🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩
শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ 🌻 ভক্তপ্রবর শ্রীরসিকমোহন চক্রবর্তী ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০১)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*👣শ্রীচরণান্তিকে👣*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*লেখক=ভক্তপ্রবর শ্রীরসিকমোহন চক্রবর্তী,গ্রন্থ মূল্য ১ টাকা,৪১৯ গৌরাব্দ।*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*🙏শ্রীশ্রীমহাপ্রভু দক্ষিণদেশ ভ্রমণ করে নীলাচলে ফিরে এসেছেন। ভক্তগণের চকোরচিত্ত আবার বহুদিন পরে তাঁর শ্রীমুখচন্দ্র দেখে আনন্দে বিভোর হ'ল।তিনি দক্ষিণ হতে এসেছেন,চতুর্দিকে এ সংবাদ প্রচারিত হওয়ামাত্রই দূরদেশান্তর হতে ভক্তগণ নীলাচলভিমুখে যাত্রা করলেন।*
*এই সময়ে শ্রীকাশীধাম হতে এক তরুণ সন্ন্যাসী ব্যাকুলভাবে নীলাচলের অভিমুখে ধাবিত হলেন।তাঁর মুখটি কৃষ্ণপ্রেমে ঢল ঢল,নয়নযুগল সজল, স্নিগ্ধ অথচ অলোকসামান্যপ্রতিভাব্যঞ্জক। মুন্ডিত মস্তক,পরিধানে গৈরিকবসন,মুখে সতত সুমধুর কৃষ্ণনাম,আর নয়নে প্রেমধারা।সন্ন্যাসীর দিগ্বিদিক্ জ্ঞান নাই,দিনরাত্রি বোধ নাই।ইনি সহসা নীলাচলে এসে শ্রীগৌরাঙ্গচরণ সামনে অপরাধীর মত কৃতাঞ্জলীপুটে দাঁড়িয়ে প্রেম গদগদস্বরে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠে একটি স্তুতি শ্লোক পাঠ করতে লাগলেন।তখন তাঁর শরীর রোমাঞ্চিত হচ্ছিল,আর বায়ু-তাড়নে কদলীকান্ডের মত কাঁপছিল।নয়নাশ্রু মুক্তামালার মত গাল বেয়ে সন্ন্যাসীর উজ্জ্বল বক্ষ ভিজে যাচ্ছিল।শ্লোকটি পঅতে পড়তে এই সুঠাম দেহ তরুণ সন্ন্যাসী শ্রীগৌরাঙ্গচরণে সাষ্টাঙ্গে প্রণত হয়ে পড়লেন।মহাপ্রভু তাঁকে ধরে নিজের বুকে নিয়ে গাঢ় আলিঙ্গন করলেন।প্রেমাশ্রুতে উভয়ই শ্রীমূর্তি তখন ভিজে পরিপূর্ণ।আর উভয়ের অরুণ ওষ্ঠ কম্পিত হতে লাগল।উভয়ে উচ্ছলিত প্রেমে ডুবে পড়লেন, অচেতন হলেন।যেন হঠাৎ গঙ্গা যমুনার মিলন হ'ল।ভক্তগণ এই ভাব দেখে বিহ্বল হলেন।ইনি যে দয়া-প্রার্থনাসূচক স্তুতি-শ্লোকটি পাঠ করে শ্রীমহাপ্রভুর বন্দনা করছিলেন,তা ইঁনার স্বরচিত।শ্লোকটি অতি মধুর ও উচ্ছসময়,যেন "দয়া" শব্দের মন্দাকিনীতরঙ্গে উচ্ছলিত। সে শ্লোকটি এই=*
*হেলোদ্ধূলিতখেদয়া বিশদয়া প্রোন্মীলদামোদয়া,*
*শাম্যচ্ছাস্ত্রবিবাদয়া রসদয়া চিত্তার্পিতোন্মদয়া।*
*শশ্বদ্ভক্তি বিনোদয়া সমদয়া মাধুর্য্যমর্য্যাদয়া,*
*শ্রীচৈতন্য দয়ানিধে!তব দয়া ভুয়াদমন্দোদয়া।।*
*🌻এই শ্লোকের টীকাকার এর ভাব-পুষ্টির জন্য শ্রীচৈতন্যচন্দ্রামৃত হতে কয়েকটি শ্লোক উদ্ধৃত করেছেন।আমরাও সেই লোভে আকৃষ্ট হয়ে তাঁর পথের কিঞ্চিৎ বেশী দূর অনুসরণ করছি।অমঙ্গল নাশ সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচন্দ্রামৃতের একটি শ্লোক এই যে =*
*উচ্চৈর স্ফালয়ন্তং করচরণমহো হেমদন্ড প্রকান্ডো,*
*বাহু প্রোদ্ধৃত্য সত্তান্ডব তরল তনুং পুন্ডরীকায়তাক্ষম্।*
*বিশ্বস্যামঙ্গলঘ্নং কিমপি হরি হরীত্যুন্মদানন্দনাদৈ,*
*র্বন্দে তং দেবচূড়ামণিমতলরসাবিষ্ট চৈতন্যচন্দ্রম্।।*
*🌹এর সংক্ষিপ্ত মর্ম শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত হতে উদ্ধৃত করা যাচ্ছে যথা=*
*🌷বাহু তুলি হরি বলি প্রেমদৃষ্টে চায়।*
*🌷করিয়া কলুষ নাশ প্রেমেতে ভাসায়।।*
*🌻প্রেমদান সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচন্দ্রামৃত বলেন=*
*🌷দৃষ্টঃ স্পৃষ্টঃ কীর্তিতঃ সংস্মৃতো বা,*
*🌷দূরস্থৈরপ্যানতো বাদৃতো বা।*
*🌷প্রেম্নঃ সারং দাতুমীশো যএকঃ,*
*🌷শ্রীচৈতন্যং নৌমি দেবং দয়ালূম্।।*
*🙏যাঁর শ্রীমূর্তি দর্শন ও স্পর্শ করলে,যাঁর গুণানুবাদ কীর্তন করলে, যাঁর উদ্দেশ্য করে দূর হতে নমস্কার করলে,যিনি প্রেমসার প্রদান করে থাকেন,সেই দয়াময় মহাপ্রভুকে নমস্কার।*
*🌹তাঁর "দয়া" সম্বন্ধে শ্রীচন্দ্রামৃত আরও বলেন=*
*পাত্রাপাত্রবিচারণাং ন কুরুতে ন স্বস্পরং বীক্ষ্যতে,*
*দেয়াদেয়বিমর্শকো নহি নবা কাল প্রতীক্ষঃ প্রভুঃ।*
*সদ্যো যৎ শ্রবণেক্ষণ প্রণমনধ্যানদিনা দুর্লভং,*
*দত্তে ভক্তিরসং সএব ভগবান্ গৌরং পরং মে গতিঃ।*
*পাপীয়ানপি হীনজাতি রপি দুঃশীলোহপি দুষ্কর্ম্মণাং,*
*সীমাপি শ্বপচধমোহপি সততং দুর্ব্বাসনাঢ্যোপি যঃ।*
*দুর্দ্দেশপ্রভবোহপি তত্র বিহিতা বাসোহপিদুঃসঙ্গতো,*
*নষ্টোহপ্যুদ্ধৃত এব যেন কৃপয়া তং গৌরমেবাশ্রয়ে।।*
*🌻অর্থ্যাৎ যিনি পাত্রাপাত্রের বিচার করেন না,আপন-পর দেখেন না,দেয় অদেয়ের বিচার করেন না,কালাদি প্রতীক্ষা না করে শ্রবণ দর্শন প্রণাম ও ধ্যানাদি দ্বারা দুর্লভ ভক্তিরস ক্ষণমাত্রেই যিনি প্রদান করেন,কেবল সেই গৌরহরিই আমাদের গতি।অতি পাপী,হীনজাতি,দুষ্টস্বভাব,অসীম দুষ্কর্মী চন্ডাল হতে অধম।সতত দুর্বাসনাযুক্ত,কুদেশবাসী এবং অসৎ সংসর্গী ইত্যাদি সমস্ত নষ্ট ব্যক্তিদেরকে যিনি কৃপা করে উদ্ধার করেছেন,সেই গৌরহরিই আমার আশ্রয়।*
*🌺মহাপ্রভুর দয়ায় শাস্ত্রবিবাদ প্রশমন সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচন্দ্রামৃত বলেন=*
*স্ত্রী পুত্রাদি কথাং জহুর্ব্বিবয়িণঃ শাস্ত্র প্রবাদং বুধা,*
*যোগীন্দ্রা বিজহুর্মরুন্নিয়মজক্লেশং তপস্তাপসাঃ।*
*জ্ঞানাভ্যাসবিধিং জহুশ্চ যতয়শ্চৈতন্য চন্দ্রে পরা,*
*মাবিম্বুর্ব্বতি ভক্তিযোগ পদবীং নৈবন্যে আসীদ্রনঃ।।*
*🔷অর্থ্যাৎ শ্রীচৈতন্য পরম ভক্তিযোগ পদবী প্রকাশ করলে পর অন্যান্য রস তিরোহিত হল।বিষয়ে হাবুডুবু ব্যক্তিরা স্ত্রী পুত্রাদির কথা বিস্মৃত হল,পন্ডিতেরা শাস্ত্র বিচার ত্যাগ করে তাঁর শ্রীচরণে এসে শরণ নিলেন,যোগীরা যোগ,তপস্বীরা তপশ্চর্য্যা,যতিগণ নির্ভেদব্রহ্মানুসন্ধান প্রভৃতি ত্যাগ করে শ্রীভগবানে মধুর প্রেমানন্দে বিভোর হলেন। আর তখন=*
*অভূদ্গেহে গেহে তুমুলহরি-সঙ্কীর্ত্তনো রবো,*
*বভৌ দেহে দেহে বিপুল পুলকাশ্রু ব্যতিকরঃ।*
*অপি স্নেহে স্নেহে পরম মধুরোৎকর্ষ পদবী,*
*দবীয়াস্যাস্নায়াদপি জগতি গৌরোহবতরতি।।*
*🌹অর্থ্যাৎ শ্রীগৌরহরি অবতীর্ণ হলে ঘরে ঘরে সঙ্কীর্তনের তুমুল রব উত্থিত হল,প্রতি দেহই বিপুল রোমাঞ্চ ও প্রেমাশ্রু ধারায় শোভিত হল, এবং বেদের অগোচর মধুর হতেও সুমধুর প্রেম পথ প্রকাশিত হল।*
*ভক্তগণ এই প্রেমমাধুর্য্য লাভ করে ব্রহ্মানন্দ পর্যন্ত তুচ্ছ করলেন। শ্রীপ্রবোধানন্দ শ্রীপাদের বচন উদ্ধৃত করেই এই কথা সপ্রমাণ করেছি। যথা=*
*কৈবল্যং নরকায়তে ত্রিদশপূরাকাশপুষ্পয়াতে,*
*দুর্দ্দান্তেন্দ্রিয় কালসর্পপটলী প্রোৎখাতদংষ্ট্রায়তে।*
*বিশ্বং পূর্ণ সুখায়তে বিধিমহেন্দ্রাদিশ্চ কীটারতে,*
*যৎকারুণ্য-কটাক্ষ-বৈভববতাং তংগৌরমেবস্তুমঃ।।*
*🔶অর্থ্যাৎ যাঁর করুণা-দৃষ্টিরূপ বৈভববিশিষ্ট ব্যক্তিগণের সম্বন্ধে নির্বাণ মুক্তি নরকের মত,স্বর্গ আকাশ কুসুমের মত,ইন্দ্রিয়গণ উৎখাতদন্ত কালসাপের মত,জগৎ পূর্ণ সুখের ন্যায় এবং ব্রহ্মাদির বৈভব তুচ্ছ পদার্থের মত প্রতিভাত হয়, আমরা সেই শ্রীগৌরহরির স্তব করি।"হেলদ্ধূলিত খেদয়া" শ্লোকে এইসব ভাবের বীজ নিহিত আছে।*
*🌻তরুণ সন্ন্যাসীর এই সারগর্ভ মহাভক্তিপূর্ণ স্তুতিটি গৌরভক্ত মাত্রেরই অমূল্য কন্ঠহার।তাই এ জায়গায় সেইসময়ের সন্ন্যাসীকুলের মুকুটমণি শ্রীপ্রবোধানন্দ সরস্বতীপাদের কিছু শ্লোক উদ্ধৃত করে আত্মশোধন করিলাম মাত্র।ফলে "হেলদ্ধূলিত খেদয়া" স্তুতি শ্লোক পাঠ করলে সমগ্র শ্রীচন্দ্রামৃত উদ্ধৃত করে এর রস-পুষ্টি করতে ইচ্ছা হয়।এই শ্লোকটিতে যে মহাশক্তি নিহিত আছে,ভক্তগণের তা অজানা নাই।এর প্রতিপদই ভক্তি-রসের উদ্দীপক,দয়া প্রার্থনার ব্যাকুর উচ্ছাস।ভক্তগণের কাছে তরুণ সন্ন্যাসীর এই শ্লোকটি ভক্তিসাধনের মহামন্ত্র বলেই উপলব্ধ হয়।*
*🌺প্রথম শ্লোকটির অর্থ= অর্থ্যাৎ হে শ্রীচৈতন্য দয়ানিধি!তোমার দয়ায় অতি সহজেই লোকের সর্বসন্তাপ দূরে যায়, চিত্ত নির্মল হয়, এবং হৃদয়ে প্রেমানন্দের প্রকাশ হয়।তোমার দয়ায় শাস্ত্রাদির বিবাদ শান্ত হয় এবং সেটি চিত্তে গাঢ় রস সঞ্চার করে প্রগাঢ় মত্ততার সৃষ্টি করে।এটি হতেই সবসময় ভক্তি সুখলাভ ও সর্বত্র সমদর্শন লাভ হয়,এটি সকল মাধুর্য্যের সার।তুমি কৃপা করে এ অধমে দয়া প্রকাশ কর।*
*🌳নবীন সন্ন্যাসী এই স্তুতি পাঠ করে কাঁপতে কাঁপতে মহাপ্রভুর শ্রীচরণকমলকর্ণিকাপ্রান্তে সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করে প্রেমাশ্রু ধারায় মৃত্তিকা ভিজিয়ে দিলেন।মহাপ্রভু তখন তাঁকে উঠিয়ে আলিঙ্গন করলেন।উভয়ের স্পর্শে উভয়ে প্রেমাবেশে অবশ ও অচেতন হলেন, কিছুক্ষণ পরে একটু স্থির হয়ে মহাপ্রভু বললেন---*
*🌷তুমি যে আসিবা আমি স্থপ্নেহ দেখিল।*
*🌷ভাল হৈল অন্ধ যেন দুই নেত্র পাইল।।*
*(চৈঃচঃ)*
*মহাপ্রভুর কৃপামধুর-বচনামৃত শুনে সজলনয়ন সন্ন্যাসী বললেন----*
*•••••••••• "প্রভু মোর ক্ষম অপরাপ।*
