🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/krishna.html

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
             ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ ꧂
           পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা 
           ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 নবোঢ়া পূর্বরাগ 🙏 দ্বিতীয় ভাগ ꧂
           পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা 
           ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌻নবোঢ়া পূর্বরাগ, গৌরচন্দ্রিকা🌻*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*পদ*
*আরে মোর আরে মোর গোরা দ্বিজরাজ।*
*এ  কলি  বিহরয়ে নবদ্বীপ মাঝ।।*
*🙏পরম করুণাময় পতিতপাবন, চিরসুন্দর সর্বজন আকর্ষিত, গোরাচাঁদের কখন কি ভাব নিয়ে কি ভাবে বিভাবিত হন, একমাত্র তিনি ও মহাপ্রভুর অন্তরঙ্গ ভক্ত ছাড়া আন জনের বোধগম্য হয় না। আজ গৌরসুন্দরের সেই পূরবের কথা মনে পড়েছে। কেন মনে পড়বে না? তিনি তো আর অন‍্য কেউ নহেন, শ্রীরাধা কৃষ্ণের মিলিত তনু গৌরাঙ্গ।ব্রজে যত যত লীলা হয়েছিল বা হচ্ছে, তিনি নবদ্বীপ ও নীলাচলে তা প্রকট করেছেন। আবার কোনলীলা বৃন্দাবনে গিয়েও প্রকট করেছিলেন। বৃন্দাবনে কোন লীলা প্রকট করেছিলেন আপনারা জানেন? নিশ্চয় জানবেন! তবে আমি আবার স্মরণ করিয়ে দিই।বৃন্দাবনে মহাপ্রভু কালিয়দমন লীলা প্রকট করেছিলেন। যাই হোক,অদ‍্য মহাপ্রভু ব্রজের ভাবে বিভাবিতা হয়ে সেই "পুতুল খেলা" লীলার, কথা মনে পড়েছে।*
*🌹তাই তিনি  এ কলিযুগে, এ কলি, এই কলিকালে অপর অর্থ হলো,একেলা,তিনি নবদ্বীপ মাঝে বিহার করছেন। এই লীলা মহাপ্রভু একটু বেশী বয়সে প্রকট করেছিলেন।*
*পদ*
*পুতুল লইয়া গোরা নিরজনে বসি*।
*আনন্দে করয়ে খেলা মোর গোরা শশী।।*
*🌻ভাব নিধি শ্রীগৌরাঙ্গ প্রত‍্যহ ভোরবেলা নিদ্রা হতে উঠেন। ভোরবেলা উঠে গৃহ হতে বেড়িয়ে ঘোরাফেরা করে বেশ কিছুক্ষণ পরে গৃহে ফিরে আসেন।সেই সময় দেখা যায় শচীমা দেবমন্দিরে বসে তাঁর ইষ্টদেবের পূজো করেন।তখন গৌরসুন্দর মায়ের পাশে বসে একমনে পূজো দর্শন করেন।মায়ের পূজো হয়ে গেলে মা দেবমন্দির থেকে বেড়িয়ে নিমাইয়ের জন্য খাবারের ব‍্যবস্থা করেন, ঠিক ঐ সময়ে নিমাই ঠাকুরঘরে বসে একাকী নির্জনে কি যেন ভাবেন।ঘরে শ্রীশ্রীলক্ষ্মীনারায়ণের বিগ্রহ আছে, ঠিক তাঁর পিশে একটি কৃষ্ণ বিগ্রহ রাখা ছিল।সেই বিগ্রহ নিয়ে মহাপ্রভু বক্ষে ধারণ করে কি যেন বিড়বিড় করে বলছেন আর নয়নজলে ভেসে যাচ্ছেন।একবার বিগ্রহের প্রতি দেখছেন আর একবার আকাশ পানে দেখছেন।*
*🌻বেশ কয়েকবছর পরে, শ্রবণ করুন।*
*পদ*
*সেই কালে ঈশ্বরপুরী আসি উপজিল।*
*আপনি হইয়াসগুরু নাম কর্ণে দিল।।*
*🌻পূর্বে এক সময় শ্রীঈশ্বরপুরীপাদ তীর্থ ভ্রমণ করতে করতে নবদ্বীপে আগমন করেন এবং গোপীনাথ আচার্য‍্যের গৃহে অবস্থান করেন।তখন গৌরসুন্দর অধ‍্যাপনা করেন।নবদ্বীপে এসে শ্রীপুরীপাদ ছদ্মবেশে নদীয়ায় এলেন।"কৃষ্ণ-প্রেম-রসে বিহ্বল "।*
*🍀তান বেশে তান কেহ চিনিতে না পারে।*
*🍀দৈবে গিয়া উঠিলেন অদ্বৈত-মন্দিরে।।*
        *(শ্রীচৈঃ ভাঃ আদি ১১শ অঃ)*
*🌻সেই সময় দেবমন্দিরে শ্রীঅদ্বৈতাচার্য‍্য কৃষ্ণ সেবা করছেন।সেখানে সাবধানে গিয়ে ঈশ্বরপুরীপাদ বসলেন।বৈষ্ণবের তেজ বৈষ্ণবের কাছে লুকোনো সম্ভব নয়।অদ্বৈত আচার্য‍্য বারবার তাঁর দিকে দেখতে লাগলেন ; শেষে জিজ্ঞাসা করলেন, বাপ!তুমি কে?*
*🍀বৈষ্ণব সন্ন‍্যাসী তুমি হেন লয় মনে।*
*সেই কালে ঈশ্বরপুরী আসি উপজিল।(নয়)।*
*হেন কালে ঈশ্বরপুরী আসি উপজিল।(হবে)*

