🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🔙 পূর্ব লীলা 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২১)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
          *রায় রামানন্দের প্রশ্ন*
         *************************
*🍀 বর্তমান কলিকালে যাঁকে তোমরা শ্রীগৌরাঙ্গ বলে জেনেছ, ইনি সেই ব্রজের যুগলমূর্তি ছাড়া আর কাউ নহেন।এর সত‍্যতা শ্রীচরিতামৃতে আস্বাদন করুন।*
*🌷প্রেমভক্তি শিখাইতে আপনি অবতরি।।*
*🌷রাধাভাব কান্তি দুই অঙ্গীকার করি।*
*শ্রীকৃষ্ণচৈতন‍্য রূপে কৈল অবতারি।।*
*🌻সর্বশেষে মহাপ্রভু তাঁর পদ্মহস্ত রামরায়ের শ্রীঅঙ্গে বুলাতে লাগলেন এবং ধীরে ধীরে রামরায়ের আনন্দ মূর্ছা ভঙ্গ হল এবং রামরায় তখন আবার তাঁর সামনে সচল মহাপ্রভুকে সন্ন‍্যাসীরূপে দর্শন করে অবাক বিস্ময়ে ভাবতে লাগলেন যে তাঁর কি দেবদুর্লভ ভাগ‍্য যে তিনি এই সন্ন‍্যাসীটির প্রকৃত স্বরূপ হৃদয়ঙ্গম করতে পারলেন। তিনি যেন মন্ত্রমুগ্ধবৎ অনিমেষ নয়নে শ্রীমন্মহাপ্রভুর রূপসুধা পান করতে লাগলেন এবং অষ্টসাত্ত্বিক ভাব বিকারে প্রেমাশ্রু বর্ষণ করতে লাগলেন। ক্ষণিকের মধ্যে এমন একটা ব‍্যাপার ঘটে গেল যে সবই যেন দিবাস্বপ্নের মত প্রকাশিত হল।মহাপ্রভু তখন করুণা পরবশ হয়ে তাঁকে প্রেম-আলিঙ্গন দান করলেন এবং বললেন=*
*🌷আলিঙ্গন করি প্রভু কৈল আস্বাদন।*
*🌷তোমা বিনা এইরূপ না দেখে কোনজন।।*
*🌷মোর তত্ত্ব লীলারস তোমার গোচরে।*
*🌷অতএব এইরূপে দেখাইলু তোমারে।।*
*🌹এটিই হল সংক্ষেপে রায় রামানন্দ কর্তৃক মহাপ্রভুর স্বরূপতত্ত্ব প্রসঙ্গ।এইসব তত্ত্ব মহাসমুদ্রের মত অতলস্পর্শী এবং এটির সুগভীর তলে পৌঁছবার সাধ‍্য বোধকরি কারও নাই।যাইহোক,প্রস্ফুটিত ফুলের পাপড়ি এবং রেণুর মধ্যে মধু থাকলেও মধুর মহিমা বা মাহাত্ম্য জীব জগতে চিরকালই অবলুপ্ত থাকত যদি ভগবান মধুকরের সৃষ্টি না করতেন। কারণ ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করবার শক্তি একমাত্র মৌমাছিরই আছে এবং যে মৌচাকে সে মধু সংগ্রহ করে রাখে তা হতেই মধু আহোরণ করে জীব জগত ফুলের মহিমা বা যশগান করেন।সেইরকম ভগবানের অনন্ত মহিমা ভক্তরূপী মধুকর ছাড়া আর কারও পক্ষে প্রকাশ করা সম্ভব নয়, সেজন‍্য গৌর ভক্তগণের মাধুকরী হতে সামান্য কিছু সংগ্রহ করে রায় রামানন্দ মহিমা ব‍্যক্ত হল। অধমের দোষ ত্রুটি কৃপা করে মার্জনা করবেন।🙏*
*🙌 🙌রায় রামানন্দ মহিমা🙌 🙌*
*🙏নীলাচলে মহাপ্রভুর একজন অতি মরমী ভক্ত ছিলেন যাঁর নাম শ্রীপ্রদ‍্যুম্ন মিশ্র।প্রদ‍্যুম্ন ব্রহ্মচারী নামক অন‍্য একজন ভক্ত ছিলেন তাঁর উভয়েই স্বতন্ত্র ব‍্যক্তি।মিশ্র মহাশয় ছিলেন সংসারী ভক্ত এবং তাঁর মনটি ছিল শিশুর মত সরল।সংসার সুখে বীতস্পৃহ (আকাঙ্ক্ষা রহিত) হয়ে তিনি শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সুশীতল শ্রীচরণছায়া লাভ করেছিলেন। তিনি এত উচ্চস্তরের ভক্ত ছিলেন যে প্রায়শই তাঁর গৌরাঙ্গের আবেশ হত।যে কোন মানুষের মনে ভক্তি মহারাণীর প্রথম পদক্ষেপ হলেই কৃষ্ণকথা শোনা এবং কৃষ্ণপ্রেম লাভের জন্য হৃদয় মন ব‍্যাকুল হয়ে উঠা।মিশ্র মহাশয়ের অবস্থাও সেইরকম হল, তিনি কার কাছে গেলে প্রাণ ভরে কৃষ্ণকথা শুনতে পাবেন এই চিন্তায় ব‍্যাকুল হয়ে পড়লেন। অতঃপর একদিন সব দ্বিধা সঙ্কোচ জলাঞ্জলী দিয়ে শ্রীমন্মহাপ্রভুর শ্রীচরণতলে পড়ে নিজ মনোবাসনা প্রকাশ করলেন।*
*🌷মহাপ্রভো,মুঞি দীন গৃহস্থ অধম।*
*🌷কোন ভাগ‍্যে পাইয়াছি তোমার দুর্লভ চরণ।।*
*🌷কৃষ্ণকথা শুনিবারে মোর ইচ্ছা হয়।*
*🌷কৃষ্ণকথা কহ মোরে হইয়া সদয়।।*
*🌻তখন মহাপ্রভু ভক্ত মহিমা প্রকাশ করবার জন্য দৈন‍্যবিনয় কন্ঠে বললেন মিশ্র!আমি তো নিজে কৃষ্ণকথা জানি না, যদি শুনতে মন সত‍্যই চায় তাহলে শ্রীরামরায়ের কাছে যাও, কারণ তিনিই একমাত্র কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা।তারপরে মহাপ্রভু বললেন, মিশ্র!তুমি কেন নিজেকে দীন বলছ?তোমার মত ভাগ‍্যবান কয়জন আছে?বহু জন্মের সঞ্চিত পুণ‍্যফলে মানুষের কৃষ্ণকথা শুনতে রুচি হয়, আরও কহিলেন=*
*🌷কৃষ্ণ কথায় রুচি তোমার বড় ভাগ‍্যবান।*
*🌷যার কৃষ্ণকথায় রুচি,সেই ভাগ‍্যবান।।*
*🌹মহাপ্রভুর কথায় তিনি একদিন রায় রামানন্দের বাড়ীতে গমন করে শুনলেন যে তিনি তখন ঘরে নাই, নির্জন উদ‍্যানে আছেন।কিছুক্ষণ ভৃত‍্য সঙ্গে কথাবার্তা হবার পর তিনি জানতে পারলেন যে,তিনি দুই তরুণ অপরূপা কিশোরী পরমা সুন্দরী দেবদাসীদ্বয়কে নাচ গান শেখান, যাতে তাঁরা শ্রীজগন্নাথদেবকে তা সুন্দরভাবে পরিবেশন করতে পারেন এবং তিনি বললেন যে রামরায়ের আদেশে সেখানে যাবার কারও অধিকার নাই।অতএব আপনাকে যদি সাক্ষাৎ করতেই হয় তাহলে রায় মহাশয় না ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, হ‍্যাঁ, তিনি কখন ফিরবেন তা কেউ জানেন না।*
*🍀অনেক আশা নিয়ে মিশ্র মহাশয় এসেছিলেন, কিন্তু এইসব কথা শুনে তাঁর মাথায় যেন বজ্রাঘাত হল এবং ভাবলেন এ কি সর্বনাশ!রায় মহাশয় এত উচ্চস্তরের কৃষ্ণভক্ত, তিনি কৃষ্ণনাম জপ করবেন,লীলাগ্রন্থ পাঠ করবেন,সাধুসঙ্গে কৃষ্ণকথা কহিবেন, তিনি তা না করে নির্জন কাননে যুবতী পরমা সুন্দরী নারীদ্বয়ের সঙ্গে এ কি আচরণ?মিশ্র মহাশয়ের মনে সহসা সন্দেহের তুফান উঠিল।তিনি তখনই রামরায়ের গৃহ ত‍্যাগের মনস্থ করলেন কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল যে তাহলে তো মহাপ্রভুর আজ্ঞা লঙ্ঘন করা হবে অতএব অপেক্ষা করাই সমীচীন বোধ করলেন।*
*🌺বিকেলবেলা রায় মহাশয় যখন গৃহের ভিতরে আসিলেন তখন এই আগন্তুকের বৃত্তান্ত জেনে তিনি লজ্জায় এবং সঙ্কোচে মর্মাহত হলেন, যেন শত অপরাধীর মত ক্ষমা ভিক্ষা করলেন।রামরায় বিনয়ের খনি, বললেন--, আপনার চরণ স্পর্শে আমার গৃহ আজ পবিত্র হল, আমি আপনার দাসানুদাস,আপনি কৃপা করে আপনার মনোবাসনা ব‍্যক্ত করুন।রামরায় সম্বন্ধে মিশ্র মহাশয়ের মনের মধ্যে নানারকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়া সত্ত্বেও তাঁর শ্রীমূর্তি দর্শন মাত্র মনের ঘনীভূত সন্দেহ অনেক কমে গেল কিন্তু পুরোপুরি তিনি সন্দেহ মুক্ত হলেন না। মনের গোপন কথা প্রকাশ না করে বললেন--,রায় মহাশয়! আপনাকে দর্শন করতে এসেছি,দর্শন করে কৃতার্থ হলাম এবং পবিত্র হলাম। ইত্যাদি এইসব কথা বলে রায় ভবন ত‍্যাগ করলেন।*
        *ক্রমাগত*
👣👣👣👣👣👣🙏👣👣
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২২)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
            *রায় রামানন্দ মহিমা*
           *********************
*🍀প্রদ‍্যুম্ন মিশ্রের মন তখন সংশয় দোলায় দোদুল‍্যমান, তিনি মহা সমস‍্যায় পড়ে গেলেন, কারণ বৈষ্ণব শাস্ত্রের মূল কথায় হচ্ছে প্রকৃতি সন্দর্শন হতে দূরে থাকা, নারীর দারুমূর্তি দেখাও বৈষ্ণব শাস্ত্র বিরুদ্ধ। যে মিশ্র মহাশয়ের,মহাপ্রভু অন্তপ্রাণ, তিনি মহাপ্রভুর সব কথা স্মরণ করে ভাবতে লাগলেন=*
*🌷প্রভু কহে বৈরাগী করে প্রকৃতি সম্ভাষণ।*
*🌷দেখিতে না পারি আমি তাহার বদন।।*
*🌷দুর্ব্বার ইন্দ্রিয় করে বিষয় গ্রহণ।*
*🌷দারু প্রকৃতি হরে মুনিজনের মন।।*
*🌻এমনকি মহাপ্রভু নিজেকে উদ্দেশ্য করে নিজেই বলেছেন=*
*🌷আমি তো সন্ন‍্যাসী,আপনাকে বিরক্ত করি মানি।*
*🌷দর্শন দূরে রহুক,প্রকৃতির নাম যদি শুনি।।*
*🌷তবহু বিকার পায়,মোর তনু মন।*
*🌷প্রকৃতি দর্শনে স্থির হয় কোনজন?*
