🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html

  ✧═══════════•❁❀❁•══════════✧
🔙 পূর্ব লীলা 👉 ১০১ হইতে ১১০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori101to110.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১১)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
     *পরম ভাগবদ্ রামানন্দ রায়*
    """"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🌻কারণ প্রেমসাগরের অধিপতি শ্রীমন্মহাপ্রভু প্রেমসাগরে ডুবতে জানেন,ডুবাতেও জানেন,ভাসতেও জানেন ও ভাসাতেও জানেন।এইভাবে কৃষ্ণ প্রেমের সঞ্জীবনী সুধাপান করে রামরায় আর মায়ামুগ্ধ মানুষ রইলেন না, তিনি অধীর আগ্রহে দিন কাটাতে লাগলেন যে কবে তাঁর আরাধ‍্য দেবতা আবার বিদ‍্যানগরে ফিরে আসিবেন।এমন সময় প্রায় দুই বৎসর বাদে হঠাৎ তাঁর বিরহ বিষাদ অন্ধকার হৃদয়ে যেন নবারুণ (নূতন সূর্য‍্যের) কিরণপাতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠিল এবং তাঁর যেন মনে হল এইবার পূর্ণিমার পূর্ণ শশী আবার বিদ‍্যানগরের আকাশে উদিত হবেন। কার্য‍্যত তা সত‍্যে পরিণত হল কারণ প্রকৃত ভক্তের বিরহ স্বয়ং ভগবানকেও সমানভাবে পীড়া দেয়।ভক্ত যখন বিরহ অনলে জ্বলতে পুড়তে থাকেন তখন কৃপাময় ভগবান আর ধৈর্য‍্য ধরে থাকতে পারেন না। তখন তিনি এসে তাঁকে শান্ত করেন এবং এক্ষেত্রেও রামরায় তাঁর হৃদয় বল্লভকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন এবং প্রেমালিঙ্গন দানে উভয়ে বাহ‍্যজ্ঞান শূন‍্য হয়ে গেলেন, বিগলিত অশ্রুধারায় মাটি যেন কর্দমাক্ত হয়ে উঠিল।অনেক পরে কিঞ্চিৎ ধৈর্য‍্য ধরে উভয়ে ভ্রমণ বৃত্তান্ত প্রসঙ্গ করলেন, যথা=*
*🌷সপ্ত গোদাবরী দেখি তীর্থ বহুতর।*
*🌷পুনরপি আইলা প্রভু বিদ‍্যানগর।।*
*🌷রামানন্দ রায় শোনি প্রভুর আগমন।*
*🌷আনন্দে আসিয়া কৈল প্রভুর মিলন।।*
*🌷দন্ডবৎ হৈয়া পড়ে প্রভুর চরণ ধরিয়া।*
*🌷আলিঙ্গন করে প্রভু তাঁরে উঠাইয়া।।*
*🌷দুই জনে প্রেমাবেশে করয়ে ক্রন্দন।*
*🌷প্রেমাবেশে শিথিল হইল দু'জনার মন।।*
*🍀এই প্রত‍্যাবর্তন কালে মহাপ্রভু সাতদিন বিদ‍্যানগরে থেকে রামরায়ের ব‍্যথিত হৃদয়কে শান্তিদান করেন এবং এই সময় তিনি দুইটি অমূল‍্য গ্রন্থ রামরায়কে দেখান, যা তিনি পরিব্রাজন কালে পেয়েছিলেন, এই গ্রন্থ দুইটির নাম=ব্রহ্ম সংহিতা ও শ্রীকৃষ্ণকর্ণামৃত।উভয়ে এই দুই গ্রন্থ পাঠ করে অনেক রস আস্বাদন করেন এবং রামরায় এই গ্রন্থদ্বয়ের সম্পূর্ণ হৃদয়ে গ্রথিত করে লন।অতঃপর মহাপ্রভু সাতদিন অতিক্রান্ত হবার পর  বললেন যে নীলাচলচন্দ্রের দর্শনের জন্য তাঁর চিত্ত অতীব ব‍্যাকুল হয়েছে  এবং সেজন‍্য তিনি পুরীধামের প্রত‍্যাগমন করতে চাহেন।রামরায় আর বাধা সৃষ্টি সৃষ্টি করলেন না এবং বললেন যে ইত‍্যবসরে তিনি রাজা প্রতাপরুদ্রকে তাঁর মনোভাব ব‍্যক্ত করে এই রাজকার্য‍্য হতে অব‍্যাহতির জন্য অনুমতি ভিক্ষা করেছিলেন এবং ভক্তবৎসল রাজা তাতে স্বীকৃত হয়েছেন এবং তিনি শীঘ্রই নীলাচলে তাঁর সঙ্গে মিলিত হবেন। শ্রীচরিতামৃতে পাওয়া যায় =*
*🌷রামানন্দ কহে গোসাঞী তোমার আজ্ঞা পাইয়া।*
*🌷রাজাকে লিখিনু আমি বিনতি করিয়া।।*
*🌷রাজা মোরে আজ্ঞা দিলা নীলাচল যাইতে।*
*🌷চলিবার সজ্জা আমি লাগিয়াছি করিতে।।*
*🌷প্রভু কহে হেথা মোর এ নিমিত্ত আগমন।*
*🌷তোমা লইয়া নীলাচলে করিব গমন।।*

*অতঃপর মহাপ্রভু নীলাচলে প্রত‍্যাবর্তন করলেন এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই রামরায় ঐশ্বর্য‍্য ভোগ-বিলাস পরিত‍্যাগ করে কটকে এসে সর্বপ্রথম রাজদর্শন করে পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে পুরীধামে আগমন করলেন এবং এই প্রসঙ্গে শ্রীচরিতামৃতে=*
*🌷হেনকালে প্রতাপরুদ্র পুরুষোত্তমে আইলা।।*
*🌷রামানন্দ রায় আইল গজপতি সঙ্গে।*
*🌷প্রথমেই প্রভুরে আসি মিলিলেন রঙ্গে।।*
*🌷রায় প্রণতি কৈল,প্রভু কৈল আলিঙ্গন।*
*🌷দুই জন প্রেমাবেশে করেন ক্রন্দন।।*
*🌷রায় সনে প্রভুর দেখি স্নেহ ব‍্যবহার।*
*🌷সব ভক্তগণ মনে হৈল চমৎকার।।*
*🌷রায় কহে তোমার আজ্ঞা রাজাকে কহিল।*
*🌷তোমার ইচ্ছায় রাজা মোরে বিষয় ছাড়াইল।।*
*🌷আমি কহিনু আমা হইতে না হয় বিষয়।*
*🌷চৈতন‍্য চরণে রহি যদি আজ্ঞা হয়।।*
*🌷তোমার নাম শুনি রাজা আনন্দিত হৈল।*
*🌷আসন হইতে উঠি মৌরে আলিঙ্গন কৈল।।*
*🌷তোমার নাম শুনি হইল মহা প্রেমাবেশ।*
*🌷মোর হাত ধরি কহে পিরীতি বিশেষ।।*
*🌷তোমার যে বর্ত্তন তুমি খাহ সে বর্ত্তনে।*
*🌷নিশ্চিন্ত হইয়া সেব প্রভুর চরণে।।*
*🍀শুধু রাজকার্য‍্য হতে অব‍্যাহতি দান করেই রাজা ক্ষান্ত হলেন না, তাঁর সাংসারিক ভরণ পোষণের জন্য যাতে কোন অর্থকষ্ট না হয় সেজন্য মহানুভব মহাভক্ত রাজা প্রতাপরুদ্র, সেই বিদ‍্যানগরের জমিদারীর সব রাজস্ব তাঁকে দান করলেন, যাতে সাংসারিক জীবনে তাঁর কোন অসুবিধা ভোগ না করতে হয়।ধন‍্য রাজা প্রতাপরুদ্র, তোম মত গৌরভক্ত বা ভগবদ্ ভক্ত রাজাই আমাদের হিন্দুধর্মের আদর্শ বজায় রেখেছেন।এইভাবে রামরায় চিরতরে মহাপ্রভুর সঙ্গী হলেন এবং মহাপ্রভুর অপ্রকট কাল পর্যন্ত নিরলস ভাবে গম্ভীরার নির্জন কক্ষে বসে কৃষ্ণকথার ইষ্টগোষ্ঠী করে মহাপ্রভুর বিরহ ক্ষীণ্ণ হৃদয়কে শান্তি দান করেছিলেন।এটিই সংক্ষেপে এই মহাপুরুষের জীবনালেখ‍্য।*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*ব্রহ্মা,ইন্দ্র,মুনিগণ,বাঞ্জে যাঁর শ্রীচরণ,*
   *ঊর্দ্ধমুখে যোগ মার্গে করিয়া সাধন।*
*তবু তারা নাহি পায়,সেই পরম আশ্রয়,*
    *সে চরণ সদা হৃদে রাখে গোপীগণ।।*
*ব্রজের গোপী বিনা আর,হেন ভাগ‍্য হয় কার,*
    *যাদের কৃষ্ণের বাহু কন্ঠেতে শোভিত।*
*নাহি পান লক্ষ্মী যাহা,গোপীগণ লভে তাহা,*
    *না যায় বর্ণন তারা ভাগ‍্যবতী কত।।*
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌹🌻🌻🌻🌻🌻🌻
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১২)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
    *রামানন্দ রায় ও শ্রীমন্মহাপ্রভু*
       *সাধ‍্য সাধনতত্ত্ব আলোচনা*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🍀মহাপ্রভু ব্রাহ্মণের গৃহে আতিথ‍্য গ্রহণ করলেন এবং রামরায় তার প্রসাদে ফিরে গেলেন।রামরায় তখন যেন মানুষ নন কৃষ্ণপ্রেমে পাগল এবং সন্ধ‍্যাকালে মহাপ্রভুর সঙ্গমানসে অধীর উৎকণ্ঠার সঙ্গে দিনটি কেটে গেল এবং সন্ধ‍্যার পর সেই ব্রাহ্মণের কুঠিরে এসে মহাপ্রভুর পদপ্রান্তে লুটিয়ে পড়লেন।মহাপ্রভুও তাঁর প্রিয় ভক্তকে আলিঙ্গন করে তপ্ত হৃদয় খানিকটা শীতল করলেন এবং বললেন রামরায় তোমার আশায় তৃষিত চকোরের মত সারাটি দিন বসে আছি কখন তুমি এসে আমার এই জ্ঞানশূন‍্য শুকনো হৃদয়কে কৃষ্ণকথা শুনিয়ে শান্তি দিবে এ বললেন=*
*🌷সাধ‍্যবস্তু সাধন বিনা কেহ নাহি পায়।*
*🌷কৃপা করি কহ রায় পাবার উপায়।।*
*🙏তখন শ্রীরামানন্দ রায় কহিলেন=*
*🌷আমি  নট  তুমি   সূত্রধর।*
*🌷যেমত নাচাহ তৈছে চাহি নাচিবার।।*
*🌷মোর জিহ্বা বীণাযন্ত্র তুমি বীণাধারী।*
*🌷তোমার মনে যেই উঠে তাহাই উচ্চারি।।*
*🌻এখানে একটি বিষয় খুবই লক্ষ্য করবার বস্তু।শাস্ত্রে যেখানে দুইজনের মধ্যে সংলাপ হয়, সেখানে জ‍্যেষ্ঠ বক্তা কনিষ্ঠ শ্রোতা।যেমন--, গুরুদেব বক্তা, শিষ‍্য শ্রোতা।শ্রীশুকদেব গোস্বামী বক্তা, মহারাজ পরীক্ষিত শ্রোতা, শ্রীকৃষ্ণ বক্তা,অর্জুন শ্রোতা। ধর্ম জগতে এটিই প্রচলিত পদ্ধতি। কিন্তু রামানন্দ রায় এবং মহাপ্রভুর সংলাপের মধ্যে এর বিপরীত দেখা যায়, এখানে রামানন্দ রায় বক্তা, আর পরমদয়াল মহাপ্রভু শ্রোতা। প্রয়াগে শ্রীপাদ রূপগোস্বামী এবং শ্রীমন্মহাপ্রভুর মধ্যে যে সাধ‍্যসাধন তত্ত্ব আলোচিত হয়েছিল, সেখানে কিন্তু মহাপ্রভু বক্তা,শ্রীরূপ শ্রোতা।কাশীতেও সেইরকম সনাতন শ্রোতা, মহাপ্রভু বক্তা।কিন্তু এখানে কনিষ্ঠ বক্তা, জ‍্যেষ্ঠ শ্রোতা অর্থ‍্যাৎ ভক্ত বলছেন আর ভগবান শুনছেন।যিনি সকলের তৃষ্ণা মেটান, তিনিই নিজেই তৃষ্ণাতুর।যিনি ভান্ডারী তিনিই ভিখারী। যিনি দাতা তিনিই গ্রহীতা।এ এক গভীর রহস‍্য।*
