🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩
১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🔙 পূর্ব লীলা 👉 ১৫১ হইতে ১৬০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda151to160.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(১৬১)শ্রীরামানন্দ রায়, বিশাখা*
*শ্রীরামানন্দ রায়ের গ্রন্থ*
***********************
*🍀এই নাটকটি পাঁচ অঙ্কে বিভক্ত, প্রথম অঙ্কে পূর্বরাগ,দ্বিতীয় অঙ্কে ভাবপরীক্ষা,তৃতীয় অঙ্কে ভাবপ্রকাশ, চতুর্থ অঙ্কে শ্রীরাধাভিসার, পঞ্চম অঙ্কে শ্রীরাধাসঙ্গম বর্ণিত হয়েছে।নাটকটি আয়তনে ছোট।এতে নট,শ্রীকৃষ্ণ,বিদুষক ও অরিষ্টাসুর ছাড়া অন্য কোন পুরুষের উল্লেখ নাই।নারীগণের মধ্যে নটী, শ্রীমতী রাধা,পূজনীয়া মদনিকা--,ইনি শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ মিলনের সহায়রূপী, অশোকমঞ্জরী শ্রীরাধার অনঙ্গপত্রবাহিনী--মাধবী ও শশীমুখী প্রভৃতির নাম উল্লেখ্য।*
*🍀কবিবর খুব কম উপাদানে এবং খুব কম কথাতেই এই গ্রন্থে শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করেছেন।এতে গদ্যে, পদ্যে, প্রাকৃতভাষায় ও গানে কথা-উত্তর লেখা হয়েছে।গানগুলি সরস ও সুললিত, শ্রীজয়দেবের গীতগোবিন্দের অনুকারে রচিত। এই শ্রীগ্রন্থ হতে কিছু কিছু উদ্ধৃত করে প্রেমিক পাঠকগণের চোখের সামনে এই নাটকগীতিকার সুন্দরভাবে প্রকাশ পাবে বলে মনে করেছিলাম, কিন্তু তাতে গ্রন্থের কলেবর অত্যন্ত বৃদ্ধি পাবে, এই আশঙ্কায় সে চেষ্টা হতে ক্ষান্ত হলাম।রসজ্ঞ পাঠক মহোদয়গণ ল্রীলোচনদাস ঠাকুরের অনুবাদসহ এই সঙ্গীত নাটক পাঠ করবেন।আমরা এখানে কেবল সামান্য আভাস মাত্র প্রদান করছি।*
*🍀প্রথমে নান্দীশ্লোকে শ্রীভগবানের নৃত্য বর্ণনা করা হয়েছে।গীতিনাট্যে, নাচই নমস্কাকের বস্তু।*
*🍀প্রিয়পাঠকগণ, বেদান্তে আনন্দ-শ্রুতির উল্লেখ দেখতে পেয়েছেন,রস-শ্রুতির উল্লেখও দেখতে পেয়েছেন, কিন্তু আনন্দলীলারস-বিগ্রহ, ভক্তের মনোবাঞ্জা-পরিপূরণের জন্য ত্রিভঙ্গিমরূপে কি রকম ভুবনভোলানো নাচ করেন,ভক্তির দর্শনশাস্ত্র ছাড়া অন্য কোন দর্শনে তার কোনসন্ধান পেয়েছেন কি? শ্রীরায় মহাশয়ের এই গ্রন্থের নমস্কার-পদ্যে আনন্দরস-বিগ্রহের নৃত্যভঙ্গি-মাধুর্য্য একবার অনুভব করুন।তারপরে "মৃদুলমলয়জপবন- তরলিত চিকুরপরিগতকলাপ" শ্যামসুন্দরের শ্রীমুখকান্তি ভক্তিনয়নে সন্দর্শনকরুন,দেখবেন ভজনের জন্য আর বেশী চেষ্টা করতে হবে না।শ্রীরায় রামানন্দ তাঁর সঙ্গীত নাটকে এই মধুর মনোহর শ্রীমূর্তির মাধুর্য্য প্রকটন করেছেন।*
*শ্রীকৃষ্ণ তাঁর বিদুষকের কাছে যে গীতে শ্রীবৃন্দাবনের শোভা-বর্ণনা করেছেন,তাতে বৃন্দাবনের অতুলনীয় বৈভব ও কাব্যসম্পত্তি-শোভা প্রকাশিত হয়েছে।বৃন্দাবন অপ্রাকৃত অলৌকিক কাব্যের নিত্য-নিকেতন, চিরসরস,চিরমধুময়, নিজ সৌন্দর্য্য গৌরবে চিরগৌরবাস্পদ। প্রেমময় শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের সুখময়ী লীলাস্থলী-- বৃন্দাবনের কাব্যসম্পদ ভক্তি-ভাবিত-চিত্তে স্বতঃই প্রকটিত হন, কবির বাক্যঝঙ্কার কেবল সেটির উদ্বোধকমাত্র।ফুলের হাসি, চাঁদের জ্যোৎস্না মলয়ের পবন,কোকিলের কুজন,শ্যামল কানন, আনন্দঘন প্রেমমূর্তি-শ্যামসুন্দর,আর আনন্দ-চিন্ময়-রস-প্রতিভাবিতা আহ্লাদিনী শক্তিগণের আনন্দলীলা,ইঁহাই জগন্নাথ বল্লভের নাটকের কবিত্ব সম্পদ।*
*🍀দ্বিতীয় অঙ্গে লেখা আছে শ্রীমতীর অর্পিতবস্তু দূতী শশিমুখী অনঙ্গপত্র নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের কাছে উপস্থিত হলেন।শ্রীকৃষ্ণ শশিমুখিকে বললেন, "তিনি কুলবধূ"। আমার সহিত তাঁর কখনও আলাপ পরিচয় নাই।এই অবস্থায় আমার কাছে এইরকম পত্র লেখা অসঙ্গত ও অধর্মজনক। যথা শ্রীজগন্নাথ বল্লভ নাটকে=*
*🌷দয়িতো দয়িতস্তস্যা বালেয়ং কুলপালিকা।*
*🌷অকান্ডে কিমসৌ মুগ্ধে ধত্তামাচারবিপ্লবম্।।*
*🌺শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "ভদ্রে!আরও দেখ তিন কুলপালিকা,তাঁর পক্ষে পতিই পরম দয়িত।তিনি অনর্থক আচার-বিপ্লব (তাঁর আচার আচরণ পরিবর্তন)করতে রত হবেন কেন? এই কথা বলে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "দূতী তুমি শ্রীমতীকে এই অধর্ম কর্ম হতে প্রতিনিবৃত্ত(বিরত) করিও।*
🪷🪷🪷🪷🪷🪷🦜🪷🪷🪷🪷🪷🪷
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬২)শ্রীরামানন্দ রায়, বিশাখা,*
*শ্রীরায় রামানন্দের গ্রন্থ*
***********************
*🍀শ্রীরায় রামানন্দ একটি গানেও এই ভাব প্রকাশ করলেন। তার মর্ম্ম এইরকম,-- দূতী,ভেবে দেখ,শশধরের প্রতি নলিনী কখনও অনুরাগিনী হয় না, যামিনী (রাত্রি) কখনও রবিকে (সূর্য্যকে) পতি বলিয়া গ্রহণ করে না,এটিই প্রাকৃতিক নিয়ম। কুলবনিতাদের আচরণও তদ্রূপ।কুলবধূদের পক্ষে পরপুরুষে অনুরাগ পাপজনক। শশিমুখী, তুমি পদ্মমুখী শ্রীরাধিকাকে এই অনুচিত অনুরাগে প্রবৃত্ত হতে বারণ কর।তিনি কুলবধূ হয়ে যদি কুলচরিত্রের মর্য্যাদা রক্ষা না করেন।আমরা তাঁর এই ব্যবহারে কি মনে করব?এই প্রবৃত্তি ভাল না ; যাও তাঁকে বারণ কর।*
*🌹শ্রীমদ্ভাগবতে রাসের সময়ে বনে উপনীতা ব্রজবধূদেরকে শ্রীকৃষ্ণ প্রথমে যেরকম পাতিব্রাত্য ধর্মের উপদেশ করে ভাব-পরীক্ষা করেছিলেন,এই নাটকের ভাব-পরীক্ষাতেও সেই পাতিব্রাত্য ধর্মোপদেশই অতি কম কথায় দেওয়া হয়েছে।এই গানেই দ্বিতীয় অঙ্কের উপসংহার করা হয়েছে।*
*🌻তৃতীয় অঙ্গের দৃশ্যারম্ভ এইরকম ঃ--- শ্রীরাধা মাধবীকুঞ্জে বিষণ্ণ ভাবে বসে আছেন।শশিমুখি শ্রীকৃষ্ণের প্রত্যাখ্যানসূচক অশুভ সংবাদ বলায় শ্রীমতী রাধিকার মুখকমল চরমভাবে ম্নান হয়েছে। মদনিকা তাঁর কাছে বসে মৃদু মৃদু ভাবে প্রবোধ বাক্য বলছেন।এই সময়ে অশোকমঞ্জরী দূর হতে তাঁদেরকে অতি মৃদু ও সতর্কভাবে কথাবার্তা বলতে দেখে আর ওদিকে গেলেন না। তিনি আপন মনে বললেন, তাঁরা মৃদু মৃদু ভাবে কি গোপন কথা বলছেন,এখন ওনাদের কাছে যাওয়া অসঙ্গত। তিনি এই বলে চলে গেলেন।শ্রীমতী রাধিকা উষ্ণনিশ্বাস ত্যাগ করে গানে মনের বেদনা প্রকাশ করে বললেন=*
*🌷কুলবনিতাজনধৃতমাচারং তৃণবদগণয়ং গলিতবিচারম্। ইত্যাদি।*
*🍀এই গানটিতে শ্রীরাধার আক্ষেপ-অনুরাগ সূচিত (জ্ঞাপন, কথন বা সংকেত বা চিহ্নাদি দ্বারা জানানো)হয়েছে। শ্রীমৎ রূপগোস্বামী যখন তাঁর নাটকের "যস্যোৎসঙ্গসুখাশয়া" শ্লোক ল্রীরামরায়কে শুনাচ্ছিলেন,শ্রীরামরায়তখন বিস্মিত হয়ে শ্রীরূপের মুখপানে তাকিয়েছিলেন।শ্রীরূপ শ্রীরামরায়ের নাটক তখনও দেখেননি। কিন্তু তাঁর নাটকে এইসব ভাবের বিকাশ এবং কাব্যের অনন্ত মাধুর্য্যময়ী বর্ণনা দেখে রামরায় তখন বিমোহিত হয়েছিলেন। অতঃপরে শ্রীমতী রাধিকা বলছেন, যথা জগন্নাথবল্লভে ঃ---*
*🌷শ্রাবং শ্রাবং সুসামশ্রুতিসমিতপরব্রহ্মবংশী প্রসূতং,*
*🌷দর্শং দর্শং ত্রিলোকীববতরুণকলাকেলিলাবণ্যসারম্।*
*🌷ধ্যায়ং ধ্যায়ং সমুদ্যদ্ দ্যুমণিকুমুদিনী বন্ধুরোচিতঃ সরোচি,*
*🌷শ্ছায়ং শ্রীকান্তসঙ্গং দহতি মম মনো মাং কুকূলাগ্নিদাহম্।।*
*🌻অর্থ্যাৎ সখি!সামবেদের মত তাঁর মনোহর সুস্বরময় পরব্রহ্ম বংশীরব শুনে শুনে,তাঁর ত্রেলোকসুন্দর সাক্ষাৎ মদনের মত লাবণ্যসার শ্রীমূর্তি দেখে দেখে এবং এককালীন উদিত দিননাথ (সূর্য্য) ও নিশানাথ (চন্দ্র) সমান শোভাশালী তার ভুবনমোহন রূপ ধ্যান করে করে আমার মন সততই আমাকে তুষানলের মত পুড়াচ্ছে।*
*🍀তখন শশিমুখী প্রবোধ দিয়ে বললেন, "প্রিয়সখী! অস্থানে আগ্রহ ত্যাগ কর", শশিমুখী বলতে চাইলেন যে,শ্রীকৃষ্ণের কথায় তোমার যে দেহমন তুষানলের মত জ্বলে যাচ্ছে,তাঁর কথা ভুলে যাও।দেখ!সেই কাজলের মত কৃষ্ণবর্ণ শ্রীকৃষ্ণের নিকট তোমার সম্বন্ধে যত যত কথা বললাম, তিনি তার সব কথাতেই উপেক্ষা করে শিশুর মত ভাব দেখালেন। সুবদনে রাধে! শ্রীকৃষ্ণের ধ্যানে আর প্রয়োজন নাই। সেটি মনের উৎকলিকা-কুসুম-বিগলিত মধুমিশ্রিত বিষ, সুতরাং অন্য কিছুতে মনোনিবেশ করো। যথা ঃ----*
*🌷যদ্ যদ্ ব্যঞ্জিতমঞ্জনপ্রতিকৃতৌ কৃষ্ণে তদর্থং ময়া,*