*🍀এইরকম মানসিকতার মধ্যে তিনি মহাপ্রভুর কাছে এসে দন্ডবৎ প্রণাম করলেন, তাঁকে দেখা মাত্রই গৌরহরি কহিলেন, "রামরায়ের কাছ হতে কৃষ্ণকথা শুনেছ?" মিশ্র মহাশয় সঙ্কোচে সব কথা বলতে পারছেন না, সেজন‍্য তিনি মাথা নিচু করে মহাপ্রভুর শ্রীচরণের দিকে তাকিয়ে রইলেন।অন্তর্য‍্যামী শ্রীগৌরাঙ্গ সবই জানেন,সেহেতু তাঁকে অভয়দান করে বললেন, মিশ্র!কোন সঙ্কোচ বা ভয় নাই,মনে যদি কোন সংশয় বা দ্বিধা হয়ে থাকে তা অকপটে আমাকে বলো।তখন মহাপ্রভু সমস্ত বৃত্তান্ত শুনে,রামানন্দ মহিমা প্রকাশ করে বললেন=*
*🌷রামানন্দের কথা কহি শুন সর্বজন।*
*🌷কহিবার কথা নহে আশ্চর্য‍্য কথন।।*
*🌷একে দেবদাসী তায় সুন্দরী তরুণী।*
*🌷তার সব অঙ্গ সেবা করেন আপনি।।*
*🌷স্নানাদি করায় পরায় বাস-বিভূষণ।*
*🌷গুহ‍্য অঙ্গ হয় তার দর্শন স্পর্শন।।*
*🌷তবু নির্বিকার রায় রামানন্দের মন।*
*🌷নানা ভাবোদ্গমে তারে করায় শিক্ষণ।।*
*🌷নির্বিকার দেহমন "কাষ্ঠ পাষাণ সম"।*
*🌷আশ্চর্য‍্য!তরুণী স্পর্শে নির্বিকার মন।।*
*🌺মহাপ্রভু বললেন যে,মিশ্র!তোমার মনে যে সংশয় উপস্থিত হয়েছে তা অতি স্বাভাবিক, কারণ আমি সন্ন‍্যাসী হলেও প্রকৃতি দর্শনে ভয় পাই পরে মনের ধৈর্য‍্য নষ্ট হয়, কিন্তু রামানন্দের কথা স্বতন্ত্র।প্রকৃত জীবদেহের সঙ্গে তলনা চলে না।এক্ষেত্রে মহাপ্রভু, রামরায়কে নিজ হতে উচ্চ আসন দান করলেন। আরও বললেন, "প্রাণশূন‍্য কাঠ বা পাথর যেরকম যোষিৎ (নারী বা কামপত্নী) স্পর্শে অবিকৃত অবস্থায় থাকে, শ্রীল রামরায়ের মনও যোষিৎ স্পর্শে সেইরকম নির্বিকার। সুতরাং সেইরকম চিত্তের বিকারের তো কোন আশঙ্কায় নাই। শ্রীমন্মহাপ্রভুর শ্রীমুখে এইরকম রামানন্দ মহিমা শুনে মিশ্র মহাশয় ভাবতে লাগলেন=*
*(১)মহাপ্রভুর বাক‍্য মাত্রেই বেদবাক‍্য।*
*(২)সে মহাবাক‍্য বেদের অনুশাসন হতেও গভীরতর।*
*(৩)বেদের মহাবাক‍্য হতেও গৌরবে অধিকতর গৌরবান্বিত।*
*(৪)মহাপ্রভু স্পষ্টই বলেছেন যে এইরকম ভাবে যোষিৎ সঙ্গ করতে একমাত্র রামরায়ই অধিকারী।*
*(৫)কেননা,তাঁর মন এবং দেহ অপ্রাকৃত এবং সেজন‍্য যোষিৎ সঙ্গে কিছুমাত্র উত্তেজনা হবার সম্ভাবনা নাই।*
*(৬)শ্রীল রামানন্দ রায়ের দেহ-মন প্রাকৃত জগতের নিয়মাধীন নয়, সদাসর্বদা চিন্ময়রসে পরিপূর্ণ, যে কথা শ্রীপাদ শ্রীজীব গোস্বামী পর্যন্ত হরিভক্তকে উপলক্ষ্য করে বলেছিলেন,*
*🌷হৃদাকাশে চিদানন্দং মুদাভাতি নিরন্তরং,*
*🌷উদয়াস্তং ন পশ‍্যামি কথং সন্ধ‍্যামুপাসীত?*
*(৭)এক রায় রামানন্দ ছাড়া এইরকম কার্য‍্য অনুষ্ঠানের আর দ্বিতীয় পাত্র এ জগতে নাই।*
*(৮)এমন কি এমন কাজের যোগ‍্যতা স্বয়ং মহাপ্রভুর পর্যন্ত নাই, (যদিও বা তিনি সন্ন‍্যাসী) ইত্যাদি।*
*🌻মহাপ্রভুর শ্রীমুখে এইরকম রায় রামানন্দ মহিমা শুনে ভক্তগণের মনের সন্দেহ দূর হল এবং অবাক বিস্ময়ে তাঁরা ভাবতে লাগলেন যে তাঁরা রামরায় হতে কত ন‍্যূন। প্রদ‍্যুম্ন মিশ্র যেন নিজেকে শত অপরাধী বোধ করতে লাগলেন এবং রামরায়ের প্রতি সকলের হৃদয়েই এক অতুলনীয় ভক্তিরসের সঞ্চার হল।সকলে "ধন‍্য রামরায়" "ধন‍্য রামরায়" বলে হরিধ্বনি করতে লাগলেন। মহাপ্রভু বলেছেন=*
*🌷নির্বিকার দেহ মন কাষ্ঠ পাষাণ সম।*
*🌷আশ্চর্য‍্য!তরুণী স্পর্শে নির্বিকার মন।।*
*🌷এক রামানন্দের হয় ইথে অধিকার।*
*🌷তাতে জানি অপ্রাকৃত দেহমন তাঁর।।*
*🌷তাঁহার মনের ভাব তিঁহ জানে মাত্র।*
*🌷তাহা জানিবার আর দ্বিতীয় নহে পাত্র।।*
          *🌹ক্রমাগত🌹*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৩)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
          *রায় রামানন্দের মহিমা*
          ***********************
*🍀রামানন্দ রায়ের প্রশংসা করে মহাপ্রভু বলিলেন=*
*🌷আমিও রায়ের স্থানে শুনি কৃষ্ণ কথা।*
*🌷শুনিতে ইচ্ছা হয় যদি পুনঃ যাও তথা।।*
*🍀কারণ মহাপ্রভুর অন্ত‍্যলীলার অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে =*
*🌷রামানন্দের কৃৃষ্ণকথা স্বরূপের গান।*
*🌷বিরহ বেদনায় প্রভুর রাখয়ে পরাণ।।*
*🍀সুতরাং এই প্রসঙ্গ হতে সকল গৌরভক্তগণ নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন যে রায় রামানন্দ কি বস্তু। প্রকৃতি সম্বাষণ প্রকৃতির মুখদর্শন পর্য‍্যন্ত যেখানে নিষিদ্ধ এমন কি সামান্য একটু তন্ডুল (চাল) ভিক্ষার জন্য যে কঠিন শাস্তি ছোটহরিদাসকে পেতে হয়েছিল তা সকলেই জানেন।সেজন‍্য বৈষ্ণব জগতে (Discipline) বা চরিত্রের আদর্শ বজায় রাখবার জন্য মহাপ্রভু নিজেকে পর্য‍্যন্ত ধিক্কার দিতে দ্বিধা করেননি।তিনি স্বয়ং ভগবান হয়েও ত‍্যাগী বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের শিক্ষার জন্য বলেছেন=*
*🌷আমি তো সন্ন‍্যাসী আপনাকে বিরক্ত করি মানি।*
*দর্শন দূরে রহুক,প্রকৃতির নাম যদি শুনি।।*
*🌷তবহু বিকার পায় মোর তনু মন।*
*🌷প্রকৃতি দর্শনে স্থির হয় কোন জন।।*
*🍀রায় রামনন্দ বাস্তবে পুরুষদেহ পেলেও আসলে তিনি নারীই ছিলেন,যথা বিশাখার স্বরূপ।একই স্তরে ছিলেন শ্রীস্বরূপদামোদর গোস্বামী যিনি ললিতা সখীর স্বরূপ কিন্তু মহাপ্রভু তাঁকে পর্য‍্যন্ত এ ছাড় দেননি। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ বৈষ্ণব পরিকর এবং পার্ষদগণের চরিত্র অনুশীলন করলে মনে হয় যে মহাপ্রভুর প্রকটকালে যদি রামচন্দ্র কবিরাজ প্রভুর আবির্ভাব হত, তাহলে তিনিই বোধহয় অন‍্য একজন।যিনি হয়ত এই ছাড় পেতেন।সেজন‍্য রামরায় চরিত্র বা তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি সব প্রসঙ্গ প্রত‍্যেক আগ্রহী ভক্তগণের জানা উচিৎ।আহা!কি অদ্ভুত চরিত্র!কি সুগভীর শাস্ত্র জ্ঞান, কি বিনয় নম্রতার প্রতীক, প্রবল পরাক্রান্ত রিপুগণ পর্যন্ত দাস‍্যভাবে তাঁর সেবা করছে, মন সদাসর্বদা ব্রজলীলার রস আস্বাদনের জন্য স্মরণ মননের মধ্যেই নিমগ্ন। যুগল সেবার পূজারী ছিলেন বলিয়া হৃদয়াকাশে সদাসর্বদা স্বর্গীয় সুখ অনুভূতি বোধ করতেন। সেজন‍্য এই মহাপুরুষকে ভালভাবেই যাচাই করেই মহাপ্রভু এইরকম মর্য‍্যাদা দান করেছেন। অন‍্য কেউ যাতে অনুকরণ করতে না পারেন সেইজন‍্য নিজেকে উপলক্ষ্য করে কটাক্ষ করতেও দ্বিধা করেননি। অর্থ‍্যাৎ এই জাতীয় নারীসঙ্গ বা নারীর অঙ্গসেবা করবার জন্য যে অপ্রাকৃত দেহ মন দরকার তা রামরায়ের ছিল, এই প্রসঙ্গটি শ্রীপাদ কবিরাজ গোস্বামী লিখেছেন=*
*🌷রামরায়ের কথা কহি,শুন সর্বজন।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🌷নানা ভাবোদ্গমে,তারে করায় শিক্ষণ।।*
*🌻মহাপ্রভুর সুধাময়ী লীলা কথার শেষ নেই কারণ এই প্রেমবারিধি বিশাল এবং এত ছড়িয়ে আছে যে তার কোন কুল কিনারা নাই। তারউপরে সুগভীর, যে অতলস্পর্শ সাধ‍্যাতীত।তথাপি গ্রহ আকর্ষণ ভেদে এই মহা সমুদ্রের জলে কখনও জোয়ার এবং কখনও ভাটার টান দেখা যায়।মহাপ্রভুর এই প্রেমসমুদ্রেও সেইরকম সব সময় প্রেমের জোয়ার বহে না, আধার বিশেষে তিনি এই প্রেম বন‍্যার সৃষ্টি করে ভক্তমহিমা ব‍্যক্ত করে গিয়েছেন, যেমনটি হচ্ছেন এই ব্রজের বিশাখা স্বরূপিনী রায় রামানন্দ।সর্বশেষে শ্রীপাদ কবিরাজ গোস্বামীর শ্রীচরণে দন্ডবৎ প্রণাম করে এই প্রসঙ্গ বিরাম করব যেখানে তিনি সার্বিক মহিমা ব‍্যক্ত করে বলেছেন*
*🌷ভক্তিতত্ত্ব প্রেম কহে,রায়ে করি বক্তা।*
*🌷আপনি,প্রদ‍্যুম্ন মিশ্র সহ,হয় শ্রোতা।।*
*🌷হরিদাস দ্বারা নাম মহাত্ম প্রকাশ।*
*🌷সনাতন দ্বারা ভক্তি সিদ্ধান্ত বিলাস।।*
*🌷শ্রীরূপ দ্বারা ব্রজরস প্রেমলীলা।*
*🌷কে বুঝিতে পারগম্ভীর চৈতন‍্যের খেলা।।*
*🌷শ্রীচৈতন‍্য লীলা এই অমৃতের সিন্ধু।*
*🌷জগৎ ভাসাতে পারে যার এক বিন্দু।।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🙏🙏জয় জয় রায় রামানন্দের জয়।*