*🙏শ্রীপাদ ঈশ্বর পুরী অত‍্যন্ত দৈন‍্য ভরে উত্তর দিলেন,আমি অতি শূদ্রাধম,তোমার শ্রীচরণ দর্শন করতে এলাম।(কারণ শ্রীপাদপুরী জানতেন ইনি আমার গুরুভাই,আমার পূর্বে ইনি শ্রীগুরুপাদপদ্মে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, দুই,বৈষ্ণবের মূল হচ্ছে দৈন‍্য।) যাইহোক,বিপ্র শিরোমণি সন্ন‍্যাসী প্রবর ঈশ্বরপুরীপাদ কত দৈন‍্য ভরে উত্তর দিলেন।দৈন‍্যই সাধুর ভূষণ।সেইখানে শ্রীমুকুন্দ দত্ত ছিলেন,তাঁকে দেখেই বুঝতে পেরেছেন ইনি বৈষ্ণব সন্ন‍্যাসী। তখন মুকুন্দ অতি সুস্বরে একটি শ্রীকৃষ্ণলীলা কীর্তন ধরলেন।মুকুন্দের মধুর কন্ঠধ্বনির কাছে কে স্থির থাকতে পারেন?*
*🌻ঈশ্বরপুরীপাদ প্রেমে ঢলে পড়লেন ভূমির উপর।নয়নের জলে ধরাতল সিক্ত হতে লাগল।বৈষ্ণবগণ দেখে অবাক হলেন।এত-----------প্রেম! পরে বলতে লাগলেন, এমন কৃষ্ণভক্ত তো কখনও দেখি নাই।অদ্বৈতাচার্য‍্য তখনি তাঁকে দৃঢ়ভাবে আলিঙ্গন করলেন। তারপর সকলে চিনতে পারলেন ইনি শ্রীপাদ মাধবেন্দ্র পুরীর প্রিয় শিষ‍্য ঈশ্বরপুরী।সকলে আনন্দে "হরি হরি ধ্বনি করতে লাগলেন।*
*🌹ঈশ্বরপুরী নবদ্বীপে বহুদিন আছেন, একদিন দৈবক্রমে পথে গৌরসুন্দরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।নিমাই পাঠশালা থেকে গৃহে ফিরছেন।*
*🍀চাহেন ঈশ্বরপুরী প্রভুর শরীর।*
*🍀সিদ্ধ পুরুষের প্রায় পরম গম্ভীর।।*
*🌻শ্রীপুরীপাদ একদৃষ্টে নবদ্বীপ বিহারী গোরাচাঁদের দিকে তাকিয়ে পরে জিজ্ঞাসা করলেন,বিপ্রবর!তোমার নাম কি?ঘর কোথায়? ও হাতে পুঁথি পড়াও নাকি? মহাপ্রভু দৈন‍্য ভরে শ্রীপুরীপাদকে প্রণাম করলেন।সঙ্গে শিষ‍্যগণ ছিল, বলতে লাগলেন,ইঁনার নাম শ্রীনিমাই পন্ডিত, পুরীপাদ বললেন,তুমি সেই-ই নিমাই পন্ডিত!পুরীপাদ বড় হরষিত হলেন।মহাপ্রভু বিনীত ভাবে মস্তক নত করে বললেন,শ্রীপাদ!কৃপা করে অদ‍্য আমার ঘরে চলুন, মধ‍্যাহ্নে সেখানেই প্রসাদ গ্রহণ করবেন।কত বিনয় ভাবে মধুর বাক‍্যে আমন্ত্রণ।মন্ত্রমুগ্ধের মত শ্রীপুরীপাদ মহাপ্রভুর গৃহে এলেন।মহাপ্রভু প্রণয় ভরে নিজহস্তে শ্রীপুরীপাদের শ্রীচরণ ধৌত করে দিলেন।প্রেমময়ী শচীদেবী তাড়াতাড়ি নানানরকম নৈবেদ‍্য প্রস্তুত করে ভগবানকে নিবেদন করলেন।তারপর সেই প্রসাদ ঈশ্বরপুরীকে দিলেন, তিনি  মহানন্দে প্রসাদ সেবা করলেন। অবশেষ যা ছিল মহাপ্রভু গ্রহণ করলেন।*
*🌻বিষ্ণুমন্দিরে বসে উভয়ে কিছুক্ষণ কৃষ্ণকথা বললেন।উভয়ের মন প্রেমে ভরপুর হয়ে উঠল।*
*🍀শ্রীপুরীপাদ কয়েকমাস এই ভাবে গোপীনাথ আচার্য‍্যের গৃহে থাকলেন।মহাপ্রভু নিত‍্য একবার তাঁর শ্রীচরণ দর্শন করতে আসতেন।মাঝে মধ্যে নিজগৃহে আমন্ত্রণ করতেন।তখন শ্রীগদাধর অতি শিশু।পুরীপাদ গদাধরকে খুবই স্নেহ করতেন। পুরীপাদ তাঁকে নিজকৃত "শ্রীকৃষ্ণলীলামৃত" গ্রন্থ অধ‍্যয়ন করাতেন।মহাপ্রভু রোজ সন্ধ‍্যাবেলা শ্রীপুরীপাদকে প্রণাম করতে আসতেন।*
*🌹একদিন পুরীপাদ মহাপ্রভুকে বললেন,নিমাই!তুমি বড় পন্ডিত, আমি এই পুঁথি লিখেছি,কেবল শ্রীকৃষ্ণচরিত,পড়ে দেখ,যদি কোন দোষ থাকে সংশোধন করে দিও। পুরীপাদের এই কথ শুনে মহাপ্রভু হাসতে হাসতে বললেন, "ভক্তবাক‍্য কৃষ্ণের বর্ণন" যে ভক্ত কেবল শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া আন জানেন না,তাঁরা যদি শ্রীকৃষ্ণ বর্ণন করেন,সেই ভক্তের মধ্যে কোন দোষ থাকে না।যে দোষ দেখে,সেইজন মহাপাপী।*
*🌻ভক্ত যে ভাবেই শ্রীকৃষ্ণের চরিত বর্ণনা করুন না কেন, তাতেই শ্রীকৃষ্ণ মহা আনন্দ পান।প্রকৃত ভক্তের যে দোষ ধরে শ্রীকৃষ্ণ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।*
*🌺তারপর শ্রীপুরীপাদ গোপীনাথ আচার্য‍্যের গৃহ থেকে বিদায় নিলেন। তার কয়েক বছর পরে মহাপ্রভু পিতৃ পিন্ডদানের ছলনায় গয়ায় গেলেন।সে সময় শ্রীপুরীপাদ গয়ায় ছিলেন।*
*🌻মহাপ্রভু সর্বত্র পিন্ডদানাদি শেষ করে যখন শ্রীবিষ্ণুপাদপদ্মে পিন্ডদানের জন্য এলেন,তখন শ্রীপাদপদ্ম দর্শন করে এবং তাঁর মাহাত্ম‍্য শ্রবণ করে প্রেমাবেশে ভূমিতে মূর্ছিত হয়ে পড়লেন, দৈবযোগে হঠাৎ শ্রীপুরীপাদ সেখানে এলেন।*
*🍀শ্রীগৌরাঙ্গসুন্দরকে দেখে তিনি অবাক হলেন এবং শ্রীচন্দ্রশেখর আচার্য‍্যের কাছে সমস্ত কথা শুনলেন।কিছুক্ষণ পরে মহাপ্রভুর চৈতন‍্য হলে, সামনে শ্রীপুরীপাদকে দেখলেন,অমনি উঠে শ্রীপুরীপাদকে দন্ডবৎ প্রণাম করলেন।শ্রীপুরীপাদ গৌরাঙ্গকে দৃঢ় প্রেম আলিঙ্গন করলেন।দুইজনের প্রেমাশ্রুতে দু'জনে ভাসতে লাগলেন।*
*🌻মহাপ্রভু বললেন,*
*🍀প্রভু বলে,গয়া যাত্রা সফল আমার।*
*🍀যতক্ষণে দেখিলাঙ চরণ তোমার।।*
*🌻তখন পুরীপাদ বললেন, আমি তোমার পান্ডিত‍্য ও চরিত্র দেখেই বুঝতে পেরেছি,তুমি ঈশ্বর অবতীর্ণ।আমি আজ শুভস্বপ্ন দেখেছিলাম, তার ফল হাতে হাতে পেলাম।সত‍্য আমার মনের কথা বলছি, পন্ডিত! তোমাকে দর্শন করে আমি পরম আনন্দ লাভ করেছি।আমি যখন তোমাকে নবদ্বীপে দেখেছি তখন থেকে আমার চিত্ত কেবল তোমার চিন্তা ছাড়া যেন আন চিন্তা করতে চাই না।তোমার দর্শনে আমি শ্রীকৃষ্ণ দর্শনের সুখ পাচ্ছি।মহাপ্রভু বেশ কয়েকদিন গয়ায় ছিলেন।অন‍্য একদিন মহাপ্রভু বিনীত ভাবে শ্রীপুরীপাদের নিকট বললেন,আমাকে কৃপা করে আপনার শ্রীচরণে আশ্রয় দিন।দীক্ষা মন্ত্র দিন,মন্ত্র দীক্ষার অভাবে আমার চিত্ত বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছে।তারপর একদিন পুরীপাদ মধ‍্যাহ্নে মহাপ্রভুর বাসস্থলে এলেন।মহাপ্রভু নিজে রন্ধন করে শ্রীপুরীপাদকে সেবা দিলেন।পরে মন্ত্র দীক্ষা গ্রহণ করলেন।*
*🌹অন‍্য এক নিমাইয়ের আবির্ভাব হল।*
*পদ*
*🍀আসিয়া গৌরাঙ্গ অঙ্গে কৃষ্ণ নাম লিখি।*
*🍀নাম দেখি ভক্তগণের ছল ছল আঁখি।।*
*🍀রাধা ভাবে বিভাবিত ভাব নিধি গোরা।*
*🍀বাসু কহে ইহ ভাব বিধি অগোচরা।।*
*🌻তারপর মহাপ্রভু নবদ্বীপে ফিরলেন।একেবারেই অন‍্য মানুষ হয়ে।দ্বাদশ অঙ্গে তিলকাদি সেবা করে শ্রীবাস অঙ্গনে শুরু হল কীর্তন।তারপর থেকে মহাপ্রভু কখন কোন ভাবে বিভোর থাকেন বলা খুবই কঠিন।*
*🌺পদকর্তা বাসুদেব ঘোষ বলছেন,আমার মহাপ্রভুর কখন কোন ভাবে বিভাবিত হন,তা বিধাতার অগোচর।*

*🌻নবোঢ়া পূর্বরাগ(পুতুল খেলা)🌻*
*🍀নব+উঢ়া=নূতন বিবাহিতা। নব মানে নূতন,  উঢ়া শব্দে বিবাহিতা🍀*
*🌻আজ হতে বহু বছর পূর্বে মেয়েদের খুব ছোট বয়সেই বিয়ে দেওয়া হত,৫,৬,৭,৮,৯ ও ১০ বছর বয়সে।তারপর তারা যতদিন সাবালিকা না হত স্বামী ঘরে যেত না।যোগ‍্য অর্জন করে ঘর সংসার করত।ততদিন তারা পিতৃলয়ে থাকত।এক্ষেত্রে বৃষভানু নন্দিনী শ্রীমতী রাধারাণীরও তাই হয়েছিল।আর একটি কথা,আগেকার দিনে কম বয়সি মেয়েরা ছোট ছোট হাড়ি কড়াই খুন্তি ইত‍্যাদি নিয়ে খেলা করত।আর রাধারাণী ধনীর ঘরের মেয়ে বলেই তিনি সোনার পুতুল নিয়ে খেলা করেছিলেন।সেই ব্রজ বৃন্দাবনে পিতৃগৃহে সুবর্ণের পুতুল নিয়ে মনের সাধে একাকী খেলা করছেন, পুতুল নিয়ে খেলা করতে করতে যা হয়েছিল ভাগবতচূড়ামণি পদকর্তাগণ তারই বর্ণনা করেছেন।আস্বাদন করুন।*

*প্রথম পদ*
*আজু শুভদিনে বীরাবৃন্দা সঙ্গে পৌণমাসী।*
*অপরূপ শোভা দেখে বৃন্দাবনে বসি।।*
*🌻আজ অঘটন-ঘটন-পটিয়সী পৌণমাসী যোগমায়া বীরা ও বৃন্দাকে নিয়ে বৃন্দাবনের অপরূপ শোভা দর্শনের জন্য বেড়িয়েছেন।*
*🍀বীরা ও বৃন্দা কে গো? এই বীরা ও বৃন্দাকে কলিযুগে কি নামে পেয়েছি নিশ্চয়ই আপনারা জানেন?তবুও আমি একটু কয়েকটি কথা বলি আস্বাদন করুন।*
*☘ব্রজাধিকারিণী যাসীদ্বৃন্দাদেবী তু নামতঃ।*
*☘সা শ্রীমুকুন্দদাসোহদ‍্য খন্ডবাসঃ প্রভুপ্রিয়।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ যিনি ব্রজ অধিকারিণী ছিলেন,তিনি কলিযুগে মহাপ্রভুর অতি প্রিয় খন্ডবাসী মুকুন্দ দাস কবিরাজ।( যার পুত্র রঘুনন্দন।)* 
*🌺আর বীরা দূতী কি নামে মহাপ্রভুর পার্ষদ হয়ে এসেছিলেন।*
*☘পুরা বৃন্দাবনে বীরাদূতী সর্বাশ্চ গোপীকা।*
*☘নিনায় কৃষ্ণ নকটং সেদানিং জনকো মম।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ যিনি পূর্বকালে বৃন্দাবনে বীরাদূতী,যিনি গোপীসকলকে শ্রীকৃষ্ণ নিকটে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি কলিযুগে শ্রীমন্মহাপ্রভুর অতি অন্তরঙ্গ পার্ষদ,(কবি কর্ণপুর লিখেছেন)আমার পিতা শ্রীশিবানন্দ সেন।(এই শিবানন্দ সেন রথযাত্রার কয়েকমাস আগে থেকে যারা যারা মহাপ্রভু দর্শন ও রথযাত্রা দর্শন করবার জন‍্য ইচ্ছুক অথচ কড়ি নাই, তাদের সেন মহাশয় নিজ ব‍্যয় বহন করে নিয়ে যেতেন)।*
*🍁পদ*
*☘পৌণমাসী কহে বীরাবৃন্দা শুনহ বচন।* 
*☘মনের গোপন কথা কহিব এখন।।*
*☘শ্রীনন্দনন্দন কৃষ্ণ নায়ক শিরোমণি।*
*☘নায়িকার শিরোমণি ভানুর নন্দিনী।।*

