🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🔙 পূর্ব লীলা 👉 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 দ্বিতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath2.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২১)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🌺নীলাচলে মহাপ্রভু🌺*
   *🔷পুরীর রাজাদের বিবরণ🔷*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🍀চৌরগঙ্গ রাজ‍্য অধিকারের পর রাজ‍্য-বিস্তারে প্রয়াসী হন এবং বঙ্গদেশ পর্যন্ত অধিকার করেন।এই বংশের ষষ্ঠ নৃপতি অনঙ্গভীমদেব অত‍্যন্ত খ‍্যাতনামা রাজা ছিলেন।ইঁনার রাজত্বকালে শ্রীশ্রীজগন্নাথ-মন্দিরের পুনঃ সংস্কার হয়েছিল। এবং পরমহংস বাজপেয়ীর হাতে মন্দিরের দেখাশোনা এবং নির্মাণের ভার অর্পিত হয়।১১৩১ শকাব্দে এই সংস্কার করা হয়, এবং অনঙ্গভীমদেব দ্বারা এই কর্ম সম্পাদিত হয়।এই বৃত্তান্ত জগন্নাথ-মন্দিরের প্রস্তরে লিপিবদ্ধ রয়েছে। "শকাব্দে রন্ধ্র শুভ্রাংশুরূপ-নক্ষত্র-নায়কে।প্রাসাদঃ কারিতোহনঙ্গভীমদেবেন ধীমতা "।। এই রাজা অত‍্যন্ত বিষ্ণুভক্ত ছিলেন, এমন কি তিনি তাঁর রাজ‍্যে ঘোষণা করেছিলেন, "এ রাজ‍্যের রাজা শ্রীশ্রীজগন্নাথ,আমি তাঁর দাস মাত্র।" ইনি রাজ‍্যবিস্তার সম্বন্ধে ত্রুটি করেননি।কৃষ্ণানদীর ভূভাগ হতে গঙ্গানদী পর্যন্ত তাঁর রাজ‍্যের সীমা পরিবর্ধিত হয়েছিল।এই বংশের রাজাদের ভিতর অনঙ্গভীমদেবের পর, এই বংশীয় সপ্তম রাজা লাঙ্গুলা নরসিংহদেবের সময়,কারুকার্য‍্যখচিত শিল্প-নৈপুণ‍্যের পরাকাষ্ঠার দৃষ্টান্তস্থল, কোণার্কের মন্দির নির্মিত হয়, যা দেখলে উড়িষ‍্যাবাসীরা শিল্পনৈপুণ‍্যে অনভিজ্ঞ ছিলেন,একথা বলা যায় না।এই নরসিংহদেবের সময় বোধহয়,নরেন্দ্র সরোবর খনিত হয়েছিল।*
*এই বংশীয় দ্বাদশপুরুষ রাজা নিঃশঙ্কভানুদেবও বিশেষ বিখ‍্যাত রাজার মধ্যে গণ‍্য ছিলেন।তাঁর সময়েও রাজ‍্য অক্ষুণ্ণ ছিল এবং ধর্মবিশ্বাস অটল ছিল।তাঁর সময় বালধূপের প্রচার হয়, সুতরাং জগন্নাথ-মন্দিরের সঙ্গে তিনি বিশেষ সম্পর্কিত। ইঁনার পরবর্তী উনবিংশ পুরুষ রাজা কপিলদেবও, বিষ্ণুভক্তি পরায়ণ,রাজ‍্যশাসনে সমানভাবে পারদর্শী, ও শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের কৃপাপাত্র ছিলেন।ইঁনার সময়ে বিশেষ স্মরণীয় ঘটনা এই যে,ইঁনার ঔরসে প্রধানা মহিষীর গর্ভে আঠারটি পুত্র জন্মে, এবং দাসীর গর্ভে এক পুত্র জন্মে,তাঁর নাম পুরুষোত্তম দেব।শ্রীশ্রীজগন্নাথ কপিলদেবকে স্বপ্নযোগে আদেশ করেন যে, "দাসীপুত্র পুরুষোত্তমকে যুবরাজ‍্যে অভিষিক্ত কর"।যদিও কপিলদেবের অষ্টাদশ পুত্র রাজ‍্যের প্রকৃত সত্ত্বাধিকারী,তবুও সেই নিয়ম উলঙ্ঘন করে,ভগবদ্ ভক্ত রাজা কপিলদেব, ভগবানের আদেশ প্রতিপালন করে,১৪৭৯ খ্রিষ্টাব্দে পুরুষোত্তমদেবকে যুবরাজ‍্যে অভিষিক্ত করেন। পুরুষোত্তমদেব অত‍্যন্ত বিষ্ণুভক্ত ছিলেন,ইনিও অনঙ্গভীমের মত ঘোষণা করেছিলেন, "এই রাজ‍্য শ্রীশ্রীজগন্নাথের, আমি কেবল তাঁর কিঙ্করমাত্র"।ইঁনার সময়ে ভেতরের দেওয়াল নির্মিত হয়।তাঁর ভক্তিবলে ভগবান শাস্ত্রীয় নিয়ম উল্লঙ্ঘন করে,তাঁকে রাজ‍্য প্রদান করলেন,অষ্টাদশ ভাইদের শত্রুতা হতে রক্ষা করলেন ; অবশেষে ভক্তের অধীন ভগবান,এটি চিরস্মরণীয় করবার জন্য,বলরাম সহ,কাঞ্চিযুদ্ধে যোদ্ধাবেশে স্বয়ং যুদ্ধ করেছিলেন।এই বৃত্তান্ত অন‍্যত্র লিখিত হয়েছে।পুরুষোত্তমদেব পরম পন্ডিত ছিলেন,তিনি সমস্ত শাস্ত্র মন্থন "মুক্তিচিন্তামণি"প্রণয়ন করেন।*
*এর পরেই,আমাদের সর্বগুণধর, সুপন্ডিত,পরমভক্ত,বীরপুরুষ, রাজা প্রতাপরুদ্র পিতৃসিংহাসনে আরোহণ করেন।এই বংশে সর্বগুণোপেত এরকম রাজা আর জন্মগ্রহণ করেননি,এরকম মহাপুরুষ অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করে থাকেন।১৫০৪ খৃষ্টাব্দে ইনি সিংহাসন আরোহণ করেন।ইঁনার রাজত্বকাল যদিও বিশেষ স্মরণীয়, এবং ইতিহাস আদরে বক্ষে ধারণ করে চিরকাল পোষণ করবে,তথাপি ইহাকে একেবারে নিষ্কন্টক বলতে পারি না।কমল বা পদ্ম যেমন কাঁটাশূন‍্য হয় না,গোলাপ গাছে যেমন কাঁটা আছেই, সেইরকম এই রাজত্বকাল যুদ্ধ-বিগ্রহে পরিপূর্ণ ছিল ; ইঁনার রাজত্বের সময়ে মুসলমানদের সহিত যুদ্ধ চলেছিল, এইজন‍্য রাজ‍্যে একেবারে নিরবচ্ছিন্ন (একটানা)শান্তি ছিল না।শ্রীগৌরাঙ্গের কৃপাতে কতকদিনের জন্য যুদ্ধাদি স্থগিত হয়েছিল,এই অবসরে প্রতাপরুদ্রের আধ‍্যাত্মিক সৌভাগ্যসূর্য‍্যের উদয় হল।শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গদেব নবদ্বীপ হতে সন্ন‍্যাস গ্রহণ করে পুরীতে উপস্থিত হন।জীব-উদ্ধার তাঁর ব্রত।নিজে শ্রীজগন্নাথের মহিমা বিস্তার করবেন,তাই জগন্নাথে উপস্থিত।মহাপ্রভুর উপস্থিত হবার পর,দেশময় এই আন্দোলনে,এক মহাশক্তির আবির্ভাব হল।ছোট,বড়, ধনী,নির্ধন,রাজা,প্রজা,স্ত্রী,পুরুষ সকলের মধ্যেই এই শক্তি কাজ করতে লাগল।এই শক্তি প্রথমে সার্বভৌম ভট্টাচার্য্যেতে সংক্রামিত হল,তারপর মন্ত্রী রায় রামানন্দ আক্রান্ত হলেন।উভয়েই একেবারে পাগল হয়ে গেলেন। ইতঃপর রাজার পালা,অল্প দিন মধ্যে,তিনিও ঐ দলভুক্ত হলেন।এই উন্মাদনায় সমস্ত দেশ পূর্ণ হয়ে গেল।মহাপ্রভু ঘরে ঘরে পূজিত হতে লাগলেন,সকলেই গৌরভক্ত হলেন। এইরকমে উড়িষ‍্যাতে এক নবযুগের সূচনা হল।এই আনন্দস্রোত এখানে আঠার বৎসর ব‍্যাপি কাজ করেছিল।যেমন আনন্দ,সেই পরিমাণে নিরানন্দ আসে।যখন মহাপ্রভু অপ্রকট হলেন,রামরায় এবং প্রতাপরুদ্র শোকে অধীর হলেন,স্বরূপ ও দামোদর প্রাণত‍্যাগ করলেন।ইনার বিস্তারিত বিবরণ ঠিক জায়গা মত করা হবে।মহামহোপাধ‍্যায় সদাশিব মিশ্র মহাশয়ের "জগন্নাথ মন্দির" গ্রন্থ হতে আমরা অনেক সাহায্য পেয়েছি। এই গ্রন্থে কিছু মতানৈক‍্য ছিল তা লিখিলাম না।যাইহোক, প্রতাপরুদ্রের দুই পুত্র,তাঁরা অল্পসময় রাজত্ব করে কালগ্রাসে পতিত হওয়ায়,এই রাজবংশ বিলুপ্ত হয়ে গেল। মন্ত্রী গোবিন্দ বিদ‍্যাধর কতদিন রাজত্ব করলেন।তারপর মুকুন্দ হরিচন্দনকে প্রজারা রাজা করেন।এই বংশ তিন পুরুষ রাজত্ব করেছিলেন।এই মুকুন্দদেবের সময়,কালাপাহাড় সুলেমানের সেনানায়ক হয়ে ১৫৬৭ খৃঃ অব্দে পুরী আক্রমণ করে এবং মুকুন্দদেবকে পরাজিত করে পুরী অধিকার করে।এই যুদ্ধে মুকুন্দদেবের মৃত‍্যু হয়।*
*কালাপাহাড় কেবল রাজ‍্য অধিকার করে সন্তুষ্ট না হয়ে জগন্নাথের মূর্তি চিল্কাহ্রদ হতে এনে,তাকে দগ্ধ করে উড়িষ‍্যাবাসী বিশার মহান্তি একজন পরম ভক্ত,এই দগ্ধ মূরতি সংগ্রহ করে,কুজঙ্গ রাজার কাছে দেন,তিনি নাভিস্থ ব্রহ্মমণি নতূন মূর্তিতে স্থাপন করে,মূর্তি প্রতিষ্ঠা করলেন।কালাপাহাড়ের বৃত্তান্ত আগামীতে পাওয়া যাবে।মুকুন্দদেবের মৃত‍্যুর পর,তাঁর পুত্র কতদিন রাজত্ব করেন।এই বংশ শেষ হলে,রাজ‍্য মধ্যে প্রজাদের ভিতর নানারকম আত্মকলহ উপস্থিত হয়।পরে ১৫৭৮ খ্রীঃ অব্দে প্রজাগণ জনার্দন বিদ‍্যাধরের পুত্র রামচন্দ্রদেবকে রাজা করলেন।রামচন্দ্রদেব বিশেষ ভাগ‍্যবান।কারণ তাঁর রাজ‍্যাধিকার,মোগল সম্রাট আকবরের হিন্দু সেনাপতি টোডরমল ঘোষণা করলেন, এবং তারপরে মানসিংহ তাঁর সম্মান আরও বৃদ্ধি করলেন।গঞ্জাম ইঁনার রাজত্বের অধীন করে দিলেন।রাজা রামচন্দ্রদেব জগন্নাথের মূর্তি কুজঙ্গ রাজার কাছ হতে এনে পুনরায় নতূন মূর্তি শাস্ত্রমতে গঠন করে প্রতিষ্ঠিত করলেন।ইনি আমাদের পরম বন্ধু।*
*১৭৬১ খ্রীষ্টাব্দে এই মন্দিরের ভার মহারাষ্ট্রদের হাতে অর্পিত হয়।এইবারের হস্তান্তর আপোষ ভাবে হয়েছে।মহারাষ্ট্রীয় রাজারা জগন্নাথের মন্দির সম্বন্ধে কোনও উন্নতি সাধন করেছিলেন কি না,তা জানা যায় না। কিন্তু মঠের যত সম্পত্তি ছিল,তার অধিকাংশ মহারাষ্ট্র রাজাদের সময় প্রদত্ত হয়েছে।এই মন্দির ১৭৬১ খৃষ্টাব্দ হতে ১৮০২ খৃঃঅব্দ পর্যন্ত মহারাষ্ট্র অধীন ছিল। এই সময় শঙ্করাচার্য‍্যের মতানুযায়ী সেবা পরিত‍্যক্ত হয়ে,বৈষ্ণবমতে (রামানন্দি মতে)সেবা আরম্ভ হয়, এবং এখন পর্যন্তও সেইরকমে সেবা চলছে।১৮০৩ খৃষ্টাব্দে মহারাষ্ট্রদের পরাজয় হয়, এবং গভর্ণমেন্ট এই মন্দিরের শাসনভার গ্রহণ করেন। রামচন্দ্রদেবের বংশধরগণ Superintendent স্বরূপে নিযুক্ত হন, এবং তাঁরা ২৩৩৩|- টাকা বৃত্তি পান।সেই হতে অদ‍্যাবধি (মুকুন্দদেব পর্যন্ত )Government এর অধীনে আছে।এখন Manager নিযুক্ত হয়ে শ্রীশ্রীজগন্নাথের সেবার বন্দোবস্ত হচ্ছে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙌🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২২)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🌳নীলাচলে মহাপ্রভু🌳*
        *🌲শ্রীমন্দিরের বিবরণ🌲*
       🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲
*☘শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের মন্দির সমুদ্র হতে প্রায় এক মাইল দূরে নীলাচলে অবস্থিত।মন্দিরের চারটি দ্বার=পূর্বদিকে সিংহদ্বার,তার দুইদিকে দুইটি প্রস্তরময় সিংহ আছে ; উত্তরদিকে হস্তিদ্বার ; পশ্চিমদিকে খাঞ্জাদ্বার,দক্ষিণদিকে অশ্বদ্বার।মন্দিরের চারিদিকের প্রাচীরকে "মেঘনাদ"বলে।মেঘনাদ ২৪ ফিট্ উচ্চ,২২ফিট্ প্রস্থ।এটি উত্তর দক্ষিণে ৬৭৬ ফিট ও পূর্ব পশ্চিমে ৬৮৭ ফিট। সিংহ দ্বারে একটি অরুণ স্তম্ভ আছে ; স্তম্ভটি কৃষ্ণপ্রস্তর নির্মিত,বাইশহাত উচ্চ। এটি একটি প্রস্তর কেটে খোদা হয়েছে। এই দরজায় প্রকান্ড দুই সিংহ আছে।এই দরজায় প্রবেশ করে ডান ধারে,যে মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়,তার নাম পতিত-পাবন। ভগবান পতিত-পাবনরূপী হয়ে দ্বারদেশে অবস্থান করছেন। যারা মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করতে পারে না,যথা=হাড়ি,ডোম,মেথর,ধাঙ্গড়, ম্লেচ্ছ এই সমস্তকে কৃপা করবার জন্য ভগবান পতিতপাবন বরাভয় হাতে দরজাতে অবস্থান করছেন।*
*বাম পার্শ্বে সিদ্ধ হনুমান ও রাধাকৃষ্ণ আছেন।প্রথমে এই পতিতপাবন দর্শন করতে হয়।এই দরজাটি পার হলে,বামদিকে একটি মন্দির পাওয়া যায়,তাতে ঁকাশীর বিশ্বেশ্বর মহাদেব বিরাজমান।এই জায়গায় রামাভিষেক নামে একটি জায়গা আছে ; সেই জায়গা হতে কতকগুলি সিঁড়ি নেমে এসেছে--তাকে বাইশ পৈঠা বলে।ক্রমে উপরের দিকে উঠে আর একটি দরজা পাওয়া যায়।এই দ্বারে খাজা,গজা ইত্যাদি মিষ্ট প্রসাদ বিক্রয় হয়।উত্তরদিকের হস্তিদ্বারে প্রবেশ করে,ডান ধারে শীতলাদেবী,সন্নিকটে সোনাকূপ ও তার দক্ষিণ দিকে বৈকুন্ঠধাম দেখতে পাওয়া যায়।*
*বৈকুন্ঠধামে একটি মন্দির আছে। যখন জগন্নাথদেবের নতূন কলেবর হয়,তখন জগন্নাথদেবের পুরাতন বিগ্রহ এই বৈকুন্ঠধামে রাখা হয়।এই মন্দির সর্বদাই বন্ধ থাকে।মন্দিরে একটি মহাদেব প্রতিষ্ঠিত আছেন।এই মন্দিরের কাছে,মাধব নাটা অর্থ‍্যাৎ মাধবীলতা আছে।বামদিকে লোকনাথ মহাদেব ও ঈশানেশ্বর শিব মন্দির ; এই স্থানের উত্তর ও পূর্ব কোণে আনন্দবাজার,এই জায়গায় অন্ন মহাপ্রসাদ বিক্রয় হয়।তারকাছে স্নানবেদী ও চাহিনী মন্ডপ।এর উত্তরদিকে অন‍্য একটা দরজা আছে,তার সামনে প্রকান্ড দুইটি হাতী আছে। পশ্চিমদিকে খাঞ্জা দ্বার=এই দ্বারে প্রবেশ করে,বামদিকে হনুমান,পার্শ্বে শিবমন্দির এবং নতূন ধানকুটির পাওয়া যায় ; দক্ষিণদিকে সেতুবন্ধ রামেশ্বর কল্পিত স্থান।এইখানে অন‍্য একটি দ্বার আছে, তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়।দক্ষিণদিকে অশ্বদ্বার,এখানে বিরাট একটা হনুমান মূর্তি আছে।এই দ্বারে প্রবেশ করে,ডানদিকে একটি মন্দিরে শ্রীশ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভুর ষড়্ ভূজ মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়।তাঁর জীবনী ও অবতারত্ব সম্বন্ধে পশ্চাৎ যথাস্থানে লিখিত হয়েছে।কতগুলি সিঁড়ি পার হলে,অন‍্য একটি দরজা পাওয়া যায়।*
*শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের মন্দির চারভাগে বিভক্ত=মূলমন্দির,জগমোহনমন্দির, নাটমন্দির ও ভোগমন্দির।মূলমন্দিরের অন‍্য একটি নাম মণিকোঠা। সেইজায়গাটি অন্ধকারপূর্ণ,সবসময়ই প্রদীপ রাখা হয়।সেই জায়গায় রত্নবেদী আছে,সেটি ষোল ফিট দীর্ঘ এবং তের ফিট প্রস্থ এবং চার ফিট উচ্চ কৃষ্ণপাথর দ্বারা নির্মিত।এতে লক্ষ শালগ্রাম শিলা আছেন।এর উপরে শ্রীশ্রীজগন্নাথ,শ্রীশ্রীবলরাম,শ্রীশ্রীমতী সুভদ্রা ও শ্রীশ্রীসুদর্শন চক্র স্থাপিত, ও সুবর্ণাচ্ছাদিত ভূদেবী এবং রৌপ‍্যাচ্ছাদিত সরস্বতীদেবী, জগন্নাথরূপী মাধবদেব সহ বিরাজমানা।শ্রীশ্রীজগন্নাথ দর্শনকালে রত্নবেদী পরিক্রমণ করতে হয়।জগমোহনে লম্বা লম্বা দুইটি চন্দন কাষ্ঠ উত্তর দক্ষিণ প্রস্থে লোহার শিকলে বাঁধা আছে। ভিতরে সব সময় প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। সকালবেলা,মঙ্গল আরতির পর একবার এবং রাত্রে একবার মণিকোঠায় প্রবেশ করতে পারা যায়। জগমোহনের সামনে প্রকান্ড প্রকান্ড কপাট আছে।নাটমন্দিরে নাচ গান হয়ে থাকে। নাটমন্দিরের মধ্যেও পূর্বরূপ সামনে দুইটি চন্দনকাঠ লোহার শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।নাটমন্দিরে,যার যে ভাবে ইচ্ছা,ভজন সাধন করতে পারেন।যদিও এস্থান কোলাহলপূর্ণ,তবুও এস্থানে ভজনসাধন করলে,মনঃস্থির ও ভক্তির উদ্দীপনা হয়,এইরূপ অনেক সাধুর মত।এই মন্দিরে,ভোগ মন্দিরের সামনে একটি স্তম্ভ আছে।তার উপর একটি গরুড় মূর্তি আছে।স্তম্ভের সামনে যে একটি গর্ত দেখতে পাওয়া যায়,তা শ্রীশ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভুর প্রেমাশ্রুপতনে হয়েছে বলে কথিত হয়।মহাপ্রভু প্রত‍্যেকদিন ঐ স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়ে শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের দর্শন ও অজস্র অশ্রুপাত করতেন।তিনি এইভাবে এই জায়গায় থেকে,আঠার বৎসর পর্যন্ত,শ্রীমুখ দর্শন করেছিলেন।মহাপ্রভুর নয়নের জলে গর্ত তৈরী হয়েছে,একথা অনেকের কাছে আশ্চর্য‍্য বোধ হতে পারে, কিন্তু যিনি শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃত পাঠ করবেন,তাঁর এ সন্দেহ থাকবে না।তিনি জানতে পারবেন,মহাপ্রভুর নয়নে যেন সুরধূনী প্রবাহিত হত, পিচকারীর জলের মত সজোরে বাহির হত। এই অশ্রু অবিরত বাহির হওয়াতে এইরকম গর্ত হয়েছে।গরুড় স্তম্ভের উপর হাত রেখে মহাপ্রভু দর্শন করতেন।অঙ্গুলি চিহ্ন এবং নিচে চরণচিহ্ন অদ‍্যাবধি বতর্মান আছে।মহাপ্রভুর ভক্তগণ শ্রীশীচরণযুগল তুলে নিয়ে মন্দিরের উত্তরদিকে,একটি ছোট মন্দির নির্মাণ করে,তাতে রক্ষা করেছেন।ঐ চরণযুগল বোধহয় সকলের পদদলিত হয় বলে অন‍্য জায়গায় রাখা হয়েছে।এখনও অনেক লোকে,এই স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়ে প্রথমে দর্শন করে থাকে।এই স্থানে প্রদীপ দান এবং পূজাদি হয়ে থাকে।"ভোগমন্দির"= এখানে জগন্নাথদেবের অন্নভোগ হয়ে থাকে।নাটমন্দিরের স্তম্ভে এবং ভোগ মন্দিরের গায়ে,অনেক দেবদেবীর মূর্তি অঙ্কিত আছে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৩)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *🌹নীলাচলে মহাপ্রভু🌹*
        *🌻শ্রীমন্দিরের বিবরণ🌻*
        ∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
*🍀জগন্নাথদেবের মূলমন্দিরের চূড়া ১৯২ ফিট উঁচা।এটি বিষ্ণুচক্র ও ধ্বজা দ্বারা সুশোভিত।উৎকলের রাজা গজপতি বংশজ অনঙ্গভীমদেবের সময়ে,১১১৯ শকাব্দে শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের মন্দির সংস্কার করা হয়। এই মন্দিরের সংস্কার কাজ,দেশবাসীদের স্থাপত‍্য বিদ‍্যার পরিচায়ক।পরমহংস বাজপেয়ী সেবা কার্য‍্যে নিযুক্ত হন।অনঙ্গভীমদেব পুরুষোত্তমক্ষেত্রে বহু সংখ্যক দেবালয় নির্মাণ করে দিয়েছিলেন।জগন্নাথের সেবার জন্য ১২০ জন নর্তকী আছে।এরা ভোগের সময় ও অন‍্যান‍্য সময়, নৃত্য করে থাকে।ভোগের সময় মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। জগন্নাথের মন্দিরের চতুর্দিকে অনেক দেবদেবীর মন্দির আছে ;তা যথাক্রমে নিচে দেওয়া হল। যথা পূর্বদিকে ১)অগ্নীশ্বর শিবমন্দির,এটি একটি গর্তের মধ্যে দর্শন করতে হয়।এ মন্দিরের কাছে দিয়ে যে রাস্তাটি দক্ষিণদিকে গিয়েছে,তা নতূন রন্ধনশালায় মিলেছে।পূর্বদিকে রামজীউর মন্দির। দক্ষিণদিকে ও পূর্ব কোণে নতূন রান্নাঘর,সেই দিকে ভান্ডার ও চূণাকোঠার ঘর। গঙ্গা-কূপ,যমুনা-কূপ, ময়দা-ঘর, ভেট মন্ডপ এইগুলি কিছু বাইরে দিকে পড়েছে।দক্ষিণ দিকের ভিতরে ২) সত‍্য নারায়ণ।৩)রাধাকৃষ্ণ।৪)ছাইল ঠাকুর।৫)অক্ষয় বট।৬)গণেশের মন্দির।৭)মার্কন্ড মহাদেব।৮)ইন্দ্রাণী। ৯)সর্বমঙ্গলা।১০)শিবমন্দির।১১)গণেশ।১২)শিবমন্দির।১৩)পাদপদ্ম।১৪)জগন্নাথদেব। ১৫)রাধাকৃষ্ণ।১৬)অনন্ত।১৭)বাসুদেব।১৮)মুক্তিশ্বর।১৯) ক্ষেত্রপাল।২০) মুক্তি-মন্ডপ ; এই মন্ডপে বসে, ব্রহ্মা জগন্নাথের প্রতিষ্ঠাকার্য‍্য সমাপন করেছিলেন। এই জন্য এই জায়গা অতি পবিত্র।এখানে অত্রত‍্য (এখানকার)মঠাধীশ্বর সন্ন‍্যাসী এবং ব্রহ্মচারী ভিন্ন,অন‍্য কারও বসিবার অধিকার ছিল না। ২১)নৃসিংহ।২২)মদনমোহন।২৩) পাদপদ্ম মন্দির।২৪)রোহিণী কুন্ড, চতুর্ভূজ ভুষন্ডী কাক,ও চক্র আছে। রোহিণী কুন্ড শঙ্খের নাভিদেশে অবস্থিত। কারণবারি দ্বারা পরিপূর্ণ। প্রলয়কালে সমুদ্রের জল বাড়লে,রোহিণী কুন্ডের কারণ-জল বেড়ে গিয়ে,শেষে কুন্ডেই বিলুপ্ত হয়েছিল।এই জন্য এই পবিত্র কুন্ডের নাম রোহিণী কুন্ড হয়েছে।রোহিণী কুন্ড এক্ষণে অদৃশ্য প্রায়,সেই জায়গায় একটি চৌতারা বাঁধান জায়গা দেখা যায়। এখন রোহিণী কুন্ডে স্নান করবার সুবিধা নাই।এঁর জল স্পর্শ ও পান করতে হয়।এঁর জল পান করে,বৃদ্ধ কাক শঙ্খ-চক্র গদা-পদ্মধারী চতুর্ভূজ বিষ্ণুমূর্তি ধারণ করে,বৈকুন্ঠধামে গমন করেছিলেন।তারজন‍্য রোহিণী কুন্ড অতি পবিত্র তীর্থ।*
*🌷মার্কন্ডেয়ে বটে কৃষ্ণে রোহিণ‍্যাঞ্চ মহোদধৌ।*
*🌷ইন্দ্রদ‍্যুম্নসরঃ স্নাত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ‍্যতে।।*
*২৫)সিদ্ধিদাতা গণেশ।২৬)বিমলাদেবীর মন্দির।তার সামনেই,একটি হাতীর উপর একটি সিংহ আছে। পশ্চিম-দিকে=২৭) বাসুদেবের মন্দির।২৮)নন্দগোপাল। ২৯)পাদপদ্ম।৩০)সাক্ষীগোপাল। এই মন্দিরে চৈতন‍্য মহাপ্রভুর ষড়ভূজ মূর্তি আছে।৩১)গণেশ।৩২)গোপীনাথ।৩৩)মাখনচোর। ৩৪) সত‍্যভামা।৩৫)কর্ম্মাবাই,যার খিচুড়ি প্রসিদ্ধ।কর্ম্মাতিবাইএর বিবরণ পশ্চাৎ যথাস্থানে দেওয়া গেল। ৩৬)সরস্বতী।৩৭)ষষ্ঠী।৩৮)ভদ্রকালী। ৩৯)লক্ষ্মীনারায়ণ।৪০)লক্ষ্মীর মন্দির। ৪১)নীলমাধব। উত্তরদিকে=৪২) নারায়ণের মন্দির।৪৩)সূর্য‍্য,নারায়ণ। ৪৪)সূর্য‍্যদেব।৪৫)রামলক্ষ্মণ। ৪৬)পাতালমহাদেব,একে "বলি পাতাল"বলে।ভিতরে একটি গর্তের মধ্যে এই মহাদেব আছেন।জায়গাটি খুবই অন্ধকারপূর্ণ।৪৭)শ্রীশ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভুর পাদপদ্ম।৪৮)বিষ্ণু-পাদ-পদ্ম।৪৯)কীর্তন চড়কা।*
*🌺কপোতেশ্বর=বিরাজমন্ডলের ও নীলাচলের মধ‍্যস্থিত কুশস্থলী নামক একটি বড় জায়গা আছা। সেখানে জলাশয়াদি কিছুই ছিল না।একদিন মহাদেব শ্রীজগন্নাথদেবের তপস‍্যা দ্বারা, পৃথিবীতে সকলের পূজাস্পদ হবার ইচ্ছায়,সেখানে একটা জলাশয় করে দেন, এবং ফল-ফুল দ্বারা সুশোভিত করে,কুশস্থলীকে একটি মনোরম স্থান করে তুলেন।প্রভু কঠোর তপস‍্যায় কপোতাকার মূর্তি ধারণ করেছিলেন,এইজন‍্য,সেই জায়গা কপোতেশ্বর নামে পূজিত হয়।এটি সংসারের সুখদুঃখের একমাত্র শান্তিনিকেতন।*
*🌸পূর্বদিকে একটি রাস্তা আনন্দবাজারে গিয়েছে।উত্তরদিকে জগন্নাথের মন্দিরের সংলগ্ন একটি মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ আছেন।অন‍্য একটি মন্দিরে সর্ব্বমঙ্গলা আছেন।এই জায়গায় মন্দির বিষয়ক লেখাপড়ার কাজ হয়ে থাকে।জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের গায়ে,তিনদিকে তিনটি মন্দির আছে,দক্ষিণে বরাহ,এবং পশ্চিমে নৃসিংহদেবের মন্দির।*
🦚🦚🦚🦚🦚🦚🙏🦚🦚🦚🦚🦚🦚
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৪)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *👣নীলাচলে মহাপ্রভু👣*
                *শ্রীমন্দিরের বিবরণ*
               👣👣👣👣👣👣👣
*🌻বামন ও বরাহ=বামন ও বরাহমূর্তির কথা যে লেখা হল,ইঁনারা দশ অবতারের অন্তর্ভুক্ত।বরাহ অবতারেতে ভগবান্ হিরণ‍্যাক্ষকে বধ করেছিলেন।*
*🌷বসতি দশনশিখরে ধরণী তব লগ্না।*
   *🌷শশিনি কলঙ্ককলেব নিমগ্না,*
*🌷কেশব ধৃত-শূকর-রূপ জয় জগদীশ হরে।*
*🌷ছলয়সি বিক্রমণে বলিমদ্ভুত-বামন,*
*🌷পদনখ-নীর-জনিত-জনপাবন,*
*🌷কেশব ধৃত-বামন-রূপ জয় জগদীশ হরে।*
*🌼পশ্চিম দিকে,মন্দিরের নীচে,একটি ছোট মন্দির আছে তার নাম একাদশী মন্দির।প্রবাদ আছে যে,এই জায়গায় একাদশী বাঁধা আছেন,এখানে একাদশীর উপবাস বাধ‍্যকর না হলেও বিধবাগণ একাদশী করে থাকেন ; কিন্তু প্রসাদ উপেক্ষা করতে হবে,এই ভয়ে অনেকে মন্দিরে যান না।ব্রাহ্মণেরা প্রসাদ দ্বারা একাদশী করে থাকেন। অক্ষয়বট------*
*🌷বটরূপধরো বৃক্ষঃ প্রলয়েহপি ন নশ‍্যতি।*
*🌷প্রদক্ষিণন্তু যঃ কুর্য‍্যাৎ দৃষ্ট্বা বৃক্ষং প্রণম‍্য চ।*
*🌷ব্রক্ষহত‍্যাদিকং পাপং তৎক্ষণাদেব নশ‍্যতি।।*
*🌻এই অক্ষয় বট ভগবানের স্বরূপ, মহাপ্রলয়েতেও নষ্ট হয় না,একে দর্শন,স্পর্শন এবং প্রণাম করলে,ব্রক্ষহত‍্যাদি পাপ নষ্ট হয়।শঙ্খের নাভিদেশে অবস্থিত অক্ষয়বট ভগবানের বপুঃস্বরূপ।মহাপ্রলয়ের সময়,চরাচর বিনাশপ্রাপ্ত হবে জেনে,মহাবিষুর সুখশয‍্যারূপী অনন্তদেব,পাতাল হতে উত্থিত হয়ে, বটবৃক্ষরূপে স্থিতি করছেন।মন্দির প্রদক্ষিণ কালে অক্ষয়বট স্পর্শ করতে হয়।*
*🌹বটকৃষ্ণ=*
*🌷মার্কন্ডেয় বটে কৃষ্ণ রোহিণ‍্যাঞ্চ মহোদধৌ।*
*🌷ইন্দ্রদ‍্যুম্নসরঃ স্নাত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ‍্যতে।।*
*🍀বটকৃষ্ণ ও মার্কন্ডেয় সম্বন্ধীয় মায়ার কাহিনী,আগেই বর্ণনা করা হয়েছে। মহর্ষি মার্কন্ডেয় বটবৃক্ষোপরি যে বালক মূর্তি দেখিয়েছিলেন, এবং যাঁর উদর মধ্যে প্রবেশ ও বাহির হয়েছিলেন,তিনি এই বটকৃষ্ণ।বটকৃষ্ণ পাষাণমূর্তি পরিগ্রহ করে,অক্ষয়বটের নিচে বসবাস করছেন।তাঁকে দর্শন করলে,কালভয় দূর হয়, এবং এখানে যা মানস করে,তা পূর্ণ হয়।অনেকে সন্তান হওয়ার মানস করে থাকে।এই বালমূর্তি দেখতে অতি মনোহারিণী।*
*🌻নৃসিংহদেব= ভগবান নৃসিংহদেব, দশাবতারের মধ্যে চতুর্থ অবতার।গীত গোবিন্দ গ্রন্থে ভক্তজয়দেব, এইরকম বর্ণনা করেছেন=*
*🌷তব কর-কমল-বরে নখমদ্ভুতশৃঙ্গং,*
*🌷দলিত-হিরণ‍্য-কশিপু-তনু-ভৃঙ্গং,*
*🌷কেশব ধৃত-নরহরি-রূপ জয় জগদীশ হরে।*
*🌺বিমলাদেবী ও অক্ষয়বটের মধ‍্যস্থানে,মুক্তি মন্ডপের কাছে,নৃসিংহদেব অবস্থিত।তাঁকে দর্শন ও পূজা করলে সর্ব পাপ ক্ষয় হয়।এই নৃসিংহদেব নখদ্বারা হিরণ‍্যকশিপুকে সংহার করেছিলেন ও প্রহ্লাদকে হিরণ‍্যকশিপুর দেওয়া বিষ প্রয়োগ,অগ্নি,জল,পর্বত, সর্পদংশ,হস্তিপদ-দলন ইত্যাদি,সমস্ত বিপদ হতে উদ্ধার করে,তাঁর দ্বারা হরিনাম প্রচার করিয়েছিলেন, এবং অবশেষে প্রহ্লাদের কথা রক্ষা করবার জন্য,স্ফটিক-স্তম্ভ হতে বাহির হয়ে,নৃসিংহ মূর্তি ধারণ করে,হিরণ‍্যকশিপুকে বধ করেছিলেন। অন্তর্ব্বেদী=*
*☘সমুদ্রতীর হতে অক্ষয়বটের মূল পর্যন্ত জায়গাকে ভগবানের অন্তর্ব্বেদী বলে।অন্তর্ব্বেদীর যে কোন স্থানে মৃত‍্যু হলে,জীব মুক্তি পেয়ে যায়।*
*🌷বটসাগরয়োর্মধ‍্যে মুক্তিস্থানে সুদুর্ল্লভে।*
*🌷তীর্থেহস্মিন্ খেচরে বাপি ধ্রুবং তে মুক্তিমাপ্নুয়ুঃ।।*
*🌸শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের নাট-মন্দিরে, গরুড়-স্তম্ভের নিকটবর্তী ভোগ মন্দিরের গায়,কয়েকটি দেবার মূর্তি আছে,তার মধ্যে ঘোড়ার উপর সৈনিক-বেশধারী যে দুই মূর্তি আছেন,তাঁদের একজন জগন্নাথ, আর একজল বলরাম।যিনি কৃষ্ণবর্ণ ঘোড়ার উপরে তিনি জগন্নাথ, যিনি শুভ্রবর্ণ ঘোড়ার উপরে তিনি বলরাম, উভয়েই যুদ্ধের সাজে সজ্জিত হয়ে আছেন।ঢাল,তলোয়ার,ধনু ইত্যাদি প্রত‍্যেকের সঙ্গে রয়েছে।এই সম্বন্ধে একটি কিম্বদন্তী আছে যে,ভক্তকে রক্ষা করবার জন্য জগন্নাথ ও বলদেব যুদ্ধ করতে সৈনিক বেশ ধারণ করেছিলেন।ভক্তের জন্য ভগবান যে,সব কাজই করে থাকেন,তার দৃষ্টান্ত নিচে দেওয়া হল।*
*🔵শ্রীজগনাথক্ষেত্রে বহু মহাপুরুষের জন্ম হয়েছে।রাজাদের মধ্যে অনেকেই মহাপুরুষের মধ্যে গণ‍্য ছিলেন।সেই জন‍্যই ভগবান এই জায়গা,লীলাক্ষেত্রের উপযুক্ত ভূমি মনে করে অবতীর্ণ হয়েছেন।গঙ্গাবংশীয় নৃপতিগণের মধ্যে অনঙ্গভীমদেব একজন প্রবল পরাক্রান্ত ধর্মপরায়ণ নরপতি ছিলেন ; তিনি এই মন্দির-সংস্কার করেন।সেই বংশে নিঃশঙ্কভানুদেবের জন্ম হয়। তিনি অনেক ধর্মকার্য‍্য দ্বারা বিখ‍্যাত হয়েছিলেন।সেই বংশের উনিশতম রাজা কপিলচন্দ্রদেব, রাজ‍্য বিস্তার সহকারে মন্দিরের অনেক উন্নতি সাধন করেছিলেন। ইনি মন্দিরের বাইরের দেওল তৈরী করান।কপিলদেবের প্রধানা মহিষীর গর্ভজাত অষ্টাদশ পুত্র, এবং তাঁর ঔরসে দাসীর গর্ভজাত পুরুষোত্তমদেব নামক এক পুত্র ছিলেন।পুরুষোত্তমদেব জগন্নাথের পরমভক্ত ছিলেন।শ্রীজগন্নাথদেব স্বপ্নযোগে কপিলদেবকে আদেশ করেন যে,দাসীপুত্র পুরুষোত্তমদেবকে যৌবরাজ‍্য অভিষিক্ত করতে হবে। কপিলদেব জগন্নাথদেবের সেই আদেশ শিরোধার্য‍্য করে,প্রকৃত অধিকারী অষ্টাদশ পুত্র থাকা সত্ত্বেও,তাদেরকে যৌবরাজ‍্য অভিষিক্ত না করে,১৪৭৯ খৃষ্টাব্দে পুরুষোত্তমদেবকে যৌবরাজ‍্য অভিষিক্ত করেন।এই উপলক্ষ্যে পুরুষোত্তমদেবের সঙ্গে এই অষ্টাদশ পুত্রের নানা বিবাদ উপস্থিত হয়েছিল। কিন্তু জগন্নাথদেবের কৃপাতে পুরুষোত্তমদেবের কোন ক্ষতি করতে পারেন নাই।পুরুষোত্তমদেব যেমন বিষ্ণুভক্ত, তেমনি সুপন্ডিতও ছিলেন। অষ্টাদশ পুরাণ উপনিষদ্ তন্ত্র এই সমস্ত শাস্ত্র মন্থন করে "মুক্তি-চিন্তামণি" এই গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।*
🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৫)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *🍀নীলাচলে মহাপ্রভু🍀*
               *শ্রীমন্দিরের বিবরণ*

*🌹মুক্তিচিন্তামণি গ্রন্থের প্রারম্ভে লিখেছেন=*
*🌷নানাগম-স্মৃতি-পুরাণ-মহাব্ধিমধ‍্যাদুদ্ধৃত‍্য,*
*🌷বুদ্ধিমথনেন হরেঃ প্রসাদাৎ।*
*🌷বাক‍্যানি যানি বিলিখানি বিমুক্তয়েহহং,*
*🌷সন্তস্তদর্থমনিশং পরিপালয়ন্তু।।*
*🌷বিনাপ‍্যষ্টাঙ্গযোগেন বিনাপ‍্যধ‍্যয়ন‍ানি চ।*
*🌷মুক্তিচিন্তামণিস্ত্বেষ মোক্ষদঃ সর্বদেহিনাম্।।*
*🔶রাজা স্বয়ং সিংহাসনে আরোহণ না করে, শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবকে প্রকৃত রাজা বলে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি নিজেকে জগন্নাথের ভৃত‍্য মনে করে,রাজকার্য‍্য সম্পন্ন করতেন।ইঁনার সময়ে ভিতরের দেউল নির্মিত হয়।পূর্বে যে মূর্তির কথা বলা হয়েছে,এই পুরুষো‍ত্তমদেবকে রক্ষা করবার জন্য,শ্রীজগন্নাথ ঐ মূর্তি ধারণ করেছিলেন এবং তারদ্বারা জগজ্জনকে দেখিয়েছেন যে, "ন মে ভক্তঃ প্রণশ‍্যতি", আমার ভক্ত কিছুতেই বিনাশ প্রাপ্ত হন না,তাঁকে আমি রক্ষা করি।এই রাজার সম্বন্ধীয় নিম্নলিখিত ঘটনা,এর একটি প্রধান দৃষ্টান্ত স্থল।*
*🌻রাজা পুরুষোত্তমদেবের,কোন সময়ে কাঞ্চীনগরের রাজাকে জয় করবার কারণ উদ্ভব হয়।তদনুসারে তিনি যুদ্ধে যাত্রা করেন।শ্রীজগন্নাথ ও বলরাম উভয়ে পুরুষোত্তমের পক্ষে, শুক্ল ও কৃষ্ণবর্ণ ঘোড়াতে আরোহণ করে, প্রচ্ছন্নভাবে বা আবৃত সৈনিক বেশে যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হন।রাজা তা কিছুই জানতেন না।ভগবৎ-কৃপায় কর্ণাট প্রদেশ জয় করে হল,কাঞ্চীনগরের রাজা পরাজিত হলেন।জগন্নাথ ও বলরামদেব প্রত‍্যাবর্তনকালে মাণিক‍্য নামে এক গোয়ালিনীর নিকট হতে,দধি কিনে নেন, এবং জগন্নাথের হাতের আঙ্গুলের আংঠি গোয়ালানীর কাছে বন্ধক রাখেন।গোয়ালিনীকে বললেন, আমার পেছনে যে রাজা আসছেন, তিনিই তোমার দধির দাম দিয়ে অঙ্গুরী ফেরৎ নিবেন।এইকথা বলে উভয়ে প্রস্থান করলেন।গোয়ালিনী তদনুসারে রাজা আসিবামাত্র,সমস্ত বিবরণ বলে আংঠি দেখালেন।রাজা ঐ আংঠি দেখামাত্রই বুঝতে পারলেন যে,এটি জগন্নাথদেবের অঙ্গুরী, এবং জগন্নাথ ও বলরাম যোদ্ধাবেশে তাঁর সহায়তা করেছেন।*
*রাজা তখন বুঝলেন, ভগবান ভক্তের জন্য কতদূর কিভাবে কৃপা করে থাকেন, এবং এই জন‍্যই ভগবান অর্জুনের রথের সারথি হয়েছিলেন।তখন রাজা ভগবানের ভাবে বিভোর হলেন এবং মাণিক‍্য নামে গোয়ালিনীকে চরমধন‍্য মনে করতে লাগলেন, শত-সহস্র জন্মের সুকৃতির ফলে এমনটি লাভ করা যায়।সেই দিন হতে,ঐ গোয়ালিনীর নাম অনুসারে,অদ‍্যাবধি ঐ গ্রামের মাণিক‍্য পট্টনা নাম বতর্মান আছে।মনে হয়,তদনুসারেই মন্দির মধ্যেও শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও বলরামের যোদ্ধাবেশে মূর্তি ও গোয়ালিনীর দধিভান্ডবাহিনী মূর্তি, তিনিই অঙ্কিত করেছিলেন।সেই মূর্তিই এই মূর্তি। ভগবানের ভক্তবৎসলতার চিহ্ন-স্বরূপ বতর্মান আছে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🌹🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৬)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🦚নীলাচলে মহাপ্রভু🦚*
*শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের নিত‍্য পূজাপদ্ধতি*
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
*☘প্রথম ভোরবেলা দরজা খুলে মঙ্গল আরতি হয়।তৎপর অবকাশ হয়,অর্থ‍্যাৎ দন্তধাবন ও স্নান হয়, এবং তারপর শিঙ্গার হয়,পরে ধূপ বা বাল‍্যভোগ হয়।এতে ক্ষীর,নবনী,দধি, নারিকেল,মুড়কি,মাখন,পাপড়ী,হংসকলী দেওয়া হয়।রাজভোগ, খেচরান্ন, বড়া ও পিষ্টকাদি দ্বারা হয়ে থাকে।তারপরে অন্নব‍্যঞ্জনাদি ভোগ হয়।মধ‍্যাহ্ন-ধূপ বা দ্বিপ্রহর-ধূপ বা ভোগ যথা,তিপুরী,নারী,আরিসা,মাধুকূরী, মালপোয়া,উপাধিভোগ, ও অন্ন ব‍্যঞ্জনাদি দেওয়া হয়।অন্নভোগ ইত্যাদি ভোগমন্ডপে দেওয়া হয়।সরশুয়ারি,পাখাল (পান্তা)সরবত, বড়াপিঠা,ঘি-ভাত হয়।পরে শিঙ্গার অর্থ‍্যাৎ বেশ হয়।এর পর আরতি হয়, আরতি হয়ে চারটা পর্যন্ত দরজা বন্ধ থাকে, এই সময়ে জগন্নাথদেব নিদ্রা যান।চারটার পর জগন্নাথদেবের নিদ্রা ভঙ্গ হয়,নিদ্রা ভঙ্গ হবার পর জিলাপী ভোগ দেওয়া হয়। সান্ধ‍্য-ধূপ বা অপরাহ্নভোগ,এটি আরতি হবার পর দেওয়া হয়।এতে খাজা,গজা, মতিচূর,দধি প্রভৃতি নানারকম দ্রব‍্য দেওয়া হয়।সন্ধ‍্যাভোগের পর চন্দনাদি অর্থ‍্যাৎ চন্দন লেপন করা হয়।ইতঃপর নৈশভোগ বা বড় শিঙ্গার ভোগ।নৈশভোগের আগে, বেশ পরিবর্তিত হয়ে নানা সুগন্ধ পুষ্পমালা দ্বারা তিনি ভূষিত হন।এই সময়ে বীণাকরের বাদ‍্য ও গীতগোবিন্দ পাঠ হয়ে থাকে।🌺গীতগোবিন্দ পাঠ সম্বন্ধে একটি আখ‍্যায়িকা আছে। এই ঘটনার আগে শ্রীশ্রীজন্নাথদেবের কাছে গীত-গোবিন্দ পাঠ হত না।এক সময়ে একটি স্ত্রীলোক বেগুনক্ষেতে বেগুন তুলছিল আর গীতগোবিন্দ গাইছিল।গীতগোবিন্দ শ্রীজগন্নাথের অতি প্রিয়,এত প্রিয় যে, যেখানে গীতগোবিন্দ পাঠ হয় বা গীত বা গান হয় সেখানে জগন্নাথ উপস্থিত হন।*
*🌷নাহং তিষ্ঠামি বৈকুন্ঠে যোগীনাং হৃদয়ে ন চ।*
*🌷মদ্ভক্তাঃ যত্র গায়ন্তি তত্র তিষ্ঠামি নারদ।।*
*🌹এইকথার সার্থকতা বুঝাবার জন্য ভগবান সেই বেগুন ক্ষেতে বেগুনওয়ালীর মুখে গীতগোবিন্দ গান শুনতে উপস্থিত হলেন। এবং সেই বেগুনওয়ালীর পেছন পেছন ধাবিত হওয়াতে তাঁর উত্তরীয় বসন ছিন্ন হয়েছিল।এই বসন ছিন্ন হবার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সেবক জানতে পারলেন অর্থ‍্যাৎ ভগবান জানালেন যে,এক বেগুনওয়ালী গীত-গোবিন্দ গাইতেছিল, তার পেছনে অনুসরণ করাতে বসন ছিন্ন হয়েছে।"গীতগোবিন্দ আমার অতি প্রিয়" তখন হতে মন্দিরে গীত-গোবিন্দ পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। গীত-গোবিন্দ পাঠান্তে নৈশভোগ হয়, এতে নানানরকম ঘৃতপক্ক দ্রব‍্য,পিষ্টকাদি ও মিষ্ট সামগ্রী দেওয়া হয়।এই সময়েই রাজবাড়ীর প্রেরিত গোপালবল্লভ ভোগও দেওয়া হয়।ভোগ শেষ হলে দেবদাসীর নৃত্য,গীত,ও বাদ‍্যাদি বাজিয়ে, শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের রাত্রি নিদ্রা হয়, একে রাত্রি "পহুড়"বলে।প্রাতঃকালে মঙ্গলাতির শেষে, এবং সন্ধ‍্যাকালেও সন্ধ‍্যারতির শেষে,সাধারণের মণিকোঠাতে প্রভুর দর্শন লাভ হয়ে থাকে।*
*জগনাথ ও বলরামের পূজা বিষ্ণুমন্ত্রে এবং সুভদ্রাদেবীর পূজা শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর মন্ত্রেতে হয়ে থাকে। শ্রীশ্রীবলদেবের ধ‍্যান=*
*🌷বলঞ্চ শুভ্রবর্ণাভং শারদেন্দুসমপ্রভম্।*
*🌷কৈলাসশিখরাকারং ফণাবিকটবিস্থরম্।।*
*🌷নীলাম্বরধরং স্নিগ্ধং বলং বলমদোদ্ধধতম্।*
*🌷কুন্ডলৈকধরং দিব‍্যং মহামূষলধারিণম্।*
*🌷মহাবলং বলধরং রৌহিণেয়ং প্রভুম্।।*
*🔵শ্রীশীসুভদ্রাদেবীর ধ‍্যান=*
*🌷সুভদ্রাং স্বর্ণপদ্মাভাং পদ্মপত্রায়তেক্ষণাম্।*
*🌷বিচিত্র-বস্ত্র-সংচ্ছন্নাং হারকেয়ূর শোভিতাম্।।*
*🌷বিচিত্রাভরণোপেতাং মুক্তাহার বিলম্বিতাং।*
*🌷পীনোন্নত-কুচাং রম‍্যামাদ‍্যাং প্রকৃতিরূপিকাম্।।*
*🌷ভুক্তিমুক্তিপ্রদাত্রীঞ্চ ধ‍্যায়েত্তামম্বিকাং পরাম্।।*
*🌻শ্রীশ্রীজগন্নাথের ধ‍্যান=*
*🌷পীনাঙ্গং দ্বিভুজং কৃষ্ণং পদ্মপত্রায়তেক্ষণম্।*
*🌷মহোরস্কং মহাবাহুং পীতবস্ত্রং শুভাননম্।।*
*🌷শঙ্খচক্রগদাপাণিং মুকুটাঙ্গদভূষণম্।*
*🌷সর্বলক্ষণ-সংযুক্তং বনমালা-বিভূষিতং।।*
*🌷দেব-দানব-গন্ধর্বং-যক্ষ-বিদ‍্যাধরোরগৈঃ।*
*🌷সেব‍্যমানং সদাদারুং কোটিসূর্য‍্যসমপ্রভম্।*
*🌷ধ‍্যায়েন্নারায়ণং দেবং চতুর্ব্বর্গ ফলপ্রদং।।*
*🌻সুদর্শনের ধ‍্যান=*
*🌷সুদর্শন নমস্তেহস্তু বিষ্ণুশস্ত্র নমোহস্তু তে।*
*🌷নমস্তুভ‍্যং,নমস্তুভ‍্যং,নমস্তুভ‍্যং,নমোনমঃ।।*
🙌🙏🙌🙏🙌🙏🙌🙏🙌🙏🙌🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৭)শ্রীশ্রীজগনাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🌿নীলাচলে মহাপ্রভু🌿*
*শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের নিত‍্য পূজাপদ্ধতি।*
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿
*🌹পূজার বিধান,তান্ত্রিক এবং বৈদিক উভয় মতের সামঞ্জস্য করে বিহিত হয়েছে।কাজেই,এখানে কোন সম্প্রদায়েরই ভেদাভেদ নাই।এখানে শাক্ত বৈষ্ণবের মারামারি নাই।প্রসাদের মাহাত্ম্য সর্বজনস্পৃষ্ট হলেও নষ্ট হয় না। সুতরাং নীচজাতিতে যে হেয় জ্ঞান,তা এখানে নাই।শ্রীশ্রীজগন্নাথের মূর্তি,প্রসাদ মাহাত্ম্য এবং সর্বজাতিতে সমভাব দেখে,ইঁহাকে ব্রহ্ম বস্তুরই প্রতিকৃতি বলে মনে হয়।ব্রহ্মের কোন মূর্তি নাই, তিনি নিরাকার বলে শাস্ত্রে কথিত হয়েছে।এখানে সেইব্রহ্ম পদার্থকেই নিরাকার বলে পূজা করা হয়েছে। সমস্ত অবতারের মূর্তিই ব্রহ্মের স্বরূপ ; কিন্তু শ্রীশ্রীজগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রা মূরতি,তা হতে কিছু ভিন্ন আছে, এই তিনমূর্তির হাতও নেই, চরণও নেই। এই মূর্তি যেরকমভাবে গঠিত,তাতে সাধারণ লোকে মনে করে, এবং এরকম জনশ্রুতিও আছে যে,এই তিনমূর্তি সম্পূর্ণ গঠিত হওয়ার আগেই মূতিনির্মাণ গৃহের দ্বার খোলা হয়েছিল,তারজন‍্যই হাত-পা বিহীন,সময়ের পূর্বে দরজা খোলার কারণে মূর্তি নির্মাণক পরিপূর্ণ মূতি নার্মাণ করতে সক্ষম হননি,কথা ছিল, একুশদিন পূর্বে কেউ দরজা খুলবেন না, কিন্তু তার পূর্বে দরজা খোলার জন্য এই মূতি দেখা যায়।পরবর্তীকালে স্বপ্নাদেশে এই মূর্তিই প্রতিষ্ঠা করা হয়।🍀কিন্তু বাস্তবিক তা নহে,শাস্ত্রও তা বলে না। "অপাণিপাদো যবনোগৃহীতা", এই শ্রুতিরই প্রমাণস্বরূপ হস্ত-পদ অসম্পূর্ণ করা হয়েছে।পরন্তু এই মূর্তি দর্শনমাত্রেই,বিরাটভাবের আভাস হৃদয়ে প্রতিফলিত হয়। শ্রীজগন্নাথদেবের চক্ষু দর্শন করলেই,একটি মহান ভাবের উদয় হয়,তা যাঁরা ভাল করে লক্ষ্য করেছেন,তাঁরা বুঝতে পেরেছেন। ভগবান অর্জুনকে যে বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন,এই মূর্তি দেখে তার আভাস পাওয়া যায়,যথা=*
*🌷অনাদিমধ‍্যান্তমনন্তবীর্য‍্যম্,*
*🌷অনন্তবাহুং শশিসূর্য‍্যনেত্রম্।*
*🌷পশ‍্যামি ত্বাং দীপ্ত-হুতাশ-বক্ত্রং,*
*🌷স্বতেজসা বিশ্চমিদং তপন্তং।।*
*🌹শাস্ত্রও এই বিরাট আকারের প্রতিমূর্তিরই সাক্ষ‍্য দিচ্ছে।এই সমস্ত অবস্থা বিবেচনা করে,শ্রীজগন্নাথদেবের দারুময় মূর্তি, ভগবানের বিরাট আকারের প্রতিমূর্তি (REPRESENTATION) বলে আমাদের ধারণা হয়েছে।এটি শিল্পীর সুকৌশলতার অভাব, অথবা বৌদ্ধ প্রতিমূর্তির যন্ত্র নহে।কারও কারও মতে,এই মূর্তি ওঁকারের যন্ত্রস্বরূপ।ওঁকার ত্রিগুণাত্মক বলে,ব্রহ্মবস্তু তিনভাগে বিভক্ত হয়েছেন।কেউ কেউ বলেন যে,এই তিন মূর্তি পরমাত্মা, জীবাত্মা ও মায়ার প্রতিকৃতি।হাত-পা নেই,এর অর্থ যে তিনি নিষ্ক্রিয়। যে বৃক্ষ ভেসে এসেছিল,তা ব্রহ্মস্বরূপ,সেই বৃক্ষ হতেই জগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রা নির্মিত হয়েছেন ; সুতরাং সেই ব্রহ্ম পদার্থই তিনভাগে বিভক্ত হয়েছেন। আমরা ইঁনাদেরকে জ্ঞান,কর্ম ও ভক্তির প্রতিনিধি বলে মনে করি।গীতা অনুসারে, ভক্তি অর্থ‍্যাৎ সুভদ্রা মধ‍্যবর্তী হয়েছেন।*
🪷🌷🪷🌷🪷🌷🪷🌷🪷🌷🪷🌷🦚

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৮)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🍁নীলাচলে মহাপ্রভু🍁*
          *মন্দিরের সেবকমন্ডলী*
         °°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🍀শ্রীজগন্নাথ মন্দিরের সেবকমন্ডলীর বর্ণনা ও মন্তব‍্য, মহামহোপাধ‍্যায় শ্রীযুক্ত সদাশিব মিশ্র মহাশয়ের "জগন্নাথ মাহাত্ম্য" গ্রন্থ হতে উদ্ধৃত করা গেল।*
*এই মন্দিরে ছত্রিশটি সেবক, ছত্রিশটি বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত আছেন,এইজন‍্য ইঁনাদেরকে ছত্রিশ-নিয়োগ বলে অভিহিত করা হয়।ইঁনাদের মধ্যে কয়েকটি প্রধান প্রধান নিয়োগের নাম নিচে দেওয়া হল।*
*১)পান্ডা নিয়োগ=ইঁনারা জগন্নাথদেবের পূজা কার্য‍্য করেন*
*২)পশুপালক নিয়োগ=অর্থ‍্যাৎ ইঁনারা ভগবানের বেশ করবার জন্য,পুষ্পাদি রক্ষাপ্রযুক্ত, শুদ্ধভাষায় "পুষ্মপালক", অথবা পশুদেবতা,তাঁদের রক্ষা করা প্রযুক্ত,পশুপালক নামে অভিহিত।*
*৩)সূপকার নিয়োগ=ইঁনারা প্রভুর পাক কার্য‍্য নির্বাহ করে।*
*৪)প্রতিহারী নিয়োগ=বহির্দ্বারের রক্ষণাবেক্ষণ এদের কাজ।*
*৫)খুন্টিয়া নিয়োগ=এরা মন্দিরান্তর্বতী কপাট গুলির রক্ষক*
*৬)গরাবড়ু নিয়োগ=এরা সমস্ত দেবতাদের আবশ‍্যকীয় জল যোগায়।*
*৭)বিমানবড়ু নিয়োগ= সংস্কৃতে বিমানবডৃ নিয়োগ,এরা প্রভুর যাত্রা সময়ে বিমান বহন করে।*
*৮)দইতা নিয়োগ=এরা "ক্ষেত্র-মাহাত্ম‍্য" বিশ্বাবসু বংশীয়।এরা দেবতার কলেবর পরিবর্তন ও পাহন্ডি বিজয় প্রভৃতি কাজ করে থাকে।*
*৯)বিদ‍্যাপতি নিয়োগ=এরা দেবতার দয়িতাদের সঙ্গে সমস্ত কাজ এবং অনবসর সময়ে পূজা সম্পাদন করে,এরা বিদ‍্যাপতি বংশীয়।*
*১০)ভিতর ছেউ নিয়োগ=এরা মন্দিরের ভিতরের দরজা সব মুদ্রাচিহ্ন দিয়ে বন্ধ করে এবং সময়ে সময়ে কাজ বিশেষে দেবতার পূজাও করে।*
*১১)সেকাপ নিয়োগ=এরা মন্দিরের যাবতীয় জিনিসপত্রের রক্ষক।*
*১২)তটাউ নিয়োগ=এরা মন্দিরের যাবতীয় কাজের লেখক।*
*১৩)দেউলকরণ নিয়োগ=ইনারা মন্দিরে আয়-ব‍্যয় লেখক।*
*১৪)উড়িষ‍্যার রাজ-নিয়োগ= ইঁনারাও একটি নিয়োগরূপে পরিগণিত।ইঁনারা স্নানপূর্ণিমা প্রভৃতি সময়ে কতগুলি সেবা কার্য‍্য করে থাকেন।*
*১৫)মুদিরথ নিয়োগ=সংস্কৃত নাম মুদ্রাহস্ত।ইঁনারা রাজার অনুপস্থিত সময়ে,রাজকীয় কাজ সব প্রতিনিধিস্বরূপে নির্বিহ করেন।এইরূপ নিয়োগ সমূহের কার্য‍্যাবলী নির্ধারিত হয়েছে।*
*পাঠকগণ দেখুন,আধুনিক সরকারের কাজকর্ম যেরকম বন্দোবস্ত করছেন,আজ হতে বহু বৎসর আগেও পুরীর মন্দিরের কাজকর্মের বন্দোবস্ত তদপেক্ষা কোন অংশে কম ছিল বলে দেখা যায় না।আর একটি বিশেষত্ব দেখুন, বতর্মান সব রাজকীয় বিভাগে বহু কর্মচারী নিযুক্ত হয়েছেন,তাঁদের দেখাশোনার জন্য তত্ত্বাবধারক নিযুক্ত হয়েছেন,তবুও অনেক জায়গায় বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। কিন্তু আবহমান কাল হতে পুরীর পরিচর্য‍্যাকারকগণ শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে নিযুক্ত হয়েছেন,যেন প্রত‍্যেক ব‍্যক্তি নিজ নিজ কাজে অনুরাগ-সহকারে উপস্থিত হয়ে কার্য‍্য সম্পন্ন করে ; কারণ যে ব‍্যক্তি যে কাজে নিযুক্ত,সে ছাড়া অন‍্য দ্বারা ষে কাজ সম্পন্ন করতে পারে না, অতএব সকলে নিজ নিজ কাজে তৎপর থাকে।মহামহোপাধ‍্যায় সদিশিব মিশ্র মহাশয় নিয়োগদের বন্দোবস্ত সম্বন্ধে প্রশংসা করে,যে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন,তা সম্পূর্ণ সত‍্য।এইরকম সুশৃঙ্খলভাবে কাজ সম্পন্ন কোথাও দেখা যায় না।কেবল পুরুষকারের(দৈবনিরপেক্ষ প্রযত্ন বা উদ‍্যমের) দিক দিয়ে যাঁরা দেখতে যান,তাঁদের পক্ষে এই মন্তব্যই ঠিক ; কিন্তু আমরা এর উপর আর কিছু যোগ না করলে, মন্তব্য সম্পূর্ণ সমীচীন হয়েছে বলে মনে করতে পারি না।যেখানে কেবল পুরুষকারের দ্বারা কাজ পরিচালিত হচ্ছে,দেখছি সে শক্তি বহুদিন স্থায়ী হয় না।কতদিন পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলে,তারপরে আবার পুনঃ মুষিক ভবঃ,অর্থ‍্যাৎ আগের মত অগোছালো ভাবে চলে আসে।নানারকম গন্ডগোল বেধে যায়।পুরীতে সে আবহমান কাল হতে,এইরকম সুশৃঙ্খলভাবে কাজ চলে আসছে,তার কারণ কেবল পরিশ্রমের বিভাগ সুশৃঙ্খলভাবে পর্য‍্যাপ্ত হয়েছে বলেই মনে করি, না আরও কিছু আছে?আমরা যোগ করতে চাই--,শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের কৃপা, জগন্নাথদেবের নিজের প্রতিজ্ঞা,পুরীবাসী সেবকদের ভক্তি ও বিশ্বাস।শ্রীজগন্নাথ ইন্দ্রদ‍্যুম্ন রাজার কাছে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন যে,পরার্দ্ধকাল (ব্রহ্মার একদিন বা একরাত্রিকে পরার্দ্ধকাল বলে, "সত‍্য,ত্রেতা,দ্বাপর,কলি চারযুগ জানি। এই চারযুগকে এক দিব‍্যযুগ মানি।।একাত্তর দিব‍্যযুগে এক মন্বন্তর।চোদ্দ মন্বন্তরে ব্রহ্মার এক দিবস ভিতর।। অর্থ‍্যাৎ মানব সমাজে চারশ উনত্রিশ কোটি, চল্লিশ লক্ষ,আশী হাজার বৎসরে ব্রহ্মার এক পরার্দ্ধকাল)।জগন্নাথদেব প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন যে, এক পরার্দ্ধকাল এখানে বাস করবেন, সুতরাং তাঁর কাজ তিনিই করেন, "লোকে বলে আমি করি" তাতেই এত সুশৃঙ্খলভাবে চলছে।*
*🌻দ্বিতীয়তঃ কারণ এই, সেই সময়ে জগন্নাথের সেবকগণ লেখাপড়া কিছুই জানতেন না,বুদ্ধিও তাঁদের তেমন তীক্ষ্ণ ছিল না। কিন্তু একটি বস্তু তাঁদের মধ্যে ছিল,তা অন‍্যের মধ্যে দেখা যেত না,তা হচ্ছে শ্রীজগনাথের প্রতি তাঁদের অচলা ভক্তি।এই ভক্তি দ্বারা জগন্নাথকে একেবারে তাঁরা অতি নিজের করে ফেলেছিলেন, এই ভক্তি যে সময়ে তাঁরা হারাবেন,তখন দেখবেন, আমাদের পুরুষকারের যতরকম বন্ধনরজ্জু সমস্তই হালকা হয়ে যাবে।*
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🪔🙏🙏🙏🙏🙏🙏
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(২৯)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🦚নীলাচলে মহাপ্রভু🦚*
*🪔মহাপ্রসাদ ও নির্মাল‍্য-মাহাত্ম‍্য*
🪔🪔🪔🪔🪔🪔🪔🪔🪔🪔
*🍀শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ ও নির্মাল‍্য মাহাত্ম্য সম্বন্ধে আগেই মুখবন্ধে সামান্যকিছু বর্ণন করেছি, এখন বিশেষরূপেও স্বতন্ত্রভাবে বর্ণনা করব।মহাপ্রসাদ যতক্ষণ পর্যন্ত পাকশালায় থাকে,অথবা মন্দিরের পূজারী কর্তৃক আনীত হয়,তখনও মহাপ্রসাদ বলিয়া গণ‍্য হয় না। নিবেদন হওয়ার পর হতেই, এটি মহাপ্রসাদ বলে গণ‍্য হয়,তখন আর তাদের স্পৃষ্টদোষ থাকে না।এর প্রমাণ নিচে দেওয়া হল,যথা, পদ্মপুরাণে---*
*🌷তত্রান্নপাচিকা লক্ষ্মীঃ স্বয়ং ভোক্তা জনার্দ্দনঃ।*
*🌷তস্মাৎ তদন্নং বিপ্রর্ষে দৈবতৈরপি দুর্ল্লভম্।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ এখানে লক্ষ্মীদেবী স্বয়ং রন্ধন করেন, স্বয়ং বিষ্ণু তাঁর ভোক্তা ; এই অন্ন অতি পবিত্র,দেবতাদেরও দুর্লভ।*
*🌹বিষ্ণুপুরাণে পাই----*
*🌷নৈবেদ‍্যং জগদীশস‍্য অন্নপাকাদিকঞ্চ যৎ।*
*🌷ভক্ষ‍্যাভক্ষ‍্যবিচারস্তু নাস্তি তদ্ ভক্ষণে দ্বিজ।।*
*🌻হে দ্বিজ!জগন্নাথকে অন্নপানাদি যা উৎসর্গ করে দেওয়া হয়,তাতে ভক্ষ‍্যাভক্ষ‍্যের বিচার নাই*।
*🌷অতিপাতক-পাপানি মহাপাপানি যানি চ।*
*🌷তানি সর্বাণি নশ‍্যন্তি জগন্নাথান্ন ভক্ষণাৎ।।*
*🌺অতিপাপী,মহাপাপীদের সমস্ত পাপ, জগন্নাথের অন্ন ভক্ষণ করলেই সব পাপ নাশ হয়।*
*🌷জগন্নাথস‍্য নৈবেদ‍্যং মহাপাতকনাশনং।*
*🌷ভক্ষণাৎ ফলমাপ্নোতি কপিলাকোটিদানজং।।*
*🌹শ্রীজগন্নাথের নৈবেদ‍্য ভক্ষণে মহাপাতক নাশ হয় একোটি গো-দানের ফল হয়।*
*🌷ন কালনিয়মো বিপ্রা ব্রতে চান্দ্রায়ণে তথা।*
*🌷প্রাপ্তিমাত্রেণ ভুঞ্জীয়াৎ যদীচ্ছেন্মোক্ষমাত্মনঃ।।*
*🔵গরুড় পুরাণে,মহাপ্রসাদ ভক্ষণের কোন নির্দিষ্ট সময় নাই।চান্দ্রায়ণ ব্রতেরও কোন কালনিয়ম নাই।মোক্ষাভিলাষী ব‍্যক্তি মহাপ্রসাদ উপস্থিত হওয়ামাত্র,কোন বিচার না করে ভক্ষণ করবে।*
*🔷আবার বিষ্ণু পুরাণে লেখা আছে =*
*🌷জগন্নাথস‍্য নৈবেদ‍্যং নাস্তি সংস্পৃষ্ট-দূষণং।*
*🌷সকৃৎ ভক্ষণমাত্রেণ পাপেভ‍্যো মুচ‍্যতে পুমান্।।*
*🔴শ্রীজগনাথের প্রসাদেতে সংস্পৃষ্টদোষ(ছোঁয়া)হয় না।একবার প্রসাদ ভক্ষণ মাত্রেই সমস্ত পাপ হতে বিমুক্ত হয়।*
*🔶স্কন্দ পুরাণে পাওয়া যায় =*
*🌷মহাপবিত্রং হি হরের্নিবেদিতং,*
*🌷নিযোজয়েদ্ যঃ পিতৃদেবকর্মষু।*
*🌷তেপ‍্যন্তি তস্মৈ পিতরঃ পুরা তথা,*
*🌷প্রযান্তি লোকং মধুসূদনস‍্য তে।।*
*🌻শ্রীহরিকে নিবেদিত অন্ন অতি পবিত্র,পিতৃকর্মে ও দেবকর্মে উৎসর্গ করলে,সমস্ত পিতৃকুল ও দেবতাগণ তৃপ্তিলাভ করেন, এবং তাঁরা ভগবদ্ধামে গমন করেন।*
*🌷কুক্কুরস‍্য মুখাদ্ ভ্রষ্টং মমান্নং যদি জায়তে।*
*🌷ব্রহ্মাদ‍্যৈরপি তদ্ ভক্ষ‍্যং ভাগ‍্যতে যদি লভ‍্যতে।।*
*🌹শ্রীভগবান্ বলেছেন,যদি আমার নিবেদিত অন্ন কুকুরের মুখ হতে পড়ে, এবং ব্রহ্মাদি দেবগণ যদি সৌভাগ্যক্রমে লাভ করেন,তাহলে তাদেরও ভক্ষণীয়।*
*🌷শুষ্কং পর্য‍্যুষিতং বাপি নীতং বা দূরদেশতঃ।*
*🌷দুর্জ্জনেনাপি সংস্পৃষ্টং সর্ব্বস‍্যৈবাঘনাশনং।।*
*🌻শুকনো হোক,অথবা পর্য‍্যুষিত (অনন্ত একদিনের বাসি)হোক,অথবা একদেশ থাকে অন‍্যদেশে আনা হোক,অস্পৃশ‍্য জাতি দ্বারা র্সস্পৃষ্ট হলেও সেই মহাপ্রসাদে সমস্ত পাপ নাশ হয়, এবং তার মাহাত্ম্য কখনও কমে না*।
*🌹এই মহাপ্রসাদ মাহাত্ম্য সম্বন্ধে,একটি উপাখ‍্যান কথিত আছে। কথিত আছে যে,একটি আচারনিষ্ঠ বেদপারগ ব্রাহ্মণ, সপরিবারে জগন্নাথ-দেবের দর্শনের জন্য জগন্নাথ ক্ষেত্রে উপস্থিত হন ; এবং যথাবিধি শাস্ত্রোক্ত কাজ অনুষ্ঠান করেন।পন্ডিত মাত্রেই কিছু যুক্তি-শাস্ত্রের পক্ষপাতী।তাঁরা মহাপ্রসাদ সম্বন্ধেও নানা কূট তর্ক উপস্থিত করে,সকলের সম্বন্ধে মহাপ্রসাদ গ্রহণীয় কিনা, এবং শাস্ত্রসিদ্ধ কিনা তা বিচার না করে ছাড়েন না।এই ব্রাহ্মণ সম্বন্ধেও তাইই ঘটল।তাঁর বিচারে মহাপ্রসাদ তাঁর পক্ষে ভক্ষণীয় না বলে ঠিক করলেন।তিনি জানেন না যে,এই জায়গা শ্রুতি স্মৃতি পুরাণের অতীত।*
*🌷দক্ষিণোদধিতীরস্থং দারুব্রহ্ম সনাতনং।*
*🌷বিনা সাংখ‍্যং বিনা যোগং দর্শনাৎ মুক্তিদং ধ্রুবং।।*
*🌷শ্রুতি-স্মৃত‍্যুক্ত-নিয়মা বিদ‍্যন্তে নেহ পার্থিব।।*
*🍀তিনি এই শাস্ত্র পুরোপুরি ভাবে অবগত ছিলেন না, সুতরাং তিনি তাঁর গন্ডীর ভিতরেই রয়ে গেলেন। তিনি আর মহাপ্রসাদ ভক্ষণ করলেন না। কিন্তু অচিরাৎ তিনি কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন।বিচার করে বুঝতে পারেন না,এইরকম পাপজ ব‍্যাধি তাঁর কেন হল, তিনি এখানে এসে,এমন কি মহাপাপ করলেন যে জন্য এরকম ব‍্যাধি তাঁর হতে পারে।এইরকম চিন্তা করে রাত্রিতে শয়ন করে আছেন,এমন সময় স্বপ্ন দেখলেন যে,মহাপ্রসাদ অবজ্ঞার জন্য তাঁর গুরুতর অপরাধ হয়েছে।তারজন‍্যই তাঁর এই ব‍্যাধি।এখানে বিধিশাস্ত্রের প্রাধান‍্য নাই,এটি প্রেমের ক্ষেত্র, রাগানুগামার্গে ইহায় ভজন। সুতরাং তিনি যে বিধিশাস্ত্র অনুসারে বিচার করে প্রসাদ অবজ্ঞা করেছেন,তারজন‍্য তাঁর মহাপাপ হয়েছে।তিনি স্বপ্নে আদেশ পেলেন যে, তিনি যদি এই অন্ন মহাপ্রসাদ ভক্তি সহকারে পুনরায় গ্রহণ করেন, তাহলেই তিনি রোগমুক্ত হবেন। তার পরদিনই অতি শ্রদ্ধার সহিত মহাপ্রসাদ ভক্ষণ করে,তিনি সেই দুশ্চিকিৎস‍্য রোগ হতে মুক্ত হলেন। এটি যে প্রেমের ক্ষেত্র,বিধিমার্গ অনুসারে ভজন হয় না,তার একটি গল্প বলছি এবং সত‍্য।*
*শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গদেব সন্ন‍্যাস ধর্ম গ্রহণ করে,যখন জগন্নাথে এসেছিলেন, সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে বহু ভক্তমন্ডলী উপস্থিত হয়েছিলেন। পুন্ডরীক বিদ‍্যানিধি মহাপ্রভুর একজন পরমভক্ত।তিনি একদিন শ্রীজগন্নাথদেব দর্শন করতে গিয়ে,দেখেন জগন্নাথকে যত বস্ত্র দেওয়া হয়েছে,তার কোনটিও ধূয়ে দেওয়া হয়নি।শাস্ত্র অনুসারে তা অবৈধ হয়েছে।এ বিষয়ে তিনি অন‍্যান‍্য ভক্তগণের সঙ্গে আলোচনা করেন।সেইদিন রাত্রিতে তিনি শুয়ে আছেন, এমন সময় নিদ্রাযোগে শ্রীজগন্নাথদের আবির্ভূত হয়ে,ক্রমাগত তাঁর গালে থাপ্পড় মারছেন, এবং বলছেন যে,তোমার একনও এ জ্ঞান হল না যে,জগন্নাথক্ষেত্র বিধিশাস্ত্রের অতীত।নিদ্রা ভঙ্গ হয়ে দেখেন যে তাঁর গালে থাপ্পড়ের আঘাতে গাল ফুলে গেছে।পরদিন সকালবেলা আন‍্যান‍্য ভক্তগণ তাঁর কাছে দেখা করবার জন্য উপস্থিত হলেন, কিন্তু তিনি সেদিন বাইরের ঘরে আসিলেন না।তারপর অনেকে ভিতর বাড়ীতে প্রবেশ করে তথ‍্য অনুসন্ধান করলেন। তখন তিনি তাঁদেরকে গত রাত্রের সমস্ত বৃত্তান্ত বলে,তাঁর গন্ডদেশ ফুলে গেছে তা দেখালেন।তখন সকলেই জগন্নাথের যথেষ্ট কৃপা বলে মনে করলেন, এবং এই ক্ষেত্র বিধি নিষেধের অতীত স্থান বলে স্থির সিদ্ধান্ত হল।এইরকম গল্প অনেক আছে।স্তানান্তরে কর্মাবাইয়ের খিচুরীর উপাখ‍্যান উল্লিখিত হয়েছে।তাতেও বিধিমার্গের নিন্দা এবং প্রেমমার্গের প্রশংসা কীর্তিত হয়েছে।*
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 তৃতীয় ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath3.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৩০)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *⭐নীলাচলে মহাপ্রভু⭐*
*জগন্নাথদেবের দ্বাদশ মাসের উৎসব*
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*🍁শ্রীজগন্নাথদেবের বারমাসে,যে যে উৎসব হয়ে থাকে,তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল।বিস্তারিত বিবরণ পরে দেওয়া যাবে। বৎসরের প্রথম হতে গণনা করতে হলে,বৈশাখ মাসে যে যাত্রা হয়,তাইই প্রথম ধরতে হয়।সেই হিসাবে চন্দনযাত্রাই প্রথম হয়।চন্দনযাত্রাকে প্রথম ধরে উৎসবগুলির নাম এখানে লিপিবদ্ধ করা হল। কিন্তু শ্রীজগন্নাথদেব প্রথমতঃ যে তারিখে,কি যে তিথিতে স্থাপিত হন, সেই অনুসারেও এইরকম গণনা করা হয় ; তাহলে স্নানযাত্রা প্রথম হবে। পাঠক,যদি মনে করেন যে,স্নানযাত্রা প্রথম হওয়া উচিত,তাহলে চন্দনযাত্রা সর্বশেষ হবে।জগন্নাথদেবের প্রতিষ্ঠা তারিখে,তাঁর স্মৃতির জন্য স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।অনেকে এই ব‍্যাপারকে প্রথম ধরে,দ্বাদশ মাসে, দ্বাদশ যাত্রা লিখেছেন।কেউ কেউ চন্দনযাত্রা হতেও আরম্ভ করেছেন।*
*🌹যাত্রার নাম=১)চন্দনযাত্রা, অক্ষয়-তৃতীয়া হতে আরম্ভ হয়ে একুশদিন থাকে।২)রুক্মিণী-হরণ, জ‍্যৈষ্ঠমাসের শুক্ল একাদশী তিথিতে হয়ে থাকে।৩)স্নানযাত্রা,৪)রথযাত্রা, ৫)ঝুলনযাত্রা,৬)জন্মাষ্টমী,৭)কালিয় দমন,৮)রাসযাত্রা,৯)গজোদ্ধারণবেশ, ১০)মাঘীপূর্ণিমা,১১)দোলযাত্রা, ১২)শ্রীরামনবমী,১৩)দমনকভঞ্জিকা। তারপর ১৪)শয়ন একাদশী, ১৫)পার্শ্ব পরিবর্তন,১৬)উত্থান একাদশী, ১৭)দক্ষিণায়ণ,১৮)উত্তরায়ণ, ১৯) প্রাবরণ,২০)পোষ‍্যপূজা। এই কয়েকটি যাত্রা সমস্ত গ্রন্থের অনুমোদিত নয়।কোনটি যাত্রা এবং কোনটি উৎসব,তা নির্ণয় করা কিছু কঠিন। সুতরাং যাত্রা ও উৎসব একত্রেই দেওয়া হল।যাত্রা উৎসবের অন্তর্গত হতে পারে,সেইজন‍্য সমস্তই উৎসব বললে,আর কোন গোল থাকে না।রথযাত্রা এবং স্নানযাত্রা ছাড়া অন‍্য কোন যাত্রায় জগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রা যান না।মদনমোহন ইঁনাদের প্রতিনিধিরূপে গিয়ে থাকেন।*
*🍀চন্দনযাত্রা=মদনমোহন,পঞ্চ পান্ডব সহ,নরেন্দ্র সরোবরে জলকেলি করেন।এই উৎসবে চন্দন লেপন করা হয় বলেই,এর নাম চন্দনযাত্রা।*
*🍀রুক্মিণী-হরণ=শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতী রুক্মিণীকে বিমলার মন্দির হতে হরণ করে নেন। এই উৎসব জ‍্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল একাদশীতে অনুষ্ঠিত হয়।*
*🍀স্নানযাত্রা=এটি জগন্নাথের জন্মতিথি বললেই হয়।জ‍্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমাতে এই যাত্রা হয়ে থাকে। রোহিণীকুন্ডের জল দিয়ে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান করান হয়।এই উৎসবে বহুলোকের সমাগম হয়।*
*🍀রথযাত্রা=আষাঢ় মাসের শুক্ল দ্বিতীয়াতে রথযাত্রা হয়ে থাকে।প্রথমে বলরামের রথ,পরে সুভদ্রার রথ তারপর জগন্নাথের রথ মন্দির হতে যাত্রা করে,ঐ দিনেই গুঞ্জাবাড়ীতে পৌঁছে।রথযাত্রা সমস্ত যাত্রার শ্রেষ্ঠ, এবং এই উপলক্ষ্যে বহুলোক একসঙ্গে মিলিত হয়ে থাকে।রথযাত্রার পুণ‍্য শ্রুতিও বিশেষ আছে, এবং লোকের বিশ্বাসও এই যে, "রথে তু বামনং দৃষ্ট্বা পুনর্জ্জন্ম ন বিদ‍্যতে"। এই ব‍্যাপার নয়দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।*
*🍀ঝুলনযাত্রা=শ্রাবণ মাসের শুক্ল একাদশী তিথি হতে পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত পাঁচদিন ঝুলনযাত্রা হয়ে থাকে। মুক্তিমন্ডপে মদনমোহন যাত্রা করে থাকেন।*
*🍀জন্মাষ্টমী=ভাদ্র মাসের কৃষ্ণাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়।জন্মোৎসব উপলক্ষ্যে অনেক নৃত্যগীত হয়ে থাকে।*
*🍀কালিয়দমন=শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণ একাদশীতে মদনমোহন মার্কন্ড সরোবরে,সাপের উপর কালিয়দমন উৎসব করে থাকেন।*
*🍀রাসযাত্রা=কার্তিকমাসের পূর্ণিমা তিথিতে হয়ে থাকে।এই সময়ে বহু লোকের সমাগম হয়ে থাকে।*
*🍀গজোদ্ধারণবেশ=পৌষমাসে হয়। ভগবান যে পশুদের প্রার্থনাও শুনে থাকেন,পিপীলিকার পায়ের নূপুরধ্বনিও যে তাঁর কর্ণগোচর হয় এবং ইতর প্রাণী পর্যন্তও যে তাঁর দয়ায় বঞ্চিত হয় না,তার দৃষ্টান্ত স্থল গজোদ্ধারণবেশ।*
*🌹এটি একটি পুরাণোক্ত গল্প=একসময়ে একটি গজ নদীতে স্নান করবার জন্য নেমেছে, এমন সময় একটি কুমীর এসে তার পায়ে আক্রমণ করে।গজ এবং কুমীরে ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হল।অন‍্য সব গজ একত্রে সহায়তা করে,কুমীরকে ছাড়িয়ে আনতে পারল না,গজ ক্রমশই অবসন্ন(ক্লান্ত) হয়ে পড়তে লাগল।তখন সে অনন‍্যোপায় হয়ে, ভগবান নারায়ণের শরণাপন্ন হল।ভক্তবৎসল ভগবান তৎক্ষণাৎ গজকে উদ্ধার করলেন।কুমীরও ভগবৎ-স্পর্শে মুক্ত হয়ে গেল।উভয়েই শাপগ্রস্ত হয়ে পশুযোনিতে প্রাপ্ত হয়েছিল।শাপমুক্ত হয়ে,তাঁরা যথাস্থানে গমন করলেন।*
*🍀মাঘীপূর্ণিমা=মদনমোহন সমুদ্রজলে স্নান করেন এবং তারপর পূজিত হন।*
*🍀দোলযাত্রা=এই উৎসবও খুব জাঁকজমকের সঙ্গে সম্পন্ন হয়ে থাকে।ফাল্গুনমাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব হয়।মদনমোহন দোলবেদীতে গিয়ে থাকেন।এই সময়েও বহু ভক্তের সমাগম হয়।ঠাকুরকে ফাগ বা আবীর দেওয়া হয়।*
*🍀শ্রীরামনবমী=চৈত্র মাসের শুক্লা নবমীতে মদনমোহনকে রামবেশে সাজিয়ে পূজো দেওয়া হয়।*
*🍀দমনকভঞ্জিকা=চৈত্র মাসের শুক্লা এয়োদশীতে জগন্নাথবল্লভ উদ‍্যানে মদনমোহনের পূজা হয়।*
*🍀শয়ন-একাদশী=আষাঢ় মাসের শুক্লা একাদশীতে হয়ে থাকে।*
*🍀পার্শ্ব-পরিবর্তন একাদশী= ভাদ্র মাসের শুক্লা একাদশীতে হয়ে থাকে।*
*🍀উত্থান একাদশী=কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশীতে হয়ে থাকে।*
*🍀সংক্ষেপতঃ=এই সব উৎসবের কথা লেখা হল।এই সব ছাড়াও আরও অনেক উৎসব আছে।*
🌼💮🌸☘🌳🌲💐🌿🌻🌷🌺🍁🌹
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🔜 ক্রমাগত 👉 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 চতুর্থ ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath4.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

    📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝
    ꧁👇📖 সূচীপত্র ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖👇



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️ 
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

  *••••┉❀꧁👇🏠Home Page🏠👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

    *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

     *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
   🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧







শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html