*🙏🙏জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন‍্য মহাপ্রভুর জয়।*
*🙏🙏জয় কবিরাজ কৃষ্ণদাস গোস্বামীর জয়।*
*🙏🙏জয় ভক্ত শ্রোতাগণের জয়।।*
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
*বিশ্বে পরম কারণ,হও তোমরা দু'জন,*
   *প্রধান পুরুষ তুমি দেব জনার্দন।*আপন প্রভাবে হরি,কংসের পরাণ হরি,*
    *কুলের উদ্ধার তুমি করিলে সাধন।।*
*তব মায়াতে নিয়ত,বদ্ধ বিশ্বে জীব যত,*
   *আসিলে মানব রূপে উদ্ধার কারণ।*
*ধরণীর ভার হরি,রক্ষিলে জীবেরে হরি,*
   *ভক্তের বাসনা যত করিছ পূরণ।।*
*যোগী ঋষি মুনিগণ,নাহি পায় এ চরণ,*
   *নিরন্তর শুদ্ধ চিত্তে করি তব ধ‍্যান।*
*তোমারে জগত স্বামী,প্রত‍্যক্ষ করিনু আমি,*
   *আমার মতন কেহ নহে ভাগ‍্যবান।।*
*জায়া,পুত্র,মিত্র ধন,দেহ গৃহাদি স্বজন,*
    *মায়ার শৃঙ্খল কর সকল মোচন।*
*সদা মতি রহে হেন,তব কৃপা স্মরি যেন,*
    *পাদপদ্মে আজি মোর এই নিবেদন।।*
👣👣👣👣👣👣🙏👣👣👣👣👣👣
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৪)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
           *খেতুরীর মহোৎসব*
       🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
*🙏শ্রীনরোত্তম ঠাকুরের দীক্ষাগুরু হচ্ছেন শ্রীপাদ লোকনাথ গোস্বামী, একথা আপনারা সকলে নিশ্চয়ই জানেন এবং এই দীক্ষার কাহিনীও এক অতীব চমকপ্রদ ঘটনা যা এক হিসাবে বৈষ্ণব জগতে গুরুকরণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।শ্রীধাম বৃন্দাবনে এই দীক্ষামন্ত্র দান সম্পাদিত হয় শ্রীপাদ শ্রীজীব গোস্বামীর তত্ত্বাবধানে, যে প্রসঙ্গ পূর্বে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।দীক্ষার পর নরোত্তম ঠাকুর বেশ কিছুদিন বৃন্দাবনে ছিলেন এবং তারপরে যখন গৌড়দেশে প্রত‍্যাগমন করেন তখন তাঁর গুরুদেব তাঁকে আদেশ করেন যে তিনি যেন খেতুরীতে গমন করে শ্রীগ‍ৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে নূতন সেবা প্রকাশ করেন।তারপর তিনি নীলাচল ধাম হয়ে শ্রীখন্ডে নরহরি ঠাকুর এবং শ্রীপাদ রঘুনন্দনের সঙ্গে কিছুদিন ছিলেন এবং মধ্যে মধ্যে খেতুরীতে যাতায়াত করতেন। অতঃপর তিনি এও বললেন যে একদিন প্রিয়াজীসহ মহাপ্রভু স্বয়ং এবং বল্লভীকান্ত,শ্রীকৃষ্ণ,ব্রজমোহন,রাধাকান্ত এবং শ্রীরাধারমণ ইঁনারা সকলে মিলিত ভাবে তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বললেন যে তাঁদের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে সেবা পূজা প্রবর্তনের আদেশ করেন।*
*🍀এইরকম স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর তিনি একজন সুদক্ষ ভাষ্কর মাধ‍্যমে এইসব বিগ্রহ নির্মাণের ব‍্যবস্থা করেন।সকল শ্রীমূর্তি গঠনের পর তা দর্শন করে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন কিন্তু প্রিয়াজীসহ মহাপ্রভুর শ্রীমূর্তি দর্শন করে তাঁর চিত্তে বড় বেদনা অনুভব করলেন। কারণ সেই শ্রীমূর্তির প্রকাশ তাঁর হৃদয় স্পর্শ করতে পারে নাই।বিগ্রহ স্বপ্রকাশ, এটি ধর্মীয় কথা।শিল্পী নিমিত্ত মাত্র হলেও শ্রীবিগ্রহ যদি প্রকাশ না হতে চাহেন তাঁর স্বরূপে,তাহলে তা কিছুতেই সম্ভব হয় না।এর জ্বলন্ত উদাহরণ ব‍্যারাকপুর আশ্রমের নিতাই গৌরাঙ্গ বিগ্রহ কারণ বতর্মান কালের বৈষ্ণব জগতে এইরকম লাবণ‍্যময় দারু ব্রহ্ম স্বরূপে শ্রীবিগ্রহ কখনও দর্শন হয় না। যাইহোক,নরোত্তম ঠাকুর তখন মহা সংশয়ে পড়ে গেলেন এবং মনে মনে বিচার করলেন যে নিশ্চয়ই কোথাও অপরাধ হয়েছে, না হলে কেন এই বিগ্রহ এমন শ্রীহীন হলেন।মনোবেদনায় কাতর হয়ে তিনি নিরন্তর মহাপ্রভুর শ্রীচরণে প্রার্থনা জানাতে লাগলেন।তারপর মহাপ্রভু করুণা পরবশ হয়ে একদিন তাঁকে স্বপ্নযোগে জানালেন যে, নরু তুমি বৃথা মনোকষ্ট পেও না, "কারণ আমি যখন সন্ন‍্যাস গ্রহণ করেছিলাম তার কিছুদিন পূর্বে আমার দ্বিতীয় স্বরূপ প্রকাশ করে তা গঙ্গা-গর্ভে রেখে দিয়েছি এবং বতর্মানে সেই বিগ্রহ তুমি তোমারই প্রতিবেশী বিপ্রদাসের ধানের গোলার মধ্যে পাবে। তুমি সেই মূর্তি নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করো তাহলে তোমার মনোভিলাষ পূর্ণ হবে "।*
*🍀নরোত্তম ঠাকুর মহাশয় এইরকম স্বপ্নাদেশ পেয়ে ভোরবেলা সেই বিপ্রদাসের কাছে উপস্থিত হয়ে সেই ধানের গোলার সন্ধান জানতে চাইলেন।উত্তরে তিনি বললেন যে সত‍্যই তাঁর গৃহ সমীপে একটি ধানের গোলা আছে কিন্তু সেখানে ভীষণ সাপের ভয়,কারণ সেই ধানের গোলার ভিতরে এক ভীষণ বিষধর সাপের বাস এবং সাপের ভয়ে সেখানে তার কাছে কেউই যায় না।বলতে পারেন একরকম পরিত‍্যক্ত হয়ে পড়ে আছে।নরোত্তম ঠাকুর তখন সেই ধানের গোলার মধ্যে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন, কিন্তু তাঁকে প্রবেশে  বিধা দিতে লাগলেন।দেখতে দেখতে পাড়া প্রতিবেশী সবাই সেখানে উপস্থিত হল।এইকথা শুনে প্রতিবেশীও বাধা দিলেন, কিন্তু নরোত্তম কোন বাধা নিষেধ না মেনে একাকী সেই ধানের গোলার মধ্যে প্রবেশ করিবামাত্র সেই প্রকান্ড বিষধর সাপ তখন সেই জায়গা হতে বেড়িয়ে চলে গেল, নরোত্তম ঠাকুর ধানের গোলা মধ‍্য হতে এক অপূর্ব লাবণ‍্যময় যুগল-বিগ্রহ উদ্ধার করলেন।পাড়া প্রতিবেশী সকলে সভয়ে প্রতীক্ষা করছিলেন, কি হয়!কি হয়!নানা রকম অমঙ্গল আশঙ্কায়, কিন্তু নরোত্তম ঠাকুর মহাশয় মহৎ কৃপায় বলীয়ান হয়ে নিঃসংশয় চিত্তে তা উদ্ধার করলেন।গ্রামবাসী সকলে এই দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন এবং নরোত্তম ঠাকুরের মহিমা দ্বিগুণ ভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হল।আমাদের ধর্মীয় সংস্কারে বহু ধর্ম স্থানেই এইরকম সর্পস্থিতি দেখা যায়,কারণ দেবাদিদেব মহাদেব কৃপা পরবশ হয়ে তাঁর অনুচরদের দ্বারা এইসব পবিত্র স্থান রক্ষণাবেক্ষণ করান।বিশেষ করে আমাদের এই বৈষ্ণব জগতে সাপের এইরকম অধিষ্ঠান বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে এবং বৈষ্ণব মহান্তগণ একে অতীব শুভলক্ষণ বলে গণ‍্য করেন। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে ফুলিয়ায় হরিদাস ঠাকুরের গোফার মধ্যে সাপের বাস ছিল,রমণরেতীর আশ্রমে সাপ নিয়মিত ভাগবদ পাঠ শুনত।পুণ‍্যভূমি রেমুনায় শ্রীপাদ মাধবেন্দ্রপুরীর সমাধি ক্ষেত্রে সাপের বাস ছিল ইত্যাদি।পাণিহাটি রাঘব ভবনে মাধবী কুঞ্জতলে দুধের মত ধবধবে সাদা বৃহৎ দুইটি সাপের বাস ছিল ইত্যাদি। যাইহোক,এই ভাবে ষড়্ বিগ্রহ একত্রিত করার পর নরোত্তম ঠাকুর তা খেতুরীতে প্রতিষ্ঠার জন্য আচার্য‍্য প্রভুর কাছে মনোবাসনা জ্ঞাপন করেন এবং আচার্য‍্য প্রভু এইসব অলৌকিক কাহিনী শোনার পর বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন এবং মহাপ্রভুর অপার করুণার কথা স্মরণ করতে লাগলেন।অবশেষে নরোত্তম ঠাকুর ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিনে সেই ষড় বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বাসনা ব‍্যক্ত করলেন এবং আচার্য‍্য প্রভুর কৃপা ভিক্ষা করে বললেন এই গুরু দায়িত্ব তাঁকেই বহন করতে হবে। আচার্য‍্য প্রভু তাতে সম্মতি প্রদান করলেন।*
🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓🍓
*অত্রুূর কর্ত্তৃক স্তুত,আর হইয়া অর্চিত,*
   *হাস‍্যাননে তবে তারে কন ভগবান।*
*করি তোমায় মিনতি,নাহি কর এত স্তুতি,*
   *তুমি যে পিতৃব‍্য মোর পিতার সমান।।*
*কহি তাত এবে যাহা,অবধান কর তাহা,*
    *হস্তিনা নগরে তুমি যাও একবার।*
*সেখানে পান্ডবগণ,রহিয়াছে কে কেমন,*