*তোমা ছাড়ি অন্যত্র গেনু করিনু প্রমাদ।।*
*তোমার চরণে মোর নাহি প্রেমলেশ।*
*তোমা ছাড়ি পাপী মুঞি গেনু অন্য দেশ।।*
*মুঞি তোমা ছাড়িনু,তুমি মোরে না ছাড়িলা*
*কৃপিরজ্জু গলে বান্ধি চরণে আনিলা।।*
*ফলতঃ শ্রীগৌরাঙ্গ-বিরহে এই যুবক পাগলের মত হয়েছিলেন,সমগ্র সংসার তাঁর কাছে অসার বলে বোধ হয়েছিল,তখন তাঁর স্বকীয় জ্ঞান থাকলে তিনি সন্ন্যাসের জন্য ব্যাকুল না হয়ে সোজাসুজি শ্রীশ্রীমহাপ্রভুর চরণের অভিমুখেই ধাবিত হতেন। কিন্তু তখন সে জ্ঞান আর তাঁর ছিল না।তাই তিনি নিজকে মহাপরাধী মনে করে উক্ত শ্লোকে প্রার্থনা করলেন।মহাপ্রভু বললেন,"তুমি এসেছ,বড় ভাল হ'ল,অন্ধব্যক্তি যুগপৎ দুইটি নয়ন পেলে তার যেমন আনন্দ হয়,তোমাকে পেয়ে আমার সেরকম আনন্দ অনুভব হচ্ছে।*
*একান্ত ভক্ত সন্ন্যাসীটি এতে বুঝলেন মহাপ্রভু অনেক আগে থেকেই তাঁর শ্রীচরণান্তিকে তাঁকে দেখতে বাসনা করেছিলেন। তিনি যে এর আগে তাঁর শ্রীচরণ সমীপে কেন উপনীত হননি,এইজন্য তিনি নিজকে অপরাধী বলে মনে করতে লাগলেন। কিন্তু ভক্তবৎসল গৌরসুন্দরের স্নেহমধুর কথায় অচিরেই তাঁর চিত্ত প্রসন্ন হল। অতঃপর তিনি শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর বন্দনা করায় প্রেমময় নিতাই তাঁকে আলিঙ্গন করলেন। সার্বভৌম ভট্টাচার্য্য প্রভৃতি প্রধানতম গৌরভক্তগণের সঙ্গে মিলন হল।ইনি এই সময় হতে প্রভুর নিত্যসহচররূপে তাঁর শ্রীচরণাবিন্দের মকরন্দ আস্বাদ ভোগের অধিকারী হলেন।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙌🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০২)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*এই প্রেমমূর্তি সন্ন্যাসীটী কে?*
••••••••••••••••••••••••••••••••••
*🍀এই প্রেমমূর্তি সন্ন্যাসীটি কে? আমরা তাঁর সবিশেষ পরিচয় জানি না,তবে তাঁর বিষয়ে দুই-একটি কথা বলব।শ্রীপুরুষোত্তম আচার্য্য নামক একটি বালক শ্রীধাম নবদ্বীপে বাস করে বিদ্যা-অধ্যয়ন করতেন।শ্রীধাম তখন শ্রীমহাপ্রভুর ভক্তিরসে টলমল হয়ে উঠেছেন।পুরুষোত্তম প্রথমতঃ শ্রীনিমাই পন্ডিতের সৌন্দর্য্যে ও অসাধারণ পান্ডিত্যে, এবং কি-জানি-কেমন এক আকর্ষণে,তাঁর চরণে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। পুরুষোত্তমের রূপলাবণ্যে সকলের চিত্ত তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল।বালক অতি অল্পকালের মধ্যেই সর্ববিদ্যাপারদর্শী হয়ে উঠলেন। ইঁনার কোমল হৃদয়ে শ্রীগৌরাঙ্গ-ভক্তি-মন্দাকিনীর পূর্ণধারা অলোকসাধারণ পান্ডিত্যের সংমিশ্রণে এক অপূর্ব প্রবাহের সৃষ্টি করে তুলল।নম্রতা ও দীনতা ভক্তির চিরসহচরী।বিনয়াচ্ছাদিত পান্ডিত্যে ও অতুলনীয় সৌন্দর্য্যে পুরুষোত্তম নবদ্বীপবাসীর গাঢ় প্রীতি আকর্ষণ করলেন।এছাড়াও তাঁর কোকিলকন্ঠবিনিন্দিত কন্ঠরব শুনে সকলেই তাঁকে ভাল বাসতেন।তিনি যখন এই সুধামাখা কন্ঠে গান করতেন,সে গান শুনে সকলের মন বিমোহিত হত।শ্রীমান্ পুরুষোত্তম নবদ্বীপে শ্রীগৌরাঙ্গের কাছে সবাদা সলজ্জভাবে বিচরণ করতেন। কিন্তু এক মুহূর্ত তাঁকে না দেখলেই তাঁর হৃদয় অধীর হত,অথচ লোকে তা জানতে পারত না।*
*যেদিন মহাপ্রভু সন্ন্যাস গ্রহণ করশেন,সেইদিন হতেই পুরুষোত্তমের হৃদয় বিষণ্ণ হয়ে পড়ল,তাঁর আহার নিদ্রা দূর হল, তিনি যে শাস্ত্রপাঠ এত ভালবাসতেন,আর সে গ্রন্থগুলিও স্পর্শ করলেন না,অনবরত তাঁর দুইনয়ন দিয়ে অশ্রুধারা পড়তে পড়তে বক্ষ ভিজে যেতে লাগল,তথাপি তাঁর হৃদয়ের আগুন নিভিল না।গৌরশূন্য নদীয়া পুরুষোত্তমের কাছে বিষেরমত বলে বোধ হল।নবদ্বীপ নিরানন্দ,সে কীর্তন নেই,সে হরিধ্বনি নেই,সে প্রেমপ্রবাহ নাই।ভক্তগণ মৃত ব্যক্তির মত ঘরে ঘরে পড়ে রইলেন।গৌরবিরহে সমগ্র নদীয়া শোকের অশ্রুতে ডুবে গেল।পুরুষোত্তম কিছুতেই গৌরশূন্য নদীয়ায় তিষ্ঠিতে না পেরে শ্রীমহাপ্রভুর পথেরই অনুসরণ করবেন বলিয়া স্থির করলেন।একদিন কাউকে কিছু না বোলে হৃদয়ের পূর্ণ আবেশে পাগলের মত শ্রীপুরুষোত্তম আচার্য্য কাশী অভিমুখে যাত্রা করলেন।পুরুষোত্তের সংসার বাসনা একেবারেই তিরোহিত হয়েছিল।সন্ন্যাসীক্ষেত্র বারাণসীর পবিত্র-সলিলা জাহ্নবী-তীরের স্নান করতে আসা লোকজন হঠাৎ একদিন দেখতে পেলেন,একটি উজ্জ্বলকান্তি তরুণ বয়স্ক বাঙ্গালী যুবক সংসার-বাসনা বিসর্জন করে সন্ন্যাস গ্রহণ করতে তৈরী হচ্ছেন,নাপিত তাঁর চাঁচর কেশ মন্ডন করছে।সন্ন্যাসার্থিগণের পুণ্যতীর্থ বারাণসকতে এ দৃশ্য নতুন বা বিস্ময়জনক নয়,তথাপি দর্শকমাত্রেরই হৃদয় এতে বিগলিত হয়ে গেল।পুরুষোত্তমের মস্তক মুন্ডিত হল।গঙ্গাজলে স্নান করে তিনি সন্ন্যাসবেশচিত একটি গৈরিক বসন পরিধান করলেন।তাঁর মুখকান্তি দেখে কাশীবাসীর বোধ হল যেন দ্বিতীয় শঙ্করাচার্য্য ভক্তিপ্রবাহ নিয়ে কাশীনগরীতে এসে উপনীত হলেন। সন্ন্যাসী চৈতন্যানন্দের কাছে ইনি সন্ন্যাস গ্রহণ করলেন=*
*🌷প্রভুর সন্ন্যাস দৈখি উন্মত্ত হইয়া।*
*🌷সন্ন্যাস গ্রহণ কৈল বারাণসী গিয়া।।*
*(শ্রীচৈঃচঃ)*
*🌻নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে শ্রীকৃষ্ণ-ভজনই ইঁনার সন্ন্যাস গ্রহণের উদ্দেশ্য, সুতরাং ইনি যোগপাট্টাদি গ্রহণ করলেন না।ইঁনার সন্ন্যাসাশ্রমের নাম হল "স্বরূপ"।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৩)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*নামকরণ ও গুণাবত্তার পরিচয়*
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*পুরুষোত্তমে নীলাচলে এসে সাধারণত "স্বরূপ" নামেই অভিহিত হতেন।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে প্রভৃতি গ্রন্থে কোথাও "স্বরূপ" কোথাও "দামোদর" কোথাও বা স্বরূপদামোদর" আবার কোথাও "দামোদর স্বরূপ"নামে ইঁনার পরিচয় পাওয়া যায়।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের স্থলে স্থলে নামের নিরুক্তি ও পান্ডিত্যের পরিচয় সূত্রবৎ ভাষায় বর্ণিত হয়েছে যথা----*
*🌷গুরু ঠাঁই আজ্ঞা মাগি আইলা নীলাচলে।*
*🌷রাত্র দিন কৃষ্ণপ্রেম আনন্দ বিহ্বলে।।*
*🌷পান্ডিত্যের অবধি কথা নাহি কার সনে।*
*🌷নির্জনে রহেন সব লোকে নাহি জানে।।*
*🌷কৃষ্ণরস তত্ত্ববেত্তা "দেহ প্রেম রূপ।*
*🌷সাক্ষাৎ মহাপ্রভুর দ্বিতীয় স্বরূপ।।*
*🌹যিনি ভক্তসমাজে মহাপ্রভুর "দ্বিতীয় স্বরূপ" বলে প্রতিভাত হলেন, তাঁর সন্ন্যাস গুরু চৈতন্যানন্দের হৃদয়ে বুঝি এই ঘটনার পূর্বাভাসের অস্ফুট আলোক প্রতিফলিত হয়েই এই নবীন সন্ন্যাসীর "স্বরূপ" নাম রাখবার প্রবৃত্তি জন্মিয়েছিল।ইঁনার ভিন্ন ভিন্ন নাম ও গুণবত্তের পরিচয় শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের অনেক জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় যথা----*
*🌷গ্রন্থ শ্লোক গীত কেহো প্রভু আগে আনে।*
*🌷স্বরূপ পরীক্ষা কৈলে পাছে প্রভু শুনে।।*
*🌷ভক্তি সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধ যেই আর রসাভাস।*
*🌷শুনিতে না হয় প্রভুর চিত্তের উল্লাস।।*
*🌷অতএব স্বরূপ আগে করে পরীক্ষণ।*
*🌷শুদ্ধ হয় যদি,করায় প্রভুকে শ্রবণ।।*
*🌷বিদ্যাপতি চন্ডীদাস শ্রীগীতগোবিন্দ।*
*🌷এই তিন গীতে করে প্রভুর আনন্দ।।*
*🌷সঙ্গীতে গন্ধর্ব সম শাস্ত্রে বৃহস্পতি।*
*🌷"দামোদর" সম আর নাহি মহামতি।।*
*🍀এখানে আমরা স্বরূপের "দামোদর" বলে একটি নাম পাচ্ছি।লোকে বলে সঙ্গীতে শাস্ত্রজ্ঞান বিনষ্ট হয়। কিন্তু স্বরূপ "সঙ্গীতে গন্ধর্ব সম শাস্ত্রে বৃহস্পতি"।এস্থলে দুইটি বিরুদ্ধ ধর্ম এক আধারে আশ্রয় পেয়েছে,এটি অসাধারণ গুণাশ্রয়ত্বের পরিচায়ক।*
*🌺স্বরূপ যে সর্ব বিষয়েই মহাপ্রভুর "দ্বিতীয় স্বরূপ" ছিলেন,এটি হতেই তার আভাস পাওয়া যায়।তাঁর আরও নামের পরিচয় শুনুন।একবার শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার পরে মহাপ্রভু কৃষ্ণবিরহে অধীর হয়ে আলালনাথে চলে গেলেন।এই সময়ে গৌড় হতে শ্রীমহাপ্রভুর মুখশশী দেখবার জন্য দুইশ ভক্ত নীলাচলে উপস্থিত।কোন কোন ভক্ত আলালনাথে গিয়ে মহাপ্রভুর শ্রীচরণে এই সংবাদ জানালেন।এদিকে রাজা প্রতাপরুদ্রের প্রযত্নে গৌড়ীয় ভক্তগণের থাকবার বাসার সুবন্দোবস্ত হল।সংবাদ পাওয়া মাত্রই দয়াময় গৌরহরি ফিরে আসিলেন। শ্রীভগবানের সঙ্গে ভক্তগণের আনন্দ-সম্মিলন হল।ভক্তগণকে মালা-প্রসাদ দেবার জন্য স্বরূপ ও গোবিন্দের প্রতি মহাপ্রভুর আদেশ হওয়ায় এই কৃপাদেশে ইঁনারা বড়ই হৃষ্ট(প্রফুল্ল) হলেন।তাঁরা মালা প্রসাদ নিয়ে ভক্তগণকে বিতরণ করতে লাগলেন।চারিদিক হতে হরিনামের মধুর ধ্বনি উঠিল।ভক্তগণের পরিচয় জানতে রাজা প্রতাপরুদ্রের অত্যন্ত কৌতূহল হল।তিনি সার্বভৌম ভট্টাচার্য্য মহাশয়ের কাছে ভক্তগণের পরিচয় জানতে ইচ্ছুক হয়ে বললেন, ভট্টাচার্য্য!যে দুইজন মালা বিতরণ করছেন, এ দুইজনের পরিচয় আমার আগে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে। তদুত্তরে--*