*🍀সাধ‍্য সাধন তত্ত্বটি অনেকাংশে আশ্রয় ও বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস‍্য আছে যা এই গ্রন্থের অন‍্যত্র দেওয়া হয়েছে।আশ্রয়ের মাধ‍্যমে ভক্ত যেরকম ধীরে ধীরে বিষয়তত্ত্বে পৌঁছাতে পারেন সেইরকম মানুষের জীবনে সর্ববিধ প্রচেষ্টার দ্বারা যে বস্তু বা ভাবকে সাধন করতে হবে তাই সাধ‍্য।সংসারের সব বস্তুই  জানতে বা অজানতে সাধ‍্য বস্তুর দিকে ছুটছে তা যার যে সাধ‍্য হোক না কেন? ভক্তি জগতেও সেইরকম সাধ‍্যতত্ত্বে না পৌঁছানো পর্যন্ত আপন স্বরূপে বা স্বভাবে স্থিতিলাভ করতে পারে না। সাধ‍্যতত্ত্বে না পৌঁছানো পর্যন্ত গতিশীলই থাকে।গিরিকন্দর হতে উচ্ছসিত জলধারা যখন পাহাড় হতে প্রবলবেগে প্রবাহিত হয়, তখন দুর্গম গতি এবং স্রোত দেখলে ভয়ে প্রাণ শিহরিয়ে উঠে, সে তখন উত্তাল তরঙ্গের সৃষ্টি করে ছুটে চলেছে তার সাধ‍্য বস্তুর দিকে।পরিশেষে যখন সে মহাসমুদ্রে এসে বিলীন হয়ে যায় তখন সে হয় শান্ত স্থির কারণ সে তার সাধ‍্য বস্তুকে পেয়ে গেছে।*
*🍁জমাট বরফ যেমন যতক্ষণ জল হতে না পারে ততক্ষণ গলতেই থাকে তখন সেই বিগলিত জলধারার একটা গতি থাকে  কিন্তু যখন সম্পূর্ণরূপে গলে যায় তখন শান্ত ও গতিহীন হয়ে যায়।আবার সেই বরফকে যদি কাঠের গুড়া চাপা দিয়ে আবদ্ধ জায়গায় রাখা হয়,তাহলে সেই বরফের গলতে অনেক সময় লাগে, সেইরকম মায়াবদ্ধ এই জীবের মন হাজার প্রকার কামনা বাসনায় আবৃত থাকে বলে সাধ‍্যবস্তু পাওয়ার পথে চলতে দেরী হয়। আবার সেই বরফকে যদি কাঠের গুড়ি সরিয়ে গরম জায়গায় রাখা যায় তাহলে তার গলনকে দ্রুততর করে দেয়, সেইরকম কামনা বাসনারূপ মালিন‍্য দ্বারা আচ্ছন্ন এই মনকে কি জাতীয় কৃষ্ণ অনুরাগের তাপ দিলে জীবকে অভিসারের পথে অর্থ‍্যাৎ সাধ‍্যের পথে দ্রুততরে নিয়ে যাওয়া যায় তাহাই সাধন।এই সমস্ত অতি গুহ‍্য তত্ত্বকথা আমাদের মত সাধারণ নগণ‍্য জীবের দ্বারা ব‍্যাখ‍্যা করা একেবারেই সম্ভব নয় এবং আশাকরি ভক্ত শ্রোতাগণ কিছুটা বুঝতে পেরেছেন যে মহাপ্রভু তাঁর প্রিয়ভক্ত রামরায়ের শ্রীমুখ হতে কৃষ্ণভক্তি বিষয়ক কি জাতীয় সাধ‍্যসাধন তত্ত্বকথা সব শুনতে চেয়েছিলেন।এককথায় রামরায়কে শক্তি সঞ্চার করে মহাপ্রভু রামরায় মহিমা জীব জগতে প্রচার করেছেন, কারণ ভক্তমুখে আস্বাদন করে ভগবান সুখ পান।মহাপ্রভুর প্রশ্নের উত্তরে রামরায় ধীরে ধীরে প্রসঙ্গ আরম্ভ করলেন।*
*(১)রামরায় সর্বপ্রথম "স্বধর্ম আচরণকে" সাধ‍্য বলিয়া উল্লেখ করলেন। শ্রীমদ্ ভাগবত গীতায় শ্রীকৃষ্ণ ভগবান অর্জুনকে বলেছিলেন, "স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ"*। *মহাপ্রভু এর বিস্তারিত ব‍্যাখ‍্যা শুনলেন এবং বললেন রামরায়!ইহ বাহ‍্যকথা, আগে কহ আর।(ভক্ত পাঠকগণ কৃপা করে "সাংখ‍্য যোগের "৩১-৩২-৩৩ নম্বর শ্লোক এবং "কর্ম যোগের" ৩৫ নম্বর শ্লোকটি পাঠ করবেন।*
*(২)অতঃপর রামরায় বললেন "কৃষ্ণে কর্মার্পণ" হচ্ছে সাধ‍্য বস্তুর মধ্যে সার কথা, যে কথা গীতায় বলা আছে যে "যৎ করোষি,যদ্ অশ্নাষি" ইত্যাদি অর্থ‍্যাৎ হে অর্জুন! তুমি যা ইচ্ছা হয় করো, কিন্তু আমাকে স্মরণ করে তবে কোরো ইত্যাদি।এর বিস্তারিত ব‍্যাখ‍্যা শুনে মহাপ্রভু পুনরায় কহিলেন "রাম ইহ বাহ‍্য" আগে কহ আর। (কৃপা করে "রাজবিদ‍্যা রাজগুহ‍্য" যোগের ২৭ নম্বর শ্লোকটি পাঠ করবেন)।*
*(৩)মহাপ্রভুর মনের ভাব বুঝে রামরায় পুনরায় কহিলেন "স্বধর্ম ত‍্যাগ সর্বসাধ‍্যসার", যে কথা গীতায় বলা আছে যে "সর্ব ধর্মান পরিত‍্যজ‍্য মামেকর শরণং ব্রজ", ইত্যাদি অর্থ‍্যাৎ আগে বললেন কর্মফল অর্পণের কথা  কিন্তু এবার বললেন আত্মদানের কথা। (কৃপা করে  "মোক্ষ যোগের" ৬৬ নং শ্লোকটি পাঠ করবেন)।এর বিশদ আলোচনা শুনে, মহাপ্রভুর মনের ভাব বুঝতে পেরে রামরায় যেন গন্তব্যের দিকে ধীরে ধীরে একপা্ একপা্ করে অগ্রসর হতে লাগলেন এবং মহাপ্রভুও বললেন, রামরায়! ইহ বাহ‍্য, আগে কহ আর।*
🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷
*🌻🌻🌻উদ্ধবের প্রার্থনা🌻🌻🌻*
*ব্রজের মাঝে বিরাজিত,বৃক্ষ লতা আছে যত,*
    *কত পুণ‍্য তারা সবে করেছে অর্জন।*
*যদি কৃপা মোর প্রতি,এই কর বিশ্বপতি,*
    *বৃন্দাবনে করি যেন জনম গ্রহণ।।*
*ব্রজনারীগণ যবে,পথ ধরি চলি যাবে,*
   *পদধূলি অঙ্গে আমি করিব লেপন।*
*যাঁর চিন্তা অনুক্ষণ,করে যোগী ঋষিগণ,*
   *গোপী তাঁরে প্রেমডোরে করেছে বন্ধন।।*
*কহি উদ্ধব সবারে,ল'য়ে বিদায় এবারে,*
   *করিলেন তবে তিনি রথে আরোহণ।*
*নন্দ আদি গোপগণ,আনি নানা উপায়ন,*
   *অশ্রুপূর্ণ নেত্রে তারে করিল অর্পণ।।*
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🦚🌷🌷🌷🌷🌷🌷
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৩)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
      *শ্রীরামানন্দ রায় ও মহাপ্রভু*
      *সাধ‍্য-সাধনতত্ত্ব আলোচনা*
                    *২*
*(৪)তখন রামরায় পুনরায় গীতার আশ্রয়ে বললেন, "জ্ঞানমিশ্র ভক্তিই সার সাধ‍্যবস্তু", এই বল "ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি" এই শ্লোকটির ব‍্যাখ‍্যা করলেন। অর্থ‍্যাৎ তিনিই একমাত্র শরণ‍্য,এই জ্ঞানলাভ হলেই শরণাগতি জাগবে। কিন্তু মহাপ্রভু সব শুনে কহিলেন, রাম! ইহ বাহ‍্য, আগে কহ আর "। (কৃপা করে  "মোক্ষ যোগের " ৫৪ নং শ্লোকটি পাঠ করবেন)।*
*(৫) এতক্ষণ রামানন্দ রায় গীতার আশ্রয়ে চলতেছিলেন কিন্তু মহাপ্রভুর মনোভাব বুঝে ভাবতে লাগলেন যে এখন কি বললে তিনি তুষ্ট হবেন।তখন তাঁর হঠাৎ মনে হল দেবর্ষি নারদ এবং মহর্ষি বেদব‍্যাসের সংলাপ প্রসঙ্গ।মহর্ষি বেদব‍্যাস গীতা মহাভারত ইত্যাদি সব গ্রন্থ রচনা করেও যেন মনে শান্তি পাচ্ছিলেন না। মন যেন অশান্ত,তখন দেবর্ষি নারদের কৃপায় তিনি শ্রীকৃষ্ণের লীলা মাহাত্ম্য রচনার জন্য শ্রীমদ্ ভাগবত প্রণয়ণে উদ‍্যোগী হন। সেই হিসাবে রামরায় এখন গীতার সর্বোচ্চ সিঁড়িতে উঠেও যখন মহাপ্রভুর তাপিত হৃদয় সুশীতল হল না,তখন শ্রীমদ্ভাগবতের দুয়ারে পদক্ষেপ করলেন এবং বললেন ঃ---*
*🌷জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তি সাধ‍্য সার।*
*🍀হঠাৎ শুনলে মনে হয় এ আবার কি বললেন? কিন্তু এর অন্তর্নিহিত অর্থ অন‍্যরকম। জ্ঞানশূন‍্যা অর্থ‍্যাৎ জ্ঞানের ক্রিয়াশূন‍্য। পূর্ণতায় পৌঁছলেই জ্ঞান ক্রিয়াহীন হয়।যেমনটি দেখা যায় কলসী জলপূর্ণ করবার সময়ে। যতক্ষণ জল পূর্ণ না হয় ততক্ষণ একরকম শব্দ করতে থাকে, কিন্তু জলে পরিপূর্ণ যখন হয়ে যায় তখন আর সে শব্দ থাকে না। সেইরকম জ্ঞান যতক্ষণ চরম ভূমিতে না যায়, ততক্ষণই তার অস্তিত্বের বা সত্ত্বার প্রকাশ থাকে। জ্ঞান আছে আমার, আমি জ্ঞানী,এটি যতক্ষণ বুঝতে পারা যাচ্ছে ততক্ষণ জ্ঞান চরম সীমায় পৌঁছয় না।অর্থ‍্যাৎ নিবিড়ভাবে জ্ঞানকে আত্মসাৎ করেই ভক্তি জ্ঞানশূন‍্য হবে।এত বেশী জানা যে না জানার তুল‍্য।কর্ম,কর্মার্পণ স্বভাব সৃষ্টি করে দিয়ে যেন বিদায় নিয়েছে,তারপর জ্ঞান এসেছে এবং জ্ঞান পূর্ণতায় পৌঁছিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়ে শ্রদ্ধাভক্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে দিচ্ছে।এখানে ঐশ্বর্য‍্য বুদ্ধি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত।*
