে চিত্তের মলিনতা দূর হয়ে যায়,অতঃপরে মহৎসঙ্গে ভক্তির উদয় হয়।শ্রীরামরায়ের মুখে মহাপ্রভু ধর্মের সমস্ত তত্ত্ব পরিস্ফুট করে জীবশিক্ষার জন্য সর্বপ্রকার অধিকারীর ধর্মই যথাযথরূপে অভিব‍্যক্ত করেছিলেন।*
*🙏আজ এই পর্যন্ত,ক্রমাগত*
🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১২. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১২)🙏শ্রীরামানন্দ রায়🙏*
*🙌🙌তত্ত্ব----কথন🙌🙌*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻শ্রীরামরায় যে উত্তর করলেন, মহাপ্রভু তাতে তৃপ্ত না হয়ে বললেন, "এ তো ধর্মের বাহ‍্য সাধন"।বর্ণাশ্রমচার সাধ‍্য নহে,সাধন,অতি বহিরঙ্গ সাধন। যেহেতু=*
*"বিষ্ণুভক্তিবিহীনানাং শ্রৌতাঃ স্মার্তাশ্চ যাঃ ক্রিয়াঃ।*
*কায়ক্লেশফলং তাসাং স্বৈরিণীব‍্যভিচারবৎ"।।*
*🌼ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণেও লিখিত আছে=*
*"কলৌ কলুষচিত্তানাং বৃথায়ুঃ প্রভৃতীনি চ।*
*ভবন্তি বর্ণাশ্রমিণাং ন তু মচ্ছরণার্থিনাম্ "।।*
*🌷সুতরাং কেবল বর্ণাশ্রমাচার, সাধ‍্য নহে, এর পরে আর কি আছে,বলো। রামরায় বললেন,তাহলে কৃষ্ণে কর্মার্পণই সাধ‍্য।কর্মার্পণ।*
*🍀শাস্ত্র এই যে=*
*"যৎ করোষি যদশ্নাসি যজ্জুহোষি দদাসি যৎ।*
*যত্তপস‍্যসি কৌন্তেয় তৎকরুরুষ্ব মদর্পণম্ "।।*
                               *(গীতা=৯|২৭)*
*🌻অর্থ‍্যাৎ হে কৌন্তেয়!তুমি যা কর,যা আহার কর,যা হবন কর,যা দান কর,যে তপস‍্যা কর তৎসমস্তই আমাকে অর্পণ করবে।*
*☘বর্ণাশ্রমধর্মে সকামতা আছে, কিন্তু কৃষ্ণে কর্মার্পণে যে সকামতা দোষ পরিহৃত হয়।কৃষ্ণপ্রীতির জন্য যে কর্ম,তাইই নিষ্কাম কর্ম। শ্রীমদ্ভাগবতগীতায় এই নিষ্কাম ধর্মের মাহাত্ম‍্য ভূয়োভূয়ঃ পরিকীর্তিত হয়েছে। চিত্তকে ভগবদ্ উন্মুখ করার জন্য কেবল তাঁর প্রীত‍্যর্থে কর্ম করা প্রাথমিক সাধন। এইরকম কর্মার্পণ "আরোপসিদ্ধা" ভক্তি নামে অভিহিত। আরোপসিদ্ধা,সঙ্গসিদ্ধা এবং জ্ঞানসিদ্ধা ভেদেভক্তি তিন প্রকার। স্বরূপতঃ ভক্তি না হয়েও যাতে ভক্তিভাব আরোপিত হয় তাইই আরোপসিদ্ধা ভক্তি।ভগবদ্ অর্পিত কর্মাদিই এর উদাহরণ স্থল। স্বরূপতঃ ভক্তি না হয়েও ভক্তির পরিকররূপে নির্দিষ্ট তদন্তঃপাতি জ্ঞান ও কর্মাঙ্গভূত বৈরাগ‍্য দান আদি ভক্তির সঙ্গে থাকলে সেটি সঙ্গসিদ্ধা ভক্তি বলে কথিত হয়। শ্রীভগবানের নাম গুণালীলাদি শ্রবণ-কীর্তন-স্মরণ-মনন আদিই স্বরূপসিদ্ধা ভক্তি।কর্মত‍্যাগের অধিকার সম্বন্ধে শ্রীভগবান্ উদ্ধবকে বলেছিলেন=*
*"তাবৎ কর্মাণি কুর্বীত ন নির্বিদ্রেত যাবতা।*
*মৎকথাশ্রবণাদৌ বা শ্রদ্ধা যাবন্নজায়তে "।।*
                    *(শ্রীভাগবতে=১১|২০|৯)*
*🌻অর্থ‍্যাৎ হে উদ্ধব!যে পর্যন্ত সম্পূর্ণ নির্বেদ(অনুতাপ) না জন্মে এবং আমার কথা, শ্রবণ-কীর্তনাদিতে শ্রদ্ধা না হয়,সে পর্যন্ত স্বাধিকার বিহিত নানারকম নিত‍্য নৈমিত্তিক কর্মের অনুষ্ঠান না করবে কিন্তু ভগবদভাব বিবর্জিত কর্ম ভক্তির সাধক নয়, সুতরাং কর্ম ও কর্মফল শ্রীভগবানে অর্পণ করে কর্ম করার বিধান স্বীকৃত হয়েছে।*
*🍁কিন্তু মহাপ্রভু এও উপেক্ষা করলেন।তিনি বললেন, এহ বাহ‍্য। এর পরে কি তাই বলো। রামানন্দ রায় বুঝলেন,মহাপ্রভু সকাম নিষ্কাম সর্বপ্রকার কর্মকেই বহিরঙ্গ বলে উপেক্ষা করলেন।তখন তিনি বললেন, প্রভো!বর্ণাশ্রম ধর্ম দুই প্রকার=এক সকাম, দুই নিষ্কাম।সকাম অপেক্ষা নিষ্কাম শ্রেষ্ঠতর। কিন্তু আপনি এই দুটিই বাহ‍্য বলে উপদেশ করলেন। আমার মনে হয় তবে বুঝি স্বধর্মত‍্যাগই সাধ‍্যতত্ত্বের সার। যথা গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন ঃ----*
*"সর্বধর্মান্ পরিত‍্যজ‍্য মামেকং শরণং ব্রজ।*
*অহং ত্বাং সর্বপাপেভ‍্যো মোক্ষয়িষ‍্যামি মা শুচঃ"।।*
                            *(গীতা=১৮|৬৬)*
*🌹ভক্তি শাস্ত্রে ইহাই শরণাপত্তি (শরণাপত্তির লক্ষণসম্বন্ধে বৈষ্ণবতন্ত্রে এইরকম লিখিত আছে ঃ---,*
*"আনুকূল‍্যস‍্য সঙ্কল্পঃ প্রাত্তিকুলাবিবর্জনম্।*
*রক্ষিষ‍্যতীতি বিশ্বাসো গোপ্তৃত্বে বরণং তথা।।*
*আত্মনিক্ষেপঃ কার্পণ‍্যে ষড়্ বিধা শরণাগতিঃ।।*)
*🍀শরণাপত্তি নামে অভিহিত।কর্মমিশ্রা ভক্তি আরোপসিদ্ধা। শরণাপত্তি কর্মমিশ্রা না হলেও দুঃখ প্রতিষেকবাসনামূলা।*
*☘মহাপ্রভু বললেন, এহ বাহ‍্য।এর পরে কি আছে বলো? রামরায় বললেন,প্রভো!তাহলে জ্ঞানমিশ্রা ভক্তিই সাধ‍্য বলে কীর্তিত হোক। কেননা জ্ঞানীভক্তের আত্মা প্রসন্ন,তাঁর কোন সুখ ও দুঃখ নেই। শ্রীগীতা বলেন=*
*"ব্রহ্মভূতঃ প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি।*
*সমঃ সর্বেষু ভূতেষু মদ্ভক্তিং লভতে পরাম্"।।* *(১৮|১৫)*
*🌼এতদ্বারা ব্রহ্মজ্ঞানের সাধ‍্যত্ব কথিত হল, কিন্তু গৌরহরি ব্রহ্মজ্ঞানকেও সাধ‍্য মনে করলেন না।মহাপ্রভু বললেন এতো সঙ্গসিদ্ধা ভক্তি বটে। কিন্তু ইহা সাধ‍্য নহে। এর পরে কি আছে বলো।শ্রীগৌরাঙ্গ যখন ব্রহ্মজ্ঞানকেও বাহ‍্য বললেন, তখন রামরায় জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তির কথা তুলে বললেন=*
*"জ্ঞানেপ্রয়াসে মুদপাস‍্য নমন্ত এব,*
*জীবন্তি সম্মুখরিতাং ভবদীয় বার্তাম্।*
*স্থানস্থিতাঃ শ্রেতিগতাং তনুবাঙ্মনোভি,*
*র্যে প্রায়শোজিত জিতোহপ‍্যসি তৈ স্ত্রিলোক‍্যাম্"।।*
                        *(শ্রীভাগবত=১০|১৪|৩)*