*🌷ভট্টাচার্য্য কহেন-- এই স্বরূপ দামোদর।*
*🌷মহাপ্রভুর ইহোঁ হয় দ্বিতীয় কলেবর।।*
*🌷দ্বিতীয় গোবিন্দ ভৃত্য,ইঁহা দোঁহা দিঞা।*
*🌷মালা পাঠাইছেন প্রভু গৌরব করিয়া।।*
*🍀স্বরূপের নামের সঙ্গে অনেক স্থলেই "দামোদর" পদের যোগ আছে। এই পদটি কখনও "স্বরূপ" পদের পূর্বে, কখনওবা পরে দেখা যায়। যথা--*
*🌷দামোদর-স্বরূপ গোবিন্দ দুই জনে।*
*🌷মালা প্রসাদ লঞা যায় যাঁহা বৈষ্ণবগণে।।*
*🌹যাঁরা শ্রীগৌরলীলার শ্রীগ্রন্থাদি মধ্যে মধ্যে পাঠ করেন,তাঁদের হয়ত মনে হতে পারে "দামোদর স্বরূপ" বা "স্বরূপ দামোদর" নাম যে যে স্থলে একযোগে দেখা যায়,তৎ তৎ স্থলে কেবল "স্বরূপই" এই নামের বাচ্য। আবার কেবল "দামোদর" বলেও ইঁনার নামের উল্লেখ আছে, যথা---*
*🌷সঙ্গীতে গন্ধর্ব সম শাস্ত্রে বৃহস্পতি।*
*🌷দামোদর সম আর নাহি মহামতি।।*
*🌷সেই দামোদর আসি দন্ডবৎ হৈলা।*
*🌷চরণে পড়িয়া শ্লোক পড়িতে লাগিলা।।*
*🌻মহাপ্রভুর পার্ষদগণের মধ্যে আরও "দামোদর" আছেন,যথা দামোদর পন্ডিত। যখন মহাপ্রভু শ্রীঅদ্বৈতাচার্য্যের ভবন হতে নীলাচলে গমন করেন তখন এই দামোদর পন্ডিত মহাপ্রভুর সঙ্গী হন,যথা চৈতন্য চরিতামৃতে=*
*🌷নিত্যানন্দ গোসাঞী পন্ডিত জগদানন্দ।*
*🌷দামোদর পন্ডিত আর দত্ত মুকুন্দ।।*
*🌷এই চারিজন আচার্য্য দিলা প্রভু সনে।*
*🌷জননী প্রবোধ করি বন্দিলা চরণে।।*
*🙏এই দামোদরপন্ডিত মহাপ্রভুর নিত্য ভক্ত হয়েও তাঁর অভিভাবকের মত আচরণ করতেন,অভিভাবকের মত শাসন করতেন,মহাপ্রভুও ইঁনাকে অভিভাবকের মত মান্য করতেন।*
👣👣👣👣👣👣🙏👣👣👣👣👣👣
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৪)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*নামকরণ ও গুণবত্তার পরিচয়*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*🌹আমরা অন্য প্রসঙ্গে শ্রীদামোদরের পবিত্র চরিত-কীর্তনে আত্মশোধন করতে প্রয়াস পাব।স্বরূপদামোদর বা দামোদর-স্বরূপ যে পৃথক দুই মূতি নন,এ স্থলে তৎ প্রদর্শন করাই উদ্দেশ্য।শ্রীপুরুষোত্তম আচার্য্য সন্ন্যাসাশ্রমে "স্বরূপ" নাম পেলেন।এই সময়ে তিনি কেবল "স্বরূপ" নামে অভিহিত হয়েছিলেন,অথবা তাঁর গুরুদেব তাঁকে "স্বরূপ-দামোদর" বা দামোদর-স্বরূপ নাম দিয়েছিলেন কি না সঠিক জানা যায় না।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে দেখা যায়,*
*🌷সন্ন্যাস করিল শিখা সূত্র-ত্যাগরূপ।*
*🌷যোগ পট্ট না লইল নাম হইল স্বরূপ।।*
*☘এতেই বোধহয় তাঁর সন্ন্যাস গুরু বুঝি তাঁর কেবল "স্বরূপ" নামই রেখেছিলেন।এখন কথা এই যে তাঁর নামের সঙ্গে "দামোদর" শব্দের যোগ কখন হল?পুরুষোত্তমে আসিবার আগে কি পরে তাঁর নামের সঙ্গে "দামোদর" শব্দটি সংযুক্ত হয় এটিও আলোচ্য।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে লিখিত আছে=*
*🌷আর দিন আইলা স্বরূপ-দামোদর।*
*🌷প্রভুর অত্যন্ত মর্ম্ম রসের সাগর।।*
*🍁এতে আপাতত বোধ হতে পারে,আগে হতে তিনি "স্বরূপ দামোদর" নামেও অভিহিত হতেন।স্বরূপ-দামোদর বা দামোদর-স্বরূপ এইরকম নামই বা কেন হল,এটি জানতেও পাঠকগণের কৌতূহল হতে পারে। আমাদের বোধ হয় এ সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচন্দ্রোদয় নাটকে যে কথার উল্লেখ আছে তাতেই পাঠকগণের কৌতূহল নিবৃত্তি হবে।এই গ্রন্থের অষ্টম অঙ্কে মহাপ্রভুর ভক্তগণের সমাগম-প্রসঙ্গ এইরকম লিখিত আছে।চারিদিক হতে ভক্তপ্রবাহ এসে শ্রীশ্রীমহাপ্রভুর চরণ-রত্নাকরে মিলেছেন দেখে সার্বভৌম বলেছেন=*
*🌷ভোঃ স্বামিন ইদমতি বিচিত্রম্!*
*🌷যে কেহপি যাঃ কাশ্চন সপ্রবাহো,*
*🌷নদাশ্চ নদ্যশ্চ ভবন্তি ভূমৌ,*
*🌷কস্যাপি রত্নাকরমন্তরেণ,*
*🌷কুত্রাপি নাস্থা নচ সন্নিবেশঃ।*
*🌻অর্থ্যাৎ প্রভো,এটি অতি বিচিত্র,এই জগতে যত নদনদী প্রবাহ আছে,এক রত্নাকর (সমুদ্র) ছাড়া অন্য কোথাও তাদের আস্থা ও সন্নিবেশ হয় না,হতেও পারে না।ইতোমধ্যে নেপথ্যে ধ্বনি হল=*
*🌷অহো রসকলবতো ভগবতো রসাচার্য্যকং,*
*🌷গ্রহীতুমিব মূর্ত্ততাং ব্যধিতভিক্ষুবেশং বপুঃ,*
*🌷যদেতদবনীতলে সকল এব দামোদর-,*
*🌷-স্বরূপমিতি ভাষতে তদপৃথকতয়া প্রেমতঃ।*
*🌻অর্থ্যাৎ স্বরূপকে দেখে সকলে বলেছিলেন "অহো কি প্রেমময়ী শ্রীমূর্তি!এই সন্ন্যাসীদেহ যেন রসরাজ শ্রীভগবানের রসাচার্য্যের মূর্তিমান অবতার।রসিকশেখর শ্রীভগবান দামোদরের সঙ্গে ইঁনার কোন বিভিন্নতা না দেখেই যেন সকলে ইঁনাকে দামোদর-স্বরূপ বলে অভিহিত করেছে। মহাপ্রভু এইকথা শুনে বললেন,দামোদর স্বরূপ নামে কোন ব্যক্তি আসছেন বলে বোধ হচ্ছে।এই কথা বলতে না বলতেই দেখা গেল স্বরূপ আকাশ পানে সাশ্রুনয়নে দৃষ্টি করে গদগদ বাক্যে ধীরে ধীরে "হেলোদ্ধূলিত" শ্লোক পাঠ করতে করতে অগ্রসর হতে লাগলেন। গোপীনাথ বললেন=*
*🌹অয়ে শ্রুতংময়া চৈতন্যানন্দ শিষ্যঃ পরমবিরক্তো ভগবদ্ভক্তোহতি বিদ্বানকশ্চিৎদামোদর-স্বরূপো নাম, যঃ খলুগুরুণা বহুতর অভ্যর্থিতোহপি বেদান্তমধীত্যাধ্যাপয়েতি নচ তচ্চ কৃতবান ☆☆☆☆☆ভগবন্নয়ময়ং শ্রুতচরো দামোদর-স্বরূপঃ।*
*🍁এতেই স্পষ্টতঃই প্রতীত হয় যে চৈতন্যনন্দই সম্ভবত ইনার রসময় ভাব দেখে আনন্দলীলারস-বিগ্রহ দামোদরের রসাচার্য্য স্বরূপ মনে করে "দামোদর-স্বরূপ" নাম প্রদান করেছিলেন।এই প্রসঙ্গে পাঠক শ্রীভগবানের দামোদর নামটির প্রকাশ সম্বন্ধেও একবার স্মরণ করুন।শ্রীভগবানের দামবন্ধনলীলা তাঁর প্রেমবিবশতার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।শ্রীভাগবতে বলেন=*
*🌷এবং সন্দর্শিতাহ্যঙ্গ হরিণা ভক্তবশ্যতা।*
*🌷স্থবশেনাপি কৃষ্ণেন যস্যেদং স্বেশ্বরংবশে।।*
*🌷নেমং বিরিঞ্চি নভবো ন শ্রীরপ্যঙ্গ-সংশ্রয়া।*
*🌷প্রসাদং লেভিরে গোপী যৎতৎপ্রাপ বিমুক্তিদাৎ।।*
*🌻অর্থ্যাৎ হে রাজন! ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বতন্ত্র। জগদীশ্বর সহিত এই জগৎ তাঁর বশবর্তী,তথাপি তিনি ঐ প্রকারে বন্ধনস্থ হয়ে ভক্তবশ্যতা দেখিয়েছিলেন। ভগবানের অনুগ্রহ প্রসন্নতা অন্যান্য ভক্তেরাও পেয়েছেন সত্য, কিন্তু মা যশোদা তাঁর যেমন প্রসন্নতা লাভ করেছিলেন, ব্রহ্মাদি তো দূরের কথা,পূর্ণলক্ষ্মী তাঁর অর্দ্ধাঙ্গিনী হয়েও সেই প্রসন্নতা লাভ করতে পারেননি। ভগবান দামোদর লীলায় অতি অদ্ভুত রস প্রদর্শন করে রসিকশেখরতা ও পরমকরুণার পূর্ণ উদাহরণ দেখিয়েছেন।রসমাধুর্য্য আর কাকে বলে,এটিই রসমাধুর্য্য। তিনি আত্মারাম হয়েও বুভুক্ষিতের (ক্ষুধাতের) মত, পূর্ণকাম হয়েও অভক্তের মত,শুদ্ধসত্ত্বরূপ হয়েও ক্রোধিতের মত,অনন্ত কোটি বিশাল বিশ্বব্রহ্মান্ডের অধীশ্বর হয়েও চোরের মত,মহাকাল যমাদির ভয়স্বরূপ হয়েও নিজে ভীত ও পলায়িতের মত এবং অনন্ত আনন্দ ও অনন্ত ঐশ্বর্য্যময় হয়েও দুঃখিত দীন বালকের ন্যায় আচরণ করে লীলামাধুর্য্য প্রকটন করেছেন।*
*🌳ভগবানের দামবন্ধন লীলার কথা স্মরণ করে কুন্তীদেবী বিস্ময়ে ও আনন্দে অধীর হয়ে বলেছিলেন=*
*🌷গোপ্যাদদে ত্বয়ি কৃতাগসিদামতাবৎ,*
*🌷যা তে দশাশ্রুকলিলাঞ্জন সম্ভ্রমাক্ষং,*
*🌷বয়ং নিলীয় ভয়-ভাবনয়া স্থিতস্য,*
*🌷সা মাং বিমোহয়তি ভীরপি যদ্বিভেতি।*
*🔷অর্থ্যাৎ হে কৃষ্ণ!দধিভান্ড ভাঙ্গার অপরাধে যশোদা যখন তোমাকে বন্ধন করেছিলেন,তখন ভয়ে ও ভাবনায় তুমি কাঁদছিলে,আর তোমার নয়নের কাজল চোখের জলে গলে যাচ্ছিল,সে দৃশ্য কি মধুর!তুমি সকল ভয়ের ভয়স্বরূপ,আর তোমার এই লীলা!সেই সময়ের মুখটি স্মরণ করে এবং তোমার সেই সময়ের দশা মনে করে চিত্ত বিমুগ্ধ হচ্ছে।এই লীলা হতেই শ্রীকৃষ্ণের "দামোদর" নামে প্রকাশিত হন।*
*🌷সচ তেনৈব দাম্নাতু কৃষ্ণোবৈ দামবন্ধনাৎ।*
*🌹হরিবংশ দামোদর নামের সঙ্গে রসমাধুর্য্যের আরও ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধের কথা উল্লেখ করেছেন।হরিবংশে লিখিত আছে =*
*🌷গোষ্ঠে দামোদর ইতি গোপীভিঃ পরিগীয়তে।*
*🌺গোপীদের এই সোহাগের নামের সহিত অনন্ত রসমাধুর্য্য বিজড়িত।এই রসমাধুর্য্যের রসাচার্য্য মূর্তিই স্বরূপ--, স্বরূপ-দামোদর বা দামোদর-স্বরূপ।*
🙏🙏🙏🙏🦚🪷🪷🪷🪷🌷🌸🌸🪔
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৫)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*নামকরণ ও গুণবত্তার পরিচয়*
#####################
*🌹শ্রীকবি কর্ণপুর শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত মহাকাব্যে "স্বরূপ-দামোদর" নামের ব্যাখ্যা পরিস্ফুট করেছেন।এই শ্রীগ্রন্থে লিখিত আছে =*
*🌷সতু সন্ন্যাসমদভ্র ভাগ্যবান অগমত্তু রস-স্বরূপতাম্,*
*🌷ইহ "দামোদর" ইত্যুদীরিতঃ ইতি তেন নিরন্তরং প্রভোঃ।*
*(ত্রয়োদশ সর্গঃ ১৪৩ শ্লোক)*
*🍁পুরুষোত্তম আচার্য্য সন্ন্যাস গ্রহণ করে সন্ন্যাসীকুলের মধ্যে তিনি অতি ভাগ্যবান হলেন।কেন না,তিনি রসস্বরূপতা পেয়ে দামোদর-স্বরূপ নামে কীর্তিত হলেন।এই দামোদর-স্বরূপ নামটি কথিত ভাষার সঙ্কোচ-নিয়মে "স্বরূপ" বলেই সম্ভবত সাধারণ্যে অভিহিত হয়ে আসছেন।ফলে দামোদর শব্দটি তদীয় রসাচার্য্যকর্তার পরিচায়ক-স্বরূপ।*
