🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

৬২. শ্রীরাধার নন্দালয়ে রন্ধন ও ভোজন 🌷 শ্রীকৃষ্ণ লীলা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/07/httpmrinmoynandy_11.html

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
     ꧁ ৬২. শ্রীরাধার নন্দালয়ে রন্ধন ও ভোজন 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
               ꧁ শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ꧂
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧ 
*🌴শ্রীরাধার নন্দালয়ে রন্ধন ও ভোজন🌴গৌরচন্দ্রিকা🌴*
🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼
*প্রাতে শ্রীবাসের অঙ্গনে গোরা কীর্তন রত ছিলা।*
*পারিষদগণ লইয়া গোরা বাহির হইলা।।*
*পথি মাঝে গোরাচাঁদের আনন্দ না ধরে।*
*পারিষদগণকে লয়ে আলিঙ্গন করে।।*
*ভাবনিধি গৌরহরির কি ভাব হৈলা।*
*রাঁধিব রাঁধিব বলি নাচিতে লাগিলা।।*
*গৌরসুন্দরের ভাব বুঝিতে না পারি।*
*গোরাচরণ বাসুদেব ঘোষ শিরেতে ধরি।।*

*🌻করুণাময় গৌরসুন্দর কখন যে কোন ভাব-এ ভাবিত হন,একমাত্র তিনি ছাড়া আন জনের বুঝা বড়ই কঠিন।* *প্রাতঃকালে দিব‍্যি পার্ষদগণকে নাম-কীর্তন করছিলেন, কৃষ্ণকথা আলাপন করছিলেন,আচম্বিতে যে কি হল শ্রীবাস অঙ্গন বাহির হলেন এবং কোনদিকে যাবেন,কোথায় যাবেন তার দিশা নেই,হনহন করে হেঁটেই চলেছেন,হঠাৎ পথমধ‍্যে যেন আনন্দের বন‍্যা বয়ে গেল,কেন আনন্দের বন‍্যা কিছুই বুঝা গেল না।* *তারপরেই এক এক করে পার্ষদগণকে আলিঙ্গন করতে লাগলেন।পার্ষদগণ বলছেন "ভাব তো কিছু বুঝতে নারি" বিগত দিনের তুলনায় আজ মহাপ্রভু একেবারেই অন‍্য রকম।* *পথে চলতে চলতে কখনও হাত তুলে নৃত্য করছেন,কখনও মহানন্দে হাসছেন,* *কেউ কেউ ভাবছেন প্রভুর কি শরীর খারাপ হল?মাঝে মাঝে এক একরকম ভাবে ভাব দেখাচ্ছেন।* *এইভাবে পথে চলতে চলতে আনন্দের সঙ্গে বলতে লাগলেন আজ আমার খুব আনন্দের দিন আজ আমি  রন্ধন করব।* *এবারে পার্ষদগণ বুঝতে পারলেন যে মহাপ্রভুর নিশ্চয়ই ব্রজের কথা মনে পড়েছে।আমরা ভক্তমুখে শুনেছিলাম শ্রীমতী প্রত‍্যহ নন্দালয়ে গিয়ে রন্ধন করতেন এবং শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম সকলে সেবা করতেন,হয়ত সেই ভাব মনে পড়ে ভাবনিধি মহাপ্রভুর এই আনন্দ।* *নদীয়ার শ্রীধরের কথা আস্বাদন করি* *শ্রীধর ঠাকুর মায়াপুর গ্রামের শেষ সীমানায় বাস করতেন,তিনি যৎসামান‍্য কলা-মূলো-থোর প্রভৃতি বিক্রি করে জীবন যাপন করতেন।* *এবং রাতভোর হরিনাম করতেন,ভক্তি বির্মুখ পাষন্ড হিন্দুগণ তা সহ‍্য করতে পারত না,অকথ‍্য ভাষায় তাঁকে নানাপ্রকার গালিগালাজ দিত।* *বলত চাষা বেটার ভাতে পেট ভরে না,ক্ষুধার জ্বালায় রাতে চিৎকার করে,পাষন্ডিগণ এরূপ অনেক কথা বলত,কিন্তু শ্রীধর কারও কথায় কান না দিয়ে আনন্দে নিজের কাজ করে যেতেন।* *বামণপুকুরের বাজারে ছিল তাঁর দোকান,তিনি খুব সত‍্যবাদী লোক ছিলেন,এককথায় কেনা-বেচা করতেন।* *আর নিরন্তর নাম স্মরণ করতেন।* *বেশীকথা বলতে ভালবাসতেন না।* *খদ্দের যথার্থ দাম রেখে কলা,মুলো,থোর ইত‍্যাদি নিয়ে যেতেন।* *থোর কলা মুলো বেচে যে পয়সা পেতেন,তার অর্ধেক দিয়ে গঙ্গাদেবীর পূজোর ফল ফুল মিষ্টি খরিদ করতেন আর অর্ধেকে তাঁর সংসার নির্বাহ হত।* *মা শচীদেবীর আদেশে কোন কোনদিন নিমাইকে বাজারে যেতে হত,কলা,মুলো,থোর ও শাক আনতে।* *গৌরহরি বাজারে গিয়ে শ্রীধরের কাছে যেতেন।* *গিয়ে শ্রীধরের সঙ্গে রহস‍্য করতেন।* *শ্রীধর একদামে বিক্রি করতেন,গৌরহরি কি করতেন,শ্রীধর যে দাম বলতেন তার অর্ধেক দাম দিব বলতেন,শুরু হয়ে দামাদামিতে রঙ্গরসিকতা।* *প্রভু কলার থোকা নিয়ে বললেন কত দাম,প্রমু অর্ধেক দাম বলে থলেতে কলা রাখতেন,অমনি জোর করে প্রভুর হাত হতে কেড়ে নিতেন,আর বলতেন অন‍্য দোকানে যাও,আমার এক দাম।* *বাজারে লোকজন জমা হয়ে রঙ্গ দেখতেন।*
[7/6, 3:53 PM] Joydeb Dawn: *🌴আর একদিন মহাপ্রভু একটি মোচা নিয়ে দর কষাকষি করছিলেন শ্রীধরের সঙ্গে,মহাপ্রভু বললেন,শ্রীধর!একি তোমার ব‍্যবহার?আমি ব্রাহ্মণের ছেলে,আমার হাত থেকে তুমি জিনিস কেড়ে নিচ্ছ?তুমি একজন তপস্বী,তোমার তো অনেক পয়সা-কড়ি আছে।* *আমায় কিছু দিলে ক্ষতি কি?শ্রীধর!আমি কে তা বুঝি তুমি জান না?তুমি প্রতিদিন যে গঙ্গার পূজো কর,আমি তাঁর পিতা।* *মহাপ্রভুর মুখে এইকথা শুনে শ্রীধর "বিষ্ণু বিষ্ণু" বলে কানে আঙ্গুল দিলেন।* *ভাবলেন লোকটি* *পাগল হয়েছে,তারপর শ্রীধর, গৌরসুন্দরকে খুব ভাল করে নিরীক্ষণ করতে* *লাগলেন,দেখলেন,কি অপূর্ব মদনমোহন রূপ,ললাটে ঊর্ধপুন্ড্র তিলক,পরিধানে ত্রিকচ্ছ বসন,শিরে কুঞ্চিত কেশদাম,গলদেশে শুভ্র যজ্ঞোপবীত ও নয়ন যুগলের সুষমা (লাবণ‍্য) বর্ণনা করা যায় না।* *অধর তাম্বুল রাগে রঞ্জিত।* *মহাপ্রভুর হাতে মোচাটি ছিল,ভূমিতে রেখে দিলেন,শ্রীধরের মুখের দিকে তাকিয়ে মহাপ্রভু আবার মোচাটি হাতে নিলেন।তখন শ্রীধর বললেন ঠাকুর তুমি আমায় ক্ষমা কর,তোমাকের জিনিসের মূল‍্য দিতে হবে না,তুমি এমনি নিয়ে যাও।* *মহাপ্রভু বললেন,শ্রীধর তুমি বড় চতুর লোক,তোমার কলা বেচার অনেক অর্থ আছে।*
*শ্রীধর বললেন,এ বাজারে আর কি দোকান নেই,*
*প্রভু=অনেক দোকান আছে,তাতে আমার  কি?তুমি আমার যোগানদার,তোমাকে ছাড়ব কেন?* *শ্রীধর=ঠাকুর,বেশ কথা,তোমার চরণে পড়ি,তোমার কাছে আমি নত হলাম,আজ থেকে বিনা কড়িতে তোমায় জিনিস দিব খুশি তো?*
*প্রভু=বুঝতে পারলাম,যত খারাপ জিনিসগুলো দিবে তো?*
*শ্রীধর=ও ব্রাহ্মণ ঠাকুর!খারাপ জিনিস দেব কেন?*
*প্রভু=আচ্ছা ভাল ভাল,তাই হোক।* *কিছুক্ষণ এইভাবে কলহ করে মহাপ্রভু চলে গেলেন,শ্রীধর তাকিয়ে রইলেন।* *আর বললেন,এই ব্রাহ্মণ একদিন অতি মুক্ত পুরুষ হবেন।কি মধুময় ভাষা,কিরকম চাহনি,এত চঞ্চলতা করল তবুও মনে কোন দুঃখ আসে না।* *এই বাজারের মধ্যে কেবল আমার কাছেই আসেন।* *আমার কত ভাগ‍্য! গৌরহরি প্রায় প্রতিদিন শ্রীধরের থোড় কলা মোচা কলার খোলায় ভোজন করতেন।* 
*🌻ভগবান ভক্তের দ্রব‍্য কেড়ে নিয়ে সেবা করেন,আর অভক্তের কোটিপতির দ্রব‍্যের দিকে দৃষ্টিপাতও করেন না।🌻* *মহাপ্রভু প্রত‍্যহ পার্ষদগণ সহ নগর ভ্রমণ করতেন,একদিন ভ্রমণ করতে করতে শ্রীধরের ঘরে এলেন,শ্রীধর তাঁকে ভালভাবে চিনতেন,তাঁর সঙ্গে প্রভু দু-এক দন্ড পরিহাসাদি করে ছাড়লেন না।* *শ্রীধর প্রভুকে বসবার আসন দিলেন, মহাপ্রভু বললেন,শ্রীধর!তুমি সারাদিন "হরি হরি"কর,ও লক্ষ্মী-নারায়ণ এবং গঙ্গার পূজো কর,কিন্তু তোমার অন্ন-   পড়ি।* * *শ্রধর,বস্ত্র ত *পড়