*🍀অর্থ‍্যাৎ হে ভগবন্! যাঁরা নির্ভেদ ব্রহ্মজ্ঞানে প্রয়াস না পেয়ে ভক্তসঙ্গে বাস করেন এবং ভক্তমুখরিত ভবদীয় বার্তা শ্রবণে দেহমন দ্বারা তাতেই জীবন অতিবাহিত করেন, হে প্রভো! তুমি ত্রিভুবনে অজিত হয়েও তাঁদের দ্বারা জিত হয়ে থাক।*
                    *ক্রমাগত*
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৩. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *(১৩)🙏শ্রীরামানন্দ রায়🙏*
       *🌻তত্ত্ব-কথন🌻*
    *************************
*🍀শ্রীরাম রায়ের প্রমুখাৎ (শ্রীমুখ থেকে) মহাপ্রভু এই বিশুদ্ধ ভক্তির কথা শুনে বললেন, রামরায়!সাধ‍্য-তত্ত্বের মধ্যে এই বিশুদ্ধ ভক্তি গ্রাহ‍্য বটে,কিন্তু এও চরম নহে।*
*🙏বৈষ্ণব ধর্মের সাধ‍্য-তত্ত্ব কত উচ্চে অবস্থিত,এখান হতেই তার সোপান( সিঁড়ি)বুঝা যায়। নির্ভেদ ব্রহ্মজ্ঞানীর যা চরম সাধ‍্য,বৈষ্ণবের সাধ‍্যের প্রথম সোপান তারও পরে।বিশুদ্ধ ভক্তি হতেই বৈষ্ণবধর্মের সাধ‍্যতত্ত্বের প্রথম সোপান আরম্ভ।এই সিঁড়ি হতে অনেকগুলি সিঁড়ি অতিক্রম করলে সাধ‍্যতত্ত্বের নিগূঢ় প্রদেশে উপস্থিত হওয়া যায়।সাধন ভক্তির পরেও যখন মহাপ্রভুর জিজ্ঞাসার নিবৃত্তি(বিরতি)হ'ল না,তখন রামরায় বললেন,প্রভো! প্রেমভক্তিই সর্বসাধ‍্যসার।এই বলে তিনি স্বরচিত শ্লোক পাঠ করলেন। যথা=*
*"নানোপচারকৃতপূজন মাত্মবন্ধোঃ প্রেয়ৈব ভক্ত-হৃদয়ং সুখবিদ্রূতং স‍্যাৎ।*
*যাবৎ ক্ষদস্তি জঠরে জরঠা পিপাসা তাবৎ সুখায় ভবতো ননু ভক্ষ‍্যপেয়ে।।*
*🌷অর্থ‍্যাৎ বিবিধ উপচার দ্বারা পূজা ব‍্যতীতও কেবল প্রেম দ্বারাই ভক্তহৃদয় সুখে দ্রবীভূত হয়।যে পর্য‍্যন্ত বলবতী ক্ষুধা ও পিপাসা বর্তমান থাকে,সেই পর্য‍্যন্ত ভক্ষ‍্যপেয় সুখের কারণ হয়।*
*"কৃষ্ণভক্তিরসভাবিতা মতিঃ ক্রিয়তাম্ যদি কুতোহপি লভ‍্যতে।*
*তত্র লৌলমপি মূল‍্যমেকলং জন্মকোটিসুকৃতৈ র্ন লভ‍্যতে।।*
*☘অর্থ‍্যাৎ যদি কোথাও কৃষ্ণভক্তিরসভাবিতা মতি পাওয়া যায়,তবে তা তৎক্ষণাৎ ক্রয় কর।লোভই উহার একমাত্র মূল‍্য।কোটি জন্মের সুকৃতি দ্বারাও এই লোল‍্য পাওয়া বড়ই সুদুষ্কর। এই শ্লোকটি প্রেমভক্তির উদাহরণ।*
*🌺আগেই বলা হয়েছে,নিগূঢ় ধর্মতত্ত্ব প্রকটনের জন্য মহাপ্রভূ রামরায় দ্বারা জগতে সাধ‍্যের সারতম তত্ত্ব প্রকাশিত করেন।রামরায় যতক্ষণ কর্মাদির বিষয় বলছিলেন, মহাপ্রভু তার সমস্তই বহিরঙ্গ বলে তাতে উপেক্ষা করছিলেন।যখন প্রেমভক্তির কথা উপস্থাপিত করা হল,প্রেমময় মহাপ্রভু তখন তাতে সম্মতি প্রকাশ করে বললেন=*
*"""এহ হয়, আগে কহ আর"""।*
     °°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🍁প্রেমভক্তির প্রথম সোপান বা সিঁড়ি--দাস‍্য। তাই রায় মহাশয় সর্ব প্রথমে দাস‍্য প্রেমের মাহাত্ম্য-সূচক একটি শ্লোক পাঠ করে বললেন=*
*"যন্নামশ্রুতিমাত্রেণ পুমান্ ভবতি নির্মলঃ।*
*তস‍্য তীর্থপদঃ কিংবা দাসানামবশিষ‍্যতে"।।*
                       *(শ্রীভাগবত=৯|৫|১৬)*
*☘অর্থ‍্যাৎ যে তীর্থপদ শ্রীভগবানের নাম শ্রুতিবিষয়ে প্রবিষ্ট (প্রবেশ) হলেই লোক নিষ্পাপ ও নির্মল হয়ে যায়, এ জগতে তাঁর দাসদের আর কি কোন সাধন অবশিষ্ট থাকে? অর্থ‍্যাৎ শ্রীভগবত-দাস-গণের পক্ষে সকল সিদ্ধিই করতলগত। তিনি আরও একটি শ্লোক দ্বারা দাস‍্যপ্রেমের মাহাত্ম্য প্রকটিত করেন তা এই যে=*
*"ভবন্তমেবানুচরন্নিরন্তরঃ প্রশান্তনিঃশেষমনোরথান্তরঃ।*
*কদাহমৈকান্তিকনিত‍্যকিঙ্করঃ প্রহর্ষয়িষ‍্যামি স নাথজীবিতম্"।।*
             *(গোস্বামীপাদোক্তঃ শ্লোকঃ)*
*🍁অর্থ‍্যাৎ হে নাথ!আমার এমন দিন কবে হবে যে আমি তোমার ঐকান্তিক নিত‍্য দাস হয়ে সতত তোমাকে ভাবতে ভাবতে প্রশান্তমনা হয়ে তোমার অনুচর বা দাস হব এবং আমি সনাথ হয়ে পরমানন্দ লাভ করব।(আমি ভক্তসঙ্গ বা সৎসঙ্গ না করতে পেরে সত‍্যই অনাথ হয়ে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যেদিন তোমার দাস হতে পারব সেদিন সত‍্যিকারের সনাথ হব।)*
*🌹দাস‍্যপ্রেমের এই ভাব প্রাথমিক প্রেমভক্তি-সাধকের একান্ত উপযোগী। কিন্তু বলা বাহুল‍্য প্রেমভক্তি লাভের জন্য সর্বপ্রথমে শাস্ত্রীয় বিধান প্রতিপালন অত‍্যাবশ‍্যক। মহাপ্রভু বর্ণাশ্রমাচারজনিত সকাম ও নিষ্কাম কর্মকে বহিরঙ্গ বলেছেন।বস্তুতঃ সাধ‍্য তত্ত্বের আলোচনায় এইসব বিষয় যে বাইরের কথা তাতে অনুমাত্রও সন্দেহ নেই। আচারভ্রষ্ট লোকের দেহশুদ্ধি হয় না। আর অশুদ্ধ দেহে কৃষ্ণভক্তির উদয় অসম্ভব। অসাত্ত্বিক আহার,গ্রাম‍্য বা বাজে কথায় সময় কাটানো, গ্রাম‍্য বা বাজে ভাবনায় মনের একাগ্রতা প্রভৃতি কৃষ্ণভক্তির বাধা। সুতরাং আদৌ দেহ-শুদ্ধির জন্য শাস্ত্রীয় বিধান মত জীবনের কাজ নিয়মিত করা কর্তব‍্য।জীবন যদি এইরকম নিয়মিত না হয়,তবে ভক্তির সাধন-রাজ‍্যে প্রবেশ-পথ পাওয়াই অসম্ভব।মহাপ্রভু ঐ সব কর্মকে বাইরের কর্ম বলে নির্দিষ্ট করলেও আমাদের মতো বহিরঙ্গগণের সর্বপ্রথমে ঐসব অর্থ‍্যাৎ শুদ্ধসঙ্গ কর্মানুষ্ঠান একান্ত কর্তব‍্য। একদিকে যেমন শুদ্ধ কর্মানুষ্ঠান করতে হবে,অপরদিকে তেমনি আবার চিত্তকে বিশুদ্ধ ভক্তির দিকে অগ্রসর করতে হবে।প্রেমভক্তির প্রথম  সঞ্চারে প্রাণ ভগবদ-দাসের জন্য আকুল হয়।তখন সততই শ্রীভগবানের শ্রীচরণান্তিকে থেকে তাঁর সেবা,তাঁর প্রিয়কার্য‍্য সাধন,তাঁর আজ্ঞা প্রতিপালন প্রভৃতি করে তাঁর সন্তোষ জন্মাতে ইচ্ছা হয় এবং তাঁর সন্তোষেই নিজের চিত্তে পরমানন্দের উদয় হয়।*
                  *ক্রমাগত*
🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৪. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৪)🌻🙏শ্রীরামানন্দ রায়🙏🌻*
         *🙌তত্ত্ব--কথন🙌*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌹সাধক যখন প্রেমভক্তির সুখময় রাজ‍্যে প্রবেশ করেন, তখন এ জগতে থেকেও তাঁর একটা জগৎছাড়া ভাব হয়,তখন সাধারণের অতীন্দ্রিয়(ইন্দ্রিয়ের অগোচর)অর্থ‍্যাৎ তিনি আর আন কিছু দেখতে পান না, অভক্তের অদৃশ‍্য,প্রেমের ঠাকুর তাঁর হৃদয় জুড়ে বসেন।সাধক তখন আপন (নিজ) হৃদয়ে তাঁর প্রাণবল্লভের রূপরাশি প্রত‍্যক্ষ(সাক্ষাৎ) করে বিভোর ও বিহ্বল হয়ে পড়েন।কুসুম-মধু-লুব্ধ ভ্রমরের মতো সাধক ভক্ত তখন শ্রীভগবৎপদারবিন্দমকরন্দলোভে সততই তাঁর শ্রীচরণান্তিকে ঘুরে বেড়াতে চান।তখন তাঁর বাহ‍্যজ্ঞান, বাহ‍্য তৃষ্ণার বিলোপ (লুপ্ত) হয়। এই জগতের প্রভুদের সঙ্গে সেই প্রেমের ঠাকুর শ্রীমন্মহাপ্রভুর তুলনা হয় না। তিনি মহাপ্রভু অথচ প্রিয় সুহৃদ।ভক্ত তাঁর দাস অথচ নিঃসঙ্কোচ দাস।সে রাজ‍্যে শুধুই মাধুর্য‍্যের প্রভুত্ব, সেখানে কঠোরতা নেই,ভ্রুভঙ্গি নাই,উচ্চবাক‍্য নাই। সেখানে প্রেমের প্রভু,প্রেমের দাস।তাই গোপীগণ বলতেন "আমরা তোমার "অশুল্কদাসিকা" অর্থ‍্যাৎ আমরা বিনা বেতনে তোমার শ্রীচরণে নিজেদের জীবন সমর্পন করে "দাসী" হয়েছি। এই হচ্ছে দাস‍্যপ্রেম ভক্তির আকর্ষণের ফল।দাস‍্য প্রেমভক্তির ক্রিয়া যতই বলবতী হয়,জীব ভগবৎ চরণান্তিকে ততই প্রবলবেগে আকৃষ্ট হতে থাকে। সুতরাং প্রেমভক্তির রাজ‍্যে প্রবেশে দাস‍্যই প্রথম সোপান বা সিঁড়ি।🙏দাস‍্য-ভক্তি-রস-বিশেষ।রসের বিষয় ও আশ্রয় থাকে।ষড়ৈশ্বর্য‍্য -শালী সর্বজ্ঞ ও ভক্তবৎসল শ্রীকৃষ্ণ এই রসের বিষয়-অবলম্বন। তাঁর শ্রীচরণ-সেবা-পরায়ণ ভক্তই এর আশ্রয়-অবলম্বন। দাস‍্যসেবাপরায়ণ ভক্ত,মমতাযুক্ত,গৌরবভাবময়,শ্রীভগবন্নিষ্ঠ, ও জনসমাজের উপকারক।অধিককৃত ভক্ত,আশ্রিতভক্ত,পারিষদ ও অনুগামী ভেদে এই রসের আশ্রয়ালম্বন চারভাগে বিভক্ত।তারমধ‍্যে ব্রহ্মশঙ্করাদি দেবতাগণ অধিকৃত ভক্ত। আশ্রিত ভক্ত তিন প্রকার=শরণ‍্য,জ্ঞানিচর ও সেবানিষ্ঠ। কালিয়নাগ,মগধরাজ-জরাসন্ধ কর্তৃক উৎপীড়িত(অত‍্যাচারিত) ও রুদ্ধ(বন্ধ) রাজগণ শরণ‍্য ভক্ত।যাঁরা পূর্বে জ্ঞানী ছিলেন,পরে ভক্তিরসের আস্বাদন পেয়ে দাস‍্য প্রবৃত্ত(নিযুক্ত) হন তারাই জ্ঞানিচর।সনকাদি মুনিগণ এই শ্রেণীর উদাহরণ।যাঁরা প্রথম হতেই সেবানিষ্ঠ,তাঁরা সেবানিষ্ঠ দাস‍্যবলম্বী বলে অভিহিত। চন্দ্রধ্বজ, হরিহর,বহুলাশ্ব রাজগণ এই বিভাগের অন্তর্গত।উদ্ধব,দারুক ও শ্রুতদেবাদি ক্ষত্রিয়গণ এবং উপনন্দাদি গোপগণ-- পারিষদ। চতুর্থ শ্রেণী =অনুগামী। অনুগামী দাস‍্যভক্তের বিবিধ বিভাগ আছে। পুরে সুচন্দ্র ও মন্ডনাদি এবং ব্রজে রক্ত-পত্রক-মধুকন্ঠাদি অনুগামী। এই অনুগামীদের মধ্যে যাঁরা সপরিবারে শ্রীকৃষ্ণসেবক,তাঁরা ধুর্য‍্যভক্ত ; যাঁরা শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সীবর্গে বেশী আদরযুক্ত,তাঁরা ধীরভক্ত, আর যাঁরা কৃষ্ণের কৃপালাভে গর্বিত, এবং নিরপেক্ষ,তাঁরা বীরভক্ত।নিত‍্যসিদ্ধ, সাধনসিদ্ধ ও সাধকসিদ্ধ এই শ্রেণীর ভক্ত ত্রিবিধ।*
*🌻দাস‍্যরসের তিনটি অবস্থা, প্রেম, স্নেহ ও রাগ ; তারমধ‍্যে অধিকৃতভক্তে ও আশ্রিতভক্তে প্রেম পর্য‍্যন্ত স্বায়ী হয়, পারিষদভক্তে স্নেহ পর্য‍্যন্ত এবং পরীক্ষিৎ দারুক ও উদ্ধবের রাগ পর্য‍্যন্ত প্রকট হয়ে থাকে। কিন্তু ব্রজানুগ রক্তকাদিতে এবং পুরে প্রদ‍্যুম্নাদিতে সব গুলি দেখা যায়। দাস‍্যরসে আযোগ,যোগ ও বিয়োগ এই তিন অবস্থাই থাকে।প্রথম দর্শনের পূর্বের অবস্থার নাম "আযোগ"। দর্শনের পর বিচ্ছেদ ঘটে  তার নাম বিয়োগ ; মধ‍্যাবস্থার নাম যোগ।দাস ভক্তগণের শ্রীকৃষ্ণ বিয়োগে, অঙ্গ-তাপ, কৃশতা,জাগরণ,আলম্বনশূন‍্যতা, অধীরতা,জড়তা,ব‍্যাধি,উন্মাদ, মূর্ছা ও মৃত‍্যুতুল‍্য অবস্থা ঘটে থাকে। অযোগে ঔৎসুক‍্যাদি(উৎকন্ঠাদি) এবং যোগে সিদ্ধিতুষ্টি প্রভৃতি লক্ষিত হয়। ফলে দাস‍্যভক্তিবলে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি হৃদয়ের যে একটা প্রবল আকর্ষণ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে এই সব বিষয়ের বিচারে তা স্পষ্টতঃই অনুমান করা যায়।এই জন‍্যই রামরায় দাস‍্যভক্তিকে "সাধ‍্য" বলে অভিহিত করলেন।*
                  *ক্রমাগত*
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৫. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৫)🙌শ্রীরামানন্দ রায়🙌*
          *তত্ত্ব-----কথন*
           *সখ‍্য----প্রেম*
         """""""""""""""""""""""""""'"""'"
*🌺শ্রীশ্রীমহাপ্রভু দাস‍্যপ্রেমের কথা শুনে বললেন "সাধ‍্য তত্ত্বের" মধ্যে দাস‍্যপ্রেম প্রেমসাধনের উপায় বটে। কিন্তু এটি সাধ‍্য-তত্ত্বের সার নহে।তার পরে কি তাইই বল।শ্রীরামরায় অতঃপরে "সখ‍্যপ্রেম" এর কথা তুললেন। প্রেমের রাজ্য -- জীবের আপন রাজ‍্য।বাইরে বাইরে দূরে দূরে থাকলে আপনার হতে আপন যে ভগবান, তাঁর প্রেমসেবা সম্ভবে না। তাই দাস‍্য,প্রেমসেবার উপায় হলেও ওতে যেন সাধককে একটুকু ভীত-ভীত,একটুকু ফাঁক-ফাঁক, একটুকু দূরে-দূরে রাখে। প্রেম চাহে মাখামাখি।সুতরাং দাস‍্য হতে সখ‍্যপ্রেম মাখামাখিজনক। শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃতের আদি লীলার চতুর্থ পরিচ্ছেদে লেখা আছে =*