   *সকল সংবাদ তুমি লবে সবাকার।।*
*প্রয়োজন হয় যাহা,পশ্চাতে হইবে তাহা,*
   *মিত্রের কল‍্যাণ যাহা করিব সাধন।*
*অত্রুূরে আদেশ করি,উদ্ধবে লইয়া হরি,*
   *রামসহ করিলেন মথুরা গমন।।*
*শুকদেব মহামতি,কহে শোন নরপতি,*
   *অত্রুূর হস্তিনাপুরে করিল গমন।*
*সুদীর্ঘ সে পথ শেষে,উপনীত অবশেষে,*
   *নগরের শোভা হেরি মুগ্ধ তার মন।।*
*🙏🙏কুন্তীদেবীর কাছে প্রার্থনা🙏🙏*
*হে কৃষ্ণ!করুণাসিন্ধু,তুমি যে সবার বন্ধু,*
   *এখন বিপন্ন জনে করগো উদ্ধার।*
*বিপদভঞ্জণ হরি,দুঃখ নাশ ত্বরা করি,*
    *কত কষ্ট পাইতেছি হের একবার।।*
🪷🪷🪷🪷🪷🪷🌷🪷🪷🪷🪷🪷🪷
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৫)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
           *খেতুরীর মহোৎসব*
            ^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🍀অতঃপর নানাবিধ আলোচনার মাধ‍্যমে উৎসবের সব আয়োজন এবং পদ্ধতি বিষয়ক প্রসঙ্গ হল।আচার্য‍্য প্রভু তখন তাঁর প্রাণাধিক প্রিয় রামচন্দ্র কবিরাজের উপর উৎসবের দায়িত্ব অর্পণ করলেন।কথিত আছে যে সেই রাত্রে মহাপ্রভু আচার্য‍্য প্রভুকেও স্বপ্নে দেখা দিয়ে এই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার ব‍্যাপারে উৎসাহিত করলেন।তারপর রামচন্দ্র কবিরাজ সকলের সঙ্গে পরামর্শ অনুযায়ী চারিদিকে নিমন্ত্রণ পত্র প্রেরণ করলেন বা পাঠিয়ে দিলেন।এক্ষণে বতর্মান কালের পাঠকগণের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই যে, তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে ছাড়া কোন যানবাহন ছিল না এবং সকল শিষ্য ভক্তগণ আদেশ পাওয়া মাত্র তা পালন করতেন। এইভাবে শতশত মাইল অতিক্রম করে সব উৎসবের নিমন্ত্রণ পত্র যেখানে যাঁদের দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সকলকেই দেওয়া হল।কোথায় যাজিগ্রাম আমি কোথায় পুরীধাম এছাড়াও কালনা,কাটোয়া, শ্রীখন্ড,নবদ্বীপ,শান্তিপুর,খড়দহ এবং বিভিন্ন জায়গায় এইভাবে হাজার হাজার নিমন্ত্রণ পত্র দেওয়া হল।তখনকার দিনে আনুগত‍্য এতই প্রবল ছিল যে এই জাতীয় নিমন্ত্রণ পত্র পেলে সকলেই তার মর্য‍্যাদা দিতেন এবং এইভাবে শতশত মাইল পদব্রজে আগমন করে সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে কোন কষ্ট বোধ করতেন না।সেই হিসাবে বতর্মান কালে গুরু বৈষ্ণবের আদেশ কিভাবে পালন করি তা ভক্তগণ কৃপা করে চিন্তা করে দেখবেন।এইভাবে রামচন্দ্র কবিরাজের উপর গুরু দায়িত্ব অর্পণ করে আচার্য‍্য প্রভু সকলকে খেতুরী পাঠিয়ে দিলেন এবং নিজেও অল্পদিনের মধ্যে যাত্রা করবেন তাও বললেন।*
*🍀এখানে জানা দরকার যে রাজনন্দন নরোত্তম যখন বিষয় গর্ত হতে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন করলেন তখন তাঁর পিতা, ভাইয়ের পুত্র সন্তোষ দত্তকে এই বিশাল জমিদারীর ভার অর্পণ করেন কিন্তু তিনি সারাটি জীবন যেভাবে বৈষ্ণব সেবার অনুকূলে কাজকর্ম করেছেন তা কল্পনাতীত।ক্ষণিকের জন্যও তিনি মান মর্য‍্যাদার বশীভূত হননি এবং নরোত্তম যাতে সুখ পান ও তাঁর মনোমত কার্য‍্যাদি দ্বারা রাজকোষ হতে অজস্র অর্থব‍্যয় করে গিয়েছেন। সম্পদ কখনও তাঁকে দাসত্ব শৃঙ্খলে বাঁধতে পারেনি এবং সারাটি জীবন তিনি বৈষ্ণব সেবার মাধ‍্যমে যে আদর্শ রেখে গিয়েছেন তা আর কেউ পারবেন কিনা সন্দেহ।এই হিসাবে খেতুরীর এই মহামহোৎসবের গুরু দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপেই তাঁরই উপর বর্ত্তাইল।ক্রমে একদিন গোবিন্দ কবিরাজ সহ আচার্য‍্য প্রভু খেতুরীতে এসে উপস্থিত হলেন এবং রাজা সন্তোষ দত্ত বহু পথ অগ্রসর হয়ে মর্য‍্যাদার সঙ্গে তাঁদের অভ‍্যর্থনা করে খেতুরীতে নিয়ে আসেন।কারণ তখনকার বৈষ্ণব সমাজে এটিই প্রচলিত ছিল যে কোন শ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব মহাজন কোথাও আগমন করলে আতিথ‍্যেয়তার মর্য‍্যাদা হিসাবে এটি করা হত এবং তাঁরা সংবাদ পাওয়ামাত্র পদব্রজে অগ্রসর হয়ে তাঁদের যথোচিত মর্য‍্যাদা দান করে অভ‍্যর্থনা করে নিয়ে আসিতেন।*
*🍀তারপর আচার্য‍্য প্রভু সেই ষড়্ বিগ্রহ দেখে প্রাণে ভীষণ ভীষণ আনন্দ লাভ করলেন এবং ক্রমশ অভ‍্যাগত নিমন্ত্রিত বৈষ্ণব মহান্তগণ ধীরে ধীরে খেতুরী আগমন করতে লাগলেন।রাজা সন্তোষ দত্ত প্রত‍্যেকের জন্য আলাদা আলাদা সুবন্দোবস্ত এমন ভাবে করেছিলেন যে সকলেই তা দেখে পরম সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।তারপরে তাঁদের সেবার জন্য যে আন্তরিকতা এবং আয়োজনের প্রাচুর্য‍্য তাঁরা দেখে হৃদয়ে মনে অত‍্যন্ত তৃপ্তিলাভ করলেন। ক্রমশ খেতুরীর পুণ‍্যভূমি বৈষ্ণব মহাজনের আগমনের ফলে এক নবরূপ ধারণ করল।*
*🙏উড়িষ‍্যা হতে একদিন শ‍্যামানন্দ প্রভু তাঁর শিষ্য রসিকানন্দ এবং কিশোরী দাস প্রভৃতি ভক্তসহ সেখানে আগমন করলেন।*
*🙏অম্বিকা কালনা হতে তদীয় (শ‍্যামানন্দ প্রভুর)গুরুদেব শ্রীহৃদয়চৈতন‍্য প্রভু শিষ্য ভক্তগণ সহ সেখানে পদার্পণ করলেন।*
*🙏শান্তিপুর হতে শ্রীঅদ্বৈত-তনয় অচ‍্যুতানন্দ,গোপাল দাস প্রভুপাদগণ সহ সেখানে মিলিত হলেন।*
*🙏শ্রীপাট খড়দহ হইতে শ্রীনিত‍্যানন্দ ঘরণী মা জাহ্নবাদেবী,বলরাম দাস,বৃন্দাবন দাস সহ অনেকেই শুভাগমন করলেন।*
*🙏শ্রীধামনবদ্বীপ হতে শ্রীপতি,শ্রীনিধি,প্রমুখ ভক্তগণ ও শ্রীমন্মহাপ্রভুর পরিকরগণ খেতুরীতে পদার্পণ করলেন।*
*🙏আকাইহাট নিবাসী কৃষ্ণদাস,স্থানীয় ভক্তগণসহ খেতুরীতে পদার্পণ করে ধন‍্য করলেন।*
*🙏কাটোয়া হতে শ্রীযদুনন্দন এবং শ্রীখন্ড হতে শ্রীপাদ রঘুনন্দন এবং লোচনানন্দ প্রভৃতি শ্রীখন্ডবাসী মহাজনগণ খেতুরীতে গিয়ে উপস্থিত হলেন।*
*🙏এছাড়াও বিভিন্ন বৈষ্ণব পীঠস্থান সকল মহাজনগণ খেতুরীতে পদার্পণ করবার ফলে খেতুরী যেন চন্দ্রিমালোকে সুশোভিত হয়ে উঠিল। মহাপ্রভুর অপ্রকটের পর এতাবৎ কাল পর্যন্ত এইরকম মহা সমাবেশ আর হয়নি। সেজন‍্য এই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা মহামহোৎসব বৈষ্ণব জগতে এক চিরস্মরণীয় ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে অদ‍্যাপি পরিগণিত।নরোত্তম ঠাকুরের পিতা রাজা কৃষ্ণানন্দ এবং সন্তোষ দত্ত অকাতরে তাঁদের ধন ভান্ডার উন্মুত্ত করে দিয়েছিলেন এই বৈষ্ণব সেবার কাজে। তাঁদের অভিনব সুব‍্যবস্থায় অভ‍্যাগত বৈষ্ণব মহান্তগণ পরম তৃপ্তিলাভ করলেন।এইরকমে নির্দ্ধারিত শুভ দিনের বহু পূর্ব হতেই খেতুরীতে যে আনন্দ মেলার সমবায় হল।অতঃপর নরোত্তম ঠাকুরের ব‍্যবস্থানুযায়ী প্রসিদ্ধ বাদ‍্যকরগণ ধীরে ধীরে এসে সমবেত হলেন এবং তাঁদের নৃত্য গীত আদির মাধ‍্যমে খেতুরীর আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠিল।সেই স্বর্গীয় পরিবেশের যে কি মাধুর্য‍্য তা একমাত্র সমবেত বৈষ্ণব মহান্তগণই তা উপলব্ধি করতে পারলেন যা কি আনন্দ তা বর্ণনাতীত।*
*🍀অবশেষে সেই অতি প্রত‍্যাশিত দোলপূর্ণিমার দিন সমাগত হল কারণ এই দিনেই মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথি এবং সেই দিনেই এই ষড়্ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার দিন ধার্য‍্য ছিলেন।সমবেত বৈষ্ণব মহান্তগণ আচার্য‍্য (শ্রীঅদ্বৈতাচার্য‍্য) প্রভুর উপরই এই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করলেন। সেই হিসাবে বৈষ্ণব প্রথা অনুযায়ী তিনি আনুষ্ঠানিক ক্রিয়া কর্মের পর দশাক্ষর গোপাল মন্ত্রের সঙ্গে বিগ্রহগণের পূজা করলেন এবং নানাবিধ উপচারে পূজাদি সমাপন করবার কালে সমবেত বৈষ্ণব মহান্তগণ মূহুর্মূহু হরিধ্বনি করতে লাগলেন।অবশেষে শাস্ত্রমতে প্রতিষ্ঠা কার্য‍্যাদি সমাপ্ত হল আচার্য‍্য প্রভু সাষ্টাঙ্গে ভূলুন্ঠিত হয়ে প্রণাম করলেন, সেই সঙ্গে নরোত্তম ঠাকুর মহাশয়ও অশ্রু,কম্প,পুলকাদি প্রভৃতি সাত্ত্বিক ভাবে আবিষ্ট হয়ে গদগদ কন্ঠে সেই ষড় বিগ্রহগণকে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ‍্যমে প্রণাম করলেন, কারণ এতদিনে তাঁর মনোবাসনা পূরণ হল।*