*কিন্তু তোমার অন্ন-বস্ত্রের অভাব কেন?* *শ্রীধর বললেন,ঠাকুর!উপবাস তো করি না,ছোট বা বড় যেমনই হোক কাপড় তো পড়ি।প্রভু বললেন,বস্ত্র পরিধান কর, কিন্তু দেখছি দশ জায়গায় সেলাই করা, আবার ঘরে আছ,ঘরের ছাউনিতে খড় নাই,দেখ শ্রীধর,এ নবদ্বীপে চন্ডী-মন্ডপে দূর্গার পূজা করে লোক কত সুখে আছে,ঠাকুর তুমি ঠিক বলেছ, কিন্তু দিন সকলের সমান যায় না।* *প্রভু বলছেন,শ্রীধর!তোমার অনেক ধন আছে তুমি লুকিয়ে রেখেছ,শ্রীধর বললেন,ঠাকুর এখন তুমি ঘরে যাও।* *তোমার সঙ্গে আমি দ্বন্দ্বে পড়তে চাই না।* *মহাপ্রভু বললেন,শ্রীধর!তুমি আমায় কি দিবে দাও,তোমার থেকে কিছু না নিয়ে যাই কেমনে।* *শ্রীধর বললেন,ঠাকুর!আমি গরীব মানুষ,থোড় কলা বেচে খাই,তোমায় দেবার মত কিছু খুঁজে পাচ্ছি না।* *প্রভু বললেন,তোমার যে পোতা ধন আছে, এখন তা থাকুক।* *বর্তমানে বিনা দামে থোড় কলা মোচা দাও।* *শ্রীধর চিন্তা করতে লাগলেন,এ ব্রাহ্মণ মনে হয় পাগল,বেশী কিছু বললে মারতেও পারে,ব্রাহ্মণের ছেলে মারলেও কিছু বলা যাবে না।* *আবার বিনি পয়সায় রোজ দিতেও পারি না,তবে সে যে ছলে বলে নেয়না,* *সেও আমার ভাগ‍্য।* *ঠাকুর তোমায় পয়সা দিতে হবে না,এই কলা থোড় মোচা নিয়ে যাও।* *আমার সঙ্গে আর ঝগড়া করো না।* *কতক্ষণ শ্রীধরের সঙ্গে বাক‍্যালাপ করে গৃহাভিমুখে ফিরে যেতে উদ‍্যত হলেন।* *এমন সময় পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন,শ্রীধর!তুমি আমায় কি মনে কর? তা বললে না?বললেই চলে যাব।* *শ্রীধর বললেন,তুমি ব্রাহ্মণের ছেলে,বিষ্ণুর অংশ।প্রভু বললেন তুমি আমায় জানতে পারলে না,আমি গোপ।*তোমার যে গঙ্গার মহিমা তাও আমার কারণে।* *শ্রীধর বললেন,পন্ডিত!তোমার মা গঙ্গারও ভয় হয় না,লোকের যত বয়স বাড়ে,তত শান্ত হয়,আর তোমার যত বয়স হচ্ছে ততই চঞ্চলতা বাড়ছে।* *এখন ঘরে যাও,আর কলহ করিও না।* *গৌরহরি হাসতে হাসতে চলে গেলেন।* 
*🌼ভগবান যতক্ষণ নিজের পরিচয় না দেন,ততক্ষণ কেহ তাঁকে জানতে পারে না।আবার পরিচয় দিলেও পাগল মনে করে।🌼*
[ *তারপর গৌরহরি বিদ‍্যার বিলাস করলেন।* *তারপর গয়া গেলেন,গয়া গেলেন এক নিমাই,ফিরলেন আরেক নিমাই।* *ফিরে দিব‍্যভাব প্রকাশ করতে আরম্ভ করলেন।* *যখন গৃহে ফিরলেন তখন তাঁর নবভাব।* *নিরন্তর ভাবাবেশ,তখন থেকেই শ্রীবাস অঙ্গনই  হল বিলাসের প্রধান কেন্দ্র।* *দিনের পর দিন দিব‍্যভাব প্রকট করতে লাগলেন, একদিন মহাপ্রভু শ্রীবাস মন্দিরে বিষ্ণু খট্টার উপর বসে মহাভাবাবেশে ভক্তগণকে আদেশ করলেন,শ্রীধরকে নিয়ে এসো,সে আমার স্বরূপ দর্শন করুক।* *আমাকে দেখার জন্য সে কত সাধন করেছে,দুঃখ সহ‍্য করেছে।* *ভক্তগণ শ্রীধরের গৃহে গিয়ে "শ্রীধর শ্রীধর" বলে ডাকতে লাগলেন,সেইসময় শ্রীধর এত জোরে জোরে শ্রীনাম করছিল,যে ভক্তগণের ডাক তাঁর কর্ণে পৌঁছছে না।* *পরে শুনতে পেয়ে বাইরে এলেন,দেখলেন ভক্তগণ, বললেন কি ব‍্যাপার এত রাতে এখানে কেন?ভক্তগণ বললেন আর বিলম্ব করিও না,এখুনি আমার সঙ্গে চল।* *মহাপ্রভু তোমাকে ডেকেছেন,চল?* *"শুনিয়া প্রভুর নাম শ্রীধর মূর্ছিত"।* *আনন্দে বিহ্বল হই পড়িলা ভূমিত।।* *প্রভুর নাম শুনেই মূর্ছিত হয়ে পড়লেন,ভক্তগণ ধরাধরি করে তাঁকে মহাপ্রভুর কাছে নিয়ে এলেন।* *মহাপ্রভু আনন্দ ভরে বলতে লাগলেন,শ্রীধর!এস,এস আমাকে দেখবার জন্য তুমি বহু জন্ম সাধনা করেছ,এ জন্মেও আমার বহু সেবা করেছ, তোমার শাক,কলা,মোচার তরকারি আমি বড় প্রীতিতে ভোজন করেছি এবং কলার খোলায় অন্ন পেয়েছি।* *তুমি আমার দিব‍্যরূপ দর্শন কর,দিব‍্যরূপ দর্শন করে পুনরায় মূর্ছিত হলেন।*
*মহাপ্রভু চেতনা ফেরালেন,প্রভুর সন্ন‍্যাসের পূর্বে শ্রীধর লাউ দিয়েছিলেন।*