*ঐশ্বর্য‍্য জ্ঞানেতে সব জগত মিশ্রিত।*
*ঐশ্বর্য‍্য-শিথিল প্রেমে নহে মোর প্রীত।।*
*আমারে ঈশ্বর মানে,আপনাকে হীন।*
*তার প্রেমবশে আমি না হই অধীন।।*
*🍀দাস‍্যপ্রেমে প্রেমের ভাব আছে, কিন্তু এতে সম্ভ্রম ও ভক্তি প্রভৃতি জনিত সঙ্কোচতাও আছে। সুতরাং দাস‍্য প্রেমভক্তি, সাধ‍্যতত্ত্ব হলেও প্রেম রাজ‍্যে দাস‍্যপ্রেমের আদর অপেক্ষাকৃত অনেক কম। কিন্তু আমাদের মত বহিরঙ্গগণ অনেক জন্মের তপস‍্যাতেও বোধহয় দাস‍্য প্রেমের অধিকার লাভ করতে পারে না। শ্রীমহাপ্রভুর সঙ্গে রাম রায়ের যে আলাপ হচ্ছে,উহা প্রেমের উচ্চতম বিকাশের কথা।উহা সাধারণ সাধকের দুষ্প্রেক্ষ‍্য। দাস‍্যপ্রেম অপেক্ষা সখ‍্যপ্রেম উচ্চতর। শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর উক্তি=*
*সখা শুদ্ধ সখ‍্যে কর স্কন্ধে আরোহণ।*
*"তুমি কোন বড়লোক" তুমি আমি সম।।*
*🌹ভগবানকে সখা বলে সম্বোধন করায়,তাঁর সঙ্গে সখ‍্যভাবে বিচরণ করায় যে অনন্ত মাধুর্য‍্যানন্দ সম্ভোগ করা যায়, তা কেবল ব্রজরাখালগণের লীলাতেই সুন্দরভাবে দেখা যায়। তাই শ্রীমদ্ভাগবতকার বলেন=*
*"ইত্থং সতাং ব্রহ্মসুখানুভুত‍্যা দাস‍্যং গতানাং পরদৈবতেন।*
*মায়াশ্রিতানাং নরদারকেন সার্ধং বিজহ্রুঃ কৃতপুণ‍্যপুঞ্জাঃ"।।*
*🌺অর্থ‍্যাৎ যিনি মায়াশ্রিতদের কাছে নরবালকরূপে,দাসভক্তগণের কাছে পরদেবতারূপে এবং জ্ঞানীদের কাছে পরব্রহ্মরূপে প্রতিভাত(উজ্জ্বল রূপ) হন।সেই অনন্ত ঐশ্বর্য‍্যমাধুর্য‍্যশীল  স্বয়ং ভগবানের সঙ্গে পুঞ্জ পুঞ্জ পুণ‍্যশীল ব্রজরাখালগণ সানন্দে বিচরণ করেন।*
*🍀সখায় সখায় প্রেমের যে এক বিচিত্র ভাব পরিলক্ষিত হয়, এইজগতে আমরা অকৃত্রিম সখ‍্যভাবে তার কিঞ্চিৎ আভাস দেখতে পাই। এখানে ভীতির জড়িমা ও সম্ভ্রমের সঙ্কোচন পরিলক্ষিত হয় না।সখ‍্যপ্রেমে কোন সঙ্কোচ থাকে না। সখ‍্যে এক আনন্দময়,আপন-আপন, মাখামাখি ভাব উভয় হৃদয়ে বিরাজ করে।দাস‍্যে যেন হৃদয় একটু ভীত ভীতভাবে দূরে-দূরে থাকতে চাই, সখ‍্যে এর বিপরীত ভাব উপস্থিত হয়।ভীতির স্থলে নির্ভীকতা,সম্ভ্রমের স্থলে সমতা এবং দূরে থাকার স্থলে হাত ধরে  এবং গলা ধরে বিচরণ প্রভৃতি। অতি নিকটের ভাবগুলি আবির্ভূত হয়ে থাকে।তথাপি মধুরাদি সেবাতেও দাস‍্য অন্তঃপ্রবিষ্ট।*
*🌹চিত্তের সঙ্কোচন ও বিকাশ ধর্মাধর্মের মাপকাঠি।যাতে চিত্ত সঙ্কোচিত হয়,যাতে উহার অনন্ত প্রসারে ব‍্যাঘাত জন্মে,যাতে চিত্ত সঙ্কোচিত হয়ে ক্ষুদ্র হয়ে পড়ে তাহাই অধর্ম ; আবার অপর পক্ষে যাতে চিত্তের বিকাশ ঘটে,যাতে প্রকৃত প্রস্তাবে পরিণাম-সরসভাবে চিত্ত প্রীতি প্রফুল্ল হয়,তাহাই ধর্ম। ধর্মের প্রকৃত নিবাস বৈকুন্ঠ।যেখানে কুন্ঠা নাই, সেই স্থলই বৈকুন্ঠ। এই জগতে এমন জায়গা কোথায়, যেখানে কুন্ঠা নাই? সর্বত্রই ভয়, সর্বত্রই পরিণাম বিরসতার আশঙ্কা,সর্বত্রই এক মহাস্বার্থের সঙ্কোচনী শক্তির দুরন্ত প্রভাব।মহারাজাধীরাজের চিত্তও সততই কুন্ঠিত।প্রকৃত প্রেম-রাজ‍্যই বৈকুন্ঠধাম।*
💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৬. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৬)🙏শ্রীরামানন্দ রায় "কাষ্ঠ পুত্তুলিকা🙏*
         *তত্ত্ব----------কথন*
          ******************
*🍀এই বঙ্গের সুবিখ‍্যাত কবি শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের কাব‍্যগ্রন্থে  সখ‍্যভাবের লালসাসূচক একটি পদ‍্য আছে। ব্রজের সখ‍্যময় রাখাল-জীবন কেমন সমুজ্জ্বল ও আনন্দময়, প্রসিদ্ধ কবির পদ‍্যেও তার আভাস পাবেন।*
*আমি ছেড়েই দিতে রাজি সুসভ‍্যতার আলোক,*
*আমি চাইনা হতে নব বঙ্গে নূতন যুগের চালক ;*
*আমি নাইবা গেলেম বিলেত নাইবা পেলেম রাজার খিলেত,*
*যদি পর জন্মে পাইরে হতে ব্রজের রাখাল বালক!*
*তবে নিবিয়ে দেব নিজের ঘরে সুসভ‍্যতার আলোক।।*
*যারা নিত‍্য কেবল ধেনু চরায় বংশী বটের তলে,*
*যারা গুঞ্জা ফুলের মালা গেঁথে পরে পরায় গলে ;*
*যারা বৃন্দাবনের বন সদাই শ‍্যামের বাঁশী শোনে,*
*যারা যমুনাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শীতল কাল জলে!*
*যারা নিত‍্য কেবল ধেনু চরায় বংশী বটের তলে।।*
*ওরে বিহান হল জাগরে ভাই-- ডাকে পরস্পরে।*
*ওরে এই যে দধি-মন্থ ধ্বনি উঠল ঘরে ঘরে।।*
*হের মাঠের পথে ধেনু, চলে উড়িয়ে গোখুর-রেণু,*
*হের আঙ্গিনাতে ব্রজের বধূ-- দুগ্ধ দোহন করে।*
*ওরে বিহান হল জাগরে ভাই ডাকে পরস্পরে।*
*ওরে শাঙন মেঘের ছায়া পড়ে কালো তমাল মূলে,*
*ওরে এপার ওপার আঁধার হল কালিন্দীরি কুলে!*
*যত গোপাঙ্গনা ভয়ে কাঁপে খেয়া তরীর পরে,*
*হের কুঞ্জবনে নাচে ময়ূর কলাপ খানি তুলে।*
*ওরে শাঙন মেঘের ছায়া পড়ে কাল তমাল মূলে।।*
*মোরা নব নবীন ফাগুন রা'তে নীল নদীর তীরে,*
*কোথা যাব চলি অশোক বনে শিখিপুচ্ছ শিরে!*
*যবে দোলার ফুল রশি দিবে নীপ শাখায় কসি'*
*যবে দখিণ বায়ে বাঁশীর ধ্বনি উঠবে আকাশ ঘিরে,*
*মোরা রাখাল মিলে করব খেলা নীল নদীর তীরে!*
*আমি হবনা ভাই,নবরঙ্গে নব যুগের চালক,*
*আমি জ্বালাবনা আঁধার দেশে সুসভ‍্যতার আলোক ;*
*যদি ননী ছানার গাঁয়ে কোথাও অশোক নীপের ছায়ে*
*আমি কোন জন্মে পারি হতে ব্রজের রাখাল বালক।*
*🌻ভক্ত পাঠক মহোদয়গণ, আপনারা কৃপা করে এইরূপে সময়ে সময়ে এই ত্রিতাপসন্তপ্ত জীবগণকে ব্রজরাখালগণের নিত‍্যানন্দময়, প্রীতি প্রফুল্লময়,মহাসখ‍্যভাবময়,পরমোজ্জ্বল ভাবছবি অঙ্কিত করে দেখিয়ে দিন।আপনারা সরস ভক্তিময়ী ভাষায় এই সখ‍্য-প্রেমের প্রোজ্জল প্রতিছবি প্রতিফলিত করে চিরসন্তপ্ত জীবগণের হৃদয়প্রাচীরে আলম্বিত করে দিতে পারলে এই ভীষণ বিষাদ ও অবসাদের সংসারেও জীবগণ কিয়ৎক্ষণ (কিছুক্ষণ) আনন্দময় ভাব অনুভব করে কৃতার্থ ও চরিতার্থ হতে পারেন।*
*🌹সখ‍্যরসে বিদগ্ধ,বুদ্ধিমান,সুবেশ ও সুখী ইত‍্যাদি গুণযুক্ত শ্রীকৃষ্ণ বিষয়ালম্বন।মমতাযুক্ত, সখ‍্যসেবাপরায়ণ কৃষ্ণ-সখারাই আশ্রয়াবলম্বন। সখ‍্যরসে আশ্রয়াবলম্বন চতুর্বিধ--,সুহৃৎ,সখা, প্রিয়সখা ও প্রিয়নর্মসখা।যাঁরা কৃষ্ণ হতে বয়সে বড় এবং কিঞ্চিৎ বাৎসল‍্যবান্,তাঁরাই সুহৃৎ,ব্রজে সুভদ্র, মন্ডলীভদ্র ও বলভদ্র প্রভৃতি সুহৃৎ। যাঁরা শ্রীকৃষ্ণ হতে বয়সে কিঞ্চিৎ ছোট ও দাস‍্যমিশ্রিত ভাববিশিষ্ট তাঁরাই সখা।ব্রজে বিশাল,বৃষভ ও দেবপ্রস্থ প্রভৃতিই এই শ্রেণীর উদাহরণ।যাঁরা বয়সে শ্রীকৃষ্ণের তুল‍্য,তাঁরাই প্রিয় সখা ; যেমন শ্রীদাম,সুদাম,বসুদাম। অপিচ (আরও) যাঁরা প্রেয়সী-রহস‍্যের সহায়,তাঁরা প্রিয়নর্মসখা ; যেমন সুবল, মধুমঙ্গল প্রভৃতি।(এই গ্রন্থে প্রিয়নর্মসখা হিসেবে মধুমঙ্গলের নাম দেওয়া হয়েছে, মধুমঙ্গল হচ্ছেন চারটি বাদে আরেকটি সখার নাম পাওয়া যায় তা হল "বিদুষক সখা"।) সখ‍্যরসে একত্র খেলা ও এক শয‍্যায় শয়ন প্রভৃতি অনুভাব,অশ্রু পুলকাদি সাত্ত্বিক ভাব, হর্ষ-গর্বাদি সঞ্চারী ভাব এবং সমদৃষ্টিহেতু নিঃসম্ভ্রমতাময় বিশ্বাস বিশেষরূপ সখ‍্যরতির স্থায়ীভাব।সখ‍্যরতি উত্তরোত্তর বাড়তে বাড়তে সখ‍্য,প্রণয়,প্রেম,স্নেহ এইগুলি আখ‍্যা ধারণ করে।এই সখ‍্য-রসেও দাস‍্যরসের মতো বিয়োগে তাপ,কৃশতা ও জাগরণাদি দশা ঘটে থাকে।*
*🌺শ্রীরামরায় মহাপ্রভুর কাছে এই সখ‍্যভাবকে সাধ‍্যতত্ত্বসার বলে প্রকাশ করলেন।মহাপ্রভু শুনে বললেন, "রামানন্দ তুমি সখ‍্যপ্রেমকে সাধ‍্য বলে বলছ, এতো অতি উত্তম কথা। কিন্তু এও সাধ‍্যতত্ত্বের সার নহে, এর পরে কি তাই বল।"*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৭. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৭)শ্রীরামানন্দ রায় কাষ্ঠ পুত্তলিকা*
    *তত্ত্ব--কথন,বাৎসল‍্যভাব*
     °°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🌻শ্রীরামানন্দ রায় এর উত্তরে বললেন,প্রভো!এর পরে যদি বলতে হয়,তবে বাৎসল‍্য প্রেমই সাধ‍্যসার বলে আমার ধারণা।*
*🍀শ্রীমদ্ভাগবত বলেন ঃ--*
*"নন্দঃ কিমকরোদ্ ব্রহ্মণ্ শ্রেয় এব মহোদয়ং।*
*যশোদা বা মহাভাগা পপৌ যস‍্যা স্তনং হরিঃ"।।*
                             *(১০|৮|৪৬)*
*🌻অর্থ‍্যাৎ হে ব্রহ্মণ্!নন্দগোপ কি মহাফলযুক্ত শ্রেয় তপস‍্যাই করেছিলেন যে তিনি সাক্ষাৎ শ্রীভগবানকে পুত্ররূপে প্রাপ্ত হলেন, আর মহাভাগা শ্রীমতী যশোমতীর মহাভাগ‍্যই কত বেশী,যিনি সাক্ষাৎ পূর্ণ ব্রহ্ম হরি তাঁর স্তন পান করলেন। আরও----*
*"নেমং বিরিঞ্চো ন ভবো ন শ্রীরপ‍্যঙ্গসংশ্রয়া।*
*প্রসাদং লেভিরে গোপী যত্তৎপ্রাপ বিমুক্তিদাৎ"।*
                    *(ভাগবত=১০|৯|২০)*
*🌹আরও দেখুন,শ্রীমতী যশোদার ভাগ‍্যের সীমা নাই, ব্রহ্মা মহাদেবাদি শ্রীভগবানের যে প্রসাদ লাভে অসমর্থ, এমন কি সাক্ষাৎ পূর্ণলক্ষ্মী তাঁর অঙ্গ-সংশ্রিতা হয়েও যে প্রসাদ লাভ করতে পারেননি,প্রেমদাতা শ্রীকৃষ্ণ হতে যশোদা তাদৃশ(সেইরকম) প্রসাদ লাভ করলেন।*
*🌷শ্রীভগবানকে পুত্ররূপে পেয়ে, তাঁকে পুত্ররূপে লালনপালন করা নিত‍্যসিদ্ধগণের পক্ষেই সম্ভবনীয়। এমন মহাভাগ‍্য কি মানুষের হয়!তথাপি মানুষ সেই ভাব নিয়ে, ব্রজের সেই মহাবাৎসল‍্য-ভাব-সাগরের বিন্দুকণার আভাস নিয়ে সাধনার পথে অগ্রসর হলে প্রেমসাধনার মহারাজ‍্যের সুগম পথ পেতেও পারেন।*
*🍁বাৎসল‍্যপ্রেম সখ‍্যপ্রেম হতেও অনেক বেশী আদরের।বাৎসল‍্যপ্রেমের যে প্রকার প্রগাঢ়তর প্রভাব দেখা যায়, আমাদের এই প্রেমাভাস-প্রকাশক সংসারেও তার সবিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়।শ্রীভগবানের প্রেম গাঢ়রূপে মাতৃশক্তিতে বিরাজিত।এই জগতে "মা"  প্রেমের সাক্ষাৎ শ্রীমূর্তি। তাঁর বক্ষামৃতধারা,প্রেমেরই মূর্তিমান প্রবাহ, তাঁর স্নেহবৎসল নয়নদৃষ্টি, প্রেমের বাহ‍্য প্রকাশমাত্র,তাঁর স্নেহমধুর মুখের কথা প্রেমেরই পরিস্ফুট ভাষা।*
*☘মানুষের ঈথা দূরে থাকুক,বনের পাখী কত যত্নে চঞ্চুপুটে (ঠোঁটে) আহার এনে কিভাবে ব‍্যস্ততা ও ব‍্যগ্রতাসহ শাবকের মুখের ভিতরে প্রদান করে কৃতার্থ হয়,(পাঠক এস্থলে একবার সে কথা স্মরণ করুন।)পাখী কোন শক্তির প্রণোদনায়(উৎসাহে), কার প্রেরণায় (উৎসাহ সঞ্চার করে), কোন ভাবে ভাবিত হয়ে নিজে অভুক্ত থেকেও শাবকের ক্ষুধা নিবারণে ব‍্যাকুল হয়?হ‍্যাঁ, ইহাই বাৎসল‍্যপ্রেম। এই মহাব‍্যাপ্তিময়ী বাৎসল‍্য-প্রীতির প্রভাব সর্বত্র।*
*🌻পাঠক মহাশয়, বৎসহারা ধেনুর কথা মনে করুন, সেই দিগ্বিদিগ মর্মস্পর্শী, প্রাণ-ব‍্যাকুলতাকর হাম্বারব, সেই সাক্ষাৎ ব‍্যাকুলতার প্রতিছবি "কি-জানি-কোথা-গেলে-পাব" এমন তীব্র ভাবময় ঢল-ঢল-নয়নযুগল একবার মনে করে দেখুন,প্রাণীতেও এই বাৎসল‍্য-প্রেমের প্রভাব কত বলবান্।মানুষ যদি ঐ বৎসহারা ধেনুর মত শ্রীকৃষ্ণের জন্য আকুল হয়ে  "কৃষ্ণ রে, বাপরে আমার " বলে ডাকতে পারেন,তবে মা যশোদার অঞ্চলের নিধি সুন্দরগোপাল মূর্তিতে কেনই বা তিনি না দেখা দিবেন? বাৎসল‍্যের অধিকার কত? প্রেমজ, তাড়ন,বন্ধন ও তিরস্কার প্রভৃতি বাৎসল‍্যে যে ভাবে প্রকাশ পায়, সখ‍্যের সে উচ্চ অধিকার নাই। বাৎসল‍্যে ভগবানের প্রেমেসেবা এইরূপ বিবিধ কারণে সখ‍্য হতে অনেক বেশী গাঢ়। তাই শ্রীরামরায় সখ‍্যের পরে বাৎসল‍্য-প্রেমতত্ত্বের সাধ‍্যতা নির্দেশ করেন।*