*🌷গৌরাঙ্গ বল্লভীকান্ত শ্রীকৃষ্ণ ব্রজমোহন।*
*🌷রাধা রমণ হে রাধে,রাধাকান্ত নমোহস্তুতে।।*
*🙏কারণ এই ষড় বিগ্রহের স্বপ্নদিষ্ট নাম হচ্ছেন=*
*🌷গৌরাঙ্গ---বল্লভীকান্ত---শ্রীব্রজমোহন।*
*🌷শ্রীকৃষ্ণ---শ্রীরাধাকান্ত---শ্রীরাধারমণ।।*
*🍀অতঃপর সকলে মিলিতভাবে নরোত্তম ঠাকুর মহাশয়কে সঙ্কীর্তন মহাযজ্ঞের আদেশ করলেন এবং তখন তিনি নতশিরে খোল-করতালাদির পূজা ও যথাবিধি মঙ্গলাচরণের পর তাঁর নিজস্ব গরাণহাটি সম্প্রদায়কে নিয়ে সঙ্কীর্তনের জন্য প্রস্তুত হলেন।এমন সময় শ্রীপাদ রঘুনন্দন এসে তাঁর গলায় প্রসাদী মাল‍্যচন্দন দান করলে ঠাকুর মহাশয় সাষ্টাঙ্গে দন্ডবৎ প্রণাম করলেন। তারপর তিনি সমবেত বৈষ্ণব মহান্তগণের কাছ হতে কৃপাশক্তি ভিক্ষা করে মহাসংকীর্তন যজ্ঞ আরম্ভ করলেন। ঠাকুর মহাশয়ের মধুমাখা কন্ঠ নিঃসৃত সেই প্রেমময় পদাবলীগুলি শুনে সমবেত ভক্তগণ আনন্দ পাথারে ভেসে যেতে লাগলেন।ক্রমশ ধীরে ধীরে এক অনির্বচনীয় শক্তি প্রভাবে তাঁরা ভাবরাজ‍্যে নিমজ্জিত হতে লাগলেন। সংকীর্তনের মাতন যখন পূর্ণভাবে প্রকাশ লাভ করল তখন সকলেরই নয়নে প্রেমাশ্রু ধারা প্রবাহিত হতে লাগিল এবং সেই প্রেমময় পদাবলী আস্বাদনে সকলেই যেন উন্মত্ত হয়ে গেলেন, ভাবাবেশে সকলেই সেই সমাবেশে নৃত্যকীর্তনে যোগদান করলেন। যেন এক অদৃশ্য শক্তি প্রভাব।*
🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌 🙌
*কোথা তুমি হে গোবিন্দ,অদৃষ্ট আমার মন্দ,*
    *সন্তানের কষ্ট যে গো সহ‍্য নাহি হয়।*
*নিলে তোমার শরণ,কর যাতনা হরণ,*
    *তব কৃপা বিনা মোর নাই যে আশ্রয়।।*
*কুন্তী ব‍্যথিত অন্তরে,কৃষ্ণে কত স্তুতি করে,*
   *অশ্রুপূর্ণ রহে তাঁর যুগল নয়ন।*
*বিদুর অত্রুূর মিলি, সান্ত্বনার বাক‍্য বলি,*
    *দূর করে তবে তার কতেক বেদন।।*
*বিদুরে লইয়া সাথে,অত্রুূর চলিয়া পথে,*
     *ধৃতরাষ্ট্র নিকটেতে উপনীত হন*।
*তবে প্রণমি রাজারে,পরিচয় কহি তারে,*
     *রামকৃষ্ণ বার্তা পরে করিল জ্ঞাপন।।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🪔🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৬)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
           *খেতুরীর মহামহোৎসব*
          ^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🍀ভাবাবেশে সকলেই সেই সমাবেশে নৃত্যকীর্তনে যোগদান করলেন,যেন অদৃশ্য এক শক্তি প্রভাব।*
*🙌 কেউ বা নাচের তালে তালে নিজের দেহমনকে ভাসিয়ে দিয়েছেন।*
*🙌 কেউ বা আশ্রুধারায় ভেসে যাচ্ছেন।*
*🙌 কেউ বা ভাবাবেশে হাস‍্যধ্বনি করছেন।*
*🙌কেউ বা কাতর কন্ঠে রোদন করছেন।*
*🙌 কেউ বা ভাবাবেশে মূর্ছা যাচ্ছেন।*
*🙌কেউ বা ধূলি ধূসরিত প্রাঙ্গণে পড়ে আছেন।*
*🙌কেউ বা পাগলের ন‍্যায় মহানন্দে নৃত্য করছেন।*
*🙌আবার কেউবা অগ্নিসম দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলছেন।*
*🍀সে এক অপূর্ব স্বর্গীয় দৃশ্য এবং ভাগ‍্যবান-জনেই তা দর্শন করেছিলেন, বৈষ্ণব গ্রন্থে একটি পদাবলী আছে যে ঃ---*
*🌷প্রকট অপ্রকট লীলার এই তো বিধান।*
*🌷প্রকট লীলায় প্রভু করেন নিজে নৃত্য গান।।*
*🌷অপ্রকটে নামরূপে স্বয়ং ভগবান।*
*🌷কীর্তন বিহারীরূপে সদা বিদ‍্যমান।।*
*🍀অর্থ‍্যাৎ যেখানে নাম সংকীর্তন হবে সেখানেই মহাপ্রভুকে আসতেই হবে, সে তিনি প্রকটই হন বা অপ্রকটই হন।(নিন্দুক ও পাষন্ডীদের জন্য তিনি অপ্রকট, শুদ্ধভক্তের কাছে সদাসর্বদা প্রকট)। কিন্তু অপ্রকটে দেখবার ভাগ‍্য তো সকলের জুটে না, কারণ সেই প্রেমনেত্রের বিকাশ তো সকলের হয় নাই, কিন্তু সেদিন খেতুরীতে যাঁরা সমবেত ছিলেন তাঁরা সকলেই সিদ্ধ পরিকর। সেজন্য তাঁরা প্রত‍্যেকেই সেইসব মহাত্মার উপস্থিতি অনুভব করেছিলেন এবং তাঁরা সকলেই যেন দেখছিলেন যে মহাপ্রভু স্বয়ং তাঁর পার্ষদ এবং পরিকরগণসহ সেই মহাসংকীর্তনযজ্ঞে যোগদান করেছিলেন। এইভাবে ভাবিত হয়ে তাঁরা তাঁদের দেহস্মৃতি পর্য‍্যন্ত ভুলে গিয়েছিলেন।সকলেই যেন একত্রে সেই কীর্তনে অপূর্ব সুখ অনুভব করছিলেন। অর্থ‍্যাৎ তাঁরা সকলেই যেন দেখছেন যে সংকীর্তন যজ্ঞেশ্বর মহাপ্রভু,নিত‍্যানন্দ,অদ্বৈতাচার্য‍্য,ষড় গোস্বামীগণ ও অন‍্যান‍্য সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে অপ্রকটে তাতে যোগদান করেছেন। অর্থ‍্যাৎ নরোত্তমের ভক্তি প্রভাবে সেদিন প্রকট অপ্রকটের ব‍্যবধান আর রইল না, মহাপ্রভু মৃদুমন্দ হাসি সহকারে নৃত্য করছেন এবং যেন সস্নেহে সকলের প্রতি শুভদৃষ্টিপাত করছেন।এ আনন্দ যে কি আনন্দ, এই কল্পনাতীত সৌভাগ্য লাভে সকলেই যেন হৃদয় মন্দিরে মহাপ্রভুকে অভিষেক করে আনন্দ পাথারে ভেসে যেতে লাগলেন।*
*🍀অনেকেই ভাবাবেশে মূর্ছিত হয়ে রোদন করছেন আবার একটু আবেশ ভঙ্গ হলে মহাপ্রভুকে দর্শন মানসে হুঙ্কার গর্জন সহ নৃত্যের তালে তালে কীর্তন করছেন।কেউবা নিষ্পলক দৃষ্টিতে মহাপ্রভু এবং সকল অপ্রকট মহাত্মাকে দর্শন করেছেন।এটি যে বাস্তবে সত‍্য হতে পারে তা তাঁরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন নাই, কিন্তু সেইদিন সেইক্ষণে তা প্রত‍্যক্ষ করে সকলে যে কি অনির্বচনীয় সুখ অনুভব করেছিলেন তার বর্ণনা একমাত্র তাঁরাই দিতে পারেন, লেখনীর দ্বারা তার প্রকাশ সম্ভব নহে।*
*🍀নরোত্তমদাস ঠাকুরের ভাগ‍্যের সীমা নাই, মহাপ্রভু স্বপ্নের মাধ‍্যমে তাঁকে এই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার আদেশ করেছিলেন, কিন্তু তিনি যে এই ভাবে এসে যোগদান করবেন তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেন নাই।এটি দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে বৈষ্ণব জগতে অপ্রকটক বলে কিছুই নাই।অপ্রকট শুধু নামে মাত্র, শুদ্ধভক্তের কাছে সদা প্রকট।যাঁদের সেই প্রেমনেত্রের বিকাশ হয়েছে তাঁরা সদাসর্বদা তাঁদের সঙ্গসুখ অনুভব করেন। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আচার্য‍্য ও নরোত্তম ঠাকুরের জীবনীতে পাওয়া যায়।ভাগ‍্যবান শ্রীরঘুনন্দনও তাঁর গুরুদেব শ্রীনরহরি ঠাকুরের বাৎসরিক তিথিতে ভোগ মন্দিরে তাঁকে সশরীরে দর্শন করেছিলেন, সুতরাং এটি দ্বিধাহীন ভাবে পরমসত‍্য।এইভাবে সকলকে কৃপা করে মহাপ্রভু হঠাৎ যেন সেই সমাবেশ হতে অন্তর্হিত হয়ে গেলেন যে সময়ে তাঁরা তা অনুভব করলেন তখনই শুরু হল হাহাকার ও ক্রন্দনের রোল।চরম থেকে চরমতর অবস্থা হল নরোত্তম ঠাকুর মহাশয়ের, বিরহে অন্তর্জ্বালায় তাঁর দুইনয়ন হতে পিচকারীর মত অশ্রুধারা বহিতে লাগিল।আবেশে বাহ‍্যজ্ঞান লুপ্ত হয়ে কখন যে আছাড় খেয়ে পড়ছেন, কখনও বা মাতৃহারা শিশুর ন‍্যায় অঝোর নয়নে ক্রন্দন করছেন, সর্বাঙ্গে প্রতি লোমকূপে পুলকাবলী দেখা যাচ্ছে,সে পুলকাবলী কদম্বফুলের মত কন্টকাকীর্ণ। সকলের মিলিত অশ্রুধারায় খেতুরীর প্রাঙ্গণ কাদাময় হয়ে গেল,অদ্বৈতাচার্য‍্যও সেই সমাবেশে যে বিরহের প্রকাশ করেছিলেন তা দেখে কারও পক্ষে অশ্রু সম্বরণ করা সম্ভব ছিল না।*
*🍀কীর্তনের উন্মত্ততা মানুষের মধ্যে যে কি বিপর্য‍্যয় ঘটাতে পারে তা একমাত্র খেতুরীতেই তা আস্বাদন করা গিয়েছিল।কেউ আর বাকী নেই, কে কাকে সান্ত্বনা দিবে সকলেই বিরহের উন্মত্ততায় ভবসাগরে ভুবে গেছে।*
😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭
*কোথা তুমি হে গোবিন্দ,অদৃষ্ট আমার মন্দ,*
    *সন্তানের ক্লেশ যে গো সহ‍্য নাহি হয়।*
*নিলে তোমার শরণ,কর যন্ত্রণা হরণ,*
     *তব কৃপা বিনা মোর নাই যে আশ্রয়।।*
*কুন্তী ব‍্যথিত অন্তরে,কৃষ্ণে কত স্তুতি করে,*
     *অশ্রুপূর্ণ রহে তাঁর যুগল নয়ন।*
*বিদুর অত্রুূর মিলি, সান্ত্বনার বাক‍্য বলি,*
    *দূর করে তবে তার কতক বেদন।।*
*বিদুরে লইয়া সাথে,অত্রুূর চলিয়া পথে,*
    *ধৃতরাষ্ট্র নিকটেতে উপনীত হন*
*তবে প্রণমি রাজারে,পরিচয় কহি তারে,*
    *রামকৃষ্ণ বার্তা পরে করিল জ্ঞাপন।।*
*তুমি রাজা বীর্য‍্যবান,খ‍্যাতি তব সর্বস্থান,*
    *বিচিত্র বীর্য‍্যের হও প্রথম সন্তান।*
*সহোদর অনুজাত, হন যবে স্বর্গগত,*
     *হস্তিনাপুরেতে রাজা হ'লে বর্তমান।।*
🪔🪔🪔🪔🪔🪔🦚🪔🪔🪔🪔🪔🪔
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৭)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
           *খেতুরীর মহামহোৎসব*
            **********************
*🍀নরোত্তম ঠাকুরের পিতা কৃষ্ণানন্দ দত্ত এবং ভাই সন্তোষ দত্ত মহাপ্রভুর সেই পদাঙ্কিত ভূমিতে গড়াগড়ি যাচ্ছেন আর সকলের চরণধূলি গ্রহণ করছেন। কখনও বা নিজপুত্র নরোত্তমের চরণরজ গ্রহণ করছেন।আনন্দের আতিশয‍্যে বৃদ্ধ রাজা যেন বাহ‍্যজ্ঞান রহিত হয়ে গেলেন এবং কি যে করছেন,কি যে বলছেন,তার কোন বিচার নাই। নিজের সৌভাগ্যে গর্বিত হয়ে বলছেন, আজি আমি ধন‍্য,আজ আমি কৃতার্থ, আজ আমার মানব জনম স্বার্থক, আজ আমার হৃদয় পুত্র গর্বে স্ফীত হয়ে উঠছে।আজ আমি যেমন ধন‍্য, আমার বংশ ধন‍্য, আমার পৃর্বপুরুষ ধন‍্য, আমার অর্থ সম্পদ ধন‍্য, কারণ এই সৌভাগ্য তো মানুষের জীবনে খুবই কম ঘটে।*
*🍀এইভাবে ধীরে ধীরে সকলে বাহ‍্যদশা পেতে লাগলেন কিন্তু তথাপি সকলে যেন মহানন্দে মহাপ্রভুর কথা চিন্তা করে কাঁদতে লাগলেন।যাঁরা মূর্ছিত হয়ে পড়েছিলেন, পরিচারকগণ তাদের সেবার মাধ‍্যমে প্রকৃতিস্থ করতে সচেষ্ট হলেন এবং তখন আচার্য‍্য নরোত্তমকে উদ্দেশ করে বললেন যে তোমার প্রতি মহাপ্রভুর অপার করুণা, তোমার কৃপাতেই আমরা সকলে এই অনাস্বাদিত,অচিন্ত‍্যনীয়, স্বর্গীয় আনন্দ উপভোগ করলাম।ঠাকুর মহাশয় দীনতার সঙ্গে তাঁর চরণে সাষ্টাঙ্গে দন্ডবৎ করলেন।এই সমবায়ের মধ্যে সর্বপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে নিত‍্যানন্দ ঘরণী জাহ্নবাদেবীর আগমন এবং তিনিও এই অপ্রকট সমাবেশের মধ্যে নিত‍্যানন্দপ্রভুকে দর্শন করে নিজেকে কৃতার্থবোধ করেছিলেন।তখন তিনি অদ্বৈতাচার্য‍্যকে এবং নরোত্তমকে উদ্দেশ্য করে অজস্র প্রশংসাবাণী বর্ষণ করতে লাগলেন এবং হৃদয়ের অন্তঃস্থল হতে তাঁদের উভয়কে আশীর্বাদ করলেন। তারপর হোলী খেলবার আয়োজন করতে আদেশ করলেন। কারণ সেইদিনেই দোল পূর্ণিমা।অতঃপর ধীরে ধীরে সকলে হোলী খেলারঙ্গে মেতে গেলেন এবং সেইদিন সন্ধ্যায় আরতির পর যে অভূতপূর্ব নৃত্যকীর্তন সেই মন্দির প্রাঙ্গণে হয়েছিল তাতেও সকলে চরম আনন্দ লাভ করেছিলেন। এই সময় নরোত্তম ঠাকুর ভাবাবেশে বাহ‍্যজ্ঞান লুপ্ত হন এবং মূর্ছিত হয়ে মাটিতে পড়ে যান।বৃদ্ধপিতা মনে করেছিলেন যে পুত্রের প্রাণবায়ু বোধহয় আর নাই, তখন তিনি হাহাকার করে কাঁদতে লাগলেন।তখন আচার্য‍্যপ্রভু ও শীর্ষস্থানীয় মহান্তগণ সেখানে গিয়ে নানাভাবে দেখাশুনা করবার ফলে বহুসময় পরে ঠাকুর মহাশয়ের ধীরে ধীরে বাহ‍্যদশা ফিরে পেলেন এবং সমবেত সকলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।*
*🌻পরদিন হতে ধীরে ধীরে বিদায়ের পালা শুরু হল, রাজা সন্তোষ দত্ত সকলকে বহুবিধ অর্থ ও দ্রব‍্য সামগ্রীর দ্বারা মর্য‍্যাদা দান করলেন এবং ক্রমশ খেতুরীতে যেন অমাবস‍্যার আগমন হল। নরোত্তম ঠাকুর বৈষ্ণব বিদায়ের পর, সেই ষড় বিগ্রহের সেবা নিয়ে দিন কাটাতে লাগলেন।খেতুরী মহোৎসব বৈষ্ণব জগতে এক অতীব চিত্তাকর্ষক কাহিনী কারণ এইরকম প্রকট অপ্রকট সম্মেলন আর অদ‍্যাপি হয় নাই মহাপ্রভুর অপ্রকটের পর।🌻দুঃখের বিষয় এমন যে পবিত্র ভূমি খেতুরী তা আজ পূর্ব পাকিস্তানে চলে গিয়েছে এবং সেই পুণ‍্যভূমি বতর্মানে যে কি অবস্থায় আছেন! ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থে এই খেতুরীর মহোৎসব যে ভাবে বর্ণিত আছে তা সুধী পাঠকগণের আস্বাদনের জন্য দেওয়া হল।*
*🙏গৌরাঙ্গ!বল্লভীকান্ত!শ্রীকৃষ্ণ!ব্রজমোহন!*
*🙏রাধারমণ!হে রাধে!রাধাকান্ত নমোহস্তুতে।।*
*🌷কতশত লোক প্রবেশিয়া শ্রীঅঙ্গনে।*
*🌷প্রণমে বিহ্বল হৈয়া আরতি দর্শনে।।*
*🌷সকল মহান্ত প্রিয় নরোত্তম প্রতি।*
*🌷সঙ্কীর্তন আরম্ভে দিলেন অনুমতি।।*
*🌷নরোত্তম সবে প্রণময়ে মহীতলে।*
*🌷সঙ্কীর্তনারম্ভে হিয়া আনন্দে উথলে।।*
*🌷সঙ্কীর্তন সমুদ্র উথলে তিলে তিলে।*
*🌷চতুর্দিকে ভাসে লোক নয়নের জলে।।*
*🌷সকলেই আত্মবিস্মৃতি অতিশয়।*
*🌷উন্মত্তের প্রায় চতুর্দিকে নিরীক্ষয়।।*
*🙏🙏পরবর্তী পর্বে বাকী অংশ*
*******************************
*🌺🌺অত্রুূরের উপদেশ ঃ--*
*কহি আমি হে রাজন,শোন এবে দিয়া মন,*
   *সংসার অনিত‍্য হয় সব মায়াময়*।
*এ পৃথিবী মাঝে যাহা,ধন জন রহে তাহা,*
   *সব মিথ‍্যা এই বাক‍্য জানিও নিশ্চয়।।*
*অতএব নরপতি,স্বধর্মেতে রাখি মতি,*
   *কর্তব‍্য পালন কর স্থির করি মন*।
*কুরু আর পান্ডবেরে,সম দেখ এইবারে,*
   *ইহার অন‍্যথা যেন না হয় কখন।।*
*অত্রুূরের শুনি কথা,কহিলেন রাজা সেথা,*
   *শোনালে আমায় তুমি মঙ্গল বচন।*
*তোমার যতেক বাণী,অমৃত সমান মানি,*
   *তবু তৃপ্ত নাহি হয় মনযে এখন।।*
*হৃদি মোর অবিরত,পুত্র বশে বশীভূত,*
    *হিতাহিত বুদ্ধি তবে আর নাহি রয়।*
*যেমন বিদ‍্যুৎ গতি,তেমনি আমার মতি,*
     *ক্ষণেক জাগিয়া জ্ঞান দ্রুত পায় লয়।।*
🦚🦚🦚🦚🦚🦚🦜🦚🦚🦚🦚🦚🦚
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৮)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
            *খেতুরীর মহামহোৎসব*
            ***********************
*🍀ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থে, নরোত্তম ঠাকুরের মহাযজ্ঞে মহাপ্রভুর পরিকরগণসহ প্রকটাপ্রকট বিলাস*
*🌷কহিতে কি সংকীর্তন সুখের ঘটায়।*
*🌷গণসহ অধৈর্য‍্য হইলা গোরারায়।।*
*🌷মেঘেতে উদয় বিদ‍্যুতের পুঞ্জ যৈছে।*
*🌷সংকীর্তন-মেঘে প্রভু প্রকটয় তৈছে।।*
*🌷কি অদ্ভুত প্রকট-প্রকাশ সুশোভিত।*
*🌷নিত‍্যানন্দাদ্বৈতগণ সহ সুবেষ্টিত।।*
*🌷সবে হৈলা সংকীর্তন স্থলের ভূষণ।*
*🌷প্রভুগণ--মাধুর্য‍্য ব‍্যাপিল ত্রিভুবন।।*
*🌷প্রকট অপ্রকট একত্র চমৎকার।*
*🌷সবে জানে প্রভুর এ প্রকট বিহার।।*
*🌷প্রভুর এ লীলা ব্রহ্মাদির গম‍্য নয়।*
*🌷গণসহ মহাপ্রভু সঙ্কীর্তনে বিলসয়।।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🌷নাচে গৌরচন্দ্র--- কি অদ্ভুত গান সৃষ্টি।*
*🌷ভুবন মাতায় প্রেমে,করে প্রেম বৃষ্টি।।*
*🌷মন্দ মন্দ হাসি' চাহে নরো‍ত্তম পানে।*
*🌷প্রভু নিত‍্যানন্দ সে প্রভুর ভঙ্গি জানে।।*
*🌷নাচে নিত‍্যানন্দ পদ্মাবতীর কুমার।*
*🌷পদ ভরে ধরণী কম্পয়ে অনিবার।।*
*🌷অদ্বৈত আচার্য‍্য নাচে উল্লাস হিয়ায়।*
*🌷করয়ে গর্জন মহামত্ত সিংহ প্রায়।।*
*🌷নাচায়ে পন্ডিত গদাধর, ধৈর্য‍্যনাশে।*
*🌷গৌরচন্দ্র সমীপে লইয়া শ্রীনিবাসে।।*
*🌷শ্রীবাস পন্ডিত নাচে হইয়া বিহ্বল।*
*🌷মুরারি গুপ্তের নৃত্যে নাশে অমঙ্গল।।*
*🌷নাচে বক্রেশ্বর---সে উপমা নাই দিতে।*
*🌷হৈল অভিলাষ পূর্ণ এ গীত বাদ‍্যেতে।।*
*🌷হরিদাস ঠাকুরের নৃত্য কি মধুর।*
