🚩🚩🚩🙇🙇🙇 রাধে রাধে 🙇🙇🙇🚩🚩🚩

বিরহিনী বিষ্ণুপ্রিয়া ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/blog-post_59.html

 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
                  ꧁ বিরহিনী বিষ্ণুপ্রিয়া
       ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
     🏠Home Page🏠⬇️⬇️🙏⬇️⬇️📚PDF গ্রন্থ📚
꧁ MrinmoyNandy.blogspot.com 👉 সূচীপত্র ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
 ꧁ টিকা বা অন্যান্য ধর্মীয় লিখনী 🙏 সূচীপত্র ꧂
      ꧁ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂
       এই লিংকে ⬇️⬇️⬇️🙏⬇️⬇️⬇️ ক্লিক করুন 
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
*বিরহিনী_বিষ্ণুপ্রিয়া।*

প্রভু বোলে "শুন নিত্যানন্দ মহামতি!
 সত্বরে চলহ তুমি নবদ্বীপ-প্রতি।।
 শ্রীবাসাদি যত আছে ভাগবতগণ।
 সবার করহ গিয়া দুঃখ বিমোচন।।

মহাপ্রভুর আজ্ঞায়
নিত্যানন্দ নবদ্বীপবাসী ভক্তবৃন্দ ও শচীদেবীকে আনবার জন্য নবদ্বীপে চলে গেলেন। 
নবদ্বীপে এসে  শচীদেবীকে মহাপ্রভুর আজ্ঞা জানালেন নিত্যানন্দ।  শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হলেন শচীদেবী। খবর পেয়ে সব ভক্তবৃন্দ এসে মহাপ্রভুর বাড়িতে উপস্থিত হলেন। সকলে উল্লসিত হয়ে শান্তিপুরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে লাগলেন। নিত্যানন্দ  তখন শচীমাতাকে বললেন, শুনলাম এ কয়দিন তোমরা উপবাসী আছ। এখন উঠে রান্নার যোগাড় কর। আমি বড় ক্ষুধার্ত। কিন্তু তোমরা অন্ন গ্রহণ না করলে আমি কি করে অন্ন গ্রহণ করি? অগত্যা শচীদেবী ও বিষ্ণুপ্রিয়া রান্না করলেন। নিত্যানন্দকে ভোজন করিয়ে নিজেরাও অন্ন গ্রহণ করলেন, উপবাস ভঙ্গ করে।
তারপর অঙ্গনে পালকি এলে শচীদেবী ও বিষ্ণুপ্রিয়া দুজনেই যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে সামনে এসে দাঁড়ালেন। তখন নিত্যানন্দ বললেন, কিন্তু মা! প্রভু শুধু তোমাকেই নিয়ে যেতে বলেছেন। শ্রীমতীর যাবার ত নির্দেশ নেই মা!
একথা শুনে শচীদেবী বললেন - নিতাই! এ তোমাদের কেমন বিচার? বৌমা একটিবার নিমাইকে দেখতে পাবে না? বেশ, তাহলে আমিও যাবো না। 
তখন বিষ্ণুপ্রিয়া এগিয়ে এসে শান্ত কণ্ঠে শচীদেবীকে বললেন - *#মা!#আমি_গেলে_তাঁর_সন্ন্যাসব্রত_ভঙ্গ_হবে। #এই_জন্যই_হয়ত_আমাকে_যেতে_নিষেধ_করেছেন। #আমি_তাঁর_সহধর্মিণী। #তাঁর_আচরিত_ধর্মের_সহায়তা_করা_আমার_কর্তব্য। #কিন্তু_আপনি_যাবেন_না_কেন? #আপনার_জন্য_তিনি_অপেক্ষা_করে_আছেন।*
 
এই বিপদের মাঝেও স্থিতধী বিষ্ণুপ্রিয়ার এই প্রজ্ঞাসম্পন্ন কথা শুনে ও সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধির পরিচয় পেয়ে বিস্মিত হয়ে গেল উপস্থিত সকলে। তখন শচীদেবীও শান্ত হয়ে পালকিতে আরোহণ করলেন। 
শচীদেবী চলে গেলে বুকে দুঃসহ বিরহের জ্বলন্ত আগুন নিয়ে ঘরের দ্বার বন্ধ করে ভূমিতলে শয্যাগ্রহণ করলেন বিষ্ণুপ্রিয়া। 

মহাপ্রভু শচীমায়ের দর্শন পেয়ে সাষ্টাঙ্গে দণ্ডবৎ হয়ে পড়লেন। মা পুত্র কে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। মস্তক আঘ্রান করলেন ও বারবার মুখে চুম্বন করতে লাগলেন। চোখের জলে কিছুই দেখতে পান না।কেঁদে কেঁদে বলছেন - নিমাই! তুই যেন বিশ্বরূপের মত নিষ্ঠুরতা করিস্ না। সন্ন্যাসী হয়ে সে একবারও আমাকে দেখা দিল না! মহাপ্রভু বলছেন - মা! এই শরীর তোমার। তোমার পালিত দেহ, কোটি জন্মে তোমার ঋণ শোধ করতে পারব না। যদিও আমি সন্ন্যাস নিয়েছি, তথাপি তোমার প্রতি উদাসীন হব না। আমার সন্ন্যাস ধর্ম যাতে রক্ষা হয় এবং তোমার দুঃখ না হয় সেই মতো আজ্ঞা কর। শচীমাতা বললেন তুমি বৃন্দাবনে গেলে অনেক দূর হবে, তারচেয়ে নীলাচলে গিয়ে থাক। সেখানে লোকজনের যাতায়াত থাকবে। মাঝেমধ্যে সংবাদ পাব। তুমি কখনো গঙ্গাস্নানে আসবে। মায়ের আজ্ঞা মহাপ্রভু শিরোধার্য করে নিলেন। দশ দিন মায়ের হস্ত পাচিত অন্ন ভোজন করে মাকে সুখ দিয়ে নীলাচলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। সঙ্গে নিত্যানন্দ, গদাধর, জগদানন্দ, দামোদর পন্ডিত আর মুকুন্দ, এদেরকে সাথে নিয়ে মহাপ্রভু মাকে প্রদক্ষিণ ও প্রণাম করে গমন করলেন নীলাচলের পানে।

মহাপ্রভু নীলাচলে  গমন করলে শচীমাতা  শান্তিপুর থেকে নবদ্বীপে ফিরে এলেন। ফিরে এসেই পুত্রবধূকে জড়িয়ে ধরলেন দুহাত দিয়ে। তারপর সংজ্ঞাহীনা হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। দুজনেই শোকসন্তপ্তা --- কে কাকে সান্তনা দেবেন। 
এই ঘোর বিপদের মাঝে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য ঠিক করে ফেললেন স্থিতধী ধৈর্যশীলা বিষ্ণুপ্রিয়া। সন্ন্যাসী স্বামীর উপর কোনরূপ রাগ দুঃখ না করে তিনি মনে মনে দৃঢ়সংকল্প করলেন, একদিকে তিনি ত্যাগ ও বৈরাগ্যের পথে স্বামীর ভক্তিপ্রেমধর্মের অন্তরঙ্গ সাধনায় আত্মনিয়োগ করবেন, অন্যদিকে তাঁর চির আরাধ্য প্রাণপ্রিয় স্বামীর জননী পুত্রশোকে বিহ্বলা শাশুড়ীর সেবা পরিচর্যার সব ভার নিজের হাতে তুলে নেবেন।

এদিকে নিজেই নিজের দিনচর্যার ব্যবস্থা করে ফেললেন বিষ্ণুপ্রিয়া। প্রতিদিন রাত্রিশেষের অন্ধকার তরল হয়ে এলেই জনবিরল গঙ্গায় স্নান সেরে আসেন। তারপর বিষ্ণুপ্রিয়া কক্ষে বসে একপাশে তুলে রাখা পতিদেবতার কাষ্ঠপাদুকার সামনে বসে ধ্যান জপে নিবিষ্ট হন। বেলা বাড়লে ঠাকুরঘর হতে বেরিয়ে এসে শাশুড়ীর স্নান, আহার্য ও সেবা পরিচর্যায় রত হন। সব কাজ সেরে আবার বসেন ধ্যান‌ জপে। একটি ক্ষনও ব্যর্থ হতে দেন না।
সন্ন্যাস গ্রহণের আগে স্বামী যে উপদেশের কথাগুলি বলে গেছেন, সেগুলি জ্বলন্ত অক্ষরে যেন লেখা আছে তাঁর অন্তরে। তিনি বলেছিলেন, আমি যেমন কৃষ্ণের ভজনা করছি, তুমিও তেমনি করো। এক কৃষ্ণসত্তায় পৌঁছে আমাদের মিলন ঘটবে আর সে মিলনে কোন ছেদ ঘটবে না। সে মিলন হবে অনন্ত অক্ষয়। 
কৃষ্ণ উপাসনায় ও কৃষ্ণ প্রেমসাধনায় শ্রীচৈতন্য অনুসরণ করেছিলেন বিরহের পথ। উচ্চমার্গের প্রেমসিদ্ধ সাধকেরা বলেন, বিরহের অর্থ বিশেষভাবে রহঃ , মানে একান্তভাবে প্রিয়তমের রূপ,গুন প্রগাঢ়ভাবে অনুশীলনের ফলে যে আনন্দ, সেই আনন্দ প্রাপ্ত করা। বিরহে  এত প্রগাঢ়  আনন্দ হয় যা দুঃখের মতো প্রতীয়মান হয়। যেমন বরফ খণ্ড হাতে নিলে মনে হয় যেন হাতটা পুড়ে গেল, তেমনি।

 প্রেমসাধকেরা মিলনের থেকে‌ বিরহকেই অধিক বরণ করে নেন, কারণ মিলনের মধ্যে তাঁদের প্রাণপ্রিয় বা প্রাণপ্রভুকে পান একারূপে, কিন্তু বিরহের মধ্যে তাঁকে দেখতে পান সারা ত্রিভুবনময়, যেমন শ্রীচৈতন্য সব কিছুই কৃষ্ণময় দেখতেন। 
বিষ্ণুপ্রিয়াও বিরহসাধনার পথ অবলম্বন করে চিরঅভাগিনী হয়েও সৌভাগ্যশালিনী হয়ে রইলেন। আপন অন্তরাত্মার মধ্যে তপস্যার যে অগ্নিকুণ্ড জ্বেলেছিলেন তার কেন্দ্রবিন্দুতে তার দয়িত ও ইষ্টদেব, তাঁর প্রাণের ও ধ্যানের বিগ্রহ শ্রীচৈতন্যদেবকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি বিষ্ণু বা কৃষ্ণ নয়, তাঁর সাধনার একমাত্র বস্তু সেই চৈতন্যদেব যার সমগ্র সত্তা ও প্রাণমন নিঃশেষে কৃষ্ণে সমর্পিত। 

সংসারে অভাব না থাকলেও শচীমা তাঁর  সাধের নিমাই-এর বিচ্ছেদ-বেদনা আর বেশীদিন সহ্য করতে পারলেন না। ক্রমশই রোগে-শোকে জর্জরিত হয়ে শয্যাগত হয়ে পড়লেন শচীমাতা। অবশেষে একদিন বিষ্ণুপ্রিয়া ও নবদ্বীপের অসংখ্য গৌরভক্তদের শোকাহত করে মরদেহ ত্যাগ করে দিব্যলোকে গমন করলেন। 
স্নেহশীলা অভিভাবিকা শচীমাতার অবর্তমানে আরও কঠোর হয়ে উঠল তপস্বিনী বিষ্ণুপ্রিয়ার তপস্যা। চরম ত্যাগ, বৈরাগ্য ও কৃচ্ছ্রসাধনের পথে আর কোন বাধা রইল না। 
শচীমাতার জীবিতাবস্থায় প্রভুর গৃহের বাইরের দরজাটি খুলে রাখা হত। কারণ ভক্তেরা প্রভু জননীকে প্রণাম নিবেদন করতে আসত প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে। তাঁর তিরোধানের পর সেই  দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হলো। 
তাঁর আজ্ঞা ছাড়া তাঁর দর্শন নিষেধ। অত্যন্ত কঠোর ব্রত ধারণ করলেন। প্রাতঃকালে উঠে স্নান-আহ্নিক সেরে হরিনাম জপে বসেন। তিন প্রহর জপ করেন।
*#হরেকৃষ্ণ_হরেকৃষ্ণ_কৃষ্ণকৃষ্ণ_হরেহরে।*
*#হরেরাম_হরেরাম_রামরাম_হরেহরে।।*

 একবার মহামন্ত্র নাম জপ করে একটি মাটির পাত্রে একটি করে তণ্ডুল রাখেন। এই মত তিন প্রহর অর্থাৎ ৯ ঘন্টায় যতটা চাল হয়, তাই যত্নে পাক করেন,মুখে বস্ত্র বেঁধে। অলবন,অনোপকরণ পাক করে মহাপ্রভুর ভোগ লাগান। চোখের জলে ভেসে, প্রাণের আবেগে নানা আকুতি করে ভোগ নিবেদন করে আচমন দেন।  নিজে কিঞ্চিৎ গ্রহণ করেন।শুধুমাত্র অন্নপ্রসাদ ব্যতীত তিনি আর কিছুই গ্রহণ করতেন না, তাও পেট ভরে দুটো পাবেন তাও সম্ভব ছিল না। কারণ সারা দিন ধরে ভজন করে আর কত চাল বা সংশোধন করা সম্ভব? সেজন্য এই আতপ চালের পরিমাণ অধিক হতে পারতো না। তারপর সে প্রসাদকণা পাওয়ার জন্য নবদ্বীপের সব গৌরভক্তগণ সারাদিন উপবাসী থেকে গৃহের বাইরে বসে সংখ্যা নাম জপ করতেন।
তাই তাদেরকেও প্রসাদ দিতে হত। দেবীর আদেশে তার সেবিকাদ্বয় সেই মহাপ্রসাদ এক এক দানা সকলকে বিতরণ করতেন। তাই পেয়ে তারা নিজেকে ধন্য মনে করতেন।
শচীমাতার অপ্রকটের পর আর বাইরে বের হতেন না। ভক্তগণের ব্যাকুলতায় পর্দার আড়াল থেকে শুধুমাত্র চরণ দর্শন দিতেন। 
একবার মাত্র শ্রীনিবাস আসলে দর্শন দিয়েছিলেন সেও মহাপ্রভুর স্বপ্নাদেশে।

ভক্তগণ গঙ্গাজল এনে মই দিয়ে উঠে বাড়ির ভেতরে  রেখে যেতেন। তাতেই স্নানাদি সমাধা করতেন।
অঙ্গে কোন আভরণ নেই,  সন্ন্যাসিনীর বেশ, অন্তর গৌরাঙ্গ বিরহে জর্জরিতা, নয়নধারায় মুখবুক ভেসে যায় আর সর্বদা মহাপ্রভুর শোকে ব্যাকুল, দর্শন তো আর ভাগ্যে হবে না! সেজন্য প্রভুদত্ত পাদুকাই তাঁর সম্বল, আর দিবানিশি হা-হুতাশ।( কথিত আছে - একবার মহাপ্রভু নবদ্বীপে এসেছিলেন শুক্লাম্বর ব্রহ্মচারীর গৃহে। সেখানেই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী প্রভুর দর্শন করেন। মহাপ্রভু তাকে চরণ পাদুকা দান করে প্রস্থান করেন।)
বৃদ্ধ দামোদর পন্ডিত দেবীর কৃচ্ছ্রতা সহ্য করতে না পেরে দেহ ত্যাগ করলেন। একমাত্র শুক্লাম্বর ব্রহ্মচারীই জীবিত ছিলেন। তিনি মধ্যে মধ্যে এসে খোঁজখবর নিয়ে যেতেন।

মহাপ্রভু অনুভব করেছিলেন তাঁর একার চোখের জলে জগৎ ডুবানো সম্ভব নয়। তাই তিনি মাকে ও বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীকেও ছেড়ে সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাসী হয়েছিলেন। তিনজনের চোখের জলে জগৎ ব্যাকুল হয়ে উঠল। সকলের হৃদয়ে হাহাকার জাগল। ব্যাকুল প্রাণে সকলে ভগবানের শরণাপন্ন হলেন।

ভাবতেও কষ্ট হয় একটি নারীর জীবনে মাত্র পাঁচটি বছর মিলন।এগারো বছর বয়সে বিবাহ আর ষোল বছর বয়সেই বিচ্ছেদ।
ষোল বছর বয়সে যৌবনে প্রথম পদার্পণ হয়। সেই সময় থেকে সারাটা জীবন কিভাবে দুঃখে-কষ্টে, চোখের জলে বুক ভাসিয়ে সারাটা জীবন কাটালেন, এটা নারী মাত্রেই অনুভব করতে পারবেন। আজকে ভাবলেও অবাক হতে হয়, কি অসাধ্য দুঃসহ-জ্বালা সহ্য করে জীবন ধারণ করেছিলেন, প্রিয়তম কে পাওয়ার জন্য!তার সেই ভক্তিপূত ত্যাগ-বৈরাগ্যময় জীবন থেকেই আজ নারীদের ভিতর ভক্তি মন্দাকিনীর স্রোত বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়।

মহাপ্রভুর বৈরাগ্য সকলের আদর্শ হলেও নারীসমাজ ভাবতো আমরা কি আর ঐরকম সন্ন্যাস নিয়ে গৃহত্যাগী হয়ে তপস্যা করতে পারি?
 এ জন্যই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী জগৎকে দেখিয়ে গেলেন, নারী হয়েও কেমনভাবে সন্ন্যাসিনী না হয়েও গৃহকোণে বসে তপস্যার দ্বারা ভগবানকে প্রাপ্ত করা যায়। তাঁর ত্যাগের আদর্শ জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকলো যা যুগে যুগে মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

আমরা যদি তার মত বৈরাগ্য আচরণ নাও করতে না পারি তথাপি সেই কথা স্মরণ করে যদি দু'ফোটা চোখের জল পড়ে তাতেও লাভ হবে এবং তাকে আদর্শ করে সেই লক্ষ্য স্থির করে এগোনোর চেষ্টা করলে, একদিন না একদিন তিনি তা অবশ্যই পূর্ণ করবেন। কেননা
 *#তাগাৎ_শান্তিরনন্তরম্"* 
ত্যাগ-বৈরাগ্য ছাড়া তাকে কখনোও পাওয়া সম্ভব নয়। সে ত্যাগ এজন্মে হোক অথবা দশ জন্ম পরে, সেই স্তরে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত তাকে পাওয়া অসম্ভব।
তাই এখন থেকেই লক্ষ্য স্থির করে বাস্তব লক্ষ্যের(ultimate goal) দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করাই মনে হয় বুদ্ধিমানের কাজ।তার শরণ নিয়ে যাত্রা শুরু করলে তিনিই শক্তি দেবেন পথ চলার।

 এই হৃদয়বিদারক-বিরহবেদনা অসহ্য বোধ হওয়ায় অন্যান্য গ্রন্থকারগণ এনার বিষয়ে বিশেষ কিছু লিখতে সমর্থ হন নাই।

বিষ্ণুপ্রিয়ার বিরহ-ব্যথা যখন চরম  পর্যায়ে পৌঁছালো।প্রান আর ধারণ করা যায় না। দুই সখী কাঞ্চনা ও বকুলা দিনরাত পরিচর্যা করেন।  অনেক প্রকারে সান্ত্বনা দেন। দিন-রাত কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলে গেল। ভোজনে রুচি নাই।প্রাণ যায় আর কি! এমন সময় কিঞ্চিৎ তন্দ্রাবেশে দেখছেন, মহাপ্রভু এসে বলছেন- "যে নিমগাছ তলায় আমার জন্ম হয়েছিল, সেই নিমগাছ থেকে আমার মূর্তি তৈরি কর। 
বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী বললেন - আমি কি করে মূর্তি তৈরি করব? আমিতো কিছুই  জানি না। ভাস্কর কোথায় পাব?

 মহাপ্রভু বললেন - তোমার কোন চিন্তা নেই।মূর্তি তৈরীর ভাস্কর ও চলে আসবে। 
বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর ঘুম ভেঙে গেল। তিনি মূর্তি তৈরিতে উদ্যোগী হলে,স্বেচ্ছায় ভাস্কর এসে মূর্তি তৈরি করে দিয়ে চলে গেলেন।

১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে মহাসমারোহে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা মহোৎসব সমাধান হলেন। এখন থেকে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী তার প্রাণনাথের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করলেন। কিঞ্চিৎ বিরহ ব্যথার উপশম হল।

মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পর থেকেই দেবীর শরীর জীর্ণ-শীর্ণ হতে লাগল। দেহধারণ করার বাসনাও ক্রমশঃ ক্ষীণ হয়ে আসতে লাগল। দেখতে দেখতে গৌর-পূর্ণিমা সমাগত হল। প্রাণনাথের জন্মদিনে বিরহ-সিন্ধু উদ্বেলিত হল, তার তরঙ্গাঘাত সহনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেললেন। মঙ্গল আরতি সমাপ্ত হলে দেবী শ্রীমন্দিরে প্রবেশ করলেন, ভিতর থেকে দ্বার বন্ধ হয়ে গেল। সবার অলক্ষ্যে দেবী শ্রীবিগ্রহের সহিত লীন হয়ে গেলেন। মহাপ্রভু নীলাচলে শ্রীবিগ্রহের সাথে লীন হয়ে গিয়েছিলেন। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীও ঠিক সেইভাবে গৌরাঙ্গের (ধামেশ্বর মহাপ্রভু) বিগ্রহের সহিত লীন হয়ে গেলেন।

 পরম পূজ্যপাদ শ্রীহরিদাস গোস্বামী মহাশয় বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর ভ্রাতৃবংশীয় শ্রীনৃত্যগোপাল গোস্বামী মহাশয়ের নিকট স্বয়ং শ্রবণ করে তা সম্পূর্ণরূপে নির্ভরযোগ্য হিসাবে গ্রহণ করেছেন।

 ব্রাহ্মমুহূর্তে প্রভুর জন্মদিনে।
 দারুমূর্ত্তে লীন দেবী হইলা আপনে।।

 আবির্ভাব ১৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে মাঘী শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে এবং তিরোভাব ১৫৭৩ খ্রিস্টাব্দের ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে ৭৭ বছর বয়সে অপ্রকট হন।

*জয় শচীনন্দন জয় গৌরহরি‌।
বিষ্ণুপ্রিয়ার প্রাণনাথ নদীয়া বিহারী।।

🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
*জয় নিতাই!*
*জয় গৌরহরি।।*

GOPISARAN DAS

http­//MrinmoyNandy.blogspot.com/2022/12/blogéôépost_30.html
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
      ✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
           ꧁ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস ꧂
নিবাস-শ্রীশ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর জন্মস্থান, একচক্রা, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ। 
 ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
আমায় দেওয়া ওনার এই অমূল্য লিখনী সেবা, তা সকলের মধ্যে প্রকাশ করলাম। ওনার এই অমূল্য দান সমগ্র বৈষ্ণব সমাজ অনন্তকাল মনে রাখিবে।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
  ✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧
    *••••┉━❀꧁ 🙏 রাধে রাধে 🙏 ꧂❀━┅••••* 
                   শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ
              হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।।
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় জগন্নাথ 🙏 ꧂❀━┅••••*
              হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
              হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
  *••••┉━❀꧁ 🙏 জয় রাধাকান্ত 🙏 ꧂ ❀━┅••••*
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
   💮❀❈❀🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙇🙇🙇🙏🏻🙏🏻🙏🏻❀❈❀💮
✧═══════════•❁❀❁•═══════════✧



শেষ ৩০ দিনের পোস্টের মধ্যে সর্বাধিক Viewer নিম্নে :-

শ্রীকৃষ্ণ লীলা 🙏 সূচীপত্র ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_74.html

শিবরাত্রি ব্রতকথা 🙏 ১০৮ নাম 🙏 মন্ত্র সমূহ 🙏 শিবরাত্রি ব্রত কি ভাবে পৃথিবীতে প্রচলিত হল❓শিবরাত্রি ব্রত পালনে কি ফল লাভ হয় ❓শিবরাত্রি ব্রত পালন কি সকলেই করতে পারেন ❓🙏 সকল ভক্ত 👣 চরণে 👣 অসংখ্যকোটি 🙏 প্রণাম 🙏শ্রী মৃন্ময় নন্দী 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/02/shib.html

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নৌকা গঠন তত্ব ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 https://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/06/blog-post_22.html

🙇 রাধে রাধে 🙇 শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ 👏 হরে কৃষ্ণ হরে রাম শ্রীরাধেগোবিন্দ।। 🙇 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2024/09/today.html

শ্রীঅম্বরীষ মহারাজের ছোট রানী 🙏 চারিযুগের ভক্তগাঁথা ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/12/blog-post_97.html

মনোশিক্ষা 🙏 দ্বিতীয় ভাগ 🙏 শ্রীযুক্ত প্রেমানন্দ দাস ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/jaydeb_14.html

বকরূপী ধর্ম যুধিষ্ঠিরকে চারটি প্রশ্ন করেছিলেন সেই প্রশ্নই বা কি? ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/05/blog-post_98.html

শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু 🥀 সংক্ষিপ্ত কথন 🙏 প্রথম ভাগ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/01/mohaprobhu-joydeb-dawn.html

শ্রীআমলকী একাদশী ব্রতের মাহাত্ম‍্য কি ❓ ✍️ লিখনী সেবা- শ্রী গোপীশরণ দাস 📚 এই লিংকে ক্লিক করুন 👉 http://mrinmoynandy.blogspot.com/2023/03/ekadoshi.html

*নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং শুকমুখাদকমৃতদ্রবসংযুতম্।**পিবত ভাগবতং রসমালয়ং মুহুরহো রসিকা ভূবি ভাবুকাঃ।।*✍️ লিখনী সেবা- শ্রী জয়দেব দাঁ 🙏 এই লিংকে ক্লিক করুন ➡️ http://mrinmoynandy.blogspot.com/2022/09/blog-post_89.html