*🌻আখর আপনি আপনার মত করে দেবেন🌻*

*🌻ব‍্যাখ‍্যা🌻*
*🌺অঘটন-ঘটন-পটিয়সী পৌণমাসী বীরা ও বৃন্দাদূতীকে কাছে ডেকে বললেন,তোদের কিছু গোপন কথা বলব, দেখিস পাছে যেন কেউ জানতে না পারে।এখন আমাদের মধ্যে এই কথাগুলি থাকবে।যার জন্য ব্রজ বৃন্দাবনে আমাদের আসা,তা সফল করতে না পারলে তো আসা-যাওয়া সমান হল,কাজের কাজ তো কিছুই হবে না।গোলোক বৃন্দাবনে যে যে লীলা হয় নাই,এই মর্ত‍্য বৃন্দাবনে তাই-ই নবরূপে প্রকাশ পাবে।তবে শোন!আমাদের যে নন্দ পুত্র শ্রীকৃষ্ণ তিনি নন্দের ঘরে এসেছেন বটে, তিনি কে তোরা জানিস?আর ঐদিকে বৃষভানু নন্দিনী আমার নাতিনী রাধা সেই বা কে জানিস? এখন থাক, পরে সব বলব।*
*🍁পদ*
*☘এই দুইজনের আজ করাইব মিলন।*
*☘শুনি বীরাবৃন্দার আনন্দিত মন।।*
*☘এত বলি পৌণমাসী গমন করিল।*
*☘এ যদু নন্দনের মনে আনন্দ বাঢ়িল।।*
*🌻পৌণমাসী যোগমায়া বীরা ও বৃন্দাকে বললেন,আজ আমি দুই নায়ক ও নায়িকার মিলন ঘটাব অন্তরে অন্তরে।আর আমি তাদের এই লীলা বিলাস দর্শন করে নয়নের সাধ মেটাব। এই কথা শুনে বীরা বৃন্দা ভীষণ ভীষণ আনন্দ পেলেন।এই কথাগুলি বলে পৌণমাসী গমন করলেন। কোথায় যাবেন তা পরে জানতে পারব।পদকর্তা যনুনন্দন দাস বলছেন,যাঁদের শ্রীচরণ দর্শন করবার জন্য কত মুনি,ঋষি ইত‍্যাদি সহষ্র সহস্র বছর তপ জপ করছেন, কেন? তাঁদের যুগলচরণ দর্শনের জন্য,আমি তা স্বচক্ষে দর্শন করে আমার জীবন সার্থক করব।*

*🌻🌻দ্বিতীয় পদ🌻🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*ভানুর নন্দিনী,     বসি একাকিনী,*
         *পুতুল লৈয়া খেলে।*
*আপন মতির,       মালাটি লৈয়া,*
         *পরায় তাহার গলে।।*
*🌹শ্রীমতী রাধারাণী বিবাহিতা, খুবই কম বয়সে বিবাহ হয়েছে।ঘরে বসে রয়েছেন ভাল লাগছে না।তাই একটি সুবর্ণের পুতুল নিয়ে একাকী খেলা করছেন।পুতুলটির মুখ পানে দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে।আর ভাবছেন, ওমা! আমার পুতুলের অঙ্গে কোন আভরণ নেই, সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়।রাধারাণী গলায় যে মালাটি ছিল অতি যত্ন সহকারে পুতুলকে পরিয়ে দিল*।
*🍀পদ*
*করিয়া যতন ,     অঙ্গ আভরণ,*
        *পরায় তাহার অঙ্গে।*
*বুকেতে ধরিয়া,   কহয়ে কান্দিয়া,*
        *কথা কও মোর সঙ্গে।।*
*🌻অতি যত্ন সহকারে সেই সুবর্ণের পুতুলটিকে নিজের অঙ্গের এক একটি আভরণ খুলে বর্তমানে নিজ প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসার পুতুলটিকে গহনা পরাচ্ছেন।যখন আভরণ পরানো হয়ে গেছে, তারপর নিজ বক্ষে ধারণ করে, একাকী খেলছেন,আশে পাশে কেউ নেই, তাই পুতুলকে বলছেন,ওর‍ে পুতুল!তোকে কত সুন্দর করে সাজালাম, তো তুই বল না! তোর কেমন মনে হচ্ছে? ওরে পুতুল একবার বল? যদি আর কিছু প্রয়োজন হয় তবে দিব, পুতুল কি কোন দিন কথা বলতে পারে? শিশুকন‍্যা রাইধনি, এই বোধটি নেই যে সোনার পুতুল কথা বলতে পারবে না।প্রথম কয়েকবার বলবার পর যখন পুতুল কথা বলছে না, তখন রাইধনি আমার কেঁদে কেঁদে বলছেন, ওরে পুতুল! আমি তোকে আমার থেকেও বেশী ভালবাসি একটাবার কথা বল, তোকে যে এত সুন্দর করে সাজালাম কিছু বললি নাতো?* *রাইধনি আবার পুতুলকে বলছেন,*
*🍀পদ*
*সোনার পুতুল ,      যদি কথা বল,*
      *খেতে দিব তোমায় আমি।* 
*ক্ষুধার সময়  ,     নট হয়ে যায়,*
      *ইহাকি জাননা তুমি।।*
*এতেক বলিয়া ,      পুতুল লইয়া,*
      *আপনি করয়ে খেলা।*
*বাশুলি আদেশে, কহে চন্ডীদাসে,*
     *আপনি হৈল ভোলা।।*
*🌻রাইধনি শিশু মন, তাই বলছেন, ও ও ও বুঝতে পেরেছি, তোকে খেতে দিয়নি বলে তুই খুব রাগ করেছিস তাইনা?কথা বলছিস না?না না, এখন আমি তোকে খেতে দিব।এই কথা বলে ঘর থেকে ক্ষীর,সর,ননী ও মাখন এনে পুতুলের সামনে ধরে বলছে আর রাগ করিস না খেয়ে না। শিশু মন, এই বোধটি নেই যে, পুতুল কথা বলতে পারে না, খেতে পারে না, নিজ ইচ্ছায় চলতে পারে না। এত কথা বলেও রাধারাণী বলছেন আর বিলম্ব করিস না,(ক্ষুধার সময়,নট হয়ে  যায়) সকাল থেকে কিছু খাসনি, ক্ষুধার সময় বয়ে যাচ্ছে, নে নে নে। কখনও পুতুলের প্রতি অভিমান, কখনও মিতালি।পদকর্তা চন্ডীদাস বলছেন,আমি আর কি বলব, আমার রাইধনির পুতুলের সঙ্গে যেমন ভাবে  খেলা করছেন,তা দেখে আমি সব কিছু ভুলে গেছি, আত্মভোলা হয়ে গেছি।*

*🌹🌹🌹তৃতীয় পদ🌹🌹🌹*
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
*কি করি কি করি বলি সখীগণ এলো।*
*কেঁদে কেঁদে সখীর কাছে বলিতে লাগিল।।*
*অঙ্গের যতেক ভূষণ পুতুলেরে দিলাম।*
*তবু তারে একটি কথা বলাতে নারিলাম।।*
*🌻রাইধনি খেলা করছেন, একমন সময় এক এককরে ললিতা বিশাখা চম্পকলতা তুঙ্গবিদ‍্যাদি সখীগণ রাধারাণীর নিকটে এলেন।সখীদের কাছে পুতুলের প্রতি অভিমান করে কেঁদে কেঁদে  রাইধনি বলতে লাগলেন, ওরে সখীগণ! দেখ,দেখ! আমার এই পুতুলকে কত আদর যত্ন করে আমার অঙ্গের যত আভরণ ছিল পরালাম, তারপর কত করে বললাম, ওরে আমার প্রাণের পুতুল!আমি তোকে এত সুন্দর করে সাজালাম, তোর কেমন লাগছে বল? কিন্তু সখী জানিস? আমার সঙ্গে একটিও কথা বলল না! কোনভাবেই কথা বলাতে পারলাম না।*
*🌻এই সকল পৌণমাসী যোগমায়ার খেলা।এই জগতকে তিনি মায়ায় আবদ্ধ করে রেখেছেন।যদিও বা এইটি শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশ ছিল। তিনি যখন গোলোকে ছিলেন তখন তাঁর অচিন্ত‍্য শক্তি যোগমায়াকে বলেছিলেন, গোলোকে বহু কোটি কোটি বৎসর লীলা করলাম, আনন্দও পেলাম,গোলোক ছাড়া কি আর কোন স্থান আছে যে লীলা করে আরও আনন্দ পাবো?তখন যোগমায়া বলেছিলেন, প্রভু!যদি মর্ত‍্যলোকে লীলা করো তাহলে অনেক অনেকবেশী আনন্দ পাবে এবং মর্ত‍্যবাসীও সুখী হবে।*