*🌷তত্তত্তেন নিবারিতং শিশুদশাভাবপ্রকাশৈরলম্।*
*🌷আস্তামুৎকলিকাস্রসূনবিগলন্মাধ্বীকনন্ধং বিষং,*
*🌷কৃষ্ণধ্যানমিতহন্যতঃ সুবদনে সঙ্কল্পমাকল্পয়।।*
*🌻কবিবর এই জায়গায় কৃষ্ণধ্যান সম্বন্ধে শ্রীরাধিকার যে অদ্ভুত ভাবের কথা লিখেছেন,তা রসাভিজ্ঞ পাঠকগণের নিয়ত বা নিয়মিত আস্বাদ্য। শ্রীরাধার পক্ষে শ্রীকৃষ্ণধ্যান "প্রসূনবিগলন্মাধ্বিকনন্ধং বিষম্" অর্থ্যাৎ="বিষামৃতে একত্র মিলন"। শ্রীপাদ শ্রীরূপ গোস্বামী মহোদয়ের নাটকে এই ভাবটি কিরকমে ব্যাখ্যাত হয়েছে তাও দেখুন=*
*🌷পীড়াভির্নবকালকূটকটুতা গর্ব্বস্য নির্ব্বাসনো,*
*🌷নিষ্যন্দেন মুদাং সুধামাধুরিমাহঙ্কারসঙ্কোচনঃ।*
*🌷প্রেমা সুন্দরি নন্দনন্দনপরো জাগর্ত্তি যস্যান্তরে,*
*🌷জ্ঞায়ন্তে স্ফুটমস্য বক্রমধুরা স্তেনৈব বিক্রান্তয়ঃ।।*
*🌹এই শ্লোকের ব্যাখ্যা, শ্রীচরিতামৃতে শ্রীপাদ কবিরাজ মহোদয় ভাবানুগত অনুবাদ করে লিখেছেন=*
*বাহ্যে বিষজ্বালা হয়, ভিতরে আনন্দময়,*
*কৃষ্ণপ্রেমার অদ্ভুত চরিত।।*
*এই প্রেমার আস্বাদন,তপ্ত ইক্ষুচর্বণ,*
*মুখ জ্বলে না যায় ত্যজন।*
*সেই প্রেমা যার মনে, তার বিক্রম সেই জানে,*
*বিষামৃতে একত্র মিলন।।*
*🌻এখানেও শ্রীপাদ রূপগোস্বামী ও শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর ভাব-সাম্য খুবই স্পষ্ট। এইরকম ভাবের সমতা আমরা আকস্মিক বলেই মনে করি না।এর অভ্যন্তরে অবশ্যই প্রগাঢ় নিয়ম আছে।ভক্তহৃদয়বিহারী মহাপ্রভু উভয় গ্রন্থকারের হৃদয়ে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শ্রীরাধাপ্রেমের এই উচ্চতম তত্ত্ব প্রতিফলিত করে দিয়েছিলেন।তাই উভয়ে বিরহিণী শ্রীমতীরাধারাণীর কৃষ্ণধ্যানের এই অদ্ভুত বেগবান্ (দ্রুতগতি সম্পন্ন) ভাবের সার কথা লিখে রেখেছেন।শ্রীকৃষ্ণের রূপধ্যান করতে বসলেই বিগত সুখস্মৃতি একে একে শ্রীরাধার হৃদয়পটে চরমভাবে উদিত হয়,তাঁর হৃদয়ের স্তরে স্তরে গত সুখের সুধাস্মৃতি বিশেষভাবে মিশ্রিত।সুখের স্মৃতি আছে কিন্তু সুখের পদার্থ নাই, যাকে নিয়ে সুখভোগ, এখন তিনি বাম বা প্রতিকূল,তিনি দূরতর, অনেক দূরে আছেন, সুতরাং ভীষণ অসহ্য জ্বালা। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই যে,এই বিষের জ্বালা পরিহারের জন্য শ্রীকৃষ্ণধ্যান-ত্যাগও শ্রীমতীর পক্ষে সম্ভব না।কেননা,সেই সুখের স্মৃতি মধুময়ী,সেটি বিষামৃতে মিশ্রিত।*
*ক্রমাগত*
🪔🪔🪔🪔🪔🪔🪷🪷🪷🪷🪷🪷
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৩)শ্রীরামানন্দ রায়,বিশাখা,*
*শ্রীরামানন্দ রায়ের গ্রন্থ*
************************
*🍀শশিমুখী এইসব জেনেও শ্রীমতী রাধিকাকে বললেন,সখী! "মুঞ্চ অস্থানাগ্রহম্" সখী!অস্থানে আগ্রহ ত্যাগ করো, অর্থ্যাৎ যে তোমাকে প্রকারন্তরে গ্রহণ করছেন না তাঁর কথা, তাঁর জায়গায় যাবার চিন্তা, ও তাঁর কথা মন থেকে মুছে ফেল।এর উত্তরে শ্রীমতীরাধারাণী বললেন যে, একটি পদ্যে গভীর ভাবময় প্রেমবিলাপে তার মনকষ্ট প্রকাশ করেন।সেইরকম কথা জগতের আর কোন সাহিত্যে প্রকাশিত হয়েছে কি না বলতে পারি না।এখানে সেই শ্লোকটীর অবতারণা করা যাচ্ছে।শশিমুখীর কথা শুনে শ্রীমতীর নয়নকমল হতে মণিমুক্তার মোহনমালাবিনিন্দি অশ্রুজল গড়িয়ে পড়তে লাগিল।তিনি ভাঙ্গাকন্ঠে প্রেম গদগদ স্বরে অতি মৃদুস্বরে বা ধীরে ধীরে বলতে লাগলেন ঃ---*
*প্রেমচ্ছেদরুজোহবগচ্ছতি হরির্নায়ং ন চ প্রেম বা,*
*স্থানাস্থানমবৈতি নাপি মদনো জানাতি নো দুর্ব্বলাঃ।*
*অন্যো বেদ ন চান্যদুঃখমখিলং নো জীবনং বাশ্রবং,*
*দ্বিত্রাণ্যেব যৌবনমিদং হা হা বিধেঃ কা গতিঃ।।*
*🌻শ্রীচরিতামৃতের বৈষ্ণবসুখদা টীকানুগ বঙ্গানুবাদ ঃ---*
*🌻সখী!হরি প্রেম বিচ্ছেদ-জন্য যন্ত্রণা জানেন না এবং প্রেমও জায়গা অজায়গা জানে না।আমরা যে দুর্বলা মদনেরও সে জ্ঞান নেই। এ জগতে কেউ কারও অশেষ কষ্ট বুঝতে পারে না।জীবন অস্থির, এই যৌবনও দুইদিন মাত্র স্থায়ী।সখী!বিধাতার কি এই লীলা!*
*🍀পরম রসময় শ্রীলোচনদাস ঠাকুর ও শ্রীপাদ কবিরাজ গোস্বামী মহোদয় এর যে সরস সুন্দর পদ্যানুবাদ করেছেন তা অতীব মধুর।রসজ্ঞ পাঠকগণ অবশ্যই তা আস্বাদন করেছেন।*
*🍀শ্রীজগন্নাথবল্লভ নাটকের এই শ্লোক উচ্চারণ করে ভাবনিধি মহাপ্রভু কত দিন-রাত্রি হৃদয়ের কপাট খুলে বিলাপ করতেন, নয়নজলে তাঁর বদনকমল ভিজে একাকার হ'ত,ভাবের আবেগে তিনি অধীর ও ব্যাকুল হয়ে পড়তেন,শ্রীচরিতামৃতের প্রেমিক ভক্তপাঠকগণের হৃদয়ে তাঁর লেশাভাস এখনও অনুভবনীয়।*
*🍀শ্রীকৃষ্ণের কথায় শ্রীমতী বিরহে ক্রমেই অধীরা হয়ে পড়লেন।মদনিকা (মঞ্জরীসখী) প্রবোধ বাক্যে সান্ত্বনা করতে লাগলেন। কিন্তু যাঁর হৃদয় সে প্রবোধ বাক্যে স্থির হল না।তিনি বললেন,সখী! চারিদিকে ভীষণ দাবানল, হরিণীর কোমল বা নরম দেহ সে জ্বালা কি করে সইবে?শ্যাম জলধরের জলধারায় সে অনল-নির্বাণ হবে(কখন আগুন নিভবে) এই আশায় কি হরিণী প্রাণ ধারণ করতে পারে?আর এই জীবন চলে গেলে নবনীরদের জল-ধারায় (এই প্রাণ চলে গেলে পরে যে শ্যাম জলধরের জলধারায়) বা সন্তাপ-মৃতার কি লাভ হবে? (দুঃখ কষ্ট পেয়ে যে মানুষটি মরে যায়, এখন আমার অগ্নি নিভানোর জন্য জল দরকার, সেই জল যদি মৃত্যুর পর পাই তাতে মৃতের কি লাভ হবে?)।তাই কবি তুলসীদাসও একজায়গায় লিখেছেন ঃ---*
*🌷এক বিন্দু জল লাগি চাতক নিতি দুঃখ পাবে।*
*🌷প্রাণ গেলে সাগর মিলেত কোন কামমে আবে।।*
*🌻এইরকমে শ্রীরাধার অনুরাগ ক্রমেই বেড়ে যেতে লাগিল।তিনি প্রবোধ বচনে আর সান্ত্বনা পেলেন না। তখন মদনিকা বললেন, রাধে!স্থির হও আমি মাধবের কাছে মাধবীকে পাঠিয়েছি।সে তোমার চিত্রফলক নিয়ে মাধবের কাছে গেছে।এই কথা বলতে বলতেই মাধবী এসে দেখা দিলেন।তাঁর হাতে চিত্রফলক দেখে মদনিকার হৃদয় আনন্দে ভরে উঠিল।চিত্রফলকে শ্রীকৃষ্ণ কি লিখে দিয়েছেন,তা দেখবার জন্য মদনিকা চিত্রফলক চাইলেন।শ্রীরাধাও সলজ্জ ভাবে চিত্রফলকের জন্য হাত বাড়ালেন।মাধবী বললেন আগে পুরস্কার চাই।এই বলে সামান্য দেখিয়ে আবার চিত্রফলকটি কাপড়ের আঁচলে লুকালেন।এই সময়ে সুপন্ডিতা মদনিকা সহসা শ্রীকৃষ্ণের লেখা পাঠ করে মরম অবগত হলেন।শশিমুখীর বিলম্ব সইল না।তিনি জোড়করে টেনে নিয়ে পাঠ করতে লাগলেন।তারপর শশিমুখী শ্রীরাধার হাতে চিত্রফলক দিলেন।তখন শ্রীমতী আনন্দে অধীরা।শ্রীমতীর দুঃখও যেমন প্রবলতম, সুখও তেমনি প্রবলতম।তিনি মদনিকার হাতে চিত্রফলক দিয়ে বললেন,সখী! তোমার হৃদয় জেনে শ্রীকৃষ্ণও তোমার প্রতি অনুরক্ত হয়েছেন। কেননা, প্রমাদবশতঃ প্রেমাঙ্কুর ভেঙ্গে গেলে আর তা জোড়া লাগে না। এখানে শ্রীচরিতামৃতের "উপজল প্রেমাঙ্কুর ভাঙ্গিল যে দুঃখপুর" ইত্যাদি পদের মূল কোথায়, তারও খোঁজ পাওয়া গেল।*
*🍀শ্রীবৃন্দাবনের নিকুঞ্জবন চিরবসন্তময়--,শ্যামল লতিকায় সবুজ পাতার আড়ালে মধুময় পুষ্প, ফুলের গন্ধে চারিদিক আমোদিত, মধুলোলুপ অলি গুঞ্জনে নিকুঞ্জ সবসময়ই মুখরিত, তার উপরে প্রমত্ত পিককুলের কুহুতান, এরকম প্রাণমাতানো দৃশ্যে,প্রাণমাতানো গন্ধে, ও প্রাণমাতানো রবে কার মন স্থির থাকতে পারে?শ্রীরাধা শ্রীকৃষ্ণের সরস সঙ্গমলালসায় অধীরা হয়ে উঠলেন, প্রাণবল্লভের জন্য প্রাণ আকুল হয়ে উঠিল,তিনি আকুল প্রাণে গাইলেন=*
*🍀শ্রীমতীর এই উৎকণ্ঠাময়ী গীতিকা শুনে মদনিকা আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে শ্রীকৃষ্ণের কাছে গমন করলেন,যাবার সময় বলে গেলেন,সখী!এই বকুলপাদোপকন্ঠেই আমাকে দেখতে পাবে।*
*🍀এইখানে ভাবপ্রকাশ তৃতীয় অঙ্গের যবনিকা পতিত হল।*
*🌹তারপরে মদনিকা শ্রীকৃষ্ণের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলেন,তাঁর মুখখানি মলিন হয়ে গিয়েছে, শ্রীরাধাপ্রেমের তরঙ্গেতাঁর হৃদয়ও প্রহত (আঘাত প্রাপ্ত)হয়েছে। তিনি সহচর প্রিয় বন্ধুগণের সঙ্গে বসে আছেন।এমন সময়ে মদনিকাকে দেখে শ্রীকৃষ্ণের মুখমন্ডলে আনন্দের উজ্জ্বলরেখা দেখা দিল, তিনি শ্রীমতীর কথা তুললেন। মদনিকা বললেন, বৎস শ্রীমতীর কথা আর কি বলব,তাঁর লাবণ্য-মাত্র-শেষ। শ্রীকৃষ্ণের উৎকণ্ঠা ক্রমশই বেড়ে যেতে লাগল। তিনি শ্রীমতীকে যেরকম প্রথমে উল্টোপাল্টা কথা বলেছিলেন, যে কথায় তিনি শ্রীমতীর দূতীকে নিরাশ করে দিয়েছিলেন,তা তাঁর মনে পড়িল। তিনি মদনিকাকে বললেন,দেবী তবে কি শ্রীমতী আমার অভিলাষ হতে ক্ষান্ত হলেন? মদনিকা বললেন, বৎস তার অবস্থার কথা শোন=*