 *🌻🌻শ্রীমন্মহাপ্রভুর আরেক ভক্তের কিছু কথা বলি আস্বাদন করুন🌻🌻*
*তিনি একাকী থাকেন,মাধুকরী করে যা পান তিনি রাধাগোপীনাথের সেবা দিয়া তিনি প্রসাদ পান।* *তিনি নবদ্বীপের অন্তর্গত মোদদ্রুম দ্বীপে(মামগাছিতে)* *অবস্থান করতেন।* *তাঁর নাম সারঙ্গদেব।*
*তথায় অদ‍্যাপি তাঁর সেবিত শ্রীশ্রীরাধাগোপীনাথ বিদ‍্যমান।* *মন্দির আঙ্গিনায় প্রাচীন একটি বকুল বৃক্ষ আছে।* *বৃক্ষটি সেই সময়কার বলিয়া অনুমিত হয়।* *সারঙ্গদেবের বেশ বয়স হয়েছে,বয়সের সাথে সাথে দেহে কিঞ্চিৎ ব‍্যধি দেখা দিয়াছে।* *হয়ত ইহা গৌণ কারণ,মুখ‍্য কারণ হল শ্রীমন্মহাপ্রভুর সহিত সাক্ষাৎ  এবং স্বয়ং মহাপ্রভুর হস্তে শ্রীশ্রীরাধাগোপীনাথের জন্য রন্ধন কার্য‍্য করে রাধাগোপীনাথের সেবা করা সারঙ্গদেবের কুটিরে।*