 *🌹তৃতীয় পদ পরের অন্তরা🌹*
*এত বলি পুতুল লয়ে সখী সঙ্গে বসি।*
*কাঁদিয়া করয়ে খেলা ভানুর ঝিয়ারি।।*
*সখী সঙ্গে করি,     ভানুর ঝিয়ারি,*
          *যেখানে বসিয়া খেলে।*
*দেবী পৌণমাসী,আচম্বিতে আসি,*
        *রাধারে করিলা কোলে।।*
*সোনার নাতিনী,     পরাণ নন্দিনী,*
       *কহি গো তোমার কাছে।*
*নব নীরদকান্তি,       একটি পুতুল,*
       *গোকুল মাঝারে আছে।।*
*🌻রাধারাণী পুতুলের প্রতি অভিমান করে, অভিমান হচ্ছে কথা কই না, কিছু খাই না।সখীদের সঙ্গে বসে আছেন। হেনকালে অঘটন-ঘটন-পটিয়সী যোগমায়া এসে উপনীত হয়ে নাতিনীকে তিনি কোলে নিয়ে বসলেন।আদর করলেন, শত চুম্বন দিলেন, দিয়ে বললেন, আজ আমি তোকে কয়েকটি কথা বলব শোন।তুই যে পুতুল নিয়ে খেলা করিস সে কথা বলে?না।সে ক্ষীর,সর, নবনী ও মাখন খায়?না। তবে শোন নাতিনী! আমার কাছে এমন এক পুতুল আছে, তুই যা বলবি,তোর সঙ্গে কথা বলবে, তুই যা খাওয়াবি সে আনন্দে খাবে, এমন পুতুল নিবি না? আর সেই পুতুলের অঙ্গের বর্ণ কেমন জানিস? বলি! নব নীরদকান্তি।এই ব্রজ বৃন্দাবনেই আছে।*

*🌻🌻তৃতীয় পদ শেষ অন্তরা🌻🌻*
      *তাই কহি গো রূপের বাণী।*
*অমিয়  বচন,          করহ    শ্রবণ,*
          *করহ পিরীতি খানি।।*
*তোমার যেমন ,     ও রূপ যৌবন,*
         *তেমনি নাগররাজ।*
*বিধি  সংযোগে,   মিলন  হইবে,*
         *বুঝিয়া করহ কাজ।।*
*কহে নরহরি ,        শুনহ   সুন্দরী,*
         *তোমারে কহি যে হিত।*
*এবে  যৌবন,      সুখে গোঙাইবি,*
        *শ‍্যামে যদি কর প্রীত।।*
*🌻ব্রজলীলা পরিচালনাকারী যোগমায়া নাতিনীকে বলছেন,ওরে আমার দেহ-মন-হরণকারিণী! আমি যাঁর কথা বলছি যদি তাঁর রূপের কথা শুনিস,তাঁর শ্রীমুখের অমৃত বচন শুনিস,তাঁকে যদি একবার দর্শন করিস,তবেই বুঝতে পারবি সেই পুতুল কেমন পুতুল।নাতিনী!তোর যেমন রূপ-যৌবন,তেমনি সেই কথাবলা পুতুলেরও রূপ যৌবনে পরিপূর্ণ। একবার সেই পুতুলের কথা চিন্তা করবি।পদকর্তা শ্রীনরহরি দাস বলছেন,ওগো রাধিকা সুন্দরী! আমি তোমায় যে কথাগুলি বললাম,তোমার হিতের ফা মঙ্গলের জন্য।তাঁর সঙ্গে যদি সত‍্য সত‍্যই পিরীত কর বড় সুখেই দিনযাপন করবে।*
*🌹তৃতীয় পদের বিরাম🌹
*নবোঢ়া পূর্বরাগ(পুতুল খেলা)পদের বাকী অংশ*
+++++++++++++++++++++++++++++++
*বিনোদিনী বাণী,শুনি কাত‍্যায়নী,*
       *মুচকি মুচকি হাসে।*
*রাধার অঙ্গের,     সৌরভ লইয়া,*
      *চলিলা কৃষ্ণের পাশে।।*
*সখাগণ সনে,    যেখানে বিপিনে,*
        *বসিয়া নাগর মণি।*
*হাসিতে হাসিতে, যান তার কাছে,*
        *পৌণমাসী ঠাকুরাণী।।*
*দেখি সখাগণ,      পদ ধূলি নেল,*
       *কোথা হতে আগমনে।*
*কহে ঠাকুরাণী  ,   পাঠাইল রাণী,*
      *বিষাদ ভাবিয়া মনে।*
*গন্ধর্ব কিন্নর  ,     ফিরি নিরন্তর,*
       *বনে বনে ঠাকুরাণী।*
*আপনি খাইয়ে,    বিরলে বসিয়ে,*
      *শিখাও সুমন্ত্র খানি।।*
*করেতে ধরিয়া ,     চলিল লইয়া,*
       *যেখানে বিরল স্থান।*
*কহে  ভগবতী,      শুন গুণনিধি,*
        *মন্ত্র শুন মঝু প্রাণ।।*
*নাগর হইয়া ,       গোধন লইয়া,*
        *বনে বনে ফের তুমি।*
*কহে নরহরি,     শুন গো মুরারি,*
       *কহিতে আইলাম আমি।।*
*🌻পৌণমাসী যোগমায়ার কথা শুনে শ্রীকৃষ্ণ বললেন,তুমি যেভাবে রসিকা শিরোমণি রাজ দুলারীর কথা বললে, সে কি আমার মত বনে বনে গোচারণকারীর সঙ্গে কথা বলবে? সে তো রাজার মেয়ে? পৌণমাসী বললেন, সে চিন্তা তোমার নয়।*
*শুন ঠাকুরাণী, সে যে রাজনন্দিনী,*
      *আমি থাকি বনে বনে।*
*তাহাতে আমাতে,    প্রেম পিরীতি,*
      *মিলন হবে কেনে।।*
*🌻যাইহোক, সমস্ত দায় দায়িত্ব পৌণমাসী নিলেন, আর বললেন কোন চিন্তা করিও না, সব ব‍্যবস্থা আমি করে দিব।*
*🌹অন‍্য বেশ কিছু গ্রন্থে পাওয়া যায়, শ্রীকৃষ্ণের নাম শ্রবণে, পৌণমাসী যোগমায়া শ্রীকৃষ্ণকে রাধানাম প্রদান করেননি। আমি পদটি বললেই বুঝতে পারবেন বা যদি কোনদিন কোথাও "কেবল শ্রীকৃষ্ণের নামশ্রবণ" পর্যায় দেয় তাহলে এই পদটিই শ্রেয়।* *শ্রীকৃষ্ণকে রাধানাম দিয়েছিলেন বিশাখা সখী।*
*🍀সখি রাধা নাম কি কহিলে।*
*🍀শুনি মন কান জুড়াইলে।।*
*🍀কত নাম আছয়ে গোকুলে।*
*🍀হেন হিয়া না করে আকুলে।।*
*🍀ঐ নামে কি আছে মাধুরী।*
*🍀শ্রবণে রহল সুধাভরি।।*
*🍀চিতে নিতে মূরতি বিকাশ।*
*🍀অমিয়া সাগরে যেন বাস।।*
*🍀আঁখিতে দেখিতে করে সাধ।*
*🍀এ যদু নন্দন মন কাঁদ।।*
*🌻ছোট করে ব‍্যাখ‍্যা দেয়।কালিয়দমন লীলার পর শ্রীকৃষ্ণ সুবলকে নিয়ে বসে আছেন মন মরা হয়ে।হঠাৎ বিশাখা এসে উপস্থিত হলেন।এসেই তিনি বললেন, শ্রীকৃষ্ণ তোমায় কিছু কথা বলবার জন্য এসেছি।আমার কাছে এসো শোনে যাও।বিশাখা তখন এককথা দুইকথা বলতে বলতে গভীর বনে নিয়ে গিয়ে রাধানাম শ্রীকৃষ্ণের কর্ণে দিলেন, শোনা মাত্র,( পদটি পড়লেই বুঝতে পারবেন)।*
    *🙏জয় রাধেশ‍্যাম, এখানেই রইল।🙏*

*🌻🌻পদ চতুর্থ 🌻🌻*
*কৃষ্ণনাম দুই অক্ষর,প্রেমের অঙ্কুর,*
      *রচিলা রাইয়ের কানে।*
*বৈসহ সুন্দরী,      আশীর্বাদ করি,*
      *ভাবিয়া দেখহ মনে।।*
*চরণে ধরিয়া,      কহয়ে রাধিকা,*
       *কখন আসিবে তুমি।*
*তোমার লাগিয়া,   পথ নিরখিয়া,*
       *বসিয়া রহিলাম আমি।।*
*🌻গোলোকের অন্তঃপ্রকোষ্ঠ শ্রীবৃন্দাবন। শ্রীবৃন্দাবনেই মাধুর্য‍্যময়ী লীলার পূর্ণতম বিকাশ।সেই মাধুরীময়ী বৃন্দাবনলীলার সম্পাদিকা ও লীলা বৈচিত্র্য সংঘটনকারিণী যোগমায়া পৌণমাসীর বদনসুধারত হ'তে নামের যে অতুল মধুর মহিমামৃত, যে নাম গোলোকের গুপ্তধন সেই নাম "কৃষ্ণ" শ্রীরাধার কর্ণে দিলেন।*
*🌻এই কৃষ্ণ নাম সম্বন্ধে শ্রীপাদ রূপ গোস্বামী বিদগ্ধ মাধব নাটকে পায় আস্বাদন করুন।*
*তুন্ডে তান্ডবিনী রতিং বিতনুতে তুন্ডাবলীলব্ধয়ে,*
*কর্ণক্রোড়কড়ম্বিনী ঘটয়তে কর্ণর্বুদেভ‍্যঃ স্পৃহাম্।*
*চেতঃপ্রাঙ্গণসঙ্গিনী বিজয়তে সর্বেন্দ্রিয়াণাং কৃতিং,*
*নো জানে জনিতা কিয়দ্ভিরমৃতৈঃ কৃষ্ণেতি বর্ণদ্বয়ী।।*