*☘ভগবানকে ভগবান বলে যাঁরা ভক্তি করেন তারা যেন প্রতিবেশী এবং কৃষ্ণকে আপনজন বলে যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা যেন ঘরের মানুষ।এই ঘরের মানুষের মত পাওয়াই মহাপ্রভুর হৃদয়ের বাসনা এবং এই ঘরোয়া ভক্তির খবর দিয়েছেন বা আস্বাদ দিয়েছেন শ্রীমদ্ভাগবত।সেজন‍্য রামরায় গীতার উক্তি জ্ঞানভক্তি সমস্ত ছেড়ে শ্রীমদ্ভাগবতের শ্রদ্ধাভক্তি জগতে ধীরে ধীরে প্রবেশ করছেন।ভক্তির দ্বারে ভগবান পরাজিত হন।কখন হন?যতক্ষণ ভক্ত তাঁকে ভগবান বলে জানেন ততক্ষণ হন না।(তিনি ভাগবতের একাদশ অধ‍্যায়ে বলেছেন, তপ,জপ,বৈরাগ‍্য,দান ও ধ‍্যানের মাধ‍্যমে আমাকে কেউ বশীভূত করতে পারেন না, আমি একমাত্র ভক্তির অধীন। আবার দেখুন, এই ভক্তির দ্বারা মা যশোমতী গোপালকে কান ধরে প্রহার করেছেন, রজ্জু দিয়ে বন্ধন করেছেন, যিনি অনন্তকোটি ব্রহ্মান্ডের অধিপতি,তিনি মা যশোদার হাতে লাঠি দেখে ভয়ে পলায়ন করেছেন! কি আশ্চর্য‍্য তাইনা?)। এবং যার প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায় গোপীগণের ও গোপ বালকের আচরণর মধ্যে।*
*সেজন‍্য মহাপ্রভুর মনের গোপন কথাটি বুঝতে পেরে রামরায় এই জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তির কথা বললেন। এই জ্ঞান শূন‍্যতা তেই জ্ঞানের পরিপূর্ণ।এইরকম বিশ্লেষণ করে রামানন্দ গৌরহরির বদনপদ্মের দিকে যেন একটু তাকালেন এবং দেখলেন যে শ্রীমুখে যেন নির্মল আনন্দের আভাষ। অর্থ‍্যাৎ বদনপদ্মে সামান্য হাসি ফুটল এবং গ্রীবা হেলিয়ে বললেন, এহো হয়, হ‍্যাঁ এইবার বেশ ভাল বলেছ, এতক্ষণ কিন্তু মহাপ্রভু বলেছিলেন এহ বাহ‍্য কিন্তু এইবার সর্বপ্রথম বললেন এহো হয়, এবং তারপরে বললেন, রামরায়! আগে কহ আর*
*(৬)এইবার রামরায় কহিলেন--, মহাপ্রভু!তুমি তো সবই জানো আমার মুখ দিয়ে যা বলাবে তাইই বলিব।তুমি যদি জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তি অপেক্ষা শ্রেয়তর কি তা জানতে চাও তাহলে বলিব--*
*🙏প্রেমভক্তি সর্ব সাধ‍্যসার।*
*জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তি এবং প্রেমভক্তি এই উভয় প্রায় একই স্তরের, তবে কিঞ্চিৎ তফাৎ আছে।জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তিতে জ্ঞান নাই বটে, কিন্তু জ্ঞান যে নাই সে জ্ঞানটি তো বোধ হয় বা বোধ আছে। অর্থ‍্যাৎ জ্ঞান শূন‍্যতায় জ্ঞানাভাস আছে কিন্তু প্রেমভক্তির মধ্যে সেটি নেই। রামরায় এই প্রসঙ্গে বলছেন যে মহাপ্রভু! তোমাকে আমি কি করে বুঝাব, সে ভাষা বা জ্ঞান আমার নাই তথাপি বলছি যে জ্ঞানশূন‍্যা ভক্তিতে ভক্তিদেবীর বাইরের অঙ্গ প্রত‍্যঙ্গগুলি যেন ব‍্যক্ত হয় এবং প্রেমভক্তির মাধ‍্যমে তার অন্তরের দিকটা ফুটে উঠে।জ্ঞানশূন‍্যা অবস্থায় ভক্ত যেন ভক্তির ফুটন্ত ফুলটি দেখেন এবং প্রেমভক্তি দ্বারা ফুটন্ত ফুলের মন মাতানো সৌরভটি ভোগ করেন।প্রেমভক্তির বক্ষের মধ্যে ঐ লুকানো গন্ধটি হল কৃষ্ণতৃষ্ণা।*
*🍀যত উপচারেই পূজা হোক না কেন হৃদয়ের শুদ্ধ প্রেম যেরকম শ্রীকৃষ্ণকে গলিয়ে দিতে পারে, তেমন আর কিছুতেই পারে না।এই শুদ্ধপ্রেম কিন্তু প্রয়াসলভ‍্য নয় প্রসাদলভ‍্য,যদিও প্রয়াসের বা চেষ্টার মাধ‍্যমেই ধীরে ধীরে ভগবানের কৃপালাভ করা যায়।এই কৃপাটির জন্য অন্তরে সদা সর্বদা লোভটি জাগিয়ে রাখতে হবে।একটি বাস্তব উদাহরণ দ্বারা একে আরও একটু সরল ভাষায় বলি, মিষ্টির দোকানে থরে থরে সাজান নানারকম মিষ্টি দেখে লোভ তত জন্মায় না। কিন্তু কেউ যদি সেই রসমালাই কিনে নিয়ে কাউকে দেখিয়ে দেখিয়ে সামনে বসে খেতে থাকে তাহলে তখন লোভ সম্বরণ করা যেন অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। সেইরকম কোন ভক্ত যখন শ্রীকৃষ্ণমাধুর্য‍্য আস্বাদন করেন এবং ধীরে ধীরে যখন তাঁর মনপ্রাণ কৃষ্ণপ্রেম রসসিন্ধুতে ভাসতে থাকে, হৃদয় মন যখন আনন্দ তরঙ্গে বিলীন হয়ে যায় তা দর্শন করলে লোভ জাগা খুব স্বাভাবিক।এই লোভই প্রেমভক্তির সার কথা বা প্রাণ, সেইজন‍্য রামরায় এই তথ‍্যটিকে আরও পরিস্কার ভাবে বুঝাবার জন্য একটি শ্লোক বললেন, যথা=*
*🌷কৃষ্ণভক্তি রস ভাবিতা মতিঃ,*
*🌷ক্রীয়তাং যদি কুতোহপি লভ‍্যতে।*
*🌷তত্র লৌল‍্যমপি মূল‍্যমেকং,*
*🌷জন্ম কোটী সুকৃতৈর্ণ লভ‍্যতে*।।
*☘এই শ্লোক শুনে শ্রীগৌরাঙ্গ স্নিগ্ধমধুর কন্ঠে মিষ্টি হাসি হেসে বললেন, রামরায়! এহো হয়, কিন্তু তথাপি শর্করাসহ ঘনাবর্ত ক্ষীর আস্বাদনের জন্য কহিলেন রামরায় "আগে কহ আর"। অর্থ‍্যাৎ আরও কিছু বলো এখন আর "ইহ বাহ‍্য" এই কথাটি বলছেন না।*
*(৭)রামায় তখন দৈন‍্যবিনয় কন্ঠে বললেন,প্রভো! তোমার হাতের আমি খেলনা মাত্র, তুমি তো সবই জানো, এবং বললেন=*
*🙏দাস‍্য প্রেম সর্বসাধ‍্যসার।*
*অর্থ‍্যাৎ জীবমাত্রেই কৃষ্ণদাস এই নিগূঢ় সত‍্যটি যখন মানুষ উপলব্ধি করে ভগবানের সঙ্গে নিজেকে দাস বলে সম্বন্ধ স্থাপনা করতে পারে, তখনই তাকে দাস‍্যভাব বলে।তুমি প্রভু আমি দাস,তুমি যন্ত্রী আমি যন্ত্র, আমি যে আহার করব তা তোমারি ইচ্ছায়, যে সংসার করি তাও তোমারই দয়ায়,তুমি কর্তা আমি দাস, এই দাস‍্য ভক্তির শ্রেষ্ঠত্বের কথা রামরায় প্রকাশ করলেন এবং মহাপ্রভু তা শুনে অতিশয় আনন্দ লাভ করলেন।*
             *ক্রমাগত*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৪)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
   *পরম ভাগবত রামানন্দ রায়,*
   *সাধ‍্য সাধনতত্ত্ব আলোচনা*
   ^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🍀শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসাই জীবের চরম সাধ‍্য নহে, ভালবেসে তাঁর সেবা করা এবং তার মাধ‍্যমে তাঁর সুধবিধান করাই জীবের পরম পুরুষার্থ।নিজেকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে আরাধ‍্যের সুখ দেওয়াই হচ্ছে ভক্তের শেষ লক্ষ্য।সেব‍্য ও সেবকের ব‍্যবধান যত বেশী হবে সেবায় আত্ম বিসর্জন ততই বাধাপ্রাপ্ত হবে  অর্থ‍্যাৎ ঐশ্বর্য‍্যভাব মন থেকে একেবারেই মুছে ফেলতে হবে। কৃষ্ণ বড় আমি ছোট এইরকম সঙ্কোচ ভাব থাকলে আত্ম বিসর্জনটি কখনও সর্বাঙ্গ সুন্দর হতে পারে না।দাস‍্য ভক্তির মূর্ত্ত প্রতীক হচ্ছেন বীর হনুমান। মহাপ্রভু দাস‍্যভক্তির এইরকম বিশ্লেষণ শুনে অত‍্যন্ত আনন্দ পেলেন এবং বললেন, রামরায় এহো হয়, অর্থ‍্যাৎ খুব সুন্দর কথা বলেছ কিন্তু আমি তৃষিত, আমি ক্ষুধার্ত, আমার এই জ্ঞানশুষ্ক হৃদয় সরসীতে তুমি কৃষ্ণপদ্ম প্রস্ফুটিত করো যাতে আমি সেই সৌরভ সবসময় হৃদয়ে ধারণ করতে পারি অতএব আরও কিছু বলো এবং সেইজন‍্য বললেন, আগে কহ আর।*
*(৮)এবার গৌরহরির অন্তরের চাহিদা বুঝে রামরায় বললেন মহাপ্রভু! আর কি বলিব, আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যেটুকু সম্পদ আছে তা তোমার শ্রীচরণতলে নির্মাল‍্য হিসাবে সমর্পণ করেছি এবং বললেন=*
*🌷সখ‍্য প্রেম সর্ব সাধ‍্যসার।*
*🍀রামরায় দাস‍্যপ্রেমের ব‍্যাখ‍্যার পর তিনি ব্রজ বালকগণের সখ‍্য প্রেমের বিস্তারিত ব‍্যাখ‍্যা করলেন।কারণ ব্রজবালকগণের কৃষ্ণ প্রেমের মধ্যে ঐশ্বর্য‍্যভাব একেবারেই ছিল না।নিজ চরণ নিজ গায়ে ঠেকলে যেমন কোন উদ্বেগের কারণ হয় না, তেমনি কৃষ্ণ অঙ্গে ঠেকলেও তাঁদের মনে কোন বিকার জন্মিত না।নিজেদের মুখের উচ্ছিষ্ট ফল আদর করে কৃষ্ণ মুখে দিয়ে বললেন সখা খেয়ে দ‍্যাখ কি সুন্দর মিষ্টি ফল, কি সুস্বাদু, এতো একা খেয়ে সুখ পাওয়া যায় না। তাঁদের বিচার বুদ্ধি এমনই একটা স্তরে বিচরণ করত যে আমার উচ্ছিষ্ট, আমার মুখে খাওয়া আর কৃষ্ণমুখে খাওয়াও তাই।এই দুই মুখের মধ্যে কোন ভেদ বুদ্ধি সখ‍্য ভক্তের অন্তরে জাগ্রত হয় না।এই অভিন্ন মননই সখ‍্য প্রেমের প্রাণ। মহাপ্রভু এই সখ‍্যপ্রেমের ব‍্যাখ‍্যা শুনে বিশেষ সুখ পেলেন, কারণ রামরায়ের সঙ্গে তাঁরও তো সখ‍্যভাব সেজন‍্য পুলকিত অঙ্গে উল্লাস ভরে কহিলেন, রায়! এহোত্তম। তিনি এতক্ষণ বলেছিলেন "এহো হয় " কিন্তু এবার বললেন "এহোত্তম", অর্থ‍্যাৎ এতক্ষণ যা শোনালে ইহা যেন তাদের মধ্যে সর্বোত্তম। কিন্তু তথাপি মহাপ্রভুর লালসা নিবৃত্তি (বিরাম) নাই, মনের ক্ষুধা, বুকের তৃষ্ণা যেন কিছুতেই মিটছে না, সেজন‍্য বললেন,*
*🌷রাম এহোত্তম---আগে কহ আর।*
*(৯)রামরায় মরমী ভক্ত, গৌরহরির অন্তরের ভাব বুঝতে পেরে এবং বৈষ্ণব জগতকে কৃতকৃতার্থ করবার মানসে শ্রীভাগবতের আশ্রয়ে পুনরায় বললেন=*
*🌷বাৎসল‍্য প্রেম সর্বসাধ‍্যসার।*
*🍀সখ‍্যরসে সখা কৃষ্ণকে নিজের সমান মনে করেন, ছোটও নয় বড়ও নয়। কৃষ্ণ কোন অন‍্যায় করতে পারে  বা ভুল করতে পারে, এইরকম কোন চিন্তাই তাঁদের মনে জায়গা পেত না।কৃষ্ণকে উপদেশ দেওয়া প্রয়োজন, শাসন করা দরকার এইরকম চিন্তাধারা কিন্তু সখ‍্যপ্রেমে বিবর্জিত, এই শাসনের ভাবটি কিন্তু বাৎসল‍্য প্রেমের মধ্যে বিকশিত যার সর্বোচ্চ প্রকাশ হচ্ছে দামবন্ধন লীলা এবং মৃত্তিকা ভক্ষণ লীলার মধ্যে।*
*শুদ্ধ বাৎসল‍্য রসে নিমজ্জিত মা যশোমতী ও পিতা নন্দরাজা।মা যশোদা এই বালকটিকে সন্তানবোধে স্নেহ করেন, কেউ ভগবান বললে তিনি ক্ষুব্ধ হন, এইজন‍্য যখন শিশুগোপাল শিশুকালে অত‍্যন্ত দুর্দান্ত হয়ে উঠলেন তখন মা যশোদা তাঁকে উদুখলের সঙ্গে বেঁধে রেখে ছেলেকে শাসন করেছিলেন।এই ভাবটি কিন্তু সখ‍্যরসের মধ্যে নেই।যেমন আবেশ জননীর তেমনি আবেশ শিশুগোপালের।মা যশোদা বকাবকি করছেন,ধরবার জন্য ছুটাছুটি করছেন কিন্তু কিছুতেই দুরন্ত ছেলের সঙ্গে পেরে উঠছেন না, মাকে ক্লান্ত দেখে করুণাময় ভগবান যেন করুণা পরবশ হয়ে নিজেকে ধরা দেন।যেন নিজের অপরাধের জন্য কত লজ্জিত ও সঙ্কুচিত। ভগবানের এই আপনহারা ভাবটি পরাকাষ্ঠা প্রাপ্ত হয় বাৎসল‍্য রসের উদ্বেলিত সাগরে। যিনি অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডের অধিপতি,তিনি কিনা স্বেচ্ছায় মায়ের কষ্ট লাঘবের জন্য দড়ির বন্ধনে বদ্ধ হলেন।*
*🍀সেইরকম গোপাল মৃত্তিকা ভক্ষণ করেছিলেন, মা বলেছিলেন দুষ্টু ছেলে মাটি খেয়েছিস? মাটি খেয়ে মুখটি বন্ধ করে আছিস আমাকে লুকাবার জন্য?খোল মুখ খোল, আমি দেখতে চাই তোর মুখে কি আছে, তখন মুখ ব‍্যাদান করে সেই ছোট মুখের ভিতরে মাকে বিশ্বরূপ দর্শন করিয়েছিলেন।মা যশোদা ক্ষণিকের জন্যও মনে করেন না যে এই ছেলে অন‍্য কেউ, তিনি তখন বাৎসল‍্য স্নেহে বলেন হ‍্যাঁ বাপ মাটি খেতে গেলি কেন? খিদে পেয়েছে আমাকে বললেই তো হোতো, আয় বাপ আমার কোলে আয়,এই বলে মিতৃস্তনধারা পান করাতে লাগলেন।শিশু গোপালও ক্ষণিকের জন্য নিজের স্বরূপকে মাকে বুঝতে না দিয়ে সন্তান বোধে প্রাণ ভরে স্তন ক্ষীরধারা পান করতে লাগলেন।মা যশোদাও তখন বাৎসল‍্য রসের প্রবল প্রবাহে ভেসে গিয়ে নিজের ধমনীতে যত স্নেহরস সঞ্চিত ছিল তা যেন স্তনধারার সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সন্তানকে পান করাতে লাগলেন। এখানে লীলার এমনই বৈশিষ্ট্য যে তিনি তাঁর ক্ষুদ্র মুখের ভিতরে অনন্ত কোটি বিশ্বব্রহ্মান্ড ক্ষণিক আগে মাকে দেখালেন তাঁর মুখের মধ্যে ক্ষীরধারার প্রবল প্রবাহ যেন  তিনি ধারণ করতে পারছেন না এবং তা যেন উপচিয়ে পড়তে লাগল এবং মা যশোদা মাতৃস্নেহের সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী তা তাঁর কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিতে লাগলেন। সেজন‍্য ভাগবতে শ্রীশুকদেব গোস্বামী বলেছেন যে হরি যাঁর স্তন‍্যপান করেছেন সেই মা যশোদা কি ভাগ‍্যবতী।*
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
*ভব সাগর কান্ডরী,সবার মঙ্গলকারী,*
    *শ্রীহরির শ্রীচরণ কর সবে সার।*
*ভাগবতে রাখি মতি,পাঠ কর নিতি নিতি,*
    *অন্তরে আনন্দে তবে মিলিবে অপার।।*
*উদ্ধব ফিরিলে পরে,জিজ্ঞাসেন হরি তারে,*
   *জানিবারে ব্রজবাসী সবার কুশল।*
*গোপগোপী সবাকার,বল বারতা এবার,*
     *কিভাবে কাটায় সবে দিবস সকল।।*
*শুনিয়া কৃষ্ণের কথা,কহিল উদ্ধব সেথা,*
    *করজোড়ে পদে তাঁর করিয়া প্রণতি।*
*তব লাগি যশোমতী,শোকান্বিত রহে অতি,*
    *সান্ত্বনার বাক‍্যে তারে কহিনু সম্প্রতি।।*
*ব্রজবাসী গোপীগণ,কাঁদিতেছে অনুক্ষণ,*
    *তোমার বিচ্ছেদে তারা যেন উন্মাদিনী।*
*হেরি ভূতল উপরি,রোহিণী র'য়েছে পড়ি,*
   *কত আর কব হরি দুঃখের কাহিনী।।*
🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜🦜
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৫)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
   *পরম ভাগবদ্ রামানন্দ রায়,*
    *সাধ‍্য সাধনতত্ত্ব আলোচনা*
    **************************
*শ্রীপাদ শুকদেব গোস্বামী বলেছেন, যে হরি যাঁর স্তন‍্যপান করেছেন, সেই মা যশোদা কি ভাগ‍্যবতী। যথা=*
*🌷ভাগ‍্যবতী যশোমতী কত পুণ‍্য ধরে।*
*🌷অনুক্ষণ তোমায় রাখয়ে হৃদিপরে।।*
*🌷তুমি তুষ্ট ভগবান স্তন পানে যাঁর।*
*🌷কি কব ভাগ‍্যের কথা কহ নাথ তার।।*
*🌹কৃষ্ণ ভগবানের বা গোপালের বাৎসল‍্য প্রেমের এইরকম নানাপ্রকার ব‍্যাখ‍্যা রামরায় করলেন এবং শ্রবণ সুখকর এইসব প্রসঙ্গের পরিবেশন মাধুর্য‍্য এতই মনোরম ছিল যে মহাপ্রভু যেন তা আকন্ঠ ভোজন করলেন এবং কহিলেন রাম!"এহোত্তম, সত‍্যই এবার বড় মধুর কথা বলেছ।যে বাৎসল‍্য প্রেমবশে মুক্তিদাতা বন্ধন গ্রহণ করেন সেই প্রেমই পরম সাধ‍্য। কিন্তু তথাপি তৃষ্ণা যেন আর মিটছে না এবং বললেন রামায় অনেক আশা নিয়ে তোমার কাছে এসেছি আরও কিছু শোনাও অর্থ‍্যাৎ আগে কহ আর।*
*(১০)শ্রীরামানন্দ রায় তখন ব্রজাঙ্গনাগণের কৃষ্ণপ্রেমের মাধুর্য‍্য রসের কথা ব‍্যক্ত করে বললেন যে লক্ষ্মীদেবী যদিও নারায়ণের বক্ষস্থলে সদাসর্বদা বিরাজ করেন তথাপি ব্রজগোপীগণের মত আস্বাদনের চমৎকারিতা তাতে দেখা যায় না, কারণ লক্ষ্মীদেবীর প্রেমে ঐশ্বর্য‍্য বুদ্ধি থাকায় তা সঙ্কোচপূর্ণ  কিন্তু গোপীদের শ্রীকৃষ্ণে ঈশ্বর বুদ্ধি না থাকায় তা পরিপূর্ণভাবে বিশুদ্ধ এবং সঙ্কোচ মুক্ত যার উত্তম প্রমাণ পাওয়া যায় গোপীগণ কর্তৃক নিজেদের চরণরজ দ্বিধাহীন ভাবে শ্রীকৃষ্ণের ললাটে স্পর্শের মাধ‍্যমে। মহাপ্রভু গয়াধামে যেরকম অবলুপ্ত ব্রহ্মণ‍্য ধর্মের মর্য‍্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য কৃত্রিম জ্বর সৃষ্টি করে তদ্দেশীয় ব্রাহ্মণের পদরজ ভিক্ষা করে নিজেকে জ্বরমুক্ত করেছিলেন, শ্রীকৃষ্ণও সেইরকম গোপীপ্রেম মাধুর্য‍্য  জীবজগতে প্রকট করবার মানসে কৃত্রিম শিরপীড়া সৃষ্টি করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছুতেই যেন আর সে শিরপীড়া ভাল হয় না,সকলেই উৎকণ্ঠিত, এমন সময় দেবর্ষি নারদ সেখানে উপস্থিত হয়ে বলেন, তোমরা যারা কৃষ্ণকে ভালোবাসো তারা যদি তাদের চরণধূলি শ্রীকৃষ্ণের ললাটে লাগালে শিরপীড়া ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু আমি অনেক জায়গায় গেলাম কেউ পদধূলি দিতে রাজী হল না, তাই তোমাদের কাছে এলাম।ব্রজের গোপীগণ এইকথা শোনামাত্রই বললেন, শ্রীকৃষ্ণ সুখের জন্য আমরা সবকিছুই করতে পারি এবং এইকথা বলে বিনা দ্বিধায় বিনা সঙ্কোচে বললেন নিন আমাদের এই চরণধূলি নিন, গোপীগণ নিজ চরণ ধূলি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে সুখী করেছিলেন। সেখানে কিন্তু বিন্দুমাত্র ঐশ্বর্য‍্য বুদ্ধি ছিল না, আমাদের ঘরের মানুষ কৃষ্ণ। আবার গোপীপ্রেমের প্রকৃত আস্বাদ পেয়েছিলেন ভক্তরাজ উদ্ধব, সেজন‍্য তিনি শেষ পর্যন্ত ব্রজে গুল্মলতা হয়ে জন্ম নিবার বাসনা প্রকাশ করেছিলেন। শ্রীলক্ষ্মীদেবীর নারায়ণে তদীয়তা(তাঁর) বুদ্ধি এবং সেজন‍্য সে প্রীতি দুর্বল কিন্তু ব্রজাঙ্গনাদের শ্রীকৃষ্ণে মদীয়তা(আমার) বুদ্ধি এবং সেজন‍্য সেই প্রীতি শ্রেষ্ঠতম।*
*🍀ভাগবতে দেখা যায় যে শ্রীলক্ষ্মীদেবী নারায়ণের অপেক্ষা করেন কিন্তু গোপীগণ শ্রীকৃষ্ণের অপেক্ষা করেন না বরং কৃষ্ণই তাঁদের জন্য অপেক্ষা করেন যার উত্তম প্রমাণ পাওয়া যায় রাসলীলা রজনীতে।এক কৃষ্ণ বহুবল্লভ হয়ে সকলের সঙ্গে রাসলীলা করছেন এবং তার ফলে যে স্বর্গীয় প্রেমবন‍্যার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সকলে ভাসমান হয়ে গিয়েছিলেন।এমনি সময়ে গোপীদের প্রেমাধিক‍্য দর্শনে কৃষ্ণ পাছে গোপীপ্রেমের প্রবল প্রবাহে নিজে ভেসে যান এজন‍্য নিজেকে রক্ষা করব জন্য ভূজদন্ড দ্বারা গোপীদের গলা ধরে যেন হাবুডুবু খাচ্ছিলেন।এ সৌভাগ্য অনন্ত বিশ্বে অন‍্য কারও ভাগ‍্যে জুটে নাই, সেজন‍্য শ্রীপাদ শ্রীজীব গোস্বামী বলেছেন,*