*🌺বাৎসল‍্যরসে কোমলাঙ্গ বিনয়ী সর্বলক্ষণসম্পন্ন ইত‍্যাদি গুণযুক্ত শ্রীকৃষ্ণ বিষয়ালম্বন।মমতাযুক্ত, বাৎসল‍্যসেবাপরায়ণ,শ্রীভগবন্নিষ্ঠ পিত্রাদি আশ্রয়ালম্বন।ব্রজে ব্রজেশ্বরী, ব্রজরাজ,রোহিণী,উপনন্দ,অন‍্যত্র দেবকী  বসুদেব ও কুন্তী প্রভৃতি বাৎসল‍্যরসের আশ্রয়ালম্বন।হাস‍্য,মৃদুমধুর বাক‍্য ও বালচেষ্টাদি= উদ্দীপন বিভাব। মস্তকাঘ্রাণ ও লালনপালনাদি=অনুভাব।স্তম্ভ স্বেদাদি ও স্তন‍্যক্ষরণ= সাত্ত্বিকভাব। হর্ষ শঙ্কা প্রভৃতি ব‍্যভিচারী ভাব।এই রসে বাৎসল‍্য রতি স্থায়ীভাব।প্রেম স্নেহ ও রাগ এই তিনটি উহার উত্তরোত্তর অবস্থা ত্রয়।এতেও বিয়োগে পূর্বের মতো দশটি দশা সংঘটিত হয়।*
*🌷শান্ত,দাস‍্য,সখ‍্য,বাৎসল‍্য ও মধুর। ব্রজের এই পাঁচ ভাব।শান্তভাব ব্রজের মুনি ঋষিদের। ইহাঁদের হৃদয়েও কৃষ্ণনিষ্ঠ প্রেম আছে। কিন্তু তা আবৃত (ঢাকা)।দাস‍্যেই প্রেমের প্রথম বিকাশ, কিন্তু এই দাস‍্যে শান্ত,সখ‍্য,বাৎসল‍্য ও মধুর এই চারভাবই বিদ‍্যমান।সখ‍্য প্রেমে যে এক নব ভাব প্রকটিত হয়,ইতঃপূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে।বাৎসলের স্নেহ, প্রেমেরই ঘনিভূত অবস্থা।তাই মহাপ্রভু বাৎসল‍্যকে "উত্তম" বলে স্বীকার করলেন। কিন্তু রামরায় তখনও মহাপ্রভুর সাধ‍্যতত্ত্বের পরম ও চরম লক্ষ্যে উপনীত হলেন না।তাই পরম করুণাময় গৌরহরি বললেন, "এহোত্তম আগে কহ আর"।*
🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙌
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৮. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৮)শ্রীরামানন্দ রায় "কাষ্ঠ পুত্তলিকা"*
    *তত্ত্ব--কথন, কান্তাভাব বা মধুরভাব*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻প্রেমের ক্রমবিকাশ প্রদর্শন দ্বারা সাধ‍্যতত্ত্বের পরম ও চরম লক্ষ্য জীবসমাজে প্রকটন করাই মহাপ্রভুর উদ্দেশ্য।বর্ণাশ্রম ধর্ম হতে আরম্ভ করে শ্রীরামরায় মহাশয় বাৎসল‍্যপ্রেম পর্যন্ত বললেন, তথাপি প্রেমময় গৌরহরির জিজ্ঞাসার নিবৃত্তি(ক্ষান্ত) হল না।ব্রহ্ম-জিজ্ঞাসা পর্যন্ত বেদান্তের চরম সীমা।শান্ত ভাবেই সেই জিজ্ঞাসার নিবৃত্তি। কিন্তু মহাপ্রভুর প্রবর্তিত প্রেমধর্ম-জিজ্ঞাসার প্রারম্ভ, দাস‍্যপ্রেম হতে শান্তে কৃষ্ণনিষ্ঠতা আছে, কিন্তু প্রেমের সেবা নাই।তাই দাস‍্যেই প্রেমভজনের আরম্ভ।সখ‍্য ও বাৎসল‍্য এর ক্রমবিকাশ।বাৎসল‍্যরসের কথা শুনে শ্রীগৌরাঙ্গ বললেন "ইহা উত্তম। কিন্তু এর পরে কি?রামরায় বললেন, "তবে শ্রীকৃষ্ণ কান্তাগণের প্রেমের কথা বলব কি?শ্রীকৃষ্ণবল্লভা ব্রজসুন্দরীগণের প্রেম অতি অদ্ভুত। শ্রীভাগবত বলেন=*
*"নায়ং শ্রীয়োহঙ্গ উ নিতান্তরতেঃ প্রসাদঃ,*
*স্বর্যোষিতাং নলিনগন্ধরুচাং কুতোহন‍্যা।*
*রাসোৎসবেহস‍্য ভূজদন্ডগৃহীতকন্ঠ-,*
*লব্ধাশীষাং য উদগাদ্ ব্রজসুন্দরীণাম্"।।*
*🌼অর্থ‍্যাৎ শ্রীভগবান রাস উৎসবের সময়ে ব্রজসুন্দরীগণের কন্ঠে ভুজদন্ড অর্পণ করে তাঁদের প্রতি যেরকম কৃপা করেছিলেন,শ্রীনারায়ণের বক্ষঃস্থল সমাশ্রিতা একান্ত-রতিশালিনী লক্ষ্মীর প্রতিও তাদৃশ (সেইরকম) প্রসাদ উদিত হয় নি। সুতরাং নলিনীগন্ধশীলা স্বর্গযোষিৎ প্রভৃতি অপর রমণীগণের পক্ষে সে সৌভাগ্য লাভের আর সম্ভাবনা কি*
*🍀ব্রজসুন্দরীগণই মধুর ভজন প্রকটন করেন।মধুর চাহনি,মধুর হাসি, মধুর সম্ভাষণ, মধুর হাবভাব, নবযৌবনের নবানুরাগের সমস্ত মাধুর্য‍্য শ্রীকৃষ্ণের পদমূলে সমর্পণ করে ব্রজসুন্দরীগণ শ্রীকৃষ্ণের ভজন করেন।শ্রীবৃন্দাবনের কুসুমিত কুঞ্জে কুঞ্জে ব্রজসুন্দরীগণ রসরাজের যে মধুর সেবা করেন, ত্রিভুবনে আর কোথাও তেমন সেবা-পারিপাট‍্যের লেশভাব দেখা যায় না। শ্রীকৃষ্ণ-প্রাপ্তির অনেক উপায় আছে বটে,সাধকগণ ভগবানের কৃপায় তাঁকে প্রাপ্ত হন বটে, কিন্তু সকলেই একরকম ভাবে তাঁর তত্ত্ব-রসাস্বাদ সম্ভোগ করতে পারেন না। শান্ত,দাস‍্য, সখ‍্য,বাৎসল‍্য ও মধুর প্রভৃতি ভাবনিচয় শ্রীকৃষ্ণ প্রাপ্তির উপায় বটে, কিন্তু নিরপেক্ষ ভাবে বিচার করলে অনেক তারতম‍্য দেখা যায়।তাই শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃতে লিখিত আছে।*
*🍀কৃষ্ণ প্রাপ্তির উপায় বহুবিধ হয়।*
*🍀কৃষ্ণ প্রাপ্তির তারতম‍্য বহুত আছয়।।*
*🍀কিন্তু যার যেই ভাব সেই সর্বোত্তম।*
*🍀তটস্থ হয়ে বিচারিলে আছে তারতম।।*
*🌺শান্তভাবে ভজন করলেও শ্রীকৃষ্ণকে লাভ করা যায়। কিন্তু দাস‍্যে যে ভজনরস আছে, শান্তে তা নাই। আবার সখ‍্যে যা আছে,দাস‍্যে তা নাই,বাৎসল‍্যে যা আছে,সখ‍্যে তা নাই, অবশেষে মাধুর্য‍্যে যা আছে বাৎসল‍্যে তা নাই।অথচ শান্তে যা আছে,দাস‍্যে তা তো আছেই,আরও কিছু বেশী আছে। শান্তের কৃষ্ণনিষ্ঠা ও দাস‍্যের সেবা এই দুই দাস‍্যে আছে, কিন্তু দাস‍্যে সখ‍্যভাব নাই।সখ‍্য শান্তের কৃষ্ণনিষ্ঠা,দাস‍্যের সেবা, এবং সখ‍্যের আপন-আপন নিঃসঙ্কোচ ভাব আছে, অথচ বাৎসল‍্যের স্নেহ নাই।বাৎসল‍্যে শান্তের কৃষ্ণনিষ্ঠা দাস‍্যের সেবা, সখ‍্যের নিঃসঙ্কোচ এবং স্নেহের প্রবলভাব বতর্মান। কিন্তু ওতে কান্তার  মধুর সেবা অসম্ভব।মধুর ভাবে চারটি ভাবই বিরাজিত। চৈতন‍্যচরিতামৃতে পায়=*
*🍀গুণাধিক‍্যে স্বাদাধিক‍্যে বাড়ে প্রতি রসে।*
*🍀শান্তদাস‍্য সখ‍্য বাৎসল‍্য মধুরেতে বৈসে।।*
*🌻এই কথাটি দার্শনিক দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝাবার জন্য সর্বশাস্ত্রবিশারদ ও প্রেমিক ভক্ত রামানন্দ রায় বেদান্তদর্শনের পঞ্চীকরণ-তত্ত্বের উল্লেখ করে বলছেন ঃ---*
*🍀আকাশাদির গুণ যেন পর পর ভূতে।*
*দুই তিন গণনে বাড়ে পঞ্চ পৃথিবীতে।।*
*🌻বেদান্তসারে লিখিত আছে ঃ--*
*🌹"আকাশে শব্দোহভিব‍্যজ‍্যতে। বায়ৌ শব্দস্পর্শৌ।অগ্নৌ শব্দস্পর্শরূপাণি।অপ্সু শব্দস্পর্শ রূপরসাঃ। পৃথিব‍্যাং শব্দস্পর্শরূপরসগন্ধাশ্চ।*
*🌺অর্থ‍্যাৎ "আকাশের" গুণ কেবল শব্দ।"বায়ুতে" আকাশের গুণ শব্দ আছে, নিজের গুণ স্পর্শও আছে। "অগ্নিতে" শব্দ স্পর্শ ও রূপ আছে। "রসে" শব্দ স্পর্শ রূপ ও রস এই চারটি গুণ আছে। পৃথিবীতে জলের চারটি গুণ তো আছেই, এ ছাড়াও গন্ধ নামক স্বতন্ত্র গুণ আছে। সুতরাং পৃথিবীতে পাঁচগুণ বতর্মান। এই প্রকার "মধুর" ভাবেও পাঁচটি ভাব বতর্মান থাকায় এর স্বাদাধিক‍্য সর্বাপেক্ষা বেশী।অন‍্যান‍্য ভাবেও কৃষ্ণপ্রাপ্তি ঘটে থাকে,সত‍্য।কিন্তু গুণাধিক‍্যেই স্বাদাধিক‍্য হয়, সুতরাং সর্বাপেক্ষা গুণশীল মধুরেই স্বাদাধিক‍্য সর্বাপেক্ষা অধিক। ইহা স্বতঃসিদ্ধ।*🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ১৯. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১৯)শ্রীরামানন্দ রায় "কাষ্ঠ পুত্তলিকা"*
      *তত্ত্ব--কথন,মধুর বা কান্তাভাব*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*🌹তাই শ্রীরামরায় বললেন=*
*পরিপূর্ণ কৃষ্ণপ্রাপ্তি এই প্রেমা হৈতে।*
*এই প্রেমের বশকৃষ্ণ কহে ভাগবতে।।*
*এই প্রেমার অনুরূপ না পারে ভজিতে।*
*অতএব ঋণ হয় কহে ভাগবতে।।*
*🌻শ্রীমদ্ভাগবতগীতায় শ্রীকৃষ্ণের শ্রীমুখ-নির্গত প্রতিজ্ঞা বাক‍্য এই যে,*
*"যে যথা মাং প্রপদ‍্যন্তে তাং তথৈব ভজাম‍্যহম্"।*
*🍀অর্থ‍্যাৎ "যে আমাকে যেরকম ভাবে ভজন করে,আমিও সেইরকম ভাবেই তার ভজন করে থাকি "।*
*🌻কিন্তু অতীব বিস্ময়ের বিষয় এই যে ব্রজগোপীদের ভজন-প্রভাবে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের এই প্রতিশ্রুতি নিরর্থক হয়ে পড়ে।তাঁর এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাও ভঙ্গ হয়ে যায়। অথবা ভক্ত চূড়ামণি ভীষ্মই শ্রীকৃষ্ণের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গে করে দিয়েছিলেন,পরম প্রেমিক গোপীদের প্রেমভজনে তাঁর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হবে, এতে আর বৈচিত্র্য কি?তাই শ্রীমদ্ভাগবতে তিনি নিজের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করে বলেছেন---*
*"ন পারয়েহহং নিরবদ‍্যসংষুজাং স্বসাধুকৃত‍্যং বিবুধায়ুষা পিবা যা মাহভজন্ দুর্জরগেহশৃঙ্খলাঃ সংবৃশ্চ তদ্বঃ প্রতিযাতু সাধুনা "।*
                  *(ভাগবত=১০|৩২|২২)*
*🌺গোপীদের ভজনের অনুরূপ ভজন করতে না পেরে শ্রীভগবান গোপীপ্রেমে ঋণী হয়ে বিকিয়ে ছিলেন। সুতরাং কান্তভাবই সর্বসাধ‍্য সার।*
*🌹মহাপ্রভু বললেন "সাধ‍্যের অবধি এই বটে। অর্থ‍্যাৎ জীবদের সাধনের চরমসীমা এই পর্যন্ত।ব্রজসুন্দরীগণের ভাব নিয়ে জগতের নরনারী যদি কৃষ্ণভজনের অধিকার প্রাপ্ত হন তা হলেই তাঁদের সাধ‍্যের অবধি নির্ণয় হল। কিন্তু মহাপ্রভুর জিজ্ঞাসার নিবৃত্তি হল না।*
*কান্তাপ্রেমে প্রেমের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।প্রেম এক মহাকর্ষণী শক্তি। এই শক্তির প্রভাবাধিক‍্যে সম্বন্ধ-নৈকট‍্য সংসাধিত হয়,অর্থ‍্যাৎ এই শক্তির প্রভাব এতই বেশী যে,শ্রীকৃষ্ণপ্রেম সম্বন্ধকে অতি নিকটে নিয়ে এসে সমস্ত আশা পূরণ করেন, এই হচ্ছে কান্তা প্রেমের গুণ।প্রেমের আধিক‍্যের অনুপাতে নৈকট‍্যের পরিমাণ স্থিরীকৃত হয়ে থাকে।প্রেমের এই নিয়ম গণিতবিজ্ঞানসিদ্ধ। রসায়ন-বিজ্ঞানে আকর্ষণ ও বিপ্রকর্ষণের প্রভাব ধরে পদার্থের তিন অবস্থা নির্ণীত হয়েছে। "বায়বীয়" (Gaseous),"তরল" (Liquid) "এবং" (Solid)। বিপ্রকর্ষণের প্রভাবাধিক‍্যই (অধিক বা বেশী প্রভাবে) বায়বীয়তার কারণ, আবার অপর পক্ষে আকর্ষণের আধিক‍্যনিবন্ধনই পদার্থের ঘনত্ব সাধিত হয়। আকর্ষণ ও বিপ্রকর্ষণের সাম‍্যাবস্থাতে তারল‍্য বা তরলতা।*
*🍀প্রেমের নিয়মও কিয়ৎ (কিছু) পরিমাণে এইরকম।যেখানে প্রেমের আকর্ষণ অতি প্রবল (খুব বেশী), সেখানে এক হৃদয় অপর হৃদয়ের অভিমুখে প্রবল ভাবে আকৃষ্ট হয়, সেই আকর্ষণের ফলে এক হৃদয় অপর হৃদয়ে মিলে মিশে এক হতে চাহে।এই হিসেবে চিন্ময় জগতে প্রেম, আকর্ষণীশক্তি, ও মায়া, বিক্ষেপিকা শক্তি।প্রেমের টানে জীবের ভাগবতসাম্মুখ‍্য ঘটে,প্রেমের টানে জীব প্রেমময়ের প্রেমরাজ‍্যের দিকে আকৃষ্ট হয়ে ধাবিত হয়, আবার অপর পক্ষে মায়ার বিক্ষেপিকা শক্তির (Repulsion) প্রভাবে জীব ভগবদ্ বহির্মুখ হয়ে সংসার দুঃখে ডুবে বেড়ায়। সুতরাং প্রেমই জীবের সাধ‍্য। তারমধ‍্যে কান্তাপ্রেম সর্বউৎকৃষ্টতর। ভজনের এমন উচ্চতর অধিকার শান্তদাস‍্যসখ‍্য বাৎসল‍্যের অগোচর।মধুররসে অপরাপর রসের সমাবেশ থাকায় মধুর রসই শ্রেষ্ঠ। "ইন্দুমতী বিয়োগবিধুরা অজের মুখে কবিকুলচূড়ামণি কালিদাস বলেছেন----*
*গৃহিণী সচিবঃ সখী মিথঃ প্রিয়শিষ‍্যা ললিতে কলাবিধৌ।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ গৃহিণীর মন্ত্রণায় সচিবের মতো,প্রমোদালাপে সখীর মতো এবং ললিত কলাবিধিতে শিষ‍্যার মতো। এ স্থলেও মধুর ভাবে যে অন‍্যান‍্য রস সমুদায়ের সমাবেশ আছে,তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
      ꧁ ২০. শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(২০)শ্রীরামানন্দ রায়,কাষ্ঠ পুত্তলিকা*
*তত্ত্ব-কথন,মধুর বা কান্তাভাব*
~~~~~~~~~~~~~~~~~~
*🍀এই মধুর রসে অপরাপর রস-নিবহের (নিবহের=সকলের) সমাবেশ-ভাব প্রদর্শিত হয়েছে। পবিত্রতম প্রেমের ঘনীভূতসার,ভবভূতির পদ‍্যে ও মহানাটকে যেরকম প্রকাশিত হয়েছে, সংস্কৃত ভাষায় তেমন পদ‍্য অতীব বিরল। ভবভূতির=*
*"ইয়ং গেহে লক্ষ্মীরিয়মমৃতবর্তির্নয়নয়োঃ"।।*
*☘পদ‍্যটি দাম্পত‍্যপ্রেম-প্রকর্ষ বর্ণনের একটি অত‍্যুজ্জ্বল আদর্শ।*
*অপি  চ*
*"অদ্বৈতঃ সুখদুঃখয়োরনুগুণং সর্বাস্থবস্থাসু যৎ,*
*বিশ্রামো হৃদয়স‍্য যত্র জরসা যস্মিন্নহার্য‍্যো রসঃ।*
*কালেনাবরণত‍্যয়াৎ পরিণতে যৎ স্নেহসারে স্থিতং,*
*ভদ্রং প্রেম সুমানুষস‍্য কথমপ‍্যেকং হি তৎ প্রাপ‍্যতে"।।*
*🌺অর্থ‍্যাৎ যে প্রেম,সুখে-দুঃখে কোনরকম বিকৃত হয় না, সব অবস্থাতেই যে প্রেম অনুকূল,সংসার সুলভ শোক-ক্ষোভাদি প্রপীড়িত হৃদয়ের পক্ষে যে প্রেম একমাত্র বিশ্রামস্বরূপ, বার্ধ‍্যকেও যে প্রেমের হ্রাস বা বিনাশ হয় না,দীর্ঘকালের সংসর্গে লজ্জাভয়াদির তিরোধানে যে প্রেম স্নেহসারে পরিণত হয়,সজ্জনের এইরকম অতি বিরল নিরূপাধি (উপাধিহীন) প্রেম প্রকৃতই অতি দুর্লভ।*
*🌹প্রেমের কি-জানি-কেমন এক উদভ্রান্তভাবে বিমুগ্ধ হয়ে শ্রীরামচন্দ্র যখন সীতাদেবীর শ্রীঅঙ্গ-স্পর্শে অব‍্যক্ত মহামধুর রসে নিমজ্জিত হয়ে গদগদ কন্ঠে বললেন=*
*"বিনিশ্চেতুং শক‍্যে সুখমিতি বা দুঃখমিতি বা,*
*প্রবাধো নিদ্রা বা কিমু বিষবিসর্পঃ কিমু মদঃ।*
*তবস্পর্শে স্পর্শে মম হি পরিমূঢ়েন্দ্রিয়গণো,*
*বিকারশ্চৈতন‍্যং ভ্রময়তি সম্মীলয়তি চ"।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ হে দেবি! আমি কি সুখে আছি না দুঃখে আছি ; এ কি আমার নিদ্রাবস্থা না জাগরনাবস্থা ; আমার শরীরে কি বিষ সঞ্চারিত হচ্ছে,অথবা আমি সন্মোহানন্দে বিভোর হচ্ছি ; আমি তো কিছু নির্ণয় করতে পারছি না। তোমার স্পর্শজনিত চিত্তবিকারে আমার মনোবৃত্তি বিলুপ্ত হয়েছে।কখন একটু জ্ঞান হচ্ছে, আবার কখন মোহপ্রাপ্ত হচ্ছি।*
*🍀প্রেমের একটা জগদতীত ভাব ভবভূতির এই প্রসন্নগম্ভীর পদ‍্যে প্রকটিত হয়ে পড়েছে। প্রেমের অন‍্যান‍্য অবস্থায় যে একটু দূর-দূরভাব পরিলক্ষিত হয়, এই প্রেমের গূঢ় গভীর আকর্ষণে সেই ভাব দূরীকৃত হয়ে যায়,খুব কাছের সম্বন্ধ হয়ে হৃদয়ে হৃদয়ে "আপন আপন"অথবা "তুমি আমার, আমি তোমার" এইভাবের প্রগাঢ়তা জন্মে। কিন্তু এইরকম প্রেমও বহিরঙ্গ। ব্রজদেবী-নিষ্ঠ কান্তা প্রেমই সাধ‍্য বলে কীর্তিত হয়েছে।*
*🌻শ্রীকৃষ্ণ-কান্তাগণ,সাধারণী,সমঞ্জসা ও সমর্থাভেদে তিন প্রকার।এঁদের সকলেরই কান্তাভাবই স্থায়ী।তারমধ‍্যে  সাধারণীর কান্তাভাব সম্ভোগেচ্ছার নিদান ; সমঞ্জসার কান্তাভাব ক্বচিৎভেদিতসম্ভোগেচ্ছ,এবং সমর্থার কান্তাভাব স্বরূপভিন্নসম্ভোগেচ্ছ।*
*☘ব্রজদেবীগণ নিরন্তর তুরীয় অবস্থায় অবস্থিতা।তাঁদের স্থূল ও সূক্ষ্ম ও কারণ শরীরের অনুভব না থাকায় তাঁরা স্থূল সূক্ষ্মাদির কোনও সংবাদ রাখেন না। আনন্দ-চিন্ময়রস প্রতিভাবিতা ব্রজদেবীগণের আনন্দ চিন্ময়রসস্বরূপ শ্রীকৃষ্ণাঙ্গসঙ্গজনিত যে আনন্দ অনুভব হয়,তা স্থূলজগতের স্পর্শাদিজনিত সুখ হতে সম্পূর্ণ আলাদা।তা ব্রহ্মানন্দসুখ হতেও কোটিগুণ বেশী,তার সঙ্গে অন‍্য কারো তুলনা হতে পারে না।*
*🍁বাঙ্গালী বৈষ্ণব কবিগণের পদাবলীতে ব্রজদেবী-নিষ্ঠ কান্তাপ্রেমের যে সব উৎকৃষ্ট পদ প্রাপ্ত হওয়া যায়,সংস্কৃত ভাষাতেও সেইরকম কবিতা অতি দুর্লভ।এ স্থলে চন্ডীদাসের একটি পদ উদ্ধৃত করে অতি সংক্ষেপে কান্তাপ্রেমের কথার উপসংহার করা যাচ্ছে।*
       *বধূ হে! নয়নে লুকায়ে থোব।*
*প্রেম-চিন্তামণি ,   রসেতে গাঁথিয়া,*
         *হৃদয়ে তুলিয়া লব।।*
*শিশুকাল হৈতে, আন নাহি চিতে,*
         *ও পদ করেছি সার।*
*ধন জন মন,          জীবন যৌবন,*
         *তুমি সে গলার হার।।*
*শয়নে  স্বপনে,    নিদ্রা  জাগরণে,*
         *কভু না পাসরি তোমা।*
*অবলার  ত্রুটি,   হয় শত কোটি,*
         *সকলি করিবে ক্ষমা।।*
*না ঠেলিও বলে,  অবলা আখলে,*
        *যে হয় উচিত তোর।*
*ভাবিয়া দেখিনু,  তোমা বঁধূ বিনে,*
        *আর কেহ নাহি মোর।।*
*তিলে আখি আড়,করিতে না পারি,*
         *আড়াল হইলে মরি।*
*চন্ডীদাস ভণে,   অনুগত জেনে,*
         *দয়া না ছাড়িহ তুমি।।*
😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭
  ✧═══════════•❁❀❁•══════════✧
                                🙏 ক্রমশ 🙏
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧         
          ꧁ শ্রীরামানন্দ রায় 🙏 তৃতীয় ভাগ 
             ꧁   শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧




শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

১৫১ হইতে ১৬০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda151to160.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html