*অন্বয়= কৃষ্ণেতিবর্ণদ্বয়ী (কৃ ও ষ্ণ এই বর্ণদ্বয়) কিয়দ্ভিঃ অমৃতৈঃ জনিতা (কী পরিমাণ অমৃত দ্বারা রচিত হয়েছে) ইত‍্যহং (ইহা আমি ) ন জানে (জানি না ) যতঃ (যেহেতু) তুন্ডে তান্ডবিনী (মুখে নৃত্যকারিণী) সতী (হ'লে) তুন্ডাবলীলব্ধয়ে(অনেক মুখ পাওয়ার জন্য ) কর্ণকোড়কড়ম্বিনী(কানের ভিতরে অঙ্কুরিতা) কর্ণার্বুদেভ‍্যঃ (অর্বুদ বা দশকোটি সংখ‍্যক কর্ণ পাওয়ার জন্য ) স্পৃহাং ঘটয়তে(বাসনা জন্মায়) চেতঃ প্রাঙ্গণসঙ্গিনী(চিত্তরূপ প্রাঙ্গণ সঙ্গিনী) সর্বেন্দ্রিয়াণাং কৃতিং বিজয়তে (সমস্ত ইন্দ্রিয়ের ব‍্যাপারকে পরাজিত করে দেয়।*
*🌺অনুবাদ= "কৃষ্ণ" এই দুইটিবর্ণ যে কি পরিমাণে অমৃত দ্বারা রচিত হয়েছে, তা আমি জানি না।দেখ!এই অমৃতময় বর্ণদ্বয় যে সময়ে জিহ্বাতে নৃত্য করে তখন রসনাশ্রেণী পাওয়ার অভিলাষ হয় (আরও অনেক অনেক জিহ্বা পেতে ইচ্ছে করে) বা ইচ্ছে, কোটি জিহ্বা থাকলে নামামৃত "কৃষ্ণ" এই নাম আস্বাদন করতাম।আবার এই নাম কানের ভিতরে অঙ্কুরিত হলে অর্বুদ সংখ‍্যক কান পাবার ইচ্ছা হয়।এই নাম চিত্তরূপ প্রাঙ্গণে প্রবেশ হলে সমস্ত ইন্দ্রিয় ব‍্যাপারকে জয় করে, অর্থ‍্যাৎ চিত্ত নামরসে ডুবলে সমস্ত ইন্দ্রিয় কার্য‍্য রহিত হয়ে যায়।এত যে আনন্দ উৎপত্তি হয় তাতে ইন্দ্রিয় সমস্ত স্তম্ভীভূত হয়ে যায়, তখন কোন ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কোন কাজ হয় না,বাহ‍্যজ্ঞান লোপ হয়ে যায়।*
*🍁শ্রীমতী রাধারাণীরও নাম শ্রবণ করে এই অবস্থা হয়েছিল।কর্ণে নাম দিয়ে যখন যোগমায়া চলে যাচ্ছিলেন, তখন শ্রীমতী বলছিলেন তুমি আবার কবে আসবে, তোমার পথ চেয়ে থাকব।*
*পূর্ণ ব‍্যাখা নবোঢ়া পূর্বরাগ (পুতুল খেলা)*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 কলঙ্ক মোচন 🙏 দ্বিতীয় ভাগ ꧂
           পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা 
           ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*😥😪কলঙ্ক মোচন গৌরচন্দ্র😪😥*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*😢ভাব নিধি গোরাচাঁদের ভাবে বিভোর হয়ে রয়েছেন।কোন ভাবে? না,তিনি ব্রজলীলা ভাবে বিভোর হয়ে রয়েছেন।সেই লীলার কথা মনে পড়েছে, কোন লীলা? হ‍্যাঁ, কলঙ্ক মোচন লীলা।*
*পদ=গৌরাঙ্গ চাঁদের ভাব কহনে না যায়।*
*বিরলে বসিয়া প্রভু করে হায় হায়।।*
*😪শ্রীমন্মহাপ্রভু পূর্বের মত আর নেই গো,তাঁর মধ্যে সে চঞ্চলতা নাই,সে উদ্ধত স্বভাব নাই,সে বাল‍্য চপলতা নাই, নাই সে ব‍্যঙ্গ-প্রিয়তা।চন্দ্রবদনখানি কিছু মলিন হয়েছে, সর্বদাই যেন তিনি কি ভাবেন।নয়নদ্বয়ে অনবরত বারিধারা বহে যাচ্ছে।নিবারণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু তিনি তা পারছেন না।*
*🍀পহুঁ মোর গৌর-কিশোর।*
*🍀আজু কি ভাবে বিভোর।।*
*🍀আঁখি দুটি ঝর ঝর।*
*🍀কাঁপে অঙ্গ থর থর।।*
*🍀বিনত আননে চাহে।*
*🍀দু'নয়নে ধারা বহে।।*
*🍀বিয়াকুল নিজ জন।*
*🍀না বুঝল কি সাধন।।*
*🍀অধিক উদাস মন।*
*🍀বহে শ্বাস ঘনে ঘন।।*
*🍀কার লাগি কেবা জানে।*
*🍀কি শেল বা বুকে হানে।।*
*🍀কি ভাবে বিভোর গোরা।*
*🍀পহুঁ মোর চিত চোরা।।*
*🍀মুই অধম হরিদাস।*
*🍀কি বুঝিব যোগাভাস।।*
*🌻মহাপ্রভু নির্জনে বসে নয়নজলে ভেসে যাচ্ছেন।শচীমা পুত্রের এই অবস্থা দেখে আর থাকতে পারলেন না।কাছে গিয়ে অঞ্চল (আঁচল) দিয়ে পুত্রের মুখখানি মুছিয়ে দিয়ে বললেন, "বাপ নিমাই!তুই কাঁদিস কেন?তোর কি দুঃখ হয়েছে আমায় বল বাপ? মায়ের কথা শুনে ভাবনিধি গৌরহরি কোন কথা বললেন না।কৃষ্ণপ্রেমে আনন্দে বিহ্বল হয়ে রোদন করছেন। প্রেমোন্মত্ত ভাবে অস্থির হয়ে উঠলেন।*
*🍀যে পহুঁ আছিল,অতি পরম গম্ভীর।*
*🍀সে পহুঁ হইলা প্রেমে পরম অস্থির।।* *(চৈঃভাঃ)*
*অপরদিকে শ্রীমতীবিষ্ণুপ্রিয়া প্রাণবল্লভের এইরকম ভাব দেখে বড় ব‍্যথিত হলেন।অনেকদিন পর স্বামী বিদেশ(গয়া) থেকে গৃহে ফিরে এসেছেন,মন খুলে দুই দন্ড প্রাণের কথা বলবেন,তাঁর প্রাণের কথা শুনবেন,কত কথা মনে করে আছেন বিষ্ণুপ্রিয়া, কত আশা হৃদয়ে পোষণ করে রেখেছেন, তা কিছুই বলা হল না, কিছুই শোনা হল না।এতে বিষ্ণুপ্রিয়ার মনে বড় দুঃখ, প্রাণে বড় আঘাত লেগেছে।বিষ্ণুপ্রিয়া তখনও বালিকা, ভেতরের কথা কিছুই জানেন না,বুঝতেও পারেন না।শ্রীমতী মনে মনে ভাবছেন এ কি রোগ হল? কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছেন না।সহজ সরলা বালিকা প্রাণবল্লভের এই অবস্থা দেখে অতি কষ্টে মুখখানি নত করে দুই হস্তে আঙ্গুল খুটতে খুটতে শাশুড়ীর কাছে বলেই ফেললেন,মাগো!ইঁনার কি কোন ব‍্যারাম হয়েছে?কবিরাজ ডেকে ঔষুধের ব‍্যবস্থা করুন। শচীমা পুত্রবধূর কথা শুনে কেঁদে ফেললেন।তখনি মনের ভাব লুকিয়ে বিষ্ণুপ্রিয়ার চিবুকে হাত দিয়ে আদর করে বললেন,মা লক্ষ্মী!কিছু ভাবিও না।বাছার সব রোগ নারায়ণ ভাল করে দিবেন।*
*😢বাড়ীতে বেশ ঘটা করে নারায়ণ পূজার উদ‍্যোগ করলেন।যথাসময়ে পুরোহিত এলেন, গৃহদেবতা শ্রীশ্রীলক্ষ্মীনারায়ণের যথারীতি পূজা করে গৌরহরির নামে মহা স্বস্ত‍্যয়ন আরম্ভ করলেন।শ্রীমতী বিষ্ণুপ্রিয়া ও শচীমা ঠাকুর ঘরের দরজায় বসে করজোড়ে নারায়ণের কাছে কত না মানস করতে লাগলেন।পূজান্তে শচীমা ঠাকুরের চরণামৃত ও প্রসাদ নিয়ে ভাবনিধি মহাপ্রভুকে দিলেন। পুরোহিত ঠাকুর শ্রীগৌরাঙ্গচাঁদের মস্তকে শান্তির জল ছিটিয়ে দিলেন।ভাবে বিভোর মহাপ্রভু নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছেন।আনমনে কি যেন দেখছেন, আর অনিমিষ নয়নে গৃহ দেবতার দিকে চেয়ে আছেন। দুইটি নয়ন দিয়ে দর দর করে বারিধারা বহে যাচ্ছে।কৃষ্ণপ্রেমে তিনি যেন আত্মহারা হয়েছেন। মধ্যে মধ্যে "হা কৃষ্ণ" বলে এক একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলছেন।স্বস্ত‍্যয়ন (শান্তি কামনায় হোমাদি বেদ বিহিত মঙ্গল কর্মের অনুষ্ঠান )শেষ হলে সকলে মিলে নারায়ণের চরণে গললগ্নকৃতবাসে প্রণাম করলেন।পুত্র-দুঃখ-কাতরা, মোহাক্রান্তা শচীমা ঠাকুরের কাছে মনে মনে প্রার্থনা করলেন "হে মধুসূদন!হে বিপদভঞ্জন নারায়ণ!হে লক্ষ্মীকান্ত! আমার নিমাইয়ের মনটি ভাল করে দাও।বাছার সমস্ত রোগ বালাই দূর করে চিরজীবি কর। স্বামী সোহাগিনী বিষ্ণুপ্রিয়া মনে মনে বললেন,হে বিপত্তির মধুসূদন!হে সর্ববিপদহারী!হে সর্বমঙ্গলময়! আমার প্রাণবল্লভের মতি স্থির করে দাও, আমার প্রাণনাথকে আগের মত করে দাও।তারপর স্বয়ং মহাপ্রভু সাষ্টাঙ্গে নারায়ণকে প্রণাম করে মনে মনে বলছেন,হে দীনবন্ধু!হে রাধাকান্ত!হে শ্রীকৃষ্ণ!এ দাসকে একবার দর্শন দাও।তোমার বিরহজ্বালা আমি আর সহ‍্য করতে পারছি না।আমার প্রাণ গেল!তুমিই আমার জীবন-সর্বস্ব।তোমাকে ছাড়া আমি আর কিছুই চাহি না।তুমি আমাকে জন্ম জন্ম অহৈতুকী ভক্তিদান কর*
*🍀ন ধনং ন জনং ন সুন্দরীং কবিতাম্বা জগদীশ কাময়ে।*
*🍀মম জন্মানি জন্মনীশ্বরে ভবতাদ্ভক্তিরহৈতুকী ত্বয়ি।।*
*🌻এই শ্লোকটি মহাপ্রভু কিছু উচ্চৈঃস্বরে আবৃত্তি করলেন। সকলেই শুনলেন কিন্তু শ্রীমতী কিছু আনমনা হলেন।শচীমায়ের মনে একটা বিষম সন্দেহ উপস্থিত হল।কিন্তু পূর্বের মত তিনি মনের ভাব গোপন করে অর্থ‍্যাৎ লুকিয়ে বধূমাকে ধীরে ধীরে বললেন, মা!নারায়ণ সব মঙ্গল করবেন।চল সকলকে ঠাকুরের ভোগ বিতরণ করতে হবে বলে বিষ্ণুপ্রিয়ার অন্তরে আনন্দ দেবার চেষ্টা করলেন।*
*🍀বুঝিতে না পারে আই পুত্রের চরিত।*
*🍀তথাপিহ পুত্র দেখি মহা আনন্দিত।।*
        *পরের অংশ আগামীকাল*

পদ:
*🍀প্রিয় পারিষদগণ পুছয়ে তাহারে।*
*🍀কহে মুই ঝাঁপ দিব যমুনার নীরে।।*
*🍀করিনু দারুণ প্রেম আপনা আপনি।*
*🍀দুকুলে কলঙ্ক হইল না যায় পরাণি।।*
*🍀এত কহি গোরাচাঁদ ছাড়য়ে নিশ্বাস।*
*🍀মরম বুঝিয়া কহে নরহরি দাস।।*
*😢নবদ্বীপে প্রেমভক্তির উদয়।*
*গয়ায়া ইত‍্যেবং স্বগৃহম গমদ্ভুরিকরুণঃ,*
*প্রভুঃ পৌষস‍্যান্তে সকল তনুভৃত্তা পশনঃ।*
*অত মাঘস‍্যাদৌ নিরবাধ নৈজৈঃ কীর্তন রসৈঃ,*
*প্রকাশং চাবেশং ভুবি বিকিরতি স্মানুদিবসম্।।*
                     *(কবিকর্ণপুর--৪|৭৬)*
*🌻সকল জীবের তাপ উপশমকারী দয়াল প্রভু গৌরাঙ্গসুন্দর পৌষমাসের শেষে গয়া হতে গৃহে আগমন করলেন।মাঘমাসের প্রথম দিন হতে নিজ কীর্তনরস দ্বারা প্রকাশ ও আবেশ দিন দিন পৃথিবীতে বিকিরণ করতে লাগলেন।গয়াধাম হতে ফিরলেন,আর সেই নবদ্বীপের অধ‍্যাপক নিমাই পন্ডিত নাই।নাই তাঁর সেই বিদ‍্যাদৃপ্ত তর্ক-কুশল নিমাই।আছেন কৃষ্ণপ্রেমে গদগদ,কৃষ্ণবিরহে উন্মাদ এক হরিভক্ত শিরোমণি।আর বিদ‍্যাচর্চা নাই,শাস্ত্রপাঠ নাই।আছে কেবল রোদন আর অশ্রু বর্ষণ। অদ্বৈতাচার্য‍্য,শ্রীবাস পন্ডিত ইঁহারা সকলেই আগে থেকেই বৈষ্ণব মার্গের শ্রেষ্ঠ সাধক।গৌরাঙ্গসুন্দরের অপূর্ব মহিমা দর্শনে ইঁহারা বিস্ময়ান্বিত ও অমৃতসাগরে নিমজ্জিত হলেন।গোরা চাঁদের কেবল "হা কৃষ্ণ" বলে বুক ফাটা আর্তনাদ শুনে সকলে অনুভব করলেন সুদুর্লভ কৃষ্ণপ্রেম মূর্ত হয়ে ধরায় নেমে শ্রীবাসের শ্রীঅঙ্গনে আনন্দের হাট বসিল।নানা অলৌকিক ঘটনা ঘটতে লাগল।নিমাই যে আর সাধারণ মানুষ নন ইহা সকলেই হৃদয়ঙ্গম করল।মধুময় হরিনাম,খোল-করতালে নৃত্য কীর্তন অবিশ্রাম চলতে লাগল।কখনও গৌরাঙ্গচাঁদ ভক্তগণকে উপদেশ দেন কৃষ্ণভজনের।কখনও বা কোথা যাব,কোথা গেলে কৃষ্ণ পাব বলে আর্তস্বরে ক্রন্দন করেন। কখনও নাচেন, হেমদন্ড বাহু তুলে।আবার কখনও ধূলায় গড়াগড়ি দেন,অশ্রুধারে ভাসেন,আর সকলেই ভাসান।শ্রীবাস অঙ্গনে বহু পার্ষদগণ ছিলেন তার মধ্যে এই স্বর্গীয় দৃশ্যের প্রত‍্যক্ষদ্রষ্টা মুরারি গুপ্ত বাসুদেব ঘোষ প্রাণস্পর্শী ভাষায় বর্ণনা করেছেন।তাঁদের পদাঙ্গ অনুসরণে কবি কর্ণপুর লিখেছেন শ্রীকৃষ্ণচৈতন‍্য চরিতামৃত মহাকাব‍্যে।*
*ইতি ক্ষণোৎক্ষিপ্ত সমস্ত চেষ্টিতঃ প্রতিক্ষণঃ সায়তি নির্ভরং মুহুঃ।*
*পদে পদে রোদিতি রোমহর্ষনৈঃ বিমুক্তকন্ঠং করুণাপয়োনিধিঃ।।*
*😢করুণার মহাসাগর শ্রীগৌরাঙ্গসুন্দর আনন্দ আস্বাদনে সমস্ত চেষ্টা আক্ষিপ্ত।প্রতিক্ষণে রোমাঞ্চের সঙ্গে মুক্তকন্ঠে গান করেন।আর প্রতিপদে বারংবার উচ্চরোদন করতে লাগলেন।*
*🌻মহাপ্রভু দুটি বাহু তুলে নাচছেন আর বলছেন, কোথা কৃষ্ণ দেখা দাও, তোমার দেখা না পেলে আমি এ প্রাণ বিসর্জন করব।তোমাকে ছাড়া এক পল আমি স্থির থাকতে পারব না। "এত কহি গোরাচাঁদ ছাড়য়ে নিশ্বাস।*
*মরম বুঝিয়া কহে নরহরি দাস।।*
*🙏বানান ভুল মার্জনা করবেন🙏*


*😭কলঙ্ক মোচন ব্রজলীলা😭*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*😢প্রেমময়ী মহাভাবস্বরূপিনী শ্রীমতী রাধাঠাকুরাণী আর ব্রজের কলঙ্কের ভার বহন করতে পারছেন না।কি করবেন, কি করবেন না, এই চিন্তা করে শ্রীকৃষ্ণপ্রেমের কলঙ্কিনী কৃষ্ণানুরাগিনী,সাত-পাঁচ চিন্তা করতে করতে একাকিনী গৃহ হতে বাহির হয়ে কদম্ববৃক্ষের তলায় এসে উপনীত হলেন।কদম্বতলায় বসে তিনি অঝোর নয়নে কাঁদছেন,আর ভাবছেন এখন কি করলে আর শ্রীকৃষ্ণ কলঙ্কিনী কথাগুলি শুনতে হবে না, কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না।অপরদিকে অন্তর্য‍্যামী শ্রীকৃষ্ণ রাইধনির অন্তরের সমস্ত কথা অবগত হয়েছেন।তাই তিনি মরম সখা সুবলকে কাছে ডেকে বললেন, ওরে আমার মরম সখা!আজ আমার মন কেমন উচাটন করছে, তাই আর এখানে ভাল লাগছে না,তুই দাদা বলরামের সঙ্গে থাক,আমি কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসছি।দাদা কিছু বললে বলিস ভাই কানাই আশে পাশে আছে।এই বলে শ্রীগোবিন্দ এক পা দুই পা করতে করতে সেই কদম্ববৃক্ষের তলায় উপস্থিত হলেন।* *উপস্থিত হয়ে দেখলেন রাধিকা কদম্ববৃক্ষের তলায় বসে ক্রন্দন করছেন।* *শীঘ্র কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে প্রেমময়ী রাধে!কেন তুমি এই বৃক্ষের তলে একাকিনী রোদন করছ?*
*🌻প্রথম পদ🌻*
*শ্রীকৃষ্ণ রাইধনিকে বলছেন=*
*প্রেমময়ী হে!*
        *মরি মরি, কেন এরূপ হেরি।*
*কি লাগিয়া প্রাণপ্রিয়ার চক্ষে বহে বারি।*
*শুখায়েছে মুখার বিন্দ,কেহ কি বলেছে মন্দ,দেখে তোমায় নিরানন্দ, প্রাণ ধরিতে নারি।।*
*এলোথেলো বেশভূষা,বদনে নাহিক ভাষা,কি কারণে হেন দশা বুঝিতে না পারি।*
*গৃহে রাখি দাসীগণে,একাকিনী এলে বনে,কি দুঃখ হয়েছে মনে বল প্রাণেশ্বরী।*
*বিষাদিনী কি অভাবে?প্রেমাধীনে প্রকাশিবে?*
    *পীতাম্বর ভক্তিভাবে,বলে ভজ বংশীধারী।।*
*🌻ভক্তবৎসল শ্রীগোবিন্দ,ভক্তের পরম শিরোমণিকে জিজ্ঞাসা করছেন,হে প্রেমময়ী রাধে!তোমাকে এইরকম দেখছি কেন?কেনই বা তুমি অঝোর নয়নে ক্রন্দন করছ?কেঁদে কেঁদে তোমার মুখ শুকিয়েছে, তোমাকে কি কেউ খারাপ কথা বলেছে?তুমি তো এমন টি ছিলে না, তবে কেন এত নিরানন্দ!ওগো প্রাণপ্রিয়ে!তোমার এই দর্শন আর আমি সইতে পারছি না।কি কারণে এই দশা তাও বুঝতে পারছি না। তাছাড়া তোমার গৃহে এত দাসদাসী থাকতে তুমি একাকিনী বনের মধ্যে এসে রোদন করছ কেন? ওগো আমার প্রাণেশ্বরী!তোমার সবকথা আমাকে বলো, কেন বিষাদ ভাবে? তোমার যদি মনে চাই আমায় বলতে পারো। পদকর্তা বলছেন,ওগো! তোমাদের সব জ্বালা,যন্ত্রণা,অভাব ও অভিযোগ থাকলে,কেবলমাত্র ভক্তিভরে আমার বংশীধারী শ্রীগোবিন্দকে ভজনা কর,সমস্ত অভিযোগ অমঙ্গল দূরীভূত হবে।*


*😭কলঙ্ক মোচন পদ দুই😭*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻শ্রীকৃষ্ণের সমস্ত কথা শুনে বিষাদিনী শ্রীরাধা বলছেন=*
        *সুধাও কি আর মোরে!*
*এ দশা ঘটেছে মোর তোমারই তরে।।*
*কৃষ্ণ হে তোমারে ভজে,কলঙ্কিনী হলাম ব্রজে,*
 *মুখ দেখাতে নারি লাজে সমাজ ভিতরে।*
*পোড়ারমুখী কুলমজানি,*
*আমায় বলে সব গোপিনী,*
*কুলমান সকলি গেল,*
*দেশ জুড়ে কলঙ্ক হলো।*
*বাঁচার থেকে মরণ ভাল,ভেবেছি অন্তরে।।*
*নিশ্চয় ত‍্যজিব জীবন,*
*শুন ওহে বংশীবদন*
*দাস পীতাম্বর কর সাধন প্রভুর মন্দিরে।*
*🌻শ্রীরাধা কৃষ্ণকে বলছেন, ওহে প্রাণবল্লভ!আজ ব্রজের গোপীনীগণ যে আমায় কলঙ্কিনী বলছে, এর সম্পূর্ণ দায় তোমার,একমাত্র তোমার জন‍্যই আমি কলঙ্কিনী উপাধি পেয়েছি।ব্রজে এই লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে পারি না, ঘরের বাইরে বের হলেই সকলেই আমাকে কলঙ্কিনী বলে।কেউ আমায় পোড়ারমুখী বলে, কেউ কুল-মজানি কলঙ্কিনী বলে।এই শরীরে কি আর এত যন্ত্রণা সহ‍্য হয়?তাই ভেবেছি আর বেঁচে থেকে ঐকথা সহ‍্য করতে পারব না,যমুনায় গিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিব।পদকর্তা পীতাম্বর দাস বলছেন, যাঁর নামে পাষাণ গলে, সমস্ত অমঙ্গল দূরে যায়,যাও মন্দিরে গিয়ে সাধন করো।*


*😭কলঙ্ক মোচন পদ তিন😭*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻শ্রীমতী রাধারাণীর কথা শুনে শ্রীগোবিন্দ বলছেন=*
*রাধে--------ধৈর্য‍্য ধর প্রাণে।*
*অধীর হয়ে ধনি রোদন কর কেনে।।*
*প্রতিজ্ঞা করিয়ে বলি,ঘুচাব কলঙ্ক কালি,*
   *ভেবে ভেবে অঙ্গ কালি কর অকারণে।*
*ব্রজবাসী গোপী সবে,তোমারে কুলটা ভাবে,*
   *তাহারা অসতী হবে পরীক্ষা সাধনে।*
*তুমি হবে সাধ্বী সতী,জগতে হইবে সুখ‍্যাতি,*
   *সকলে পাইবে প্রীতি তব আচরণে।।*
*শুন মম সত‍্য বচন,অসাধ‍্য করিব সাধন,*
  *পীতাম্বর কর স্মরণ শ্রীরাধামাধব।*
*🌻শ্রীকৃষ্ণ রাধারাণীর দুইখানি হাত ধরে বললেন, প্রাণপ্রিয়া রাধে! তুমি ধৈর্য‍্য হারিয়ে দিও না,আর এভাবে রোদন করিও না।এই আমি তোমায় স্পর্শ করে শপথ করছি,আমি তোমার সমস্ত কলঙ্ক মোচন করব।অকারণ ভেবে ভেবে নিজ সোনার অঙ্গ কালি করিও না রাইধনি।যারা তোমায় অসতী,কুলটা বলে অপমান কলঙ্ক দিয়েছে তারাই অসতী বলে প্রমাণ হবে।(এখানে বিশেষ করে জটিলা ও কুটিলাকে উদ্দেশ্য করে শ্রীকৃষ্ণ কথাগুলি বললেন)।রাধে!তুমি আমার প্রতি বিশ্বাস রাখ,আর তোমায় কলঙ্কিনী বলবে না, তোমাকে সাধ্বী সতী বলে ডাকবে।শোনো রাই!আমি এমন অসাধ‍্য সাধন করব তা তুমি ভাবতেও পারবে না, তবে তুমি আর কেঁদো না,নিশ্চিন্ত হয়ে ঘরে যাও।*


*🌻🌻চতুর্থ পদ🌻🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
          *সান্ত্বনা করিয়া শ্রীরাধারে।*
*নিশি শেষে গেল কৃষ্ণ নন্দের মন্দিরে।।*
*রাই কলঙ্ক ঘুচাইতে,উপায় ভাবিয়া চিতে,*
*কপট রোগের যন্ত্রণাতে আকুল অন্তরে।*
*চাপিয়া যশোদার কোলে,*
*মরি মা মরি মা বলে,*
*ধরিয়া রাণীর গলে ছটফট করে*।।
*রাণী বলে ওনীলরতন,কেন রে বাপ কর এমন,*
*ধরিতে না পারি জীবন,যাতনা তোর হেরে।*
*শয‍্যা পাতি ধরাতলে,*
*শয়ন করায় গোপালে,*
*পীতাম্বর হৃদয় খুলে ডাক শ্রীকৃষ্ণেরে।।*
*🌻সমস্ত দুঃখ,কষ্ট,অমঙ্গল,মিছে কলঙ্ক হরণকারী শ্রীকৃষ্ণ,শ্রীরাধাকে সান্ত্বনা দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে, তিনি ভাবতে লাগলেন,কেমন করে রাধার এই বদনাম মোচন করা যায়।পরেরদিন প্রভাতে চতুরের শিরোমণি চরম চাতুরী শুরু করলেন।গোপালের ভীষণ শরীর খারাপ হয়েছে এমন ভাব করে চতুরের শিরোমণি মায়ের কোলে উঠে "মরি মা,মরি মা" বলে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।যশোদার নয়নের মণি গোপালের এই কথাগুলি শুনে যশোমতী মা আমার ধৈর্য‍্য ধরতে পারছেন না, কি করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না। সঙ্গে সঙ্গে নন্দমহারাজের কাছে সংবাদ পাঠান হল।নন্দ মহারাজ গোপালের অবস্থা দেখে তিনিও চঞ্চল হয়ে উঠলেন।*


*😭কলঙ্ক মোচন পদ পঞ্চম😭*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""''''"'""""""
*হেনকালে নরহরি, বৈদ‍্যরাজ রূপ ধরি,*
     *ব্রজধামে দেন দরশন।*
*রূপ অতি চমৎকার,ভালে দীঘ ফোটা তার,*
    *পরিধান শুক্ল যে বসন।।*
*করেতে ঔষুধ লয়ে,যান রাজপথ বয়ে,*
     *নন্দরাজ হেরিল নয়নে।*
*রূপ দেখি অপরূপ,ভুলিল নয়ন কূপ,*
      *এক দৃষ্টে করে নিরীক্ষণে।।*
*মনে মনে ভাবে নন্দ,হেরি প্রায় শ্রীগোবিন্দ,*
      *যেন নীলমণির মতন।*
*এত ভাব হৃদয়েতে,হর্ষযুত মনোহর চিতে,*
      *বৈদ‍্যরাজ কহেন বচন।।*
*🌻শ্রীগোবিন্দের এই অবস্থা দেখে আর অন‍্য কাউকে বৈদ‍্য আনতে না পাঠিয়ে নিজেই তিনি বৈদ‍্যের সন্ধানে যাচ্ছিলেন,হেনকালে শ্রীকৃষ্ণ নিজ বেশ দূরে রেখে এক বৈদ‍্যরাজের রূপ ধারণ করে পিতা নন্দ মহারাজ দর্শন দিলেন।ভালে (কপালে)দীঘ (লম্বা) ফোঁটা লাগিয়ে,শুক্ল(শ্বেত বর্ণের)বসন পরিধান করে রাজপথ দিয়ে চলেছেন,আবার তাঁর হাতে বিভিন্ন জড়ি বুটি, সত‍্যই দেখে মনে হচ্ছে একজন বৈদ‍্যরাজ।যখন নন্দ মহারাজ সেই বৈদ‍্যরাজকে দেখেছেন,তাঁর সেই অপরূপ রূপ, রূপের প্রতি একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছেন, যখন ভাল করে মুখ দর্শন করেছেন,নন্দ মহারাজ দোটানায় পড়ে গেছেন, এই তো আমার গোপাল! কিন্তু আবার মনে হল,গোপাল আমার অসুস্থ হয়ে ঘরে শুয়ে আছে। এই ভাবনা দূরে রেখে বৈদ‍্যরাজকে নিজালয়ে নিয়ে এলেন।*


*😥কলঙ্ক মোচন, পদ ষষ্ঠ😥*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌻শ্রীনন্দ মহারাজ বৈদ‍্যরাজকে রাজপথে দেখে বারংবার তাঁর মুখ দেখছেন আর ভাবছেন, কি করে সম্ভব!আমার গোপালের অবিকল দেহ! তারপর তাঁকে তাঁর পরিচয় জানতে চাইলেন।*
*কহ বাপু পরিচয়, কোথা নিবাস হয়,*
     *কিবা নাম যাবে কোথাকারে।*
*বৈদ‍্য বলে মহাশয়,কৃষ্ণ বৈদ‍্য নাম হয়,*
    *বাস,ভক্তের হৃদয় মাঝারে।।*
*আমা সম বৈদ‍্যরাজ,নাহি ত্রিভুবন মাঝ,*
    *কঠিন পীড়া সুস্থ করি।*
*শুনি নন্দ কহে বাণী,এস লয়ে যাই আমি,*
     *মম পুত্র কৃষ্ণ নাম তারি।।*
*ওরে বৈদ‍্য বাছাধন,দেখিবারে কৃষ্ণ ধন,*
     *মম গৃহে কর আগুসার।*
*হয়েছে কঠিন পীড়া,ব‍্যাধি হেরি সৃষ্টি ছাড়া,*
     *আইস বাছা কোলে আমার।।*
*তুমি মম পুত্র সম,আজি হলে বাছাধন,*
      *এত বলি কোলে করি লয়ে।*
*যথা আছে চিন্তামণি,বৈদ‍্যেরে লয়ে আপনি,*
     *আইলা নন্দ আনন্দিত হয়ে।।*
*যশোদারে কহে বাণী,বৈদ‍্যরে এনেছি আমি,*
    *মনোহর কহে কৃষ্ণ বৈদ‍্যরাজ।*
*কৃষ্ণের সমান ইনি,রূপে গুণে গুণমণি,*
      *হেন বৈদ‍্য নাহি বিশ্বমাঝ।।*
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻


*🌹🌹🌹সপ্তম পদ🌹🌹🌹*
*শুনি হর্ষ যশোমতী,কহেন বৈদ‍্যের প্রতি,*
    *মম গোপালেরে সুস্থ কর।*
*তুমিরে মম সন্তান,দেহ কৃষ্ণের প্রাণ দান,*
    *এই বাক‍্য রাখরে আমার।।*
*শুনি বাক‍্য ততক্ষণ,কৃষ্ণে করে নিরীক্ষণ,*
      *কর ধরি দেখয়ে তখন।*
*ক্ষণেক বিলম্ব পরে,কহিলেন নন্দ বরে,*
      *শুন নন্দ আমার বচন।*
*তব পুত্র কৃষ্ণধনে,পীড়া হেরি কুলক্ষণে,*
     *তবে এক কার্য‍্য যদি কর।*
*যদি পাও সতী নারী,আনো তারে ত্বরা করি,*
      *তবে বাঁচে তোমার কুমার।।*
*শত ছিদ্র কুম্ভে করি,আনিবারে পারে বারি,*
     *সিনান করাব সেই জলে।*
*তবে পীড়া শান্তি হয়,উঠিবে তব তনয়,*
     *মনোহর কহে তব স্থলে।।*
*🌻শ্রীনন্দ মহারাজ যখন বৈদ‍্যকে নিয়ে এলেন,বৈদ‍্যকে দেখে, বৈদ‍্যকে বললেন, আমার গোপালকে যত তাড়াতাড়ি পার সুস্থ করে তোলো। তারপর যখন অতি মনোযোগে বৈদ‍্যের মুখখানি দেখেছেন,চরম চিন্তায় পড়লেন,কে এই! এ যে আমার জীবনের জীবন গোপাল!বৈদ‍্য মায়ের মনের ভাব বুঝে সঙ্গে সঙ্গে অন‍্য প্রসঙ্গ এনে মন থেকে সেই চিন্তা দূরীভূত করে বৈদ‍্য বললেন,তোমার পুত্রের খুব খুব খুবই কঠিন রোগ হয়েছে, তবে যদি এখানে কোন সতী নারী শতছিদ্র কলসে করে যমুনা থেকে জল আনতে পারে, সেই জলে তোমার পুত্রকে স্নান করালে ও আমার জড়িবুটি খাওয়াইলে পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে।*
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••


*🌺🌺🌺অষ্টম পদ🌺🌺🌺*
*শুনিয়া যশোদা রাণী,দ্রুত গিয়া আপনি,*
     *নগরেতে করে অন্বেষণ।*
*কোথাও না সতী পাই,ফিরে আইল পুনরায়,*
     *যায় শেষে জটিলা ভবন।।*
*বলে ওজটিলা দিদি,এক কার্য‍্য কর যদি,*
      *তবে বাঁচে আমার গোপাল।*
*করিলে এ কার্য‍্য পরে,সতী বলিবেক তোরে,*
       *সুখ‍্যাতি রটিবে চিরকাল।।*
*🌻তখন জটিলা এসে বলছেন আমাকে কি করতে হবে? বল তাড়াতাড়ি বল।*
*কি কার্য‍্য করতে হবে,কহ দেখি গো যশোদে,*
      *সেই কর্ম করিব তোমার।*
*যদি বাঁচে নীলমণি,অবশ‍্য করিব আমি,
      *এই করিলাম অঙ্গীকার।।*
*শুনি যশোমতী কন,শুন দিদি বিবরণ,*
       *এসেছেন বৈদ‍্য একজন।*
*গণিয়া বলিলেন কথা,যদি থাকে সতী হেথা,*
      *তারে তুমি কর আনয়ন।।*
*শত ছিদ্র কুম্ভ লয়ে,বারি আনিবেক কক্ষে বয়ে,*
       *সে বারিতে সিনান করাব।*
*তা হলে তব তনয়,সুস্থ হইবে নিশ্চয়,*
      *মনোহর কহে চৈতন‍্য হয়ব।।*
*🌻🌻এই পদটির ব‍্যাখ‍্যা আপনারা আপনাদের মত করে বলবেন, খুব সহজ ও মজার।🌹জটিলা কুটিলা বহু চেষ্টা করেও শতছিদ্র কলসে জল আনতে পারলেন না, লোকলজ্জার ভয়ে সেখান হতে পালিয়ে বাঁচলেন।*
*🌻বৈদ‍্যরাজ পুনঃ কাঠি পেতে গণনা করে নির্ণয় করলেন। বৈদ‍্যরাজ বললেন যে কোন একজন আমার এখানে এসো, আমি কিছু প্রশ্ন করব উত্তর দেবে।একজন গোয়ালানী এলেন।*
*🌹প্রথম প্রশ্ন,১টি ফলের নাম=শ্রীফল।*
*🌹দ্বিতীয় প্রশ্ন ১টি ফুলের নাম=মল্লিকা।*
*🌹তৃতীয় প্রশ্ন ১টি সতীর নাম=তিলোত্তমা।*
*🌹চতুর্থ প্রশ্ন১টি বড় রাজার নাম=রাবণ।*
*🌹পঞ্চম প্রশ্ন ১টি গ্রামের নাম=ধাত্রীগ্রাম।*
*🌻বৈদ‍্যরাজ বললেন গণনা করে পেলাম,শ্রীমতিরাধা। এখানে এই নামে কি কেউ আছে? তাঁকে শতছিদ্র কুম্ভ দিন আমার পূর্ণ বিশ্বাস এই সতী নারী, জল আনতে পারবেন। শ্রীরাধার কলঙ্ক মোচন করবার জন্য ভগবান এই লীলাটি ব্রজে করেছিলেন।( বাকী কথাগুলি আপনাদের মত করে পরিবেশন করবেন।*
*🙏বানান, ভুল মার্জনা করবেন🙏*
*এই লীলা এখানেই রইল।*
    ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
আমায় দেওয়া ওনার এই অমূল্য লিখনী সেবা, তা সকলের মধ্যে প্রকাশ করলাম। ওনার এই অমূল্য দান সমগ্র বৈষ্ণব সমাজ অনন্তকাল মনে রাখিবে।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧



শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

১৫১ হইতে ১৬০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ‍্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda151to160.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html