*দামোদর-স্বরূপ শ্রীশ্রীমহাপ্রভুর শ্রীচরণ-প্রান্তে থেকে কিভাবে তাঁর রসপুষ্টি করতেন, শ্রীচৈতন্যভাগবতে ও শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে তার অনেক নিদর্শন পাওয়া যায়। যথা শ্রীচৈতন্যভাগবতে=*
*🌷ভাগবত পাঠে গদাধর মহাশয়*।
*🌷দামোদর-স্বরূপের কীর্তন বিষয়।।*
*🌷একেশ্বর দামোদর-স্বরূপ গুণ গায়।*
*🌷বিহ্বল হইয়া নাচে শ্রীগৌরাঙ্গরায়।।*
*🌷অশ্রু ঘর্ম্ম হাস্য মূর্চ্ছা পুলক হুঙ্কার।*
*🌷যত কিছু আছে প্রেম ভক্তির বিকার।।*
*🌷দামোদর-স্বরূপের উচ্চ সংকীর্তন।*
*🌷শুনিলে না থাকে বাহ্য,পড়ে সেইক্ষণ।।*
*🌷দামোদর-স্বরূপ সঙ্গীত রসময়।*
*🌷যার ধ্বনি শ্রবণে প্রভুর নৃত্য হয়।।*
*🌷কীর্তন করিতে যেন তুম্বুর নারদ।*
*🌷একা প্রভু নাচায়েন কি আর সম্পদ।।*
*🌷অহর্নিশি গৌরচন্দ্র সংকীর্তন রঙ্গে।*
*🌷বিহরেন দামোদর-স্বরূপ সঙ্গে।।*
*🌷পথে চলিতেও প্রভু দামোদর গানে।*
*🌷নাচেন বিহ্বল হইয়া পথ নাহি জানে।।*
*🌷একেশ্বর দামোদর-স্বরূপ সংহতি।*
*🌷প্রভু সে আনন্দে পড়ে না জানেন কতি।।*
*🌻দামোদর-স্বরূপ মূর্তিমান রস। তাঁর একটি কথায় বা একটি গানে রসের তরঙ্গ প্রবাহিত হ'ত।রস-স্বরূপ দামোদর-স্বরূপের সঙ্গীত রসের বন্যায় শ্রীমন্মহাপ্রভু নিজ অনন্ত প্রেমসাগরে আকুল ভাবে ভেসে চলতেন,স্বরূপের গান শুনলে মহাপ্রভুর দিগ্বিদিক জল স্থল পাহাড় পর্বত জ্ঞান থাকত না।*
*🌷কিবা জল কিবা স্থল কিবা বন ডাল।*
*🌷কিছু না জানেন প্রভু গর্জন বিশাল।।*
*🌹দামোদর তখন গান ছেড়ে গৌরহরির দেহরক্ষার জন্য ব্যস্ত হতেন।শ্রীচৈতন্যদেব পথে চলেছেন, সঙ্গে স্বরূপ। মহাপ্রভু বললেন,স্বরূপ! একটি কীর্তন শোনাও।স্বরূপ গান ধরলেন, গৌরসুন্দরের আর তখন পথ চলা হল না।তিনি ভাবে বিভোর হয়ে নাচতে আরম্ভ করলেন,বাহ্যজ্ঞান, বাহ্যদৃষ্টি বিন্দুমাত্রও রইল না।শচীনন্দন রাধাকৃষ্ণ-প্রেমার্ণবে ভেসে চললেন, পথ ছেড়ে নাচতে নাচতে পাথর-কাঁটাপূর্ণ জায়গায় গিয়ে ঢলে পড়লেন। স্বরূপ আর গান করবেন কি,হায়!কি হ'ল,হায়!কি হ'ল বলে অমনি মহাপ্রভুকে ধরে তুললেন। অন্ত্যলীলায় শেষ দ্বাদশ বৎসর মহাপ্রভু উত্তাল প্রেমতরঙ্গে দিনরাত্রি এইরকম আকুল থাকতেন। শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে বলেন=*
*🌷শেষ যে রহিল প্রভুর দ্বাদশ বৎসর।*
*🌷কৃষ্ণের বিরহ স্ফূর্তি হয় নিরন্তর।।*
*🌷শ্রীরাধিকার চেষ্টা যেমন উদ্ধব দর্শনে।*
*🌷এই মত দশা প্রভুর হয় রাত্রি দিনে।।*
*🌷নিরন্তর হয় প্রভুর বিরহ-উন্মাদ।*
*🌷ভ্রমময় চেষ্টা সদা প্রলাপময় বাদ।।*
☆ ☆ ☆ ☆
*🌷গম্ভীরা ভিতরে রাত্রে নিদ্রা নাহি লব।*
*🌷ভিতে মুখ শির ঘষে ক্ষত হয় সব।।*
*(মধ্যলীলা দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)*
*🌺শ্রীকৃষ্ণ-বিরহে গৌরহরির এই অবস্থার মর্ম সহচর কেবল-- শ্রীস্বরূপ ও শ্রীরামানন্দ রায়।গৌরসুন্দরের হৃদয়ে বিরহ যাতনা শতধারায় উথলিয়ে উঠে,পাছে বা ভক্তগণের কষ্ট হয় এই আশঙ্কায় তিনি আপন মর্ম কথা যথা=সাধ্য চেপে রাখতে চেষ্টা করেন, কিন্তু দুর্বার কৃষ্ণবিরহ-প্রবাহ কিছুতেই বারণ মানে না ; আর মহাপ্রভুর বিরহ-প্রলাপ, অবরুদ্ধ উৎসের প্রমুক্ত উচ্ছাসের মত, অথবা ঝটিকোৎক্ষিপ্ত সিন্ধুতরঙ্গের মত,সমস্ত দিক বিপ্লাবিত করে প্রবাহিত হয়।এই সময়ে শ্রীরামানন্দের কৃষ্ণকথায় ও স্বরূপের গানে শ্রীগৌরাঙ্গের উদ্বেগ খানিকটা কম হয়, মহাপ্রভু একটু ধৈয্যধারণ করেন।আবার যেই রাত্রি উপস্থিত হয়, গৌরহরি আবার কৃষ্ণবিরহে অধীর হয়ে উঠেন।দিনমান কোনভাবে কেটে যায়, কিন্তু রাত্রিতে ভাবনিধি গৌরহরি সে বিরহ বেগে একেবারেই অধীর ও অবসন্ন হয়ে পড়েন।আহা! এই দ্বাদশ বৎসর শচীনন্দনের কৃষ্ণবিরহে আকুল আর্ত্তি ও বিরহ জ্বালার কথা মনে করলে পাষাণ হৃদয়ও গলে যায়।মহাপ্রভুর "দ্বিতীয় স্বরূপ" এ লীলার সাক্ষী। শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতেও এইরকম বর্ণনা আছে =*
*🌷যদ্যপি অন্তরে কৃষ্ণ বিয়োগ বাধয়ে।*
*🌷বাইরে না প্রকাশয়ে ভক্ত-দুঃখ-ভয়ে।।*
*🌷উৎকট বিরহ-দুঃখ যবে বাহিরায়।*
*🌷তবে যে বৈকল্য প্রভুর,বর্ণন না যায়।।*
*🌷রামানন্দের কৃষ্ণকথা,স্বরূপের গান।*
*🌷বিরহবেদনায় প্রভু রাখয়ে পরাণ।।*
*🌷দিনে প্রভু নানা সঙ্গে হয় অন্যমনা।*
*🌷রাত্রিকালে বাড়ে প্রভুর বিরহবেদনা।।*
*🌷তাঁর সুখ হেতু কাছে রহে দুই জনা।*
*🌷কৃষ্ণরস শ্লোক লীলায় করেন সান্ত্বনা।।*
*🌷সুবল যৈছে পূর্বে কৃষ্ণ-সুখের সহায়।*
*🌷গৌর-সুখ-দান হেতু তৈছে রামরায়।।*
*🌷পূর্বে যৈছে রাধায় সহায় ললিতা প্রধান।*
*🌷তৈছে স্বরূপ গোঁসাই রাখে প্রভুর প্রাণ।।*
*🌹শ্রীশ্রীমহাপ্রভু রসিকশেখর, অথবা "রসরাজ মহাভাব দুই একরূপ" অথবা শ্রুতির সেই "রসো বৈ সঃ" শ্রীপাদ দামোদর সেই রসরাজের দ্বিতীয় স্বরূপ।শ্রীকৃষ্ণলীলায় যিনি ললিতা, গৌরলীলায় তিনিই স্বরূপ।তাই পূজ্যপাদ কবিরাজ গোস্বামী এখানে স্বরূপের পূর্বলীলার নামটির ধ্বনি করে রেখেছেন।শ্রীমতীর মহাবিরহে ললিতার সান্ত্বনা, আর মহাপ্রভুর রাধাভাবের মহাবিরহে স্বরূপের সাহচর্য্য,প্রেমসেবা ও রসময়ী সুসান্ত্বনা একেবারেই অভিন্ন তত্ত্ব।স্বরূপ সেই ললিতা সখী।অতঃপর এ সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা যাবে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏👣🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৬)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*শ্রীস্বরূপদামোদর ও শ্রীরূপ*
▪▪▪▪▪▪▪▪▪
*🌹শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রার সময়ে শ্রীপুরুষোত্তমক্ষেত্রে গৌড়ীয় ভক্তগণের শুভ সমাগম হত।এই সময়ে মহাপ্রভুর মুখশশী দেখে তাঁদের সারা বৎসরের বিরহ-জ্বালা নিবারণ হত,মহাপ্রভুর সঙ্গে নৃত্য-গীত-উল্লাসে তাঁরা এই সময়ে গোলোকের সুখ উপভোগ করতেন।*
*কিছু বৎসর এইভাবে কেটে গেল। অতঃপরে ভক্তগণ দেখতে পেলেন গৌরহরি বিরহে ক্রমেই অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে পড়ছেন।কৃষ্ণবিরহে পরিমৃদিত কোমলের ন্যায় তাঁর শ্রীমুখকমল যেন মলিন হয়ে যাচ্ছে।তিনি কখন "কৃষ্ণ কৃষ্ণ" বলে হাসেন, চার পাঁচ দন্ডেও সে হাসির বিরাম হয় না।(৬০দন্ডে দিনরাত)আবার কৃষ্ণ বিরহে রোদন করেন,সে রোদন শুনলে বনের পশু পাখীর হৃদয়ও দুঃখে গলে যায়। প্রিয়জন বিরহ-বিধুরা রমণী যেমন বিনিয়ে বিনিয়ে কেঁদে কেঁদে আকুল হন এবং অন্যকেও আকুলিত করেন, শ্রীচৈতন্যদেব কৃষ্ণবিরহে সেরকম রোদন করে ভক্তগণের হৃদয় ব্যাকুল করে তুলেন।কার সাধ্য সে আর্তনাদ শুনে স্থির থাকতে পারে?*
*🍀এইভাবে বাইরের জগতের সঙ্গে মহাপ্রভুর সম্পর্ক ক্রমেই অন্তর্হিত হয়ে উঠিল,দিনরাত বিরহ-উন্মাদে তিনি একেবারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন। কৃষ্ণ-ধ্যানে,কৃষ্ণ-জ্ঞানে,কৃষ্ণনামে ও কৃষ্ণগানে দিনরাত্রি অতিবাহিত হতে লাগল।শ্রীরামানন্দ ও তাঁর প্রাণের স্বরূপ কৃষ্ণকথায় তাঁর বিরহ-বিদগ্ধ হৃদয়ের কিছু পরিমাণ সান্ত্বনা করতে লাগিলেন।রথযাত্রার সময়ে গৌড়ীয় ভক্তগণ এসেছেন।তাঁদের মনে কত আনন্দ, মহাপ্রভুকে নিয়ে তাঁরা সংকীর্তন করবেন,মহাপ্রভুর সেবার জন্য যে সব দ্রব্যাদি নিয়ে এসেছেন, সেই সমস্ত নিয়ে তাঁর তাঁর পার্শ্বে বসে "এটি সেবা করুন,ওটি সেবা করুন" এইভাবে বলে তাঁকে আহার করাবেন এবং তাঁর সেবা দর্শন করবেন। কিন্তু এবার ভক্তগণ এসে দেখলেন,গৌরহরি যেন কেমন আনমনা হয়ে গিয়েছেন, তাঁর শ্রীমুখকমল পরিম্লান ও অশ্রুজলে গন্ডস্থল ভেসে যাচ্ছে। এই অবস্থায় মহাপ্রভু কখন হাসছেন,কখন কাঁদছেন,কখন নাচছেন, কখন বা নেচে নেচে গাইছেন। কিন্তু এই হাসি কান্না ও নৃত্যগীতের সঙ্গে অন্য ভক্ত বা ভক্তগায়কগণের সম্বন্ধ খুবই কম। সামনে শ্রীজগন্নাথদেবের রথ।রথের উপর শ্রীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত।ভক্তগণ গৌরসুন্দরের পার্শ্বে।রথের আগে মহাপ্রভু বিভোর হয়ে নাচতে লাগলেন,আর শ্রীজগন্নাথদেবের মুখচন্দ্রিমা দেখে দেখে আনন্দে বিভোর হলেন।মহাপ্রভুর হর্ষোৎফুল্ল নয়ন-কমল দেখে ভক্তগণের মনে হল তিনি না-জানি-কি হারান-ধন পেয়ে আনন্দে মত্ত হয়ে নাচছেন।নৃত্য করতে করতে মহাপ্রভু এক শ্লোক পড়লেন,সে শ্লোকটি এই=*
*🌷যঃ কৌমারহরঃ স এব হি বর স্তাএব চৈত্রক্ষপা।*
*🌷স্তেচোন্মীলিত মালতী-সুরভয়ঃ প্রৌঢ়াঃ কদম্বানিলাঃ।।*
*🌷সা চৈবাস্মি তথাপি তত্র সুরত-ব্যাপার লীলাবিধৌ।*
*🌷রেবা-রোধসি বেতসী-তরুতলে চেতঃ সমুৎকন্ঠ্যতে।।*