*🌷যদা নাসৌ দোষং গণয়তি গুরূণাং কুবচনে,*
*🌷ন বা তোষং ধত্তে সরসবচনে নর্ম্মসুহৃদাম্।*
*🌷বিষাভং শ্রীখন্ডং কলয়তি বিধুং পাবকসমং,*
*🌷তদাস্যাস্তদ্বৃত্তং ত্বয়ি গদিতুমত্রাহমগমম্।।*
*🌻অর্থ্যাৎ আমি যখন দেখলাম গুরুগণের গঞ্জনাময় কথাও তিনি দোষ বলে গণ্য করছেন না, নর্মসখীগণের সরস কথাতেও তিনি তুষ্ট হচ্ছেন না,চন্দনকে তিনি বিষের মত মনে করছেন, চন্দ্র তাঁর পক্ষে আগুনের মত প্রতিফলিত হচ্ছে, তখন তাঁর এই সব কথা বলবার জন্যই আমি তোমার কাছে আসিলাম।*
*🌹এটি শ্রীমতী রাধারাণীর অতি উৎকণ্ঠাময় ও লোকাপেক্ষাত্যাগেরই উদাহরণ।*
🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌷🌸🌸🌸🌸🌸🌸
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৪)শ্রীরামানন্দ রায়,বিশাখা*
*শ্রীরামানন্দ রায়ের গ্রন্থ*
**********************
*🍀অজয়তটের অমরকবি শ্রীল জয়দেব গোস্বামী উৎকণ্ঠিতা শ্রীমতী রাধারাণীর যে চিত্র প্রদর্শন করেছেন,প্রেমিক ভক্ত পাঠকগণ এখানে একবার শ্রীগীত গোবিন্দের সেই উৎকণ্ঠিতা শ্রীমতীর বিষাদ-গীতিকার কথা স্মরণ করুন। উভয় বর্ণনাতে সাদৃশ্য ও পার্থক্য যথেষ্টই দেখতে পাবেন।শ্রীরায় মহাশয় এখানে প্রথম অনুরাগের পরে শ্রীমতী রাধারাণীর কৃষ্ণবিরহ কষ্টের বর্ণনা করেছেন, তাই এই বিরহ কষ্ট অতি অল্পাক্ষরে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু শ্রীপাদ জয়দেব গোস্বামীর রচিত গীতগোবিন্দে শ্রীমতীর বিরহ-উৎকন্ঠা বর্ণন-পাঠে পাষাণ হৃদয়ও বিগলিত হয়ে যায়, শ্রীমন্মহাপ্রভুর অন্ত্যলীলার দিব্য-উন্মাদের প্রত্যেক ঘটনাই পাঠকগণের স্মৃতির দ্বারে আমন্ত্রণ করে উপস্থিত করে দেয়।শ্রীপাদ জয়দেব লিখেছেন ঃ-----*
*বহতি চ বলিত-, বিলোচনজলভর-,*
*মাননকমলমুদারং।*
*বিধুমিব বিকট-, বিধুন্তুদদন্ত-,*
*দলনগলিতামৃতধারম্।।*
*🍀প্রিয় পাঠক, একবার এই পদটি পাঠ করুন, আর আমাদের সজলনয়ন মহাপ্রভুর মুখকমলের ধ্যান করুন ; দেখবেন, বিরহিণী শ্রীরাধিকা, আর বিপ্রলম্ভসমগ্ন শ্রীগৌরাঙ্গ একই পদার্থ একই ভাবে এবং একই রসে উভয়ের হৃদয় পরিপ্লুত। আরও দেখুন=*
*বিলিখতি রহসি, কুরঙ্গ-মদেন্,*
*ভবন্তমসমশরভূতং।*
*প্রণমতি মকর, মধো বিনিধার,*
*করে চ শরং নবচূতম্।।*
*প্রতিপদমিদমপি,নিগদতি মাধবঃ,*
*তব চরণে পতিতাহং।*
*ত্বয়ি বিমুখে মরি, সপদি সুধানিধি,*
*রপি তনুতে তনুদাহম্।।*
*☘শ্রীচৈতন্য ভাগবতে লিখিত আছে*
*🌷ক্ষণে পৃথিবীতে লেখে ত্রিভঙ্গ আকৃতি।*
*🌷চাহিয়া রোদন করে ভাসে সব ক্ষিতি।।*
*🌻শ্রীগীতগোবিন্দে শ্রীমতীর দূতী শ্রীকৃষ্ণের কাছে শ্রীমতীর অবস্থা বলছেন=*
*ধ্যানলয়েন পুরঃ, পরিকল্প্য ভবন্ত-,*
*মতীব দুরাপং।*
*বিলপতি হসতি, বিষীদতি রোদিতি,*
*চঞ্চতি মুঞ্চতি তাপম্।।*
*🍀শ্রীশ্রীমহাপ্রভুর অবস্থা বর্ণনা করে শ্রীনরহরি ঠাকুর লিখেছেন ঃ--*
*আরে আমার গৌরকিশোর।*
*নাহি জানে দিবানিশি,কারণবিহীন হাসি,*
*মনের ভরমে পহুঁ ভোর।।*
*ক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে গায়,কারে পহুঁ কি শুধায়,*
*কোথায় আমার প্রাণনাথ।*
*ক্ষণে শীতে অঙ্গ কম্প,ক্ষণে ক্ষণে দেয় লম্ফ,*
*কাঁহা পাঙ যাঙ কার সাথ।।*
*ক্ষণে উর্দ্ধবাহু করি,নাচি বলে ফিরি ফিরি,*
*ক্ষণে ক্ষণে করয়ে বিলাপ।*
*ক্ষণে আঁখিযুগ মুদে,হা নাথ বলিয়া কাঁদে,*
*ক্ষণে ক্ষণে করয়ে সন্তাপ।।*
*কহে দাস নরহরি,আরে মোর গৌরহরি,*
*রাধার পিরীতে হৈল হেন।*
*ঐছন করিয়া চিতে,কলিযুগ উদ্ধারিতে,*
*বঞ্চিত হইনু মুঞি কেনে।।*
*🌻এইরকম ভাবাবেশ শ্রীজয়দেবের গীতগোবিন্দে যথেষ্টই আছে।এখানে আর একটা পদ্য উদ্ধৃত করা যাচ্ছে।*
*সা রোমাঞ্চতি শীৎকরোতি বিলপত্যুৎকম্পতে তাম্যতি,*
*ধ্যায়ত্যুদভ্রমতি প্রমীলতি পতত্যুদযাতি মূর্চ্ছত্যপি।*
*এতাবত্যতনুজ্বরে বরতনু র্জীবের কিন্তে রসাৎ,*
*স্বর্ব্বৈদ্যপ্রতিম প্রসীদসি যদি ত্যক্তোহন্যথা হস্তকঃ।।*
*🌹শ্রীকৃষ্ণ বিরহাকুলা শ্রীমতীর এইরকম বহুবিধ প্রবলতম ভাব শ্রীগীতগোবিন্দ গ্রন্থে যেরকম চিত্রিত হয়েছে, অন্য কোথাও সেরকম স্পষ্টভাবে দেখা যায় না।শ্রীমন্মহাপ্রভুর লীলায় শ্রীরাধার এইসব ভাবরাশি ভক্তজন-সামনে সাক্ষাৎ সম্বন্ধেই অভিব্যক্ত হয়েছে।মহাপ্রভু শেষলীলায় চন্ডীদাসের পদ, বিদ্যাপতির পদ,রামরায়ের নাটক-গীতি, কর্ণামৃত ও শ্রীগীতগোবিন্দের পদমাধুর্য্য রসাস্বাদন করতেন। কিন্তু তাঁর এই লীলায় এইসব গ্রন্থনিহিত রসের যে পরাকাষ্ঠা প্রদর্শিত হয়েছে, তা মানবীয় ভাষাতে একেবারেই প্রকাশ পাবার নয়।তথাপি এইসব গ্রন্থে সেই মহাভাবের প্রতিচ্ছবি সামান্য পরিমাণে প্রদর্শিত হয়েছে।তাই মহাপ্রভু সবসময় রায়ের নাটক-গীতির রস আস্বাদন করতেন।শ্রীজয়দেবের গীতগোবিন্দের সঙ্গে রামরায়ের রচিত গানের সাদৃশ্য পরিস্ফূট।*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৫)শ্রীরামানন্দ রায়, কাষ্ঠ পুত্তলি*
*শ্রীরামানন্দ রায়ের গ্রন্থ*
***********************
*🙏শ্রীপাদ জয়দেব গোস্বামীর গ্রন্থেও দেখতে পাই=*
*🌷সরস মসৃণ মপি মলয়জ পঙ্কং,*
*🌷পশ্যতি বিষমিব বপুষি সশঙ্কম্*।
*🌻আবার অন্যত্র লিখিত হয়েছে =*
*🌷চেতশ্চন্দনচন্দ্রমঃ কমলিনীচিন্তাসু সংতাম্যতি।*
*🌹ফলে শ্রীকৃষ্ণ বিরহ বিধুরা শ্রীমতীর এই বাহ্যভাব অন্তর্নিহিত বিরহ কষ্ট আতিশর্য্যেরই ক্ষীণতর নিদর্শন মাত্র।ইতঃপূর্বে শ্রীরামরায়ের একটি গীত উদ্ধৃত করা হয়েছে।সেটিতে লেখা রয়েছে ঃ---*
*🌷নিরবধি নয়নসলিলভবসাদে।*
*🌷পততি কৃশা পরিচলিত চ পাদে।।*
*🌻অর্থ্যাৎ শ্রীমতী বিরহাতিশয্যে এইরকম বিবশা হয়েছেন যে একপা চলতেও পারছেন না।কবিবর শ্রীজয়দেবের গ্রন্থে দেখতে পাওয়া যায় =*
*🌷ত্বদভিসরণরভসেন বলন্তী।*
*🌷পততি পদানি কিয়ন্তী বলন্তী।।*
*☘অর্থ্যাৎ "তোমার সঙ্গে মিলিতা হবার আশায় তিনি যেন বলযুক্তা হচ্ছেন,আবার কয়েক পা মাত্র চলেই ক্ষীণতাবশতঃ পড়ে যাচ্ছেন।"।*
*🌻দেবী মদনিকা শ্রীকৃষ্ণের কাছে শ্রীমতীর এই অবস্থা বর্ণনা করলেন।শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতীর ভাব-পরীক্ষার উৎকৃষ্ট বা উত্তম নিদর্শন পেলেন, তিনি নিজেও তাঁর জন্য যথেষ্ট ব্যাকুল হয়েছিলেন, সুতরাং আগ্রহের সঙ্গে মদনিকাকে বললেন,"দেবি! আপনি তাড়াতাড়ি কোন উপায়ে শ্রীরাধাকে একবার এই কুঞ্জে নিয়ে আসুন। মদনিকা আর বিন্দুমাত্র অপেক্ষা না করে শ্রীরাধার কাছে যাত্রা করলেন।এদিকে শ্রীমতীর উৎকণ্ঠা ক্রমেই বাড়ছিল।রাত্রি ক্রমেই অন্ধকার হচ্ছিল। কবিবর শ্রীরামরায় এখানে অতি কৌশলের সঙ্গে বিরহবিধুরা শ্রীমতীর শ্রীমুখে তামসী অভিসার যাত্রার কাল বর্ণনা করেছেন।শ্রীমতী তাঁর প্রিয় সখী মাধবীকে বলছেন=*
*🌹সখী!এই তো বনপথ অন্ধকারে সম্পূর্ণ ঢেকে গেল,এখন গিরিগুহা কিছুই দেখা যাচ্ছে না,জায়গা সব সমান দেখছি, এখনও তো দেবীর আগমন হল না। তিনি সেখানে কি করছেন? হায় বিধাতা আমার প্রতি কি এতই রুষ্ট হলেন, হায়!কি কষ্ট, আমার এই অসীম দুর্গম কানন লঙ্ঘন একেবারেই যে বিফল হল। এই কথা বলতে বলতেই মদনিকা এসে উপস্থিত হলেন।শ্রীরাধিকা তাঁকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, সখী! সেখানকার খবরাখবর কি?মদনিকা বললেন, "বিরহে যেরকম হয়ে থাকে,তাইই হয়েছে।শ্রীরাধা জিজ্ঞাসা করলেন, সখী!কিরকম? তখন মদনিকা বললেন=*
*ইন্দুং নিন্দতি চন্দনং বিকিরতি প্রালম্বকং মুঞ্চতি।*
*প্রালেয়াৎ ত্রসতি প্রিয়ং পরিজনং নাভাসতে সংপ্রতি।।*
*গোবিন্দস্তব বিপ্রযোগবিধুরঃ কিং কিং ন বাচেষ্টতে।*
*তৎকুঞ্জোদরতল্পকল্পনপরং রাধে তমারাধয়।।*