*🌷যে রাসলীলা কালে, লক্ষ্মীদেবী হতে ব্রজাঙ্গনাদের প্রেমাধিক‍্য ব‍্যক্ত হয়েছিল, এমন যে মনোহারিণী রাসলীলা তার জয় হোক। সুতরাং কান্তা প্রেমে আমার আমিত্ব পূর্ণাঙ্গভাবে কৃষ্ণে সমর্পণের মাধ‍্যমে একেবারে কৃষ্ণময় হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গ শুনে মহাপ্রভু এই কান্তাপ্রেমকে "সাধ‍্যাবধি" আখ‍্যা দিলেন এবং বললেন রামরায় তুমি যদি এর পরেও কৃপা করে যদি এই "অবধির" পরেও কিছু শোনাও তাহলে বড়ই সুখ পাবো। যথা=*
*🌷প্রভু কহে এই সাধ‍্যাবধি সুনিশ্চয়।*
*🌷কৃপা করি কহ যদি আগে কিছু হয়।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ কিছুতেই যেন আর ক্ষুধাতৃষ্ণা মিটছে না এবং রামরায় প্রাণ ভরে পরিবেশন করছেন। মহাপ্রভু সেই গোদাবরী তীরে শান্ত নির্জন পরিবেশে গভীর রাত্রে সব অঙ্গীকার করছেন।এইরকম সুবর্ণ সুযোগ তো আর জীবনে মিলবে না, ভক্তমুখে আস্বাদন বড় উপাদেয় সেজন্য ক্রমাগত দশরাত্রি ধরে এইসব অতি গুহ‍্য কথা উভয়ের মধ্যে ইষ্টগোষ্ঠী হয়েছিল, তাই রামরায় বলেছিলেন=*
*🌷মোর মুখে বক্তা তুমি,তুমি হও শ্রোতা।*
*🌷হৃদয়ে প্রেরণ কর,জিহ্বায় কহাও  কথা।।*
*(১১)তখন রামরায় কহিলেন কান্তা প্রেম সাধ‍্যাবধি হলেও "রাধা প্রেম সাধ‍্য শিরোমণি" যথা=*
*🌷ইহার মধ্যে রাধা প্রেম সাধ‍্য শিরোমণি।*
*🌷যাঁহার মহিমা সর্ব শাস্ত্রেতে বাখানি।।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৬)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী *পরম ভাগবদ্ রামরায় ও মহাপ্রভু*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🍀আপনারা সকলেই জানেন যে কান্তাভাব দুই প্রকার যথা "স্বকীয়া ও পরকীয়া"।বৈকুন্ঠের লক্ষ্মী ও দ্বারকার মহিষীগণের মধ্যে "স্বকীয়া" কান্তাভাব, কিন্তু, ব্রজাঙ্গনাগণের মধ্যে  "পরকীয়া" কান্তাভাব।শ্রীকৃষ্ণের এই স্বকীয়া কান্তাভাবে তত আগ্রহ নেই, কারণ স্বকীয়া ভালবাসাতে রস থাকলেও "রসের নির্য‍্যাস" তত আস্বাদিত হয় না। এজন‍্য শ্রীরাধাকে বলা হয় "মহাভাব স্বরূপিনী"। অর্থ‍্যাৎ ঘি যেমন দুধের চরম পরিণতি, মহাভাবও সেইরকম প্রেমের চরম অভিব‍্যক্তি।রাধাপ্রেম যে সাধ‍্য শিরোমণি তা বুঝাবার জন্য রামরায় বললেন ঃ---------।*
*🍀রাসলীলার আসল তত্ত্বকথাটি হচ্ছে যে সেই স্বর্গীয় রাসরজনীতে এক কৃষ্ণ বহুবল্লভ হয়ে যদিও সকলের সঙ্গে রাসবিহারী হয়েছিলেন সেইরকম "শ্রীরাধিকার কৃপায়" সকল গোপীগণই "রাধাতুল‍্যা" হয়ে শ্রীকৃষ্ণের সুখ বিধানের অধিকারিণী হয়েছিলেন।অর্থ‍্যাৎ রাধার কৃপা সূত্রই মূল হেতু।কতকগুলি ফুল হলেই তো আর মালা হয় না, ফুলের ভিতরে আবৃতভাবে সে সুতাটি থাকে তার কৃপাতেই মালার সৌন্দর্য্য ব‍্যক্ত হয়, যদিও বাইরে তা দেখা যায় না।ফুল নিজস্ব স্বানীনতায় মালা হিসাবে দুলতে পারে না, একমাত্র এই সুতাই তাকে কন্ঠে দুলবার শক্তি দেয়।সেজন‍্য সুতাটি ছিড়ে গেলেই ফুলগুলি ছিন্নভিন্ন হয়ে ধূলায় লুটিয়ে পড়ে।সেহেতু সেই রাস-রজনীতে সুতারূপী রাধা যখন মানিনী হয়ে রাসমঞ্চ হতে অন্তর্হিতা হলেন, তখনিই রাসলীলা বিপর্য‍্যস্ত হয়ে গেল।এ হতেই বুঝা যায় যে শ্রীরাধাই হচ্ছেন  সকল গোপীগণের শিরোমণি। রাসলীলা বিপর্য‍্যস্ত হলেও শ্রীকৃষ্ণের তখন করুণ অবস্থা, তিনি রাধা বিহনে ব‍্যাকুল হয়ে রাধা অন্বেষণে উদগ্রীব হয়ে পড়লেন। অর্থ‍্যাৎ যিনি সর্ব জীবের আরাধ‍্য, সর্ব চিত্তাকর্ষক, সেই কৃষ্ণ ভগবান নিজেই রাধার খোঁজে রত হলেন, এ যেন চরম বিপরীত! সর্ব আরাধ‍্য, আজ রাধা আরাধনায় নিযুক্ত, অর্থ‍্যাৎ সর্ব আরাধনার যে ধন শ্রীকৃষ্ণ,তাঁর কাছেও রাধা আরাধনার ধন হয়ে উঠলেন, সুতরাং যে কৃষ্ণ সকলের সাধ‍্যধন, শ্রীরাধা যখন তাঁরই আরাধ‍্য-ধন হয়ে উঠলেন, তখন রাধাকে "সাধ‍্য শিরোমণি" বলতে আর বাধা কি? তখন মহাপ্রভু দৈন‍্যবিনয় কন্ঠে বললেন=*
*🌷সন্ন‍্যাসী বলিয়া মোরে না কর বঞ্চন।*
*🌷রাধাকৃষ্ণ তত্ত্ব কহি পূর্ণ করো মন।।*
*🌻তখন রামরায় বললেন, শ্রীকৃষ্ণকে আনন্দদান করেন বলেই শ্রীরাধার আরেক নাম আহ্লাদিনী এবং এই প্রসঙ্গে গোবিন্দ লীলামৃতে একটি শ্লোক নিচে দেওয়া হল, যার দ্বারা রাধার মহিমা পূর্ণভাবে প্রকাশ হয়েছে, যথা=*
*🌷কা কৃষ্ণস‍্য প্রণয়জনিভুঃ শ্রীমতী রাধিকৈকা,*
*🌷কাস‍্য প্রেয়স‍্য অনুপমগুণা রাধিকৈকা ন চান‍্যা।*
*🌷জৈম্ম‍্যং কেশে,দৃশি সরলতা, নিষ্ঠুরত্বং কুচোহস‍্যাঃ,*
*🌷বাঞ্জাপূর্ত্ত‍্যে প্রভবতি হরেঃ রাধিকৈকা ন চান‍্যা।।*
*🍀অর্থ‍্যাৎ গোবিন্দামৃত বলছেন যে= শ্রীকৃষ্ণের প্রেমের জন্মভূমি কে? একা শ্রীরাধিকা।শ্রীকৃষ্ণের অনুপম গুণবতী প্রেয়সী কে? একমাত্র শ্রীরাধিকা ছাড়া অন‍্য কেউ নয়। কারণ কেশে কুটিলতা,দৃষ্টিতে তরলতা বা তারুণ‍্য এবং কুচযুগলে কঠিনতা একমাত্র এই রাধিকারই আছেন এবং সেজন্য শ্রীরাধাই শ্রীহরির বাসনা পূরণে সমর্থা অন‍্য কেউ নয়।*
*🍀এই কথাগুলি শুনে মহাপ্রভু বললেন, এমন যে গুণসম্পন্না রাধা যাঁর প্রেমের নাগাল শ্রীকৃষ্ণ পর্যন্ত পান না, "তার গুণ গণিবে জীব কোন ছার"।এতক্ষণে বললেন, রামরায়! তোমার কৃপায় রাধাকৃষ্ণ প্রেমতত্ত্ব কিছুটা বুঝলাম কিন্তু আমার মন চাইছে দুইজনার বিলাস মহত্ত্ব শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে, অতএব কিছু আগে কহ আর।*
*🌺তখন শ্রীরায় মহাশয় বললেন, আমার বুদ্ধিতে আর কিছু কুলোচ্ছে না, আবার কি বলব?তখন মহাপ্রভু বললেন=*
*🌷প্রভু কহে সাধ‍্যবস্তু অবধি এই হয়।*
*🌷তোমার প্রসাদে ইহা জানিল নিশ্চয়।।*
*🌷সাধ‍্যবস্তু সাধন বিনু কেহ নাহি পায়।*
*🌷কৃপা করি কহ ইহা পাবার উপায়।।*
*🙏তখন রামরায় কহিলেন=*
*🌷মোর মুখে বক্তা তুমি,তুমি হও শ্রোতা।*
*🌷অনন্ত রহস‍্য শুন সাধকের কথা।।*
*🌷সবে এক সখীগণের ইথে অধিকার।*
*🌷সখী হইতে হয় এই লীলার বিস্তার।।*
*🌷সখী বিনা এই লীলা পুষ্টি নাহি হয়।*
*🌷সখী লীলা বিস্তারিয়া সখী আস্বাদয়।।*
*🌷সখী বিনা এই লীলায় অন‍্যের নাহি গতি।*
*🌷সখী ভাবে তাহা যেই করে অনুগতি।।*
*🌷রাধার স্বরূপ কৃষ্ণ প্রেম কল্পলতা।*
*🌷সখীগণ হয় তার পল্লব পুষ্পপাতা।।*
*🌻সর্বশেষে তুলনামূলকভাবে কহিলেন=*
*🌷অতএব গোপীভাব করি অঙ্গীকার।*
*🌷রাত্রিদিনে চিন্তে রাধাকৃষ্ণের বিহার।।*
*🌷সিদ্ধদেহ চিত্তে করে তাহাই সেবন।*
*🌷সখ‍্যভাব পায় রাধাকৃষ্ণের চরণ।।*
*🌷গোপী আনুগত‍্য বিনা ঐশ্বর্য‍্য জ্ঞানে।*
*🌷ভজিলেও নাহি পায় ব্রজেন্দ্র নন্দনে।।*
*🌷তাহাতে দৃষ্টান্ত লক্ষ্মী করিয়া ভজন।*
*🌷তথাপি না পাইল ব্রজে ব্রজেন্দ্র নন্দন।।*
*🌻এইভাবে রাতের পর রাত কৃষ্ণকথা শোনার পর যখন নিশি অবসান হত, তখন মহাপ্রভু রামারায়ের কন্ঠ আলিঙ্গন করে ভাবাবেশে প্রেমাশ্রু বর্ষণ করতেন এবং উভয়ে উভয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন। নিত‍্যানন্দ আশ্রয় ছাড়া যেমন গৌরাঙ্গতত্ত্বে পৌঁছান যায় না, এ ক্ষেত্রেও সেরকম সখীর আনুগত‍্য ভজন ছাড়া ব্রজেন্দ্রনন্দনকে পাওয়া সুদুর্লভ এটিই সর্বশেষ এবং সারকথা। এইসব অতি গুহ‍্য কথা ক্রম বিকাশ অনুসারে পর্য‍্যালোচনা করলে দেখা যায় রামরায় সাধ‍্যসাধন তত্ত্ব বিশ্লেষণ কালে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ করে এক এক ধাপ করে সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেছিলেন।*
🪷🪷🪷🪷🪷🪷🌷🪷🪷🪷🪷🪷🪷
*ধেনু বৎস আদি যত,তব তরে ব‍্যাকুলিত,*
    *নিবদ্ধ তাদের দৃষ্টি মথুরার পানে।*
*উদ‍্যানে নাহি সে শোভা,পুষ্পরাজি হীনপ্রভা,*
   *পাখীরা সেথায় রহে বিরত কূজনে।।*
*ব্রজের রাখাল যারা,বিরহে কাতর তারা,*
   *মাঠে আর নাহি যায় গোচারণ তরে।*
*ব্রজবাসীগণ যত,রহে সবে শোকান্বিত,*
    *জাগিছে বেদনা সদা তাদের অন্তরে।।*
🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৭)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
  *পরম ভাগবদ্ রামানন্দ রায়*
..***************************
*(১)সর্বপ্রথম শ্রীমদ্ গীতার আশ্রয়ে বললেন "চারটি তত্ত্ব", যথা= স্বধর্ম পালন,কৃষ্ণে কর্মার্পণ,কৃষ্ণে ধর্মার্পণ ও জ্ঞান মিশ্রাভক্তি, যা শুনে মহাপ্রভু বললেন,"ইহ বাহ‍্য"।*
*(২)তারপর শ্রীমদ্ ভাগবদ আশ্রয়ে বললেন তিনটি তত্ত্ব যথা=জ্ঞানশূন‍্যাভক্তি, প্রেমভক্তি এবং দাস‍্যভক্তি। যে শুনে মহাপ্রভুর মুখে হাসি দেখা গেল এবং তিনি বললেন "এহো হয় "।*
*(৩)তৎপরে শ্রীমদ্ভাগবত আশ্রয়ে "সখ‍্যপ্রেম" ও "বাৎসল‍্যপ্রেমকে" মহাপ্রভু বলেছিলেন,এহোত্তম।*
*(৪)কান্তাপ্রেমকে বললেন="অবধি"।*
*(৫)সর্বশেষে রাধাপ্রেমকে "সাধ‍্য শিরোমণি" এই আখ‍্যা দিলেন এবং একমাত্র সখীগণের আনুগত‍্যে এর প্রাপ্তি সম্ভব এটিই শেষ কথা।*
*🍀এইবার আপনারা কৃপা করে শুনুন শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ বিরচিত বৈষ্ণব জগতের এক অমূল‍্য তথ‍্য যা এই গোদাবরী তীরে উভয়ের মধ্যে সংলাপ সৃষ্টি করে তিনি রচনা করেছেন যথা=*
*(১)প্রভু=কোন বিদ‍্যা, বিদ‍্যা মধ্যে সার।*
*রায় কহে কৃষ্ণভক্তি বিনা বিদ‍্যা নাহি আর।।*
*(২)প্রভু কহে কীর্তিগণ মধ্যে জীবের কোন বড় কীর্তি।*
*রায় কহে কৃষ্ণ প্রেমভক্ত বলি যার হয় খ‍্যাতি।।*
*(৩)প্রভু কহে সম্পত্তির মধ্যে জীবের কোন সম্পত্তি গণি।*
*রায় কহে রাধাকৃষ্ণে প্রেম সেই বড় ধনী।।*
*(৪)প্রভু কহে দুঃখ মধ্যে কোন দুঃখ হয় গুরুতর।*
*রায় কহে কৃষ্ণ ভক্তি বিরহ বিনু দুঃখ নাহি আর।।*
*(৫) প্রভু কহে মুক্ত মধ্যে কোন জীব মুক্ত করি মানি।*
*রায় কহে কৃষ্ণ প্রেম সাধে সেই মুক্ত শিরোমণি।।*
*(৬)প্রভু কহে গান মধ্যে কোন গান জীবের নিজধর্ম।*
*রায় কহে রাধাকৃষ্ণের প্রেমকলি যেই গীতের মর্ম।।*
*(৭)প্রভু কহে শ্রেয়ো মধ্যে কোন শ্রেয়ঃ জীবের হয় সার।*
*রায় কহে কৃষ্ণভক্ত সঙ্গ বিনা শ্রেয়ঃ নাহি আর।।*
*(৮)প্রভু কহে কাহার শরণ জীব করে অনুক্ষণ।*
*রায় কহে কৃষ্ণনাম গুণলীলা প্রধান স্মরণ।।*
*(৯)প্রভু কহে ধ‍্যান মধ্যে জীবের কর্তব‍্য কোন ধ‍্যান।*
*রায় কহে রাধাকৃষ্ণ পদাম্বুজ ধ‍্যান প্রধান।।*
*(১০)প্রভু কহে সর্বত‍্যজি জীবের কর্তব‍্য কাঁহা বাস।*
*রায় কহে শ্রীবৃন্দাবন ভূমি যাঁহা নিত‍্যলীলা রাস।।*
*(১১)প্রভু কহে শ্রবণ মধ্যে জীবের কোন শ্রেষ্ঠ শ্রবণ।*
*রায় কহে রাধাকৃষ্ণ প্রেমকলি কর্ণ রসায়ণ।।*
*(১২)প্রভু কহে উপ‍্যাস‍্যের মধ্যে কোন উপাস‍্য প্রধান।*
*রায় কহে শ্রেষ্ঠ উপাস‍্য যুগল রাধাকৃষ্ণ নাম।।*
*(১৩)প্রভু কহে মুক্তি ভক্তি বাঞ্জে যেই কাঁহা দোঁহার স্থিতি।*
*রায় কহে স্থাবর দেবদেহ যৈছে অবস্থিতি।।*
*(১৪)প্রভু কহে অরসজ্ঞ কাক চুষে জ্ঞান নিম্বফলে।*
*রায় কহে রসজ্ঞ কোকিল খায় প্রেমাম্র মুকুলে।।*
*(১৫)প্রভু কহে অভাগিয়া জ্ঞানী আস্বাদয়ে শুষ্ক জ্ঞান।*
*রায় কহে কৃষ্ণ প্রেমামৃত পান করে ভাগ‍্যবান।।*
*🌻এই পদাবলীটি ১--১২ শ্লোক পর্য‍্যন্ত অর্থ ভক্ত পাঠকগণ সকলেই উপলব্ধি করতে পারবেন কিন্তু ১৩--১৫ শ্লোক কয়টির একটু ব‍্যাখ‍্যা মনে হয় প্রয়োজন আছে।সর্বপ্রথম ১২ নং শ্লোকে মহাপ্রভু রামরায়কে প্রশ্ন করলেন যে =*
*যাঁরা মুক্তি বাঞ্জা করেন তাদের গতি কোথায়?*
*এবং যাঁরা ভক্তি বাঞ্জা করেন তাঁদেরই বা গতি কোথায়?*
*🍀তার উত্তরে রামরায় বলেছেন যে, "স্থাবর দেবদেহ যৈছে অবস্থিতি।" এখানে মুক্তির সঙ্গে স্থাবরদেহের এবং ভক্তির সঙ্গে দেবদেহের উপমা দেওয়া হয়েছে,স্থাবরদেহ বলতে আমরা বুঝি যা জড় অর্থ‍্যাৎ প্রাণহীন, চৈতন‍্যশক্তি রহিত, যেমন পাহাড় পর্বত ইত্যাদি। এই জাতীয় বস্তুতে যদি আঘাত করে যায় তাহলে কোন অনুভূতি বোধ তাদের হয় না, অস্তিত্ব আছে সত্ত্বা আছে,অথচ অনুভূতি নাই।মহাপ্রভুর মনোভাব ব‍্যক্ত করে কবিরাজ গোস্বামী রামানন্দ রায়ের মাধ‍্যমে বলাচ্ছেন যে মুক্ত পুরুষ সাধন জগতে এমন স্তরে বিচরণ করেন যে,তাঁদের অবস্থা অনেকটা স্থাবরদেহের স্থিতির মত।সুখ ও দুঃখের অতীত।যে কথা গীতায় বলা হয়েছে  ঃ-------*
*🌷সুখেষু অনুবিঘ্নমনা দুঃখেষু বিগতস্পৃহ।*
*🌷বীতরাগ ভয়ক্রোধ স্থীতধীঃ মুনুরুচ‍্যতে।।*
*🌻সেইরকম আবার ভক্তি বাঞ্জাকারীদের অবস্থা দেবদেহে অবস্থিতির মত।এখানে দেবদেহ বলতে ঠিক দেবতাগণের দেহ বুঝাচ্ছে না।ভক্তি মহারাণীর কৃপা হলে মানুষ তখন আর মানুষ থাকে না, কৃষ্ণপ্রেমে পাগল হয়ে যান, শুকনো জ্ঞানলাভ বা শাস্ত্রচর্চার দিকে আর কোন মোহ থাকে না, যার পরিচয় আমরা পাই সার্বভৌম পন্ডিত এবং প্রকাশানন্দ সরস্বতীর জীবনে।সাধকের হৃদয় মন্দিরে তখন সদা সর্বদা ভগবান বারাজ করেন, আহার নিদ্রার কোন প্রয়োজন বোধ নাই এবং করুণাময় ভগবান ভক্তের যোগাক্ষেম বহন করেন।যে ভক্তির আস্বাদ পেয়েছিলেন, জগদ্ গুরু মাধবেন্দ্রপুরী এবং তাঁর পার্ষদগণ অর্থ‍্যাৎ তাঁরা সদা সর্বদা পূর্ণানন্দে বিভোর থাকেন।মুক্তি সাধারণতঃ জ্ঞানের ফল সেজন‍্য প্রকৃত রসিক ভক্তগণের কাছে সেটি বাঞ্জনীয় না। অর্থ‍্য‍াৎ শুদ্ধা ভক্তির শ্রেষ্ঠত্ব এখানে বলা হয়েছে।যার পরিচয় পরবর্তী শ্লোকে পাওয়া যাবে।*
*🍀সেজন‍্য ১৪ নং শ্লোকে বায়স বা কাক এবং কোকিলের মধ্যে তুলনার সৃষ্টি করে বলা হয়েছে যে,কাকের স্বর কর্কশ, নানা রকম অখাদ‍্য কুখাদ‍্য সে খায় এবং এমন যে তিক্ত বা তিতা নিমফল তা কাক খুব ভালবেসে খায় সেজন‍্য কাককে অরসিক বলা হয়েছে, যেন শুকনো জ্ঞানীর মত আচরণ করছে।সেরকম আবার কোকিল বায়স শ্রেণীভুক্ত হলেও তার কন্ঠস্বর কি সুমধুর, বসন্তের আগমনে সে তার সুরের ঝঙ্কারে সকলকে মোহিত করে দেয় এবং তার প্রিয় খাবার আমের মুকুল।অর্থ‍্যাৎ সে যেন প্রেমিক ভক্তের মত আচরণ করে, সেহেতু কোকিলকে রসজ্ঞ বলা হয়েছে,যার ভাবার্থ প্রেমিক ভক্তের মত আচরণ।*
&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&
*🌻🌻🌻কুব্জা উদ্ধার🌻🌻🌻*
#######################
*উদ্ধবেরে সেইক্ষণ, কহিলেন জনার্দন,*
    *কুব্জার নিকটে মোর রহিয়াছে পণ।*
*মনোবাঞ্জা পুরাইতে, যবে তার নিকটেতে,*
   *করিব তাহারে তৃপ্ত করি আলিঙ্গন।।*
*উদ্ধবেরে সঙ্গে করি,কুব্জা গৃহে যান হরি,*
    *মুক্তা দামে আচ্ছাদিত তাহার ভবন।*
*বিচিত্র পতাকা কত,চতুর্দিকে সুসজ্জিত,*
    *মনোহর চন্দ্রাতপ শয‍্যা ও আসন।।*
*শ্রীহরির আগমন,যবে করে দরশন,*
    *ত্বরিত দাঁড়ায় কুব্জা ত‍্যজিয়া আসন।*
*সখীগণে ল'য়ে সবে,আসিয়া সম্মুখে তবে,*
    *আসনে বসায়ে তাঁরে করিল পূজন।।*
*আহ্বান করিয়া হরি,কুব্জার করেতে ধরি,*
   *আপনার শয‍্যা পার্শ্বে বসান যতনে।*
*শুনি তাঁর প্রেম কথা,জুড়ায় কুব্জার ব‍্যথা,*
    *তবে তারে আলিঙ্গন দেন প্রীতমনে।।*
🦚🪷🦚🪷🦚🪷🦚🪷🦜🦚🪷🪷🪷
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৮)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
        *পরম ভাগবত রামরায়*
        ***********************
*🍀সর্বশেষে ১৫ নং শ্লোকে বলা হয়েছে যে এই প্রেমভক্তির সন্ধান যাঁরা জানেন না বা সেই পথের পথিক হবার জন্য যাদের বাসনা নাই তারা শুধু শুকনো জ্ঞানচর্চা নিয়েই থাকুন এবং ভাগ‍্যবান ব‍্যক্তিগণ কৃষ্ণপ্রেম রসসিন্ধুতে সদাসর্বদা ভেসে থাকুন আর চরম আনন্দ লাভ করুন।কারণ কৃষ্ণ প্রেম কোন জাতি,কুল,নিষ্ঠা বা আচার বিধির শাসন মানে না।যে ভক্তির সন্ধান দিয়েছেন ভাগবদ্।নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিসর্জন দিয়ে আরাধ‍্যের সুখ চাওয়াই হচ্ছে কৃষ্ণভক্তের প্রধান এবং শেষ লক্ষ্য।সেব‍্য ও সেবকের ব‍্যবধান যত বেশী হবে সেবায় আত্মবিসর্জন ততই বাধা পাবে কৃষ্ণ বড়,আমি ছোট, এইরকম একটা সঙ্কোচ ভাব থাকলে সেবায় আত্মবিসর্জন কখনও সর্বাঙ্গ সুন্দর হতে পারে না, প্রেমিক ভক্ত‍ সেজন‍্য ফুলের বাইরের সৌন্দর্য্য দেখে তত মুগ্ধ হন না, কারণ তিনি ফুটন্ত ফুলের মনমাতান সৌরভটি ভোগ করেন। কারণ প্রেমভক্তির বুকের মধ্যে ঐ লুকান সৌরভটি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ তৃষ্ণা। এটিই হচ্ছে ১৩,১৪,১৫ নং শ্লোকের মোটামুটি ভাবার্থ যার মাধ‍্যমে প্রেমভক্তির উৎকর্ষতা এবং শুষ্ক জ্ঞানের নিকৃষ্টতা বলা হয়েছে*
*🍀এই কথনগুলি শুনে মহাপ্রভুর হৃদয় মন্দিরে কৃষ্ণকথার তরঙ্গ-হিল্লোল প্রবাহিত হতে লাগল এবং তিনি ব্রজভাবে ভাবিত হয়ে প্রেমাশ্রু বর্ষণ করতে লাগলেন।ভাগ‍্যবান রামরায় সেই ভাবাবেশে অধীর হয়ে মহাপ্রভুর শ্রীচরণতলে চেতনাহীন হয়ে পড়লেন।করুণাময় মহাপ্রভু তখন তাঁর দেহে তাঁর পদ্মহস্ত বুলিয়ে সুস্থ করলেন এবং আলিঙ্গনের মাধ‍্যমে হৃদয়ের সঞ্চিত যত প্রেম তাঁর মধ্যে সঞ্চার করে দিলেন।*
*🍀এইভাবে ক্রমাগত দিনের পর দিন দীর্ঘ নিশা অবসান হত, কারণ এইরকম ইষ্টগোষ্ঠী করবার সুযোগ তো সকলের ভাগ‍্যে জুটে না। রামরায় প্রাণ ভরে তাঁর হৃদয় মন্দিরে সঞ্চিত কৃষ্ণকথা মহাপ্রভুকে শুনাতেন এবং উভয়ে এক স্বর্গীয় আনন্দ অনুভূতির মাধ‍্যমে কৃষ্ণপ্রেমরস সিন্ধুতে ভাসমান থাকতেন।*
*🌺শ্রীরামরায় সর্বপ্রথমে যে গীতার শ্লোকগুলির উল্লেখ করেছিলেন, তা এই ঃ----*
*(১)স্বধর্মং অপি চাবেক্ষ‍্য ন বিকম্পিতুম্ অর্হসি,*
*ধর্ম‍্যাৎ হি যুদ্ধাৎ শ্রেয়ো অন‍্যৎ ক্ষত্রিয়স‍্য বিদ‍্যতে।*
*(২)যদৃচ্ছয়া চোপপন্নং স্বর্গদ্বারম্ অপাবৃতং,*
*সুখিনঃ ক্ষত্রিয়াঃ পার্থ লভন্তে যুদ্ধমীদৃশাম্।।*
*(৩)অথ চেৎ ত্বম ইমং ধর্ম‍্যং সংগ্রামং ন করিষ‍্যসি,*
*ততঃ স্বধর্মং কীর্তিং চ হিত্বা পাপম্ অবাপস‍্যসি।*
*🌻কর্মযোগের শ্লোকটি হচ্ছে ঃ--*
*(৪)শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ,*
*স্বধর্ম‍্যে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মোভয়াবহঃ।।*
*🌹দ্বিতীয় প্রশ্ন ঃ-----*
*🍀রাজবিদ‍্যা রাজগুহ‍্য যোগের শ্লোক।*
*যৎ করোষি যদশ্নাসি যৎ জুহোসি দদাসি যৎ,*
*যৎ তপস‍্যসি কৌন্তেয় তৎ কুরুষ্ব মদর্পণম্।*
*🌻তৃতীয় প্রশ্ন= মোক্ষযোগের শ্লোক--*
*সর্ব্বধর্ম্মান্ পরিত‍্যজ‍্য মামেকং শরণং ব্রজ।*
*অহং ত্বাং সর্বপাপেভ‍্যো মোক্ষয়িষ‍্যামি মা শুচঃ।।*
*🍁চতুর্থ মোক্ষযোগের শ্লোক=*
*ব্রহ্মভূতঃ প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি,*
*সমং সর্বেষু ভূতেষু মদ্ভক্তিং লভতে পরাম্।।*
🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵
*কব্জা সপ্রেম বচনে,কহে কথা হরি সনে,*
    *বলে নাথ কিছুদিন হেথা কর বাস।*
*এবে তোমা ছাড়ি দিতে,ইচ্ছা নাহি হয় চিতে,*
   *মোর সাথে ফুল্ল মনে রহ পীতবাস।।*
*কামরূপে ভগবানে,করেছিল বাঞ্জা মনে,*
    *শ্রীহরি কুব্জারে তাই দেন কাম বর।*
*তাহারে আদর করি,সম্মান বাড়ান হরি,*
   *দিব‍্য বস্ত্র অলঙ্কার দিয়া অতঃপর।।*
*মুক্তি দাতা পায় কাছে,তবু মুক্তি নাহি যাচে,*
    *কৃষ্ণের নিকটে সে যে কাম শুধু চায়।*
*গোপীদের কৃষ্ণে নিষ্ঠা,তাই তাদের প্রতিষ্ঠা,*
   *শুদ্ধ প্রেমে ধ‍্যান করি তাঁরে কাছে পায়।।*
*ভগবান জনার্দন,করি প্রতিজ্ঞা স্মরণ,*
   *যাইতে অত্রুূর গৃহে করেন মনন*।
*গমনের আয়োজন,করিলেন সেইক্ষণ,*
    *মথুরা পুরীতে রথ করি আনয়ন।।*
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🪷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১১৯)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
          *রায় রামানন্দের প্রশ্ন*
           """""""""""""?''''''''''''''''''''''''''''''''
*🍀এই দশদিনের কৃষ্ণকথার মধ্যে আবার একদিন এক অতি উপাদেয় প্রসঙ্গের অবতারণা হয়েছিল যার একটু আলাদা করে প্রসঙ্গ করা দরকার।একদিন রামরায় বললেন ঃ---*
*🍀মহাপ্রভু আপনি কৃপা করে আমাকে শক্তিসঞ্চার করে আমার মাধ‍্যমে অনেক তত্ত্ব প্রকটিত করলেন। আপনার কৃপায় কৃষ্ণতত্ত্ব, রাধাতত্ত্ব,প্রেমতত্ত্ব,রসতত্ত্ব অনেক অতি গুহ‍্য কথা কিছু আস্বাদন করলাম, কিন্তু একটি বিষয়ে আমার মনে বড় সংশয় জেগেছে। আমি কিছুতেই তার সমাধান করতে পারছি না।আমায় কৃপা করে সেই সন্দেহটি ভঞ্জণ করে দিন এই প্রার্থনা।মহাপ্রভু তখন বললেন বলো,রামরায় বলো! তোমার মনে যখন ইচ্ছে হয়েছে আমি নিশ্চয়ই তা পূরণ করতে চেষ্টা করব।রায় মহাশয় তখন বললেন ঃ---*
*🌷পহিলে দেখিনু তোমা সন্ন‍্যাসী স্বরূপ।*
*🌷এবে তোমা দেখি মুঞি শ‍্যাম গোপরূপ।।*
*🌷তোমার সম্মুখে দেখি কাঞ্চন পঞ্চালিকা।*
*🌷তার গৌরকান্ত‍্যে তোমার শ‍্যাম অঙ্গ ঢাকা।।*
*🌷তাহাতে প্রকট দেখি শ্রীবংশীবদন।*
*🌷নানাভাবে চঞ্চল তাতে আমার নয়ন।।*
*🌷এই মত দেখি তোমা হয় চমৎকার।*
*🌷অকপটে কহ প্রভু কারণ ইহার।।*
*🌻এখানে জানা দরকার যে সার্বভৌম পন্ডিত যখন রায় রামানন্দ মহিমা মহাপ্রভুর কাছে ব‍্যক্ত করেন  তখন পর্যন্ত সার্বভৌম পন্ডিত জানতেন যে তিনি একজন উচ্চস্তরের কৃষ্ণভক্ত তার উপরে মহাপ্রভুর মহিমা তখনও পর্যন্ত পরিপূর্ণ ভাবে ব‍্যক্ত হয়নি।সেজন‍্য রামরায় গৌরাঙ্গতত্ত্ব বিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞই ছিলেন এবং মহাপ্রভুকে প্রথম দর্শনে একজন পরিব্রাজক সন্ন‍্যাসী হিসাবেই মর্য‍্যাদা দান করাই স্বাভাবিক ছিল।এই প্রসঙ্গে শ্রীমুরারি গুপ্ত তাঁর কড়চায় এক অদ্ভুত তথ‍্য প্রকাশ করেছেন এবং তিনি এটিকে মহাপ্রভুর অনুগ্রহ-দর্শন হিসাবে ব‍্যাখ‍্যা করেছেন। সকলেই এটি নিশ্চিত মানবেন যে অনুগ্রহ বা কৃপা ছাড়া এই দর্শন কখনও সম্ভব হত না।সেজন‍্য তিনি বলেছেন যে=*
*(১)মহাপ্রভু যখন বিদ‍্যানগরের দিকে গমন করছিলেন----*
*(২)ঠিক সেই সময় রামরায় তাঁর নিত‍্যপূজা বিরাম করে ব্রজেন্দনন্দনের স্বরূপ চিন্তা করতে করতে---*
*(৩)দেখতে পেলেন যে কৃষ্ণ ভগবান যেন গৌর সন্ন‍্যাসীরূপে তাঁর সামনে আগমন করছেন।*
*(৪)শ্রীরামানন্দ রায় তার পূর্বে শ্রীগৌরাঙ্গরূপ কখনও দর্শন করেননি  অথবা শোনেননি।*
*(৫)সেজন‍্য ব্রজভাবে ভাবিত মনে সহসা শ্রীগৌরাঙ্গের কনকোজ্জ্বল রূপ মাধুরী দেখে যেন বিস্মিত হয়ে গেলেন। এবং ভাবতে লাগলেন এ আবার কি দেখলাম।*
*(৬)সেহেতু তিনি পুনরায় ব্রজেন্দনন্দনের শ‍্যামরূপ স্মরণমননে উদ‍্যোগী হলেন, যতই মনঃসংযোগ করতে চেষ্টা করেন না কেন, তবুও শ‍্যামরূপ ভাবতে ভাবতে গৌরাঙ্গরূপ মাধুরী মানসে দর্শন করে স্তম্ভিত ও বিস্মিত হলেন।*
*(৭)পুনর্বার তিনি ধ‍্যানস্থ হলেন এবং নিত‍্য যে হৃদয়ে কৃষ্ণস্মৃতি অনুভূত হত সেদিন কিন্তু শ‍্যামসুন্দরের পরিবর্তে গৌরাঙ্গসুন্দর তাঁর হৃদয়াকাশে উজ্জ্বল কিরণ দিতে লাগলেন।*
*🍀সেজন‍্য তিনি যখন সন্ন‍্যাসী মহাপ্রভুকে সর্বপ্রথম গোদাবরী তীরে দেখলেন, তার আগেই মহাপ্রভু কৃপা করে ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। কারণ কৃপা করতে হলে কিছু পূর্বাভাস তো দরকার, না হলে হঠাৎ একজন অজানা অচেনা পরিব্রাজক সন্ন‍্যাসী যা তদানীন্তন কালে প্রায় সদাসর্বদাই দেখা হত এইরকম একজন সন্ন‍্যাসীকে দর্শন করে বিদ‍্যানগরের রাজার এই দুর্দশা হবে কেন?পরম কৃষ্ণভক্ত রাজার মন তখন সংশয় দোলায় দোদুল‍্যমান, এবং ভাবতে লাগলেন এই কিছুক্ষণ আগে যাঁকে ধ‍্যানে দর্শন করলাম এখন তো দেখছি তিনিই সাক্ষাৎ স্বরূপে বিদ‍্যমান।এ কি স্বপ্ন না জাগরণ?শ‍্যামসুন্দরের এ কি লীলা?*
*🍀এই তথ‍্যটি কোন কল্পনা প্রসূত কাহিনী নয়, তা শ্রীপাদ মুরারি গুপ্ত রচিত চৈতন‍্য চরিতামৃতের পঞ্চদশ সর্গ হতে কিছু উদ্ধৃতি এর সত‍্যতা ব‍্যক্ত করবে সেখানে রামরায় বলছেন=*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌻🙏🙏🙏🙏🙏🙏
*হেরে অত্রুূর তখন,আছে রথে তিনজন,*
   *দূর হ'তে প্রত‍্যক্ষ সে করে আগমন।*
*রাম ও উদ্ধবে হরি,আপনার সঙ্গে করি,*
    *সহসা অত্রুূর গৃহে উপনীত হন*।।
*তাঁহাদের শ্রীচরণ,করি সেথা সমার্জন,*
   *স্বীয় ক্রোড়ে অত্রুূর তা করিয়া স্থাপন।*
*দিব‍্য বসন ভূষণ,ত্বরা করি আনয়ন,*
    *ভক্তি ভরে দু'জনারে করিল পূজন।।*
👣👣👣👣👣👣🙏👣👣👣👣👣👣
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🆕 👉 ১১১ হইতে ১২০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/08/madhukori111to120.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*(১২০)বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী*
            *রামানন্দ রায়ের প্রশ্ন*
          ?????????????????????
*🍀শ্রীপাদ মুরারি গুপ্ত রচিত চৈতন‍্যচরিতামৃতের পঞ্চদশ সর্গ হতে উদ্ধৃত, সেখানে রামরায় বলছেন=*
*🌷স স্বগৃহে কৃষ্ণ পূজাবসানে,*
*🌷ধ‍্যায়ন্ পরম ব্রহ্ম ব্রজেন্দ নন্দনম্।*
*🌷দদর্শ বারত্রয়ম অদ্ভূতং মহদ্,*
*🌷গৌরাঙ্গ মাধুর্য‍্যম্ অতীব বিস্মিতঃ।।*
*🌷উন্মীল‍্য নেত্রে চ তদেব রূপং,*
*🌷দৃষ্ট্বা পরং ব্রহ্ম সন্ন‍্যাস বেশং,*
*🌷প্রণম‍্যমুর্দ্ধা বিহিতঃ কৃতাঞ্জলিঃ,*
*🌷পপ্রচ্ছ কুত্রত‍্য ভবান্ ইতি প্রভো।।*
*🌻সেজন‍্য মহাপ্রভুকে প্রথম দর্শন মাত্রেই তিনি অবাক বিস্ময়ে গৌরহরির আপাদমস্তক সতৃষ্ণনয়নে দেখতে লাগলেন এবং ভাবতে লাগলেন এ কাঁহাকে দেখলাম, ইনি তো তিনিই--, এ কি রহস‍্য!তাঁর আজন্ম সেবিত শ‍্যামসুন্দর যেন সন্ন‍্যাসীর আবরণে সামনে বিরাজমান, আবার দেখতে লাগলেন যেন একটি সোনার পুতুল এবং সেই কনক-উজ্জ্বল জ‍্যোতিতে শ‍্যামসুন্দরের অঙ্গ সৌন্দর্য্যে যেন উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে।বস্তুতপক্ষে রায় রামানন্দ কর্তৃক সন্ন‍্যাসী মহাপ্রভুর মধ্যে এই প্রকার বিভিন্ন ভাবমূর্তি বা শ্রীমূর্তি দর্শন, ভক্তি জগএক মহা অবদান।প্রেমিকভক্ত তাঁর উপাস‍্যকে ঠিকই চিনতে পেরেছিলেন। ভগবানের প্রচ্ছন্ন (আবৃত) স্বরূপটিকে প্রকট করবার সাধ বা বাসনা ভক্তগণের চিরন্তন।নিজে যুগল সেবা করেন, যুগলরূপ মানসে স্মরণ ও মনন করেন। সেজন‍্য তিনি যেন দেখলেন সন্ন‍্যসী মহাপ্রভু সাক্ষাৎ রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তিতে বিদ‍্যমান।*
*🙏তিনি দৈন‍্য বিনয় কন্ঠে বললেন, "অকপটে কহ প্রভু কারণ ইহার।" চতুর চূড়ামণি গৌরহরি কি সহজে ধরা দেবার পাত্র, আসল প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে তিনি রামরায় মহিমা ব‍্যক্ত করে বললেন=*
*🌷কৃষ্ণে তোমার গাঢ় রতি হয়।*
*🌷প্রেমের স্বভাব এই জানিহ নিশ্চয়।।*
*🌷মহাভাগবদ্ দেখে স্থাব জঙ্গম।*
*🌷তাঁহা তাঁহা হয় তার শ্রীকৃষ্ণ স্ফুরণ।।*
*🌷স্থাবর জঙ্গম দেখে,না দেখে তার মূর্তি।*
*🌷সর্বত্র হয় নিজ ইষ্টদেব স্ফূর্তি*।।
*🌷রাধাকৃষ্ণে তোমার মহাপ্রেমা হয়।*
*🌷যাঁহা তাঁহা রাধাকৃষ্ণ তোমারে স্ফুরয়।।*
*🍀অর্থ‍্যাৎ মহাপ্রভু রামরায়কে বললেন প্রগাঢ় প্রেমের এই তো স্বভাব, তোমার রাধাকৃষ্ণ প্রেম এমন এক স্তরে পৌঁছে গেছে, যে সর্বত্র তোমার মানসপটে কৃষ্ণস্মৃতি জাগরিত,সেইজন‍্যই এইরকম স্ফুর্তি খুবই স্বাভাবিক।স্থাবর জঙ্গম যেদিকেই তোমার দৃষ্টি পড়ে সেইদিকেই তুমি ভগবানের অপার মহিমা উপলব্ধি করো, অতএব সেজন‍্যই আমাকে দেখে তোমার মনে এইরকম একটি ভাব হয়েছে।রামরায় এইরকম ছলনা কথায় কিছুতেই সন্তুষ্ট হতে পারলেন না এবং বেশ বুঝলেন যে মহাপ্রভু সন্ন‍্যাসী বেশে তাঁকে যেন প্রতারণা বা ছলনা করছেন। কারণ তিনি ইতিপূর্বে যে দৃশ্য নিজ মানসপটে দেখেছিলেন তা তো অভ্রান্ত সত‍্য কারণ।(আমি যে দৃশ্য দেখেছি তা কোনমতেই ভুল হতে পারে না)।*
*(১)তিনি সর্বপ্রথম শ‍্যামসুন্দর মূর্তি ধ‍্যান করতে করতে গৌরাঙ্গ মূরতি দর্শন করলেন, এবং মানসে যা অনুভব করলেন সাক্ষাৎ দরশনের সঙ্গে তার সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য রয়েছে*
*(২)তার পরে তিনি দেখলেন যে চতুর শিরোমণি সন্ন‍্যাসী শ্রীগৌরাঙ্গ সোনার পুতুলের মত শ্রীরাধিকাকে সঙ্গে নিয়ে যুগলরূপে বিদ‍্যমান।*
*(৩)সেইজন‍্য তিনি অবাক বিস্ময়ে ভাবতে লাগলেন এ তো কোন কুহেলিকা (কুয়াশা) নয় কারণ বাস্তবে সন্ন‍্যাসমূর্তি দর্শন করলেও তিনি তাঁর মধ্যে দেখছেন "শ‍্যামসুন্দরের" ত্রিভঙ্গমূর্তি, একবার দেখছেন সোনার বর্ণছটা বিকিরণ করে রাধাভাবে ভাবিত, একবার দেখছেন মুরলীধর শ‍্যামসুন্দর, আবার দেখছেন যে শ্রীগৌরাঙ্গের দেহ হতে নিষ্ক্রান্ত বাহির হচ্ছে বা বহির্গত) সোনার বর্ণচ্ছটায় যেন শ‍্যামাঙ্গ গৌরাঙ্গে পরিণত হয়েছে। সেইজন‍্য তিনি পুনরায় বললেন প্রভু!তুমি কেন আমার সঙ্গে ছলনা করছ, আমি অজ্ঞ,আমি মূঢ়, আমাকে কৃপা করে এ রহস্যের উত্তর দাও।তবুও সন্ন‍্যাসী মহাপ্রভু প্রকৃত উত্তর না দিয়ে,স্নিগ্ধ মধুর কন্ঠে বললেন,রামরায়!তুমি যুগল সেবা কর তাইনা? তোমার সেবা নিষ্ঠা এত প্রবল যে সদা সর্বদা তোমার মানসপটে সেই রূপ স্ফুরণ হয়। অতএব তুমি যে যুগল মূরতি দেখেছ সেটি তোমার ইষ্ট মূর্তির স্মরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। অর্থ‍্যাৎ করুণাময় গৌরহরি রামরায়কে প্রকৃত আধার জ্ঞানে তাঁকে কৃপা করবেন বলেই তাঁর মানস পটখানিকে নানা রঙে রঙ করাইয়ে ধীরে ধীরে প্রচ্ছদপট (আবরণেরপটটি)সুনিপুণ শিল্পীর মতো তৈরী করে নিচ্ছেলেন,যাতে লালসা বা লৌল‍্যবৃদ্ধি চরম স্তরে পৌঁছায়। (ভক্তাধীন ভগবান, রামরায়ও ছাড়বার পাত্র নন, সেজন‍্য তিনি বললেন)=*
*🌷রায় কহে প্রভু তুমি ছাড় ভারি ভুরি।*
*🌷মোর আগে নিজ রূপ না করিহ চুরি।।*
*🌷রাধিকার ভাবকান্তি করি অঙ্গীকার।*
*🌷নিজ রস আস্বাদিতে করিয়াছ অবতার।।*
*🌷নিজ গূঢ়কার্য‍্য তোমার প্রেম আস্বাদন।*
*🌷অনুসঙ্গে প্রেমময় কৈলে ত্রিভবন।।*
*🌷আপনে আইলে মোরে করিতে উদ্ধার।*
*🌷এবে কপট কর,তোমার কোন ব‍্যবহার?*
*🍀তখন ভক্তের কাছে ভগবান পরাজয় করলেন, যেমনটি করে ভগবান চিরকালই আনন্দ পান এবং নিজের প্রকৃত স্বরূপ রামরায়কে দেখলেন, যা আপনারা চৈতন‍্যচরিতামৃতের ভাষায় আস্বাদন করুন।*
*🌷তবে হাসি তাঁর প্রভু দেখাইলা স্বরূপ।*
*🌷রসরাজ মহাভাব দুই একরূপ*।।
*🌷দেখি রামানন্দ হইল আনন্দে মূর্চ্ছিত।*
*🌷ধরিতে না পারি দেহ,পড়িলা ভূমিত।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ এই যে দেখলেন রামরায়, এই রসরাজ মহাভাব শ্রীমূর্তি, গৌর পরিকরগণের মধ্যে কারও ভাগ‍্যে এই দুই রূপ দর্শন হয় নি।এ তত্ত্ব অতি দুর্জ্ঞেয় এর বিশ্লেষণ করা জীবজগতের পক্ষে সম্ভব নয়। গীতায় ভগবান বলেছেন,*
*🌷নাহং প্রকাশঃ সর্বস‍্য যোগমায়া সমাবৃতঃ।*
*🌹আমি যোগমায়া দ্বারা সমাবৃত (সম্পূর্ণভাবে আবৃত) থাকায় সকলের কাছে প্রকটিত হই না, আবার পাত্র ভেদে এই প্রকটের তারতম‍্য আছে। সেজন‍্য রসিক ভক্তশ্রেষ্ঠ শ্রীল রামরায়কে সন্ন‍্যাসী মহাপ্রভু যে রসরাজ মহাভাব মূর্তি দেখিয়েছিলেন গৌর লীলায় এই অপরিসীম সৌভাগ্য কারও কপালে জুটে নাই, যে কথা নিজমুখেই বলেছেন।*
*🌷তোমা বিনা এইরূপ না দেখে কোন জন।*
*🌻এই প্রসঙ্গে শ্রীপাদ স্বরূপ দামোদর মহাপ্রভুর যে তত্ত্ব উদঘাটন করেছেন তা সকলের জানা দরকার।তিনি বলেছেন=*
*☘তোমরা যে গৌর বিগ্রহ দেখছ, জান উনি কি পদার্থ?তোমরা শ্রীকৃষ্ণের নাম শুনেছ। শ্রীরাধা যে শ্রীকৃষ্ণের আহ্লাদিনী শক্তি তাও তোমরা শুনেছ। শক্তি ও শক্তিমান যে একাত্মা ইহাও তোমাদের কাছে অজানা নয়। সুতরাং শ্রীরাধাকৃষ্ণ লিলারস আস্বাদনের জন্য যদিও অনাদিকাল হতে শ্রীবৃন্দাবনে নিত‍্য লীলাময় যুগল বিগ্রহ বতর্মান, তত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার করলে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সঙ্গে শ্রীরাধাগোবিন্দের কোন ভেদ নাই।এই দুই বস্তু এক হয়েও দুই, আবার দুই হয়েও এক।শ্রীগৌরাঙ্গরূপে এই দুই স্বরূপ এক হলেন। এটিই শ্রীভগবদ্ দেহের অচিন্ত‍্য ঐশ্বর্য‍্য। বতর্মান কলিকালে যাঁকে তোমরা শ্রীগৌরাঙ্গ বলে জেনেছ ইনি সেই ব্রজের যুগলমূরতি ছাড়া আর কেউ নহেন।*
👣👣👣👣👣👣🙏👣👣👣👣👣👣
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🔜 ক্রমাগত 👉 ১২১ হইতে ১৩০ পর্ব 🌷 বৈষ্ণব জগতের মাধুকরী 🏵️ শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/madhukori121to130.html
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
  ꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖 👇꧂


  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️ 
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
  *••••┉❀꧁👇🏠Home Page🏠👇꧂❀┅••••* 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
     *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧

শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html