*হঠাৎ সারঙ্গদেবের শরীরে কিঞ্চিৎ ব‍্যধি দেখা দিয়াছে,সারঙ্গদেব ভাবছেন অদ‍্য মাধুকরীতে যাওয়া হল না,কেমন করে আমার রাধাগোপীনাথের সেবা হবে।* *এই চিন্তা করতে করতে তিনি শরণাপন্ন হয়েছেন কার?শ্রীমন্মহাপ্রভুর।* *করুণাময়,দয়ার ঠাকুর গৌরহরি সারঙ্গদেবের অন্তরের ডাক শুনতে পেয়ে সপার্ষদ তাঁর কুটিরে এলেন,🌻ডাকার মত ডাকলে পরে কি করুণাময় থাকতে পারেন?তৎক্ষণাৎ সাড়া দেন🌻।* *কুটিরের সামনে এসে ডাকছেন,ডাক শুনে তিনি বুঝতে পারলেন, পতিতপাবন গৌরহরি আমার কুটিরে এসেছেন,মহাপ্রভুর কন্ঠস্বর শুনে যেন সারঙ্গদেবের শরীর অনেকটাই ভাল হয়ে গেল।* *কুটিরের দরজা খুলেই পতিতপাবনের দর্শন পেলেন,সাষ্টাঙ্গে দন্ডবৎ প্রণাম করে ভেতরে নিয়ে গেলেন।* *মহাপ্রভু জিজ্ঞাসা করলেন কি হয়েছে তোমার?* *কেন আমায় ডেকেছ? প্রভু আজ মাধুকরীতে যেতে পারি নাই, ঘরে রাধাগোপীনাথ আছেন,তাঁদের সেবা না দিয়ে আমি প্রসাদ পাই না,আজ আমি অপারক।* *আর তুমি তো অন্তর্য‍্যামি সবই জান।* *কিন্তু তোমরা বহুজন এসেছ, কি ভাবে তাঁদের সেবা দিব,ঘর হতে ভক্ত ফিরে গেলে খুব কষ্ট পাব।* *মহাপ্রভু বললেন,ঘরে কি আছে? সারঙ্গ বললেন,একমুঠো অন্ন,আর যতসামান‍্য আনাজ আছে, যা আছে একজনের প্রসাদ হবে না। বলে অঝোর নয়নে কাঁদতে লাগলেন।* *প্রভু বললেন,কোন চিন্তা কোরো না, তুমি বসো,রাধাগোপীনাথ সব ঠিক করে দিবেন।* *স্বয়ং মহাপ্রভু রন্ধন করতে আরম্ভ করলেন,যতসামান‍্য তন্ডুল অসামান্য হয়ে উঠল,আর সামান্য আনাজ পাতিও অসামান্য হল।* *রন্ধন সম্পূর্ণ হল,শ্রীশ্রীরাধাগোপীনাথের সেবা দেওয়া হল,সেবার পর,সকল পার্ষদগণ আকন্ঠ প্রসাদ পেলেন, মহাপ্রভু ও সারঙ্গদেব প্রসাদ পেলেন,তারপরও অনেক প্রসাদ অবশিষ্ট রইল।* *তারপর মহাপ্রভু সারঙ্গকে বললেন,তুমি শিষ‍্য কর।*

*🌻এই গৌরচন্দ্রিকার কথাগুলি অন্নভিক্ষায় পরিবেশন করা যাবে🌻*
*রন্ধন ক্রিয়ার গৌরচন্দ্রিকা এখানেই রহিল।*
*🌻ব্রজলীলা রন্ধন লীলা🌻*
*প্রাতঃকাল,শ্রীমতী রাধারাণী শ্রীকৃষ্ণের ভোজনের রন্ধন করবার জন্য মা যশোমতীর ডাকে সখীগণ ও কুন্দলতার সঙ্গে নন্দীশ্বরে গমন করছেন।* *শ্রীরাধার পেছন পেছন কিঙ্করীগণ জলঝারি বহন করে চলেছেন।* *কুন্দলতা ও সখীগণের সঙ্গে শ্রীমতী রসময়ের রসকথা কথোপকথনের লীলারসে ডুবে চলেছেন।* *এই হচ্ছে অনুগত‍্যময় ব্রজপ্রেম।* *সখীসহ শ্রীমতী যেন মনে হচ্ছে চাঁদের বাজার।* *শ্রীমতী যখন গ্রামের ভিতর দিয়া যাচ্ছিলেন ঘোমটা ছিল,বাইরে এসে ঘোমটা উন্মোচন করলেন।* *আনন্দের আবেশে বাগবিলাস রঙ্গে এমন তন্ময় হয়ে চলেছেন যে,"কুত ক্ক যামীত‍্যপি নহি বেদন-গোচরী করোতি" (কৃষ্ণ ভাবনা মৃত) কোথা হতে কোথায় যাচ্ছি,ইহাও বুঝতে পারছেন না,* *হৃদয় দর্পণে প্রিয়তমের মনমাতানো মধুর রূপের স্ফূর্তি হচ্ছে।* *কুন্দলতা বলছেন, সখি রাধে!শ‍্যাম-জলদকান্তির সৌন্দর্য‍্য বিন্দু আস্বাদনে এখনি তোমার নয়ন চাতকের আশা সফল হবে।* *এইকথা শুনে শ্রীমতীর দেহে পুলক,কম্প,জড়িমাদি ভাব কুসুম বিকশিত হচ্ছে।* *কৃষ্ণ আরাধিকা রাধা।স্বয়ং সেবা করতেই খুব উল্লাসবতী।* *নিজের হাতে রান্না করে ভোজন করাবেন,এই আনন্দে বিভোরা।* *প্রেমের স্বভাবই হচ্ছে,প্রেমিকের মধ্যে স্বয়ং সেবা করার ইচ্ছা জাগানো।* *প্রকৃত প্রেমিক যাঁরা,তাঁরা অভীষ্টের সেবার ভার অপরের হাতে সঁপে দিতে পারেন না।* *যেমন হাজার হাজার দাসী থাকতেও মা যশোমতী শ্রীকৃষ্ণের সেবার দ্রব‍্য নিজের হাতে দধিমন্থন করেছেন,নন্দমহারাজ স্বয়ং গো-দোহন করেছেন।* 

*🌼মহামুনি দুর্বাসার বরে শ্রীরাধা অমৃতহস্তা।*
*তাঁর হাতের রন্ধন করা অন্ন-ব‍্যঞ্জন,মিষ্টান্নাদি সব অমৃত সমান স্বাদু,ব‍্যধিনাশক,আয়ু ও শক্তিবর্ধক হয়ে থাকে।* *এই সংবাদ পেয়ে পুত্রবৎসলা মা যশোদা নিত‍্য নিত‍্যই কুন্দলতার দ্বারা শ্রীরাধারাণীকে শ্রীকৃষ্ণের ভোজনের জন্য রন্ধন করবার জন্য স্বগৃহে আনয়ন করেন।* *সখীগণ সঙ্গে শ্রীরাধার কি মধুর গীত----*
     *সুন্দরী সখী সঙ্গে করিছে পয়ান।*
*রঙ্গ পটাম্বর,ঝাঁপল সব তনু,*
      *কাজরে উজোর নয়ান।।*
*দশনক জ‍্যোতি,মোতি নহ সমতুল,*
     *হসইতে খসে মণি জানি।*
*কাঞ্চন কিরণ,বরণ নহ সমতুল,*
      *বচন জিনিয়া পিকবাণী।।*
*কর-পদতল থল,-কমল দলারুণ,*
      *মঞ্জীর রুণুঝুণু বাজে।*
*গোবিন্দ দাস কহ,রমণী শিরোমণি,*
     *জিতল মনমথ রাজে।।*

 *শ্রীমতী ধীরে ধীরে নন্দালয়ের নিকটবর্তী হয়েছেন,শ্রীরাধা তখন কেমন যেন উৎকন্ঠাবতী হয়েছেন,অপরদিকে শ‍্যামসুন্দরও তেমনি উৎকন্ঠায় অধীর।* *শ্রীকৃষ্ণ গো-দোহন করে সখাগণের সঙ্গে পুরদ্বারে এসে দাঁড়িয়ে আছেন।*প্রতিটি অঙ্গ-প্রত‍্যঙ্গ উৎকন্ঠার ছবি।* *ভক্তের প্রেম সেবা গ্রহণের জন্য শ্রীভগবানের কি ব‍্যাকুলতা।* *অপরদিকে কুন্দলতা দেখাচ্ছেন,ঐ দেখ,পুরদ্বারে শ‍্যামকান্তি আলো করে আছেন,যেন আকুতি ভরা প্রতিক্ষা।* *আর সে কমণীয় কান্তি দর্শনে ব্রজ ললনাগণের ধৈর্যের বাঁ ভেঙ্গে যায়।* *শ‍্যামনাগর,সুবলের স্কন্ধে বামহস্ত বিন‍্যাস করে দক্ষিণ হস্তে একটি লীলাকমল ঘূর্ণন করছেন।অর্থ‍্যাৎ সুবলের বামকাঁধে হাত রেখে ডানহাতে একটি লীলাকমল নিয়ে ঘুরাচ্ছেন,কেন ব্রজললনাদের মনকে ঘুরাবার জন্য।* *ঐদিকে রাধা দেখে ফেলেছেন প্রাণ বল্লভকে,তিনি ভাবছেন,আমার জন‍্যই ভূবন মোহন শ‍্যাম দাঁড়িয়ে আছেন।* *শ‍্যামের ব‍্যাকুলতা বুঝে রাইধনি বামহাতে অবগুন্ঠন(ঘোমটা)*  *টানবার ছলে একবার মুখখানি ভাল করে শ‍্যামনাগরকে দেখালেন।* *ধ‍্যানের ছবি,উভয়ের দর্শন হল।*
*পথ-গতি নয়নে মিলন রাধাকান।*
*দুহুঁ মনে মনসিজ পূরল সন্ধান।।*
*দুহুঁ মুখ হেরইতে দুহুঁ ভেল ভোর।*
*সময় না বুঝত অচতুর চোর।।*
*বিদগধ সঙ্গিনী সব রস জান।*
*কুটিল নয়ানে কয়ল সমাধান।।*
*চলিলা রাজপথে দুহুঁ উর রাই।*
*কহ রায় শেখর দুহুঁ চতুরাই।।*

*🌻লজ্জায় শ্রীমতীর মুখমন্ডল আরক্তিম,মৃদুস্বরে ললিতাকে প্রশ্ন করছেন, সখি! অন্তঃপুরে যাবার কি অন‍্য পথ নাই?* *আমি এ পথে যেতে পারব না সখি,ললিতা বলছেন রাধে!তাঁর(কৃষ্ণ) সামনে দিয়ে যেতে হবে,দেখছি তোর শ্রীঅঙ্গ কন্টকিত ও কম্পিত,তোর নয়নকোণেও অশ্রুবিন্দু দেখা দিয়েছে,কি হয়েছে বলনা?* *দেখ গুরুজন(মা যশোদা)যখন এই পথ দিয়ে যেতে আদেশ দিয়েছেন, তখন গুরুবাক‍্য পালন করতে হবে।* *এই বলেই রাধাসহ সকলেই ব্রজরাজের পুরদ্বারে ধীরে ধীরে প্রবেশ করলেন।* *পুরের কি শোভা!* *যে দিকে দেখেন, সেইদিকেই আলোকসামান‍্য শিল্পচাতুর্য।* *আর যতদূর দেখা গেল শ‍্যাম অপলক দৃষ্টিতে সেই শোভা মাধুর্য‍্য আস্বাদন করলেন।* *এখন কেবলমাত্র রাধার নূপুর ধ্বনি হচ্ছে।শ্রীরাধার জীবন ধনিষ্ঠা!রাধা আসছেন কি-না উৎকন্ঠিতা প্রাণে কেবল ঘর আর বাহির গতাগতি করছেন।* *যেই দেখা,ব‍্যগ্র ভাবে ছুটে এসে বলছেন,এত দেরী কেন?তোমায় না দেখে যে কত কষ্ট পাই তুমি জান না?* *শ্রীমতী বললেন কোমল স্বরে,আমি যে পরাধীনা।* *তারপর রাধাসহ অন্তঃপুরে প্রবেশ করলেন।* *মা বাৎসল‍্যময়ী যশোমতী হর্ষোৎফুল্ল (মহানন্দের সহিত)হয়ে ছুটে এসে পরম বাৎসল‍্যভরে শ্রীরাধাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।*
*রাধারে দেখিয়া,উমতি হইয়া,*
       *যশোদা করল কোরে।*
*মু'খানি ধরিয়া,চুম্বন করিতে,*
        *ভিগাল নয়ন লোরে।।*
*শ্রীমতী অতি ভক্তি ভরে মা যশোমতীর চরণে মস্তক রেখে প্রণাম করলেন।মা আবার তুলে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।চিবুকে ধরে পুত্রবধূর মত কতই না লালন,চুম্বন এবং বারবার মস্তক আঘ্রাণ করলেন।* *মা যশোদা দাসীগণকে ডেকে,*
*আসি দাসীগণ,রাধার চরণ,*
      *ধোয়াল শীতল নীরে।*
*অতি সুকোমল,ও থল কমল,*
      *মুছা'ল পাতল চিরে।।*
*রোহিনী সহিতে,রন্ধন করিতে,*
       *বসিল রাজার ঝি।*
*সব সখীগণ,যোগায় যোগান,*
       *শেখর যোগায় ঘি।।*
*তারপর রোহিণীদেবী স্নেহ- বিগলিত চিত্তে বললেন,তুমি পাককার্য‍্যে সুনিপুণা,সুতরাং তোমার মনে যেমন যা উচিত হবে,তুমি সেইরকম পাক কর।*
*রাধা লজ্জায় মথা নত করে আছেন।রোহিণী মাতা অতি আদরের সঙ্গে শুভ্রবসনাবৃত চুল্লির কাছে চৌকির উপর বসালেন,অগুরু,সরল,দেবদারু* *প্রভৃতি সুগন্ধিত শুষ্ককাষ্ঠ দিয়ে চুল্লি জ্বালিয়ে দিলেন।*

*🌻পাকশালায় শ্রীমতী রন্ধন কার্য‍্য শুরু করলেন🌻*
*তুরি তহিঁ রাণী,আনি নিজ মন্দিরে,*
     *আদরে রসবতী রাই।*
*যতনহি পাক,করাওল ক্ষীর সর,*
     *ঝুরি পুরি বিবিধ মিঠাই।।*
*নিশি অবসানে,দাস দাসী সনে,*
      *ত্বরায় করয়ে কাজে।*
*যার যেই কাম,করে অনুপাম,*
      *সভাই সভারে তাজে।।*
*দেব পুরন্দর, জিনি তার ঘর,*
      *রন্ধন মন্দির সাজে।*
*ধনিষ্ঠা সুন্দরী,রন্ধন সামগ্রী,*
      *রাখল তাহার মাঝে।।*
*জ্বালিতে ইন্ধন,আনল চন্দন,*
       *দেয়ল যতন করি।*
*বসিতে আসন,জলের ভাজন,*
       *তাহার নিকটে ধরি।।*
*সুশীলা সুন্দরী,রসের চাতুরী,*
       *বিবিধ রন্ধন জানে।*
*বিধি অগোচর,নানা উপহার,*
       *করল আপন মনে।।*
*কর্পূর মালতী,করল যুবতী,*
      *মনোলোভা মনোহরা।*
*কঙলা কদম্বা,রেউড়ি পদুমা,*
      *মতিচুর সুমধুরা*।।
*অমৃতকেলিকা,বিবিধ লাড্ডুকা,*
      *চাকি খন্ড পদ্মচিনি।*
*গজা খাজা পেড়া,চানা চন্দ্রচূড়া,*
      *মিছিরি মারিয়া ফেনি।।*
*লুচি পুরি করি,রস-পাকে ভরি,*
       *সরভাজা সরপুরি।*
*বুদি রসকরা,রসপুর ঝুরা,*
      *যতন করিয়া করি।।*
*সুগন্ধি শীতল,করিয়া নির্মল,*
      *ভরিয়া সোনার থালি।*
*ভোজন ভবনে,রাখিল যতনে,*
      *ঢাকিয়া নেতের ফালি।।*
*রসালা মথনি,করল রমণী,*
      *খন্ড মন্ডা আদি যত।*
*লছিমি কেতনে,নাহিক যতনে,*
      *নন্দের ঘরের মত।।*
*দধি দুগ্ধ কত, আর গাবীঘৃত,*
     *নওল নবনী ছানা।*
*নারিকেল জল, করল সুশীতল,*
     *নবীন বাসনে পানা।।*
*আম্রের আচার,কতেক প্রকার,*
     *কলা পানিফল আদা।*
*ভাজনে ভরিয়া, রাখিল ঢাকিয়া,*
     *রাণীর মনের সাধা।।*
*সভে করে কাম,নাহিক বিশ্রাম,*
     *আনন্দে আকুল চিত।*
*একতান হইয়া,মধুর করিয়া,*
     *গাওত মঙ্গল গীত।।*
*নিজ কাজ সারি, সকল সুন্দরী,*
      *রাণীরে কহিতে যায়।*
*রাধিকা দুলারি,দেখিতে চললি,*
      *কহয়ে শেখর রায়।।*
 *🌻সামনে বিবিধ রন্ধনের সামগ্রী সজ্জিত,এবারে রাধারাণী রন্ধন করছেন আর কখনও দেখছেন উনানের আগুন ঠিক আছে  কি না,* *আবার পাকপাত্র ধরছেন,আবার সময়মত তা নামিয়ে রাখছেন।* *এইভাবে শ্রীমতী রন্ধন কার্য‍্য করছেন।* *ওদিকে শ‍্যামসুন্দর স্নান ও বেশভূষা সমাপন করলেন,মায়ের আদেশে ইষ্টমন্ত্র জপের জন্য তাঁর ভজনের গৃহে প্রবেশ করেন,এবং মনে মনে রাধামন্ত্র জপ করেন।* *প্রেমময়ী রাধা সব সময়ের জন‍্যই তাঁর(কৃষ্ণের)অভীষ্ট। নাম জপ করতে করতে নামী মূর্ত হয়ে উঠল, দর্শন উৎকন্ঠায় প্রাণ অধীর।* *এখুনি একটু দর্শন চাই,আর প্রতীক্ষা সহ‍্য হয় না।*

*🌼মহাজন তাঁর দর্শন উৎকন্ঠা প্রকাশ করতে গিয়া বলেছেন---*
*তুয়া পথ চাই,রাই রাই বলি,*
      *গদগদ বিকল পরাণ।*
*ক্ষণ এক কোটি,কোটিযুগ মানত,*
      *হরি বল্লভ পরমাণ।।*
*দর্শনোৎকন্ঠায় অধীর শ‍্যাম,পাকশালার জানালার পথে উঁকি দিয়া দেখছেন,শ্রীমতী রন্ধন করছেন,মাথায় কাপড়(ঘোমটা)নেই,* *বেশভূষা আলুথালু, রাধা সৌন্দর্য্যে পাকশালা উদ্ভাসিত,* *শ্রীঅঙ্গ হতে তড়িৎকান্তি ঝলকে ঝলকে উৎসারিত করছে।* *অপূর্ব চাক্ চিক‍্য শোভা-সম্ভারে উদ্ভাসিত শ্রীরাধার রূপ।* *নবযৌবনের কমণীয় কান্তিতে অতীব মনোহরা।* *রাধা রূপ দর্শন করে শ‍্যামের চরণ চলে না,(কারণ ধ‍্যানের বস্তু মিলে গেছে,)* *হঠাৎ শ্রীমতী শ‍্যামনাগরকে গবাক্ষের ধারে দেখে ফেললেন, লজ্জায় মস্তকে ঘোমটা দিতে পারছেন না,সখীগণ বুঝতে পেরে অবগুন্ঠন টেনে দিলেন।* *তখন রাধা বললেন,তোরা যদি আমার প্রাণবঁধূকে দেখেই ছিলি,আমাকে বলিসনি কেন?ছি-ছি কি লজ্জা!সখীগণ বললেন,না,না,রাই আমরা এখনি দেখলাম।* *তুই দেখলি না!আমরা বাটনা বাটছিলাম? এইভাবে পুনঃ নয়নে নয়নে মিলন হল।* *আর শ্রীকৃষ্ণ ভাবছেন,আমার ভোজনের জন্য শ্রীমতী কত পরিশ্রম করে রন্ধন করছে!আগুনের কাছে থেকে মুখখানি আরক্তিম ও স্বেদার্দ্র হয়েছে।* *অর্থ‍্যাৎ মুখখানি লাল ও ঘোমে গেছে।* *দাসী মুখখানি মুছিয়ে দিচ্ছে,আর রাইধনি ইঙ্গিতে জানাচ্ছেন, চোখের ঈশারায় জানাচ্ছেন,ছোটমা আছেন, এখন যাও,রাধার নয়নের ঈশারায় শ‍্যাম মোহিত।* *কারণ মদনমোহনের মোহনকারী আমার শ্রীরাধা। তাই তিনি সম্মোহিনী।এইভাবে রন্ধন সমাপ্ত হল,রাইধনি একটু পাকশালায় বিশ্রাম করলেন।* 
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*রামের জননী,দিছেন আপনি,*
      *রাধিকা রাঁধিলা যত।*
*সুগন্ধি ওদন, বিবিধ ব‍্যঞ্জন,*
      *তাহা বা কহিব কত।।*
*বিধি অগোচর,যত উপহার,*
      *দিছেন যশোদা মায়।*
*রাধার বদন,দেখি অচেতন,*
     *হইলা নাগর রায়।।*
*অরুচি দেখিয়া,আকুল হইয়া,*
      *কহয়ে নন্দের রাণী।*
*রাধা রসবতী, কর্পূর মালতী,*
      *তোমার লাগিয়া আনি।।*
*তুমি না খিলে,রাই না আসিবে,*
       *স্বরূপ কহিলাম তোরে।*
*বিশাখা ললিতা,আর কুন্দলতা,*
      *ঠারিয়া কহিছে মোরে।।*
*মায়ের বচনে,পাওল চেতন,*
      *নাগর শেখর কান।*
*রাইয়ে সুখ দিয়া,আকন্ঠ পুরিয়া,*
     *করল ভোজন পান।।*
*পদকর্তা শেখর রায়ের পদ*

*🌻🌻শ্রীকৃষ্ণের ভোজন🌻🌻*
    *ভোজন করু যদুরায়।*
*রোহিনী মায়, করত পরিবেশন,*
      *রসবতী আনি যোগায়।।*
*ইষদবলোকন,হাস মনোরম,*
     *আনন্দের নাহি ওর।*
*দুহুঁ দরশনে দুহুঁ,পুলক কলেবর,*
      *পিরীত রভস রস ভোর।।*
 *করল আচমন,কপুর খপুর পুন,*
       *রঙ্গিণী আদরে দেল।*
*দীনবন্ধু ভণ,ধনি করি ভোজন,*
      *নিজ মন্দির চলি গেল।।*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*রাধিকার হস্ত স্পর্শে সর্বান্ন-ব‍্যঞ্জনে।*
*ভোজন করেন কৃষ্ণ অমৃত আস্বাদনে।।*
*স্বাদু পাইয়া নিজ নেত্র ভৃঙ্গ পাঠাইয়া।*
*রাই-মুখ পদ্মমধু পিয়ে হৃষ্ট হইয়া*
*রাধিকাহ নিজ নেত্র কটাক্ষ প্রণালী।*
*পাঠাইয়া পিয়ে কৃষ্ণ লাবণ‍্য সকলি।।*
*কৃষ্ণমুখ মধুরিমা দেখি সুবদনী।*
*হরিষে ব‍্যাকুল চিত্তে কিছুই না জানি।।*
*(পদকর্তা যদুনন্দন ঠাকুরের পদ)*

*🌻পরস্পরের দর্শনে গত রজনীতে আস্বাদিত বৃন্দাবন ক্রীড়ার কত কত মধু স্মৃতি মনে উদিত হচ্ছে।* *যাইহোক, মা যশোদা এবার রাধারাণীর ভোজনের প্রতি নজর দিয়েছেন।যশোমতী ভোজন করাতে চান কিন্তু রাই লজ্জাবতী,ভোজন করতে চান না।* *এবারে যশোমতী নানাপ্রকার শপথ করিয়ে ভোজন করাতে চান।* *কতই স্নেহ,নিজ মা হতেও বেশী স্নেহ করেন মা যশোদা।* *রাধাকে বলছেন আমি কি তোমার মা কীর্তিদা হতে কি ভিন্ন?তুমি কীর্তিদা আলয়ের মতই আমার আলয়েও স্বচ্ছন্দে সখীগণ সঙ্গে ভোজন কর,হাস পরিহাস,শয়ন ও উপবেশন কর।* *রাধারাণীর কাছে বসেই শ্রীকৃষ্ণের মত রাইধনিকে ভোজন করাতে চাইছেন মা যশোমতী।* *কিন্তু রাধারাণী কৃষ্ণাধরামৃত ছাড়া কিছুই ভোজন করেন না,ধনিষ্ঠা গোপনে উহা খাবার দ্রব‍্যে মিশিয়ে দিলেন, বাৎসল‍্য প্রেমের মূরতি মা,স্নেনবশে নিজের হাতে তুলে ভোজন করাচ্ছেন।* *আচমনান্তে শ্রীমতীকে যাবটে ব‍্যগ্রচিত্তা দেখে মা বুকে জড়িয়ে পরম স্নেহভরে ভালবাসা দিতে দিতে বলছেন-----*
*********************************
*ও মোর বাছনি ধনি,সতীকুল শিরোমণি,*
      *ক্ষণেক বিশ্রাম কর সুখে।*
*না হয়ে উছর বেলা,সখীসঙ্গে কর খেলা,*
      *কর্পূর তাম্বুল দাও মুখে।।*
*রূপ-গুণ কাজ তোর,পরাণ নিছনি মোর,*
      *শুতিয়া স্বপনে দেখি সদা।*
*তোমা হেন গুণনিধি,আমারে না দিল বিধি,*
      *হৃদয়ে রহিয়া গেল সাধা।।*
*ধাতার মাথায় বাজ,যে করয়ে হেন কাজ,*
      *আমারে ভাঙ্গিলা কিবা দোষে*
*বাছার বিবাহ তরে,হেন নারী নাহি পুরে,*
       *চাহিয়া না পাই কোন দেশে।।*
*যশোদা বিষাদ কথা,শুনি বৃষভানু সুতা,*
      *বদনে বসন দিয়া হাসে।*
*পুলকে পূরিল গা,মুখে নাহি সরে রা,*
      *ভাসিল রাণী নেহ রসে।।*
    *🌻পদকল্পতরু গ্রন্থ হতে🌻*
*🌼এইসব কথা বলতে বলতে বাৎসল‍্যময়ী মা যশোদার নয়ন অশ্রুধারায় শ্রীমতীকে অভিষিক্ত করছেন।* *পদকর্তা এইসব কথা শুনে বলছেন----------------*
*কাশ্মীর শ্রী গৌরচ্ছবি,*
*কুঞ্জে জ‍্যোতির্ময়ী দেবী,*
*মূর্তিরূপে ব্রজে বিরাজিতা।*
*পরম আনন্দ ঘন,সেই ব্রজেন্দ্রনন্দন,*
       *তাঁর অনুরাগ সুঘটিতা।।*
*যৌবনের নবোদয়,সৌন্দর্য‍্যের সমাশ্রয়,*
     *ললিত লাবণ‍্য লীলাময়।*
*নিভৃত নিকুঞ্জ-কেলি,অমৃত নিছিয়া ফেলি,*
      *কেলিকুঞ্জ করে মধুময়।।*
*রাধিকার কিবা গুণ,গোকুলে গোবিন্দ সম,*
       *ব্রজেন্দ্র-গৃহিনী প্রেমপাত্র।*
*ভণয়ে শ্রীসরস্বতী,রাইরূপে দিবারাতি,*
      *বরজ মন্ডল উদ্ভাসিত।।*
&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&
*🌻এখানেই রহিল,ভুল ভ্রান্তি মার্জনীয়🌻*
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
👇👇👇এই লিখনী 📚 PDF 📚 ক্লিক করুন 👇👇👇
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧               
 ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
আমায় দেওয়া ওনার এই অমূল্য লিখনী সেবা, তা সকলের মধ্যে প্রকাশ করলাম। ওনার এই অমূল্য দান সমগ্র বৈষ্ণব সমাজ অনন্তকাল মনে রাখিবে।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧



শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html