*☘অর্থ্যাৎ বৎসে!শ্রীকৃষ্ণ তোমার বিরহে দুঃখিত হয়ে কত চেষ্টাই করছেন, তিনি চন্দ্র দেখে তার নিন্দা করছেন,চন্দন দেখলেই সেটি দূরে ফেলে দিচ্ছেন,দোদুল্যমান গলার হারও দূরে ফেলে দিচ্ছেন,নীহার বা শিশির দেখলেই তাঁর ভয় উপস্থিত হচ্ছে,কোন প্রিয়জনের সঙ্গেও আলাপ করছেন না, বা কথা বলছেন না, সবসময় কুঞ্জগৃহে শয্যা রচনা করছেন।রাধে আর দেরী করিও না, এখন খুব তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে মিলিতা হও।*
*🌻কবিবর, মদনিকার মুখে এই কথাগুলি বলিয়ে অন্য দৃশ্যের জন্য পটক্ষেপ করেছেন। মদনিকাদেবী শ্রীমতী রাধিকাকে আনবার জন্য গমন করলেন, কিন্তু এদিকে প্রতিমুহূর্তেই শ্রীকৃষ্ণের উৎকণ্ঠা বেড়ে উঠতে লাগল।তিনি নানারকম আশঙ্কা করতে লাগলেন,তাঁর মনে নানান রকম ভাবনার উদয় হতে লাগল। তিনি মনে করলেন আমি শ্রীমতীর অপরিচিত সম্ভবতঃ এই জন্যই হয়ত তিনি এখানে আসতে দ্বিধা করছেন।আবার মনে করলেন তা হবে কেন, যখন অপরিচিতের কাছে অনঙ্গ-পত্র লিখলেন তখন আসতে সন্দেহ হবে কেন, সম্ভবতঃ সখীদের কথায় তাঁর একেবারেই বিশ্বাস হয় নাই--,তাই বা হবে কেন?হতে পারে তিনি আসছেন, কিন্তু একে কৃশাঙ্গী (ক্ষীণকায়ী)তাতে স্তনভার ও জঘনভারেই তিনি মন্থরগতিতে আসছেন,তাতেই হয়ত দেরী হচ্ছে, আমার এ সঙ্কেত-কুঞ্জও অতি দূরে। রমণীরা স্বভাবতই ভীরু,তার উপরে আবার অন্ধকার,কিভাবেই বা তিনি তাড়াতাড়ি আসবেন। আবার এমনও হতে পারে তিনি আসছেন, অন্ধকারে ঘন বনের পথ ঠিক করতে না পেরে পথভ্রমে অন্য পথে চলে গিয়েছেন।অথবা সেই কৃশাঙ্গী কামবাণে পীড়িতা হয়ে একেবারেই বিবশা হয়ে পড়েছেন। তিনি তিনি সামনে দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন আকাশে চন্দ্র উদিত হচ্ছে, তখন আরও নিরাশ হয়ে ভাবতে লাগলেন, প্রিয়তমা তামসী অভিসারিকার বেশে আসছেন, হঠাৎ চন্দ্র উদয় হওয়ায় অর্দ্ধপথে বিপদে পড়েছেন, এখন তিনি না আসতে পারছেন,না যেতে পারছেন।*
*🌻শ্রীজন্নাথ বল্লভ নাটকের শ্রীকৃষ্ণের এরকম উৎকণ্ঠাময়ী নানান ভাবনা ও শ্রীশ্রীগীতগোবিন্দের শ্রীমতী রাধার উৎকণ্ঠাময়ী নানান ভাবনা যে একরকম।*
*🌹শ্যামসুন্দর শ্রীমতীর দেরী দেখে এইরকম নানা ভাবনা করছেন, হঠাৎ এই সময়ে নূপুরধ্বনি শুনে শ্রীকৃষ্ণ চমকিত ভাবে তাকিয়ে দেখলেন সামনেদিকে শ্রীরাধাচন্দ্রিকার উদয় হয়েছে।*
*🍀কবিবর শ্রীরামরায় শ্রীকৃষ্ণ-কাছে শ্রীরাধার শুভাগমন যেরকম ভাবে বর্ণন করেছেন,সে বর্ণনাচাতুর্য্য অতীব রসময় ও প্রত্যক্ষদৃষ্টবৎ, যথা=*
*রাধা মাধববিহারা।*
*হরিমুপগচ্ছতি-, মন্থরপদগতি-*
*লঘুলঘুতরলিতহারা।।*
*শঙ্কিতলজ্জিত, রসভরচঞ্চল,*
*মধুরদৃগন্ত-লবেন।*
*মধুমথনং প্রতি, সমুপহরন্তী,*
*কুবলয়দামরসেন।।*
*🌻সুরসিক প্রেমিকভক্ত পাঠক উল্লিখিত চার ছত্রের প্রতি একবার ভক্তিভরে দৃষ্টিপাত করুন, দেখতে পাবেন শ্রীরামরায় মহাশয় অতি কম কথায় প্রেমতত্ত্বের কি এক গূঢ়গম্ভীর ব্যাপার এই চার ছত্রে স্পষ্টভাবে প্রকটন করেছেন।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌻🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৬)শ্রীরামানন্দ রায়,বিশাখা*
*শ্রীরামানন্দ রায়ের গ্রন্থ*
***********************
*☘শ্রীরাধিকার প্রবেশমাত্রই বিদূষক ও মদনিকা সেখান থেকে বেড়িয়ে গেলেন।এখানেই চতুর্থ অঙ্কের যবনিকা পতন হল।*
*🍀পঞ্চম অঙ্কে শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের সম্ভোগকেলি এবং তারপরে অরিষ্টাসুর বধের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। এই পাঁচ অঙ্কেই শ্রীজগন্নাথ বল্লভ নাটকের পরিসমাপ্তি হয়েছে।এই সঙ্গীত নাটক হতে শ্রীকৃষ্ণ ও বিদূষকের হাস্যরসময় উক্তি-প্রত্যক্তির একটু নিদর্শন উদ্ধৃত করে দেওয়া যাচ্ছে, যথা ঃ---*
*কৃষ্ণ বলছেন=সখে!এই কোকিল গুলির ডাক কি সুমধুর।*
*বিদূষক বলছেন=বন্ধু! তোমার বংশীধ্বনি কোকিল অপেক্ষাও মধুর।তদপেক্ষা আবার আমার কন্ঠরব আরও মধুর। তুমি বংশী ধ্বনি কর,আর আমি কন্ঠরব করি*।
*অমনি কৃষ্ণ বাঁশী বাজালেন।তখন বিদূষক বললেন,"সখে! তোমার বংশীধ্বনি তো শুনলাম। এখন একবার আমার কন্ঠরব শুন"।এই বলে বিদূষক বিকট চিৎকার করতে লাগলেন এবং বৃক্ষের দিকে তাকিয়ে দেখে বললেন--,সখে দেখেছ! কোকিলগুলি তোমার বংশীধ্বনি শুনে নীরব ছিল কিন্তু আমার কন্ঠস্বর শুনে কে কোথায় পালিয়ে গিয়েছে।বংশীধ্বনির আর গর্বের কারণ নাই। বিদূষকের কথাগুলি সবসময়ই এইরকম প্রতিভাময়ী ও হাস্যরসময়ী।ফলে এই সঙ্গীত নাটকটি আকারে ছোট হলেও মধুরাদি নবরসের অফুরন্ত উৎস।*
*🌻আমরা এ পর্যন্ত কেবল গীতিপদ্যই উদ্ধৃত (কোনো উক্তি বা রচনা থেকে গৃহীত)করে তার সম্বন্ধে দুই একটি কথা বলেছি।গদ্যে কথোপকথন সম্বন্ধে কিছুই বলিনি।এই নাটকের অনেকস্থলেই প্রাকৃত ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে।বিদূষক সর্বত্রই প্রাকৃতভাষী।শ্রীরাধা,মদনিকা ও মাধবীর কথোপকথন সংস্কৃত ভাষায় লিখিত।শ্রীরাধা ক্কচিৎ ক্কচিৎ (কোথাও কখনও ) প্রাকৃত ভাষাতেও কথা বলেছেন। সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষায় শ্রীরামরায় যে যথেষ্ট পান্ডিত্যলাভ করেছিলেন, এই গ্রন্থে লিখিত সংস্কৃত ও প্রাকৃতভাষা দেখলেই,তার যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়।যেখানে যাঁর মুখে যখন যেরকম ভাষা ব্যবহৃত হওয়া উচিৎ, সর্বত্রই সেইরকম স্বাভাবিকতা সংরক্ষিত হয়েছে --,কোথাও বা বহুল সমাসনিবদ্ধ সুদীর্ঘ পদচ্ছটায় প্রাকৃতিক বৈভব বর্ণনায় বক্তার অশেষ পান্ডিত্য প্রকাশিত হয়েছে, আবার কোথাও বা অতি সংক্ষেপে সরস সরল ভাষায় সরলভাবে হৃদয়ের স্বাভাবিক কথা প্রকটিত হয়েছে।প্রাকৃত ভাষা স্বভাবমধুরা, সেটি মধুর কবি শ্রীরামরায়ের হাতে মধুরতর হয়ে উঠেছে।*
*☘শ্রীজগন্নাথবল্লভ নাটকের রসমাধুর্য্য শ্রীলোচনদাস বাংলা ভাষায় পদ্য অনুবাদেও সুমধুর ও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।শ্রীজগন্নাথ বল্লভ নাটক যে বঙ্গবাসী ভক্তগণের পরম আদরের বস্তু ছিল, শ্রীলোচনদাসের পদ্য অনুবাদ দ্বারাই তা সপ্রমাণ হয়।স্বয়ং মহাপ্রভু যে নাট্যগীতির রসাস্বাদনে বিভোর থাকতেন, সেই নাট্যগীতি যে ভক্তগণের অতীব আরাধ্য বস্তুর মধ্যে পরিগণিত হবে এতে আর বৈচিত্র্য কি?আমরা এখানে এই নাটক আলোচনার উপসংহার(গ্রন্থের শেষ ) করলাম।*
*🍀শ্রীরামরায়ের কৃত (রচিত)অন্য কোন গ্রন্থ আছেন কি না, আমরা এখনও তার সন্ধান পাইনি।শ্রীরামরায় রচিত কতিপয় খন্ড সংস্কৃত পদ্য দেখতে পাওয়া যায়। তারমধ্য হতে নিচে একটি পদ্য উদ্ধৃত করা যাচ্ছে। শ্রীরূপ সংগৃহীত পদ্যবলীতে এবং কবি কর্ণপুর রচিত শ্রীচৈতন্যচরিতমহাকাব্য এই পদ্যটি শ্রীরামরায় রচিত বলে লিখিত আছে।শ্রীচরিতামৃতেও এই শ্লোকটি উদ্ধৃত হয়েছে,যথা=*
*নানোপচারকৃতপূজনমার্ত্তবন্ধোঃ,*
*প্রেম্নৈব ভক্তহৃদয়ং সুখবিদ্রুতং স্যাৎ।*
*যাবদ্ ক্ষদন্তি জঠরে জরঠা পিপাসা,*
*তাবৎ সুখায় ভবতো ননু ভক্ষ্যপেয়।।*
*🌹এই কবিতাটির পাঠ পদচ্ছেদ বৈচিত্রী অনুসারে ব্যাখ্যার যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।*
*🌻কেবল প্রথম দুই পংক্তিতেই বহুল অর্থ প্রকাশিত হয়েছে। আমরা পদচ্ছেদ করে কয়েক প্রকার ব্যাখ্যার মর্ম প্রকাশ করছি।*
*(১)নানোপচারকৃতপূজনম্--(১) উপচারকৃতপূজনং "নানা" অস্তি। অর্থ্যাৎ উপচার দ্বারা পূজন অনেক প্রকার=রাজোপচার,অষ্টাদশোপচার, ষোড়শপচার,পঞ্চোপচার ইত্যাদি। (২) অমরকোষে নানাশব্দের আরও অর্থ দেখতে পাওয়া যায়, যথা--, পৃথগ্ বিনান্তরেনর্ত্তেহিরুঙ্ নানা চ বর্জ্জনে। "নানা" শব্দে বিনা"অর্থ নিলে উপচারকৃতপূজনং বিনাপি" অর্থ্যাৎ উপচারকৃত পূজন বিনাও এইরকম অর্থে ব্যাখ্যা হতে পারে।ব্যাকরণে বিধান আছে,"নানা" যোগে দ্বিতীয়া হয়।*
*(২)নানোপচারকৃতপূজন+মা+আর্ত্তবন্ধোঃ ----নানোপচারৈঃ কৃতং পূজনং যয়া সা চাসৌ মা চেতি নানোপচিরকৃতমা সা চ আর্ত্তাশ্চ তেষাং বন্ধুঃ তস্য। মা লক্ষ্মী ঃ-- ইন্দিরা লোকমাতা মা ইতি কোষ প্রমাণম্।*
*অর্থ্যাৎ নানা উপচার দ্বারা পূজা হয় যারদ্বারা এমন যে মা (লক্ষ্মী)তাঁর এবং আর্ত্তের (দুঃখিতের) বন্ধু শ্রীকৃষ্ণের।এইরকমেও ব্যাখ্যা হতে পারে।*
*(৩)অপিচ (আরও) নানোপচারৈঃ কৃতং পূজনং যেন, অর্থ্যাৎ নানা উপচার সহ যে হৃদয় শ্রীকৃষ্ণের পূজা করেন, তাদৃশ(সেইরকম) হৃদয়ও কেবল প্রেমেই সুখবিদ্রুত(সুখে গলিত) হয়।*
*(১)আর্ত্তবন্ধোঃ ---,আর্ত্তবন্ধুর।আবার "আর্ত্তবন্ধো" এইরকম সম্বোধন পাঠও দেখতে পাওয়া যায়।তার জায়গায় হে "আর্ত্তবন্ধু শ্রীকৃষ্ণ" এইরকম বুঝতে হবে।*
*(২)আবার "আর্ত্তবন্ধোঃ" পদটি "নানাপোপচারকৃতপূজনম্" এই পদের সঙ্গে সম্বন্ধ হতে পারে ; আবার "হৃদয়" শব্দের সঙ্গেও সম্বন্ধ হতে পারে।*
*ভক্ত-হৃদয়ম্----ভক্তস্য হৃদয়ম্, ভক্ত-হৃদয়ম্। আবার ভক্ত পদটি সম্বোধন অর্থে ব্যহৃত হতে পারে।*
*নানা পূজা উপচার হতে পারে, যেমন রোজোপচার, অষ্টাদশোপচার, অথবা ষোড়শ উপচার, দশ উপচারে এবং পঞ্চ উপচারে। কিন্তু ক্ষুধাতৃষ্ণা দ্বারাই যেন খাদ্যদ্রব্য সুখকর হয়, সেইরকম কেবল প্রেমদ্বারাই ভক্তহৃদয় সুখ বিদ্রুত হয়ে থাকে।প্রেমছাড়া কেবল বাহ্য উপচার সেবা-সুখের হেতু নহে।এই জন্যই অন্যান্য উপচারাদির ব্যবচ্ছেদকতার জন্য "প্রেম্নৈব" পদে "এব" শব্দ প্রযুক্ত হয়েছে।কেবল প্রেমই সেবাসুখের হেতু।প্রেমদ্বারা হৃদয় আর্দ্রীভূত হয়।কেননা মমত্বাতিশয়যুক্ত ঘনভাবই প্রেম।মমত্বাতিশয় হলেই চিত্ত আর্দ্র (সজল) হয়।*
*সুবিদ্রুতম্---সুখপরিপ্লুত, সুখে দ্রবীভূত। পিপাসার্ত্তের শুকনোকন্ঠ যেমন জলপানে আর্দ্র(সিক্ত বা ভেজা) হয়, উক্তহৃদয়ও সেই প্রকার প্রেমদ্বারা আর্দ্র হয়ে থাকে। দৃষ্টান্ত -সাম্যের জন্য বিদ্রুত শব্দের প্রয়োগ উপযুক্তই বটে।*
*🌹দ্রু ধাতু গতি ও প্রাপ্তি অর্থেও প্রযুক্ত হয়ে থাকে।সেরকম অর্থে সুখবিদ্রুত অর্থ=সুখপ্রাপ্ত।*
*ফলে ভক্তহৃদয়ে সুখুদয়ের প্রেমই একমাত্র হেতু।শিন্ডিল্যসূত্রভাষ্যে ব্রহ্ম পুরাণের একটি পদ্য উদ্ধৃত হয়েছে, সেটি এই=*
*🍀গঙ্গাদিতীর্থে মৎস্যাদি থাকে,দেবলয়েও পক্ষীগণ থাকে, কিন্তু তাতে মৎস্যাদির গঙ্গাবাস ফল হয় না, পাখীদেরও দেবালয়বাসের ফল হয় না। কেননা তারা তদ্ভাববিবর্জিত। শ্রীকৃষ্ণ পূজনের ফল,শ্রীকৃষ্ণের পরতোষ, তার ফল প্রেম। প্রেমই সুখ। ভক্ত কবি তুলসীদাসের "নিৎ না হনেসে হরি মিলে তো জল জন্তু হোই" ইত্যাদি এবং "মীরা কহে বিনা প্রেমসে না মিলে নন্দলালা" ইত্যাদি পদটি এই শ্লোকেরই বিবৃতি।*
*জরঠ=কর্কশ,পান্ডু,জরা ও কঠিন ইতি মেদিনী।কর্কশ শব্দের অর্থ কূট দৃঢ়,খরস্পর্শ,সাহসিক ইতি শব্দরত্নাকর।*
*শ্রীরামরায়ের এই পদ্যটির ব্যাখ্যা আরও বহো রকমে হতে পারে। কিন্তু দৃষ্টান্ত দ্বারা স্পষ্টভাবে এটিই ব্যক্ত হয়েছে যে প্রেমই ভগবৎসুখ-প্রাপ্তির হেতু।যদি ক্ষুধাতৃষ্ণা না থাকে তবে নানান প্রকার খাদ্যের উপচার ও সুস্বাদু পেয় প্রভৃতি থাকলেই বা কি,আর না থাকলেই বা কি? ক্ষুধাতৃষ্ণা থাকলেই এইসব সুখের হেতু হয় ; সেইরকম প্রেম না থাকলে নানাপোচার পূজনও সুখকর না।*
*ক্রমাগত*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌻🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৭)শ্রীরামানন্দ রায়, বিশাখা*
*শ্রীরায় রামানন্দের গ্রন্থ*
***********************
*🍀পদকল্পতরু গ্রন্থে রামানন্দ রায়ের ভণিতায় অনেকগুলো পদ দেখা যায়।শ্রীরামরায় ও রামানন্দ বসু এই দুই মহোদয়ই রামানন্দ নামে অভিহিত।তবে ইনি রায়,আর তিনি বসু।শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণী নামক গ্রন্থের সূচীতে পদকর্তাদের মধ্যে রামানন্দ রায় ও রামানন্দ বসু এই উভয়ের নাম ধৃত হয়েছে।শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণী সংগ্রাহক গোলোকগত ঁজগদ্বন্ধু ভদ্র মহাশয় কি ভাবে এই উভয়ের পদাবলীর পার্থক্য নির্ণয় করেছেন,তা বুঝতে পারলাম না।তবে একটা পার্থক্য এই দেখা যায় যে,রামানন্দ বসুর পদের ভণিতায় নামের আগে বা পরে "বসু" শব্দের ব্যবহার আছে।তাহলে শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণীতে রামানন্দ বসুর শ্রীগৌরাঙ্গ সম্বন্ধীয় পদ কেবল দুইটি মাত্র পেয়েছি। কেবল "বসু" শব্দ ছাড়া এই উভয়ের পদের পার্থক্যের আর কোন উপায় শ্রীগৌরপদতরঙ্গীণীতে অবলম্বিত হয়নি।"রামানন্দ"ভণিতায় শ্রীগৌরাঙ্গ সম্বন্ধীয় পদ এই গ্রন্থে অনেক দেখা হল।এর সবগুলিই শ্রীরামানন্দ রায় রচিত কিনা,তার সম্বন্ধে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণীতে যে দুইটি পদ রায় রামানন্দের বলে নির্দেশ করা হয়েছে সেই দুইটি পদ নীলাচলবাসী রামানন্দ রায় কবিরচিত কিংবা বর্দ্ধমানের কুলীনগ্রামবাসী রামানন্দ বসু রচিত,তার সম্বন্ধে পাঠক মহোদয়গণের যেরকম ধারণা হয়,সেইরকমই বিশ্বাস করতে পারেন।এ সম্বন্ধে আমরা দৃঢ়ভাবে কোন কথা বলতে সাহসী নহি।ফলতঃ পদে "বসু" উপাধির উল্লেখ না থাকলেই যে "রায় রামানন্দ রচিত" বলে বুঝতে হবে, আমরা এর কোন বিশিষ্ট যুক্তি পেলাম না। রামানন্দ রায় উৎকলবাসী ছিলেন। বাংলা ভাষায় পদাবলী লিখতে তিনি অভ্যাস করেছিলেন কিনা,তা আমরা জানবার জন্য চেষ্টা করেও কৃতকার্য্য হতে পারিনি।এইসব পদের মধ্যে অধিকাংশ পদের ভাষায় বর্দ্ধমান অঞ্চলের বাংলা ভাষা।শ্রীরামানন্দ রায় মহাশয়ের "পহিলহি রাগ নয়ন ভঙ্গ্যা ভেল" সুপ্রসিদ্ধ পদটি ব্রজবুলিতে লিখিত।এই সময়ে বঙ্গে ও উৎকলে ব্রজবুলিতে পদলেখার যথেষ্ট প্রচলিত ছিল। সুতরাং শ্রীরায় মহাশয় উৎকলের ভাষার পরিবর্তে ব্রজবুলিতে পদ লিখবেন, এটি বিস্ময়ের বিষয় নহে। কিন্তু রামানন্দ রায় বর্দ্ধমান অঞ্চলের বাংলা ভাষায় পদ রচনা করতেন কিনা,এ বিষয়ে কোন কোন পাঠকের মনে সন্দেহ হতে পারে।বসু রামানন্দ শ্রীগৌরাঙ্গের প্রিয়ভক্ত।তিনি বাঙ্গালী, এবং বর্দ্ধমান অঞ্চলবাসী।"রামানন্দ"নাম ভণিতায় শ্রীগৌরাঙ্গ সম্বন্ধীয় যেসব বাংলা পদ দেখা যায়,সেইসব পদের রচয়িতা যে বসু রামানন্দ নহেন, তারই বা প্রমাণ কি?তিনি হয়ত দুই একটি পদেই বসু রামানন্দ ভণিতা লিখতেন, বাকী পদগুলিতে "বসু" ভণিতা প্রদান করেননি। এইরকম অনুমান করার বিরুদ্ধেও কোন যুক্তি দেখতে পাই না।রামরায় মহাশয়ের প্রণীত জগন্নাথবল্লভ নাটকের সংস্কৃত পদাবলীতে কোথাও বা "রামানন্দ রায়" আবার কোথাও বা কেবল "রামানন্দ" ভণিতা দেখা যায়। সুতরাং কোন পদের ভণিতায় "বসু" শব্দ না থাকলেই যে সেটি রামানন্দ বসু রচিত নহে,এমন মনে করা যেতে পারে না।*
*🍀"নীলমণি চন্দ্রোদয় " গ্রন্থের প্রণেতা মনোহর দাস নিজেকে "রায় রামানন্দের বংশ বলে পরিচিত করেছেন" এবং এই গ্রন্থে বৎস পরিচয় স্থলে লিখেছেন--,ইঁনাদের পূর্বপুরুষগণ উৎকলবাসী ছিলেন।মনোহর দাসের ভাই কার্য্যোপলক্ষ্যে বর্দ্ধমানে এসে বসবাস করেন এবং মনোহরকেও বর্দ্ধমানে নিয়ে চলে আসেন। উভয়ে এইখানেই বসবাস করেন। "দিনমণিচন্দ্রোদয়" লেখকের সঙ্গে রায় রামানন্দের প্রকৃত পক্ষে কোন সম্বন্ধ ছিল কিনা, অথবা এটি কেবল এই গ্রন্থ-রচয়িতার বিশিষ্ট কুলোদ্ভবতা পরিচয়ের জন্য রুচিসঙ্গত একরকম প্রয়াস বিশেষ।*
*তার সম্বন্ধে আমাদের কোন বক্তব্য নেই।মৃত্যুঞ্জয় তর্কালঙ্কার ও গোপাল উড়ে উৎকলবাসী হয়েও বাংলা সাহিত্যে প্রসিদ্ধি লাভ করে গিয়েছেন। সুতরাং ভাষার প্রশ্ন তুলে শ্রীরামরায় মহাশয়কে এইসব পদের রচয়িতার অধিকারিত্ব হতে বিচ্যুত করা ও যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। শ্রীরামরায় মহাশয় আমাদের ভক্তির সামগ্রী। কিন্তু তাই বলে রামানন্দ বসুকে বঞ্চিত করা রামরায়কে বিনা প্রমাণে কতিপয় গৌরপদাবলীর রচয়িতা বলে স্থির করা যুক্তিসঙ্গত নহে। শ্রীগৌরপদাবলীতে "রামানন্দ" ভণিতায় যেসব পদ আছে, সেইসব পদ রামানন্দ রায় বা রামানন্দ বসু অথবা অন্য কোন রামানন্দের রচিত তা নির্ণয় করা সুকঠিন। সুতরাং অজ্ঞাতস্থলে পরে বা একের কৃতিত্ব অন্যের বলে প্রকাশ করে ন্যায় ও সত্যের মর্য্যাদা লঙ্ঘন করি, এই ভয়ে আমরা শ্রীগৌরপদাবলী-রচয়িতাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিলেন। কিন্তু শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণীকারের সূচী অনুসারে আমরা ইঁনার রচিত দুইটি মাত্র পদ দেখতে পাই।ইঁনার রচিত পদের এত অল্পতা সম্ভবপর নহে।এ সম্বন্ধে বেশী বলা মনে হয় নিষ্প্রয়োজন।*
*🙏জয় নিতাই গৌর সীতানাথ প্রেমানন্দে হরি হরিবল, ভুল ভ্রান্তি, বানান ক্ষমা করবেন🙏*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*🦚(১৬৮) শ্রীরায় রামানন্দ পরিশিষ্ট🦚*
*অন্যান্য গ্রন্থের কিছু কথা*
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
*🍀শ্রীরামানন্দ রায় সম্বন্ধে এই গ্রন্থে যা লিখিত হয়েছে,শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতই তার প্রধান অবলম্বন।অন্যান্য কোন কোন গ্রন্থ হতে যতটুকু প্রয়োজনীয় বলে বোধ হয়েছে,সেইটুকুই নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাছাড়া আরও একটি গ্রন্থে রায় মহাশয়ের পরিচয় এবং কিছু কিছু কথা লেখা হয়েছে। শ্রীরামরায় সম্বন্ধে অন্যান্য গ্রন্থে যা কিছু লেখে হয়েছে,এক জায়গায় সেইগুলি সংগ্রহ করে রাখলে যাঁরা ভবিষ্যতে এই রসময় চরিতসুধা প্রণয়ন করবেন,উপাদান সংগ্রহ ব্যাপার তাঁদের পক্ষে সহজ হবে এইরকম মনে করে আমরা অপ্রামাণিক ও প্রামাণিক,আধুনিক ও প্রাচীন যে কোন গ্রন্থে শ্রীরামানন্দ রায়ের কথা পেয়েছি, তারমধ্যে এই গ্রন্থে যে সব পুস্তকের অভিপ্রায় গৃহীত হয় নাই এই পরিশিষ্টে সেইসব গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত মর্ম্ম উল্লেখ করা যাচ্ছে।*
*🍀(১)শ্রীলোচনদাসের শ্রীচৈতন্য মঙ্গল পাঠে জানা যায়,শ্রীরায় মহাশয় যখন আপন নির্জন গৃহে বসে নিত্য কৃষ্ণপূজা করছিলেন,সেই সময়ে তিনি শ্রীকৃষ্ণধ্যানে অচিন্ত্যপূর্ব (আগে যা চিন্তা করা হয়নি এমন) ও অশ্রুতপূর্ব (পূর্বে শোনা যায়নি এমন) শ্রীগৌরাঙ্গরূপ দর্শন করেন,তিনি পুনশ্চ শ্রীকৃষ্ণধ্যানে রত হন, আবার সেই কষিত (কষ্টিপাথরে পরীক্ষিত) কনককান্তি বিনিন্দিত শ্রীগৌরাঙ্গমূর্তি তাঁর হৃদয়ে আবির্ভূত হন। তিনি বিস্মিত হয়ে আবার তাঁর নিত্যধ্যেয় (প্রত্যেকদিন যে চিন্তা নিয়ে ধ্যান করেন) শ্রীকৃষ্ণধ্যানে চিত্ত দৃঢ় করতে রত হলেন, কিন্তু বড়ই আশ্চর্য্যের সেই নিরুদ্ধ (অবরুদ্ধ)চিত্তে আবার সেই মহাবলবান্ শ্রীগৌরাঙ্গসুন্দর প্রোজ্জ্বলরূপে উদ্ভাসিত হলেন। রামরায় স্তম্ভিত ও বিস্মিত হয়ে নয়ন উন্মীলিত করলেন, তিনি দেখতে পেলেন সেই ভুবনমোহন ধ্যানদৃষ্ট মহাপুরুষ স্বশরীরে তাঁর পুরোভাগে (সম্মুখে) বিরাজমান।সেই মহাপুরুষ প্রহরীগণের নিষেধ বাধা না মেনে ভক্তবাঞ্জা-কল্পতরু ভক্ত-হৃদ-বিহারী শ্রীশ্রীগৌরহরি হঠাৎই শ্রীরামরায়ের অন্তঃপুরে তাঁর নির্জন ধ্যানমন্দিরে পদার্পণ করে তাঁকে দেখা দিলেন। সাক্ষাৎ দর্শনের পূর্বে রামরায়ের ধ্যানের সময় তাঁর চিত্তে শ্রীগৌরাঙ্গরূপ প্রকাশিত,অদ্ভুত ও আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ।অর্থ্যাৎ কোন সময়ের জন্য বিন্দুমাত্রও চিন্তা করেননি।যাঁকে আমি কোনদিনই নাম শুনেনি, রূপ চিন্তা করিনি, তিনি স্বয়ং সম্মুখে বিরাজমান। চৈতন্যমঙ্গলে লেখা আছে মহাপ্রভু "কাঞ্চিনগরে" রামরায়ের সঙ্গে মিলিত হন।কাঞ্চিনগরটি গোদাবরী নদীতটবর্তী বলেই লোচনদাসের বর্ণনায় জানা যায়।শ্রীপাদ মুরারি গুপ্তের গ্রন্থ হতেই শ্রীলোচনদাস রামানন্দ-মিলন উক্ত অংশ গ্রহণ করেছেন।শ্রীমুরারি গুপ্ত মহাশয়ও কুঞ্চিনগরেই রামানন্দ মিলনের জায়গা নির্দেশ করেছেন।*
*🍀(২)ভজন নির্ণয় নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। শ্রীমদ্ বৃন্দাবনদাস ঠাকুর এই গ্রন্থের রচয়িতা বলিয়া লেখা হয়েছে। কিন্তু এই গ্রন্থখানি শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের পরে বিরচিত হয়েছে বলেই অনেকরই বিশ্বাস।এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় কর্তব্যে শ্রীরামরায়ের কথা আছে।সেটিতে সবিশেষ কোন নূতন তত্ত্ব নেই। এই গ্রন্থেও শ্রীরামরায়কে বিশাখা ও স্বরূপদামোদরকে ললিতা বলে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।এই গ্রন্থে একটি নূতন বিষয় আছে।ইনি লিখেছেন শ্রীপাদ মাধবেন্দ্রপুরীর শিষ্য রাঘবেন্দ্র পুরী, তাঁর শিষ্য শ্রীরামানন্দ রায়। যথা=*
*🌷মাধবপুরীর শিষ্য রাঘবেন্দ্রপুরী।*
*🌷তার শিষ্য রামানন্দ প্রেম-অধিকারী।।*
*🍀এই কথার পোষকতা অন্য কোন বিখ্যাত প্রামাণিক বৈষ্ণব গ্রন্থে দেখতে পাওয়া যায় না।*
*🌺(৩)জয়ানন্দ মিশ্রের চৈতন্যমঙ্গল নামক একটি গ্রন্থ পুরোনো গ্রন্থ নহে, প্রকাশিত হয়েছে।এতেও রামানন্দের উল্লেখ আছে। শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে বর্ণিত শ্রীরামরায় সমুজ্জ্বল অলৌকিক দেবমূর্তিতে উদ্ভাসিত হয়েছেন, এমন কি তিনি স্বয়ং মহাপ্রভু্রও উপদেষ্টৃরূপে(উপদেশদাতারূপে) বর্ণিত হয়েছেন।জয়ানন্দ মিশ্র তাঁর চৈতন্যমঙ্গলে সেই রামানন্দের অতি শোচনীয় দুরবস্থা করে রেখেছেন,সেটির একটুকু নিদর্শন এখানে উদ্ধৃত করা যাচ্ছে। এই গ্রন্থে পুরীতেই রামানন্দ-মিলনের স্থান নির্দেশ করা হয়েছে।রাজা রামানন্দ রায়ের সোনার সিংহাসন,হাতী,ঘোড়া,পতাকা,পরিচ্ছদ, বাদ্যভান্ড ও রাজকীয় ঠাটের বিপুল বর্ণনা এই গ্রন্থে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এই গ্রন্থে শ্রীপাদ রামরায়ের আধ্যাত্মিক চরিত্র একেবারেই বিকৃত করা হয়েছে।*
*🌷গন্ধে আমোদিত দশ দিক সিন্ধুতটে।*
*🌷রায় রামানন্দ আইলা প্রভুর নিকটে।।*
*🌷তা দেখিয়া হাসিল চৈতন্য দয়ানিধি।*
*🌷রায় রামানন্দে এত বিড়ম্বিল বিধি।।*
*🌷হিঙ্গুলিয়া ত্রিশূলে বসিতে কত সুখ।*
*🌷কৃষ্ণ সঙ্কীর্তনে নৃত্যে হৈয়াছে বৈমুখ।।*
☆ ☆ ☆ ☆ ☆
*🌷শূকর কুটীরে তুমি হৈয়াছ বিভোর।*
*🌷হেন দেহে না পাইলে বৈষ্ণবের ক্রোড়।।*
*🌷হেন চক্ষে না দেখিলে শ্রীজগন্নাথ।*
*🌷জগন্নাথের সেবায় না করিলে জোড়হাথ।।*
*🍀এইরকম বহু তিরস্কার করে মহাপ্রভু শ্রীপাদ রায় রামানন্দকে ধর্মোপদেশ প্রদান করেন।এই গ্রন্থটি অবশ্য বৈষ্ণবসমাজ অবিদিত ও অনাদৃত। এতে বহুল অবাস্তব সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধ ও ভক্তিচিত্ত কষ্টকর অলীক কথার উল্লেখ আছে।*
*🍀(৪) রস-তত্ত্ব-সার নামে বৈষ্ণব সম্প্রদায় বিশেষের একটি হাতে লেখা গ্রন্থ আছে।সেটি অবশ্য অমুদ্রিত।লেখক এই গ্রন্থটিকে স্বরূপদামোদরের কড়চা বলে অভিহিত করেছেন।গ্রন্থকার নানাভাবে এই গ্রন্থের পরিচয় দিয়েছেন-- কোথাও লিখেছেন,এই গ্রন্থটি শ্রীপাদ স্বরূপদামোদরের কড়চা, আবার কোথাও লিখেছেন, মূল কড়চা সংস্কৃতে বিরচিত, এই গ্রন্থটি তদবলম্বনে লিখিত।যাইহোক, এই গ্রন্থটি বিশুদ্ধ বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের গ্রন্থ নহে।শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের অনেক পরে এই গ্রন্থখানি রচিত হয়েছে।এতে রায় রামানন্দের সঙ্গে মহাপ্রভুর কথোপকথন আছে। সেটি শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের বিকৃত অনুবাদ ছাড়া আর কিছুই নাই।এতে কোন নূতন কথা নাই, কিন্তু বহু জায়গায় সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধ কথাও আছে।যদিও এই গ্রন্থের রামানন্দ-মিলন-পরিচ্ছেদে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের পয়ারের প্রতিধ্বনিমাত্র, কিন্তু এর জায়গায় জায়গায় মূল গ্রন্থের কথা,ভাব ও মহান উদ্দেশ্য শোচনীয়ভাবে বিকৃত করা হয়েছে।সম্প্রদায় বিশেষের গ্রন্থকারগণ মহাপ্রভুর,তাঁর পারিষদগণের এবং প্রধান প্রধান ভক্তগণের চরিত্র ও ভজনমুদ্রাদি যিরকম বিকৃত ও দোষাবহরূপে বর্ণিত করেছেন,এ গ্রন্থেও সেইসব ভাব যথেষ্ট পরিমাণেই আছে।*
*🌻এছাড়াও মুরলী বিলাস ও গোবিন্দদাসের কড়চা প্রভৃতি গ্রন্থেও রামানন্দের শিক্ষাদির উল্লেখ আছে। কিন্তু এইসব গ্রন্থ অত্যন্ত আধুনিক এবং তাদের বর্ণনা শ্রীচরিতামৃতেরই ক্ষীণ প্রতিধ্বনিমাত্র।*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৬৯) শ্রীরামানন্দ রায়, পরিশিষ্ট (২)*
*রামানন্দ রায় কি শূদ্র বর্ণোদ্ভব?*
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*🍀শ্রীচৈতন্যচরীতামৃতের বর্ণনায় রামানন্দ রায়কে শূদ্র বলেই জানা যায়। কিন্তু রায় মহাশয় শূদ্র ছিলেন কি না এটি বিচার্য্য।রামরায় উড়িষ্যার রাজা বলেই খ্যাত ছিলেন। রায় শব্দটি ক্ষত্রিয় বর্ণেই ব্যবহৃত হত।বিদ্যানগরের বুক্ক রাজবংশ ক্ষত্রিয় ছিলেন।ইঁনাদের যে বংশাবলী আছে তা "রায়বংশাবলী" নামে খ্যাত। উড়িষ্যার রাজগণ ক্ষত্রিয়।প্রতাপরুদ্রও ক্ষত্রিয় ছিলেন।বর্তমান সময়েও উড়িষ্যায় যে সব প্রাচীন রাজবংশ আছেন,তাঁদের মধ্যে প্রায় সকলেই ক্ষত্রিয়।রায় ভবানন্দ শূদ্র বা করণ ছিলেন,এমন মনে হয় না।শ্রীলোচনদাস কৃত শ্রীচৈতন্যমঙ্গল পাঠে জানা যায়,রায় ভবানন্দও রাজা ছিলেন এই গ্রন্থে রামানন্দকে কুঞ্চিনগরের রাজপুত্র বলা হয়েছে,যথা=*
*🌷প্রভু কহে রাজপুত্রে জানাহ বচন।*
*🍀এই গ্রন্থ পাঠে আরও জানা যায় রামানন্দের একাধিক রাণী ছিলেন, যথা=*
*🌷রাণীগণ দেখে কান্দে আনন্দিত মনে।*
*🌷সন্ন্যাসীর বেশে ফিরে রাধার রমণে।।*
*🍀বিদ্যানগরের রাজবংশের অনেক রাজারই একাধিক রাণী ছিলেন।এই প্রথা সেইসময়ে রাজবংশের সম্মানরূপে গণ্য হ'ত।*
*🍀শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতেও রামানন্দ রায়কে রাজাখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে।ক্ষত্রিয়োচিত নানান কাজের ভার যে তাঁর উপরে অর্পিত ছিল, যুদ্ধাদি ব্যাপারের জন্য যে অগণ্য সৈন্য,হাতী,ঘোড়া,ও নানান যুদ্ধসজ্জা তাঁর পরিচালনায় নিযুক্ত থাকত, সেইসব সম্বন্ধে যথেষ্ট প্রমাণ উক্ত গ্রন্থে দেখতে পাওয়া যায়।সেইসব বিবরণ পাঠে স্পষ্টভাবেই মনে হয় রাজা শ্রীরামানন্দ রায় ক্ষত্রিয় ছিলেন। কিন্তু শ্রীচরিতামৃতে একাধিক জায়গায় তাঁকে শূদ্র বলেই অভিহিত করা হয়েছে।*
*🍀অনেকেই মনে করেন এই সময়ে বাঙ্গালীরা ব্রাহ্মণ ও শূদ্র ছাড়া অন্য কোন বর্ণের খবর রাখতেন না।সুবিখ্যাত বাচস্পতি মিশ্রেরও এইরকম ধারণা ছিল।সুপ্রসিদ্ধ স্মৃতি-নিবন্ধকার রঘুনন্দনের শুদ্ধিতত্ত্বে স্পষ্টভাবেই লিখিত আছে,=*
*🌷যুগে জঘন্যে দ্বে জাতী ব্রাহ্মণঃ শূদ্র এব তে।*
*🍀এমন কি বৈদ্যপন্ডিত ভরত মল্লিক স্বকৃত "চন্দ্রপ্রভা" নামে বৈদ্যকুল পঞ্জিকাতেও লিখেছেন--,*
*🌷এবমম্বষ্ঠাদীনামপি কলৌ শূদ্রত্বমিতি স্ব স্ব গ্রন্থেষু,*
*🌷বাচস্পতি মিশ্রাদিভি স্মার্ত্তভট্টাচার্য্যেণাপ্যুক্তম্।*
*🍀ফলে এই সময়ে এ দেশবাসীগণের ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যবর্ণের অস্তিত্ব ধারণা এইরকম বিলুপ্ত হয়েছিল। সুতরাং এটি অসম্ভব নহে যে শ্রীপাদ কৃষ্ণদাস কবিরাজ মহোদয়ও এই সুপ্রচলিত ধারণার বশবর্তী হয়ে রায় রামানন্দকেও শূদ্র বলেই অভিহিত করেছেন।রায় মহাশয় পরম ভক্ত ছিলেন। কিন্তু তবুও তিনি নিজ গ্রন্থ জগন্নাথ বল্লভ নাটকে নিজের নামের পরে শূদ্রত্বব্যঞ্জক দাস উপাধি সংযোজন করেননি।উক্ত গ্রন্থে গ্রন্থকারের নিজ পরিচয় স্থলে এবং গানগুলির ভণিতায় রায় উপাধিই দেখা যায়।*
*🍀দাক্ষিণাত্যের ক্ষত্রিয় নৃপতিগণের রায় উপাধি ঐতিহাসিক সত্য।সম্ভবতঃ ভবানন্দ রায়ের পূর্ব পুরুষ দাক্ষিণাত্যে হতেই উড়িষ্যায় আগমন করেন।রায় রামানন্দ বিজয়নগরের সুবিখ্যাত ক্ষত্রিয় রায় বংশসম্ভূত বলেই আমাদের বিশ্বাস।বিজয়নগরের রায় বংশ অতি প্রাচীন।ধনে,মনে,কুল-গৌরবে,বিদ্যা, বুদ্ধি ও যশঃ, সৌরভে ইঁনারা বহুকাল নিজ বংশের গৌরব রক্ষা করেন।সুপ্রসিদ্ধ রায় রামানন্দ যে এই প্রাচীন প্রখ্যাতনামা বংশের কুল-গৌরব এটিই যুক্তিযুক্ত অনুমান।*
*👑👑বিদ্যানগর সাম্রাজ্য👑👑*
*********************************
*🍀শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে লিখিত আছে মহারাজ প্রতাপরুদ্র শ্রীরামানন্দ রায় মহাশয়কে মহারাজ প্রতাপরুদ্র "রাজমহেন্দ্রীর" রাজপদে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ; যথা শ্রীচরিতামৃতে নবম পরিচ্ছেদে অন্ত্যলীলার নবমে মহারাজ প্রতাপরুদ্র বলেছিলেন=*
*🌷রাজমহেন্দ্রীর রাজা কৈনু রামরায়।*
*🌷যে খাইল,যেবা দিল,নাহি তার দায়।।*
*🍀এই রাজমহেন্দ্রী জায়গাটি এখনও বতর্মান।রাজমহেন্দ্রী গোদাবরী তটে অবস্থিতা। কিন্তু মহাপ্রভুর দক্ষিণযাত্রার সময়ে শ্রীপাদ সার্বভৌম ভট্টাচার্য্য বলে গিয়েছিলেন,*
*🌷রামানন্দ রায় আছে গোদাবরী তীরে।*
*🌷অধিকারী হয়েন তিঁহো বিদ্যানগরে।।*
*🙏শ্রীরামানন্দ রায় চরিত শেষ পরিশিষ্ট পর্ব আগামীকাল।*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
🆕 👉 ১৬১ হইতে ১৭০ পর্ব 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/09/ramananda161to170.html
*(১৭০) শ্রীরায় রামানন্দ,পরিশিষ্ট (৩)
👑👑বিদ্যানগর সাম্রাজ্য👑👑*
*রামানন্দ রায় আছে গোদাবরী তীরে।*
*অধিকারী হয়েন তিঁহো বিদ্যানগরে।।*
*🍀ফলে এই সময়ে বিদ্যানগর এক বিপুল সাম্রাজ্য ছিল।কুমারিকা অন্তরীপ হতে বঙ্গের সপ্তগ্রাম ত্রিবেণী পর্য্যন্ত এই বিশাল সাম্রাজ্যের সীমা নির্দ্ধারিত হত।আবদুল রজক নামক পারস্য রাজদূত বিদ্যানগর সাম্রাজ্যের এইরকম সীমা প্রত্যক্ষ করেছিলেন।তিনি বলেন বিদ্যানগরের উত্তর প্রান্ত হতে দক্ষিণ প্রান্ত তিন মাসের পথ।প্রতিদিন ২০ মাইল হিসাবে ভ্রমণ করলে তিনমাসে ১৮০০ মাইল পথ ভ্রমণ করা যায়।আবদুল রজকের কথা অতিরঞ্জন বলে মনে হয় না।বিদ্যানগরই এই বিশাল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।এই দাক্ষিণাত্যে তুঙ্গভদ্রা নদীর দক্ষিণতটবর্তী।দাক্ষিণাত্যের প্রাচীন ইতিহাসে বিদ্যানগর অতীব বিখ্যাত ও সমৃদ্ধশালী জায়গা।এর প্রাচীন নাম "বিজয়নগর "।প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব বিশ্বকোষ সম্পাদক সুহৃদবর শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু মহাশয় এই সুবিশাল সাম্রাজ্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণী বিশ্বকোষের জন্য লিখতে আমার উপরে ভার অর্পণ করেন,বিশ্বকোষের সেই প্রবন্ধ হতে বিদ্যানগর সমৃদ্ধি সম্বন্ধে পংক্তি নিচয় উদ্ধৃত হল=*
*👑বিদ্যারণ্য মাধবাচার্য্যের নামানুসারে প্রাচীন বিজয়নগর বিদ্যানগর নামে অভিহিত।মাধবাচার্য্য বিজয়নগরের রাজাদের গুরু রাজনীতিক উপদেষ্টা ও মন্ত্রী ছিলেন।বিজয়নগরের ধ্বংসাবিশেষের উপর মাধবাচার্য্য বিদ্যারণ্য সুবিপুল অভিনব নগর সংস্থাপিত করেন। তিনি এই বিপুল রাজধানীর সংস্থাপয়িত সুতরাং তদীয় উপাধি অনুসারে এই নগর "বিদ্যানগর" নামে অভিহিত হয়।সেই সময় হতেই এই বিশাল সাম্রাজ্যের আয়তন, অর্থ-গৌরব ও রাজবৈভব দিন দিন বাড়তে থাকে।এর বিশাল বৈভবের কথা শুনে পারস্য ও ইউরোপ প্রভৃতি জায়গার পর্য্যটকগণ এই মহানগর সাক্ষাৎ দেখবার জন্য আগমন করেন।বিদ্যানগরে সেইসময়ে বৈভব বাস্তবিকই বর্ণনাতীত।গগনভেদি গিরিমালার মত সুদৃঢ় দূর্গমালা, কবিকল্পিত ইন্দ্রপুরী বিনিন্দিত বিপুল বৈভবান্বিত বহুমূল্য ভোগবিলাস উপকরণ দ্রব্যাদি পরিপূর্ণ নিরুপম শোভাময় শত শত রাজপ্রাসাদ, নগরবক্ষঃ প্রবাহিণী বহুল জলপ্রবাহিকা,শত শত দেবমন্দির,অগণ্য শিক্ষার্থিসঙ্কুল বিদ্যালয় সব,মহামূল্য নানান দ্রব্য পরিপূর্ণ অগণ্য পণ্যবীথিকা, বিলাসিজনসেব্য সুরম্য প্রমোদ ভবন, চিরহরিৎ শোভাময় লতামন্ডপ, সুবিপুল পুষ্পোদ্যান, কোমল কমলকুসুম-কহ্লারপূর্ণ শত শত সরোবর,সৌধশ্রেণী মধ্যবর্তী সরল ও সুদীর্ঘ রাজপথ,বহুসংখ্যক সুবিশাল পান্থশালা,হস্তিশালা,অশ্বশালা,গ্রীষ্মাবাস,ফলোদ্যান,মন্ত্রভবন,সভামন্ডপ, ধর্ম্যাধিকরণ প্রভৃতি নাগরীয় বৈভবে এই সমস্তে বিদ্যানগর জগতের প্রধানতম নগররূপে পরিণত হয়েছিল। "কৃষ্ণদেব রায়লুর" সময়ে একশ চল্লিশ বর্গমাইল পরিমিত ভূখন্ডের উপর এই সুবিশাল নগর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।এর সর্বত্রই ঘন লোকবসতি দেখা গিয়েছিল।সুদূর দেশাগত বণিকমন্ডলী ও রাজপ্রতিনিধিগণ বিদ্যানগরে এসে নিজ নিজ কাজ পরিচালনা করতেন।সেনাবিভাগে অনবরত হাজার হাজার লোক নিযুক্ত থাকত।বিদ্যানগরের হাজার হাজার শিল্প এই সময়ে সমগ্র জগতে খ্যাতিলাভ করেছিল।স্থাপত্যবিদ্যা,কলাবিদ্যা,অস্ত্র নির্মাণ বিদ্যা,বহুপ্রকার শিল্পবিদ্যা,হাতী-ঘোড়া শিক্ষাদান বিদ্যা,সমরবিদ্যা,বিদ্যা, বেদাধ্যয়ন,যাজনিক শাস্ত্রাধ্যয়ন, প্রভৃতি প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার সবরকম উপাদান পূর্ণরূপে বিদ্যানগরে দেখা গিয়েছিল।*