*🌷স্বরূপ গোসাঞির নৃত্যে তাপ যায় দূর।।*
*🌷দাস গদাধরের নর্তন মনোহর।*
*🌷নাচে রায় রামানন্দ রসের সাগর।।*
*🌷বাসুদেব সার্বভৌম, বিদ‍্যাবাচস্পতি।*
*🌷দেখি এ দোঁহার নৃত্য কেবা ধরে ধৃতি।।*
*🌷নাচয়ে অচ‍্যুতানন্দ অদ্বৈত তনয়।*
*🌷নিরন্তর নয়নে আনন্দধারা বয়।।*
*🌷মুকুন্দ,শ্রীনরহরি,শ্রীরঘুনন্দন।*
*🌷নাচে যে ভঙ্গিতে তাহা না হয় বর্ণন।।*
*🌷গৌরীদাস পন্ডিতের কিবা নৃত‍্যাবেশ।*
*🌷শ্রীপতি শ্রীনিধি নাচে আনন্দ অশেষ।।*
*🌷গোবিন্দ,মাধব,বাসু ঘোষের নর্তনে।*
*🌷কে আছে এমন ধৈর্য‍্য ধরিবেক মনে।।*
*🌷নাচয়ে মুকুন্দ,শ্রীআচার্য‍্য পুরন্দর।*
*🌷বাসুদেব দত্ত,ব্রহ্মচারী শুক্লাম্বর।।*
*🌷শ্রীমন্ পন্ডিত,যদু আচার্য‍্য নন্দন।*
*🌷শ্রীমুকুন্দ দত্ত নাচে,শ্রীমধুসূদন।।*
*🌷শ্রীনাথ মহেশ নাচে,শ্রীধর শঙ্কর।*
*🌷জগদীশ,শ্রীযদুনন্দন,কাশীশ্বর।।*
*🌷শ্রীরঘুনাথ ভট্ট নাচে,রূপ সনাতন।*
*🌷যে নৃত্য দর্শন মাত্রে জুড়ায় নয়ন।।*
*🌷নাচে শ্রীনকুল ব্রহ্মচারী, ধনঞ্জয়।*
*🌷বিপ্র বাণীনাথ,শিখি,কানাই, বিজয়।।*
*🌷নাচে সূর্য‍্যদাস,শ্রীনৃসিংহ নানা ছন্দে।*
*🌷হৃদয় চৈতন‍্য নাচে লৈয়া শ‍্যামানন্দে।।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🌷নৃত‍্য-গীত-বাদ‍্যে হয় যে কাল ব‍্যতীত।*
*🌷সে কাল অলক্ষ‍্য, সবে সামান্য প্রতীত।।*
*🌷আহা মরি!কিবা গীত-বাদ‍্য মনোহর।*
*🌷কিবা নৃত্য নূতন ব্রহ্মাদির অগোচর।।*
*🌷কিবানন্দে বিহ্বল অদ্বৈত নিত‍্যানন্দ।*
*🌷কিবা ভক্ত মন্ডলী মধ্যেতে গৌরচন্দ্র।।*
*🌷প্রকাশিলা প্রভু কি বা অদ্ভুত করুণা।*
*🌷কিবা এ বিলাস--ইহা বুঝে কোন জনা।।*
*🌷শ্রীনিবাস নরোত্তমে কিবা অনুগ্রহ।*
*🌷দুঁহু অভিলাষ পূর্ণ কৈলা গণসহ।।*
*🌷কিবা গণসহ নরোত্তম শ্রীনিবাসে।*
*🌷আলিঙ্গন করি, কহয়ে কি মৃদুভাষে।।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🌷প্রভু অন্তর্ধান মাত্রে প্রাপ্ত বাহ‍্যজ্ঞান।*
*🌷সে আবেশ সবার হইল অন্তর্ধান।।*
*🌷সবে মহা-ব‍্যাকুল,ভাসয়ে নেত্রজলে।*
*🌷উঠিল ক্রন্দন রোল সংকীর্তন স্থলে।।*
*🌷কেহ কহে,কোথা গেল প্রভু গৌরচন্দ্র।*
*🌷কেহ কহে,কোথা শ্রীঅদ্বৈত নিত‍্যানন্দ।।*
*🌷কেহ কহে,কোথা শ্রীপন্ডিত গদাধর।*
*🌷কেহ কহে,কোথা হরিদাস বক্রেশ্বর।।*
*🌷কেহ কহে,কোথা শ্রীমুকুন্দ নরহরি।*
*🌷কেহ কহে,কোথা শ্রীবাস মুরারি।।*
*🌷কেহ কহে,কোথা গৌরীদাস গদাধর।*
*🌷কেহ কহে,কোথা শ্রীস্বরূপ দামোদর।।*
*🌷কেহ কহে,গণসহ প্রভু দেখা দিয়া।*
*🌷কোথা গেলা--বলি কান্দে ভূমে লোটাইয়া।।*
*🌷চতুর্দিকে অসংখ্য লোকের আর্ত ধ্বনি।*
*🌷সে সবার নয়নজলে কর্দম ধরণী।।*
*👹হাস‍্য হেতু আইলা যত পাষন্ডীর গণ।*
*😭সে সবেও কান্দে ধৈর্য‍্য না যায় ধারণ।।*
*🌷করয়ে বিলাপ সবে উর্ধ্ব বাহু করি'।*
*🌷--মো সবারে রক্ষা কর প্রভু গৌরহরি।।*
*🌷পুনঃপুনঃ নিবেদয়ে মহাপ্রভুর চরণে।*
*🌷"অপরাধ" না হয় যেন বৈষ্ণবের স্থানে।।*
*🌷সংকীর্তন-সুধা পান করি নিরন্তর।*
*🌷ঐছে কত কহি হয় ধূলায় ধূসর।।*
*🌷কহিতে কি জানি?কারু ধৈর্য‍্যমাত্র নাই।*
*🌷ভক্ত চেষ্টা উপমা দিবার নাই ঠাঁই।।*
*🌷শ্রীপতি শ্রীনিধি আদি প্রিয় ভক্তগণ।*
*🌷পরস্পর কহে,এই কি দেখিলু স্বপন।।*
*🌷কেহ কহে,ভ্রম বা জন্মিল মো সবার।*
*🌷কেহ কহে,প্রভু ইচ্ছা নারি বুঝিবার।।*
*🌻অতি সংক্ষেপে লিখিলাম, আরো বহু আছে, এটিই খেতুরী মহোৎসবের সংক্ষিপ্ত কাহিনী। সুতরাং এই পদাবলীটি যে কত সত‍্য তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে এই খেতুরীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা উৎসব।যথা=*
*🌷অদ‍্যাপিও সেই লীলা করেন গোরারায়।*
*🌷কোন কোন ভাগ‍্যবানে দেখিবারে পায়।।*
*🌻এ প্রসঙ্গে জানা দরকার যে, ভক্তমন্ডীর মধ্যে যে হাজার হাজার লোক ছিলেন তাঁরা কিন্তু কেউই এই অপ্রকট দর্শনে সমর্থ হননি একমাত্র এই সিদ্ধ পরিকরগণ ছাড়া।উপমা হিসাবে বলা যায় যে শ্রীধাম পুরীতে মহাপ্রভু যখন সার্বভৌমকে আত্মসাৎ মানসে ষড়ভূজরূপে দেখা দিয়েছিলেন তখন তবুও একমাত্র সার্বভৌম ভট্টাচার্য্যই তা দেখেছিলেন।*
*🙏🙏জয় নরোত্তম ঠাকুরের জয়*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১২৯)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
           *শ্রীখন্ডের---------মহিমা*
          ^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🍀মহাপ্রভুর প্রকটকালে আমরা সকলে সাধারণতঃ নবদ্বীপ,পুরীধাম, শান্তিপুর,কালনা,কাটোয়া, বৃন্দাবন এই জায়গা ক'টির নামই সাধারণত জানি কিন্তু কাটোয়ার খুব কাছেই বর্দ্ধমান জেলায় শ্রীখন্ড নামে একটি গ্রাম আছে,সে স্থানের মহিমা হয়ত সকলের কাছে তত জানা নাই।আমরা সকলেই নরহরি ঠাকুরের নাম জানি বিশেষ করে "আরতি করে নরহরি" এই পদটি আমরা সকলেই জানি কিন্তু এই নরহরি সম্বন্ধে বিশদভাবে জানতে গেলে শ্রীখন্ডের মহিমা জানা অতি অবশ্যই কর্তব‍্য। উপরন্তু জানা দরকার যে নরহরি ঠাকুর মহাপ্রভুর আবির্ভাবের বহু পূর্বেই আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তাঁর পিতৃদেবের নাম "নরনারায়ণ দেব" মায়ের নাম "গৌরীদেবী"। এই নরনারায়ণ দেবের দুইটি পুত্র সন্তান ছিলেন যাঁদের নাম হচ্ছেন মুকুন্দ ও নরহরি, মুকুন্দ নরহরি অপেক্ষা ৮|১০ বৎসরের বড় ছিলেন। উপরন্তু মুকুন্দ ছিলেন চিকিৎসা শাস্ত্রে সুপন্ডিত এবং তাঁর গুণাবলীতে মুগ্ধ হয়ে তখনকার মুসলমান নবাব তাঁকে রাজবৈদ‍্য হিসাবে গৌড়ে নিয়ে যান।এর কিছুদিন পরে নরনারায়ণ দেবের মৃত‍্যু হলে মুকুন্দ ছোট ভাইকে উচ্চস্তরে শাস্ত্রজ্ঞান অর্জনের জন্য নবদ্বীপে পাঠিয়ে নিজে নবাবের ওখানে চলে যান।এর ফলে নরহরি ঠাকুর নবদ্বীপে আগমন করেন কিন্তু তখনও মহাপ্রভুর কোন পরিচয় তিনি জানতেন না।*
*🍀মুকুন্দ যখন নবাবের কাছে চলে যান তখন তিনি তাঁদের কুলদেবতা গোপীনাথের সেবার উপযুক্ত সুব‍্যবস্থাও করে যান।ভক্তি সংস্কার নিয়েই নরহরির জন্ম এবং সেজন্য অনতিকালের মধ্যেই তিনি বিভিন্ন ভক্তিশাস্ত্রে চরমভাবে জ্ঞান অর্জন করেন এবং কৃষ্ণপ্রেমের উন্মাদনায় রাধাগোবিন্দ বিষয়ক নানা পদাবলীও তিনি রচনা করেন।এই সময়ে তিনি কখনও অঝোর নয়নে কেঁদে কেঁদে উন্মাদ হতেন, কখনও বা প্রেমাবেশে মূর্ছিত হয়ে যেতেন এবং কোন এক অজানা মহাপুরুষের সঙ্গ মানসে প্রায়শই তাঁর চিত্তে প্রবল উৎকণ্ঠা জাগরিত হ'ত।এই সময়ে সাধন ভজন কালে তাঁর দেহে অষ্টসাত্ত্বিক ভাব বিকারও দেখা যেত।এই প্রসঙ্গে নরহরি ঠাকুর পরবর্তীকালে তাঁর রচিত "শ্রীচৈতন‍্য সহস্র নাম" গ্রন্থে নিজেই লিখেছেন যে =*
*🍀আমার মনের যখন এইরকম অবস্থা শ্রীগৌরসুন্দর কৃপা করে বৈশাখমাসের এক শুক্লা চতুর্দশীতে স্বপ্নে আমায় সন্ন‍্যাস মূর্তিতে দর্শন দিয়েছিলেন।স্বপ্নেদেখা সেই মহাপুরুষকে দেখার পর হতেই আমার বিষয়াসক্তি ধীরে ধীরে দূরীভূত হতে লাগল। আমার প্রেমময় ভাব গাঢ় হতে গাঢ়তর হতে লাগল।স্বপ্নেদেখা সেই মহাপুরুষকে সাক্ষাৎ দর্শনের জন্য আমার মন ব‍্যাকুল হয়ে উঠিল।তারপর কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর কৃপায় আমি মহাপ্রভুর দেখা পেয়েছিলাম এবং সেই সাক্ষাৎ দর্শনকারে হৃদয়ে যে অনাবিল আনন্দ ও অত‍্যাশ্চর্য‍্য সুখ অনুভব হয়েছিল, সেই হতে তাঁর সম্মোহনী শক্তি প্রভাবে শয়নে স্বপনে জাগরণে দিনরাত্রি নিজের হৃদয় মন্দিরে শ্রীগৌর ভগবানকে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, সেজন‍্য শ্রীনরহরির পদাবলীতে দেখা যায়*
*জাগিতে গৌর, ঘুমাতে গৌর*
         *স্বপ্নে গৌর দেখি।*
*🍀মহাপ্রভুর অবতার তত্ত্বের এমনই মহিমা যে তিনি তাঁর ভুবন ভোলানো রূপ-লাবণ‍্যের দ্বারা,কৃপাদৃষ্টি দ্বারা, কল‍্যাণহস্ত স্পর্শ দ্বারা, শ্রীচরণরজ দ্বারা তাঁর প্রিয়জন গুলিকে যথাস্থানে যথাভাবেই আত্মসাৎ করেছিলেন, যদিও এটি কৃপারই নামান্তর মাত্র। সেই হিসাবে বোধহয় নরহরি ঠাকুর ছিলেন তাঁর সর্বপ্রথম কৃপাপাত্র যিনি পার্ষদ হিসাবে ছিলেন ব্রজের "মধুমতীর" স্বরূপ।যাইহোক, এই শুভ দৃষ্টি প্রভাবে তিনি ক্রমশই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর প্রতি নিবিড় হতে নিবিড়তর ভাবে আকৃষ্ট হয়ে কখনও বা গৌরাঙ্গ ভবনে,কখনও তাঁর চতুষ্পাঠীতে, কখনও শ্রীবাস অঙ্গনে, আবার কখনও বা জাহ্নবী তীরে তাঁর সঙ্গে মিলিত হতেন এবং ক্রমশঃ সেই প্রেম আকর্ষণ ঘনীভূত দুগ্ধের মতো গাঢ় হতে গাঢ়তর হতে লাগিল।মহাপ্রভুও তাঁর প্রিয় পার্ষদের নিষ্ঠায় প্রীত হয়ে তাঁর হৃদয়ে পূর্ণ প্রেমের সঞ্চার করলেন যার ফলে নরহরির গৌরাঙ্গ প্রেম ভালোবাসা চরম হল।এই প্রেম সঞ্চারের ফলে সেই ঘনীভূত দুগ্ধে যেন শর্করার সংযোজন হল।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
*শুভকার্য‍্য আমা হ'তে,নাহি হবে ধরণীতে,*
   *ঈশ্বর বিধান ইহা জানিবে নিশ্চয়।*
*ভূ-ভার হরণকারী, ভগবান চক্রধারী,*
   *লঙ্খন তাহার কার্য‍্য সম্ভব না হয়।।*
*এই জগত সংসার,তিন গুণের আধার,*
   *শান্ত,ঘোর মূঢ় এই তিন রূপ তাঁর।*
*শ্রীকৃষ্ণের লীলা যত,কেহ না বুদ্ধিতে জ্ঞাত,*
     *অবোধ মানব মুগ্ধ মায়ার মাঝার।।*
*ধৃতরাষ্ট্র অভিপ্রায়,অত্রুূর জানিয়া তায়,*
    *ত্বরা সে বিদুর সহ কলিল গমন*।
*কুন্তীর যতেক কথা,শ্রীকৃষ্ণে জানায় সেথা,*
    *হস্তিনা সংবাদ যত করিল জ্ঞাপন।।*
*🙏🙏ভক্ত সুদামার কাহিনী🙏🙏*
*কৃষ্ণসখা একজন,দেব ভক্ত দ্বিজ রন,*
    *সুদামা তাঁহার নাম ধর্মে সদা মতি।*
*বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ হন,সদাই প্রশান্ত মন,*
    *জ্ঞানবান,জিতেন্দ্রিয় দরিদ্র সে অতি।।*
*গৃহস্থ আশ্রমে রন,তবু সদা তুষ্ট মন,*
   *যাহা পান ঈশ্বরের দান মানি লন।*
*পতিব্রতা পত্নী তাঁর,দুঃখ সহে অনিবার,*
   *অন্নাভাবে শীর্ণ দেহ মলিন বদন।।*
*বিষয় আসক্তি শূন‍্য,নাহি জানে হরি ভিন্ন,*
    *ভিক্ষা দ্বারা করে তাঁরা উদর পূরণ।*
*প্রয়োজন মত কভু,নাহি পান অন্ন তবু,*
   *প্রাপ্তি আসে উৎকণ্ঠিত না হন কখন।।*
*একদিন পত্নী হন,অতিশয় ক্ষুণ্ণমন,*
   *এক মুষ্টি অন্ন গৃহে না রহে যখন*।
*ক্ষুধার্ত যে পতি তবে,কেমনে এ কথা কবে,*
    *কি উপায়ে হবে তার ক্ষুধা নিবারণ।।*
😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১৩০)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
            *শ্রীখন্ডের--------মহিমা*
           °°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🍀শ্রীগৌরাঙ্গের অবতারে যেমন শ্রীনরহরির পদাবলী তেমনই বাসু ঘোষের পদাবলী,আর ততোধিক মাধুর্য‍্যের প্রকাশ হচ্ছে নরোত্তমের গানে। অর্থ‍্যাৎ মহাপ্রভু কৌশলী শিল্পীর মত তাঁর অবতার তত্ত্বকে জীব জগতে প্রকাশ করবার জন্য তাঁর চিহ্নিত পার্ষদগণ দ্বারা তাঁর নিজ মহিমা ব‍্যক্ত করে গিয়েছেন।কারণ মহাপ্রভু হচ্ছেন কলির প্রচ্ছন্ন (আবৃত) অবতার।অবতার তো কখনও নিজে বলবেন না যে আমি স্বয়ং ভগবান তোমরা আমার পূজো করো সুতরাং তাঁর সেই মহিমাকে প্রকাশ করেন তাঁর ভক্ত বা পার্ষদগণ।*
*🌷ভক্তিতত্ত্ব প্রেম কহে,রায়ে করি বক্তা।*
*🌷আপনি,প্রদ‍্যুম্ন মিশ্র সহ,হয় শ্রোতা।।*
*🌷হরিদাস দ্বারা নাম মহাত্মা প্রকাশ।*
*🌷সনাতন দ্বারা ভক্তি সিদ্ধান্ত বিলাস।।*
*🌷শ্রীরূপ দ্বারা ব্রজরস প্রেমলীলা।*
*🌷কে বুঝিতে পারে গম্ভীর চৈতন‍্যের খেলা।।*
*🌷শ্রীচৈতন‍্য লীলা এই অমৃতের সিন্ধু।*
*🌷জগৎ ভাসাতে পারে যার এক বিন্দু।।*
*🍀বাস্তব জীবনেও যে দীক্ষামন্ত্র আমরা গ্রহণ করি সাধুগুরু বৈষ্ণবের মাধ‍্যমে, তাহাও অনেকটা অনুরূপ। কারণ সাধু বৈষ্ণবগণ হচ্ছেন ভগবানের নিজজন তাঁদের হৃদয় হচ্ছেন গোবিন্দের বাসস্থান, সুতরাং শ্রীগোবিন্দ সান্নিধ্যে প‍ৌঁছাতে গেলে তাঁর ভক্ত মাধ‍্যমে অগ্রসর হতে হবে।শ্রীনরহরি ঠাকুর তাঁরই রচিত "চৈতন‍্য সহস্র নাম গ্রন্থে" মহাপ্রভুর সঙ্গে প্রথম দর্শন অভিজ্ঞতা কি সুন্দর ভাবে সংস্কৃতে ব‍্যক্ত করেছেন, আস্বাদন করুন।*
*বৈশাখ শুক্লা চতুর্দশ‍্যাং, ন‍্যাসীনামহং নিশিদৃষ্টবান্,*
     *স্বপ্নদর্শনাদেব তস্মিন্ জাতা রতি মম।*
*প্রাদুর্ভাব নিশম‍্যাথ, তস‍্য দৃষ্টি পথং গতঃ,*
    *কিমাশ্চর্য‍্যম্ যদিষ‍্যামি দর্শনাদ যদভূত সুখং।।*
*🍀এইভাবে মহাপ্রভুর সঙ্গে নরহরির মিলন এবং পরিচয় হবার ফলে গৌরাঙ্গের কৃপায় নরহরির প্রেমভক্তি ধীরে ধীরে বাড়তে লাগিল।এদিকে বড় ভাই মুকুন্দও রাজবৈদ‍্য হিসাবে গৌড়ে চলে গেলেও তিনি সদাসর্বদা ব্রজলীলা চিন্তা করতেন এবং তিনি রাধা গোবিন্দের উপাসক ছিলেন।মাধবেন্দ্রপুরীর জীবনে যেরকম নীল নভোমন্ডল,ময়ূর-ময়ূরী দেখে কৃষ্ণস্ফূর্তি হত, সেইরকম ঘটনা মুকুন্দের জীবনেও দেখা যায়।অর্থ‍্যাৎ বৈষয়িক কাজে ব‍্যাপ্ত থাকলেও তাঁর কৃষ্ণ ভাবনা ও গোবিন্দ গোপীনাথ কৃপা তাঁর জীবনকে মহামহিমাময় করে তুলেছিলেন।একসময় এক ময়ূরপুচ্ছ দেখে মুকুন্দের কিরকম অবস্থা হয়েছিল তা আপনারা কবিরাজ গোস্বামীর ভাষায় শুনুন।*
*🌷ভক্তের মহিমা কহিতে প্রভু পান সুখ।*
*🌷ভক্তের মহিমা কহিতে প্রভু পঞ্চ মুখ।।*
*🌷ভক্তজনে কহে শুন মুকুন্দের প্রেম।*
*🌷নির্মল নিগূঢ় প্রেম যেন শুদ্ধ হেম।।*
*🌷বাহ‍্যে রাজবৈদ‍্য হয় করে রাজ সেবা।*
*🌷অন্তরে নিগূঢ় প্রেম জানিবেক কেবা।।*
*🌷একদিন ম্লেচ্ছ রাজা উচ্চ টুঙ্গিতে।*
*🌷চিকিৎসার বার্তা কহে তাঁহার অগ্রেতে।।*
*🌷হেনকালে এক ময়ূর পুচ্ছের আড়ানি।*
*🌷রাজ শিরোপরে ধরে এক সেবক আনি।।*
*🌷শিখিপুচ্ছ দেখি মুকুন্দ প্রেমাবিষ্ট হইল।*
*🌷অতি উচ্চ টুঙ্গে হইতে ভূতলে পড়িল।।*
*🌷রাজার জ্ঞান রাজবৈদ‍্যের হইল মরণ।*
*🌷আপনি নামাইয়া তবে করাইল চেতন।।*
*🌷রাজা বলে ব‍্যথা তুমি পাইলে কোন ঠাঁই।*
*🌷মুকুন্দ বলে অতি বড় ব‍্যথা নাহি পাই।।*
*🌷রাজা বলে মুকুন্দ তুমি পড়িলা কি লাগি।*
*🌷মুকুন্দ কহে রাজা মোর আছে ব‍্যাধি মৃগী।।*
*🌷মহা বিদগ্ধ রাজা সেই সব বাত জানে।*
*🌷মুকুন্দেরে হইল তার মহাসিদ্ধ জ্ঞানে।।*
*🌹এই ঘটনার পর হতে মুকুন্দের ব‍্যাপারে নবাবের মনোভাব বিশেষভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তিনি ক্রমে এই রাজবৈদ‍্যের দায়িত্ব হতে মুক্তি পান।মহাপ্রভুর আবির্ভাব কালে ভারতে তথা বাংলায় মুসলমান নবাবেরা রাজত্ব করতেন এবং তারা সম্পূর্ণ হিন্দু বিদ্বেষী হলেও কয়েক ক্ষেত্রে মহাপ্রভুর অহৈতুকী কৃপার প্রভাবে তাদের মনোভাব বিশেষভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল।*
🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🔜 ক্রমাগত 👉 ১৩১ হইতে ১৪০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori131to140.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
  ꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖 👇꧂


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️ 
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
  *••••┉❀꧁👇🏠Home Page🏠👇꧂❀┅••••* 
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
    *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
     *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
   🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧


শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html