🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

 🔙 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 চতুর্থ ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/10/jagannath4.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 ৪১. ত্রিবিক্রম বেশ 🏹 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
ত্রিবিক্রম বেশ:-
জগন্নাথ সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়, জগন্নাথ ত্রিলোকস্বামী। তিনি সাক্ষাৎ নারায়ণের ত্রিবিক্রম মূর্তি। স্বর্গলোক, মর্ত্যলোক ও পাতাললোকের পালনকর্তা স্বয়ং জগন্নাথ। প্রতিটি জীব ও জড় তাঁর আপন। তিনিই চেতন

 রূপে জীব, অচেতন রূপে জড়। জগৎ তাঁর চৈতন্যে চেতনা অর্জন করে। এই ধারণা থেকেই এসেছে জগন্নাথের ত্রিবিক্রম বেশ। জগন্নাথের ত্রিবিক্রম বেশ অনুষ্ঠিত হয় কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে। এই তিথিতে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের শিরে সোনার মুকুট পরানো হয়। তাঁদের কানে সোনার কুণ্ডল, মাথায় সোনার চন্দ্রসূর্য, গলায় সোনার কদম্ব অলংকারে সজ্জিত করা হয়। জগন্নাথ ও বলভদ্র সোনার তিলক ধারণ করেন। জগন্নাথ ও বলভদ্র ত্রিবিক্রম বেশ শৃঙ্গারের সময় সোনার হস্ত-পদ ব্যবহার করেন। বলভদ্র ও জগন্নাথ দুই হাতে যথাক্রমে মুষল-হল ও শঙ্খ-চক্র ধারণ করেন। কথিত জগন্নাথের বিশিষ্ট ভক্ত রামজয়ন্তী দাস জগন্নাথের ত্রিবিক্রম বেশ প্রবর্তন করেছিলেন। জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের মাথার মুকুটের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন অলংকারে শোলা, বেত ও কচি বাঁশের সাহায্যে নক্‌শা সাজানো হয়। এছাড়াও পাটের কাপড় ও ফুলের সজ্জায় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম ত্রিবিক্রম বেশে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেন। জগন্নাথের ত্রিবিক্রম বেশ বীর ভাবের উদ্রেক করে। তাঁর এই বেশ ভক্তদের অহংকার নাশ করে। সাধারণ মানুষ বুঝতে শেখে, অনন্ত জ্যোতিঃসমুদ্রে বিরাজমান বিরাট পরমপুরুষের তুলনায় সে বড়ই নগন্য। আর সেই বিরাটের সামনে অহংকার করার মতো কিছুই নেই।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🆕 ৪২. লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশ  🏹 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশ:-
জগন্নাথদেব সাক্ষাৎ নৃসিংহ। সত্যযুগে বিষ্ণুর চতুর্থ ও শেষ অবতার নৃসিংহদেব। প্রহ্লাদের আহ্লাদের জন্য ও হিরণ্যকশপুর মুক্তির জন্য নারায়ণ নৃসিংহ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন জগন্নাথের বিগ্রহ ও মন্দির নির্মাণের আগে নৃসিংহদেবের দর্শন পেয়েছিলেন। স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে নৃসিংহমন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন নৃসিংহ দেবতার কৃপায় সহস্র অশ্বমেধ যজ্ঞের পর মহাসমুদ্রে ভেসে আসা শঙ্খ-চক্র চিহ্নিত নিমদারু পেয়েছিলেন। এর পরেই সেই নিমদারু দিয়ে তিনি নিরাকার বিষ্ণুর সাকার বিগ্রহ তৈরি করান। নৃসিংহ উগ্ৰরূপ শুধু নন, তিনি ভক্তবৎসল। কায়মনোচিত্তবাক্যে যে ভক্ত তাঁর শরণাগত হন, নৃসিংহদেব সেই ভক্তের সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। ভক্তের ভালোবাসা ছাড়া তিনি আর কিছু চান না। নৃসিংহদেবের কৃপায় ভক্তের জগন্নাথলাভ হয়। অর্থাৎ মোক্ষলাভ হয়। জগন্নাথ সংস্কৃতিতে জগন্নাথকে সাক্ষাৎ নৃসিংহরূপে ভজনার রীতিও রয়েছে। ওড়িশায় জগন্নাথ-নৃসিংহ মিলিত বিগ্রহও রয়েছে। জগন্নাথকে বলা হয় পুরুষসিংহ। মনরূপ মত্ত হস্তিকে পুরুষসিংহ জগন্নাথ সংযত করতে সাহায্য করেন।

কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে জগন্নাথ লক্ষ্মী-নৃসিংহ রূপে শৃঙ্গার করেন। জগন্নাথের লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশটি ডালিকিয়া বেশ নামেও পরিচিত। লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশ অলঙ্করণ খুবই ইঙ্গিত দেয় যে, জগন্নাথের সমৃদ্ধশালী, ঐতিহ্যবাহী ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকে জগন্নাথ মন্দিরে প্রাচীন সময় থেকেই যথাযথ স্বীকৃতি ও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশ শৃঙ্গারে জগন্নাথ ও বলভদ্রের মাথায় যে চূড়া পরানো হয় তার গড়ন দেখতে অনেকাংশে শিল্পশৈলীগত সিংহের কেশরের মতো। এই বেশে জগন্নাথ ও বলভদ্রকে চূড়াফণী ও অজস্র স্বর্ণালংকার পরানো হয়। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মাথায় সোনার চন্দ্র-সূর্য, কানে কুণ্ডল, তাদাদি পরানো হয়। জগন্নাথ ও বলভদ্র এই দিনে সোনার হস্ত-পদ ধারণ করেন। জগন্নাথের ডান হাতে চক্র ও বাম হাতে শঙ্খ থাকে। বলভদ্রের ডান হাতে মুষল ও বাম হাতে হল দেখা যায়। ফুলের মুকুট, পদ্ম সহ বিভিন্ন ফুলের মালা, তুলসীর মালা, সোনার কদম্ব ও কমলে শ্রীবিগ্রহ সেজে ওঠে। কথিত জগন্নাথের লক্ষ্মী-নৃসিংহ বেশ দর্শন করলে ভক্তদের সমস্ত পার্থিব ভয় বিনষ্ট হয়ে যায়।
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
৪৩. শ্রাদ্ধ বেশ  🏹 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html
══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
শ্রাদ্ধ বেশ:-
জগন্নাথ সমগ্র বিশ্বের পিতা। বিশ্বের প্রতিটি মানুষের ক্রন্দনধ্বনি তাঁকে কাঁদায়, প্রতিটি মানুষের হাসিমুখ তাঁকে আরও আনন্দময় করে তোলে। তিনি তাঁর সমস্ত সন্তানের তদ্ভাবরঞ্জিত হতে ভালোবাসেন। তিনি আদর্শ পিতার মতো শাসন করেন, আবার স্নেহে ভরিয়ে দেন। তিনি যেমন আদর্শ পিতা, তেমনই তিনি আদর্শ পুত্রও। সৃষ্টির কল্যাণে তিনি মানবশরীর ধারণ করেছিলেন ত্রেতা ও দ্বাপর যুগে। তিনি রামচন্দ্র, তিনিই কৃষ্ণচন্দ্র। জগন্নাথই পুত্ররূপে পিতার মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন অযোধ্যারাজ দশরথকে, ব্রজরাজ নন্দকে ও যদুপতি বসুদেবকে। পিতৃঋণ জনমে শেষ করা যায় না। জগন্নাথ দশরথ, নন্দ ও বসুদেবের কাছে চিরঋণী রয়েছেন। জগন্নাথ এখনও প্রতি বছর নির্দিষ্ট তিথিতে পিতৃঋণ শোধ করে চলেছেন। তিনজন পিতার জন্য তিনদিনে পিতৃঋণ শোধের সময় জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা শ্রাদ্ধ বেশ পরিধান করেন।

জগন্নাথ ত্রেতা যুগে অযোধ্যার সূর্যবংশীয় মহারাজ দশরথের প্রথম পুত্র সন্তান রামচন্দ্র রূপে মাতা কৌশল্যার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দশরথ রামচন্দ্রকে স্নেহে ভরিয়ে তুলেছিলেন। মহারাজ দশরথ রামচন্দ্রকেই অযোধ্যার যোগ্যতম উত্তরপুরুষ নির্বাচন করেছিলেন। রামচন্দ্রও ছিলেন পিতার যথার্থ অনুগামী। পিতার আজ্ঞা তাঁর কাছে ছিল অলঙ্ঘনীয়, বেদবাক্যের সমান। পিতৃসত্য পালনের জন্য রামচন্দ্র রূপে রাজকীয় সমস্ত সুখ, সমৃদ্ধি, বৈভব, বিলাসবহুল জীবন বর্জন করে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো বনবাসী জীবন বেছে নিয়েছিলেন। তাঁর সহযাত্রী হয়েছিলেন অনন্তাবতার বলরামের পূর্বরূপ রামানুজ লক্ষ্মণ ও জগন্নাথের শক্তি সীতা দেবী। জগন্নাথ তাঁর পূর্বপিতার স্মরণে প্রথমদিন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জগন্নাথ দ্বাপর যুগে মথুরার রাজা কংসের কারাগারে দেবকী ও বসুদেবের অষ্টম পুত্র কৃষ্ণ রূপে জন্মগ্রহণ করেন। দেবকী দেবীর সপ্তম গর্ভের সন্তান গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়। কথিত দৈব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেবকীর সেই সন্তান বিষ্ণুর নির্দেশে দেবী যোগমায়ার মাধ্যমে উপ্ত হয়েছিল বসুদেবের অপর স্ত্রী দেবী রোহিণীর গর্ভে। সেই পুত্রই বলভদ্র। এছাড়া দেবী যোগমায়াও জন্মগ্রহণ করেন নন্দরাজের গৃহে। কৃষ্ণের জন্মের আগে বাসুদেব ও নন্দ শলা পরামর্শ করেছিলেন, বসুদেবের অষ্টম পুত্র হবেন কংসের হত্যাকারী, তাই যে কোনো প্রকারে এই পুত্রকে রক্ষা করতে হবে। নন্দরাজ বসুদেবকে আশ্বস্ত করেছিলেন তাঁর ঘরে যে সন্তানই জন্মাবে তার সঙ্গে বসুদেবের সন্তান বদলে নেবেন তিনি। দৈবনির্দিষ্ট সময়ে দেবকীর কোল আলো করে কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। এরপরেই নবমী তিথিতে দেবী যোগমায়াও মাতা যশোমতীর কোল আলো করে কন্যারূপে আবির্ভূত হন। সত্যবদ্ধ নন্দরাজ নিজের সদ্যজাত কন্যাকে স্ত্রীর অজ্ঞাতেই বসুদেবের হাতে তুলে দেন এবং বসুদেবের অষ্টম পুত্রকে রক্ষার দায় গ্রহণ করেন। এরপর থেকে কৃষ্ণ ও বলরামকে নন্দরাজ নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখেছিলেন। কৃষ্ণ ও বলরাম বড় হয়ে তাঁদের প্রকৃত পরিচয় জানতে পারেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণ ও বলরাম নন্দরাজ-যশোমতী ও বসুদেব-দেবকী অর্থাৎ তাঁদের পালক পিতা-মাতা ও জন্মদাতা পিতা-মাতার প্রতি সমস্ত কর্তব্য পালন করেছিলেন। জগন্নাথ তাঁর পূর্বপিতাদ্বয়ের জন্য যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। বলরামও জগন্নাথকে অনুসরণ করে একইভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁদের পিতৃপুরুষের প্রতি।

মার্গশীর্ষ (অগ্রহায়ণ) মাসে শ্রীমন্দিরে দেবদীপাবলী পালিত হয়। অজস্র আলোময় প্রদীপে শ্রীমন্দিরে চারধার সেজে ওঠে। মার্গশীষের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী, অমাবস্যা ও শুক্লপক্ষের প্রতিপদ এই তিনদিনে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা শ্রাদ্ধ বেশ পরেন। সাদা রঙের আঠারো হাত লম্বা চার হাত চওড়া কাপড় পরেন জগন্নাথ। পিতৃপুরুষের প্রতি সন্তানের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশই শ্রাদ্ধ। শ্রাদ্ধ বাহ্যিক উপকরণের চেয়ে অন্তরের উপকরণে সমৃদ্ধ হয়। শ্রাদ্ধে বৈভবের কোনো গুরুত্ব নেই। তাই শ্রাদ্ধ বেশে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের সজ্জায় সেভাবে কোনো অতিরিক্ত জৌলুস থাকে না। অলংকারের বাহুল্যও দেখা যায় না। জগন্নাথ ও বলভদ্র ধুতি ও চাদরে সাজেন। সুভদ্রা দেবী সাজেন সাজা শাড়িতে। রত্নসিংহাসনের দেবতাদের সাদা কাপড়ের পারের অংশের জন্য কয়েকটি রঙ নির্ধারিত রয়েছে, তার মধ্যে কালো, নীল, সবুজ, লাল উল্লেখযোগ্য। শ্রাদ্ধ বেশ শৃঙ্গারে জগন্নাথ ও বলভদ্রের মাথায় কোনো মুকুট থাকে না। তাঁদের মাথা ও কান সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকে। বড় ওড়িআ মঠ থেকে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের জন্য যাবতীয় সামগ্রী পাঠানো হয়। এটি এখানের পরম্পরা। শ্রাদ্ধ বেশে দেবতারা শুধুমাত্র ফুলের মালা প্রভৃতির শৃঙ্গার করেন।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৪. সেনাপটা বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
সেনাপটা বেশ:-
জগন্নাথ ও বলদেব সেনাপটা (সোনপটা বা সেনপটাও বলে অনেকে) বেশ বহুল আলোচিত নয়। সেনাপটা প্রকৃতপক্ষে পৃথক দারু নির্মিত উপকরণ। জগন্নাথ ও বলভদ্রের মাথায় অনেকটা ঝুঁটি বা শিখার মতো দেখতে। সেনাপটা অনেকটা অর্ধবৃত্তকারে বিগ্রহের মাথা ও কোমড়ে যুক্ত থাকে। দেববিগ্রহের অঙ্গে সারাবছর থাকে না। সেনাপটার কিছুটা অংশ দেখা যায় জগন্নাথের স্নানযাত্রা ও রথযাত্রার সময়ে। তবে উভয় সময়েই সেনাপটা নরম সুতির বা পাটের কাপড়ে ঢাকা থাকে। দীর্ঘদিন শ্রীবিগ্রহের অঙ্গে সেনাপটা যুক্ত থাকায় এর গুরুত্ব অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার আগেরদিন জগন্নাথের শ্রীঅঙ্গে সেনাপটা লাগানো হয়। শ্রীমন্দিরের অভ্যন্তরে গুপ্ত রীতিতে সেদিনের যাবতীয় আচার-আচরণ সামাল দেন সেবকগণ। সাধারণ ভক্তেরা এই দৃশ্য দেখতে পান না। এর ছবি আজ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। বলরাম ও জগন্নাথের সেনাপটা বেশে বেশি বৈচিত্র্য নেই।

জগন্নাথের সেনাপটার পিছনে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। জগন্নাথের বিখ্যাত ভক্ত মাধব দাসের সঙ্গে জগন্নাথ ও বলভদ্র সখ্যভাবে মেলামেশা করতেন। চপল বন্ধুসুলভ অত্যাচারে মাধব দাসকে মাঝে মাঝে বিরক্তও করতেন জগন্নাথ। মাধব দাস হয়ে উঠেছিলেন জগন্নাথের নিত্যলীলা সহচর। মাধব দাসের সঙ্গে জগন্নাথ ও বলভদ্র দুভাই বিচিত্র বিচিত্র লীলায় মাততেন। এমনই একদিন তাঁরা দুভাই মিলে মাধব দাসকে স্থানীয় একটি বাগানে নিয়ে আসেন। তখন বর্ষাকাল বাগানের কাঁঠাল গাছে কাঁঠাল পেঁকে বাগান মাতিয়ে রেখেছে। হঠাৎ জগন্নাথ মাধব দাসের কাছে কাঁঠাল খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু জগন্নাথ জানান, তাঁর ও বলভদ্রের শরীর স্থূল। এই বপুতে গাছে ওঠা দুঃসাধ্য। অতএব মাধব দাসকেই গাছে উঠে কাঁঠাল নামাতে হবে। মাধব দাস আর কি করে। তিনি জানেন জগন্নাথ ও বলভদ্র যা বলেছেন তা না পাওয়া পর্যন্ত থামবেন না। মাধব দাস কাঁঠাল গাছে উঠে কাঁঠাল নামাতে রাজি হলেন। জগন্নাথ ও বলভদ্র একের পর এক গাছে মাধব দাসকে উঠতে বলেন, মাধব দাস গাছে ওঠার পর তাঁরা বলেন এই গাছ নয় অন্য গাছের কাঁঠাল খাবেন। এভাবে মাধব দাস একটি একটি করে অনেকগুলি গাছে উঠলেন আর নামলেন। মাধব দাস তাঁর হৃদয়বন্ধু জগন্নাথের এমন আচরণে অস্থির হয়ে উঠলেও জগন্নাথের অনুরোধে শেষবারের মতো তিনি আর একটি কাঁঠাল গাছে ওঠেন। কিন্তু কাঁঠাল নামানোর সময় জগন্নাথ ও বলভদ্র কাঁঠাল ধরতে রাজি হলেও কাঁঠাল ধরার আগে অদৃশ্য হয়ে যান। গাছের থেকে বড় মাপের কাঁঠাল টি মাটিতে পড়তেই ধুপ করে শব্দ হয়। শব্দ পেয়ে বাগানের রক্ষক ছুটে এসে দেখেন মাধব দাস কাঁঠাল পারছেন। সেই সময় মাধব দাসকে পুরীবাসী সকলেই চিনতেন। সবাই জানতেন মাধব দাস জগন্নাথের সঙ্গে বিচরণ করেন। স্বাভাবিকভাবেই মাধব দাসকে দেখে বাগানের রক্ষক চুপ করে যান। উল্টে অনুরোধ করেন, এরপর কাঁঠাল লাগলে মাধব দাস যেন তাকে নির্দেশ দেন। মাধব দাস বলেন, তিনি নিজের জন্য কাঁঠাল নামাতে আসেননি, জগন্নাথ ও বলভদ্র তাঁকে এমন কাজ করিয়েছেন। বাগান রক্ষক আর কি বলবেন! এমনভাবে আর একদিন আবার মাধব দাসকে জগন্নাথ ও বলভদ্র কাঁঠাল গাছে উঠিয়েছেন। সেদিনও এই গাছ সেই গাছ করে তাঁকে দুই ভাই মিলে অস্থির করে তুলেছেন। গাছে উঠতে নামতে অনেক গাছেই পাতা ইত্যাদি খসে গাছ বেয়ে কষ বা আঠা নেমেছে। কিন্তু জগন্নাথের লীলায় বাগানের রক্ষক কিছুই টের পাননি। বাগানের রক্ষক দুপুরবেলা একটি গাছে হেলান দিয়ে বসে ঘুমোচ্ছিলেন। আগের দিনের মতো হঠাৎ কাঁঠাল পড়ার শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায় এবং দৌড়ে গিয়ে চোর ধরার সময় তিনি দেখেন তার সাজের শিখা কাঁঠাল গাছের আঠায় লেগে গাছের সঙ্গে আটকে গেছে। এই আকস্মিক ঘটনায় তার শিখায় খুব জোরে টান লাগে, তার ব্যথা হয়। রাগে গজগজ করে তার মুখ দিয়ে অভিশাপ বেরিয়ে আসে, যার কারণে এভাবে তার চুলের শিখায় আঠা লাগায় তার এত ব্যথা লাগলো, যেন সেই ব্যক্তিরও এভাবে শিখায় টান দেওয়া হয়। জগন্নাথ ও বলভদ্র সেই অভিশাপ গ্রহণ করেন।

শ্রীমন্দিরে পরবর্তী সময়ে তুলোর গদির ওপর দিয়ে জগন্নাথের চলাচলের পাহণ্ডি রীতি বন্ধ হয়ে যায় এবং চালু হয় সেনাপটা রীতি (নীতি)। এখনও জগন্নাথ যখন শ্রীমন্দির থেকে বাইরে এসে স্নানমঞ্চে বা রথে ওঠেন তখন সেবকরা জগন্নাথের মাথার সেনাপটা ধরে তাঁকে দুলে দুলে এগিয়ে নিয়ে চলেন। জগন্নাথের সেনাপটা বেশ ভক্ত-ভগবানের বৈচিত্র্যময় লীলাসমূহের জীবন্ত সাক্ষী হয়ে রয়েছে।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৫. চাচেরি বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
চাচেরি বেশ:-
ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথি থেকে চতুর্দশী তিথি পর্যন্ত মোট পাঁচদিন শ্রীমন্দিরের আরাধ্য জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা মধ্যাহ্নকালীন ভোগরাগের সমাপ্তির পরে লাল রঙের চাচেরি বেশ শৃঙ্গারে সাজেন। রূপোর পাত্রে শীতল চন্দন শ্রীবিগ্রহের অঙ্গে লেপন করা হয়। জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরাম ও সুদর্শন বিগ্রহ চাচেরি বেশভূষায় সজ্জিত করার উপকরণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কড়া লাল (অনেকাংশে বেনারসীর পাকা লাল) রঙের রেশমী ধুতি, লাল রঙের শ্রীমুখ বালা, লাল উত্তরীয়, আডাকানী ও নালিভূজা প্রভৃতি। চাচেরি বেশে জগন্নাথ সহ চতুর্ধা বিগ্রহ সজ্জিত হলে জগন্নাথের শক্তিদেবী শ্রীদেবী ও ভূদেবীকে মহাজন সেবকরা সুসজ্জিত খাটে (এক ধরনের আসনই) নিয়ে বসান। জগন্নাথের দোলপূর্ণিমার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি দেবতা দোলগোবিন্দের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। সকলেই চাচেরি বেশ পরে তৈরি থাকেন। এরপর তাঁদের দিব্য ভোগের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ভোগরাগের শেষে তাঁদের আবার রত্নসিংহাসনের বসানো হয়। এরপর শুরু হয় ফাগুলাগীর অনুষ্ঠান। এমন চলে প্রায় দোলযাত্রা পর্যন্ত‌। এছাড়াও কিছু গুহ্যাতিগুহ্য পদ্ধতিতে জগন্নাথের পূজা চলতে থাকে।

জগন্নাথের চাচেরি বেশের সময় তাঁদের প্রত্যেকের ব্যবহৃত সাজসজ্জার প্রধান রঙ লাল। লাল বসন্তের অন্যতম প্রধান রঙ। প্রকৃতি বসন্তবন্দনা করেন লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের মেলায়। জগন্নাথ সময় অনুসারে সাজেন, তাই রঙ যখন প্রকৃতিকে রাঙায় তখন জগন্নাথও রাঙা রঙে রঙিন হতে ভালোবাসেন। চাচেরি বেশে নতুন কাপড়ের সঙ্গে প্রায় ত্রিশ রকমের অলংকারে জগন্নাথ আরও দিব্যতনুধর হয়ে ওঠেন।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৬. চন্দনলাগী বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
চন্দনলাগী বেশ:-
জগন্নাথ ঋতু অনুযায়ী যে কয়েকটি বেশে শৃঙ্গার করেন তার মধ্যে প্রথম চন্দনলাগী বেশ। মৃদু সুগন্ধযুক্ত চন্দন কাঠ জলে ভিজিয়ে পাথরের পাটায় ঘষতে ঘষতে মিহি চন্দনের কাঁদ তৈরি হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি ঘরেই প্রায় অনুরূপে চন্দন তৈরি করার রীতি রয়েছে। শ্রীক্ষেত্রের শ্রীমন্দিরে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের জন্য তৈরি করা চন্দন রূপোর সুন্দর বাটিতে তুলে রাখা হয়। জলের সঙ্গে চন্দনের কাঠের মিহি মিশ্রণটি সুশীতল। চন্দন তৈরির সময় খেয়াল রাখা হয় তা যেন অতিরিক্ত পাতলা না হয়। সঠিকভাবে ঘর্ষণ না হলে চন্দন কাঠের সূক্ষ্ম দানা থেকে যায়, দেবতার জন্য তৈরি করা চন্দনের যেন দানা না থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখা হয়।

শ্রীমন্দিরে চন্দনযাত্রা দুই ধরনের। প্রথমটি শ্রীমন্দিরের বাইরে অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। জগন্নাথের প্রতিনিধি দেবতা মদনমোহন শ্রীদেবী ও ভূদেবীর সঙ্গে চন্দনযাত্রা করেন। তাঁদের সঙ্গে যান অষ্টধাতুর রাম ও কৃষ্ণ। দ্বিতীয়টির আয়োজন হয় শ্রীমন্দিরের ভেতরে। তখন জগন্নাথ স্বয়ং এই চন্দনলাগী উৎসবের কেন্দ্রীয় আকর্ষণ। এই দুই প্রকার চন্দনযাত্রা বা চন্দনলাগী অনুষ্ঠানই একুশ দিন করে অনুষ্ঠিত হয়। মোট বিয়াল্লিশ দিন জগন্নাথ এভাবে চন্দনসেবা গ্রহণ করেন। বৈশাখের পবিত্র অক্ষয় তৃতীয়া থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠের পূর্ণিমা পর্যন্ত চন্দনযাত্রা বা চন্দনলাগী অনুষ্ঠান হয়। শ্রীমন্দিরে চন্দনলাগী বেশ অনুষ্ঠিত হয় জ্যৈষ্ঠের কৃষ্ণপক্ষের নবমী থেকে জ্যৈষ্ঠের পূর্ণিমা পর্যন্ত।

চন্দনলাগী বেশ অনুষ্ঠানের সময় জগন্নাথাদি দেবতার শরীরে মিহি সুগন্ধযুক্ত চন্দনের প্রলেপ দেওয়া হয়। জগন্নাথের মাথা ও হাতে চন্দনের পুরু প্রলেপ দেওয়া হয়। এছাড়াও পেটের ওপরের অংশে চন্দনের ঘন প্রলেপ দেওয়া হয়। শোনা যায়, জগন্নাথের চন্দনবেশের সময় বিগ্রহের শীতলতা ভক্তরা অনুভব করতে পারেন। গরমের সময় দেবতাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য পরানো হয় গরমের উপযোগী কাপড়। চন্দনলাগী অনুষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়, এই সময় দেবতাগণ প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন রঙের কাপড় পরেন। জগন্নাথের ভোগেও এমন কিছু বিশেষ উপাদানের আয়োজন থাকে, যা ভক্ষণে বাস্তবিকই গরমের হাত থেকে খানিকটা নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। বিশ্বাস করা হয়, জগন্নাথ পরমপুরুষ পরমাত্মা, তাঁর আবার গরম কী, ঠাণ্ডা কী? তবু ভক্তরা নিজস্ব ভাবে তাঁদের প্রভুকে দেখেন। যখন প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের দাবদাহ চলছে তখন নিশ্চয়ই প্রভুরও গরমে কষ্ট হচ্ছে, এই একটি ভাবনা এর পিছনে কাজ করে। চন্দনলাগী অনুষ্ঠানের সময় জগন্নাথকে লাল ও সাদা রঙের পদ্মের মালায় সাজতে দেখা যায়। সাদা, হলুদ সহ বিভিন্ন স্নিগ্ধ বর্ণের ফুলে জগন্নাথ এই সময়ে সাজেন। বাস্তবিকই শ্রীমন্দিরে অভ্যন্তরে চন্দনলাগী অনুষ্ঠানের সময় প্রকৃতির তাপ কম অনুভূত হয়। জগন্নাথের চন্দনলাগী অনুষ্ঠানের প্রসাদী চন্দন তাঁর ভক্তেরা অনেকেই পেয়েছেন। জগন্নাথের স্পর্শধন্য চন্দনের মাহাত্ম্য ভক্তদের কাছে অনেক। শুনেছি চন্দনলাগী বেশের প্রসাদী চন্দন অনেকে কবচের মতো ধারণ করেন, অনেকে শুভ কাজে যাওয়ার আগে পরম শ্রদ্ধায় নিজের মাথায় প্রসাদী চন্দনের বিন্দু এঁকে নেন। অনেক মানুষই জগন্নাথের চন্দনবেশের প্রসাদী চন্দন ঘরে এনে পবিত্র স্থানে সংরক্ষণ করে প্রতিদিন জগন্নাথের আশীর্বাদ অনুভব করেন। আরও একটি তথ্য এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন রয়েছে, জগন্নাথের চন্দনলাগী অনুষ্ঠানের সময় কবি জয়দেব গোস্বামীর পদ প্রায় প্রতিদিনই শ্রীমন্দিরে গীত হয় :

চন্দনচর্চিত নীলকলেবর পীতবসন বনমালিন্৷
কেলিচলন্মণি কুণ্ডলমণ্ডিত গণ্ডযুগ স্মিতশালিন্৷৷
চন্দ্রকচারু ময়ূরশিখণ্ডক মণ্ডল বলয়িত কেশম্৷
প্রচুর পুরন্দর ধনুরনুরঞ্জিত মেদুরমুদির সুবেশম্৷৷
সঞ্চরদধর সুধা মধুর ধ্বনি মুখরিত মোহন বংশম৷
বলিত দৃগঞ্চল চঞ্চল মৌলি কপোল বিলোল বতংসম্৷৷
হারমমলতর তারমুরসি দধতং পরিরভ্য বিদূরম্৷
স্ফুটতর ফেন কদম্ব করম্বিতমিব যমুনা জল পূরম্৷৷
শ্যামল মৃদুল কলেবর মণ্ডলমধিগত গৌর দুকূলম্৷
নীল নলিনমিবপীত পরাগ পটল ভর বলয়িত মূলম্৷৷
বদনকমল পরিশীলন মিলিত মিহির সম কণ্ডল শোভম্৷
বন্ধুজীব মধুরাধর পল্লব মুল্লসিত স্মিত শোভম্৷৷
বিশদকদম্বতলে মিলিতং কলিকলুষ ভয়ং শময়ন্তম্৷
করচরণোরসি মণিগণভূষণ কিরণ বিভিন্ন তমিস্রম্৷৷
শশি কিরণোচ্ছুরিতোধর জলধর সুন্দর সকুসুম কেশম্৷
তিমিরোদিত বিধুমণ্ডল নির্মল মলয়জ তিলক নিবেশম্৷৷

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৭. ঘোড়লাগী বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
ঘোড়লাগী বেশ:-
জগন্নাথ গ্রীষ্মকালে যেমন চন্দনলাগী বেশে শৃঙ্গার করেন, তেমনই তিনি শীতকালে ওড়নষষ্ঠী তিথি থেকে ঘোড়লাগী অনুষ্ঠানেও মাতেন। সোজা ভাষায় বললে, এই ঘোড়লাগী প্রকৃতপক্ষে জগন্নাথের শীতকালীন সাজসজ্জা। প্রকৃতিতে শীত এলে ভক্তরা বিশ্বাস করেন জগন্নাথেরও শৈত্যপ্রবাহে শীত অনুভূত হচ্ছে। সেই বিশ্বাস থেকেই জগন্নাথের ঘোড়লাগী বেশের আয়োজন করা হয়। জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে শীত ঋতুর শৈত্য থেকে রক্ষা করতে ঘোড়লাগী বেশে তাঁদের সাজানো হয়। ঘোড়লাগী বেশ শৃঙ্গারের সময় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের শ্রীবিগ্রহের মুখ বাদে প্রায় সর্বাঙ্গ মোটা শীতবস্ত্র দিয়ে সম্পূর্ণ আবৃত করে রাখা হয়।

মার্গশীর্ষ (অগ্রহায়ণ) মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথি থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ পৌষ মাস ও মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি (সরস্বতী পূজা) পর্যন্ত জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের ঘোড়লাগী বেশে সুসজ্জিত থাকেন। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রীপঞ্চমী তিথিতেই জগন্নাথের রথযাত্রার প্রাথমিক উপকরণ অর্থাৎ কাঠগুলি শ্রীমন্দির চত্বরে এসে পৌঁছায়। শ্রীপঞ্চমী শীতশেষে কর্মতৎপরতার প্রারম্ভিক দিন। ঘোড়লাগী বেশ শৃঙ্গারের জন্য নির্দিষ্ট বারের জন্য নির্দিষ্ট রঙের বিধিবিধান রয়েছে। ঘোড়লাগী শৃঙ্গারের সময় রবিবারে টুকটুকে লাল রঙের শীতবস্ত্র, সোমবারে সাদার ওপরে কালো বিন্দু দেওয়া শীতবস্ত্র, মঙ্গলবারে মিশ্র বহুবর্ণ যুক্ত শীতবস্ত্র, বুধবারে হাল্কা নীলচে বা অনেকটা আকাশী রঙের শীতবস্ত্র, গুরুবার বা বৃহস্পতিবারে হলুদ রঙের শীতবস্ত্র, শুক্রবারে সম্পূর্ণ সাদা রঙের শীতবস্ত্র ও শনিবারে কালচে নীল বা বেগুনী রঙের শীতবস্ত্রে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের আপাদমস্তক আবৃত করা হয়। এই শীতবস্ত্রগুলির চারিধারে উজ্জ্বল জরির কাজ করার হয়। অনেকসময় সূক্ষ্ম কারুকার্য খচিত প্রাগুক্ত রঙের শীতবস্ত্রও জগন্নাথের শৃঙ্গারে ব্যবহার করা হয়। এই কাপড়গুলি ওজনে বেশ ভারমুক্ত কিন্তু যথেষ্ট গরম হয়। এই সময় জগন্নাথের শ্রীমন্দিরের পতিতপাবন বিগ্রহ ও সিংহদ্বারে বিরাজমান ভগবতী লক্ষ্মীদেবীকেও ঘোড়লাগী বেশ শৃঙ্গার করানো হয়। ঘোড়লাগী বেশের সময় জগন্নাথ ও বলভদ্র কোনো অস্ত্র ধারণ করেন না। বিগ্রহের সঙ্গে সোনার হস্ত-পদ বা পৃথক কোনো স্বর্ণ মুকুট পরানো হয় না। ঘোড়লাগী শৃঙ্গারের সময় অজস্র ফুলের মালায় জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা সজ্জিত হন। বলরাম ও জগন্নাথের গলায় তুলসীর মালাও পরানো হয়। এই সময়ে গাঁদা ফুল সুলভ হয়। গাঁদা ফুলের দীর্ঘ মালায় জগন্নাথাদি দেবতাদের সাজানো হয়। শীতকালীন বিভিন্ন সাদা ও রঙিন ফুলে জগন্নাথ ও বলভদ্রের হাত থেকে বুক পর্যন্ত মালার সম্ভার দেখা যায়। টোপরের আকৃতিতে বিভিন্ন ফুল ও তুলসীর মালা দিয়ে তৈরি মুকুটে সাজানো হয় রত্নসিংহাসনে বিরাজমান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে। ফুলের নোলকের ব্যবহারও দেখা যায়। সোনার অলংকার ঘোড়লাগী বেশে বাইরে থেকে দেখা যায় না। তবে এই দীর্ঘমেয়াদী বেশের মধ্যে মাত্র কয়েকদিন জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মাথায় সোনার চন্দ্র-সূর্য সাজানো হয়। ঘোড়লাগী বেশ শৃঙ্গারের শ্রীমন্দিরের অন্যতম দীর্ঘমেয়াদী অনুষ্ঠান। ঘোড়লাগী বেশ শৃঙ্গারের সময় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের শরীরের বেশিরভাগ অংশই শীতবস্ত্রের আড়ালে থাকায় এই বেশ ভক্তদের কাছে খুব বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৮. জামালাগী বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
জামালাগী বেশ:-
ভারতে মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ে (ইংরেজি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি) শীতের বাতাবরণ ম্লান হয়ে আসে। এরপর থেকেই ঋতু পরিবর্তন শুরু হয়। মাঘ মাসের শ্রীপঞ্চমীতে বসন্ত ঋতুর আগমনের সূচনা হয়, এমন একটি ধারণা ভারতবর্ষে অনেককাল আগে থেকেই প্রচলিত রয়েছে। শ্রীপঞ্চমীর (সরস্বতী পূজা) থেকে দোলপূর্ণিমা (ফাল্গুনী পূর্ণিমা) পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন প্রাচীন মন্দিরে বসন্তের বন্দনা শুরু হয়। মধ্যবর্তী তিথিগুলিতে বিভিন্ন দেবস্থানে ভিন্ন ভিন্ন তিথিতে ফাগ উৎসব বা ফাগু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রাচীন কৃষ্ণ মন্দিরগুলি ছাড়াও অজস্র শিব মন্দির, শক্তি মন্দিরে ফাগ উৎসবের রীতি রয়েছে। প্রাচীন ভারতের ঋষিদের কাছে শীত কাম্য ঋতু ছিল না। শীত জড়তা আনে, আর জড়তা মৃত্যুর সমতুল। শীতে প্রকৃতির প্রাচূর্য কমে আসে। শীতকে প্রাচ্যে ও পাশ্চাত্যের বৃদ্ধের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ফাল্গুনী নাটকেও এই ধারণা রয়েছে। তাই ভারতীয় সভ্যতায় শীতের বিদায় লগ্ন থেকেই বসন্ত বরণের এতো আয়োজন। বসন্ত প্রকৃতিতে নতুন প্রাণের দূত, নতুন প্রাণের সঞ্চারক ঋতু।

বৈচিত্র্যময় জগন্নাথও শীতের বিদায় মুহূর্তে প্রকৃতিমাতার বুকে আসন্ন বসন্তের জয়গানের সময় নববেশে সজ্জিত হন। জগন্নাথের এই সময়ের বেশ শৃঙ্গার মূলত জামালাগী বেশ নামে পরিচিতি পেয়েছে। মাঘের মাঝামাঝি সময় থেকে সমগ্র পূর্ব-ভারতে শীত বিদায় নিতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই পুরীর শ্রীমন্দিরেও শীতের প্রোকোপ কমে আসে। শীত কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে জগন্নাথকে প্রাকৃতিক তাপমাত্রার ও ঋতু পরিবর্তনের সময়ের সঠিক উপযোগী পোশাক পরানো শুরু হয়। এমনিতেও লোকসংস্কার রয়েছে ঋতু পরিবর্তনের সময় শরীরের প্রতি যত্নবান না হলে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ফলে এই সময়ে আরও সাবধানে থাকতে হয়। শীত বিদায় নেওয়ার সময় বেশ কিছুদিন ধরেই তাপমাত্রা ওঠানামা করে। জগন্নাথকে আত্মভাবে সেবার সুযোগ রয়েছে বলেই জগন্নাথের ক্ষেত্রেও এই সমস্ত সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। জগন্নাথের জামালাগী বেশ শৃঙ্গারে যে রকমের পোশাক ব্যবহার করা হয় তা জগন্নাথের শীতকালীন পোশাকের চেয়ে বেশ অনেকটাই পাতলা আবার গ্রীষ্মকালীন পোশাকের চেয়ে অনেকটা মোটা। অর্থাৎ মাঝারি নরম কাপড়কে জগন্নাথের জামালাগী বেশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করা হয়। বসন্তের তারুণ্য পুরীতে ছেড়ে যায় জগন্নাথের জামালাগী বেশের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে। ফাল্গুনের পূর্ণিমা পর্যন্ত জামালাগী বিধির সঙ্গে জগন্নাথের পূজা, সেবা ও ভোগ সংক্রান্ত কয়েকটি গুহ্য পরিবর্তনও নাকি ঘটে।

জামালাগী বেশ শৃঙ্গারের সময় রবিবারে লাল, সোমবারে সাদার ওপরে কালো বিন্দু, মঙ্গলবারে মিশ্র বহুবর্ণ, বুধবারে হাল্কা নীল বা আকাশী, বৃহস্পতিবারে হলুদ, শুক্রবারে সাদা ও শনিবারে কালচে নীল বা বেগুনী রঙের নরম পোশাকে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্র সেজে ওঠেন। জামালাগী বেশেও জগন্নাথ ও বলভদ্র কোনো অস্ত্র ধারণ করেন না। বসন্ত ঋতুর বিভিন্ন ফুলে জগন্নাথ সেজে উঠতে থাকেন। গরম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পদ্ম ফুলও সুলভ হয়। পদ্মের মালায় সাজতে শুরু করেন জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা ও সুদর্শন। মাঘের শুক্লপক্ষের শ্রীপঞ্চমী থেকে ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত রত্নসিংহাসনের দেবতাগণ প্রতিদিন জামালাগী বেশ শৃঙ্গারে ভক্তমন মোহিত করেন। জগন্নাথের জামালাগী বেশকে অনেকেই ঘোড়লাগী বেশের অঙ্গীভূত মনে করেন। কারণ উভয়ের রীতিপদ্ধতির মধ্যে অনেক মিল রয়েছে।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৪৯. মকর চৌরাশী বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
মকর চৌরাশী বেশ:-
পৌষ মাসের শেষ দিন সারা ভারতময় মকর সংক্রান্তি পালিত হয়। সাধারণত ইংরেজি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখেই মকর সংক্রান্তি পড়ে। অধিকাংশ হিন্দু উৎসবই সৌর বর্ষপঞ্জির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়। মকর সংক্রান্তির একটি আদিম মাহাত্ম্য রয়েছে। এই সময়ে ঋতু পরিবর্তনের লগ্নে প্রাকৃতিক অনেকগুলি পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। পরিবেশ ও কৃষিভূমিকে কেন্দ্র করে মকর সংক্রান্তিতে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, গুজরাট প্রভৃতি রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই সময় থেকেই ভারতে ধীরে ধীরে দিন বাড়তে থাকে ও রাত কমে আসে। শীতের জড়তাও ধীরে ধীরে মুছে যেতে শুরু করে। ভারতে আবার উত্তাপ বাড়তে থাকে। মকর সংক্রান্তিতে পুরীর শ্রীমন্দিরে আয়োজিত হয় জগন্নাথের উত্তরায়ণ যাত্রা। পৌরাণিক কাহিনীতে রয়েছে, সাক্ষাৎ জগৎ সংসারের সঞ্চালক ভগবান সূর্যদেব মকর সংক্রান্তিতে তাঁর পুত্র শনিদেবের ঘরে আসেন। শনিদেব মকর রাশির অধিপতি দেবতা।

মকর সংক্রান্তিতে পুরীর শ্রীমন্দিরে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্র মকরচৌরাশী বেশ শৃঙ্গার করেন। তাঁরা এই বেশে মাথায় বিশেষ ধরনের মকরচূড়া ধারণ করেন। এই সময় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য নতুন মিঠে চালের বিভিন্ন পিঠা, পরমান্ন প্রভৃতি নিবেদন করা হয়। বিভিন্ন স্বাদু ফল, শুকনো ফল (ড্রাই ফ্রুট), ছানা, খোয়াক্ষীর, গুড়, দুধ, নারকেল কোরানো প্রভৃতি পদে জগন্নাথ সেবা গ্রহণ করেন।

মকরচৌরাশী বেশের সময় জগন্নাথ সাধারণ বস্ত্রই পরেন। এই সময় শ্রীমন্দিরে একই সঙ্গে ঘোড়লাগী শৃঙ্গারও চলে। তাই মকরচৌরাশী বেশে তেমন বৈচিত্র্য দেখা যায় না। মকরচৌরাশীতে বিভিন্ন ফুলের সাজে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা, সুদর্শন, শ্রীদেবী, ভূদেবী, নীলমাধবের সাজানো হয়। মালা দিয়ে গোল করে এক ধরনের বিশেষ মুকুটের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও জগন্নাথাদি দেবতাদের মাথায়, নাসায়, বাহুমূলে, বুকে কয়েকটি ফুলের তৈরি অলংকার দেখা যায়। মকরচৌরাশী বেশেও জগন্নাথ ও বলভদ্র বিশেষ কোনো অস্ত্র ধারণ করেন না।

✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

৫০. পুষ্যাভিষেক বেশ 🌟 শ্রীশ্রীজগন্নাথ লীলামৃত 📝 পঞ্চম ভাগ 🙇 শ্রী মৃন্ময় নন্দী কর্ত্তৃক সকল ভক্ত চরণে অসংখ্যকোটি প্রণাম 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/11/jagannath5.html

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
পুষ্যাভিষেক বেশ:-
স্কন্দপুরাণের বিষ্ণুখণ্ডে পুষ্যাভিষেকের নির্দেশ রয়েছে। বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী পৌষ মাসের পুষ্যা নক্ষত্র বিহিত পূর্ণিমা তিথিতে (অনেকসময় পৌষের তিথি মাঘ মাসে প্রসারিত হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে মাঘ মাসের অনুষ্ঠিত হয়) জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের বিশেষ ভাবে রঙিন ফুল ও সুগন্ধি দ্রব্যে বিশেষ অভিষেক করা হয়। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন অনেক দেবমন্দিরে পুষ্যাভিষেক পৌষের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতেও অনুষ্ঠিত হয়। ‘পুষ্যা’ শব্দের সঙ্গে পুষ্টির যোগাযোগ রয়েছে। বৈষ্ণব ভক্তমণ্ডলী বিশ্বাস করেন নববিধা ভক্তির সঠিক পুষ্টিসাধনের জন্য পৌষের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে ভগবানের অভিষেক করলে তিনি তৃপ্ত হন। আগে শীতকালের রঙিন ফুলের প্রাচূর্য দেখা দিত পৌষের শেষ দিকে। এখন বিভিন্ন রকমের জৈব ও রাসায়নিক সারের ব্যবহারের ফলে শীতকালীন ফুলও গ্রীষ্মকালে তৈরি করা হয়। প্রাচীন সময়ে কৃষির এই সাফল্য ছিল না। শীতকালে ভারতে ফুলের সংকট দেখা দিত। বিশেষত পদ্ম, শালুক, টগর, শিউলি, নাগলিঙ্গম্, নাগকেশর, জবার মতো সহজলভ্য পূর্ব ভারতীয় ফুলগুলি শীতকালে প্রাকৃতিক উপায়ে এখনও কম ফোটে। প্রাচীন সময়ে এই কারণেই সম্ভবত মাঘ মাসে অনুষ্ঠিত জগন্নাথের পদ্মবেশে শোলা ও রঙিন কাগজের তৈরি পদ্মের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। বঙ্গেও রাসপূর্ণিমার সময় কৃষ্ণের আসন সাজানোর জন্য শোলার তৈরি কদমের ব্যবহার করা হয়। এছাড়া উৎকল ও বঙ্গের অধিকাংশ শুভ অনুষ্ঠানে সুতো বা দড়ি দিয়ে বাঁধা পরিণত আমপাতার তৈরি বনমালার দুটি আমপাতার মাঝখানে শোলার তৈরি কদম ঝোলানোর রেওয়াজ রয়েছে। কদম মূলত বর্ষার ফুল। তাই এর প্রাকৃতিক অভাবের সময় শোলার তৈরি কদমের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
ওড়িশায় লোকবিশ্বাস রয়েছে, জগন্নাথের শ্রীমন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ও সুদর্শন আদিবিগ্রহ পুষ্যাভিষেকের দিনই প্রথম স্থাপিত হয়েছিল। বলাবাহুল্য এর প্রামাণিক নথিপ্রমাণের অভাব রয়েছে। এর বিশেষ স্মরণোৎসবকে স্মরণীয় করে রাখতে শ্রীমন্দিরে জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রার পুষ্যাভিষেক আয়োজন করা হয়। সকালে দেবতাদের অভিষেকের পর জগন্নাথাদি দেবতাদের রাজকীয় আভিজাত্যময় পোষাক পরানো হয়। এই সময় স্বর্ণ ভাণ্ডার থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন ভারী ভারী সোনার গহনা দিয়ে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের শৃঙ্গার হয়। কুণ্ডল, কবচ, তাগা, নোলক, কোমরবন্ধ, মুকুট প্রভৃতিতে সেজে ওঠেন তাঁরা। পুষ্যাভিষেকের বস্ত্রের নির্দিষ্ট রঙ নেই, বারভিত্তিক রঙের যে প্রকরণ রয়েছে সেই অনুযায়ী তিনি বস্ত্রের রঙ বেছে নেষ। এই সময় বিভিন্ন সুগন্ধি দ্রব্য জগন্নাথকে নিবেদন করা হয়। বিভিন্ন রঙিন ফুলের মালায় বিগ্রহ সাজানো হয়। ষোড়শ ব্যঞ্জনে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার ভোগ হয়, তারপর আরতি করা হয়। অতিযত্নে বিগ্রহের মাথায় ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের তৈরি রাজছত্র ধরা হয়। এই সময় বিগ্রহের নিত্য পদসেবার রীতিও রয়েছে।

══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

🔜 ক্রমাগত 👉 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

   📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝📝
     ꧁👇📖সূচীপত্র 🙏 শ্রী মৃন্ময় নন্দী📖👇



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

  *••••┉❀꧁👇🏠Home Page🏠👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

    *••••━❀꧁👇 📖 সূচীপত্র 📖 👇꧂❀┅••••* 



✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧

     *••••━❀꧁👇📚 PDF গ্রন্থ 📚👇꧂❀┅••••* 


✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   🌷❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🌷
   🏵️❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀🏵️
✧══════════•❁❀🙇❀❁•══════════✧










শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html