*কৃষ্ণদেব রায়লুর রাজত্বকালে বিদ্যানগর অতুলনীয় সমৃদ্ধিতে পূর্ণ হয়ে উঠেছিল।তখন বিদ্যানগরে ১০০০০০ পদাতি,৩০০০০ অশ্বারোহী ও ৪০০০ গজারোহী সৈন্য নানান যুদ্ধ সম্ভারসহ কেবল রাজধানী সংরক্ষণ করার জন্য নিযুক্ত থাকত।রাজার দেহ রক্ষা করার জন্য ৬০০০ সুশিক্ষিত, সুসজ্জিত অশ্বারোহী সৈন্য সবসময়ই রাজার সঙ্গে থাকত।২০০০০ পালকী রাজকার্য্যের জন্য সবসময় নিযুক্ত থাকত।রাজার নিজ ব্যবহারের জন্য এক হাজার খুব বড় ও সুষ্পুষ্ট ঘোড়া সবসময়ই অশ্বশালায় থাকত। ঐতিহাসিক ও কতিপয় পর্য্যটক বিদ্যানগর সম্বন্ধে যা লিখে গিয়েছেন তা দেওয়া হল।*
*🌹চার পৃষ্ঠা ইংরেজিতে লেখা তা লিখিলাম না, 🙏শ্রীরামানন্দ রায় চরিত সংক্ষিপ্তাকারে এখানেই রইল, বানান,ভুল, ভ্রান্তি মার্জনা করবেন🙏*
*🙌 জয় জয় শ্রীরায় রামানন্দের জয়, জয় শ্রীমন্মহাপ্রভুর জয়, জয় জয় সকল ভক্তমন্ডলীর জয়।*
*🌻গ্রন্থে যেভাবে লেখক লিখেছিলেন তা হুবহু তুলে ধরলাম।*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖 👇꧂
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••*
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
*••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
*••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-
শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 👇👇🙏👇👇 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ ꧂ পদ - পদাবলী 🙏 গৌরচন্দ্রিকা 🙏 ব্যাখ্যা ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/krishna.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ সুধী ভক্তবৃন্দ যে লীলা অধ্যায়নের করতে চান নিম্নে লিংকের উপর ক্লিক করুন 👇👇👇 ✧═══════════•❁❀❁•═════...
শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শিবরাত্রি ব্রতকথা ꧂ শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓ শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓ শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_54.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ পুরাক...
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ꧂ https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *বিবেক বৈরাগ্য দিয়া দু'গলুই করিল।* *ধৈর্য্য তাহার উপর দাঁড়া করিল।।* *আসক্তির তক্তা আনি তাহাতে জুড়িল।* *লালসার পাতান লোহা তাহাতে গড়িল।।* *নববিধা ভক্তি দিয়া নয়টি গুড়া দিল।* *সরল সুবুদ্ধি দিয়া মাস্তুল গড়িল।।* *মন রূপী পাল তাহে উড়াইয়া দিল। *সাধুসঙ্গ কাণি দড়ি চৌদিকে আঁটিল।।* নৌকা গঠন তত্ব দ্বারা।---------------- শ্রী গোবিন্দ আমার সখাদের সঙ্গে গো-চারণ করিতে করিতে সেই কথা মনে পড়েছে, কোন কথা,গোলোক বৃন্দাবনের কথা, ভাই সুবলকে ডেকে বললেন,ওরে ভাই সুবল সখা, আজ আমি যমুন...
🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html
👉 মতানুসারে 👉 https://drive.google.com/file/d/1lS0aV1XBKbzRfve110-R6hJEsX3JHoMQ/view?usp=drivesdk ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏 ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🔘👉🏠Home🏠 🔘👉📝সূচীপত্র📝 🔘👉📚PDF গ্রন্থ📚 🔘👉✉️WhatsApp Chanel✉️ 🔘👉Apps 🔘👉🌐Google Drive🌐 🔘👉 শ্রীশ্রীরাধাকান্ত মঠ🚩শ্রীশ্রীগৌর গম্ভীরা🐚শ্রীধাম পুরী🐚 🔘👉 🗓️ ব্রত তালিকা 🗓️ শ্রীগিরিগোবর্ধন 🙇 🔘👉 🗓️ ব্রত তালিকা 🗓️ শ্রীরাধাকুণ্ড 🙇 🔘👉🖼️ধর্মীয় চিত্রপট🖼️ 🔘 👉 📝শ্রী জয়দেব দাঁ📝 🔘👉📝শ্রী গোপীশরণ দাস📝 🔘👉📝শ্রী দীপ বাগুই📝 🔘👉 🎶শ্রীমতী কুঞ্জশ্রী দাশগুপ্ত🎶 🔘👉📝শ্রী মৃন্ময় নন্দী📝 ✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏 ✧ ══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ ✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧ 🌷 🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷 *১৫৬. শ্রীপ্রদ্যুম্ন মিশ্র ও কৃষ্ণকথা 🌷 শ্রীরামানন্দ রায় 🦚🦚 কাষ্ঠ পুত্তুলিকা 🏵️ শ্রীরসিকমোহন বিদ্যাভূষণ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন* 👉 http://mri...
শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/home-page-pdf-httpsmrinmoynandy_25.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ...
মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ৪২. ব্রহ্মা এবং মহেশ্বর যাঁর আরাধনা করেন 🙇 মনোশিক্ষা🙏 দ্বিতীয় ভাগ🙏শ্রী প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *(৪২)🔥🔥মনো শিক্ষা 🔥🔥* •••••••••••••••••••••••••••••••••••••• *ওরে মন! বিচারিয়া দেখ না হৃদয়* *ধনে জনে যত আর্তি,বাড়ে বই নহে নিবৃত্তি,* *হরি-পদে হৈলে কি না হয়।।* *যা ভাবিলে হবে নাই,তাই ভেবে কাট আই,* *ভাবিলে যে পাও তা না কর।* *লক্ষকোটি যার ধন,সে কি পায় এক মণ,* *বুঝি কেনে ধৈরয না ধর।।* *খাওয়া পরা ভাল চাও,তাই কি ভাবিলে পাও,* *পূর্ব-জন্মার্জিত সেই পাবে।* *কার ধন চিরস্থায়ী,না গণ'আপন আই,* *কত কাল তুমি বা বাঁচিবে।।* *অজ ভব ভবে যাঁরে,কি মদে পাসর তাঁরে,* *"হরি" ভুলি জীয় কোন্ কাজে।* *"হরিনাম"যাতে নাই,সে বদনে পড়ুক ছাই,* *সে মুখ সে দেখায় কোন্ লাজে।।* *...
বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═════...
শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🙏 প্রথম ভাগ ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••┉❀꧁👇 🏠Home Page🏠👇 ꧂❀┅••••* 👉 MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 Boisnob.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/pdf_22.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *•❀꧁ 📖সূচীপত্র 🙏 শ্রী জয়দেব দাঁ 📖 ꧂❀•* 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html 👉...
*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ *নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্* ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 🌐 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠👇👇🙏👇👇📚PDF গ্রন্থ📚 🌐 https://MrinmoyNandy.blogspot.com ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/blog-post_23.html ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂ ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।* *পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।* = = = = = = = = = = = = = = = = = *মুলানুবাদ=হে রসবিশেষভাবনা-চতুর রসিক ভক্তগণ!শুকমুনির মুখনির্গলিত দেব-কল্পতরুর শ্রীমদ্ভাগবত নামক পরমানন্দরসময় ফল সাধনকাল হতে মোক্ষক...
শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম্য ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 🏠Home Page🏠 ⬇️⬇️🙏⬇️⬇️ 📚PDF গ্রন্থ📚 ꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/11/blog-post_34.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ ꧁ https://Gopisharan.blogspot.com 🙏 সূচীপত্র ꧂ ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂ এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/10/home-page-pdf-httpsmrinmoynandy_25.html ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ *শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহ...