🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 🌷 শ্রীকৃষ্ণ লীলা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📝 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/08/pdf-httpsmrinmoynandy_8.html

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
           ꧁ 👇শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র👇 ꧂
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🙏🙏🙏জয় মহাপ্রভু🙏🙏🙏*
*শ্রীশ্রীরাসলীলা,গৌরচন্দ্র*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*বৃন্দাবন লীলা গোরার মনেতে পড়িল।*
*যমুনার ভাবে সুরধূনীরে দেখিল।।*
*🌻করুণাময় পতিতপাবন চিরসুন্দর ভাবনিধি গৌরসুন্দর আজ ব্রজের বৃন্দাবনের রাসলীলার কথা মনে স্মরণ হল।আজ গৌরসুন্দর রাসলীলার ভাব-এ বিভাবিত।তিনি অদ‍্য নদীয়ার সুরধূনীর তীরে আছেন তাহা বিস্মৃতি হয়ে সুরধূনীকে যমুনা মনে করে গৌরসুন্দর ভাব-এ বিভাবিত হলেন।* *এমন ভাবে বিভোর যে তিনি সুরধূনী গঙ্গাকে যমুনা দেখছেন।* 

*ফুলবন দেখি বৃন্দাবনের সমান।*
*সহচরগণ ব্রজ গোপীসম অনুমান।।*

*🌻শ্রীবৃন্দাবনের ফুলবন মনে করে গঙ্গার পার্শবতী ফুলবনকে দেখে গৌরসুন্দর আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন।* *কেন আত্মহারা হবেন না? তিনি বর্তমানে আর শচীনন্দন গৌরসুন্দর নহেন,তিনি এ ক্ষণে হয়েছেন যশোদানন্দন শ‍্যামসুন্দর।*
*সেই প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর পূর্বের শ‍্যামসুন্দর,বৃন্দাবনের শ‍্যামসুন্দর, হ‍্যাঁ,মুকুটমণি লীলা শ্রীশ্রীরাসলীলার শ‍্যামসুন্দর।* *গৌরসুন্দরের ফুলবন দেখে বৃন্দাবনের কুসুম চয়নের কথা মনে পড়েছে।শ্রীরাধিকা,ললিতা কুসুম চয়ন করতে মালঞ্চে এসেছেন,তাঁদের পুষ্পচয়নের খবর পেয়ে মধুমঙ্গল কৃষ্ণকে বলছেন,রাধা ও ললিতা যে ফুল বাগানে প্রবেশ করেছেন,সেই মালঞ্চে কৃষ্ণ ও মধুমঙ্গল বৃক্ষের আড়ালে চুপটি করে আছেন।* *এই দৃশ্যটি গৌরসুন্দরের মনে পড়াই নদীয়াতে এই লীলার প্রকাশ করেছিলেন।সঙ্গে ছিলেন গদাধর।**গৌরসুন্দর সেই সময়ে ঐ লীলার কথাগুলি বলছেন,বৃন্দাবনে ললিতা সখীকে রাধা বলেছিলেন, গোপেশ্বরকে পূজিবার জন্য সব দ্রব‍্যই এনেছি,কেবল পুষ্প আনিনি,কারণ পুষ্প আগে চয়ন করলে পুষ্প শুকিয়ে যাবে,শুকনো পুষ্প পূজায় দিতে হয় না।* *তখন ললিতা বললেন,পুষ্পের আবার ভাবনা কি?বৃন্দাবনে আবার পুষ্পের অভাব নাকি?রাধা বললেন,এখানে ফুলের অভাব নাই বটে,কিন্তু বনহস্তী আছে।* *সেই ভয়ে আমার অঙ্গ থরথর করে কাঁপে।* *ললিতা বললেন,কেন একথা বললি?সখী!ঐ দেখ বনের আড়ালে বৃক্ষের তলে কৃষ্ণ ও মধুমঙ্গল লুকিয়ে আছে দেখেছিলাম।* *তাই একটু রসিঈতা করার জন্য পশুর নাম নিলাম।রাধার এইকথা শুনে মধুমঙ্গল,কৃষ্ণসখাকে বলছেন,এই গোয়ালিনীর আস্পর্ধার কথা শুনলে তো?কৃষ্ণ বললেন,কি আস্পর্ধা?মধুমঙ্গল বললেন,তোমার মত নির্বোধ ত্রিজগতে নাই।* *নির্বোধ না হলে ত্রিলোকের অধিপতি হয়ে গরু চরাতে কেন আসবে?ঐ গোয়ালিনী তোমায় বন‍্য পশু হাতী বলেছে,তুমি বুঝতে পারছ না? রাধা সখীর প্রতি বলছেন,শুধু বন‍্য হাতীর ভয় নয়,তাঁর সঙ্গে যে সহচর আছে সে গর্দভ।* *সেও বড় বিরক্ত করে।তখন মধুমঙ্গল বললেন,সখা শুনলে তো?এসব কথা একটুও ভাল লাগে না।* *তুমি বন‍্য হাতী হও তাতে আমার আপত্তি নাই,আমি ব্রাহ্মণপুত্র,* *আর ঐ গোয়ালিনী আমাকে গাধা বলবে কেন?এসব কথোপকথনের মাঝে বড়াইবুড়ির আগমন।* *তখন রাধা বললেন,চল যাই লবঙ্গলতিকার ফুল তুলি গিয়া।* *বড়াই বললেন,নাতনি!উহা করিস না,এখনি কৃষ্ণের হাতে ধরা পরবি।* *সে বড়ই চঞ্চল,লবঙ্গলতিকাকে বড় ভালবাসে।ললিতা বললেন,যদি কৃষ্ণের হাতে রাধা ধরা পড়ে,তবে তোমাকে তার কাছে রেখে রাধাকে মুক্ত করব।* *এইকথা বলেই হাসাহাসি করতে লাগলেন,এবং কুসুম চয়ন করতে লাগলেন।* *এমন সময় একটি মধুকর রাধার মুখের চারিপার্শে গুণগুণ করে ঘুরতে লাগল,তখন বললেন,ললিতা এ ভ্রমরটি বড়ই বিরক্ত করছে।* *কৃষ্ণবলছেন(অন্তরীক্ষে)ভ্রমরটার অপরাধ কি?রাধার মুখ দেখে তার পদ্ম ভ্রম হয়েছে,কারণ রাধার মুখটি পদ্মের মত গন্ধে ভরা।* *মধুমঙ্গল পুনঃ বললেন,সখা!বড় সুবিধা হয়েছে, "কে ফুল তুলছে" বলে তুমি তাদের সামনে উপস্থিত হও,কৃষ্ণ বললেন, সখা!তোর কান্ডজ্ঞান মাত্র নাই,এই যে গোপনে থেকে আমরা রাধার ভাব ও রূপলহরী দর্শন করছি,এ সুখ হতে আমরা বঞ্চিত হব।* *আমরা প্রকাশ হলে সব সুখ জলে যাবে।ভ্রমরার ভয়ে রাধার মুখ কেমন অপরূপ রূপ ধারণ করেছে।এই বৃন্দাবনের ফুল বাগানের দৃশ্য আমার গৌরসুন্দরের মনে পড়েছে।*
*তাই আজ গৌরসুন্দর নিজ সহচরগণকে ব্রজের গোপী মনে করে মহানন্দ লাভ করেছেন।* *সহচরগণ খোল করতাল লয়ে শ্রীবাসের অঙ্গনে সংকীর্তন শুরু করেছেন।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*খোল করতাল গোরা সুমেলি করিয়া।*
*তার মাঝে নাচে গোরা জয় জয় দিয়া।।*

*🌻সঙ্গে আছেন শ্রীবাস, শ্রীঅদ্বৈতাচার্য‍্য, গদাধর,নিত‍্যানন্দ আরও অনেকে।* *🌻শ্রীবাস পূর্বে কে ছিলেন?কয়েকটি কথা আলোচনা করব।* *ব্রহ্মার মানস পুত্র অনেকেই আছেন,তারই একজন দেবর্ষি নারদ।* *নারদমুনিকে একসময় ব্রহ্মা বলেছিলেন=*

*আমার আদেশ সবে করিয়া গ্রহণ*।
*সৃষ্টি হেতু আত্মমন কর নিয়োজন।।*

*#এইকথা শুনে নারদমুনি অসম্মতি প্রকাশ করলে ব্রহ্মা নারদকে অভিশাপ প্রদান করেন।গন্ধর্ব কুলে তোর জন্ম হবে,উপবরহণ তোর নাম হবে,সদা কামুক হবি,বহু রমণী নিয়ে অবনী মাঝারে থাকবি।* *এইভাবে লক্ষযুগ যাপন করে দাসীকূলে তোর জন্ম হবে।* *হওয়ার পর বৈষ্ণবগণের সঙ্গে মিলন হবে,এবং বৈষ্ণবদের উচ্ছিষ্ট তুই ভোজন করবি,তারপর তুই পুনঃ মম আত্মজরূপে জন্ম নিবি।তখন তোকে তত্ত্বজ্ঞান প্রদান করব।* *এই শাপ প্রদান করেছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা।সর্বশেষে বৈষ্ণবের প্রসাদ পেয়ে শাপ মুক্তি হয়েছিলেন।* *পুনরায় পূর্ব দেহ লাভ করলেন।পুন ব্রহ্মা বললেন,নারদ তুমি গৃহী হয়ে আরাধনা কর।* *আমি আর তোমায় পূর্বের মত ত‍্যাগ করতে পারব না।নারদ বললেন বেশ তাই হবে।তবে=*

*আপনার আজ্ঞা আমি রাখি শিরোপরে।*
*বিবাহ করিব আমি কহিনু তোমারে।।*

*🌻পিতা পূর্বে আমি নারায়ণ আশ্রমে গিয়া নানান তত্ত্বজ্ঞান জানব,তারপর আপনার আদেশ পালন করব।* *তখন ব্রহ্মা বললেন,*

*বৈষ্ণবের চূড়ামণি দেব পঞ্চানন।*
*তাঁহার নিকটে তুমি করহ গমন।।*

*🌻বৈষ্ণব চূড়ামণি শিবের নিকট দীক্ষিত হয়ে,অবশেষে তারপর তুমি নারায়ণ আশ্রমে যেও।শিবের নিকট দীক্ষা নেবার পূর্বে বহু বহু উপদেশের মধ্যে এই উপদেশ দান করলেন।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*একাদশী দিনে যদি করয়ে ভোজন।*
*বিষ্ঠ-মূত্র সম তাহা শাস্ত্রের বচন।।*
*একাদশী দিনে বিপ্র করিলে আহার।*
*সর্বপাপ ঘেরে তারে শাস্ত্রের বিচার।।*
*শ্রীরামনবমী আর জন্মাষ্টমী দিনে*।
*অন্নখায় যদি কেহ শিবরাত্রি দিনে*।।
*পূর্বোক্ত পাতক হৈতে দ্বিগুণ পাতকে।*
*ডুবিয়া সে জন মরে কহিনু তোমাকে।।*
*উপবাসে অসমর্থ যেই জন হয়।*
*ফল মূল খাবে মাত্র শাস্ত্রের নির্ণয়।।*
*ইহাতেও নাহি শক্ত হবে যেই জন*।
*একবার হবিষ‍্যান্ন করিবে ভোজন।।*

*🌻অতঃপর দেবর্ষি নারদ নারায়ণ আশ্রমে গেলেন।সেখানেও বহু উপদেশ গ্রহণ করলেন,নারায়ণ মুনির নিকটে।* *তারপর শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবনলীলা,মথুরালীলা ও দ্বারকালীলাকালে নারদমুনি দ্বারকায় গিয়েছিলেন।নরকাসুরকে বধ করে ষোলহাজার একশত রমণীকে উদ্ধার করে,অবশেষে শ্রীকৃষ্ণ নিজ চরণে স্থান দিলেন।সঙ্গে প্রধানা অষ্ট মহিষী।* *নারদমুনির মনে সামান্য সংশয় হল,যে দ্বারকাপতি কেমন করে ঐ রমণীগুলির মন জয় করেন? অতঃপর নারদমুনি দ্বারকায় গেলে তাঁকে সসম্মানে অভ‍্যর্থনা জানান হয়।* *এবং প্রতি কক্ষে কক্ষে সেই রমণীগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন।* *দেখলেন,প্রতি কক্ষে কক্ষে দ্বারকাপতি ষোলহাজার একশত আট রমণী সদা সর্বদা আনন্দে রয়েছে।সেই সময় হয়ত নারদমুনির মনের কোন এক কোণে গৃহস্থী হবার সাধ জাগে।* *তাই অন্তর্য‍্যামী শ্রীকৃষ্ণ মনের কথা জেনে কলিযুগে সেই নারদমুনিকে শ্রীবাসরূপে,তৎপত্নী মালিনীকে নিয়ে মর্ত‍্য আসলেন। অতি সংক্ষেপে শ্রীবাস তত্ত্ব।*
 *নিত‍্যানন্দ তত্ত্ব=এই নিত‍্যানন্দই চতুর্বূহ‍্যের সঙ্কষণ। শ্রীকৃষ্ণভক্ত চূড়ামণি শ্রীকৃষ্ণের দ্বিতীয় ব‍্যূহ সঙ্কর্ষণ সকল লীলাতেই তাঁর সঙ্গে থাকেন।* *কেননা তিনি "স্বরাট" (স্বেন শ্রীকৃষ্ণনৈব রাজতে) তিনি কখনও কৃষ্ণ ছাড়া থাকতে পারেন না।* *যে লীলায় প্রয়োজন হয়,তিনি সেই লীলাতেই সেইভাবে অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেন।* 

*শ্রীবলরাম গোসাঞি মূল সঙ্কর্ষণ।*
*পঞ্চরূপ ধরি করে কৃষ্ণের সেবন*।।
*আপনি করেন কৃষ্ণলীলার সহায়*।
*সৃষ্টিলীলা কার্য‍্য করে ধরি চারি কায়।।*

*🌻অনন্ত সংহিতা নামক গ্রন্থে দেখা যায়,*
*নিবাসশয‍্যাসন পাদুকাংশুকোপাধান- -বর্ষাতপবারণাদিভিঃ।*
*শরীরভেদৈরবশেষতাং গতৈর্যথোচিতং শেষ ইতীরিতো জনৈঃ।।*
*🌻শ্রীসঙ্কর্ষণ নিবাসস্থল,শয‍্যা,আসন,পাদুকা,বস্ত্র, উপাধান (বালিশ),ছত্র প্রভৃতি নানা মূর্তি ধারণ করে কৃষ্ণের যথাযোগ‍্য সেবা করেন।* *এই জন‍্যই শ্রীসঙ্কর্ষণের নাম "শেষ"।*
*শ্রীভগবান যখন কোন লীলা করেন,সঙ্কর্ষণ তখন যথাযোগ‍্য রূপে সেই লীলাই সেবারত হন।ভগবান যখন রামচন্দ্ররূপে লীলা করেন,সঙ্কর্ষণ তখন শ্রীলক্ষণরূপে তাঁর সেবা করেন।* *তখন সঙ্কর্ষণই শেষরূপে তাঁর শয‍্যা হন।* *সঙ্কর্ষণ ভক্তচূড়ামণি,তিনি শ্রীকৃষ্ণ গুণগান করবার জন্য সহস্রবদনে অবস্থান করেন।* *তিনি কৃষ্ণের দ্বিতীয় ব‍্যূহ এবং শ্রীকৃষ্ণেরই অংশ।*
*ব্রহ্মা ভবোহ হমপি যস‍্য কলাঃ কলায়াঃ।ভাগবতীয় শ্লোকে জানা যায়,শ্রীসঙ্কর্ষণ স্বয়ং নিজস্বরূপ বর্ণনা করেছেন যে,ব্রহ্মা,শঙ্কর ও আমি শ্রীগোবিন্দের অংশাংশ। ব্রহ্মা বললেন,সঙ্কর্ষণ প্রতি লীলাতেই কৃষ্ণের সঙ্গে থাকেন, কিন্তু এবারকার লীলায় কিছু বিশেষত্ব আছে,এইবার সঙ্কর্ষণ শ্রীকৃষ্ণের জ‍্যেষ্ঠ ভ্রাতা হয়ে  আসবেন।* *ভক্ত সর্বদাই ছোট,তিনি কখনও সম কিংবা বড় হতে বাসনা করেন না।কিন্তু ভক্তচূড়ামণি সঙ্কর্ষণ এবার শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই হবেন,তার কারণ আর কিছুই নহে,ছোট হয়ে সেবা করে তিনি শ্রীরামলীলায় বড় দুঃখ পেয়েছিলেন।তাই এবার বড় হয়ে সেবা করবেন।* *শ্রীরামচন্দ্র পিতৃসত‍্য পালনার্থ বনগমনে উদ‍্যত হলে তাঁর অনুজ সঙ্কর্ষণাবতার শ্রীলক্ষণও অযোধ‍্যা ত‍্যাগ করে তাঁর অনুগামী হলেন।* *🌻কেননা,সেবার জন‍্যই তাঁর সঙ্গে আসা,পৃথক থেকে সুগ ভোগ করবার জন্য নয়।তাহাতে সেবা হয় না।🌻* *লক্ষণ যখন রামের পেছন পেছন যাচ্ছিলেন,তখন মনে মনে চিন্তা করছিলেন,আমি যদি রাজা দশরথের জ‍্যেষ্ঠ পুত্র হতাম তাহলে আমাদের কূল প্রথানুসারে আমিই এ রাজ‍্যের অধিকারী  হতাম,এবং কৈকেয়ী জননী পিতার নিকট আমারই বনবাস বর নিতেন সন্দেহ নাই।* *কেননা,তিনি নিজ পুত্র ভরতকে রাজা করবার জন‍্যই রামের বনবাস বর নিয়েছিলেন।* *রামের সঙ্গে ব‍্যক্তিগত শত্রুতাবশত নয়।এই কথা মনে করে লক্ষ্মণের বড়ই খেদ হল; হায়!কেন আমি রামের জ‍্যেষ্ঠ ভাই হলাম না।ভক্তবৎসল শ্রীকৃষ্ণ,ব্রজলীলায় সঙ্কর্ষণের সেই খেদ দূর করলেন।*
*এইজন‍্যই "বৃহৎসহস্রনাম স্তোত্রে শ্রীবলরামের একটি নাম "ভক্তিখেদাচ‍্যুতাগ্রজ", এই সঙ্কর্ষণই শেষ নাগ হয়ে সাগরে ছিলেন।তিনিই কলিযুগে নিতাইচাঁদ হয়ে সেবা করবার জন্য  এসেছেন।*
========================
*গৌরসুন্দর সকল ভক্তদের নিয়ে খোল করতাল নিয়ে জয় জয় ধ্বনি দিয়ে মনের আনন্দে নৃত‍্য করছেন।* 

*বাসুদেব ঘোষ তাহে করয়ে বিলাস।*
*রাস রস গোরাচাঁদ করিল প্রকাশ।।*

*🌻অতি সংক্ষেপে গৌরচন্দ্র ব‍্যাখ‍্যা 🌻*
*জয় জয় নিতাই গৌর সীতানাথ প্রেমানন্দে হরি হরি হরিবল।*
*সঙ্কর্ষণ=সঙ্কর্ষণ কারণাব্ধিশায়ী, গর্ভোদশায়ী,ক্ষীরাব্ধিশায়ী,এবং শেষ এই পাঁচ স্বরূপের মধ্যে সঙ্কর্ষণ বলরামের অংশ এবং কারণাব্ধিশায়ী আদি তাঁর কলা(অংশেরঅংশ)শ্রীকৃষ্ণ সেবার উদ্দেশ‍্যেই শ্রীবলদেব পঞ্চরূপে আত্মপ্রকট করেছেন।* *মূল সঙ্কর্ষণ= ইহারই অংশ সঙ্কর্ষণ। সুতরাং ইনি সঙ্কর্ষণের অংশী বা মূল বলে শ্রীবলরামকে মূল সঙ্কর্ষণ বলা হল।প্রকট লীলায় এক গর্ভ হতে অন‍্য গর্ভে আকৃষ্ট হয়েছিলেন বলিয়া শ্রীবলদেবের আর একটি নাম সঙ্কর্ষণ,(সম+কৃষ+যুচ্) সংকৃষ‍্যতে গর্ভাৎ গর্ভান্তরং নীয়তে অসৌ ইতি সঙ্কর্ষণ(বাচস্পতি), প্রথমে কংস কারাগারে শ্রীদেবকী দেবীর গর্ভেই শ্রীবলদেবের আবির্ভাব হয়।কংসের অত‍্যাচারের আশঙ্কায় যোগমায়া তাঁকে দেবকী গর্ভ হতে আকর্ষণ করে বসুদেবের আরেক পত্নী রোহিণী দেবীর গর্ভে রক্ষা করেন,রোহিণী তখন গোকুলে নন্দালয়ে ছিলেন।এইজন‍্য শ্রীবলদেবের একটি নাম সঙ্কর্ষণ।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*সৃষ্টিলীলাকার্য‍্য=প্রাকৃতাপ্রাকৃত সৃষ্টিরূপ লীলার কার্য‍্য।অপ্রাকৃত ভগবদ্ধামাদির প্রকাশ এবং প্রাকৃত ব্রহ্মান্ডাদির সৃষ্টি।কায়-কায়া, দেহ বা বিগ্রহ।চারি কায়,চারি বিগ্রহে =সঙ্কর্ষণ,কারণার্ণবশায়ী পুরুষ,গর্ভোদশায়ী পুরুষ  এবং ক্ষীরোদশায়ী পুরুষ,এই চারিরূপে শ্রীবলদেব সৃষ্টি লীলা কার্য‍্য করে থাকেন।শ্রীকৃষ্ণের লীলা নির্বাহের জন্য তাঁরই ইচ্ছায় শ্রীবলদেব সঙ্কর্ষণরূপে গোলোক,বৈকুন্ঠাদি অপ্রাকৃত ভগবদ্ধাম সমূহের প্রকাশ করেন। সৃষ্টি করে না,ভগবদ্ধাম সমূহ নিত‍্য চিন্ময় বস্তু,তাঁদের সৃষ্টি সম্ভব নহে,শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় তিনি ঐ সমস্ত ধামকে প্রকাশ করেন।*

*ক্রিয়াশক্তি প্রধান সঙ্কর্ষণ বলরাম*।
*প্রাকৃতাপ্রাকৃত সৃষ্টি করেন নির্মাণ।।*
*অহঙ্কারের অধিষ্ঠাতা কৃষ্ণের ইচ্ছায়।*
*গোলোক বৈকুন্ঠ সৃজে চিচ্ছক্তি দ্বারায়।।*
*যদ‍্যপি অসৃজ‍্য নিত‍্য চিচ্ছক্তি বিলাস।*
*তথাপি সঙ্কর্ষণ ইচ্ছায় তাহার প্রকাশ।।*

*🌻সৃষ্টিলীলাকার্য‍্য=শব্দে সৃষ্টিকে লীলা বলা হয়েছে।*
*সুখোন্মত্ত ব‍্যক্তিগণ যেমন কেবল আনন্দের উদ্রেক(উদয় বা সঞ্চার)বশতঃই নৃত‍্য গীত-ক্রীড়াদি করে থাকে,কোনও প্রয়োজন সিদ্ধির জন্য যেমন তারা নৃত‍্য-গীত আদি করে না।তদ্রূপ ভগবানও কেবল আনন্দোদ্রেক বশতঃই প্রাকৃত ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি আদি করে থাকেন।কোনও প্রয়োজন সিদ্ধির সঙ্কল্প নিয়ে তিনি সৃষ্টি আদি করেন না।* *তিনি পরিপূর্ণ স্বরূপ,তাঁর কোন প্রয়োজন থাকতেও পারে না।তিনি আনন্দ-স্বরূপ,তাঁর স্বরূপবন্ধী স্বভাববশতঃই তাঁতে* *আনন্দের উদ্রেক হয়ে থাকে।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌻সঙ্কর্ষণ তত্ত্ব এখানেই রইল🌻*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*🌼🌼অদ্বৈত তত্ত্ব 🌼🌼🌼🌼*
*মহাবিষ্ণুর্জগৎকর্তা মায়য়া যঃ সৃজত‍্যদঃ।*
*তস‍্যাবতার এবায়মদ্বৈতাচার্য‍্য ঈশ্বরঃ।।*
*🌼অর্থ‍্যাৎ জগৎকর্তা যে মহাবিষ্ণু মায়াদ্বারা এ ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করেন।তারই অবতার এই ঈশ্বর অদ্বৈতাচার্য‍্য।*
*🌼কারণার্ণবশায়ী পুরুষের একটি নাম মহাবিষ্ণু,মায়াতে শক্তি সঞ্চার করে মায়ার সাহায্যে তিনিই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি করেন।এজন‍্য তাঁকে জগৎকর্তা বলা হয়েছে।* *অদ্বৈতাচার্য‍্য তাঁরই অবতার ইহাই অদ্বৈতের তত্ত্ব।মহাবিষ্ণু ঈশ্বর,তাঁর অবতার বলে শ্রীঅদ্বৈতও ঈশ্বর।*
*স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বহিরঙ্গা শক্তির নাম মায়া।ইহা জড়শক্তি,মায়াকে প্রকৃতিও বলে।এই মায়ার দুইরূপে অবস্থিতি,প্রধান ও প্রকৃতি।প্রধানকে গুণমায়াও বলা হয়,* *এবং অংশ প্রকৃতিকে জীবমায়াও বলা হয়। সত্ত্ব,রজঃ ও তমঃ এই তিনগুণের সাম‍্যকে বলে গুণমায়া বা প্রধান।* *🌼সত্ত্বাদিগুণ  সাম‍্যরূপাং গুণমায়াখ‍্যাং জড়াং প্রকৃতিং।🌼*
*শ্রীমদ্ভাগব ২|৯|৩৩ ক্রম সন্দর্ভ, আর যাহা (অবশ‍্য ঈশ্বরের শক্তিতে)জীবের স্বরূপ জ্ঞানকে আবৃত করে এবং জীবকে মায়িক উপাধিযুক্ত করে,তাহাই অংশ প্রকৃতি,জীবের উপর তার আবরণত্মিকা ও বিক্ষেপাত্মিকা শক্তিকে নিয়োজিত করে বলিয়া জীবকে অবলম্বন করেই ইহার ক্রিয়া প্রকাশিত হয় বলিয়া,এই অংশ প্রকৃতিকে জীবমায়া বলে।*
*জীবমায়াকে অবিদ‍্যাও বলা হয়। ইচ্ছাশক্তি,জ্ঞানশক্তি ও ক্রিয়াশক্তি এই তিনটিই মহাবিষ্ণুর আছে,মহাবিষ্ণু স্বয়ং সৃষ্টির প্রারম্ভে দৃষ্টিধারা জীবমায়াতে এই তিনটি শক্তি সঞ্চারিত করেন।তাতেই জীবমায়া সৃষ্টিকারিনী শক্তি লাভ করে।* *মহাবিষ্ণু আবার নিজ ক্রিয়াশক্তি-প্রধান এক অংশে গুণমায়াতেও ক্রিয়াশক্তি সঞ্চারিত করেন।মহাবিষ্ণুর এই ক্রিয়া শক্তি প্রধান অংশই অদ্বৈত।* *ইহাই অদ্বৈত তত্ত্ব।শ্রীঅদ্বৈতের শক্তিতে সত্ত্বাদিগুণত্রয়ের সাম‍্যাবস্থা বিক্ষুব্ধ হয়।এইরূপে বিক্ষুব্ধ গুণমায়া দ্বারা জীবমায়ার সাহায্যে মহাবিষ্ণু সৃষ্টিকার্য‍্য নির্বাহ করেন।*

*অদ্বৈতং হরিণাদ্বৈতাদাচার্য‍্যং ভক্তি শংসনাৎ।*
*ভক্তাবতারমীশং তমদ্বৈতাচার্য‍্যমাশ্রয়ে।।*

*🌻হরিণা=শ্রীহরির সহিত,অদ্বৈতাৎ=দ্বৈত ভাবশূন‍্যতাহেতু,অভিন্ন বলিয়া, অদ্বৈতং=যিনি অদ্বৈত নামে খ‍্যাত, ভক্তিশংসনাৎ=ভক্তি উপদেশ করেন বলিয়া,আচার্য‍্যং=যিনি আচার্য‍্য নামে খ‍্যাত,তং=সেই,ভক্তাবতারং=ভক্তাবতার, ঈশং=ঈশ্বর, অদ্বৈতাচার্য‍্যং= শ্রী অদ্বৈতাচার্য‍্যকে,আশ্রয়ে= আমি আশ্রয় করি।*
*🌻ভাবার্থ=শ্রীহরির সহিত অভিন্ন বলিয়া যিনি অদ্বৈত নামে খ‍্যাত এবং কৃষ্ণভক্তি উপদেশ করেন বলিয়া তিনি আচার্য‍্য নামে খ‍্যাত, আমি সেই ভক্তাবতার অদ্বৈতাচার্য‍্যের আশ্রয় গ্রহণ করি।*
*আবার নিজে ঈশ্বর হয়েও ভক্তরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন বলিয়া শ্রীঅদ্বৈতকে ভক্তাবতার বলা হয়।*
*🌻এখানেই অদ্বৈত তত্ত্ব রইল🌻*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌻ব্রজ লীলা শ্রীশ্রীরাসলীলা🌻*
*শ্রীকৃষ্ণের যতেক লীলা,সর্বোত্তম রাসলীলা,*
       *নর বপু তাহার প্রকাশ।*
*গোপ বেশ বেণু কর, নব কৈশোর নটবর,*
        *নর লীলা হয় তাহার অনুরূপ।।*
=   =    =    =    =     =     =     =    =     =    =   = 
*রাসলীলা আমরা শ্রবণ ও  দর্শন করব বলে যাই।শ্রবণ ও দর্শনের আগে কয়েকটি কথা স্মরণে রাখা ভাল।* *কেমন? যেমন ধরুন সর্প ধরতে গেলে প্রথমত গা-বাঁধার মন্ত্র শিখে তাহা নিজ শরীরে প্রয়োগ করে সাপ ধরতে গেলে সাপ দংশন করতে পারবে না তাইনা? তদ্রূপ সেই রকম রাসলীলা শ্রবণ করবার আগে গা-বাঁধার মন্ত্র শিখে নিতে হবে।* *সেখানে কিন্তু কালসর্প আছে,কালসর্প কি?প্রাকৃত বুদ্ধি।রাধা গোবিন্দের লীলা কিন্তু অপ্রাকৃত লীলা, সেখানে প্রাকৃত বুদ্ধি কালসর্প,*
*দংশন করলে রেহাই নাই।* *তাই তার আগে গা-বন্ধন মন্ত্র কিছু শিখে নিতে হবে।সেই মন্ত্রটি কি? না,সেই লীলাতে চিন্ময়বুদ্ধি।* *আমার রাধাগোবিন্দের লীলা অতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের সঙ্গে শ্রবণ ও দর্শন।বিশ্বাসে মেলায় বস্তু,তর্কে বহুদূর।*
*শ্রীমদ্ভাগবতে ব‍্যাসদেব সকলকেই নিমন্ত্রণ পত্র দেন নাই, নিমন্ত্রণ পত্র দিয়াছেন রসিকজনদের,ভাবুকজনদের।* 
*অতএব অতি সাবধানে আস্বাদন করতে হবে।*
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
*বাৎসল‍্যময়ী মা যশোদার আদরের দুলাল গোচারণ ভূমি হতে অপরাহ্নে গৃহে ফিরে এলেন।মা যশোদা তাঁকে কোলে করে আদর করতে লাগলেন,শত চুম্বন প্রদান ও মস্তকঘ্রাণ করতে করতে ভেতরে নিয়ে গেলেন।এই সময়টুকু অখিল ব্রহ্মান্ডপতি গোপাল মায়ের কোলে বসে বাৎসল‍্য প্রেম আস্বাদন করছেন।* *তারপর গোঠের খবর,সুশীতল জলে যত্নসহকারে স্নানাদি সমাপনান্তে গোপালের সেবা দিলেন যশোমতী মা।ঐদিকে রোহিণী বলরামকে একই ভাবে সেবা দেবার পর মা যশোদা গোপালকে,আর রোহিণী বলাইকে শয়নকক্ষে নিয়ে গিয়ে শয়ন করালেন,মা যশোদা গোপালকে ঘুম পাড়ানী গান গেয়ে শয়ন দিচ্ছেন আর ঘুম পাড়াচ্ছেন।*
*অপরদিকে পূব আকাশে শরৎকালের পূর্ণ চন্দ্র উদিত হয়েছে।* *এই শরৎকালের যে চন্দ্র,বা পূর্ণ চন্দ্রের আবির্ভাব কোথা হতে? একটু শ্রবণ করি।*
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌻নতুন কুঙ্কুমের মতো অরুণ বর্ণ হয়ে উঠেছে চাঁদ,রমাননাভং,রমা মানে লক্ষ্মী -তাঁর আননের মত আভা যাঁর।এখানে শ্রীজীব গোস্বামীপাদ বললেন,না-না এখানে সেই লক্ষ্মী নন,* *এখানে লক্ষ্মী হচ্ছেন রাধা।রাধার আননের মত আভা যাঁর,সেই চন্দ্র উঠেছে।* *রাধারাণী উৎকণ্ঠিত আছেন শ‍্যাম দর্শনের আশায়,আবার আমার বঁধূ শ‍্যামসুন্দর,তিনিও আমার বদন দর্শন করবার জন্য উৎকণ্ঠিত।* *অথচ আমি তো তাড়াতাড়ি আমার বঁধূর কাছে যেতে পারছি না,সখীগণ আপত্তি করবে,তাঁরা আমাকে সাজাবে,বসন,ভূষণ পরাবে,তারপর তো নিয়ে যাবে?কিন্তু হয়ত আমার বঁধূ এতক্ষণ অপেক্ষা করবেন না।* *তাই আমি যদি কোনভাবে আমার মুখের কান্তিটি আমার বঁধূকে দেখাতে পারি,তাহলে আমার বঁধূ আশ্বস্ত হবেন।* *রাধারাণীর এই যে মনোভাব,এই মনোভাব হতে চন্দ্রের উৎপত্তি হল।কেবলমাত্র শরৎকালে যে রাসলীলা হয়েছিল, এই রাসলীলার চন্দ্রের জন্ম রাধারাণীর মন হতে।শ্রুতি বলেছেন=মনসো চন্দ্রমা জাতাঃ।মন থেকে চন্দ্রের জন্ম,প্রাকৃত জগতে যে চন্দ্র, সেই চন্দ্র বিরাটপুরুষের মন থেকে তাঁর জন্ম,এখানে বৃন্দাবনের রাসলীলার যে চন্দ্র সেই চন্দ্র রাধারাণীর মনসো জাতা।* *🌻কেন রাধারাণী গোবিন্দের মনোভাব জানতে পারেন?*
*রাধাকৃষ্ণ এক আত্মা দুই দেহ ধরি।*
*অন‍্যোন‍্যে বিলসয় রস আস্বাদন করি।।*
*একটিই স্বরূপ দুটি হয়েছেন কেন?কেবলমাত্র লীলা আস্বাদনের জন্য।এই লীলারস আস্বাদনের জন‍্যই শ্রীকৃষ্ণই চার প্রকার নিত‍্যপার্ষদ নিয়ে এসেছেন গোলোক হতে।* *দাস‍্য,সখ‍্য,বাৎসল‍্য ও কান্তা বা মধুর।(রক্তক ও পত্রক গোপ দাস‍্যরসের পাত্র,শ্রীদাম,সুদাম ও সুবলাদি সখ‍্য রসের পাত্র,নন্দ,যশোদা প্রভৃতি বাৎসল‍্যরসের পাত্র, ও রাধা ও অন‍্যান‍্য মধুর রসের।)* 
*যাইহোক=সেই চাঁদের জ‍্যোৎস্না গবাক্ষ দিয়ে শ্রীগোবিন্দ বদনে পড়েছে,সেই চন্দ্র দর্শন করে রাধারাণীর বদন দেখতে পেয়ে গোপীদের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি মনে পড়েছে।"সময়টি কার্তিকমাসের শরৎকালের পূর্ণচন্দ্র, অর্থ‍্যাৎ রাসপূর্ণিমা।*
*🌻এদিকে মা যশোদা ঘুম পাড়াচ্ছেন,গোপাল আড় নয়নে গবাক্ষ দিয়ে রাধাবদন দর্শন করছেন।চতুরের শিরোমণি গভীর ঘুমের ভাণ করলেন,মা দেখলেন আমার আদরের দুলাল ঘুমিয়ে পড়েছে,তখন মা অন‍্য কর্মের জন্য ব‍্যস্ত হলেন,অদ‍্য সেই প্রতিশ্রুতি রজনী।* *গোপীগণের মনোভিলাষ পূরণ করবার রজনী।শতকোটি গোপীর সহিত রাসলীলা করবেন আমার শ‍্যামসুন্দর।কোন রজনী?
 *ভগবানপি তা রাত্রীঃ শারদোৎফুল্লমল্লিকা।*
*বীক্ষ‍্য রন্তুং মনশ্চক্রে যোগমায়ামুপাশ্রিতঃ।।*
 *ভগবানপি তা রাত্রীঃ*
*ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মনে করলেন যে,একরাত্রিতে গোপীগণের মনের বাসনা পূর্ণ হবে না,কারণ শত শতকোটি গোপিনী,তাই তিনি ব্রহ্মার একরাত্রি "তা রাত্রীঃ"অনেক অনেক রাত্রি,(রাসলীলা নিত‍্যলীলা) ব্রহ্মার এক রাত্রির পরিমাণ কী বা কত?* 
*সত‍্য ত্রেতা দ্বাপর কলি চারিযুগ জানি।*
*এই চারিযুগকে এক দিব‍্যযুগ মানি।।*
*একাত্তর দিব‍্যযুগে এক মন্বন্তর।*
*চৌদ্দ মন্বন্তরে ব্রহ্মার এক দিবস ভিতর।।*
*অর্থ‍্যাৎ=সত‍্যযুগের পরমায়ু,১৭,২৮,০০০ বৎসর। ত্রেতাযুগের পরমায়ু,১২,৯৬,০০০বৎসর, দ্বাপর যুগের পরমায়ু,৮,৬৪,০০০ বৎসর।*
*কলিযুগের পরমায়ু ৪,৩২,০০০ বৎসর। (মোট=৪৩ লক্ষ ২০ হাজার বৎসর। ৪৩,২০,০০০ ×৭১ যত হবে তার সঙ্গে  ×১৪ গুণ করলে ব্রহ্মার একদিন বা একরাত্রি।*

*🌼তা রাত্রী=দ্বাপরযুগে এই ব্রহ্মার একরাত্রি নিয়ে রাসলীলা চলছে।দ্বাপরযুগে প্রকটলীলা,কলিযুগে অপ্রকটলীলা। তাই শাস্ত্রে দেখা যায় =* *অদ‍্যাবধি রাধাকৃষ্ণ লীলা করে যায়।*
*কোন কোনও ভাগ‍্যবানে দেখিবারে পায়।।*
*🌼আমাদের বৎসরের মানদন্ডে ইহার পরিমাণ হয়,চারশত উনত্রিশ কোটি চল্লিশ লক্ষ আশী হাজার বৎসর।(চারযুগ নয়শত নিরানব্বই বার করলে ব্রহ্মার একদিন।)* 
*🌻রাস কাকে বলা হয় 🌻*
*রাস শব্দের অর্থ অনেকেই নানারকম তত্ত্বের কথা বলেছেন,কেহ বা বলেছেন "রসো বৈ সঃ" শ্রুতি বাক‍্যে জানা যায় যে রস শব্দের অর্থ পরব্রহ্ম, অতএব "রসস‍্যায়ং রাস" অর্থ‍্যাৎ পরব্রহ্মের সহিত জীবাত্মারসম্বন্ধ বিশেষই রাস।* *কেহ বা বলেছেন "রসানাং সমুহো রাসঃ"অতএব সকল রসের সমাবেশ সমন্বিত নির্বিশেষ ব্রহ্মানন্দ অথবা তজ্জাতীয় কিছু রাস শব্দের অর্থ।* *কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাস শব্দটি এমন কোন অপ্রসিদ্ধ বা আধুনিক পরিকল্পিত যৌগিক শব্দ নয় যে তার ইচ্ছানুরূপ ব‍্যাখ‍্যা করা যেতে পারে।* *রাস শব্দটি সঙ্গীত শাস্ত্রে চির প্রসিদ্ধ আছে  এবং তার অর্থ নৃত‍্য বিশেষ।* *কিন্তু বৈষ্ণবাচার্য‍্য শ্রীপাদ জীব গোস্বামী তাঁর বৃহৎক্রমসন্দর্ভ টীকায় লিখেছেন (সংস্কৃত শ্লোক লিখলাম না)* *স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজে অবতীর্ণ হয়ে গো-গোপ গোপীসহ বিবিধ বিচিত্র লীলার আস্বাদন প্রসঙ্গে ব্রহ্মমোহন লীলায় ব্রহ্মার,গিরি গোবর্ধন ধারণ লীলায় ইন্দ্রের,দাবাগ্নি মোক্ষ লীলায় অগ্নির, এবং নন্দমোক্ষণ লীলায় বরুণের দর্প চূর্ণ করে পরিশেষে সর্বজগতের চিত্ত বিক্ষেপকারক দূর্বার মদনের দর্প খন্ডন করবার জন্য অগণিত ব্রজরমণীমন্ডল সমন্বিত রাস নৃত‍্য করতে ইচ্ছা করলেন এবং তাতে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর অচিন্ত‍্য মহাশক্তি বৈভব প্রকাশ করলেন।* 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌼রাসের লক্ষণ সম্বন্ধে শাস্ত্রে বর্ণিত আছে  যে🌼*
*মন্ডলাকারে নৃত‍্য পরায়ণা অসংখ‍্য নর্তকীর মধ্যে যদি কোনও নট নৃত‍্য করে,তাহলে সেই নৃত‍্যকে "হল্লীশক" নৃত‍্য বলে।সেই হল্লীশক নৃত‍্য যদি বিবিধ তালবদ্ধ এবং বিবিধ গতিসমন্বিত হয়,তাহলে তাকে "রাসনৃত‍্য"বলা হয়।* *এই রাসনৃত‍্য স্বর্গের দেবতাগণ পর্যন্ত করতে পারেন না।পৃথিবীর কোনও ব‍্যক্তির কথা তো বহুদূরে।অতএব দেখা যাচ্ছে যে কোনও নৃত‍্য বিশেষের নামই "রাস" এবং ইহা সকলের সাধ‍্যায়ত্ত নয়।*

 *🌹মার্কেন্ডেয় পুরাণে দেখা যায় যে,আদ‍্যাশক্তি মহামায়া কৌমারী,বারাহী,নারসিংহী, ঐন্দী,বাহ্মী প্রভৃতি অগণিত শক্তি মূর্তির সঙ্গে মিলিত হয়ে শুম্ভ দৈত‍্যকে বিনাশ করবার জন্য রণক্ষেত্রে অবতীর্ণা হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যে সেখানে সকলের সঙ্গে মন্ডলাকারে নৃত‍্য করেছিলেন,তা বেদব‍্যাস প্রণীত মার্কন্ডেয় পুরাণে বর্ণিত নাই।কেহ যদি যোগবলে কিংবা কল্পনাবলে আদ‍্যাশক্তির এতাদৃশ নৃত‍্যের অস্তিত্ব সমর্থন করতেও সমর্থ হন,তাহলেও তাকে "রাসনৃত‍্য"বলা যায় না। কেন না! অসংখ‍্য নর্তকীমন্ডলে কোনও "নট" যদি তাল-লয়াদি সহকারে নৃত‍্য করেন,তাহলে সেই নৃত‍্যের নামই রাসনৃত‍্য।কিন্তু সকলেই যদি নর্তকী বা নট হয়,তাহলে তাকে রাসনৃত‍্য বলা যায় না।(তাই রাসমঞ্চের নায়ক "নটবর রসরাজ"আর কেহ নই।*
 *🌳গবাক্ষর দিকে তাকিয়ে পূর্ণচন্দ্রের মধ্যে রাধাবদন দর্শন করলেন।তখন বাৎসল‍্যময়ী মা যশোমতীর কথা চিন্তা করে,চতুরের শিরোমণি গোবিন্দ অঘটন-ঘটন-পটীয়সী মোগমায়া শক্তিকে আশ্রয় করলেন।যোগমায়া এলেন ও বললেন,মা যদি আমায় শয়ন কক্ষে দেখতে না পায়,তাহলে চরম চিন্তিত হবেন, তখন যোগমায়া বললেন,তোমার ভাবনার কিছুই নাই,তুমি কটিতটে তোমার মূরলী নিয়ে যথাস্থানে গমন কর।সেখানে "রাসৌলী" নামক রাসমঞ্চ নির্মাণ হল।* 
*🌼অদ‍্য শ‍্যামসুন্দর রাসলীলা করবেন বলিয়া কেবল শরৎকালের পুষ্প নয়,ছয়টি ঋতু একত্রিত হয়ে নানাবর্ণের পুষ্পে আজ অতি শোভাময় হল।*

*🍃🍃রন্তুং মনশ্চক্রে🍃🍃*
*শ‍্যামসুন্দর ক্রীড়া করতে ইচ্ছে করলেন।* *ভগবানেরও (অপি) ইচ্ছে জাগে।পর পর কয়েকটি ইচ্ছার সংবাদ আমরা পেয়েছি,এই রন্তুং মনশ্চক্রের অনেকেই অনেক মানে বা অনেক কথা বলেন। যাইহোক,ভগবান একা ছিলেন "একমেবাদ্বিতীয়ম্" ইচ্ছে জাগল সৃষ্টি করবার, এই সৃষ্টি বা সৃজনেচ্ছার নাম "সিসৃক্ষা",এই সিসৃক্ষা বশত এক হতে বহু হল, এক হতে অনন্ত বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি ব‍্যক্ত হল।আজও সৃষ্টি হচ্ছে,ভগবানের প্রথম ইচ্ছে।অর্থ‍্যাৎ সিসৃক্ষালীলা চলছে।*
*আবার জাগল যুদ্ধ করবার ইচ্ছা,যুদ্ধ করবার ইচ্ছার নাম যুযুৎসা,এই যুযুৎসার জন্য নিজ প্রিয়জন বৈকুন্ঠের দ্বারপালদ্বয় (জয়-বিজয়) কে শত্রু সাজালেন, একবার নয় তিন বা চারবার।*
*🌻আজ জেগেছে রমণ করবার ইচ্ছে।রমণেচ্ছার নাম রিরংসা। ঐদিকে সিসৃক্ষা ও যুযুৎসা ঘটেছে,সৃষ্টিলীলা ও যুদ্ধলীলা।* *আজ রিরংসা ঘটাবে রাসলীলা।রাসলীলা আনন্দরসের খেলা।প্রেমরসের উদ্বেল উচ্ছাস।আনন্দঘন পুরুষের স্বমাধুর্য‍্যাস্বাদনের এক অভিনব বৈচিত্র্য বিলাস। ভগবান পূর্ণ পুরুষ পুরুষোত্তম।তাঁর কোন অপূর্ণ সাধ থাকতে পারে না।তবু(অপি)তাঁর ইচ্ছা জাগে খেলার জন্য আনন্দ আস্বাদনের জন্য।* *🌻জীবের মনে বাসনা জাগে অভাবের তাড়নায় দুঃখ দূর করবার জন্য,আর ভগবানের অন্তরে বাসনা জাগল পূর্ণতার উন্মাদনায়।আর জাগল প্রেমাতুর ভক্তের আকুল ইচ্ছেকে পূর্ণ করবার।🌻* *প্রেমাধীন ভগবানের এই স্বভাবগত মহিমায়।বস্ত্রহরণের দিন কথা দিয়াছিলেন, আগামী শারদ পূর্ণিমা রজনীতে।তারপর কত রজনী গত হয়েছে।অদ‍্য সেই রজনী,ভক্তের কার্য‍্য শেষ,তাই আজ ভগবানের ইচ্ছা জেগেছে।ভক্তের আগ্রহ ও ভগবানের অনুগ্রহ আজ মিলিত হবে।🌻রমণ শব্দের অনেকেই অনেক কথা বলেন বটে, কিন্তু রমণ শব্দের অর্থ আনন্দাস্বাদন এবং তা জীব ও ঈশ্বরের উভয়েরই হতে পারে।*
*🌺যোগমায়ামুপাশ্রিত🌺*
*যোগমায়া পরাখ‍্য অচিন্ত‍্যশক্তি।আগে মায়াকে চেনার চেষ্টা করি পরে যোগমায়াকে চিনতে চেষ্টা করব।* *আবরণ বিক্ষেপাত্মিকা শক্তির নাম মায়া।মায়ার দুটি কার্য‍্য,সত‍্যকে ঢাকা ও মিথ‍্যাকে সত‍্যরূপে দেখান।যা আছে তাকে দেখতে না দেওয়া -- যা নেই তা দেখান।যেমন পথে একটা রজ্জু পরে আছে,আঁধার তাকে ঢাকল,দেখতে দিল না। কিন্তু পথে কোন সর্প নেই, তাই দেখাল। এই হচ্ছে মায়ার কার্য‍্য।* *মায়া কি তা বলা অত্যন্ত কঠিন,তবে তার কাজ দেখে তার স্বভাব কিছু বুঝা যায়।*

*🌺এখন যোগমায়াকে চিনতে চেষ্টা করি।মায়া আবরণ করে,যোগমায়াও আবরণ করে।এই সাদৃশ‍্যেই উভয়ের নাম মায়া,তবে মায়া ঢাকে জীবকে,ভগবানকে নয়। ভগবান যে শক্তি দ্বারা নিজেকে আবৃত করে পৃথিবীতে মানুষের ন‍্যায় লীলা করেন,তার নাম যোগমায়া।* *এ এক আশ্চর্য‍্য কথা,এই যোগমায়া শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞাবহ। তবে সব সময় নয়,শ্রীকৃষ্ণের লীলা সুন্দর ভাবে করানোর দায়িত্ব যোগমায়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।সে ক্ষেত্রে আজ্ঞাবহ নহে।এই যোগমায়া যখন আপন প্রভাবে কার্য‍্য করেন,তখন শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর সঙ্গী সাথিরাও কেহই জানেন না পরমুহূর্তে কি ঘটবে। তাই কৃষ্ণ গীতায় অর্জুনকে বলেছিলেন,*
*নাহং প্রকাশঃ সর্বস‍্য যোগমায়া সমাবৃতঃ।*
*আমি যোগমায়ায় ঢাকা থাকি,তাই সকলের নিকট আমি প্রকাশিত নহি।সকলে আমাকে জানতে পারে না,আমি যে অজ এবং অব‍্যয়,মূঢ়লোক তা জানতে পারে না।* 

*🍒উপাশ্রিত🍒*
*লীলায় অবতরণ করবার পূর্বেই যোগমায়াকে আদেশ করেছেন, "গচ্ছ দেবি ব্রজং ভদ্রে",দেবী আপনি ব্রজে যান।যোগমায়া ব্রজভূমি অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে সকল লীলার সুব‍্যবস্থা করেছেন।অদ‍্য রসলীলা হবে।এই লীলায় শ্রীকৃষ্ণ আপনাকে (নিজেকে)সর্বতোভাবেই যোগমায়াদেবীর হাতে ছেড়ে দিবেন তাই ""উপাশ্রিত"" পদ প্রয়োগ করেছেন।🍒*
 কৃষ্ণের আরেক নাম 'মন্মথ মন্মথ' কথাটির অর্থ মদনের মন মোহনকারী অর্থাৎ মদনমোহন।রাসলীলায় মদন
কে মোহিত করে শ্রীকৃষ্ণ হয়েছেন মদনমোহন।রাসলীলা না হইলে এই তত্ত্বটি জানা যেত না। দুই যোদ্ধা সমরে প্রবৃত্ত হলে বুঝা যায় কে কত বীর। হাতীকে লোহার শিকলে বাঁধিলে সে তাহা ছিঁড়িলে বুঝা যায় সে কত শক্তি ধরে।এখানে রাসলীলাকে বলা হয়েছে মদন সমর। শ্রীকৃষ্ণ অদ‍্য মদনের দর্প হনন করবেন।শত্রুকে পরাভূত করা যায় দুই প্রকারে। এক হল শত্রুকে আঘাত করে দুর্বল করে দেওয়া।আর এক হল শত্রুর আঘাত অবলীলাক্রমে সহ‍্য করে তাকে হয়রান করে ফেলা।দুই যোদ্ধার পার্থক‍্য খুব বিপুল হলে দ্বিতীয় প্রকারের যুদ্ধ করা চলে।মদনকে দগ্ধ 
করে শিব হয়েছেন মদনদহন, আর তাকে মুগ্ধ করে শ‍্যামসুন্দর হয়েছেন মদনমোহন। যুদ্ধ করতে হলে রথের প্রয়োজন? মদন-সমরে শ্রীকৃষ্ণের রথ চাই।এবারে বাঁশী বাজাইয়া ডাকছেন।
কে হবে আমার রথ,এসো, কেহই প্রথমে এলো না, কেমন করে আসবে?
মদন-সমরে রথ হতে কারও সাহস হল না।কারণ রথের ওপর তো শত্রুর আঘাত আসবে।মদনের আক্রমণ সকলেরই ভয় করে।তাই কেহ আসে নাই।পুনঃ ডাক দিলেন- এবারে আসিলেন ব্রজবালাগণ।বললেন, আমাদের মনোরথে আরোহণ করে মদন সমর করো, কারণ গোপীগণ ভীতা নহেন, কামদেবের আঘাতকে তারাই ভয় করে, যারা হৃদয়ে আত্মেন্দ্রিয় সুখ- বাঞ্জা বিন্দুমাত্র পোষণ করে।ভোগলালসা যাদের আছে, মদনের আঘাতে তারাই ভীত ও ত্রস্ত্ হয়।পক্ষান্তরে যাঁদের হৃদয়ে কৃষ্ণসুখ
কামনা ভিন্ন অন‍্যকামনা নেই, মদনের
আঘাতকে তাঁরা তৃণবৎ জ্ঞান করেন।
রাসে শ‍্যামসুন্দর গোপীগণের মনোরথে আরোহণ করিয়া মন্মথের মন মথিত করেছেন। এই কথা মহাপ্রভু সনাতন গোস্বামীকে মধুর ভাষায় বলেছেন =
চড়ি গোপী মনোরথে,
মন্মথের মন মথে,
নাম ধরে মদনমোহন।
জিনি পঞ্চশর দর্প,
স্বয়ং নবকন্দর্প,
রাস করে লৈয়া গোপীগণ।।

রাসে শ‍্যাসুন্দর যেন মদনকে বললেন যত পারো তুমি তোমার বাণ নিক্ষেপ কর। মদন ফুলের ধনু হতে নানাবিধ পুষ্পবাণ নিক্ষেপ করতে লাগিল। বাণ নিক্ষেপ করতে করতে তূণ শূন‍্য হয়ে গেল। তাই বাণ নিক্ষেপ বন্ধ হল। 
টুটল কিয়ে ফুল ধনুগুর্ণ,
কিবা রতি রণে ভেল তূণ শূণ।
সমর মাঝ পড়ল লাজ,
রতিপতি ভয়ে ভাগে।।
এতক্ষণ কুসুমবাণ নিক্ষেপ করছিলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল কেন? ফুলের ধনুর গুণ(ছিলা) কি ছিঁড়ে গেল? কিংবা তূণের বাণ ফুরিয়ে গেল?
যাহাহোক রতিপতি সমরের মধ্যে লজ্জা পেয়ে ভয়ে পলায়ন করিল, কিন্তু গোপীগণের হাতে ধরা পরে গেল। শেষে অপরাধের জন্য নাকে খত দিল মদন, প্রতিজ্ঞাবাক‍্য উচ্ছারণ করলেন- রাসৌলীতে আর কখনও প্রবেশ করিব না। ( নিষ্কাম প্রেমের নমুনা)
      অতি সংক্ষেপে। জয় নিতাই।

রাসলীলায় বলা যাবে= শ্রীকৃষ্ণের বাঁশী এখনও বাজছে। বাঁশী বাজলে কি হয়, সকলে শোনে না। যাদের কর্ণ বধির তাহারা শুনে না, কারও কর্ণ অজ্ঞতায় বধির, তারাও শোনে না। কাহারও বা অতি বিজ্ঞতায় বধির, তারাও শোনে না।কেহ অলসতার জড়তায় বধির, তারাও শোনে না।কেহবা অতিশয় কর্ম কোলাহলে বধির, তারাও শোনে না।কেহ স্বর্গ কামনায় বধির, তারাও শোনে না। কেহ মোক্ষ কামনায় বধির, তাহারাও শুনতে পাই না। যাদের একবিন্দু আত্মসুখবাঞ্জা আছে তাহারাও অযোগ‍্য, মুরলীর তান শ্রবণ হবে না। যাদের হৃদয় শ্রীকৃষ্ণ প্রেমে পরিপূর্ণ, রাধাকৃষ্ণ ছাড়া আন জানে না তাঁহারায় মুরলীর তান শ্রবণ করতে পারবেন।
*🌹পরকীয়া সম্বন্ধে সামান‍্য কথা🌹*
*পরকীয়া ভাবে অতি রসের উল্লাস।*
*ব্রজ বিনা ইহার অন‍্যত্র নাহি বাস*।।
*শ্রীরাধিকাদি পরকীয়া কান্তা,শ্রীকৃষ্ণের প্রতি যে ভাব পোষণ করেন,* *সেই ভাব,পরকীয়া কান্তা প্রেম।স্বকীয়া ভাব অপেক্ষা পরকীয়া ভাবের কান্তারসের উচ্ছাস অত‍্যধিক।**কিন্তু প্রকট ব্রজধাম ব‍্যতীত অন‍্য কোনও ভগবদ্ধামেই এইরকম পরকীয়া কান্তভাবে রসোল্লাসের অস্তিত্ব নাই।(তীব্র ক্ষুধা যেমন ভোজন-রসের চমৎকারিতা আস্বাদনের হেতু, তদ্রূপ বলবতী উৎকণ্ঠাই নায়ক-নায়াকার মিলন জনিত আনন্দ চমৎকারিতা আস্বাদনের হেতু।* *মিলন বিষয়ে যতই উৎকণ্ঠা বৃদ্ধির অবকাশ থাকে,মিলনের আনন্দ চমৎকারিতাও ততই আস্বাদ‍্য হয়।*
*আবার মিলন চেষ্টায় যতই বাধা-বিঘ্ন উপস্থিত হয়,মিলনের জন্য উৎকণ্ঠাও ততই বাড়তে থাকে।স্বকীয়া কান্তার সহিত মিলনে বেদ-ধর্মের,লোক-ধর্মের  স্বজনগণের সকলেরই অনুমোদন আছে,কেবল অনুমোদন মাত্র নহে,* *এই মিলন সকলেরই অভিপ্রেত।তাই এইরকম মিলনে কোন বাধাবিঘ্ন নাই, সুতরাং মিলনোৎকন্ঠার* *বৃদ্ধির অবকাশও বিশেষ নাই।* *এইজন‍্য স্বকীয়া কান্তার সঙ্গে মিলনে আনন্দ আছে বটে, কিন্তু আনন্দ চমৎকারিতা নাই।* *স্বকীয়া কান্ত অনায়াস লভ‍্যা।তাই তার সঙ্গে মিলনে সাধারণত আনন্দের উচ্ছাস দেখা যায় না।* *যা বহু আয়াস লভ‍্য,তার আস্বাদনেই চমৎকারিতা আধিক‍্য।*
*পরকীয় নায়ক-নায়িকার মিলন বেদধর্ম,লোকধর্ম স্বজনাদির অনুমোদিত নহে।ইহা সকলেরই অনভিপ্রেত এবং সকলের কাছে নিন্দনীয়।* *সকলেই এইরকম মিলনে বাধাবিঘ্ন উপস্থিত করে থাকে।অথচ পরকীয় নায়ক নায়িকা কেবলমাত্র পরস্পরেরপ্রতি অনুরাগ বশতঃই লোকধর্ম বেদধর্ম স্বজন আয‍্যপথাদিকে উপেক্ষা করে পরস্পরের সঙ্গে মিলনের জন্য উৎকণ্ঠিত হয়।* *(বেগবতী স্রোতস্বিনীর গতিপথে কোনও প্রকার বাধি উপস্থিত হলে যেমন তার উচ্ছাস অত‍্যন্ত বৃদ্ধি পায়,তদ্রূপ অনুরাগ বশতঃ মিলনচেষ্টায় বাধাপ্রাপ্ত হলেও নায়ক নায়িকার মিলনোৎকন্ঠা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে থাকে।*
*এইসকল বাধাবিঘ্নকে অতিক্রম করে যখন তাঁরা মিলিত হার সুযোগ পান,তখন সম্বর্ধিত উৎকণ্ঠাবশত তাঁদের মিলনানন্দও অপূর্ব চমৎকারিতা ধারণ করে থাকে।*
*ইহাই স্বকীয়া ভাব হতে পরকীয়া ভাবের অপূর্ব বৈশিষ্ট্য।এইরকম মাধুর্য‍্য চমৎকারিতাময় পরকীয়া ভাব প্রকট ব্রজলীলায় ব‍্যতীত অন‍্য কোনও  ধামেই নাই।* *বৈকুন্ঠেও নাই,দ্বারকায় নাই,এমন কি গোলোকেও নাই।*
*মো-বিষয়ে গোপীগণের উপপতিভাবে।*
*যোগমায়া করিবেক আপন প্রভাবে।।*
*🌹মো-বিষয়ে=আমার(শ্রীকৃষ্ণের)বিষয়ে, শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধ। গোপীগণের=শ্রীরাধিকাদি ব্রজসুন্দরীগণের, উপপতি=যে ব‍্যক্তি আসক্তিবশত ধর্মকে উল্লঙ্খন করে পরকীয়া রমণীর প্রতি অনুরাগী হয়  এবং ঐ রমণীর প্রেমই যাঁর সর্বস্ব, পন্ডিতগণ তাকেই উপপতি বলে মনে করেন।*
*উপপতিভাব=ঔপপত‍্যভাব, শ্রীকৃষ্ণকে উপপতি বলে মনে করা।* *যোগমায়া=কৃষ্ণলীলার সহায়কারিনী শক্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী। ইনিও শ্রীকৃষ্ণের স্বরূপশক্তি,শুদ্ধতত্ত্বের পরিণতি বিশেষ।* *"যোগমায়া চিচ্ছক্তি বিশুদ্ধ-সত্ত্ব-পরিণতি"।ইনি অঘটন ঘটন পটীয়সী যাহা অন‍্যের পক্ষের অসম্ভব। এরকম ঘটনাও ইনি ইহার অচিন্ত‍্যশক্তির প্রভাবে সম্পন্ন করতে পারেন।* *আপন প্রভাবে= যোগমায়া স্বীয় অঘটন-ঘটন-পটীয়সী শক্তির মহিমায়।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌴রাসতত্ত্ব নিত‍্যসিদ্ধা ও সাধনসিদ্ধা এবং কৃপাসিদ্ধা🌴*
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
*নিত‍্যসিদ্ধা ও সাধনসিদ্ধা ভেদে শ্রীকৃষ্ণ প্রেয়সী দুই প্রকার।শ্রীরাধা প্রভৃতি গোপীবর্গ কৃষ্ণের নিত‍্যসিদ্ধা পার্ষদ।এঁদের কৃষ্ণসেবাধিকার লাভ করবার জন্য কোন রকম সাধনা করতে হয়নি।এঁরা অনাদিকাল হতেই নানাভাবে কৃষ্ণের প্রেমসেবা করে আসছেন।* *সাধনভক্তি গৌড়ীয় বৈষ্ণবসমাজে রাগানুগা ভক্তি নামে পরিচিত।এঁর সমস্ত বিবরণ ও সাধন পদ্ধতি জানতে হলে শ্রীগুরুচরণাশ্রয় করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করাই কর্তব্য।যাঁরা এই রাগানুগা সাধনভক্তি যাজন করেন,তাঁদের ক্রমশ অনর্থ নিবৃত্তি,নিষ্ঠা,আসক্তি প্রভৃতি লাভের পর,প্রেম লাভ হয়  ও যে ব্রহ্মান্ডে কৃষ্ণলীলা প্রকট থাকে,সেই ব্রহ্মান্ডে গোপীগর্ভে জন্ম লাভ করে।* *তারপর নিত‍্যসিদ্ধা গোপীগণের সঙ্গ করে তাঁদের প্রেম বাড়ে স্নেহ,মান,প্রণয়াদি মহাভাবে পরিণত হলে তাঁরা কৃষ্ণের সেবাধিকার লাভ করতে পারেন।*
*🍀সাধনসিদ্ধা গোপীগণ, যৌথিকী ও অযৌথিকী দুই প্রকার।যাঁরা একসঙ্গে অনেকে মিলিত হয়ে সাধনে রত হয়ে সিদ্ধিদশায় সকলেই একসঙ্গে ব্রজে জন্মগ্রহণ করেন,তাঁরা যৌথিকী। আর দন্ডকারণ‍্যবাসী মুনিগণ এবং সত‍্যলোকবাসিনী বেদাধিষ্ঠাত্রী দেবতাগণ এই যৌথিকী শ্রেণীভুক্ত।* *যাঁরা গোপীভাবে লুব্ধ হয়ে একাকীই সাধনে রত হন এবং সিদ্ধিদশায় ব্রজে জন্মগ্রহণ করেন,তাঁরা অযৌথিকী।অযৌথিকী সাধনাসিদ্ধা গোপীগণ দুইপ্রকার,প্রাচীনা ও নবীনা।* *যাঁরা বহুদিন পূর্বে নিত‍্যসিদ্ধা গোপীগণের সঙ্গে একসঙ্গে বাস ও কৃষ্ণ সেবাধিকার প্রাপ্ত হয়েছেন,তাঁরা প্রাচীনা,এবং যাঁরা মনুষ‍্য কিংবা দেবতা গন্ধর্বাদি দেহে সাধনানুষ্ঠান করে,একবারই ব্রজে জন্মগ্রহণ করেছেন,তাঁরা নবীনা।*
*🍀আর যাঁরা অঙ্গিরা ঋষির অভিশাপেমর্ত‍্যে এসে ক্ষীরোদ সাগরের কূলে তপস‍্যা করে ব্রজেবাস করেছিলেন এবং ব্রজগোপীনীদের কাছে কৃষ্ণের নাম,গুণ,লীলা ও মাহাত্মকথা শুনেছিলেন।* *সপ্তর্ষিমন্ডলের সাতজন ঋষিপত্নী শ্রীকৃষ্ণকে অন্নদান করেছিলেন তাঁরা কৃপাসিদ্ধা নামে খ‍্যাতা হয়েছিলেন।* *অতি সংক্ষেপে দুই এক কথায় লিখিলাম।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌻ব্রজলীলার প্রথম পদ🌻*
*শরদ চন্দ্র ,                  পবন মন্দ,*
   *বিপিনে ভরল কুসুম গন্ধ রে।*
*ফুল্ল  মল্লিকা,          মালতী  যূথী,*
       *মত্ত মধুকর ভোরণী রে।।*
*হেরত  রাতি,            ঐছন ভাতি,*
    *শ‍্যাম মোহন মদনে মাতি রে।*
*মূরলীক গান ,          পঞ্চম তান,*
     *কুলবতী চিত চোরণী রে।।*
*শুনত   গোপী,      প্রেম      রোপি,*
     *মনহি মনহি আপনা সঁপি রে।*
*যাহি  বোলত,             তাহি চলত,*
     *মূরলীক কল   কলোনী রে।।*
*বিছুরি  গেহ ,           নিজহু  দেহ।*
    *এক  নয়নে  কাজর রেহ রে।।*
*বাহে  রঞ্জিত,       মঞ্জীর  এক,*
    *এক কুন্ডল দোলনী রে।।*
*শিথিল  ছন্দ,            নীবীক বন্ধ,*
     *বেগে ধাওত যুবতী বৃন্দ রে।*
*খসত বসন ,          রসন   চোলী,*
      *গলিত বেণী লোলনী রে।।*
*ততহি  বেলি,           সখিনী মেলি,*
    *কেহ কাহুক পথ না হেরি রে।*
*ঐছন  মিলল,       গোকুল  চন্দ্র,*
     *গোবিন্দ দাস বোলনী রে।।*
*🌻এই পদটির ব‍্যাখ‍্যা আপনারা আপনাদের মত করবেন🌻।*
*🌹আমার মত করে ব‍্যাখ‍্যা দিলাম🌹*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧

*🌼শ্রীকৃষ্ণ কার্তিকমাসের শরৎকালে রাসলীলা করবেন জেনে,অসময়ে বসন্তঋতুর আগমন হয়েছিল।ঋতুরাজ আর নিজেকে সময়ের অপেক্ষা করতে পারে নাই।* *বসন্তঋতু তৎক্ষণাৎ শ্রীবৃন্দাবনে আবির্ভূত হয়ে বিবিধ কুসুম শোভায় এমন করে বনভূমি সুসজ্জিত করল যে,তা দেখলে মনে হয়,সন্তান পারিজাত হরি চন্দনাদি দেবকুসুম শোভিত নন্দনকাননও তার কাছে অতি তুচ্ছ।* *বসন্তাগমনের সঙ্গে সঙ্গে বসন্ত সহচর মলয়-মারুত বসন্তজাত কুসুমগন্ধ বহন করে ধীরে ধীরে প্রবাহিত হতে লাগল,মধুপান মত্ত মধুকরের গুণ্ গুণ্ শব্দে বনভূমি মুখরিত হয়ে উঠল।* *তাতে আবার রাধাবদনাকৃতি শরৎকালের শারদচন্দ্র পূর্ণরূপে উদিত* *হয়েছে,*তাতে আবার বনময় শোভা* *আরও মধুময় হয়েছে*        *জ‍্যোৎস্নাময়ী রজনীর এই শোভা দর্শন করে মদনমোহন শ্রীশ‍্যামসুন্দর পূর্ব প্রতিশ্রুতি স্মরণ করে মনে মনে স্থির করলেন এই শুভরজনীতে গোপীদের মনোরথ পূর্ণ করব।* *অমনি মূরলী দ্বারা গোপী আকর্ষণী ধ্বনি করলেন।* *মূরলীক পঞ্চম গান।সেই মূরলীতে বেজেছিল যে মন্ত্রটি তার নাম কামবীজ।গোপীগণের মধ্যে দুই শ্রেণীর নায়িকা আছে।দক্ষিণা আর বামা।দক্ষিণা নায়িকাষসর্বদানায়কের অনুকূল, সামান্য সঙ্কেতেই অভিসার করেন,আর বামা নায়িকা সর্বদাই বাম‍্যবতী শ্রীকৃষ্ণের বামদিকে থেকেও বামনয়না।যাঁরা কৃষ্ণ প্রেমের পাগল তাঁরা কান পেতে আছেন,মূরলী ধ্বনি শ্রবণ করে কেহ কারও প্রতি লক্ষ‍্য না করে প্রিয় যেখানে ছিলেন তথায় গমন করলেন।* *আশ্চর্য‍্যের বিষয় তাঁরা যে যা অবস্থায় ছিলেন সেইমত পাগলিনীর ন‍্যায় ধাবিত হলেন।* *কোন গোপী দুগ্ধদোহন রত ছিলেন ধ্বনি শুনে দোহন কার্য‍্য ত‍্যাগ করে,কেহ বা উনানে দুধ গরম করছিলেন,ত‍্যাগ করে,কেহ বা সন্তানকে স্তনপান করাচ্ছিলেন,সন্তানকে মাটিতে ফেলে,কেহ বা পতির শুশ্রূষা,কেহ বা এক কানে কুন্ডল পড়া হয়েছে আর এক কানে পড়বেন,কেহ বা এক পায়ে মঞ্জীর পড়ে, কেহ বা একবাহুতে কঙ্কণ পড়ে, কেহ বা একনয়নে কাজল,যে যেমন অবস্থায় ছিলেন সেই অবস্থায় শ্রীকৃষ্ণের কাছে ছুটলেন।* *কেহ কারও প্রতি লক্ষ‍্য নেই,সকলেই সেই গভীর বনে গিয়ে উপস্থিত হলেন।* *গোপীদের মনে আনন্দ দেখে, চতুর চূড়ামণি বললেন,আমাকে শুধু নর-নারী নয়,পশু পক্ষীগণ পর্যন্ত আমাকে ভালবাসে।ধেনুগণ আমায় ভালবাসে,বাঁশী শুনলে উর্ধ পুচ্ছে ছুটে আসে,বনের হরিণীগণ,ময়ূরগণও আমায় ভালবাসে।* *ময়ূরগণ আমায় দেখলে পুচ্ছ বিস্তার করে নৃত‍্য করে, এইকথা শুনার পর পুনঃ দুঃখের সাগরে ডুবে গেলেন।তখন তিনি গম্ভীর ভাষায় সম্পূর্ণ উদিসীনের মত বলে যেতে লাগলেন,তোমরা আমাকে ভালবাস তাই না?তবে শোন,সংসারের শ্রেষ্ঠধর্মে, কর্তব‍্যে অবহেলা করো তাহলে ভালবাসার প্রশংসা করব না।নারীজাতির ধর্ম কি?রমণীগণের শ্রেষ্ঠধর্ম তিনটি,অকপটে পতি সেবা,পতির আত্মীয়-স্বজনদের সুখ বিধান এবং সন্তান প্রতিপালন।এর মধ্যে পতি সেবা সকল ধর্মের শিরোমণি।* *একনিষ্ঠ ভাবে পতিসেবায় নারীর সর্বসিদ্ধি লাভ হতে পারে।সতীনারী সমাজের সম্পদ,বিশ্বজগতের ভূষণ।এইসব কথা শুনে গোপবধূগণ দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে আপন মনে বলছেন,আহা ভাগ‍্যের কি বিড়াম্বনা!যাঁর জন্য সর্বস্ব ধর্ম জলাঞ্জলী দিয়ে ছুটে এলাম,তিনি আমাদের ঘরে ফিরবার উপদেশ দেন।* *আমরা তোমার ধর্মতত্ত্ব শুনতে আসিনি,এসেছি প্রাণপ্রিয়র পাদপদ্ম সেবার আশায়।গোপীগণের অন্তরে কত ভাব তরঙ্গ জাগছে।তাঁরা আর্তনাদ করে শ‍্যামসুন্দরকে বলতে চাইছেন,হে ব্রজসুন্দর!আমরা শিশুকাল হতেই তোমাকেই পতিরূপে ভালবেসে এসেছি।তুমি তা জানো।আমাদের পিতামাতা আমাদেরকে যার হাতে দেয়াছেন তাকে আন্তরিক ভাবে কোনদিনই পতিরূপে গ্রহণ করতে পারিনি।বাইরে যে সম্পর্কটুকু ছিল তা তোমার মুরলীধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্ন হয়ে গেছে।* *হে বল্লভ!তোমার রূপ,গুণ,সৌন্দর্য‍্যের সঙ্গে কার তুলনা?* *যে তোমাকে দেছনি,সে-ই পারে পতি সেবায় রত থাকতে।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌴🌴দ্বিতীয় পদ🌴🌴*
*বিপিনে মিলল গোপ নারী,*
*হেরি হাসত মূরলী ধারী,*
*নিরখি বয়ান পুছত বাত,*
*প্রেম সিন্ধু গাহনী।*
*পুছত সবক গমন ক্ষেম,*
*কহত কিয়ে করব প্রেম,*
*ব্রজক সবহু কুশল বাত,*
*কাহে কুটিল চাহনি।।*
*হেরি ঐছন রজতী ঘোর,*
*তেজি তরুণী পতিক কোর,*
*কৈছে আওলি কানন ওর,*
*থোর নহত কাহিনী।*
*গলিত ললিত কবরী বন্ধ,*
*কাহে ধাওত যুবতী বৃন্দ,*
*মন্দিরে কিয়ে পড়ল দ্বন্দ্ব,*
*বেড়ল বিপথ বাহিনী।।*
*কিয়ে শারদ চাঁদনি রাতি,*
*নিকুঞ্জে ভরল কুসুম পাঁতি,*
*হেরত শ‍্যাম ভ্রমর ভাতি,*
*বুঝি আওলি সাহনী।*
*এতহ কহত কহ কোই,*
*কাহে রাখত মনহি গোই,*
*ইহ আন না হোই কোই,*
*গোবিন্দ দাস গাহনি।।*
*🌴প্রথমে সম্বোধন করলেন "স্বাগতং বো মহাভাগাঃ" পাতিব্রতাদি ধর্মে ও বহুগুণে,শীলে তোমরা মহাভাগ‍্যশালিনী,তোমাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি।* *অন্নভিক্ষা লীলায় যাজ্ঞিক পত্নীগণকেও এই ভাষাতেই সম্ভাষণ করেছিলেন।*
*তবে তাঁরা ছিলেন নিতান্ত অপরিচিতা।আর আজ ইঁহারা সম্পূর্ণ পরিচিতা।কারণ একবার মাত্র সাক্ষাৎ হয়েছিল।আজ স্বজন ও কৃষ্ণে ঐকান্তিক প্রীতিযুক্তা।ব্রহ্মণীগণকে "স্বাগতং"বলে, বলেছিলেন"আস‍্যতাং"আসুন বসুন।* *আর গোপীগণদের প্রতি বাগবিন‍্যাস আরম্ভ করলেন।* *(বাক‍্যের ও অর্থের চাতুর্য‍্য,)বিবিধ ভঙ্গিমা ও বৈচিত্র-সৃষ্টিতে যাঁরা নিপুণ তাঁহামধ‍্যে এই বক্তাটি সর্বশ্রেষ্ঠ,চাতুর্য‍্য ও বাক‍্যের শিরোমণি। বাক চাতুর্য‍্য দ্বারা গোপীদের চিত্ত বিকলতা করলেন।* *পর পর তিনটি কথা বলেছিলেন,(১)তোমাদের আগমনের কারণ কি?(২)আমা দ্বারা তোমাদের কি প্রিয় কার্য‍্য সাধিত হবে?)(৩)ব্রজের সকলে কুশল তো? প্রতিটি কথাই কত সুন্দর ভাবে,নির্দোষাকারে বললেন।কিন্তু প্রতিটি শব্দের মধ্যে উপেক্ষার তীক্ষ্মতা আছে।* *গোপিকাদের অন্তরে তা বিদ্ধ হতে লাগল।অতি প্রিয়জনের কাছে কি জন্য এসেছি,জিজ্ঞাসা করা সমাদর সূচক নহে।* *তারপর নিজে নাম ধরে ডেকে এনে আগমন কারণ জিজ্ঞাসা করবার মধ্যে উপেক্ষা সুস্পষ্ট।আবার বলে কি-না,আমা দ্বারা তোমাদের কি প্রিয় কার্য‍্য সাধন হতে পারে,একথা নিতান্ত অপরিচিত লোককে বললে শোভন হয়।* *যাঁদের সঙ্গে রোজ রোজ দেখা,অন্তরের নিবিড় মাখামাখি,তাঁদের কাছে পেয়ে,বলে কি-না আমা দ্বারা কি সেবা হতে পারে বলা অস্বাভাবিক,বুদ্ধিবৃত্তির স্থিরত্বের জ্ঞাপক নয়।কৃষ্ণ বলতে চাইলেন যে,আমা দ্বারা তোমাদের কিছু প্রিয় কার্য‍্য করা সম্ভব নয়,তবে নেহাৎ যদি আদেশ করে বসো তবে কিছু করতেও পারি।* *তোমরা কেন এসেছ তা যখন বলছ না,তখন আমার অনুমান হয় ব্রজের কোন অমঙ্গল হয়েছে,তাই জানতে চাই সকলের কুশল।শ‍্যামসুন্দরের চাতুর্য‍্যপূর্ণ বাক‍্য শুনে গোপীকাগণের হৃদয় নারাশে ভরে গেল।*ব‍্যাকলতা পূর্ণ দৃষ্টিপাত করে তাঁরা অধোমুখী হলেন,পায়ের নখ দিয়ে মাটি আঁচরা লাগলেন।* *আর মনেলতে লাগলেন,ওরে নিষ্ঠুর!ব্রজের কোন বিপদ হলে তো ব্রজবাসীরাই তোমার কাছে আসত।আজ বিপদ নয় মহাবিপদ আমাদের।* *তবে তা কেবল "এই" হতভাগিনীদের মহাবিপদ।এই মহাবিপদ আমরা ছাড়া আর অন‍্য কেহ বুঝবে না।এই বিপদের নিবারক আছে, কেবল তোমার চরণে আশ্রয়।* *অন্তর্য‍্যামী ব্রজসুন্দর তাদের অন্তরের কথা বুঝতে পেরে বললেন,তোমরা পুরুষ নহ নারী,তাতে আবার অতি সুন্দরী যুবতী, দেশ-কাল-পাত্র বুঝে সর্বদা চলা উচিত। এখন দিবা নয় রাত্রি, আর এইটা গৃহ নয়,বনানী।*
*বনের মধ্যে রজনী ঘোররূপা,পথ ঘাট নিরাপদ নয়, শ্বাপদসঙ্কুল।*
*আমি তোমাদের নিজজন হলেও পরপুরুষ তো বটে।এই সব বিবেচনা করে তোমাদের এখন আর এক মুহূর্ত থাকা উচিত নয়।*
*ব্রজে ফিরে যাও। যদিও তোমরা পতিব্রতা,শুদ্ধচিত্তা,বলে ব্রজে খ‍্যাত‍্যা আর আমারও "ব্রহ্মচারী"সুযশ লোকবেদ প্রসিদ্ধ,তথাপি জনহীন বনে রাত্রিকালে একত্র অবস্থান করা সঙ্গত নহে।* *পুনঃ ব্রজসুন্দরের কথাগুলিতাঁদের মর্মঘাতি শেলের মত বক্ষে বিদ্ধ করল।* *তাঁরা একেবারে নারাশার গাঢ় অন্ধকারে ডুবে গেল।*(ক্রমশ)

*🌴দ্বিতীয় পদের ব‍্যাখ‍্যা🌴
*গোপীগণের মুখে কোন কথা নেই, মনে মনে বলছেন,হে প্রাণবল্লভ!তুমি আমাদের চির অভয়দাতা,তুমি আমাদের ভয় দেখাচ্ছ,ঘোর রজনীর ভয়,হিংস্র জন্তু জানোয়ারের  ভয়, লোকনিন্দাপবাদের ভয়, এইসব আমরা চিন্তার মধ্যেও আনি না,যদি তোমার অভয়পদ সান্নিধ‍্যে থাকতে পারি।*  *তুমি কত ভয় হতে বাঁচিয়েছ তা আমাদের সবই মনে আছে।* *সকল ভয়ের তোমার পাদপদ্মই আমাদের একমাত্র নির্ভরযোগ‍্য স্থান।তোমার শ্রীচরণে স্থান দিলেই জগতের কোন ভয় থাকবে না।* *তাঁদের মনের কথা জানতে পেরে,ব্রজসুন্দর বললেন,আমার কাছে তোমাদের ভয় নাই,নিশ্চিন্ত আছ!এটি না হয় স্বীকার করলাম, কিন্তু রাত্রিকালে তোমাদের ঘরে না দেখে স্বজন, আত্মীয় সকলেই মহা উদ্বেগ নিয়ে তোমাদেরকে ঘরের মধ্যে,প্রতিবেশীর ঘরে, পল্লী পল্লীতে খোঁজ করবে,কোথাও না পেয়ে এই বন পর্যন্ত আসাও অসম্ভব নয়,যদি এখানে এসে তোমাদেরকে আমার সঙ্গে দেখে তাহলে কি তোমাদের মহালজ্জা হবে না?* *গোপীগণ বলছেন,আমাদের প্রাণের অবস্থার দিকে লক্ষ‍্য নাই,কেবল ফিরে যেতে বলছ।আমরা মাতাপিতা,স্বামীর বন্ধন* *চিরতরে ছিন্ন করে ছুটে এসেছি তোমার কাছে, তুমি যদি গ্রহণ  না করো,এই জীবন আমরা যমুনায় বিসর্জন দিব,তবুও ঘরে ফিরে যাব না।* *তাঁদের মনের কথা জেনে রসিক-চূড়ামণি বললেন, এতক্ষণে তোমাদের বনে আসার কারণ বুঝতে পেরেছি।* *তোমরা নিশ্চয়ই বনভূমির শোভা দেখতে এসেছ,সারাদিন গৃহকার্য‍্য করে সময় পাও না,তাই রাত্রিকালে এসেছ?* *ভাল কথা,এতে কোন দোষ নেই,শরৎকাল,পূর্ণিমা তিথি,চাঁদনী ভরা বনানী,পূর্ণচন্দ্রের নিরুপম সুষমা সকলের প্রাণেই আনন্দ লহরী এনে দেয়।* *আহা পুষ্পে পুষ্পে বনভূমির শোভাও অপূর্ব।ইহা উপভোগ করতে কার না ভাল লাগে বলো?শীতল স্নিগ্ধ বাতাসের বৃক্ষের পল্লবগুলি যেন নৃত‍্য করছে।মনে হয় অঙ্গুলী সঙ্কেতে বনদেবী সবাইকে ডাকছেন এই শোভার সাগরে অবগাহন করতে।* *এই শোভা দেখতে এসেছ তাতে কোন অপরাধ নেই। এইকথা শুনে গোপীগণ ভাবলেন,হায়রে দুর্ভাগ‍্য।যাঁর জন্য সব বন্ধন ছেদন করে কলঙ্কের পশরা মাথায় নিয়ে ঘর ছেড়ে এলাম,তিনি আমাদের মনের ব‍্যথা বুঝলেন না।আরও কত ব‍্যথা দিচ্ছেন।* *রসিকরাজ আবার বলছেন,কুলবতী নারীর অন্তঃপুরই প্রশস্ত জায়গা,বনে নয়।এইকথা শুনে গোপীগণ অশ্রুপাত নয়নে অসহায় দৃষ্টিতে গোবিন্দের চরণ পানে চেয়ে রইলেন।* *তাঁদের নিরাশজনক চাহনি দেখে শ‍্যামসুন্দর আবার বলতে লাগলেন,হে ব্রজাঙ্গনাগণ!তোমরা আমার কাছে দাঁড়িয়ে আছ,এতে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি তোমরা কেন এসেছ।* *তোমরা নিশ্চয়ই আমাকে খুবই ভালবাস,না হলে কুলরমণী হয়ে এই গভীর রাত্রে এই নিবিড় বনে আসতে পারতে না।আমার প্রতি ভালবাসায় তোমাদের চিত্ত বশীভূত,সেই জন‍্য স্থানাস্থান, কালাকাল বিচার করবার শক্তি হারিয়েছ।তোমাদের এখানে আসা উচিত হয়েছে।কৃষ্ণের এই কথগুলি শোনার পর ব্রজাঙ্গনাগণের মলিন বদনসহসা উৎফুল্ল হয়ে উঠল।* *প্রাণে প্রচুর আশা ও আনন্দের উদয় হল।তাঁরা ভাবলেন এতক্ষণে প্রাণদয়িত আমাদের এখানে আগমনের কারণ ঠিক বুঝেছেন।*
        *ক্রমশ*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌴🌴দ্বিতীয় পদ🌴🌴*
*বিপিনে মিলল গোপ নারী,*
*হেরি হাসত মূরলী ধারী,*
*নিরখি বয়ান পুছত বাত,*
*প্রেম সিন্ধু গাহনী।*
*পুছত সবক গমন ক্ষেম,*
*কহত কিয়ে করব প্রেম,*
*ব্রজক সবহু কুশল বাত,*
*কাহে   কুটিল   চাহনি।।*
*হেরি ঐছন রজতী ঘোর,*
*তেজি তরুণী পতিক কোর,*
*কৈছে আওলি কানন  ওর,*
*থোর     নহত  কাহিনী।*
*গলিত  ললিত কবরী বন্ধ,*
*কাহে  ধাওত যুবতী বৃন্দ,*
*মন্দিরে কিয়ে পড়ল দ্বন্দ্ব,*
*বেড়ল    বিপথ     বাহিনী।।*
*কিয়ে  শারদ  চাঁদনি  রাতি,*
*নিকুঞ্জে ভরল কুসুম পাঁতি,*
*হেরত  শ‍্যাম  ভ্রমর  ভাতি,*
*বুঝি     আওলি   সাহনী।*
*এতহ কহত কহ কোই,*
*কাহে  রাখত মনহি  গোই,*
*ইহ আন না হোই কোই,*
*গোবিন্দ   দাস   গাহনি।।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌴প্রথমে সম্বোধন করলেন "স্বাগতং বো মহাভাগাঃ" পাতিব্রতাদি ধর্মে ও বহুগুণে,শীলে তোমরা মহাভাগ‍্যশালিনী,তোমাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি।* *অন্নভিক্ষা লীলায় যাজ্ঞিক পত্নীগণকেও এই ভাষাতেই সম্ভাষণ করেছিলেন।* *তবে তাঁরা ছিলেন নিতান্ত অপরিচিতা।আর আজ ইঁহারা সম্পূর্ণ পরিচিতা।কারণ একবার মাত্র সাক্ষাৎ হয়েছিল।আজ স্বজন ও কৃষ্ণে ঐকান্তিক প্রীতিযুক্তা।ব্রহ্মণীগণকে "স্বাগতং"বলে, বলেছিলেন"আস‍্যতাং"আসুন বসুন।* *আর গোপীগণদের প্রতি বাগবিন‍্যাস আরম্ভ করলেন।* *(বাক‍্যের ও অর্থের চাতুর্য‍্য,)বিবিধ ভঙ্গিমা ও বৈচিত্র-সৃষ্টিতে যাঁরা নিপুণ তাঁহামধ‍্যে এই বক্তাটি সর্বশ্রেষ্ঠ,চাতুর্য‍্য ও বাক‍্যের শিরোমণি। বাক চাতুর্য‍্য দ্বারা গোপীদের চিত্ত বিকলতা করলেন।* *পর পর তিনটি কথা বলেছিলেন,(১)তোমাদের আগমনের কারণ কি?(২)আমা দ্বারা তোমাদের কি প্রিয় কার্য‍্য সাধিত হবে?)(৩)ব্রজের সকলে কুশল তো? প্রতিটি কথাই কত সুন্দর ভাবে,নির্দোষাকারে বললেন।কিন্তু প্রতিটি শব্দের মধ্যে উপেক্ষার তীক্ষ্মতা আছে।* *গোপিকাদের অন্তরে তা বিদ্ধ হতে লাগল।অতি প্রিয়জনের কাছে কি জন্য এসেছি,জিজ্ঞাসা করা সমাদর সূচক নহে।* *তারপর নিজে নাম ধরে ডেকে এনে আগমন কারণ জিজ্ঞাসা করবার মধ্যে উপেক্ষা সুস্পষ্ট।আবার বলে কি-না,আমা দ্বারা তোমাদের কি প্রিয় কার্য‍্য সাধন হতে পারে,একথা নিতান্ত অপরিচিত লোককে বললে শোভন হয়।* *যাঁদের সঙ্গে রোজ রোজ দেখা,অন্তরের নিবিড় মাখামাখি,তাঁদের কাছে পেয়ে,বলে কি-না আমা দ্বারা কি সেবা হতে পারে বলা অস্বাভাবিক,বুদ্ধিবৃত্তির স্থিরত্বের জ্ঞাপক নয়।কৃষ্ণ বলতে চাইলেন যে,আমা দ্বারা তোমাদের কিছু প্রিয় কার্য‍্য করা সম্ভব নয়,তবে নেহাৎ যদি আদেশ করে বসো তবে কিছু করতেও পারি।* *তোমরা কেন এসেছ তা যখন বলছ না,তখন আমার অনুমান হয় ব্রজের কোন অমঙ্গল হয়েছে,তাই জানতে চাই সকলের কুশল।শ‍্যামসুন্দরের চাতুর্য‍্যপূর্ণ বাক‍্য শুনে গোপীকাগণের হৃদয় নারাশে ভরে গেল।*ব‍্যাকলতা পূর্ণ দৃষ্টিপাত করে তাঁরা অধোমুখী হলেন,পায়ের নখ দিয়ে মাটি আঁচরা লাগলেন।* *আর মনেলতে লাগলেন,ওরে নিষ্ঠুর!ব্রজের কোন বিপদ হলে তো ব্রজবাসীরাই তোমার কাছে আসত।আজ বিপদ নয় মহাবিপদ আমাদের।* *তবে তা কেবল "এই" হতভাগিনীদের মহাবিপদ।এই মহাবিপদ আমরা ছাড়া আর অন‍্য কেহ বুঝবে না।এই বিপদের নিবারক আছে, কেবল তোমার চরণে আশ্রয়।* *অন্তর্য‍্যামী ব্রজসুন্দর তাদের অন্তরের কথা বুঝতে পেরে বললেন,তোমরা পুরুষ নহ নারী,তাতে আবার অতি সুন্দরী যুবতী, দেশ-কাল-পাত্র বুঝে সর্বদা চলা উচিত। এখন দিবা নয় রাত্রি, আর এইটা গৃহ নয়,বনানী।* *বনের মধ্যে রজনী ঘোররূপা,পথ ঘাট নিরাপদ নয়, শ্বাপদসঙ্কুল।*
*আমি তোমাদের নিজজন হলেও পরপুরুষ তো বটে।এই সব বিবেচনা করে তোমাদের এখন আর এক মুহূর্ত থাকা উচিত নয়।*
*ব্রজে ফিরে যাও। যদিও তোমরা পতিব্রতা,শুদ্ধচিত্তা,বলে ব্রজে খ‍্যাত‍্যা আর আমারও "ব্রহ্মচারী"সুযশ লোকবেদ প্রসিদ্ধ,তথাপি জনহীন বনে রাত্রিকালে একত্র অবস্থান করা সঙ্গত নহে।* *পুনঃ ব্রজসুন্দরের কথাগুলিতাঁদের মর্মঘাতি শেলের মত বক্ষে বিদ্ধ করল।* *তাঁরা একেবারে নারাশার গাঢ় অন্ধকারে ডুবে গেল।*(ক্রমশ)

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌼🌼তৃতীয় পদ🌼🌼*
*ঐছন বচন যব কহল কান।*
*ব্রজ রমণীগণ  সজল নয়ান।।*
*টুটল সবহুঁ মনোরথ করনি।*
*অবনত বয়ানে নখে লিখু ধরণী।।*
*আকুল  অন্তর  গদগদ  কহই।*
*অকরুণ বচন বিশিখ না সহই।।*
       *বিশিখ=বাণ*
*শুন শুন সুকপট শ‍্যামর চন্দ।*
*কৈছে কহলি তুহুঁ ইহ অনুবন্ধ।।*
*ভাঙ্গলি কুলশীল মূরলীক শানে।*
*কিঙ্করীগণে জনু কেশে ধরি আনে।।*
*অব কাহে কহত ধরম যুত বোল।*
*ধার্মিক হরয়ে কি কুমারী নিচোল*।।
*তোহে সঁপিত জীব তুয়া রস পাব।*
*তুয়া পদ ছোড়ি অব কো কাঁহা যাব।।*
*এতহুঁ কহত ব্রজ যুবতী মেল।*
*শুনি নন্দনন্দন হরষিত ভেল।।*
*করি পরসাদ তহিঁ করত বিলাস।*
*আনন্দে  নিরখয়  গোবিন্দ দাস।।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌻খুব সংক্ষেপে দুই এক কথায় ভাবার্থ।🌻* *শ্রীকৃষ্ণ গোপীগণকে লক্ষ‍্য করে দশটি শ্লোক উচ্চারণ করেছিলেন।(শ্রীসনাতন গোস্বামী পাদ বলেছেন,দশটি শ্লোক নহে,দশখানি ইন্ধন-শুকনো কাঠ।সেই শুকনো কাঠে আগুন দিলে যেমন দাঁউদাঁউ করে জ্বলে,(ঔদাস‍্যবহ্নি)* *শ্লোকে গোপীদের প্রতি যে নির্মম উদাসীনতা ব‍্যক্ত হয়েছে উহাই অগ্নি।প্রেম-কোমল গোপীদের দশ আশার দশদিকে কাঠ স্থাপন করে আগুন লাগিয়ে তাদের উপভোগ করতে লাগলেন।* *কে? না কৌতুকী রসিকরাজ কৃষ্ণ।* 
*🌻দশটি শ্লোক ও ব‍্যাখ‍্যা বহু তাই লিখিলাম না🌻*
*টুটল সবহুঁ মনোরথ করনি।*
*যে ব‍্যক্তি,যে বোঝা বইতে পারে তার থেকে যদি অনেকবেশী দেওয়া হয় তাহলে নিশ্চয় মাথি নত হয়ে পরবে।গোপীদের দুঃখের বোঝা এত ভারী হয়েছে যে ভারে শির আপনি অবনত হয়ে পড়েছে।*
*তাঁরা যেন দুঃখকে বলছেন,হে দুঃখ!কৃষ্ণ উপেক্ষিত জীবনে তুমি তো চিরসাথি,এখন একটু সময়ের জন্য সরে যাও।মাথা তুলে একবার সেই চন্দ্রবদন দর্শন করে নিয় শেষবারের মত।* *তারপর জীবনভোর তোমাতে আমাতে কাটাব।তাঁদের কাজল ধোয়া নয়নধারা বক্ষে লেপে কুমকুম ক্ষালন করছিল।তাঁরা চরণের অঙ্গুলি দিয়ে মাটিতে আঁচর কাটতে কাটতে নীরবে দাঁড়িয়ে রইলেন।*
*অবনত আননে নখে লিখু ধরণী।*
*ধরণীর মাটিতে আঁচড় কাটা কেন?* *ধরণীর নাম সর্বংসহা।আঁচড় কেটে ব্রজবধূরা ধরণীকে যেন ডেকে বলছেন,এসো ধরণী,দাঁড়াও এসে আমাদের পাশে।শোন কৃষ্ণের উপেক্ষা বাক‍্য।দেখি কেমন সহ‍্য করতে পারো।কেমনে সর্বংসহা নাম বজায় রাখতে পারো।* *অথবা ক্ষিতির গায়ে আঁচড় কেটে বলছেন,আমরা কি করব এতক্ষণ ঠিক করতে পারিনি,এখন স্থির করেছি।* *হে ভূমি তুমি সীতা-জননী দ্বিভাগ হও দুঃখিনী কন‍্যা সীতার মত আমাদেরও তোমার কোলে জায়গা দাও।কৃষ্ণের উপেক্ষার তীব্র জ্বালা জুড়িয়ে যাক।চিতা মৃতকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেই,* *আর চিন্তা জীবকে দগ্ধ করে।গোপীগণের দুঃখ আর শ‍্যামসুন্দর সহ‍্য হল না,তাঁদেরকে নিয়ে আনন্দিত চিত্তে রাসলীলা আরম্ভ করলেন।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌹🌹চতুর্থ পদ🌹🌹*
*কাঞ্চন মণিগণ,জনু নিরমাওল,*
      *রমণী মন্ডল সমাজ।*
*মাঝহি  মাঝ,মহা মরকত সম,*
     *শ‍্যামরু নটবর রাজ।।*
 *অপরূপ    রাস     বিহার।*
*থির বিজুরী সঞে,চঞ্চল জলধর,*
     *রস বরিখয়ে অনিবার।।*
*কত কত চাঁদ,তিমির পর বিলসয়,*
     *তিমি রহু কত কত চাঁদে।*
*কনক লতায়ে,তমালহি বেড়ল,*
     *দুহুঁ দুহুঁ তনু তনু বান্ধে।।*
*কত কত পদুমিনী,পঞ্চম গাওত,*
     *মধুকর ধরু শ্রুতি ভাষ।*
*মধুকর মিলি কত,পদুমিনী গাওত,*
     *মুগধল গোবিন্দ দাস।।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌻রসিকেন্দ্র চূড়ামণি গোপীগণের আত্ম-সমর্পণ বাক‍্যে তুষ্ট হয়ে রাসচক্র নির্মাণ করলেন।তার শোভার কি প্রকার যেন স্বর্ণ ও নীলমণি দ্বারা একটি চক্র নির্মাণ করলেন।গোপীগণ গৌরবর্ণা,সোনার ন‍্যায়, আর শ‍্যামসুন্দর নীলকান্তমণি।একটি গোপী ও একটি কৃষ্ণ অর্থ‍্যাৎ যত গোপী তত কৃষ্ণ,এইভাবে মন্ডলী হল।* *এই যেন চাঁদ,তিমিরের খেলা,তমালে আর স্বর্ণলতায় জড়াজড়ি। আবার কোন গোপী অতি মিষ্ট সুরে গান করছেন,পদ্মিনী গোপীগণ তা শ্রবণ করছেন। মঞ্জরী ভাবাবিষ্ট গোবিন্দ দাস কবিরাজ এই লীলা দর্শন করে মুগ্ধ হলেন।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌻মধ‍্যেখানে কৃষ্ণ রাধাকে নিয়ে অন্তর্ধান হয়ছিলেন। কারণ রাসলীলা তো একরাত্রির লীলা নহে,ব্রহ্মার একরাত্রি,পূর্বে ব‍্যাখ‍্যা রয়েছে।*
*🌻তারপর পুনরায় রাসচক্র নির্মাণ করে নৃত‍্য।*
*🌼বিল্ব মঙ্গল ঠাকুর বলেছেন।*
*অঙ্গনামঙ্গনামন্তরা মাধবো,*
*মাধবং মাধবং চান্তরেণাঙ্গনা।*
*ইত্থমাকল্পিতে মন্ডলে মধ‍্য গো,*
*বেণনা সংজগৌ দেবকীনন্দন।।*
*🌹ব্রজাঙ্গনাগণের মনোবাসনা পূর্ণ করবার জন্য পূর্ণতম ভগবান শ্রীকৃষ্ণই বহু হলেন,মনে হয়,দুই দুই গোপরমণী,তার মধ্যে এক কৃষ্ণ, এবং দুই দুই কৃষ্ণ,তার মধ্যে এক গোপরমণী,এইপ্রকার রাসমন্ডলী করে মন্ডলীমধ‍্যে দাঁড়িয়ে দেবকীনন্দন তাঁর মূরলীতে মধুর গান ধরলেন।* *যত গোপী তত কৃষ্ণ,এতে বিরাট ঐশ্বর্য‍্যের অভিব‍্যক্তি হয়েছে।যোগশক্তি হচ্ছে ঐশ্বর্য‍্যের অভিব‍্যক্তি।ঐ সকল যোগশক্তি ভগবানের অধীন।তাঁর সেবা করে মাত্র।শ্রীকৃষ্ণ তাঁর অবিচিন্ত‍্য বৈভব বলে প্রত‍্যেক ব্রজাঙ্গনার পার্শে নিজ মূর্তিতে বিরাজ হলেন।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌼🌼পঞ্চম পদ🌼🌼*
*পহিলে প‍্যারী,পদুমিনী ধনী,*
      *কঙ্কণে ধরি তান।*
*কৈছে নাচবি,    নাচহ দেখি,*
      *মূরলীতে নহে গান।।*
*রাখালের গাঁথা,  বনমালা পড়ি,*
      *রমণী ভুলান নয়।*
*কঙ্কণের তালে, নাচিতে নাচিতে,*
     *তাল ছাড়া কেন হয়।।*
*ময়ূর পাখীর, পাখায় বিনোদ,*
     *শিরে নহে চূড়া বাঁধা।*
*কদম্ব তলায়,       ত্রিভঙ্গ হইয়া,*
     *পায়ে পায়ে নহে ছাঁদা।।*
*বয়েন  হাস,      মধুর ভাষ,*
     *বোলত সব সখী।*
*কঙ্কণের  তালে,   গোবিন্দায় বলে,*
    *একবার নাচত গিয়া দেখি।।*
*🌺শ্রীরাসমন্ডলীতে নৃত‍্য করতে করতে শ্রীমতী রাধারাণী বললেন, ওহে নটবর,আমি কঙ্কণ বাজিয়ে তাল দিচ্ছি,তুমি এই কঙ্কণের তালে নাচ দেখি।শোন রাখালরাজা,এ তো বনে বনে বাঁশী বাজানো নয়,এ হল গুণীর সমাজ।খুব সাবধানে নৃত‍্য করো, মাঝে মাঝে তোমার তাল ভঙ্গ হয়ে যায় কেন?* *তালে তালে নাচ।* *তোমার এ নাচ রমণী ভুলান নয়,সাবধানে নৃত‍্য করো।*
*শ্রীমতীর এইকথা শুনে শ্রীকৃষ্ণ বলতে লাগলেন,দেখ আমি ধেনুর রাখাল, আমার তাল- মান-জ্ঞান কম থাকতে পারে,আচ্ছা তোমরা তো গুণী,তুমি এই তালে তে একবার নাচ দেখি।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*🌼🌻ষষ্ঠ পদ🌼🌻*
*চাঁদ বদনী নাচত দেখি, তাত্তা থৈয়া থৈয়া তিনিখিটি তিনিখিটি ঝাঁ।*
*না হবে ভূষণের ধ্বনি না নড়িবে চীর।*
*দ্রুতগতি চরণে না বাজিবে মঞ্জীর।।*
*বিষম সঙ্কট তালে বাজাইব বাঁশী।*
*ধনু অঙ্ক মাঝে নাচ বুঝিব প্রেয়সী।।*
*হারিলে তোমার লব বেশর কাঁচলি।*
*জিনিলে তোমারে দিব মোহন মূরলী।।*
*যেমন বলেন শ‍্যাম নাগর তেমন নাচেন রাই।*
*মুরলী লুকাল শ‍্যাম চারিদিকে চাই।।*
*সবাই বলে রাইয়ের জয় নাগর হারিলে।*
*দুঃখিনী কহয়ে গোপী মন্ডলী হাসালে।।*
*🌻এবারে শ্রীকৃষ্ণ,রাধারাণীকে বলছেন,আমি যে তাল বাজাব সেই তালে তুমি নাচ।মনে রেখ, তোমার যেন ভূষণের ধ্বনি না হয়  এবং বস্ত্র নড়বে না, তোমার ঐ চরণের মঞ্জীর বাজবে না,অথচ দ্রুতগতিতে নাচতে হবে।(ধেনু অঙ্ক=অর্ধবৃত্ত চিহ্ন), শোন রাধে! তুমি যদি হেরে যাও,তাহলে তোমার নাসার বেশর ও কাঁচলি নিয়ে নিব।আর তুমি যদি জিতে যাও আমি আমার সাধের মোহন মূরলী তোমায় দিব।* *নৃত‍্য শেষে সবাই বলল,রাধার জয় হয়েছে,* *তখনি শ‍্যাম নাগর তাঁর সাধের মূরলী লুকানোর চেষ্টা করছেন।পদকর্তা শ‍্যামানন্দ,দুঃখিনী বলিয়া আত্ম পরিচয় দিয়াছেন, আর বলছেন,ওগো শ‍্যাম গোপীমন্ডলী হাসাইলে।*

  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                   ꧁ ১১৩. শ্রীশ্রীরাসলীলা 
       এই লিংকে 👇👇👇🙏👇👇👇 ক্লিক করুন 
          ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ꧂
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 *🌼এবারে রাধারাণীর সখীগণ বললেন,শ‍্যাম এইবার তুমি নৃত‍্য কর🌼*
*🌻🌻সপ্তম পদ🌻🌻*
*শ‍্যাম তোমাকে নাচতে হবে।*
*ঝেন্দা ঝেনা খেটা থোউররলাগ ঝিনী ঝাঁ।*
*না নড়িবে গন্ডমুন্ড নূপুরের কড়াই*।
*না নড়িবে বনমালা বুঝিব বড়াই*।।
*না নড়িবে ক্ষুদ্র ঘন্টি শ্রবণের কুন্ডল।*
*না নড়িবে নাসার মতি নয়নের পল।।*
*ললিতা বাজায় বীণা বিশাখা মৃদঙ্গ।*
*সুচিত্রা বায় সপ্তস্বরা রাই দেখে রঙ্গ।।*
*তুঙ্গবিদ‍্যা কপিনাস তাম্বুরা রঙ্গদেবী।*
*ইন্দুরেখা পিনাক বাজায় মন্দিরা সুদেবী।।*
*উদভট্ট তালেতে যদি হার বনমালী।*
*চূড়া বাঁশী কেড়ে লব দিন করতালি।।*
*যদি জিন রাইকে দিব আমরা হব দাসী।*
*নইলে কারাগারে রাখব দুঃখিনী শুনে হাসি।।*
*🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*🌻এখানেই রাসলীলা রইল,ভুল ভ্রান্তি মার্জনীয়🌻*
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧      
👇👇👇এই লিখনী 📚 PDF 📚 ক্লিক করুন 👇👇👇
     
 ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
নিবাস- বাঁশবাড়ী, কীর্তন মন্দিরের পাশে, পোঃ- বাঁশবাড়ী, থানা- ইংরেজ বাজার, জেলা- মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, পিন কোড- ৭৩২১০১।
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
আমায় দেওয়া ওনার এই অমূল্য লিখনী সেবা, তা সকলের মধ্যে প্রকাশ করলাম। ওনার এই অমূল্য দান সমগ্র বৈষ্ণব সমাজ অনন্তকাল মনে রাখিবে।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧


শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html