🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🔙 পূর্ব লীলা 👉 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 চতুর্থ ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath4.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪১)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *🔷নীলাচলে মহাপ্রভু🔷*
            *🛕জটীয়া বাবার মঠ*
              *ও স্নান------যাত্রা*
             @@@@@@@@@@
*🍀নরেন্দ্র-সরোবরের উত্তর পাড়ে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর সমাধি আছে ; এই দেশে ইহাকে জটীয়া বাবার মঠ বলে।আশ্রমটি বড়ই সুন্দর,বাগান আছে, একটি মন্দির আছে, তার মধ্যে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর সমাধি আছে ও তাঁর প্রতিমূর্তি আছে। গোস্বামী-মহাশয় এখানে অনেক দান করেছিলেন,সে জন্য এখানে দাতা বলে খুব প্রসিদ্ধ হয়েছিলেন। বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ১৩০৬ সনের ২২শে জ‍্যৈষ্ঠ রবিবার দেহত‍্যাগ করেন।দেহত‍্যাগের পরেরদিন সোমবার বিকেলবেলায় সমাধি দেওয়া হয়।১২৪৮ সালের শ্রাবণমাসে ঝুলন পূর্ণিমা দিনে তাঁর জন্ম হয়।জ‍্যৈষ্ঠমাসের কৃষ্ণপক্ষীয় দ্বাদশী তিথিতে তিরোভাবের দিনে এখানে উৎসব হয়।নরনারী উভয়েই এখানে আসেন।উৎসবের দিন শ্রীহরি সংকীর্তন হয় এবং ব্রাহ্মণ ভোজন হয়।ইঁনার শান্তিপুরে অদ্বৈত বংশে জন্ম হয়।ইনি বাল‍্যকাল হতে ধর্মানুরাগী ছিলেন।তিনি প্রথমতঃ ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন ; তারপর কোন সিদ্ধপুরুষের কৃপা লাভ হয়,সেই হতে তিনি পুনরায় হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেন।ইঁনার ভক্তির ভাব অত‍্যন্ত প্রবল ছিল।গোস্বামী মহাশয়ের কথাতেই সকলেই মুগ্ধ হতেন।তিনি একজন উচ্চর্মাগের সাধক ছিলেন।*
*🌻🌻🌻স্নানযাত্রা🌻🌻🌻*
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
*🌹শনকাদীন্ প্রতি জৈমিনিরুবাচ=*
*জ‍্যৈষ্ঠ-স্নানং ভগবতো যে পশ‍্যন্তি মুদান্বিতাঃ।*
*ন তে ভবাব্ধৌ মজ্জন্তি যাতায়াতশ্রমাতূরাঃ।।*
*বুদ্ধ‍্যবুদ্ধিকৃতঃ পুংসামনাদিপাপসঞ্চয়ঃ।*
*তৎক্ষণান্নাশমায়তি পশ‍্যতাং স্নপনং হরেঃ।।*
*🌺জ‍্যৈষ্ঠমাসে স্নানযাত্রা সময় ভক্তি সহকারে ভগবানকে দর্শন করলে আর তাকে পুনরায় সংসারে ডুবে থাকতে হয় না।হরির স্নান দর্শন করলে জ্ঞান ও অজ্ঞানকৃত অনাদিকাল সঞ্চিত পাপ তৎক্ষণাৎ বিনষ্ট হয়।*
*🌻ইন্দ্রদ‍্যুম্ন রাজার প্রতি শ্রীভগবানের উক্তি=*
*জ‍্যৈষ্ঠাং প্রতস্তনে কালে ব্রহ্মণা সহিতঞ্চ মাং।*
*রামং সুভদ্রাং সংস্নাপ‍্য মম লোকমবাপ্নুয়াৎ।।*
*স্নাপ‍্যমানস্তু যঃ পশ‍্যেৎ মাং সদা নৃপসত্তমঃ।*
*দেহবন্ধমবাপ্নোতি ন পুনঃ তু পুরুষঃ।।*
*🔵জ‍্যৈষ্ঠমাসে স্নানযাত্রাকালে আমাকে সুভদ্রাকে ও বলরামকে যাঁরা স্নান করান,তাঁরা আমার লোক প্রাপ্ত হন।হে নৃপসত্তম!আর যিনি আমাকে স্নাপ‍্যমান (স্নান করানো) অবস্থাতে দর্শন করেন তাঁর আর পুনরায় দেহ বন্ধন হয় না।*
*🌻জ‍্যৈষ্ঠমাসে পূর্ণিমা তিথিতে স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।এই তিথিতে শ্রীজগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সুতরাং এটি জগন্নাথের জন্মতিথি বলা যেতে পারে।জন্মতিথির স্মরণার্থে এই স্নান অনুষ্ঠিত হয়।এর ফলশ্রুতিও পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।এই সময়ে স্বয়ং জগন্নাথ বলভদ্র ও সুভদ্রা এই মূর্তিত্রয়কে "পাহুতি-বিজয়" করিয়ে স্নান বেদীতে স্থাপন করান হয়।সকালবেলা "নীলাদ্রী মহোদয়োক্ত" বিধি অনুসারে মুদিরথের দ্বারা (সেবাইত শ্রেণী বিশেষ ) আগের দিনের অধিবাসিত জলে প্রভুর স্নান অনুষ্ঠিত হয়। তারপরে হস্তিসমবেশ (অর্থ‍্যাৎ গণেশ বেশ) দ্বারা প্রভুকে ভূষিত করা হয়।উক্ত বেশ খুব বেশী প্রাচীন নয়।এই স্নান উপলক্ষ্যে বহুলোক সমবেত হয়।যাঁরা রথযাত্রায় আসবেন,তাঁরা অনেকেই এই সময়ে আসবার চেষ্টা করেন ; স্থানীয় লোকও অনেকে সমবেত হন।অনের ভদ্রমন্ডলী চতুর্দিকের ছাদ ভাড়া করে ভগবানের স্নান দর্শন করেন।এই সময়ে জগন্নাথ বড়ই কৃপালু, সমস্ত লোকের সঙ্গেই কোল দিয়ে থাকেন। জগন্নাথের সঙ্গে কোল দিবার জন্য সকলেই উৎকণ্ঠিত হয়,এইজন‍্য স্নানের পরে অত‍্যন্ত লোকের ভিড় হয়ে থাকে।*
💧💧💧💧💧💧💧💧💧💧💧💧💧
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪২)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *🌲নীলাচলে মহাপ্রভু🌲*
                 *🍀স্নান--যাত্রা🍀*
           ################
*🌸মাদলা পঞ্জিকা ও জনশ্রুতির দ্বারা জানা যায় যে,কাঞ্চীরাজা তার পদ্মাবতী নামে কন‍্যাকে পুরীর রাজা পুরুষোত্তমদেবের সঙ্গে বিয়ে দিবার জন্য স্নানযাত্রার সময় পুরীতে এসেছিলেন।তিনি গণপতি ভক্ত থাকায় শ্রীজগন্নাথদেবের প্রসাদ সেবন করতে অনিচ্ছুক হলেন। কিন্তু স্নানবেদীতে দর্শন করবার সময় প্রভুকে গণপতিরূপে দেখে অন্নপ্রসাদ ভক্ষণ করলেন।সেইদিন হতে আরম্ভ করে প্রভু উক্ত দিনে উক্তবেশে ভূষিত হন।সেই দিনেই কাঞ্চীরাজার সঙ্গে যুদ্ধের বীজ রোপিত হয়।ঐদিন পুরীর রাজা সোনার ঝাঁটা দিয়ে স্নানবেদী পরিস্কার করেন।এই শাস্ত্রোক্ত বিধির বশবর্তী হয়ে রাজা পুরুষোত্তম উক্ত কার্য‍্য অনুষ্ঠান করবার সময় কাঞ্চীরাজ তাকে সেই অবস্থায় দেখে কন‍্যা সমর্পণ না করে স্বদেশ অভিমুখে যাত্রা করলেন।পুরীরাজ এই বিষয় জানতে পেরে যুদ্ধে রত হলেন। কাঞ্চীরাজ সম্বন্ধে যে জনশ্রুতি আছে তা কতদূর সত‍্য বলতে পারি না।যিনি ভগবানকে সাক্ষাৎ দর্শন করেছেন, এবং যার ভক্তি প্রভাবে ভগবান গণেশরূপ ধারণ করেছেন,তিনি যে পুরীর রাজা সোনার ঝাড়ু দিয়ে জগন্নাথের রাস্তা পরিস্কার করছেন বলে এটিকে নিচ কাজ মনে করবেন, এটি ঠিক মনে হয় না।যিনি ভক্ত হবেন,তাঁর বরং এইরকম কাজ দেখে পরম আনন্দই হবে।সামান‍্য লৌকিক আচার নিয়ে এই ক্ষেত্রে এইরকম মহৎ লোকের এরকম ইতর জনোচিত ব‍্যবহার শোভা পায় না। বিশেষকরে গণেশ বেশ সম্বন্ধে অন‍্য ভক্তের উপাখ‍্যান রয়েছে।একই গণেশ বেশ সম্বন্ধে দুইটি উপাখ‍্যান তাওও সন্দেহ জনক।যাইহোক,যেরকম জনপ্রবাদ আছে তাইই লেখা গেল।শ্রীজগন্নাথের গণেশ বেশ সম্বন্ধে যে অন‍্য একটি জনশ্রুতি আছে তা আস্বাদন করুন। এই গল্পদ্বারা ভগবান দেখালেন যে =*
*🌷যে যথা মাং প্রপদ‍্যন্তে তাং স্তথৈব ভজাম‍্যহম্।*
*🌻ভগবান জীবের প্রতি দয়া প্রকাশ করে ভক্ত যা চান তা পূরণ করেন।🌹কর্ণাট দেশে এক ভক্ত ছিলেন,তিনি ভগবানকে গণেশরূপে ভজনা করতেন। তিনি শুনতে পেলেন, ভগবান দারুব্রহ্ম হয়ে নীলাচলে বাস করছেন,তাঁকে দর্শন করলেই ব্রহ্মদর্শন হবে।এইকথা শুনে তিনি বহুকষ্টে পুরীতে উপস্থিত হলেন। পুরীতে উপস্থিত হয়ে তিনি শ্রীজগন্নাথ দর্শন করতে গেলেন। কিন্তু তিনি ইষ্টদেবতাকে যে ভাবে পূজা করতেন, সেভাবে জগন্নাথকে দেখতে পাচ্ছেন না, অর্থ‍্যাৎ জগন্নাথকে গণেশরূপে দেখছেন না। যাঁরা ইষ্ট-নিষ্ঠ ভক্ত,তাঁরা ইষ্ট ভিন্ন কোনরূপ দেখতে চান না।এর একটি উদাহরণ দেওয়া হল।*
*🌹একসময়ে দ্বাপরযুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকাতে রুক্মিণী সহ বিলাসভবনে বসে আছেন,এমন সময়ে ভক্ত শ্রেষ্ঠ হনুমান তাঁকে দর্শন করতে উপস্থিত হলেন।শ্রীকৃষ্ণ তখন মনে করলেন হনুমান আমার এইরূপ দেখে সন্তুষ্ট হবে না, সুতরাং আমার রামরূপ ধরতে হবে।ভক্তাধীন ভগবান শ্রীশ্রীরুক্মিণীদেবীকে তৎক্ষণাৎ সীতাদেবীর রূপ ধারণ করতে বললেন।সেই সময় উভয়ে রামসীতা সেজে ভক্তের মনোবাঞ্জা পূর্ণ করলেন।তখন হনুমান বললেন*
*🌷শ্রীনাথে জানকীনাথে অভেদে পরমাত্মনি।*
*🌷তথাপি মম সর্বস্বং রামঃ কমললোচন।।*
*🔴যদিও আমি জানি, আমার রামচন্দ্র এবং পরমাত্মারূপী ভগবান অভেদ,তবুও রামচন্দ্রই আমার যথা সর্বস্ব।*
*🔵এইরকম ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র গরুড়কে বিষ্ণুরূপ দেখিয়ে ছিলেন। সুতরাং ব্রাহ্মণ তার ইষ্টরূপ না দেখতে পেয়ে ফিরে চলে গেলেন। এদিকে ভগবান দেখলেন তার ভক্তবাঞ্জা কল্পতরু নামের কলঙ্ক হয় এবং "যে যথা মাং প্রপদ‍্যন্তে তাং স্তথৈব ভজাম‍্যহম্" ইত্যাদি তাঁর শ্রীমুখ নিঃসৃত কথারও বিরোধ ঘটে, সেই জন্য ভক্তকে ফিরাবার জন্য পান্ডাদের আদেশ করলেন।আদেশ অনুসারে পান্ডারা তার কাছে উপস্থিত হয়ে ভগবানের আদেশ জানালেন।ব্রাহ্মণ তখন পান্ডাদের মুখে ভগবানের আদেশ শুনে আনন্দে মগ্ন হয়ে পুনঃ ফিরে আসলেন।তখন জগন্নাথদেব ভক্তবাঞ্জা পূর্ণ করতে তাঁর নিজবেশ দূরে রেখে গণেশবেশ ধারণ করলেন। ব্রাহ্মণ প্রার্থনা করলেন,তুমি যে ভক্তবৎসল, বাঞ্জাকল্পতরু তা ভক্তদেরকে দেখাবার জন্য তোমাকে চিরদিন এইদিনে এই বেশ ধারণ করতে হবে। ভগবান তাইই স্বীকার করে ভক্তবাঞ্জা পূর্ণ করলেন।সেই হতে স্নান যাত্রার দিন এই বেশ হয়ে থাকেন।*
*🌻অতুলকৃষ্ণ গোস্বামী বিরচিত "ভক্তের জয়" গ্রন্থে গণপতি ভট্টের সম্বন্ধে এইরকম একটি উপাখ‍্যান অন‍্যভাবে বিবৃত আছে,সেইজন‍্য এখানে বিস্তারিত লেখা হল না।*
*🌺পান্ডাগণ বলেন,স্নানযাত্রার পর জগন্নাথের জ্বর হয় এবং ঔষধাদি ও পাচন সেবন করেন, তখন অন্ন ভোগ করা হয় না। এই পাচন অতি সুমধুর।*
*☘এই সময়ে শ্রীগৌরাঙ্গদেবকে দর্শন করবার জন্য নবদ্বীপ হতে অদ্বৈতাচার্য‍্য প্রভৃতি পরমভক্তগণ পুরীতে উপস্থিত হতেন।চন্দনযাত্রার সময় হতে আরম্ভ করে রথ পর্যন্ত নবদ্বীপ হতে আগত ভক্তগণ সকলেই থাকতেন।তাঁরা মহাপ্রভুর সঙ্গে কীর্তন আনন্দে এবং মহাপ্রভুকে ভোজন করিয়ে তিন-চারমাস মহাপ্রভুকে নিয়ে উৎসবানন্দে কাটাতেন।এই স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে মহাপ্রভু কোন বিশেষ লীলা করেছেন,এরকম কোন গ্রন্থে পাওয়া যায় না।যখন প্রতিদিনই মহাপ্রভু জগন্নাথ দর্শনে রত থাকতেন,তখন এই উৎসবের দিনে যে তার কোন বিশেষ লীলা হয়নি,তা সম্ভবপর বলে মনে হয় না।নবযৌবনে,নেত্রোৎসবে,রথে সমস্ত ব‍্যাপারে তাঁর বিশেষ সংস্রব দেখা যায়।*
🙏🌳🙌❤🍁🔷💧🌲🍀🌸🌻
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৩)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
         *🌼নীলাচলে মহাপ্রভু🌼*
            *🌹রুক্মিণী--হরণ🌹*
                           *ও*
          *⚪গুন্ডিচা--মার্জন⚪*
         /\/\/\/\/\/\/\/\/\/\/\
*🍀এটি জ‍্যৈষ্ঠমাসের শুক্লা একাদশী তিথিতে হয়।একদিন মদনমোহন রুক্মিণীকে হরণ করে অক্ষয়বটের কাছাকাছি জায়গায় বিয়ে করেন।এটি স্নানযাত্রার আগের একাদশীতে হয়।রুক্মিণী-হরণ উপলক্ষ্যে দুই দল হয় --,কৃষ্ণপক্ষের এক দল ও শিশুপাল পক্ষের এক দল।দেবদাসীরা শ্রীমতী রুক্মিণীর সখী স্থানীয়া।শ্রীমতী রুক্মিণী বিমলাদেবীর মন্দিরে পূজা দিতে আসেন ; পূজা দিয়ে যখন বাইরে আসেন, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে হরণ করে রথে নিয়ে আসেন।এতে শিশুপাল শ্রীকৃষ্ণকে আক্রমণ করেন,তখন উভয়দলে যুদ্ধ হয়, এবং শিশুপাল পরাজিত ও বন্দী হন।তখন বলরাম এসে শিশুপালকে ছেড়ে দেন।শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতী রুক্মিণীকে নিয়ে গিয়ে রাত্রে বিয়ে করেন।*
*🌿🌿🌿গুন্ডিচা--মার্জন🌿🌿*
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿
*🌹স্নানযাত্রার পরে রথযাত্রার আগে শ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভু গুন্ডিচা পরিস্কার করতেন।মহাপ্রভু নীলাচলে এসে ভক্তগণ সঙ্গে নানারকম লীলা করেছিলেন ; তারমধ‍্যে গুন্ডিচা পরিস্কার একটি প্রধান লীলা।মহাপ্রভুর নীলাচলে যাবার আগে এই লীলা ছিল না।শ্রীমন্মহাপ্রভুই এই লীলা নতূন প্রবর্তন করলেন। "আপনি আচরি ধর্ম জীবেরে শিখায়", তা এই দৃষ্টান্ত দ্বারা দেখালেন।মহাপ্রভু,তুলসী পড়িছা,কাশীমিশ্র ও সার্বভৌম এই তিনজনকে ডেকে বললেন, রথযাত্রার আগের দিন শ্রীগুন্ডিচা মন্দির পরিস্কৃত ও মার্জিত করতে হবে ; অতএব আপনারা মন্দির পরিস্কার করবার জন্য এই সেবাটি আমাকে দিন।এতে সকলে হাহাকার করে বললেন যে,এরকম নীচ কাজ মহাপ্রভুর পক্ষে শোভা পায় না,তবে যদি নিতান্তই শ্রীচৈতন‍্যদেবের ইচ্ছা থাকে,তাহলে অবশ্যই মহাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করতেই হবে।অতএব অনেক কলসী ও ঝাড়ু নিয়ে আসা হল এবং শ্রীমন্দিরে রাখা হল।গৌরহরি পরদিন সকালবেলা তাঁর পার্ষদগণ নিয়ে মহানন্দে মুহুর্মুহু হরিধ্বনি করতে করতে শ্রীগুন্ডিচা মন্দিরে উপস্থিত হলেন।এই হরি মন্দির মার্জনারূপ লীলা,মহাপ্রভু পূর্বে শ্রীনবদ্বীপেও একবার করেছিলেন।মহাপ্রভুর নবদ্বীপের ও নীলাচলের তিন-চারশ ভক্ত মন্দিরে সমবেত হলেন, তখন ভক্তি বাড়াবার জন্য প্রত‍্যেক ভক্তকে নিজ শ্রীহস্তে চন্দন মাখালেন ও মালা পরালেন।ভক্তগণ শ্রীকরস্পর্শে ভক্তিধন পেয়ে মহানন্দে শ্রীমন্দিরে প্রবেশ করলেন।*
*🌷আপনার হস্তে প্রভু চন্দন লইয়া।*
*🌷ভক্তসবে পরাইল অতি প্রীত হইয়া।।*
*🌷ঈশ্বর প্রসাদ মাল‍্য দিলেন গলায়।*
*🌷আনন্দে বিহ্বল সবে চৈতন‍্য কৃপায়।।*
*🌷করেতে শোধনী ভক্তগণ চারিদিকে।*
*🌷মত্ত-গজগতি প্রভু চলিলেন আগে।।*
*🌻মহাপ্রভু ভক্তগণ সঙ্গে মন্দির পরিস্কার কাজে রত হলেন, এবং অল্পক্ষণ মধ্যেই মন্দির পরিস্কার হলেই তখন জল আনবার আজ্ঞা হল।*
*🌷কত শত লোক জল ভরে সরোবরে।*
*🌷ঘাটে স্থল নাহি কেহ কূপে জল ভরে।।*
*🌷পূর্ণ কুম্ভ লইয়া আসে শত ভক্তগণ।*
*🌷শূন‍্য ঘট লইয়া যায় আর শত জন।।*
*🌷ঘটে ঘটে ঠেকি কত ঘট ভাঙ্গি গেল।*
*🌷শত শত ঘট তাহা লোকে আনি দিল।।*
*🌷জল ভরি ঘট ধোয়ে করে হরিধ্বনি।*
*🌷কৃষ্ণ হরিধ্বনি বিনু আর নাহি শুনি।।*
*🌷কৃষ্ণ কৃষ্ণ করি করে ঘট সমর্পণ।*
*🌷কৃষ্ণ কৃষ্ণ কহি করে ঘটের প্রার্থন।।*
*🌷যেই যেই করে সেই কহে কৃষ্ণ নাম।*
*🌷কৃষ্ণ নাম হইল তাহা সঙ্কেত সর্বকাম।।*
*🌷প্রেমাবেশে কহে প্রভু কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম।*
*🌷একেলা করেন প্রেমে শত জনের কাম।।*
*🌻এইভাবে সমস্ত মন্দির ধৌত করা হল।*
🦚🦚🦚🦚🦚🦚🦜🦚🦚🦚🦚🦚🦚
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৪)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *💐নীলাচলে মহাপ্রভু💐*
           *🌲গুন্ডিচা-মার্জন🌲*
                         *ও*
              *🌹নবযৌবন🌹*
       <><><><><[<[<><><><>
*☘শ্রীচন্দ্রোদয় নাটক বলেন=*
*🌷এইরূপ গৃহ মার্জ্জি কৈল প্রসন্ন শীতল।*
*🌷আপনি চরিত্র যেন আপন অন্তর।।*
*🌻অর্থ‍্যাৎ মহাপ্রভুর অন্তর যেরকম পবিত্র ও শীতল,মন্দির সেইরকম পরিস্কার ও জল দিয়ে ধৌত করে শীতল ও পবিত্র করলেন। যথা চন্দ্রোদয়=*
*গুন্ডিচা মার্জ্জন করি,আনন্দেতে গৌরহরি,*
          *স্বরূপাদি ভক্তগণ লইয়া।*
*আরম্ভিলা সংকীর্তন,আনন্দেতে ত্রিভুবন,*
       *ধ্বনি উঠে ব্রহ্মান্ড ভেদিয়া।।*
*স্বরূপের উচ্চগীতে,প্রেমের তরঙ্গ উঠে, ইত্যাদি।*
*🌹তারপর শ্রীমন্মহাপ্রভু উদন্ড নৃত্য আরম্ভ করলেন।*
*🌷মহা উচ্চ সংকীর্তনে আকাশ ভরিল।*
*🌷মহাপ্রভুর নৃত্যে ভূমিকম্প হইল।।*
*🌻তারপরে সকল ভক্তগণে জলখেলা হল।এতেও চন্দনযাত্রার সময় যেরকম মহাপ্রভু ও ভক্তগণ জলক্রীড়া করেছিলেন,এখানে ইন্দ্রদ‍্যুম্ন সরোবরে সেইরকম করলেন। তৎপর সকলে বনভোজনে বসিলেন।শ্রীকৃষ্ণের পুলিন ভোজনের কথা মনে পড়ল ; মহাপ্রভু ব্রজের ভাবে বিভোর হলেন।চারিদিকে হরিধ্বনি হতে লাগল।এইভাবে আনন্দে বিভোর হয়ে সকলে ভোজনে বসলেন।এই বনভোজনের দৃষ্টান্ত অদ‍্যাপিও মহোৎসবে দেখা যায় ; সেই অনুকরণেই বতর্মান সময়ে মহোৎসব হয়ে থাকে।শ্রীগৌরহরি নাই,অদ্বৈতাচার্য‍্য নাই, নিতাইচাঁদও নাই,সে মধুমাখা প্রেমও নাই,সে জায়গায় এখন বসান হয় আসন, ৬৪ মহান্তের ৬৪টি আসন হয়ে থাকে। মহাপ্রভুর প্রবর্তিত হরিনাম সেই মহোৎসবে অদ‍্যাপি বতর্মান রয়েছে।যদিও মহোৎসবে মহাপ্রভুর সময়ের জীবন্ত ভাব কিছুই নাই,তবুও মহোৎসব বড়ই আনন্দপ্রদ।আর একটি জিনিস দেখতে পাই তাও মহাপ্রভুর দেওয়া বলে মনে হয়।মহোৎসবেতে হিন্দুজাতি মাত্রেতে একত্রে বসে প্রসাদ গ্রহণ করে তাতে কারও কোন আপত্তি দেখা যায় না।এইরকম ব‍্যবহার অন‍্য কোন ব‍্যাপারে দেখা যায় না। সুতরাং এটিও মহাপ্রভুর প্রবর্তিত বলেই মনে করতে হবে।*
*🌳এখনও গুন্ডিচা-বাড়ীতে প্রতি বৎসর উক্ত নিয়ম অনুসারে বৈষ্ণবগণ গুন্ডিচা মন্দির পরিস্কার করে থাকেন।আগেই বলা হয়ে স্নানযাত্রার পর শ্রীজগন্নাথের পনেরদিন দর্শন হয় না।নির্বাচিত অমাবস‍্যার দিন "নবযৌবন" দর্শন হয়।প্রতিপদ দিনে প্রভুর নেত্রোৎসব বিধি অনুষ্ঠিত হয়।*
*🔴🔵🔴নবযৌবন🔴🔵🔴*
❤❤❤❤❤❤❤❤❤
*🍀পনেরদিন অদর্শনের পর অমাবস‍্যার দিন নবযৌবন দর্শন হয়।নবযৌবনের অর্থ এই যে শ্রীজগন্নাথের অঙ্গরাগ করা হয়। বৎসরের পরে বোধ হয় এই নতূন অঙ্গরাগ করা হয়। সুতরাং মূর্তি নবকলেবরে ধারণ করেন,এইজন‍্যই এই দর্শনকে নবযৌবন দর্শন কহে।পনেরদিনে অদর্শনের পরে জগন্নাথকে দর্শন করতে পেরে লোকের দর্শনের আকাঙ্ক্ষা খুব খুব বেড়ে যায়।এইজন‍্য এই সময়ে ভীষণ লোকের ভীড় হয়ে থাকে।যখন সর্ব সাধারণেরই এত উৎকণ্ঠা,তখন মহাপ্রভুরও কত উৎকণ্ঠা হয়েছিল,তা সহজেই বুঝতে পারা যায়। তিনি সমস্ত ভক্তগণ নিয়ে শ্রীজগন্নাথ দর্শনে চললেন।মহাপ্রভু মণিকোঠায় দর্শন করতে চান না,গরুড় স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়ে নয়নে নয়ন দিয়ে প্রভুকে মহাপ্রভু দর্শন করছিলেন।অশ্রুজলে তাঁর বক্ষ ভেসে যাচ্ছিল। রোজই এরকম হত।আজ অনেক দিনের পরে দর্শন হওয়াতে কত কথায় বলেছেন,যেন জগন্নাথের সঙ্গে আলাপ করছেন ; এবং অনেক দিন তাঁকে ছেড়ে ছিলেন বলে রাধার ভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, যেন সখীকে সম্বোধন করে বলছেন=*
*আমার নাগর, যায় পরঘর,*
     *আমার আঙ্গিনা দিয়া।*
  *সই, কেমনে ধরিব হিয়া।*
🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৫)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🔷নীলাচলে মহাপ্রভু🔷*
                *🔵নবযৌবন🔵* 
🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥
*🌷সই! কেমনে ধরিব হিয়া।*
*🌹আবার জগন্নাথের দিকে তাকিয়ে বলছেন,তুমি তো বোঝ না, তোমাকে যদি আঁখির নিমেষে না দেখি,তাহলে প্রাণে মারা যাই ;তুমি কি নিষ্ঠুর-- কেমন করে আমাকে এতদিন ছেড়ে থাকলে!*
*🌷আঁখির নিমেষে যদি নাহি হেরি,*
          *তবে যে পরাণে মরি।*
*🌷তুমি যে আমার পরশ রতন,*
              *গলায় গাঁথিয়া পরি।।*
                               *(চন্ডীদাস)*
*🌻আবার মনে মনে ভাবছেন,তিনি তো কেবল আমার নাথ নন। তখন বিল্গমঙ্গলের শ্লোক আবৃত্তি করলেন।*
*🌷হে দেব হে দয়িত হে ভুবনৈকবন্ধুঃ।*
*🌷হে কৃষ্ণ হে চপল করুণৈকসিন্ধুঃ।।*
*🌷হে নাথ হে রমণ হে নয়নাভিরামঃ।*
*🌷কদানুভবিতাসি পদং দৃশোর্মে।।*
*🌼🌼আবার বলছেন=*
*🌷বঁধূ কি আর বলিব আমি।*
*জনমে জনমে, জীবনে মরণে,*
         *প্রাণনাথ হইও তুমি।।*
*তোমার চরণে, আমার পরাণে,*
         *বাঁধিল প্রেমের ফাঁসি।*
*সব সমপিয়া, এক মন হইয়া,*
         *নিশ্চয় হইলাম দাসী।।*
*🌹তারপরে আবার ভক্তভাবে বলছেন, যথা বিল্বমঙ্গলের শ্লোক=*
*দীনদয়ার্দ্র নাথ হে মথুরানাথ কদাবলোক‍্যসে।*
*হৃদয়ং ত্বদলোক কাতরং দয়িত ভ্রাম‍্যতি কিং করোম‍্যহম্।।*
*🌻যদিও তিনি জগন্নাথকে কৃষ্ণভাবে দর্শন করছেন,তথাপি বলছেন,তোমাকে কবে দেখব?এটি দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে,তাঁর দেখার পিপাসা মিটছে না। যথা=চন্ডীদাস*
*🌷জনম অবধি হাম রূপ নেহারিনু।*
*🌷নয়ন না তিরপিত ভেল।।*
*🌷লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখনু।*
*🌷তবু হিয়ে জুড়ন না গেল।।*
*🍁অথবা,সেই ব্রজের ভাবে, সেই বেতসীকুঞ্জ-তরুতলে দেখা পাচ্ছেন না,কাজেই তার ব্রজের ভাবের পরিতৃপ্ত হচ্ছে না।*
*🌷সেই তুমি সেই আমি সেই নব সঙ্গম।*
*🌷তথাপি আমার মন হরে বৃন্দাবন।।*
*🌻যদি মহাপ্রভুর সঙ্গে শ্রীজগন্নাথের সংযোগ না হত,তাহলে এই অপূর্ব ভাব কোথা হতে পেতেন?এ অপূর্ব মহিমা কে কীর্তন করতে সমর্থ হত? এ অনন্ত প্রেমের উৎস কে খুলে দিতে পারত?*
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌲🌿🌿🌿🌿🌿🌿
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৬)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🔴নীলাচলে মহাপ্রভু🔴*
                *❤নেত্রোৎসব❤*
          🍀🔥🍀🔥🍀🔥🍀🔥
*🌕এটি প্রতিপদ দিনে অনুষ্ঠিত হয়।পনেরদিন অদর্শনের পর সেইদিন তিনি জগজ্জনের নেত্রগোচর হবেন।শাস্ত্রের কথা এই যে,শ্রীজগন্নাথদেব স্নান করে পনেরদিন পর্যন্ত নিভৃতে মহালক্ষ্মীর সঙ্গে দিন যাপন করেন ; তারপরে নেত্রোৎসব হয়।নেত্রোৎসব দিনে শ্রীজগন্নাথ নয়ন গোচর হলে জগন্নাথকে দর্শন করে সকলে উৎকণ্ঠিতনেত্রে নয়নের তৃপ্তি সাধন করেন বলে এর নাম নেত্রোৎসব।নয়নের প্রকৃত তৃপ্তিসাধন অথবা উৎসব এটি অপেক্ষা আর কি হতে পারে? যা দেখলে আর কিছু দেখবার দরকার হয় না,একেবারে নয়ন "তিরপিত"(তৃপ্তি) হয়ে যায়,তাইই প্রকৃত নেত্রোৎসব।*
*🌹যৎ লব্ধ্বা পুমান্ তৃপ্তো ভবতি, অমৃতো ভবতি, সিদ্ধো ভবতি,আত্মারামো ভবতি।*
*নিপীয় যস‍্য পীযুষং ন স্পৃহা চান‍্যবস্তুষু।*
*🌻যে বদন দর্শন করলে এই অবস্থা হয়,তাকেই বলি নেত্রোৎসব, এবং তাইই বলি দর্শন।*
*🍀শ্রীচৈতন‍্যদেব রাধাভাবে বিভোর হয়ে কিরকম দর্শন করতেন তা নিচে উদ্ধৃত করছি।*
*🌹শ্রীকৃষ্ণকে দর্শন করে শ্রীমতী রাধিকার কিরকম ভাব হত তা চন্ডীদাস এইভাবে বর্ণনা করেছেন=*
*শ‍্যামের বদনের ছটার কিবা ছবি।*
*কোটি মদন জনু,জিনিয়া শ‍্যামের তনু,*
          *উদয়িছে যেন শশী রবি।।*
*🌳সই কিবা সে শ‍্যামের রূপ,*
              *নয়ন জুড়ায় চেয়ে।*
*হেন মনে লয়,যদি লোক ভয় নয়,*
     *কোলে করি যেয়ে ধেঞে।।*
*🌻🌻আর একটি পদ এই=*
*বরণ দেখিনু শ‍্যাম,জিনিয়া ত কোটি কাম,*
          *বদন জিতল কোটী শশী।*
*ভাঙ ধনুভঙ্গি ঠাম,নয়নকোণে পুরে বাণ,*
          *হাসিতে খসয়ে সুধারাশি।।*
   *সই এমন সুন্দর বর কান।*
*হেরিয়ে সেই মূরতি,সতী ছাড়ে নিজ পতি,*
        *তেয়াগিয়া লাজভয় মান।।*
*এ বড় কারিকরে, কুঁদিলে তাহারে,*
         *প্রতি অঙ্গ মদনের শরে।*
*যুবতী ধরম, ধৈর্য‍্য ভুজঙ্গম্*
            *দমন করিবার তরে।।*
*অতি সুশোভিত, বক্ষ বিস্তারিত,*
          *দেখিনু দর্পণাকার।*
*তাহার উপরে, মালা বিরাজিত,*
           *কি দিব উপমা তার।।*
*নাভির উপরে, লোমলতা বলি,*
         *সাপিনী আকার শোভা।*
*ভুরুর বলনী, কামধনু জিনি,*
         *ইন্দ্র ধনুকের আভা।।*
*চরণ নখরে, বিধু বিরাজিত,*
          *মণির মঞ্জির তায়।*
*চন্ডীদাস হিয়া, সেরূপ দেখিয়া,*
           *চঞ্চল হইয়া যায়।।*
*🌹শ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভুও নেত্রোৎসব দিনে শ্রীজগন্নাথের বদন কমল দর্শন করে রাধাভাবে বিভোর হয়েছেন। শ্রীচৈতন‍্য মহাপ্রভু ভক্তগণ নিয়ে আনন্দে দর্শন করতে গমন করেছেন=*
*🌷হেরি গোরা নীলাচল নাথ।*
*🌷নিজ পারিষদগণ সাথ।।*
*🌷বিভোর হইল গোপী ভাবে।*
*🌷কহে কিছু করিয়া আক্ষেপে।।*
*🌷আমি তোমায় না দেখিলে মরি*।
*🌷পালটি না চাও তুমি ফিরি।।*
*🌷ছল ছল অরুণ নয়ন।*
*🌷বিরস আজ সরস বদন।।*
*🌷বিভোরিতে গোরা ভাব হেরি।*
*🌷কহে কিছু দাস নরহরি।।*
*🌻এইরকমে মহাপ্রভু=*
*🌷মধ‍্যাহ্ন পর্য‍্যন্ত কৈল শ্রীমুখ দর্শন।*
*🌷স্বেদ,কম্প,ঘর্ম্ম অঙ্গে বসে অনুক্ষণ।।*
*🍀তখন ভক্তগণ মহাপ্রভুকে সান্ত্বনা করে তাঁকে বাসায় আনিলেন।।*
*🌳নবযৌবন অমাবস‍্যাতে হয়, নেত্রোৎসব বিধি প্রতিপদে অনুষ্ঠিত হয়।নবযৌবনের বিষয় অমিয় নিমাই চরিত অথবা শ্রীচৈতন‍্যচরিতামৃতে উল্লেখ দেখছি না ; নেত্রোৎসব বিধির উল্লেখ দেখেছি।নবযৌবন বিধিটি নতূন প্রবর্তিত কিনা তা বলা যায় না।যদি নবযৌবন বিধি সে সময়ে থেকেই থাকে তাহলে মহাপ্রভু নেত্রোৎসব অপেক্ষা নবযৌবনের দিনই বেশী পরিমাণে ব‍্যাকুলতার ভাব দেখিয়েছেন মনে করতে হবে। আর উভয় দিনেই এই ভাব হলেও কিছু দোষ হয় না,কারণ তিনি ভাব-নিধি, তাঁর কোন সময়ে কোন ভাব উদয় হচ্ছে তা কেউ বর্ণনা করতে পারেন না।কোন সময়ে তিনি রাধা সেজে ভর্ৎসনা করছেন আবার পরক্ষণেই ভক্তিতে গদ গদ হয়ে শ্রীকৃষ্ণের চরণ-যুগল ধারণ করছেন।আবার নিজেই কৃষ্ণ সেজে এক সময়েতেই ভক্তের ভাব অঙ্গীকার করে নিজের পায় নিজে প্রণাম করছেন।*
*🍁পরেরদিন রথযাত্রা।শ্রীজগন্নাথদেব রথে চড়বেন, এই আনন্দে মহাপ্রভুর সারারাত্রি ঘুম নাই।*
*🌷প্রভুর হৃদয়ানন্দ সিন্ধু উথলিল*।
*🌷উন্মাদ ঝঞ্ঝার বায়ু তৎক্ষণে উঠিল।।*
*🌳প্রতিপদ দিনে গৌরহরির নেত্রোৎসব হলে,তারপর দিন দ্বিতীয়া তিথির সকালবেলাতে "খেচরান্ন" ভোগ শেষ করে রথাভিমুখে প্রভুর পাহুন্ডি-বিজয় করা হয়।এই যাত্রার নাম গুন্ডিচা যাত্রা।মহারাজ ইন্দ্রদ‍্যুম্নের পট্টমহিষীর নাম গুন্ডিচা থাকায়, সেই অনুসারে এই যাত্রার নামকরণ হয়েছে।এই যাত্রার নামান্তর নন্দীঘোষ বা পতিতপাবন যাত্রা,অথবা রথযাত্রা।*
🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৭)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *⭐নীলাচলে মহাপ্রভু⭐*
                *🛕রথযাত্রা🛕*
          🛕🛕🛕🛕🛕🛕🛕
*🌷রথেতু বামনং দৃষ্ট্বা পুনর্জন্ম ন বিদ‍্যতে।*
*🌷যে পশ‍্যন্তি রথে যান্তং দারুব্রহ্ম সনাতনং।*
*🌷পদে পদেহশ্বমেধস‍্য ফলং তেষাং প্রকীর্ত্তিতং।।*
*🌷জয় কৃষ্ণ জয় কৃষ্ণ জয় কৃষ্ণেতি যো বদেৎ।*
*🌷গুন্ডিচা মন্ডপং যান্তং কৃষ্ণং ভক্তিসমন্বিতঃ।।*
*🌷স মর্ত্ত‍্যো গর্ভবাসস‍্য ন চ দুঃখমবাপ্নুয়াৎ।।*
*🌹এই শাস্ত্রোক্ত বচন অনুসারে শ্রীজগন্নাথদেবের মাহাত্ম্য রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বিশেষ দেখা যায়।এই সময়ই নানাদেশ হতে বহু ভক্তের সমাবেশ হয়ে থাকে, এবং যতরকম উৎসব হয়ে থাকে তারমধ‍্যে রথযাত্রা সর্বপ্রধান।এই সময়ে যত ভক্ত আসেন,এরকম লোক একত্রিত আর কখনও হয় না,আনন্দও অপরিসীম হয়ে থাকে।এটি নয়দিনের যাত্রা, অর্থ‍্যাৎ দ্বিতীয়া হতে দশমী পর্য‍্যন্ত স্থায়ী। জগন্নাথ,বলদেব ও সুভদ্রা ইঁনাদের প্রত‍্যেকের জন্য এক একটি রথ প্রতি বৎসর নতূন করে নির্মিত হয়।গুন্ডিচা যাত্রার প্রথম দিনে রথ সমস্ত সিংহদ্বারে উপস্থিত করা হয়। রথযাত্রার সময়,জগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রা দেবীকে রথে তুলে মন্দির হতে এক মাইল বা দেড় মাইল দূরে অবস্থিত উদ‍্যানগৃহ গুন্ডিচা মন্দিরে আনা হয়।*
*জগন্নাথ মন্দিরের পূর্বদিকে সিংহদ্বারের সামনে দিয়ে উত্তরদিকে যে একটা প্রশস্ত রাস্তা গিয়েছে, এই রাস্তার নাম "বড় দান্ড" বা রথের রাস্তা, এই রাস্তা গুন্ডিচা মন্দির ও ইন্দ্রদ‍্যুম্ন পর্য‍্যন্ত গিয়েছে।রথের সময় এই রাস্তা লোকে লোকারণ‍্য হয়ে যায়।রাস্তার দুইধারে যত দালানের ছাদ আছে,তাও পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এই সময়ে যাদের মন্দিরের কাছে বাড়ী আছে,তারা বিশেষভাবে লাভবান হয়। এমন কি বৎসরের ভাড়াতে যা লাভ না হয় তা অপেক্ষা অনেক বেশী পেয়ে থাকেন। অর্থ‍্যাৎ বাড়ী ভাড়া দিয়ে যে টাকা পান,তার তুলনায় অনেক বেশী কেবল রথের একমাসে উপার্জন হয়।অনেক আগে থেকে এইসব কোঠা বা ছাদ সংগ্রহ করতে হয়।সামান‍্য একটা কোঠার ভাড়া পঞ্চাশ টাকা হতে একশ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে, এমনকি তার থেকেও অনেক বেশী পায়।*
*শ্রীজগনাথদেব ১২টা কি ১টার সময় রথে আসেন।সকালবেলায় ভক্তগণ যার যার নির্দিষ্ট জায়গা অধিকার করেন।যারা ছাদে বসবেন,তাদের তাড়াতাড়ি যেতে হয়। রাস্তা হতে যারা দেখবেন,তাদের সকালবেলা যেতে হয় না। কিন্তু যারা রথারোহণ সময়ে ঠাকুরকে দর্শন করতে চান,তাদের সকালবেলাই যেতে হয়।সেখানে জায়গার পরিমাণ কম,লোক সংখ্যা অত‍্যন্ত বেশী। ম‍্যাজিষ্ট্রেট এবং পুলিশের বড় কর্তা, পুলিশ দলবল সহ উপস্থিত থাকেন,কতক্ষণে ঠাকুর আসবেন।ঘন্টা বাজলেই মনে হয় এই বুঝি ঠাকুর আসছেন, আবার নিরাশ হতে হয়।এইরকমে আশায় এ নিরাশায় বহু সময় কেটে যায়।নব অনুরাগিনী প্রেমিকা যেমন ভালোবাসার পাত্র কতক্ষণে আসবেন এই উৎকণ্ঠায় সময় যাপন করে, রথের জগন্নাথ দেখবার জন্য সমস্ত লোকও সেইরকম উৎকণ্ঠিত ভাবে সময় কাটাতে থাকেন।প্রথমে বলরাম রথে আসেন,তারপর সুভদ্রাদেবী, অবশেষে শ্রীজগন্নাথদেব আসেন,উঠবার আগে রথ পরিক্রমণ করে তারপরে রথে আরোহণ করেন। ঠাকুর রথে আরোহণ করলে,সাধারণ যাত্রিক,তারমধ‍্যে অধিকাংশই পশ্চিমা বা পুরীবাসী যাত্রিক বা ভক্তদল, জগন্নাথ দর্শন করবার জন্য ব‍্যাকুল হয়ে পড়ে।একদিকে পুলিশ শৃংখলা রাখবার জন্য তাদের গতি রোধ করছে,অর্থ‍্যাৎ ভিড় সামাল দিচ্ছে,অন‍্যদিকে পুলিশ আক্রমণ হতে পালিয়ে গিয়ে কেউ আহত হয়ে দর্শন করছে।এই দৃশ্য এক-দেড় ঘন্টা পর্যন্ত থাকে।এর পরে রথ চলে।এই সময়ে বহু কীর্তন হতে থাকে,তারমধ‍্যে ঁচরণ দাস বাবাজীর জল প্রধান।*
*🍀রথের প্রথম দিন উপর-নিচ,আশে-পাশে বহুসংখ‍্যক আদিমবাসীদের সাহায্যে রথের দড়ি বন্ধনে জগন্নাথ ও বলরাম রথে উত্তোলন করা হয়।সুভদ্রাদেবীকে কোলে করে রথে উঠানো হয়। যেসব লোক দ্বারা জগন্নাথ ও বলরামকে রথে তোলা হয়,তাদেরকে "দয়িতা" বলে।দয়িতাগণ এইসময়ে সর্বে সর্বা।এই সমস্ত রথের উচ্চতা যথা=জগন্নাথের রথ ২৩হাত উচ্চ,বলরামের রথ ২২হাত উচ্চ, এবং সুভদ্রাদেবীর রথ ২১হাত উচ্চ। জগন্নাথদেবের রথের ষোলটি চাকা, একে নন্দীঘোষের রথ বলা হয়, এর জন্য ষোলশ শত "বেঠিয়া" আবশ্যক। (যারা রথ টানে তাদেরকে বেঠিয়া বলে)।বলরামের রথের চোদ্দটি চাকা, একে তালধ্বজ বলা হয়।সুভদ্রাদেবীর রথের দ্বাদশ চাকা, একে দবদলন রথ বলা হয়।*
🛕🛕🛕🛕🛕🛕🙏🛕🛕🛕🛕🛕🛕
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৮)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
          *🦚নীলাচলে মহাপ্রভু🦚*
               *🛕রথ--যাত্রা🛕*
            🦚🦚🦚🦚🦚🦚🦚
*🔷শ্রীজগন্নাথ ও বলরামের রথের দড়ি টানার জন্য চোদ্দশত ও দ্বাদশশত বেঠিয়া আবশ্যক হয়। প্রত‍্যেক রথের চাকা সংখ্যা অনুসারে রথ রজ্জু ব‍্যবহার করা হয়। রজ্জু নারকেলের ছোবায় তৈরী।প্রত‍্যেক দড়ি প্রায় একশ হাত লম্বা।বর্তমানে বেঠিয়ার সংখ্যা অনেকটাই কম হয়েছে।*
*🛕স্নানযাত্রা হতে গুন্ডিচাযাত্রা শেষ হওয়া পর্যন্ত বিশ্বাবসু বংশীয়,যাদেরকে "দয়িতা নিয়োগ" বলে,তাদের অধিকার,এবং বিদ‍্যাপতি বংশীয়েরা,যাদেরকে "পতি" বলে তারা পূজা কার্য‍্য সম্পন্ন করে। প্রতিষ্ঠা বিধির পর সমস্ত রথ নানারকম পট্টবস্ত্রে ও ভূষণে সুসজ্জিত করা হয়।*
*🙏এখন পাঠকগণ একটু আগের অবস্থা শুনতে হবে।রাজা প্রতাপরুদ্র এবং শ্রীচৈতন‍্যদেব রথের সময়ে কিরকম করতেন তা বলছি। আহা,এই রথযাত্রার সঙ্গে শ্রীগৌরাঙ্গের কতই না ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল!শ্রীচৈতন‍্যমহাপ্রভু আনন্দে বিহ্বল,ভাবে বিভোর,প্রাতঃস্নান করে সমস্ত ভক্তগণ সহ তাঁরা একেবারে শ্রীজগন্নাথের কাছে উপস্থিত হলেন।এবার রথের মহাসজ্জা!রাজা প্রতাপরুদ্র প্রভুর অনুগত।প্রভুর সন্তোষের জন্য এবার রথের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি হয়েছে। ভগবানের রথ নানা বর্ণের বস্ত্রের দ্বারা সজ্জিত হয়েছে,তাতে নানান বর্ণের পতাকা উড়ছে।মহা কলরবের সঙ্গে বাদ‍্যধ্বনি হচ্ছে।এই সময়ে সেবকগণ শ্রীবিগ্রহ ধরে মহা উৎসাহে উৎসাহিত হয়ে শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবকে রথের উপর উঠালেন। রথ চলিল,দর্শকগণ দুই পার্শ্বে পায়ে-হেঁটে চললেন।এসময়ে আমাদের মহাপ্রভু কি করছেন তা আস্বাদন করা হোক,যথা অমিয় নিমাই চরিত হতে=*
*🛕অপরূপ রথের সাজনি।*
*🛕তাহে চড়ি যায় যাদুমণি।।*
*🛕দেখিয়া আমার গৌর হরি।*
*🛕নিজগণ লইয়া এক করি।।*
*🛕মাল‍্য চন্দন সবে দিয়া।*
*🛕জগন্নাথ নিকটে যাইয়া।।*
*🛕রথ বেড়ি সাত সম্প্রদায়।*
*🛕কীর্তন করে গৌর রায়।।*
*🛕আজানুলম্বিত বাহু তুলি।*
*🛕ঘন উঠে হরি হরি বলি।।*
*🛕গগন ভেদিল সেই ধ্বনি।*
*🛕অন‍্য আর কিছুই না শুনি।।*
*🌻রথাগ্রে যে কীর্তন পদ্ধতি দেখতে পায়,তা সেই মহাপ্রভুর সৃষ্টি।এর বিস্তারিত বিবরণ স্বর্গীয় শিশির বাবু অমিয় নিমাই চরিত গ্রন্থে বিস্তারিত বর্ণন করেছেন,তার কিছু অংশ নিচে দেওয়া হল। এই রথযাত্রার ব‍্যাপারে সমস্ত লোক এই তিনটি বস্তু লক্ষ্য করেছেন=*
*১)শ্রীশ্রীজগনাথদেবের রথারোহণ,*
*২)শ্রীগৌরাঙ্গদেব পদব্রজে,*
*৩)রাজা প্রতাপরুদ্রও পদব্রজে,*
*🌹লাখ লাখ লোক এই তিনজনকে দেখবার জন্য ব‍্যাকুল। তখন মহাপ্রভু কি করছিলেন,*
*🌷সাত ঠাঁই বুলে প্রভু হরি হরি বলি।*
*🌷জয় জয় জগন্নাথ কহে হস্ত তুলি।।চৈঃচঃ।।*
*🌹মহাপ্রভুর এই অবস্থা দেখে রাজা প্রতাপরুদ্র ভাবছেন যেন,শ্রীজগন্নাথ রথ স্থগিত করে মহাপ্রভুর কীর্তন শুনছেন।ক্রমে ক্রমে তার জ্ঞান হল যে রথের উপর যিনি বসে আছেন, তিনি আর মহাপ্রভু এক বস্তু,তিনি রথে জগন্নাথকে দেখতে পেলেন না,দেখলেন মহাপ্রভু বসে আছেন।*
*🌷প্রতাপরুদ্র হইল পরম বিস্ময়।*
*🌷দেখিতে বিবশ রাজা হইল প্রেমময়।।*
*🌷রাজার তুচ্ছ সেবা দেখি প্রসন্ন প্রভুর মন।*
*🌷সে প্রসাদে পাইল এই রহস‍্য দর্শন।।* 
                  *(অমিয় নিমাই চরিত)*
*🍀রথ চলবার আগে,সেই ধীশক্তি (শ্রবণ,কৌতূহল,আহরণ,স্মৃতিতে ধারণ,সন্দেহ নিরসন,বুদ্ধিবা মেধা, জ্ঞান,মতি বা সুধী প্রভৃতি আটরকম বুদ্ধিগুণকে ধীশক্তি বলা হয় )সম্পন্ন রাজাধিরাজ গজপতি প্রতাপরুদ্র হাতে সোনার ঝাড়ু ও চন্দন জল নিয়ে রথ পরিস্কার করতে লাগলেন, আর সেটিতে চন্দন জলের ছিটাদিতে লাগলেন।রাজা ভাবতে লাগলেন,তার এমন ভাগ‍্য কি কখন হবে যে তিনিও গৌরাঙ্গের গণ হবেন।শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গের মহিমা এখন বিবেচনা করুন।*
*🌷কৃষ্ণবর্ণং ত্বিষা কৃষ্ণং সাঙ্গোপাঙ্গাস্ত্র পার্ষদং।*
*🌷যজ্ঞৈঃ সংকীর্তন প্রায়ৈ র্যজন্তি হি সুমেধসঃ।।*
       *(শ্রীমদ্ভাগব,১১শ স্কন্ধে ৫ম অধ‍্যায়)*
*🌻গৌরহরি এই সময়ে সাত সম্প্রদায় একত্র করলেন।পরে স্বয়ং নৃত্য করবেন ইচ্ছা করলেন মহাপ্রভু প্রথমে জগন্নাথকে দন্ডবৎ করলেন এবং নিচের শ্লোকে জগন্নাথের স্তব করতে আরম্ভ করলেন।*
*🌷নমো ব্রহ্মণ‍্য দেবায় গো ব্রাহ্মণ হিতায় চ।*
*🌷জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।*
*🌹পরে তাঁর নিজ কৃত শ্লোকে যে স্তব করেছিলেন,তা আস্বাদন করুন।*
*🌷জয়তি জয়তি দেবো দেবকী-নন্দনোহসৌ,*
*🌷জয়তি জয়তি কৃষ্ণো বৃষ্ণি-বংশ-প্রদীপঃ।*
*🌷জয়তি জয়তি মেঘ শ‍্যামলঃ কোমলাঙ্গো,*
*🌷জয়তি জয়তি পৃথ্বি ভারনাশো মুকুন্দঃ।।*
*🌷জয়তি জননিবাসো দেবকী জন্মবাদৌ,*
*🌷যদুবর পরিষৎস্বৈ র্দোর্ভিরস‍্যান্ন ধর্মং।*
*🌷স্থিরচর বৃজিনঘ্নঃ সুস্মিত শ্রীমুখেন,*
*🌷ব্রজপুর বনিতানাং বর্দ্ধয়ন্ কামদেবং।।*
*🌷নাহং বিপ্রো ন চ নরপতির্নাপি বৈশ‍্যো ন শূদ্রো,*
*🌷নাহং বর্ণী ন চ গৃহপতি র্নবনস্থো যতির্বা।*
*🌷কিন্তু প্রোদন্নিখিল পরমানন্দ পূর্ণামৃতাব্দে,*
*🌷র্গোপীভর্ত্তুঃ পদকমলয়োর্দাসানুদাস।।*
*🌻এই স্তব পাঠ করছেন,আর তাঁর আয়ত (টানা টানা)নেত্র দিয়ে জলের ধারা পড়ছে।দর্শকগণ অপরূপ দেখছেন যে তাঁর অশ্রু বারিধারার মত মাটিতে পড়ছে।এই বারিধারায় ভক্তগণের হৃদয়কে প্রক্ষালিত (ধৌত) করলেন।তারপর গৌরহরি নৃত্য আরম্ভ করলেন।*
🙌🙌🙌🙌🙌🙌🙏🙌🙌🙌🙌🙌🙌
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৪৯)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
         *🦚নীলাচলে মহাপ্রভু🦚*
               *🛕রথযাত্রা🛕*
           °°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
*🍀মহাপ্রভুর নৃত্য সম্বন্ধে চরিতামৃতে যে বর্ণনা আছে তার কিঞ্চিৎ দেওয়া হল।*
*🌷উদ্দন্ড নৃত্য প্রভুর অদ্ভুত বিকার।*
*🌷অষ্টসাত্ত্বিক ভাব উদয় হয় সমকাল।।*
*🌷মাংস ব্রণ সহ রোমবৃন্দ পুলকিত।*
*🌷শিমুলের বৃক্ষ যেন কন্টকে বেষ্টিত।।*
*🌷এক এক দন্তের কম্প দেখি লাগে ভয়।*
*🌷লোক জানে দন্ত সব খসিয়া পড়য়।।*
*🌷সর্বাঙ্গে প্রস্বেদ ছুটে তাহে রক্তোদগম্।*
*🌷জয় জয় জজগগ গদগদ বচন।।*
*🌷জল-যন্ত্র-ধারা যেন বহে অশ্রুজল।*
*🌷আস পাশ লোক যত ভিজিল সকল।।*
*🌷দেহ-কান্তি গৌর কভু দেখিয়ে অরুণ।*
*🌷কভু কান্তি দেখি যে মল্লিকা-পুষ্পসম।।*
*🌻মহাপ্রভুর ভাবোন্মাদ হ'ল, সেই সঙ্গে লোকগুলো আনন্দে পাগল হয়ে উঠিল।*
*🌷জগন্নাথ-সেবক যত রাজ-পাত্রগণ।*
*🌷যাত্রিক-লোক নীলাচলবাসী যতজন।।*
*🌷প্রভু-নৃত‍্য-প্রেম দেখি হয় চমৎকার।*
*🌷কৃষ্ণ-প্রেমে উথলিল হৃদয় সবার।।*
*🌷প্রেমে নাচে গায় লোক করে কোলাহল।*
*🌷প্রভু-নৃত‍্য দেখি সবে আনন্দে বিহ্বল।।*
*🍀শ্রীচৈতন‍্যদেব বলেছিলেন,তিনি রাজ-সম্ভাষণ করবেন না।রাজার সঙ্কল্প,তিনি মহাপ্রভুর কৃপাপাত্র হবেন।শ্রীভগবান ভক্তের কাছে পরাস্ত হলেন।(তিনি যে ভক্তাধীন ভগবান, ভক্তের ইচ্ছায় ভগবানের ইচ্ছা), এইরকম ঘটনা আজ যে নতূন হয়েছে তা নয়।কুরুক্ষেত্র-যুদ্ধে ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা--- পঞ্চ পান্ডব বধ করবেন। যখন কৃষ্ণের কৌশলে তা ভঙ্গ হল,তখন তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন,কৃষ্ণ যে প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না,সে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে ভগবানকে অস্ত্র ধরাব।ভীষ্মের এই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করবার জন্য,শ্রীকৃষ্ণ তাঁর নিজের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে,কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছিলেন।*
*🌻মহাপ্রভু রাজার প্রতি প্রসন্ন হয়েছেন,তাঁকে কৃপা করতে হবে, অথচ বিষয়ীর সঙ্গে সন্ন‍্যাসীর সংস্রব বা মেলামেশা নিষেধ।তাই আজ গৌরহরি রাজার সামনে মূর্ছিত হলেন,রাজা চরণ-দুইখানি নিজের কোলে রেখে অতি যত্নে সেবা করতে লাগলেন। যথা কবি কর্ণপুরের কাব‍্যে পাই=*
*আনন্দোৎসাহ-মূর্ছাগত ইব ভবতি স্পন্দ-নিশ্বাস-মন্দে,*
*রোহদ্রোমাঞ্চ-পূরৈর্বিকলিত-বপুষানন্দ-মন্দীকৃতেন।*
*স‍্যন্দন্নেত্রারবিন্দদ্বয়-সলিল-জুষা রুদ্রদেবেন ভূয়ঃ,*
*সানন্দং সেবিতাঙ্ঘ্রিদ্বয়-সরসি-রুহো রাজতে গৌরচন্দ্রঃ।।*
*🌹সময়ে সময়ে মহাপ্রভু আনন্দে ও উৎসাহে এত অধীর হচ্ছেন,যে তা তাঁর হৃদয়ে স্থান পাচ্ছে না ; তাতে নিশ্বাস ও স্পন্দন মন্দীভূত (ধীরগতিতে)হচ্ছে এবং শ্রীচৈতন‍্যদেবকে মূর্ছাগত প্রায় দেখা যাচ্ছে।অন‍্যদিকে প্রতাপরুদ্রের দেহপিন্ড আনন্দে জড়ীভূত হয়ে,সর্বাঙ্গ লোমাঞ্চিত হচ্ছে,তাতে বিকলিত(বিকৃতি) অঙ্গ দেখা যাচ্ছে। তাঁর নয়ন হতে বারিধারা পড়ছে, সেই অবস্থায় তিনি শ্রীগৌরচন্দ্রের পদসেবা করছেন।সেই নয়নজলে গৌরচন্দ্র,যেন পদ্ম ফুটেছে,এইরকম শোভা পাচ্ছেন।*
*🙌মহাপ্রভু ভাবে বিভোর হয়ে নৃত্য গীত সংকীর্তন করতে করতে চলেছেন। হঠাৎ রথ চলা বন্ধ হল।রথ চলছে না,রাজা ব‍্যাকুল হয়ে,রথ চালাবার জন্য যথাসাধ‍্য চেষ্টা করছেন।এইসব ব‍্যাপার মহাপ্রভু তাঁর ভক্তগণ নিয়ে,নীরবে দাঁড়িয়ে দেখছেন।রাজা যখন দেখলেন যে,রথ চালানো তাঁর পক্ষে অসাধ‍্য,তখন নিরাশ হয়ে,অত‍্যন্ত কাতরভাবে শ্রীচৈতন‍্যদেবের পানে দেখতে লাগলেন।শ্রীমন্মহাপ্রভুও অমনি "ভয় কি, এই যে আমি আছি" নয়ন-ভঙ্গী করে এই ভাব প্রকাশ করে অগ্রবর্তী হলেন।মহাপ্রভু চললেন,সঙ্গে ভক্তগণ চললেন।গৌরহরি হস্তিগুলি রথ হতে ছাড়ায়ে, রথের রজ্জু নিজ জনের হাতে দিলেন, ও রথের পেছনে মস্তক স্পর্শ করে রথ ঠেলতে লাগলেন। রথ অমনি হড়্ হড়্ করে চলতে লাগল।যাঁরা দড়ি ধরে রথ টানতে নিযুক্ত হয়েছেন,তাঁরা দেখছেন যে,তাঁদের শক্তিতে রথ চলছে না,রথ যেন নিজ শক্তিতে চলছে।তখন দর্শকগণ আনন্দে চিৎকার করে উঠিল, ও শ্রীচৈতন‍্যদেবের জয় ঘোষণা করতে লাগল।*
*🌷জয় গৌরচন্দ্র জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন‍্য।*
*🌷এই মত কোলাহল লোকে ধন‍্য ধন‍্য।।*
*🌷দেখিয়া প্রতাপরুদ্র পাত্রমিত্র সঙ্গে।*
*🌷প্রভুর মহিমা দেখি প্রেমে ফুলে অঙ্গে।।*
*🙏মহাপ্রভুর লীলা দর্শন করে রাজা এখন হতে গৌররূপ ধ‍্যান,গৌর-নাম জপ করতে লাগলেন,এটিই এখন তাঁর সাধন ভজন হল।শ্রীগৌরাঙ্গ শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে পুরীধামে সব জায়গায় প্রচারিত হলেন।রাজা প্রতাপরুদ্র হতে তাঁর প্রজা পর্যন্ত সকলের হৃদয়েই এইকথা বদ্ধমূল হল।রাজা প্রতাপরুদ্র মহাপ্রভুর "গণ" হলেন, অর্থ‍্যাৎ গৌরাঙ্গ-অবতারের যে চৌষট্টি আদি মহান্ত আছেন,প্রতাপরুদ্র তাঁদের মধ্যে একজন।আঠার বৎসর শ্রীচৈতন‍্যদেব জগন্নাথে লীলা করেছিলেন, কতরকম লীলাই যে করেছেন,তা সবিস্তার বর্ণনা করা যায় না। তিনি কখনও ভাবে অচেতন হয়ে পড়তেন, কখনও দীর্ঘাকার হয়ে, কখনও বা কূর্মাকার হয়ে চলতেন। কখনও বা চক্ষেতে সুরধূনীর আবির্ভাব হত,সেই বন‍্যাতে সকলকেই ভাসাতেন।*
*🌳শ্রীশ্রীজগন্নাথদেব মহাপ্রভুকে দিয়ে,তাঁর লীলা-মাহাত্ম‍্য বিস্তার করেছেন।মন্দিরের ভিতর,গরুড় স্তম্ভের কাছে যে কুন্ড দেখতে পাই, তা মহাপ্রভুর অশ্রুজলের কুন্ড। দেওয়ালের গায়ে যে আঙ্গুলের দাগ আছে,তা মহাপ্রভুর অঙ্গুলিচিহ্ন। সেখান হতে তাঁর পদচিহ্ন এখন কোন কারণে স্থানান্তরিত করে রাখা হয়েছে।স্তম্ভের গায়ে যে ষড়্ ভুজ মূর্তি অঙ্কিত দেখতে পাওয়া যায়,তা শ্রীগৌরাঙ্গ পার্ষদ সার্বভৌমকে যে মূর্তি দেখিয়েছিলেন,সেই মূর্তি।দক্ষিণ দরজায় যে মূর্তিটি দেখতে পাই,তাও সেই ষড়্ ভুজ মূর্তি।মন্দিরের বাইরে মন্দিরের গায়ে যে মূর্তি দেখতে পাই,তাওও সেই ষড়্ ভুজ মূর্তি।*
🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚🐚
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 পঞ্চম ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
*(৫০)শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ*
           *🐚নীলাচলে মহাপ্রভু🐚*
                *🛕রথযাত্রা🛕*
             ☆☆☆☆☆☆☆☆☆
*🍁শ্রীপুরীধামে শ্রীগৌরাঙ্গদেব মন্দিরের ভিতর ও বাহির উভয়দিক অধিকার করেছিলেন।কবে আমাদের সেই দিন আসবে,যেদিন আমাদের দেহমন্দিরের ভেতর-বাহির মহাপ্রভু অধিকার করবেন ; আমরা তাঁর ধন তাঁকে দিয়েই কৃতার্থ হব।বাস্তবিক সেই সময়ে শ্রীগৌরাঙ্গদেব জগন্নাথের রাজা।প্রতাপরুদ্র হতে আরম্ভ করে পাত্রমিত্র সকলেই তাঁর প্রজা।প্রেম তাঁর রাজ‍্য,ভক্তি তাঁর ধন,প্রজা হতে রাজা পর্যন্ত সকলেই এই ধন নিবার জন্য ব‍্যাকুল। শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গদেব আঠার বৎসর ব‍্যাপী,এই রাজকার্য‍্যে ব‍্যস্ত ছিলেন, এই কাজের দিনরাত্রি ভেদ ছিল না,দিবানিশি এই ধ‍্যান করতেন।*
*🌳এইভাবে সারাদিনে শ্রীশ্রীজগন্নাথ দেবের রথ গুন্ডিচা-বাড়ী এসে উপস্থিত হয়।প্রথমদিন তিন মূর্তি রথারূঢ় হবার পরে,রথতিনটি "বেঠিয়া" দ্বারা টেনে নিয়ে এসে যজ্ঞবেদীর কাছে সন্ধ‍্যাবেলা উপস্থিত হয়।সেইদিন রাত্রে,প্রভুদেরকে "পাহুন্ডি" করায়ে যজ্ঞবেদীর রত্ন সিংহাসনে স্থাপন করা হয়।সাতদিন পর্যন্ত দেব যজ্ঞবেদীতে অবস্থান করেন।নীলাদ্রিস্থ মন্দিরের মত এই জায়গার নীতি অবিকলভাবে অনুষ্ঠিত হয়।এই সাতদিন অন্ন পিষ্টকাদি ভোগ দেওয়া হয়।এই উদ‍্যান বৃক্ষলতাদি দ্বারা শোভিত এবং পনের ফিট উচু প্রাচীর দিয়ে চারিদিকে ঘেরা।এর নাম গুন্ডিচাবাড়ী, সর্বসাধারণে এই বাড়ীকে শ্বশুর-বাড়ী বলে থাকে।এইখানে এসেই রথ থামে।*
*🍀এই বাড়ীতে প্রবেশ করবার দুইটি দরজা আছে।একটি দরজা দক্ষিণদিকে,অন‍্যটি পশ্চিমদিকে।ভিতরে বড় মন্দির আছে।মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করলেই স্তম্ভোপরি গরুড় দেখা যায়। বামদিকে দেবী মূর্তি আছেন ; লোকে তাঁকে জগন্নাথের বড় মাসী বলে থাকে।ডানদিকে একটি অঙ্গন পার হলে,মন্দিরের ভিতর শ্রীশ্রীজগন্নাথের রত্নবেদী দেখা যায়।এই জায়গায় এসে জগন্নাথ থাকেন।এই জায়গায় সাতদিন পর্যন্ত জগন্নাথ দেবের সব কাজ শেষ হয়। ইতিমধ্যে রথত্রয়ের মুখ নীলাদ্রির দিকে রাখা হয়।একে দক্ষিণ-মূর্তি বলা যায় নবমদিনে সকালবেলার পূর্বে খেচরান্ন ভোগ শেষ করে,দেবকে রথারূঢ় করা হয়।এই রীতি ক্ষেত্রমাহাত্ম‍্য প্রভৃতি গ্রন্থে লেখা রয়েছে।উড়িষ‍্যা হিন্দু রাজাদের অধীন থাকার সময়,কাজ এইভাবে সম্পাদিত হত।উড়িষ‍্যা পরাধীন হবার পরে,এই রীতির বিশৃঙ্খলা ঘটে, অর্থ‍্যাৎ একদিন মধ্যে রথ না গিয়ে,চার-পাঁচদিনে রথ তিনটি যজ্ঞবেদীর কাছে উপস্থিত হত।যাইহোক,সাতদিনের মধ্যে অনন্ত একদিন ও গুন্ডিচা গৃহে প্রভুর একবার অন্নভোগ হওয়া কর্তব‍্য ; নচেৎ দ্বাদশ বৎসর পর্যন্ত রথযাত্রা বন্ধ হয়ে যাবে।এইসব "নীলাদ্রি মহোদয়" গ্রন্থের ভিতরে লেখা আছে। সম্প্রতি সুযোগ‍্য ম‍্যানেজার মহাশয়ের যত্নে, তিনটি রথ এক দিনেই, গুন্ডিচাবাড়ী পৌঁছে ; কাজেই সেখানে রীতিমত ভোগ রাগ হয়।সাতদিন প্রভু ঐ জায়গায় থেকে শ্রীমন্দিরে প্রত‍্যাবর্তন করেন।মাদলা-পঞ্জিকায় প্রকাশ এবং জনশ্রুতিও আছে, যে বড়দান্ডে প্রথমে নদী থাকায় ছয়টি রথ তৈরী হত।বর্তমান যেখানে "অর্দ্ধাশনী" (আদিতে মহাপ্রলয়কালে অর্দ্ধাংশ জলপান করেছিলেন বলেই ইঁহাকে অর্দ্ধাশনী শক্তি কহে।ইঁহাকে দর্শন করলে বিশেষ পুণ‍্য হয় )অবস্থিত, তা নদীর দক্ষিণ পাড়ে ছিল ; এবং গুন্ডিচামন্ডপ বাম পাড়ে ; এই দুইয়ের মধ্যে নদী ছিল। অধুনা নদী শুকিয়ে গিয়েছে, কিন্তু তার মোহনা অদ‍্যাপি বর্তমান, এবং এই মোহানা "বঙ্কি মোহানা" নামে অভিহিত হয়।সেই মোহানায় এখন চক্রতীর্থ অবস্থিত।বালি দ্বারা নদীর মুখ বন্ধ হওয়ায় নদীর গতি ক্রমশ কমে যাচ্ছে, এবং প্রাকৃতিক নিয়মানুবর্তী হয়ে সেই জায়গা উচু হওয়ায় জলস্রোত ভিন্ন পথ অনুসরণ করল।সেই নদী লোপ পেয়ে,কালক্রমে জীবের স্মৃতি হতে বিলুপ্ত হয়েছে।এখন তা "সৈকত-সাবধা"বলে অভিহিত।নদীতে পার হবার জন্য নৌকা থাকত।সেই নৌকায় পার হয়ে,ঠাকুর রথে আরোহণ করতেন।এখন নদী না থাকায়,মাত্র তিনটি রথ তৈরী হয়।*
🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🔜 ক্রমাগত 👉 শ্রীশ্রীজগন্নাথ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ 🌷 ষষ্ঠ ভাগ 🌻 শ্রীযুক্ত রাজর্ষি গোপালচন্দ্র আচার্য‍্য চৌধুরী প্রণীত ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/01/jagannath6.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

    📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝
    ꧁👇📖 সূচীপত্র ✍️ শ্রী জয়দেব দাঁ 📖👇



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

   ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️ 
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

  *••••┉❀꧁👇🏠Home Page🏠👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

    *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

     *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
   🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧







শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html