*🌹এর অর্থ এই যে,কোন এক রমণী নিজ সখীকে বলছেন সখী!যিনি রেবাতটে (নর্মদাতটে)বেতসতরুমূলে আমার কৌমার্য্য হরণ করে রসের আস্বাদ প্রদান করেছিলেন,এখন তাঁকেই আমি পতিরূপে পেয়েছি।সখী!মধু যামিনীতেই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম মিলন হয়,এখন সেই মধু যামিনী।তখন যেমন উন্মীলিত মালতী ফুলের সৌরভে চারিদিক আমোদিত হয়েছিল,তখন যেমন কদম্ব-কুসুমের গন্ধ নিয়ে মৃদু মন্দ বায়ু বইছিল, এখনও সেই সব আছে ; কিন্তু তথাপি আমার হৃদয় সেই নর্মদাতটের বেতস(বেতগাছ) তরুমূলে সুরতসুখ-সম্ভোগের জন্য ব্যাকুল হচ্ছে।*
🦚🦚🦚🦚🦚🦚🌷🦚🦚🦚🦚🦚🦚
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৭)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*শ্রীস্বরূপদামোদর ও শ্রীরূপ*
~~~~~~~~~~~~~~~~~
*🌺এটি তো শ্রীমদ্ভাগবতের শ্লোক না, শ্লোকটি কাব্যপ্রকাশের।একটি সাধারণ নায়িকার উৎকন্ঠাজনিত ভাবদ্যোতক শ্লোকটি মহাপ্রভু এমন আনন্দের সঙ্গে নেচে নেচে পাঠ করলেন কেন, কেউই তা বুঝতে পারলেন না, বুঝলেন একমাত্র স্বরূপ।স্বরূপ শ্লোকটি শুনিবামাত্রই গান ধরলেন।*
*🌷সেই তো পরাণ নাথ পাইনু,*
*🌷যাহা লাগি মদন দহন ঝুরি গেনু।*
*🙌স্বরূপ এই ধূয়া গাইতে লাগলেন।মহাপ্রভুর দেহ পুলকে কদম্ব-কুসুমের মত প্রতিভাত হতে লাগল,বায়ু-তাড়িত সাগরের মত ভাব-সমুদ্র মহাপ্রভুর ভাব-তরঙ্গ উদ্বেলিত হয়ে উঠিল, তখন তিনি একেবারে বাহ্যজ্ঞানহারা হয়ে নাচতে লাগলেন।স্বরূপের গানে রসের বন্যা-তরঙ্গ উছলিয়া উঠিল, আর মহাপ্রভু যেন তাতে নেচে নেচে ভেসে চলিলেন।এক ধূয়ায় এক দন্ড দুই দন্ড করে দ্বিপ্রহর অতিবাহিত হয়ে গেল।পরে গৌরহরি একটু স্থির হলেন। কিন্তু এই শ্লোকের বা এই ধূয়ার কেউ মর্ম বুঝতে পারলেন না।যথা শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের অন্ত্য খন্ডে=*
*🌷সামান্য এক শ্লোক প্রভু পড়েন কীর্তনে।*
*🌷কোন শ্লোক পড়েন ইহা কেহ নাহি জানে।।*
*🌷সবে এক স্বরূপ গোসাঞী শ্লোকের অর্থ জানে।*
*🌷শ্লোকানুরূপ পদ প্রভুকে করান আস্বাদনে।।*
*🍁এবার শ্রীল রূপগোস্বামী রথযাত্রার সময়ে পুরুষোত্তমে উপনীত হয়ে ছিলেন।তিনি পার্শ্বে দাঁড়িয়ে উল্লাস-বিস্ফারিত নেত্রে মহাপ্রভুর নৃত্য দেখছিলেন।আর "যঃ কৌমারহর" শ্লোকটির কি-জানি-কেমন এক ঝঙ্কারে তাঁর দেহ শিহরিয়া উঠছিল।এর পরে যখন "এই তো পরাণ নাথ পাইনু" এই পদটি গাইতে শুনলেন,তখন শ্রীরূপের দেহ পুলকে পূর্ণ হয়ে উঠিল।তিনি অবশ ভাবে হরিদাসের কুটিরে গেলেন।এর অব্যবহিত পরেই দেখা গেল শ্রীরূপের গন্ডদেশ প্রেমাশ্রুতে ভেসে যাচ্ছে, আর তিনি আপন বাসায় বসে একটি তালপাতায় যেন কি লিখছেন।লেখা শুরু করতেই যেন লেখা সমাপ্ত হল।তালপাতাটি ঘরের চালে গুঁজে রেখে শ্রীরূপ সমুদ্রে স্নান করতে গেলেন। এই সময়ে গৌরহরি ধীরে ধীরে শ্রীরূপের বাসায় এলেন।শ্রীরূপ তখনও স্নান করে ফিরেন নাই।স্নানের পর শ্রীজগন্নাথের মন্দিরে শ্রীরূপের সঙ্গে দেখা হবার সম্ভাবনা হলে হয়ত মহাপ্রভু আর শ্রীরূপের বাসায় না আসতেও পারতেন। কিন্তু সে সম্ভাবনা নাই। শ্রীরূপ নিষ্ঠাবান ভক্ত।বিনয় ও দৈন্য ভক্তির অঙ্গ।শ্রীরূপ বিনয়ের খনি,দীনতার আদর্শ।তিনি সৎকুলোদ্ভব ব্রাহ্মণ হয়েও নিজকে যবন-অধম বলে মনে করতেন।তাঁর মনে হত,যবনের বেতনভোগী কর্মচারী হয়ে,যবন সংসর্গে কালাতিপাত করে আমি যবন হয়ে গিয়েছি।কোন সাহসে শ্রীমন্দির স্পর্শ করব।এইরকম মনে করে শ্রীরূপ শ্রীমন্দিরে যেতেন না।তাঁর দাদা সনাতনেরও একই ব্রত ছিল। তিনিও শ্রীমন্দির স্পর্শ করতে সাহস করতেন না। এই শ্রেণীর আরেকজন পরমভক্ত ছিলেন,পরমারাধ্য হরিদাস। যথা চৈতন্যচরিতামৃতে=*
*🌷হরিদাস ঠাকুর আর রূপ সনাতন।*
*🌷জগন্নাথ মন্দিরে না যান এই তিনজন।।*
*☘সুতরাং শ্রীজগন্নাথের উপলভোগের সময়ে এই তিনজনের শ্রীজগন্নাথ মন্দিরে সমাগম হত না। কিন্তু স্নেহময় মহাপ্রভু উপলভোগ দর্শন করে ফিরবার সময়ে এই তিনজনকে দেখা দিয়ে যেতেন।শ্রীরূপের বাসায় শ্রীচরণ অর্পণ করে মহাপ্রভু দেখলেন শ্রীরূপ ঘরে নেই।তিনি দৈবাৎ উপরের দিকে চেয়ে দেখলেন ঘরের চালে একটি তালপাতার পত্র গোঁজা রয়েছে। গৌরচন্দ্র তালপত্রটি বাহির করে দেখলেন সেটিতে একটি শ্লোক লেখা রয়েছে। মহাপ্রভু পড়তে লাগলেন।*
*🌷প্রিয়ঃ সোহয়ং কৃষ্ণঃ সহচরি কুরুক্ষেত্রে মিলিত,*
*🌷স্তথাহং সা রাধা তদিদমুভয়োঃ সঙ্গম-সুখম্।*
*🌷তথাপ্যন্তঃ খেলন মধুর মুরলী পঞ্চমজুষে,*
*🌷মনো মে কালিন্দীপুলিনবিপিনায় স্পৃহয়তি*।।
*🔷এই শ্লোকটি শ্রীরূপ গোস্বামী প্রেমাশ্রুপূর্ণনেত্রে উচ্ছসিত হৃদয়ে তালপাতায় লিখে রেখে স্নান করতে গিয়েছিলেন।🌹এর অর্থ এই যে,শ্রীরাধা কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের সহ সম্মিলিত হলেন,কিন্তু শ্রীবৃন্দাবন ছেড়ে কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ-সঙ্গম তাঁর পক্ষে সুখকর বলে বোধ হল না,তাই তিনি ললিতাকে বললেন,সহচরি! আজ কুরুক্ষেত্রে সেই এই প্রিয়তম কৃষ্ণের সঙ্গসুখ লাভ করলাম, আমিও সেই রাধিকা,সঙ্গম-সুখেও কোনও বিভিন্নতা নাই, কিন্তু তথাপি কালিন্দীপুলিন-বনে মধুর মুরলীর পঞ্চম রবে সঙ্গম-সুখের যে মাধুর্য্য অনুভব হয়,এখানে সেরকম কোন সুখের অনুভব হচ্ছে না।আমার মন সেই মধুর মুরলীর পঞ্চম-রবে ব্যাকুলিত শ্রীবৃন্দাবনের জন্যই আকুল হচ্ছে।*
*🌳মহাপ্রভু বিস্ময়াবিষ্ট ভাবে শ্লোকটি পাঠ করলেন,তাঁর শ্রীঅঙ্গ পুলকাঞ্চিত হয়ে উঠিল।এমন সময়ে শ্রীরূপ এসে দেখতে পেলেন,স্বয়ং করুণাময় গৌরহরি নিবিষ্টচিত্তে তাঁর রচিত শ্লোক পাঠ করছেন।শ্রীরূপ সলজ্জভাবে অমনি প্রাঙ্গণে সাষ্টাঙ্গে দন্ডবৎ হয়ে পড়লেন।মহাপ্রভু তখন আনন্দে বিভোর হয়েছেন।তিনি আহ্লাদে অধীর হয়ে শ্রীরূপের পিঠে চাপড় মেরে বললেন=*
*🌷মোর শ্লোকের অভিপ্রায় কেহ নাহি জানে।*
*🌷মোর মনের কথা তুই জানিলি কেমনে।।*
*(শ্রীচৈঃচঃ মধ্যখন্ড)*
*🌻এইকথা বলে মহাপ্রভু শ্রীরূপকে আলিঙ্গন করে বুকে ধরলেন।মহাপ্রভুর শ্রীঅঙ্গ-সঙ্গলাভে শ্রীরূপ মূর্ছিত প্রায় হলেন।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🪔🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৮)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*শ্রীস্বরূপদামোদর ও শ্রীরূপ*
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
*পূর্বেই বলা হয়েছে,মহাপ্রভু যে নাচতে নাচতে "যঃ কৌমারহরঃ" শ্লোক পাঠ করেছিলেন,তাঁর মর্মসখা এক স্বরূপদামোদর ছাড়া ঐ শ্লোকের মর্ম আর কেউই বুঝতে পারেননি।মহাপ্রভু শ্রীরূপের শ্লোক দেখে অবাক হলেন।অবাকের কারণ এই যে শ্রীরূপ তাঁর মনের ভাব কিভাবে জানলেন? "যঃ কৌমারহরঃ"শ্লোকের ভাষা,ভাব ও ছন্দের সম্পূর্ণ সাম্য রেখে শ্রীরূপ গোস্বামী নিমেষের মধ্যে "প্রিয়ঃ সোহয়ং কৃষ্ণঃ" এই শ্লোক বিরচিত করেন।শ্রীরূপ মহাপ্রভুর শ্রীমুখোদ্গীর্ণ কাব্যপ্রকাশের শ্লোক ও স্বরূপের পদ-গান শুনে মহাপ্রভুর মনের ভাব বুঝতে পেরেছিলেন।বিশেষ করে ইতঃপূর্বেও মহাপ্রভু তাঁকে কৃপা করেছিলেন।শ্রীরূপ মহাভক্ত,মহাকবি।তাঁর এই শ্লোকটি প্রকৃতই কাব্যসিন্ধুর দুর্লভ সুধাস্বরূপ।এই শ্লোকের অভিপ্রায় সম্বন্ধে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে এরকম লেখা আছে,যথা=*
*🌷যে কালে করেন জগন্নাথ-দরশন।*
*🌷মনে ভাবে কুরুক্ষেত্রে পাঞাছি মিলন।।*
*🌷রথযাত্রায় আগে যবে করেন নর্তন।*
*🌷তাহা এই পদ মাত্র করেন গায়ন।।*
*তথাহি পদম্*
*🌷সেইতো পরাণ নাথ পাইনু।*
*🌷যাহা লাগি মদন দহনে ঝুরি গেনু।।*
*🌷এই ধূয়া গানে নাচে দ্বিতীয় প্রহর।*
*🌷কৃষ্ণ লঞা ব্রজে যাই এ ভাব অন্তর।।*
*🌺শ্রীরূপের রচিত "প্রিয়ঃ সোহয়ং কৃষ্ণঃ" শ্লোকটি মহাপ্রভুর মনের কথা শ্রীচৈতন্য যা মনে করে "যঃ কৌমারহরঃ" শ্লোকটি আবৃত্তি করেছিলেন,শ্রীরূপ সেই সেইভাব সেই ছন্দ ঠিক রেখে উক্ত শ্লোক রচনা করেন। সুতরাং মহাপ্রভু বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে শ্লোকটি পাঠ করলেন,পাঠ করে প্রেমাবিষ্ট হলেন।উক্ত শ্লোকের তাৎপর্য্য ও অর্থ প্রকাশ করবার জন্য শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত বলেছেন=*
*🌷 এই শ্লোকের সংক্ষেপার্থ শুন ভক্তগণ।*
*🌷জগন্নাথ দেখি যৈছে প্রভুর ভাবন।।*
*🌷শ্রীরাধিকা কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণের বর্ণন।*
*🌷যদ্যপি পায়েন তবু ভাবেন ঐশ্বর্য্যন।।*
*🌷রাজবেশ হাতী ঘোড়া মনুষ্য গহন।*
*🌷কাহা গোপবেশ,কাহা নির্জন বৃন্দাবন।।*
*🌷সেই ভাব সেই কৃষ্ণ সেই বৃন্দাবন।*
*🌷যবে পাই তবে হয় বাঞ্জিত পূরণ।।*
*ভাবনিধি শ্রীগৌরাঙ্গের কি অদ্ভুত ভাববৈচিত্র্য!শ্রীজগন্নাথদেবের শ্রীমূর্তি পাঠকগণের অনেকেই সাক্ষাৎ দর্শন করেছেন।শ্রীরাধিকা অনন্ত মাধুর্য্যময় মুরলীধারী শ্রীমদনমোহনের রূপমাধুরী দেখে যেরকম আকুল হতেন,এই হস্তহীন "চকা-বকা" মুখ-বিশিষ্ট শ্রীজগন্নাথ মূর্তি দর্শনে মহাপ্রভু শ্রীরাধিকার মত আকুল হয়ে "যঃ কৌমারহরঃ" শ্লোক পাঠ করেছিলেন,আর নয়নজলে তাঁর শ্রীঅঙ্গ ভেসে যাচ্ছিল।সেই প্রাণনাথকে পেয়েও মনের মত সঙ্গ-সুখ-সম্ভোগের আনন্দ অনুভব হল না। "রাজবেশ হাতী ঘোড়া মনুষ্য গহনে" মন মাতিল না,সেই গোপবেশ,সেই নির্জন বৃন্দাবন-লাভের জন্য হৃদয়ের বাসনা বলবতী হয়ে উঠিল।শ্রীরূপ বাস্তবিক উক্ত শ্লোকে মহাপ্রভুর হৃদয়ের কথা প্রকাশ করেছিলেন।*
*শ্রীল সনাতন গোস্বামী শ্রীভাগবতে দশম স্কন্ধের ৮২ অধ্যায়ের ৩৫ শ্লোকের টীকায় ঐ শ্লোকটির শ্রীভাগবতানুগত ভাবের ধ্বনি করে রেখেছেন।পূজ্যপাদ শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতকারও শ্রীভাগবতের ঐ শ্লোকের উদ্ধৃত করেছেন। তদ্ যথা=*
*🌷••••••••তে নলিননাভ পদারবিন্দর,*
*🌷যোগেশ্বরৈ হৃদিবিচিত্র্য মগাধব্যেধৈ।*
*🌷সংসারকূপপতিতোত্তরণাবলম্বন,*
*🌷গেহং জুষামপি মনস্যুদিযাৎ সদা ন।।*
*🍀কুরুক্ষেত্রে গোপীগণ শ্রীকৃষ্ণের সহিত মালিত হলে শ্রীকৃষ্ণ তাঁদেরকে তত্ত্বজ্ঞান শিক্ষা প্রদান করেন।গোপীগণ অতীব প্রেমিকা।তাঁর তত্ত্বজ্ঞান নিয়ে কি করবেন?গোপীরা শ্রীকৃষ্ণ-বিরহ সহ্য করতে পারেন না, এবং ব্রজ ছাড়া অন্যত্র শ্রীকৃষ্ণরস-মাধুর্য্য অনুভব করতেও পারেন না।রাজবেশ হাতী ঘোড়া ও জন-মানব-প্রবাহের কল্লোল-কোলাহলে তাঁদের চিত্ত বিচলিত হয়ে পড়ে।তাঁরা সেইজন্য গোপবেশ ও নির্জন শ্রীবৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ-মিলনের আকাঙ্ক্ষা করেন।এই শ্লোকে বক্রোক্তি দ্বারা তাঁরা শ্রীবৃন্দবনে শ্রীকৃষ্ণের চরণারবিন্দ লাভের জন্য প্রার্থনা করছেন।উক্ত শ্লোকের বৈষ্ণব-তোষণী টীকায় "যঃ কৌমারহরঃ" শ্লোকের ধ্বনি দিয়ে শ্রীল রূপগোস্বামীপাদ "প্রিয়ঃ সোহয়ং কৃষ্ণঃ সহচরি কুরুক্ষেত্রে মিলিতঃ" পদ শ্লোকটি উদ্ধৃত করা হয়েছে। পূজ্যপাদ কবিরাজ গোস্বামী এই তিনটি শ্লোকই উদ্ধৃত করে সবিশেষ রসের পুষ্টি করেছেন।রসিক মহানুভব-চক্রবর্তী শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী মহোদয় শ্রীসনাতন গোস্বামীপাদের ব্যাখ্যা অবলম্বনে এই শ্লোকের যে ব্যাখ্যা করেছেন,তার সার মর্ম এই যে=*
*🌹হে নলিননাভ,হে অজ্ঞানধ্বান্তভাস্কর, আমরা তোমার তত্ত্বজ্ঞানানলে জ্বলে জ্বলে মরছি। আমরা চকোরী, তোমার শ্রীমুখশশীর হাসিমাখা জ্যোৎস্না-সুধাই আমাদের জীবনের অবলম্বন।আমরা তত্ত্বজ্ঞান নিয়ে কি করব?অনন্ত একবার শ্রীবৃন্দাবনে চলো।রাসাদিবিলাসের দ্বারা আমাদের প্রাণ রাখো।আরও দেখ! যোগেশ্বরগণ তোমার চরণ নিজ নিজ হৃদয়ের মধ্যে চিন্তা করেন, কিন্তু আমরা কি তা পারি? আমরা সেটি বক্ষের উপর ধারণ করেই বেঁচে থাকি।যোগেশ্বরগণ গম্ভীরবুদ্ধি, তাঁরা তোমার শ্রীপাদপদ্ম, ধ্যান করতে পারেন ; কিন্তু আমরা একে অবলা, তাতে আবার বুদ্ধিহীনা, আমরা কি করে তোমার ধ্যান করব? তোমার শ্রীচরণ চিন্তা করতে গেলেই আমরা মূর্ছা সাগরে ডুবে যায়।আমরা কোন বলে বা শক্তিতে তোমার ধ্যান করব? তোমার পাদপদ্ম চিন্তা করলে লোকে সংসার-সাগর হতে উদ্ধার পাই তা সত্য, কিন্তু যারা তোমার বিরহ-সমুদ্রে ভাসমান, তারা তোমার শ্রীচরণতরণীর সঙ্গ-অবলম্বন ছাড়া কিছুতেই উদ্ধার পাই না।আমরা যে তোমার জন্য শিশুকাল হতেই সংসার ছেড়ে তোমার বিরহসাগরে অকুল পাথারে ভেসে চলেছি।পাদপদ্মের চিন্তায় আমাদের কি হবে? আমরা শ্রীচরণ-সঙ্গ ছাড়া কিছুতেই দেহধারণ করতে পারব না।যদি বলো "দ্বারকায় চলো সেইখানেই তোমাদের সঙ্গে কেলিবিলাস করব"। আমরা তাও পারি না।শ্রীবৃন্দাবন আমরা ভীষণ ভীষণ ভালবাসি।বৃন্দাবন ছাড়তে পারব না। তোমার এই রাজবেশ,আর তোমার এই রাজধানী,এসবের কিছুই আমাদের হৃদয়ে ভাল লাগে না। তোমার পরণে ধড়া,মাথায় চূড়া,আর হাতে মোহন বাঁশী,ঐরকম দেখতে আমরা বড় ভালবাসি।*
*শ্রীরূপ গোস্বামীপাদের তালপাতায় লেখা প্রাগুক্ত (পূর্ব উল্লিখিত)শ্লোকের এটিই মর্ম।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত এর এরকম অনুবাদ করেছেন।*
*🌷রাজবেশ হাতী ঘোড়া মনুষ্য গহন।*
*🌷কাঁহা গোপ-বেশ,কাঁহা নির্জন বৃন্দাবন।।*
*🌷সেই ভাব,সেই কৃষ্ণ,সেই বৃন্দাবন।*
*🌷যবে পায় তবে হয় বাঞ্জিত পূরণ।।*
*🍁মহাপ্রভু শ্রীরূপের এই শ্লোকে প্রকৃতই অবাক হলেন।তিনি স্বরূপ গোঁসাইকে জিজ্ঞাসা করলেন,স্বরূপ! শ্রীরূপ আমার মনের কথা জানল কিভাবে?স্বরূপ বললেন,তোমার কৃপা ছাড়া কে তোমার মনের কথা জানতে পারে! আমার মনে হয় তুমি কোন না কোন সময়ে শ্রীরূপকে কৃপা করেছ,নচেৎ তোমার কথা অন্যে কি করে জানবে?*
*☘মহাপ্রভু বললেন তা অবশ্য ঠিক।পূর্বে প্রয়াগে রূপের সঙ্গে আমার যখন দেখা হয়,তখন রূপকে যোগ্যপাত্র মনে করে শক্তি সঞ্চার করি, এবং কিছু উপদেশও প্রদান করি। শ্রীরূপ রস-বিচারে অতি যোগ্য।তুমি রূপকে রসের বিষয়ে সবিশেষ উপদেশ প্রদান করবে। স্বরূপ বললেন,তুমি যে রূপের প্রতি কৃপা করেছ,তা আর বলবার অপেক্ষা কি?এই শ্লোক দেখেই আমি বুঝেছি তোমার অনুগ্রহ ছাড়া এরকম হয় না। "ফলেন ফল-কারণমনুমীয়তে", অর্থ্যাৎ ফল দেখলেই ফলের কারণ অনুমান হয়ে থাকে। নৈষধকার বলেন=*
*🌷স্বর্গাপগাহেম মৃণালিণীণাৎ,*
*🌷নালামৃণালাগ্রভুজো ভজমি,*
*🌷অন্নানুরূপাং তনুরূপ ঋদ্ধিং,*
*🌷কার্য্যং নিদানাদ্ধি গুণাতধীত।*
*(তৃতীয় সর্গ ১৭শ্লোক নৈষধ)*
*🌻অর্থ্যাৎ দময়ন্তীকে হংস বলছেন,আমরা স্বর্গনদাহ সুবর্ণ কমলিনীর ও মৃণালের অগ্রভাগ ভোজন করি। সুতরাং ভক্ষ্য বস্তুর অনুরূপ শরীর সৌন্দর্য-সম্পৎ লাভ করেছি, যেহেতু কারণ হতেই কার্য্য সেটির গুণ লাভ করে থাকে।*
*🌳শ্রীরূপের শ্লোক দেখেই বুঝেছি করুণাময় গৌরহরির কৃপা ব্যতীত কখনও এমন শ্লোক রচিত হতে পারে না।শ্রীল সার্বভৌম এবং শ্রীল রামানন্দ রায় মহাশয়ও শ্লোক শুনে ঐরকম অভিপ্রায়ই প্রকাশ করেন। যে শ্রীরূপ মহাপ্রভুর শক্তি-সঞ্চার-ফলে এইরকম কবিত্ব ও রসতত্ত্ববিচারে পান্ডিত্য লাভ করেছিলেন,স্বরূপ সেই শ্রীরূপকেও বিশেষভাবে রসতত্ত্ব শিক্ষা দিবার জন্য গৌরহরি আদেশ করলেন।যথা শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে=*
*🌷যোগ্যপাত্র হয় গূঢ়রস-বিবেচনে।*
*🌷তুমিও কহিও তারে গূঢ় রসাখ্যানে।।*
*(মধ্যলীলা প্রথম পরিচ্ছেদ)*
*🌷তবে শক্তি সঞ্চারি আমি কৈল উপদেশ।*
*🌷তুমিও কহিও উহাঁয় রসের বিশেষ।।*
*(অন্ত্যলীলা প্রথম পরিচ্ছেদ)*
*🌹শ্রীদামোদর-স্বরূপ প্রকৃতই যে রস-স্বরূপ এতে তা আরও স্পষ্টভাবে বুঝা যেতে পারে।মহাপ্রভুর কৃপা আদেশে শ্রীপাদ স্বরূপ রসতত্ত্বাচার্য্য শ্রীরূপেরও রসতত্ত্ব শিক্ষার গুরুপদে প্রতিষ্ঠিত হলেন।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌻🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(০৯)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*শ্রীস্বরূপের---সখা*
===============
*🌺শ্রীপুরুষোত্তমে শ্রীস্বরূপের একজন প্রিয়তম সখা ছিলেন, শ্রীভগবান আচার্য্য। শ্রীস্বরূপের অন্য সখা শ্রীল পুন্ডরীক বিদ্যানিধি। তাঁর কথা পরে বলব। ভগবান আচার্য্য ঐশ্বর্য্যবিলাসের কোমল কোলে লালিত পালিত এবং প্রবর্দ্ধিত হয়েও বৈরাগ্যের মূর্তিমান বলে জনসমাজে সমাদৃত ও পরিপূজিত হতেন। ভগবান আচার্য্যের পিতা শতানন্দ খান প্রচুর সম্পত্তির অধীশ্বর ছিলেন।এই শতানন্দের দুই পুত্র, বড় পুত্রের নাম ভগবান আচার্য্য ও ছোট পুত্রের নাম গোপাল ভট্টাচার্য্য।খান মহাশয়ের এক পুত্র আচার্য্য অপর পুত্র ভট্টাচার্য্য উপাধি লাভ করলেন কিভাবে, এ সম্বন্ধে পাঠকগণের মন কৌতূহল হতে পারে।আমরা শ্রীগ্রন্থে এই প্রশ্নের কোন মীমাংসা দেখতে পেলাম না।এ সম্বন্ধে যুক্তি-সঙ্গত অনুমান এই যে শতানন্দের পূর্বপুরুষগণ মুসলমান রাজ-সরকারে কাজ করে "খান" উপাধি পেয়েছিলেন। এখনও অনেক জায়গায় "খান" উপাধিধারী ব্রাহ্মণ দেখতে পাওয়া যায়। শতানন্দ খান মহাশয় বিষয়ী ছিলেন।বিষয়ানুগত পদবীতেই তাঁর পদবী চলে আসছিল। কিন্তু পুত্রদের জীবনস্রোত অন্য পথে পরিচালিত হওয়ায় তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন পদবীতে জনসমাজে খ্যাত হলেন।ছোট পুত্র গোপাল কাশীতে ধর্ম শাস্ত্রাদি পাঠ করে ভট্টাচার্য্য বলে খ্যাতি লাভ করেন।শ্রীভগবান "আচার্য্য" পদবী পেলেন কেন? এ সম্বন্ধে আমাদের অনুমান প্রকাশ করা যাচ্ছে।শ্রীভগবান শাস্ত্রাধ্যায় করে পরম পন্ডিত হলেন,আর্য্য-পথে তাঁর চিত্ত ধাবিত হল। তিনি বৈরাগ্য ব্রত অবলম্বন করলেন। যথা চৈতন্যচরিতামৃতে=*
*🌷পুরুষোত্তমে প্রভুপাশে ভগবান আচার্য্য।*
*🌷পরম বৈষ্ণব তিঁহো সুপন্ডিত আর্য্য।।*
☆ ☆ ☆ ☆
*🌷তার পিতা বিষয়ী বড় শতানন্দ খান।*
*🌷বিষয়-বিমুখ আচার্য্য বৈরাগ্য প্রধান।।*
*🍀যদিও ব্রাহ্মণগণের মধ্যে বংশ পরম্পরায় "আচার্য্য" পদবী চলে আসছে,কিন্তু এই ভগবান যে আচার্য্য পদবী লাভ করেছিলেন তা কেবল তাঁর নিজের আচরণে ও পান্ডিত্যে। তিনি সুপন্ডিত,অশেষ শাস্ত্রোধ্যাপক, আর্য্যমার্গানুসারী ও বিষয়-বিমুখ।শাস্ত্র অনুসারেই তিনি আচার্য্যপদ লাভের উপযুক্ত ছিলেন।শাস্ত্রকার বলেন=*
*১)আচারে শাসয়েদ্ যস্তু স আচার্য্য উদাহৃতঃ।*
*২)উপনীয় তু যঃ শিষ্য বেদমধ্যাপয়েদ্দিজঃ।*
*সঙ্কল্পং সরহস্যঞ্চ তমাচার্য্যঃ প্রচক্ষ্যতে।।*
*৩)আম্নায়তত্ত্ব বিজ্ঞানাচ্চরাচর সমাসতঃ।*
*যমাদিযোগসিদ্ধত্বাদাচার্য্য ইতি কথ্যতে।।*
*🌻ইত্যাদি বচন-প্রমাণে সদাচার অভিজ্ঞ,সুনিপণ অধ্যাপক ও আম্নায়তত্ত্ববিজ্ঞানশীল শ্রীভগবান খান আচার্য্য পদবী লাভের যথার্থ গুণবত্তা লাভ করেছিলেন। প্রকৃত আচার্য্যের যে সব গুণ থাকা উচিত,সবই তাতে বিদ্যমান ছিল। বিলাসের কোমল কোলে প্রতিপালিত হয়েও ভগবান আচার্য্য কঠোর বৈরাগ্য-ব্রতাবলম্বী ছিলেন।যম নিয়মাদি দুশ্চর তপশ্চর্য্যা দ্বারা তিনি একান্ত ভগবদ্ভক্তি লাভ করেছিলেন।তাঁর বিষয়-বিমুখতা ও বৈরাগ্যব্রত দেখে শ্রীস্বরূপদামোদর তাঁকে আপন বলে মনে করলেন।ক্রমেই উভয়ের যখন গাঢ় পরিচয় হতে লাগল তখন উভয়েই উভয়কে উত্তমরূপে বুঝতে পারলেন। ভগবান আচার্য্যের হৃদয় সরল ও সতত সখ্যভাবময়, ব্রজ-বালকদের মত সদানন্দ ও প্রফুল্ল-ভাব,তাঁর সেইরকম উদ্যম ও সবসময় সেইরকম তরুণ তারল্য। যথা চরিতামৃতে পায়=*
*🌷
*🌷সখ্য ভাবাক্রান্ত চিত্ত গোপ-অবতার।*
*🌷স্বরূপ গোসাঞীর সহ সখ্য ব্যবহার।।*
*🌹কেবল এটিই নয়,ইনি একান্ত ভাবে শ্রীচৈতন্য চরণাশ্রিত।সুতরাং এরকম মহাপুরুষ যদি স্বরূপ গোঁসায়ের সখা না হন, তবে আর তাঁরসখার যোগ্য কে?শ্রীপাদ কবিরাজ গোস্বামী শ্রীভগবান আচার্য্যের গুণ প্রকাশ করেছেন,তারমধ্যে সর্বপ্রধান গুণ এই যে=*
*🌷একান্তভাবে আশ্রিয়াছেন চৈতন্য চরণ।*
*🍀একান্ত ভাবে শ্রীভগবানের চরণ আশ্রয় করা কাকে বলে,ভক্তিনিষ্ঠ পাঠকগণের তা অজানা নাই।অনভিজ্ঞ পাঠকদের জন্য এই সম্বন্ধে দুই-একটি কথা এখানে আলোচ্য। ঐকান্তিকতা বা একান্ত ভাব কাকে বলে, শ্রীহরিভক্তিবিলাসে তৎসম্বন্ধে প্রমাণ আছে। এ স্থলে তা উল্লেখযোগ্য। তদ্ যথা=*
*🌷একান্তেন সদা বিষ্ণৌ যস্মাদ্দেবে পরায়ণাঃ।*
*🌷তস্মাদেকান্তিনঃ প্রোক্তা স্তদ্ভগবতচেতসঃ।।*
*🍀অর্থ্যাৎ যাঁরা একান্তভাবে সবসময়ই বিষ্ণুর আশ্রয় গ্রহণ করেন সেই প্রতিনিয়ত ভাগবতচিত্ত ব্যক্তিগণ "একান্তী"নামে অভিহিত।এই একান্ত ভাবটি কি,অন্য এক শ্লোকে তা প্রকাশ করা যাচ্ছে, যথা=*
*🌷সাধবো হৃদয়ং মহ্যং সাধূনাং হৃদয়ন্ত্বহং।*
*🌷মদন্যন্তে ন জানন্তি নাহং তেভ্যো মনাগপি।।*
*🌹অর্থ্যাৎ সাধুগণ আমার হৃদয়, আমি সাধুগণের হৃদয়।সাধুগণ আমাকে ছাড়া আর অন্য কিছুই জানেন না,আমিও তাঁদেরকে ছাড়া আর কিছু জানি না।ফলে সব পরিত্যাগ করে নিরুদ্বেগহৃদয়ে (শান্তহৃদয়ে) একমাত্র শ্রীভগবানের পাদপদ্ম আশ্রয় করাই ঐকান্তিকতা।*
*সৎস্ত্রী যেমন সৎ-পতির হৃদয় প্রেম দ্বারা সম্পূর্ণভাবে বশীভূত করে নেন,সাধুগণও প্রেমভক্তি দ্বারা শ্রীভগবানকে তেমনি বশীভূত করে থাকেন।শ্রীভগবান এরকম ভক্তকে কখনও পরিত্যাগ করতে পারেন না।*
*🌷ভক্ত আমার পিতামাতা ভক্ত আমার গুরু।*
*🌷ভক্ত আমার নাম রেখেছেন বাঞ্জা কল্পতরু।।*
*🌻ভগবানের শ্রীমুখের আজ্ঞা এই যে =*
*🌷যে দারাগার পুত্রাপ্তান প্রাণনৈ বিত্ত মিমং পরং।*
*🌷হিত্বা মাং শরণং যাতাঃ কথং তাং স্তুক্ত মুৎসহে।।*
*🌺অর্থ্যাৎ যাঁরা স্ত্রী পুত্র গৃহ প্রাণ ধনের মমতা পরিত্যাগ করে আমার শরণাপন্ন হয়েছেন,আমি তাঁদেরকে কিভাবে পরিত্যাগ করব? ফলে ভক্তজন-প্রিয়, ভগবানের হৃদয় সতত তাঁর একান্ত ভক্তগণের অধিকারভুক্ত।*
*🔷এই ঐকান্তিকা চার প্রকার, যথা= ১)বাহ্য ধর্মের প্রতি অনাদর যেমন ঃ---*
*🌷সর্ব্ব ধর্ম্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।*
*অথবা=====*
*🌷যদা যস্যানুগৃহ্নাতি ভগবনাত্মভাবিতঃ।*
*🌷সঃ জহাতি মতিং লোকে বেদেচ পরিনিষ্ঠিতাং।।*
*২)কর্ম জ্ঞানাদির অশেষ-নিরপেক্ষতা, যেমন=*
*🌷সন্তোহনপেক্ষা মচ্চিত্তাঃ প্রশান্তাঃ সমদর্শিনঃ।*
*🌷নির্ম্মমাঃ নিরহঙ্কারা র্নির্দ্বন্দ্বা নিষ্পরিগ্রহাঃ।।*
*৩)বিঘ্নসত্ত্বেও রতিপরতা, যেমন=*
*🌷আপদগতস্য যস্যেহ ভক্তিরব্যভিচারিণী।*
*🌷নান্যত্র রমতে চিত্তং সবৈ ভাগবতো নরঃ।।*
*৪)প্রেমৈকপরতা, যেমন=*
*🌷যেবা ময়ীশে কৃত সৌহৃদার্থা জনেষু দেহম্ভর বার্ত্তিকেষু।*
*🌷গৃহেষু জায়াত্মজরাতিমৎসু ন প্রীতিযুক্তা যাবদর্থাশ্চ লোকে।।*
*🌹অর্থ্যাৎ শ্রীভগবান বললেন যাঁরা আমাতে সৌহার্দ্য(বন্ধুত্ব) করে তাইই পরম পুরুষার্থ বলে মনে করেন, এবং আমাতে রতিবশতঃ স্ত্রী পুত্র দেহ গেহাদিতে রতিবিহীন হন ও দেহযাত্রা নির্বাহের জন্য যাবৎমাত্র ধনের প্রয়োজন,তাতেই সন্তুষ্ট থাকেন তাঁরাই মহৎ।এটিই একান্তি-ভক্তের লক্ষণ।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌷🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/12/swarup.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১০)🙌শ্রীস্বরূপদামোদর🙌*
*শ্রীস্বরূপদামোদরের সখা*
/\/\/\/\/\/\/\/\/\/\/\/\
*🍀শ্রীভগবান আচার্য্য সমস্ত বিষয় ও সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে একান্ত ভাবে শ্রীগৌরাঙ্গ চরণে অনুরক্ত বা অনুরাগী হয়েছিলেন।মহাপ্রভুতে তাঁর অত্যন্ত আসক্তি-নিবন্ধন (নিবন্ধন=হেতু,জন্য,কারণ) মধ্যে মধ্যে নিজ আলয়ে বা বাড়ীতে তিনি মহাপ্রভুকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যেতেন।শ্রীচৈতন্যদেব আমার সন্ন্যাসী।তাঁর আহারের উপকরণ দেখে শ্রীভগবান আচার্য্যের হৃদয়ে সময়ে সময়ে বড় দুঃখ হত।বিশেষকরে নিষ্ঠুর রামচন্দ্রপুরী মহাপ্রভুর সেবায় উপচারাধিক্য (বহুরকমের ব্যঞ্জনাদি) দেখলেই কটাক্ষ করতেন।এমন কি মহাপ্রভুর গৃহে একটা পিঁপড়ে দেখলে রামচন্দ্রপুরী তখুনি মহাপ্রভুর সামনেই বলতেন, এই যে পিঁপড়ে দেখছি,রাত্রে অবশ্যই এখানে গুড় আনা হয়েছিল। বিরক্ত সন্ন্যাসীর ইন্দ্রিয়লালসা ভাল নয়।মহাপ্রভু এইরকম শাসনবাক্য সসম্ভ্রমে ও নীরবে শুনতেন,কোনও প্রত্যুত্তর করতেন না।পরন্তু তিনি এতে খুব বেশীভাবে কঠোরতা অবলম্বন করতেন।আচার্য্য এইজন্য মধ্যে মধ্যে মহাপ্রভুকে গোপনে গোপনে বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে নানা উপচারে তাঁর সেবা করতেন। যথা শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে পাই=*
*🌷পন্ডিতগোসাঞী ভগবান্ আচার্য্য,সার্বভৌম।*
*🌷নিমন্ত্রণের দিন যদি করেন নিমন্ত্রণ।।*
*🌷তাঁ-সভার ইচ্ছায় প্রভু করেন ভোজন।*
*🌷তাঁহা প্রভুর স্বাতন্ত্র্য নাহি যৈছে তার মন।।*
*🌷ভক্তগণে সুখ দিতে প্রভুর অবতার।*
*🌷যাহা যৈছে যোগ্য তৈছে করেন ব্যবহার।।*
*🌷 কভু ত লৌকিক রীতি যৈছে ইতর জন।*
*🌷কভুবা স্বতন্ত্র করেন ঐশ্বর্য্য প্রকটন।।*
*🌷কভু রামচন্দ্রপুরীর হন ভৃত্য প্রায়।*
*🌷কভু তারে নাহি মানে দেখে ভৃত্য প্রায়।।*
*🌷ঈশ্বর চরিত্র প্রভুর,বুদ্ধি-অগোচর।*
*🌷যবে যেই করেন প্রভু সেই মনোহর।।*
*(অন্ত্যলীলা)*
*🌳সেবাবাদী রামচন্দ্রপুরীর শাসনে ভক্তগণ মনের সাধে মহাপ্রভুকে সেবা করাতে পারতেন না।তাই আমাদের প্রাণাধিক শ্রীভগবান আচার্য্য মধ্যে মধ্যে গৌরহরিকে গোপনে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যেতেন।একান্তভক্ত ভগবান আচার্য্যের সেবানুরাগ কি মধুর ও সুন্দর।*
*🍁এই ভগবান আচার্য্যের ছোট ভাই গোপাল ভট্টাচার্য্য কাশীতে বেদান্ত পাঠ সমাপন করে তাঁর দাদার কাছে উপস্থিত হলেন।দাদা ছোটভাইকে নিয়ে মহাপ্রভুর শ্রীচরণ-দর্শন করালেন।ভগবানের ভাই গোপালকে দেখে গৌরহরি বাইরে বাইরে শিষ্টাচার সম্মত কথাবার্তা বললেন বটে, কিন্তু মনে মনে তেমন সন্তুষ্ট হলেন না। না হওয়ার কারণ এই যে গোপাল তখনও ভক্তি-পথের পথিক হননি।ভক্তি ছাড়া আর কিছুতেই শ্রীরাধাকৃষ্ণের পরিতুষ্টি হয় না।কৃষ্ণভক্তি বিহনে কিছুতেই মহাপ্রভুর উল্লাস জন্মে না। গোপাল তাঁর অগ্রজ শ্রীভগবান আচার্য্য মহানুভবের কাছে পুরুষোত্তম অবস্থান করতে লাগলেন।তিনি কাশী হতে বেদান্ত পাঠ করে এসেছেন। ভগবানের ইচ্ছা,ছোট ভাইটি সকলের কাছে পরিচিতি হোক। তাই তিনি একদিন তাঁর প্রিয়সখা স্বরূপদামোদরকে বললেন, অভিন্ন হৃদয়, আমার ভাই গোপাল কাশী হতে বেদান্ত পাঠ করে এসেছে, একবার তার মুখে বেদান্তভাষ্য শোনা যাক না কেন? কথাটা স্বরূপের কাছে ভাল বোধ হল না।স্বরূপ রস-স্বরপ। ভগবান স্বরূপের প্রিয়সখা হয়ে স্বরূপের হৃদয় সম্যকরূপে বুঝতে পারেননি।স্বরূপের কিঞ্চিৎ ক্রোধ হ'ল।স্বরূপের আবার ক্রোধ কি?অন্য কেউ এরকম কথা বললে স্বরূপ সে জায়গা হতে নীরবে চলে যেতেন। কিন্তু ভগবান আচার্য্য তাঁর সখা।সখার সঙ্গে সখার রসকোন্দল শুনতে অতি মধুর।স্বরূপ বললেন,আমি মনে করেছিলাম,তোমার কিঞ্চিৎ বুদ্ধি আছে,এখন দেখতে পাচ্ছি গোপালের সঙ্গ করে তুমি কান্ডাকান্ড-জ্ঞান হারিয়েছ। ছি-ছি-ছি।মায়াবাদ শুনতে তোমার এমন প্রবৃত্তি হল কেন?শঙ্করের শারীরিক ভাষ্য ঘোর মায়াবাদ।এটি কি বৈষ্ণবের শোনা উচিত?যাতে সেব্য-সেবক-সম্বন্ধ বিনষ্ট হয়,ক্ষুদ্র জীব নিজেকে "সোহহং"বলে মনে করে, সোহহং মানে ভগবান।এমন মায়াবাদ কি বৈষ্ণব সাধ করে শুনতে চায়?মায়াবাদ এমনি বিষপূর্ণ যে সেটি বৈষ্ণবের কর্ণে প্রবেশ হলেই বৈষ্ণবতা নষ্ট হয়। যিনি মহাভাগবত,যিনি শ্রীকৃষ্ণকে প্রাণধন বলে মনে করেন,মায়াবাদ শুনিলে সেরকম দৃঢ় বিশ্বাসীর মনও ফিরে যায়,অর্থ্যাৎ ভক্তি নষ্ট হয়ে যায়। আচার্য্য বললেন, সে-কি কথা সখা!আমাদের চিত্ত কৃষ্ণনিষ্ঠ।গোপালের মুখে শাঙ্করভাষ্য শুনেই চিত্ত বিচলিত হবে,এটিও কি হয়?শ্রীকৃষ্ণে আমাদের অটল বিশ্বাস।মায়াবাদে আমাদের কি করবে?ভাষ্য শুনলেই কি আমাদের হৃদয়ের পরিবর্তন ঘটবে?তখন স্বরূপ বললেন,আচ্ছা,মায়াবাদ শুনে তোমার কৃষ্ণনিষ্ঠ চিত্ত নাই বা টলিল। কিন্তু তুমি কি করে মায়াবাদ শুনবে?শুনে কি তোমার কষ্ট হবে না?মায়াবাদের মত এই যে,ব্রহ্মচিন্মাত্র,শ্রীভগবদ্ বিগ্রহ মায়া-কল্পিত, অজ্ঞানবিলসিত, ভ্রমময় ও অসার।ষড়ৈশ্বর্য্যপূর্ণ প্রেম-নিকেতন শ্রীভগবানের সম্বন্ধে এইরকম কদর্য্য অশ্রাব্য ব্যাখ্যা শুনে তোমার হৃদয় কি বিদীর্ণ(ছিন্ন ভিন্ন ) হবে না?স্বরূপের এইকথায় আচার্য্য লজ্জায় মুখ নত করলেন,আর কোন কথা না বলে নীরবে নিজের ভুল স্বীকার করলেন।আচার্য্য সেই হতেই বুঝলেন তাঁর স্নেহের সহোদর গোপালের সঙ্গ, তাঁর পক্ষে কুসঙ্গ-স্বরূপ।স্বরূপের প্রেম-তিরস্কার আচার্য্যের নতুন করে চোখ ফুটিয়ে তুলিল। তিনি তাঁর স্নেহ-বন্ধন ছিন্ন করে গোপালকে বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন, আর গোপালের সঙ্গ করলেন না।*
*☘শ্রীদামোদর-স্বরূপ এ জায়গায় শাঙ্করভাষ্যের কথা-প্রসঙ্গে মায়াবাদের নাম মাত্র উল্লেখ করেই আচার্য্যকে নীরব করে দিলেন বা চুপ করিয়ে দিলেন।ভগবান আচার্য্য ভক্ত ও পরম পন্ডিত, কিন্তু অতি সরল।মায়াবাদের অন্তরালে যে নিদারুণ বিষরাশি রয়েছে,তিনি তা ভাবননি।মায়াবাদের দ্বারা কেউ কোনদিন ঈশ্বর লাভ করতে পারেননি আর পারবেনও না।একমাত্র ভক্তি ছাড়া ভগবানকে পাওয়া যায় না। যাইহোক, যে নিত্য-সত্য-সচ্চিদানন্দ-বিগ্রহ বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রাণের আরাধ্য পদার্থ,মায়াবাদের অসার যুক্তি,সেই প্রিয়তম প্রাণারাধ্য পদার্থকে কাল্পনিক ও অজ্ঞান-বিজম্ভিত করে তোলে।ভক্তের প্রাণে এইরকম ভগবদ্ অবজ্ঞা সহ্য হয় কি?স্বরূপদামোদরের এই এক কথাতেই ভগবান আচার্য্য চুপ করে রইলেন। তিনিও ঐ মুহূর্তেই তাঁর অসঙ্গত অনুরোধের অযৌক্তিকতা বুঝতে পেরে চুপ করে থাকলেন। এই স্থানেই মায়াবাদ সম্বন্ধে কয়েকটি কথার আলোচনা করে শাঙ্করভাষ্য্য-অনভিজ্ঞ পাঠকগণের কৌতূহল নিবারণ করতে প্রয়াস পেতাম, কিন্তু পূর্ববঙ্গীয় ব্রাহ্মণের নাটক-সমালোচনায় শ্রীস্বরূপের শ্রীমুখ হতে বাহির হওয়া উপদেশ লহরীর আলোকেই সেই তত্ত্ব পাঠকগণের দৃষ্টি গোচর হবে। এক্ষণে সেই প্রসঙ্গের উত্থাপনা করা যাচ্ছে।*
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
🔜 ক্রমাগত 👉 শ্রীস্বরূপদামোদর 🌷 দ্বিতীয় ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/swarup2.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝
꧁👇📖 সূচীপত্র ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖👇꧂
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
*••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
*••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-
শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 👇👇🙏👇👇 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ ꧂ পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/krishna.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ সুধী ভক্তবৃন্দ যে লীলা অধ্যায়নের করতে চান নিম্নে লিংকের উপর ক্লিক করুন 👇👇👇 ✧═══════════•❁❀❁•═════...
শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শিবরাত্রি ব্রতকথা ꧂ শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓ শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓ শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_54.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ পুরাক...
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ꧂ https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *বিবেক বৈরাগ্য দিয়া দু'গলুই করিল।* *ধৈর্য্য তাহার উপর দাঁড়া করিল।।* *আসক্তির তক্তা আনি তাহাতে জুড়িল।* *লালসার পাতান লোহা তাহাতে গড়িল।।* *নববিধা ভক্তি দিয়া নয়টি গুড়া দিল।* *সরল সুবুদ্ধি দিয়া মাস্তুল গড়িল।।* *মন রূপী পাল তাহে উড়াইয়া দিল। *সাধুসঙ্গ কাণি দড়ি চৌদিকে আঁটিল।।* নৌকা গঠন তত্ব দ্বারা।---------------- শ্রী গোবিন্দ আমার সখাদের সঙ্গে গো-চারণ করিতে করিতে সেই কথা মনে পড়েছে, কোন কথা,গোলোক বৃন্দাবনের কথা, ভাই সুবলকে ডেকে বললেন,ওরে ভাই সুবল সখা, আজ আমি যমুন...
🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html
👉 মতানুসারে 👉 https://drive.google.com/file/d/1lS0aV1XBKbzRfve110-R6hJEsX3JHoMQ/view?usp=drivesdk ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏 ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🔘👉🏠Home🏠 🔘👉📝সূচীপত্র📝 🔘👉📚PDF গ্রন্থ📚 🔘👉✉️WhatsApp Chanel✉️ 🔘👉Apps 🔘👉🌐Google Drive🌐 🔘👉 শ্রীশ্রীরাধাকান্ত মঠ🚩শ্রীশ্রীগৌর গম্ভীরা🐚শ্রীধাম পুরী🐚 🔘👉 🗓️ ব্রত তালিকা 🗓️ শ্রীগিরিগোবর্ধন 🙇 🔘👉 🗓️ ব্রত তালিকা 🗓️ শ্রীরাধাকুণ্ড 🙇 🔘👉🖼️ধর্মীয় চিত্রপট🖼️ 🔘 👉 📝শ্রী জয়দেব দাঁ📝 🔘👉📝শ্রী গোপীশরণ দাস📝 🔘👉📝শ্রী দীপ বাগুই📝 🔘👉 🎶শ্রীমতী কুঞ্জশ্রী দাশগুপ্ত🎶 🔘👉📝শ্রী মৃন্ময় নন্দী📝 ✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏 ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ ✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷 *শচীসুতাষ্টকম্ ✍️ শ্রীশ্রী সার্বভৌম ভট্টাচার্য্য বিরচিতং 🙏 সংগৃহীত 🙏 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন* 👉 http://mrinmoynandy.bl...
শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/home-page-pdf-httpsmrinmoynandy_25.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ...
মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ৪২. ব্রহ্মা এবং মহেশ্বর যাঁর আরাধনা করেন 🙇 মনোশিক্ষা🙏 দ্বিতীয় ভাগ🙏শ্রী প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *(৪২)🔥🔥মনো শিক্ষা 🔥🔥* •••••••••••••••••••••••••••••••••••••• *ওরে মন! বিচারিয়া দেখ না হৃদয়* *ধনে জনে যত আর্তি,বাড়ে বই নহে নিবৃত্তি,* *হরি-পদে হৈলে কি না হয়।।* *যা ভাবিলে হবে নাই,তাই ভেবে কাট আই,* *ভাবিলে যে পাও তা না কর।* *লক্ষকোটি যার ধন,সে কি পায় এক মণ,* *বুঝি কেনে ধৈরয না ধর।।* *খাওয়া পরা ভাল চাও,তাই কি ভাবিলে পাও,* *পূর্ব-জন্মার্জিত সেই পাবে।* *কার ধন চিরস্থায়ী,না গণ'আপন আই,* *কত কাল তুমি বা বাঁচিবে।।* *অজ ভব ভবে যাঁরে,কি মদে পাসর তাঁরে,* *"হরি" ভুলি জীয় কোন্ কাজে।* *"হরিনাম"যাতে নাই,সে বদনে পড়ুক ছাই,* *সে মুখ সে দেখায় কোন্ লাজে।।* *...
বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═════...
শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🙏 প্রথম ভাগ ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••┉❀꧁👇 🏠Home Page🏠👇 ꧂❀┅••••* 👉 MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 Boisnob.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/pdf_22.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *•❀꧁ 📖সূচীপত্র 🙏 শ্রী জয়দেব দাঁ 📖 ꧂❀•* 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html 👉...
*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ *নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্* ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 🌐 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠👇👇🙏👇👇📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।* *পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।* = = = = = = = = = = = = = = = = = *মুলানুবাদ=হে রসবিশেষভাবনা-চতুর রসিক ভক্তগণ!শুকমুনির মুখনির্গলিত দেব-কল্পতরুর শ্রীমদ্ভাগবত নামক পরমানন্দরসময় ফল সাধনকাল হতে মোক্ষক...
শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম্য ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ https://Gopisharan.blogspot.com 🙏 সূচীপত্র ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/home-page-pdf-httpsmrinmoynandy_25.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহ...